জুমার নামাজ  সম্পর্কে জকির নায়েকের বিভ্রান্তির জবাবঃ

🔺"প্রাপ্ত বয়স্ক প্রত্যেক মুসলমানের উপর জুমার নামাজ ফরজ।"(নাসায়ী হাঃ১৩৭১)

🔺"লোকেরা জুমার নামাজ তরক করা হতে বিরত থাকুক….।
(মুসলিম হাঃ১৯৫৭, নাসায়ী হাঃ১৬৭১)

🔺"রসুল (ﷺ) দুই ঈদেও জুমায় সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আ’লা এবং হাল আতাকা হাদীসুল গশিয়াহ পড়তেন।
আর যখন ঈদ ও জুমা একই দিনে হত তখনও তিনি ঈদ ও জুমায় উভয় সূরাহ দু’টি পড়তেন।" 
(মুসলিম হাঃ১৪৫৮)

এ হাদীস দ্বারা স্পষ্ট ভাবে জানা গেল জুমার দিনে ঈদ হলে রসুল (ﷺ) ঈদ ও জুমা উভয় নামাজ আদায় করতেন। অনুরূপ এই মর্মে আরও কইয়েকটি হাদীস আছেঃ বুখারী ৫খঃ ২১১৬ পৃঃ, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২খঃ ৩৭৬ পৃঃ, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাঃ ৫৭২৯

জাকির নায়েকের উক্তি

❌“জুমার দিনে আগে ঈদের নামাজ আদায় করলে পরে জুমার নামাজ আদায় না করা ঐচ্ছিক ব্যাপার।”
(ডাঃ জাকিরনায়েকর লেকচারসমগ্র ভলিয়ম ৫ পৃঃ৪৭৬)
অন্যত্রে বলেন “...যহেতু ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে , তাই জুমা আর আদায় না করলেও চলবে।”❌

তিনি একটি হাদীস দলিল দিয়েছেন “রসুল (ﷺ) এরশাদ করেনঃ- আমরা এক সাথে দুইটি ঈদ অতিবাহিত করছি। একটি ঈদুল ফিতর আর একটি জুমার ঈদ। অতঃপর রসুল (ﷺ) নামাজ শেষে বলেনঃ যারা জুমার নামাজ আদায় করে নি তারা ইচ্ছা করলে আর আদায় করার দরকার নেই।

(আবু দাউদ, হাঃ ১০৬৮, ডাঃ জাকির নায়েকের লেকচার সমগ্র ভলিয়ম ৫ পৃঃ ৪৭৪)

ডাঃ জাকির নায়েকের বিভ্রান্তির  জাবাবঃ

◾১মত, তিনি যেই হাদীস বর্ণনা করেছেন, 
এখানে তিনি যথাযথ রূপে বর্ণনা করতে পারেননি। তিনি বলেছেন “যারা জুমার নামাজ আদায় করেনি…” 
প্রশ্ন হল তখনও জুমার ওয়াক্ত হতে আনেক সময় বাকী জুমার নামাজ আদায় করবে কিভাবে? 
মূলত হাদীস নং ১০৭০ অর্থ হল“রসুল (ﷺ) ঈদের নামাজ আদায় করেছেন অতঃপর বলেছেন , যারা জুমার নামাজ পড়ার ইচ্ছা করে, সে কেন পড়ে” অনেকে এই হাদীসকে জইফ বলেছেন। 

◾২য়, এই হাদীস ছাড়া আরও কয়েকটি হাদীস আছে , সেগুলোকেও মুহাদ্দিসিনরা জইফ বলেছেন। 

◾৩য়, আল্লামা ইবনে আব্দুল বার (রহঃ) বলেন, এই হাদীস সমুহ বর্ণিত জুমা তরকের ব্যাপরে আবকাশ দ্বারা তারাই উদ্দেশ্য যাদের উপর জুমা ফরজ নয়। 

◾অন্য জায়গায়, তিনি লিখেন, যেহেতু এই হাদীস গুলো আওয়ালী আধিবাসীদের তাবীলের সম্ভনা রাখে তাই এর দ্বারা জুমা রহিত হওয়ার কথা বলা জায়েজ হবে না।

◾ইমাম ত্বহাবী (রহঃ) বলেন, এই হাদীস দ্বারা আওয়ালি আধিবাসীদের বুজানো হয়েছে। 

◾৪র্থ, এক সময় জুমাও ঈদ একই দিনে হয়। তখন রসুল (ﷺ) বলেন “আওয়ালী অধিবাসীদের মধ্যে যারা বসে থাকার ইচ্ছা করে তারা বসে থাকুক। এতে কোন আসুবিধা নেই। (সুনানে বাইহাকী ৩খঃ, ১৮৬পৃঃ) 

◾অনুরূপ ওসমান (রাঃ) এর বর্ণনা “আওয়ালী অধিবাসীদের মধ্যে যারা জুমার জন্য অপেক্ষা করা পছন্দ করে, তারা যেন অপেক্ষা করে। আর যারা ফিরে যেতে ইচ্ছা করে আমি তাদেরকে অনুমতি দিলাম।
(বুখারী ৫খঃ২১১৬ পৃঃ,) 

◾ওসমান (রাঃ) খুৎবায় উক্ত কথা ঈদের জামাতে উপস্থিত সকল সাহাবার (রাঃ) এর সামনে বলেন। কিন্তু কেউ আপত্তি করেনি। এতে সাহবা (রাঃ) এর ইজমা প্রমানিত হয়। 

◾অনুরূপ এই মর্মে আরও কয়েকটি হাদীস আছেঃ বুখারী ৫খঃ ২১১৬ পৃঃ, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২খঃ ৩৭৬ পৃঃ, মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাঃ ৫৭২৯। সুতরাং সহী হাদীস ও ইজমার বিপরীতে জইফ হাহীস দিয়ে জুমা পড়া না পড়া ঐচ্ছিক বলা যাবে না।

আওয়ালী অধিবাসীদের বর্ণনাঃ – 
“আওয়াল” এমন এক জায়গা যা মদীনা থেকে কয়েক মাইল দূরে। সেখান থেকে মসজিদে নব্বীতে আসতে প্রায় দুই ঘন্টা লাগত, আবার ফিরে যেতে দুই ঘন্টা লাগত। তাই তাদের উপর (জুমা ফরজ হওয়ার জন্য কিছু শর্ত ছিল) জুমার নামাজ ফরজ ছিল না। যাদের ইচ্ছা হত তারা কষ্ট করে আসত কিন্তু তারা ঈদের নামাজ আদায় করার জন্য আসত।

 
Top