আল্লাহ পাক ঘোষণা দেন: “আর (হে হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ! আমি আপনার স্মরণকে সমুন্নত করেছি।”
(সূরা ইনশিরাহ, ৯৪:৪)



ব্যাখ্যাঃ

আল্লাহ তার হাবিব (সা:) এর নাম -----


---কালেমা

---আল-কুরআন 

---আযান

---খুতবা 

---নামাজ 

---৭ আসমানের স্তরে স্তরে 

---সিদ্রাতুল মুন্তাহার পাতায় পাতায় 

---জান্নাতের প্রত্তেক দরজায়

---সকল ফেরেশ্তাদের চুখের মনিতে ওনার নাম মুবারাক অংকিত রেখেছেন।

---এমনকি স্বয়ং খোদা তায়ালা রাসুলের উপর দুরুদ পড়েন (আহযাব ৫৬)

---যেখানে আল্লাহর নাম নেয়া হয় সেখানে রাসুলের মুহাব্বতে ওনার নাম স্মরণ করা হয়।

এভাবে তিনি তার হাবিবের স্বরণকে সমুন্নত করেছেন।




রাসূল সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য রহমতস্বরুপ। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ১০৭)

মুমিনদের জন্য আল্লাহর পরম অনুগ্রহ রাসূলকে পাওয়া।
(সূরা ইমরান, আয়াত: ১৬৪)

আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত প্রাপ্তিতে আনন্দ উৎসব কর এবং এর মধ্যে রয়েছে অশেষ কল্যান।
(সূরা ইউনুছ, আয়াত: ৫৮)

রাসূলের হওয়াই আল্লাহর হওয়া ।
(সূরা নিসা, আয়াত: ৮০)

নবী মুমিনদের প্রাণের চেয়েও নিকটতম ও প্রিয়তম। 
(সুরা আহযাব, আয়াতঃ ৬)

"তোমরা পরস্পর নিজেদের যেভাবে সম্বোধন কর আল্লাহর মহান রাছুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে সেভাবে সম্বোধন করবে না।" 
(সূরা নূর, আয়াতঃ ৬৩)

__________________
Sura Hozrat : 1-5
"01

মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু শুনেন ও জানেন।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا لَهُ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَطَ أَعْمَالُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ

02

মুমিনগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং তোমরা একে অপরের সাথে যেরূপ উঁচুস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরূপ উঁচুস্বরে কথা বলো না। এতে তোমাদের কর্ম নিস্ফল হয়ে যাবে এবং তোমরা টেরও পাবে না।

إِنَّ الَّذِينَ يَغُضُّونَ أَصْوَاتَهُمْ عِندَ رَسُولِ اللَّهِ أُوْلَئِكَ الَّذِينَ امْتَحَنَ اللَّهُ قُلُوبَهُمْ لِلتَّقْوَى لَهُم مَّغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيمٌ

03

যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্যে শোধিত করেছেন। তাদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।

إِنَّ الَّذِينَ يُنَادُونَكَ مِن وَرَاء الْحُجُرَاتِ أَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُونَ

04

যারা প্রাচীরের আড়াল থেকে আপনাকে উচুস্বরে ডাকে, তাদের অধিকাংশই অবুঝ।

وَلَوْ أَنَّهُمْ صَبَرُوا حَتَّى تَخْرُجَ إِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ


05

যদি তারা আপনার বের হয়ে তাদের কাছে আসা পর্যন্ত সবর করত, তবে তা-ই তাদের জন্যে মঙ্গলজনক হত। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءكُمْ فَاسِقٌ بِنَبَأٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَى مَا فَعَلْتُمْ نَادِمِينَ

___________________ (সুরা হুজরাত ১-৫)


"নিশচই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্মানিত নূর (রাসুল) ও কিতাব (কোরআন) এসেছে।
(সুরা মায়েদা আয়াতঃ ১৫।)

তফসীরঃ


আল্লাহতায়ালা ছাড়া কোন পরম অস্ত্বিত্ত্ব, মূল সত্য ও প্রকৃত শক্তি নেই, সে পরম সত্য শক্তি ও মহাসত্ত্বার রেছালাত, সর্বময় মূল প্রতিনিধিত্ব, সম্পর্ক, নূর ও রহমতের ধারক বাহক সংযোগ মহান রাসুল। আল্লাহতায়ালার মহান পবিত্র সত্ত্বা তাঁর রাসুল ব্যতীত সবার জ্ঞান, চিন্তা ও কল্পনার উর্ধেব, আল্লাহতায়ালার নূর বলতে প্রিয়নবীকেই বুঝায়। সর্ব সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহতায়ালা নূররূপে প্রিয়নবীকে তৈরি করেছেন, নিজ নূরে নূরানী করেছেন, সে নূর থেকেই সব অস্তিত্ত্ব ও জীবন দিয়েছেন, সে নূর থেকে সবাইকে আলোকিত করেছেন। 
এ জন্য এবং আরো অনেক কারনে প্রিয়নবীই জীবনের উৎস ও মূল। 

(তফসিরে রূহুল মায়ানী ১ম খণ্ড ২১৭ পৃষ্ঠা, ২য় খণ্ড ৯৭ পৃষ্ঠা, তফসিরে রূহুল বায়ান)



"হে ঈমানদারগণ! ‘রাইনা’ বলো না বরং ‘উন্‌যুরনা’ বলো এবং মনোযোগ সহকারে কথা শোনো। এই কাফেররা তো যন্ত্রণাদায়ক আযাব লাভের উপযুক্ত।“[সূরা বাকারাহ ১০৩ – ১০৪]"

তফসীরঃ

ইহুদিরা কখনো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মজলিসে এলে অভিবাদন, সম্ভাষণ ও কথাবার্তার মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য সকল পদ্ধতিতে নিজেদের মনের ঝাল মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতো। দ্ব্যর্থবোধক শব্দ বলা, উচ্চস্বরে কিছু বলা এবং অনুচ্চস্বরে অন্য কিছু বলা, বাহ্যিক ভদ্রতা ও আদব-কায়দা মেনে চলে পর্দান্তরালে রসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবমাননা ও অপমান করার কোন কসরতই বাকি রাখতো না। পরবর্তী পর্যায়ে কুরআনে এর বহু দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে মুসলমানদেরকে একটি বিশেষ শব্দ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। এ শব্দটি বহু অর্থবোধক। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে আলোচনার সময় ইহুদিদের যখন একথা বলার প্রয়োজন হতো যে, থামুন বা ‘কথাটি আমাদের একটু বুঝে নিতে দিন’ বা তখন তারা ‘রাইনা’ বলতো। এ শব্দটির বাহ্যিক অর্থ ছিল, ‘আমাদের একটু সুযোগ দিন’ বা ‘আমাদের কথা শুনুন।’ কিন্তু এর আরো কয়েকটি সম্ভাব্য অর্থও ছিল। যেমন হিব্রু ভাষায় অনুরূপ যে শব্দটি ছিল তার অর্থ ছিলঃ ‘শোন, তুই বধির হয়ে যা।’ আরবী ভাষায়ও এর একটি অর্থ ছিল, ‘মূর্খ ও নির্বোধ’। আলোচনার মাঝখানে এমন সময় শব্দটি প্রয়োগ করা হতো যখন এর অর্থ দাঁড়তো, তোমরা আমাদের কথা শুনলে আমরাও তোমাদের কথা শুনবো। আবার মুখটাকে একটু বড় করে ‘রা-ঈয়ানাও (আরবী) বলার চেষ্টা করা হতো। এর অর্থ দাঁড়াতো ‘ওহে, আমাদের রাখাল!’ তাই মুসলমানদের হুকুম দেয়া হয়েছে, তোমরা এ শব্দটি ব্যবহার না করে বরং ‘উন্‌যুরনা’ বলো। এর অর্থ হয়, ‘আমাদের দিকে দেখুন ’ ‘আমাদের প্রতি দৃষ্টি দিন’ অথবা ‘আমাদের একটু বুঝতে দিন।’ এরপর আবার বলা হয়েছে, ‘মনোযোগ সহকারে কথা শোনো। ’অর্থাৎ ইহুদিদের একথা বার বার বলার প্রয়োজন হয়। কারণ তারা নবীর কথার প্রতি আগ্রহী হয় না এবং তাঁর কথা বলার মাঝখানে তারা নিজেদের চিন্তাজালে বার বার জড়িয়ে পড়তে থাকে। কিন্তু তোমাদের তো মনোযোগ সহকারে নবীর কথা শুনতে হবে। কাজেই এ ধরনের ব্যবহার করার প্রয়োজনই তোমাদের দেখা দেবে না।
 
Top