আল্লাহর বানীতে রাসুল (ﷺ)


রাসুল (ﷺ) কে আল্লাহ তাআ‌লা কুরআনে যেভাবে উল্লেখ করেছেন।

রাসুল (ﷺ) প্রতি আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন, ফিরিশতারা সালাত প্রেরণ করে, মুমিনদেরকে দরুদ পেশের নির্দেশঃ
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا ৩৩:৫৬
নিশ্চিয়ই আল্লাহ্ নবীর প্রতি আশিষ বর্ষণ করেন এবং তাঁর ফিরিশতাগনও, হে মুমিনগণ তোমরাও তার প্রতি তছলিম (শ্রদ্ধা ও ভালবাসাযুক্ত) সালাত (দরুদ) প্রেরণ কর। (৩৩:৫৬)।
রাসুল (ﷺ) হবেন উম্সতের সাক্ষী, আর উম্মত হবে মানবজাতির উপর সাক্ষী করা হবেঃ
(2: 143): وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِّتَكُونُواْ شُهَدَاء عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِي كُنتَ عَلَيْهَا إِلاَّ لِنَعْلَمَ مَن يَتَّبِعُ الرَّسُولَ مِمَّن يَنقَلِبُ عَلَى عَقِبَيْهِ وَإِن كَانَتْ لَكَبِيرَةً إِلاَّ عَلَى الَّذِينَ هَدَى اللّهُ وَمَا كَانَ اللّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ إِنَّ اللّهَ بِالنَّاسِ لَرَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
আর এইরূপ আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী উম্মত করেছি,  যেন তোমরা (কিয়ামতে) মানবজাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ হও এবং  রাসুল হবেন তোমাদের সাক্ষী। এযাবৎ তুমি যে কিবলার অনুসরণ করছিল তা আমি এ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম,  যেন  (এ পরীক্ষার মাধ্যমে) প্রকাশ পায়- কে রাসুলকে অনুসরণ করে আর কে উল্টো পশ্চাৎপদ হয়। আল্লাহ্ যাদের হেদায়েত করেছেন তাদের ব্যতীত (অন্যের জন্য সহসা এই কিবলা পরিবর্তন মেনে নেয়া) নিশ্চয়ই কঠিন ছিল। আর আল্লাহ্‌ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান বিনষ্ট করবেন। আল্লাহ্‌ তো মানুষের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল করুণাময়।
22: 78 وَجَاهِدُوا فِي اللَّهِ حَقَّ جِهَادِهِ هُوَ اجْتَبَاكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّينِ مِنْ حَرَجٍ مِّلَّةَ أَبِيكُمْ إِبْرَاهِيمَ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمينَ مِن قَبْلُ وَفِي هَذَا لِيَكُونَ الرَّسُولُ شَهِيدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُونُوا شُهَدَاء عَلَى النَّاسِ فَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَاعْتَصِمُوا بِاللَّهِ هُوَ مَوْلَاكُمْ فَنِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ
আর জিহাদ কর আল্লাহর পথে যেভাবে (একনিষ্ট সর্বশক্তিতে যেন তাঁর নাম সর্বোচ্চে থাকে সেভাবে) জিহাদ করা উচিৎ। তিনি তোমাদের বাছাই করে নিয়েছেন। দ্বীনের ব্যাপরে তিনি তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা আরোপ করেন নি। এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নাম রেখেছেন ‘মুসলিম’, পূর্বেও এবং এই কিতাবেও, যেন রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষীস্বরূপ হয় এবং তোমারা স্বাক্ষী হও সমস্ত মানবজাতির জন্য। সুতরাং তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং আল্লাহকে আঁকড়ে ধর (অর্থাৎ তাঁরই আনুগত্য কর ও কিছুমাত্র বিরোধিতা করোনা); তিনিই তোমাদের অভিভাবক, কত উত্তম অভিভাবক ও কত উত্তম সাহায্যকারী তিনি!
রাসুল (ﷺ) এর হৃদয়ে কুরআন নাযিল হয়েছেঃ
2:97 قُلْ مَن كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيلَ فَإِنَّهُ نَزَّلَهُ عَلَى قَلْبِكَ بِإِذْنِ اللّهِ مُصَدِّقاً لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُدًى وَبُشْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ 
বল (হে মুহাম্মদ!), ‘যে কেউ জিবরীলের শত্রু এজন্য যে, সে আল্লাহর নির্দেশে আপনার হৃদয়ে কুরআন পৌঁছে দেয়, যা তার পূর্ববর্তী কিতাবের সমর্থক এবং যা মুমিনদের জন্য পথ-প্রদর্শক ও সুসংবাদ।

রাসুল (ﷺ) ইব্রাহীমি ধর্মের উপর একনিষ্ঠঃ
2 135 وَقَالُواْ كُونُواْ هُودًا أَوْ نَصَارَى تَهْتَدُواْ قُلْ بَلْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
আর তারা (আহলি কিতাবরা) বলে, তোমরা ইহুদী হও কিংবা খৃষ্টান হও তোমরাও সৎ পথ প্রাপ্ত হবে! (হে মুহাম্মদ সা.!) তুমি বল, আমরা তো একনিষ্ঠ হয়ে ইব্রাহীমি ধর্মের উপর থাকব; আর তিনি মুশরিকদের দলভূক্ত ছিলেন না।
2 136 قُولُواْ آمَنَّا بِاللّهِ وَمَآ أُنزِلَ إِلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ إِلَى إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَقَ وَيَعْقُوبَ وَالأسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَى وَعِيسَى وَمَا أُوتِيَ النَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لاَ نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ
বলে দাও যে, আমরা ঈমান রাখি আল্লাহর প্রতি, আর যা আমাদের প্রতি নাযিল হয়েছে, আর সেগুলোর প্রতিও যা নাযিল হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তার বংশধরদের প্রতি, আর তার প্রতিও যা মূসা এবং ঈসাকে প্রদান করা হয়েছে, আর তার উপরও যা অন্যান্য নবীগনকে প্রদান করা হয়েছে তাদের প্রতিপালকের তরফ থেকে। আমরা তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করিনা আর আমরা মুসলিম (আল্লাহর নিকট আত্মসর্মপণকারী)।
কিবলা পরিবর্তন রাসুল (ﷺ). এর অন্তরের আকাংখা কবুলের মাধ্যমে হয়েছিলঃ
2 :144 قَدْ نَرَى تَقَلُّبَ وَجْهِكَ فِي السَّمَاء فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبْلَةً تَرْضَاهَا فَوَلِّ وَجْهَكَ شَطْرَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ وَحَيْثُ مَا كُنتُمْ فَوَلُّواْ وُجُوِهَكُمْ شَطْرَهُ وَإِنَّ الَّذِينَ أُوْتُواْ الْكِتَابَ لَيَعْلَمُونَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّهِمْ وَمَا اللّهُ بِغَافِلٍ عَمَّا يَعْمَلُونَ
(হে রাসূল!) আমি তো আকাশের দিকে বারংবার তোমার মুখমন্ডলকে উঠাতে দেখেছি, তাই আমি তোমাকে ফিরিয়ে দিব সেই কিব্‌লার দিকে যা তুমি পছন্দ কর; কাজেই তুমি মস্‌জিদে হারামের দিকে মুখ ফিরিয়ে নাও। আর (হে মুমিনগণ!) তোমরা যেখানেই থাক (সালাতের কালে) স্বীয় মুখমন্ডল তার দিকে ফিরিয়ে নাও। আর এই আহলে কিতাবরাও (তাদের নিকট প্রেরিত কিতাব ও পরম্পরাগত বাণী থেকে) নিশ্চিতরূপেই জানে যে (শেষ নবী মুহাম্মদ সা. এর কিবলা হবে মক্কাস্থিত মসজিদুল হারাম এবং) তা তাদের প্রতিপালকের প্রেরিত সত্য। আর তারা যা করে আল্লাহ্‌ তা অনবহিত নন।
ইহুদী খৃষ্টানরা রাসুল (ﷺ). কে নিজের সন্তানদের চিনার মতই চিনেছিলঃ
2 :146 الَّذِينَ آتَيْنَاهُمُ الْكِتَابَ يَعْرِفُونَهُ كَمَا يَعْرِفُونَ أَبْنَاءهُمْ وَإِنَّ فَرِيقاً مِّنْهُمْ لَيَكْتُمُونَ الْحَقَّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ
যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি (তথা ইহুদী ও খৃষ্টানগণ), তারা তাকে (মুহাম্মদ সা. কে) সেইরূপই চিনে যেরূপ তারা আপন পুত্রগণকে চিনে থাকে। আর তাদের একদল তো অবশ্যই সত্যকে জেনেশুনেই গোপন করছে (তা হলো মুহাম্মদ সা. , কুরআন ও কাবার পরিচয় যা তারা তাদের কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলে পেয়েছে)!
আল্লাহ্  রাসুল (ﷺ). কে লোকদের প্রশ্নের জবাব বলে দিতেনঃ
2: 189 يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأهِلَّةِ قُلْ هِيَ مَوَاقِيتُ لِلنَّاسِ وَالْحَجِّ وَلَيْسَ الْبِرُّ بِأَنْ تَأْتُوْاْ الْبُيُوتَ مِن ظُهُورِهَا وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنِ اتَّقَى وَأْتُواْ الْبُيُوتَ مِنْ أَبْوَابِهَا وَاتَّقُواْ اللّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
লোকে তোমাকে নতুন চাঁদ এর বিষয়ে প্রশ্ন করে। বল (হে মুহাম্মদ সা.), ‘এটা মানুষের (দৈনন্দিন কাজের) জন্য ও হজ্জের জন্য সময় নির্দেশক।’ পশ্চাৎ দিক দিয়ে গৃহে প্রবেশ করাতে তোমাদের কোন পুণ্য নেই; বরং পুণ্য আছে তাকওয়া অবলম্বনে। সুতরাং তোমরা (যথাযথ সম্মুখ) দ্বার দিয়েই গৃহে প্রবেশ কর, এবং আল্লাহ্‌কে ভয় কর যেন তোমরা সফলকাম হতে পার।
হেদায়েতের দায়ীত্ব রাসুল (ﷺ). এর উপর নয়, কেবল আহ্বান ও আল্লাহর বানী পৌছানো এবং ওহীর অনুসরণই তার দায়ীত্বঃ
2 :272 لَّيْسَ عَلَيْكَ هُدَاهُمْ وَلَكِنَّ اللّهَ يَهْدِي مَن يَشَاء وَمَا تُنفِقُواْ مِنْ خَيْرٍ فَلأنفُسِكُمْ وَمَا تُنفِقُونَ إِلاَّ ابْتِغَاء وَجْهِ اللّهِ وَمَا تُنفِقُواْ مِنْ خَيْرٍ يُوَفَّ إِلَيْكُمْ وَأَنتُمْ لاَ تُظْلَمُونَ
(হে রাসূল) তাদের হেদায়েতের দায় তোমার নয়, বরং আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা তাকে পথ দেখান। যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় (অর্থাৎ সাদকা, যাকাত, ও সর্বপ্রকার বৈধ দান)  কর তা তোমাদের নিজেদের (কল্যাণের) জন্য এবং তোমরা তো শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই তা ব্যয় করে থাক। আর যে সম্পদ তোমরা ব্যয়  কর তার পুরষ্কার তোমাদের পুরোপুরি প্রদান করা হবে এবং তোমাদের উপর (প্রতিদানের বিষয়ে) কোন অন্যায় করা হবে না।
5 :92 وَأَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَاحْذَرُواْ فَإِن تَوَلَّيْتُمْ فَاعْلَمُواْ أَنَّمَا عَلَى رَسُولِنَا الْبَلاَغُ الْمُبِينُ
তোমরা আল্লাহ্‌র আনুগত্য কর ও রাসুলের আনুগত্য কর এবং সাবধানতা অবলম্বন কর (নেশা, জুয়া ইত্যাদি থেকে)। যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে জেনে রেখো যে আমার রাসুলের দায়ীত্ব কেবল সুস্পষ্টরূপে (আমার আহ্বান) পৌছে দেয়া।
5 :99 مَّا عَلَى الرَّسُولِ إِلاَّ الْبَلاَغُ وَاللّهُ يَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا تَكْتُمُونَ
রাসুলের দায়ীত্ব কেবল (তোমাদের নিকট আমার সংবাদ) পৌঁছে দেয়া। আর তোমরা যা প্রকাশ কর ও গোপন রাখ আল্লাহ্‌ তা জানেন।
6: 104 قَدْ جَاءكُم بَصَآئِرُ مِن رَّبِّكُمْ فَمَنْ أَبْصَرَ فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ عَمِيَ فَعَلَيْهَا وَمَا أَنَاْ عَلَيْكُم بِحَفِيظٍ
নিশ্চিতরূপে তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে সুস্পষ্ট প্রমান (কুরআন যা অর্ন্তদৃষ্টির আলো) এসে গেছে। সুতরাং যে (এই আলো দিয়ে) দেখবে (অর্থাৎ কুরআন মেনে চলবে), তা নিজের (কল্যাণের) জন্যই হবে, আর যে (তা থেকে) অন্ধ থাকবে (অর্থাৎ নেত্রপাতও করবে না) তবে (তার ক্ষতি) তার উপরই। আর আমি (মুহাম্মদ কেবল রাসুল,) তোমাদের সংরক্ষক নই (অর্থাৎ তোমাদের কর্ম ও বিশ্বাসের দায়ীত্ব আমার নয়, শুধু আল্লার নির্দেশ পৌছে দেয়াই আমার কাজ)।
6: 106 اتَّبِعْ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ لا إِلَهَ إِلاَّ هُوَ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ
তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমার প্রতি যে ওহী হয় তুমি তারই অনুসরণ কর, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্‌ নেই, এবং মুশরিকদের (বিমুখতাকে) উপেক্ষা কর।
6: 107 وَلَوْ شَاء اللّهُ مَا أَشْرَكُواْ وَمَا جَعَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا وَمَا أَنتَ عَلَيْهِم بِوَكِيلٍ
আল্লাহ্‌ যদি চাইতেন তবে তারা শিরক করতো না, আর তোমাকে আমি তাদের উপর রক্ষক নিয়োগ করিনি এবং তুমি তাদের তত্ত্বাবধায়কও নও।
রাসুল (ﷺ). এর অনুসরণ আল্লাহর ভালবাসা, অনুগ্রহ পাওয়া ও গুনাহ্ মাফের শর্তঃ
3 :31 قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
(হে রাসূল (ﷺ).!) বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহ্‌কে (সত্যিই) ভালবেসে থাক তবে আমাকে অনুসরণ কর, আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের অপরাধ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন। আল্লাহ্ অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও মেহেরবান।
3 :32 قُلْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَالرَّسُولَ فإِن تَوَلَّوْاْ فَإِنَّ اللّهَ لاَ يُحِبُّ الْكَافِرِينَ
বল, ‘আল্লাহ্‌ এবং রাসুলের অনুগত হও।’ অতপর যদি তারা বিমুখ হয় তবে (জেনে রাখুন) আল্লাহ্‌ তো কাফেরদেরকে পছন্দ করেন না।
3 132 وَأَطِيعُواْ اللّهَ وَالرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
আর আনুগত্য কর আল্লাহর ও রাসুলের যেন তোমরা অনুগ্রহ পেতে পার।
24:54 قُلْ أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ فَإِن تَوَلَّوا فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُم مَّا حُمِّلْتُمْ وَإِن تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ
বল (হে নবী!), ‘আল্লাহ্‌র আনুগত্য কর এবং রাসুলের আনুগত্য কর।’ কিন্তু যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তো তার (মুহাম্মদ সা. এর) উপর যে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে সেটা (র দায়ভার) তার, আর তোমাদের উপর যে দায়ীত্ব তা (র দায়ভার) তোমাদের। যদি তোমরা তার (অর্থাৎ রাসুলের) আনুগত্য কর, তবে তোমরা হেদায়েত পাবে। রাসুলের দায়ীত্ব তো কেবল সুস্পষ্টরূপে (আল্লাহর বিধান) পৌছে দেয়া।
24: 56 وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
সালাত কায়েম কর, যাকাত প্রদান কর এবং রাসুলের আনুগত্য কর, যেন তোমরা অনুগ্রহ পেতে পার।
মুহাম্মদ (ﷺ). প্রতি ঈমান আনা ও তাকে সহযোগীতা করার জন্য পূর্ববর্তী নবীদের নিকট থেকে ওয়াদা নেয়া হয়েছিলঃ
3 :81
وَإِذْ أَخَذَ اللّهُ مِيثَاقَ النَّبِيِّيْنَ لَمَا آتَيْتُكُم مِّن كِتَابٍ وَحِكْمَةٍ ثُمَّ جَاءكُمْ رَسُولٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهِ وَلَتَنصُرُنَّهُ قَالَ أَأَقْرَرْتُمْ وَأَخَذْتُمْ عَلَى ذَلِكُمْ إِصْرِي قَالُواْ أَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُواْ وَأَنَاْ مَعَكُم مِّنَ الشَّاهِدِينَ
আর (স্মরণ কর) যখন আল্লাহ্‌ নবীদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন, ‘তোমাদেরকে তো কিতাব (ওহী), হিকমত (শরীয়ত সম্পর্কিত জ্ঞান) দিয়েছি, অবশেষে তোমাদের নিকট যা রয়েছে তার সমর্থকরূপে যখন এক রাসুল (মুহাম্মদ সা.) আসবে তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে।’ (আল্লাহ্‌ আরও) বলেছিলেন, ‘(হে নবীগণ!) তোমরা কি স্বীকার করছ? আর এবিষয়ে কি তোমরা দায়ীত্বভার গ্রহণ করছ?’ তারা বলেছিল, ‘আমরা স্বীকার করলাম।’ (আল্লাহ্‌) বললেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থেকো আর আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম।’ (৩:৮১)
রাসুল (ﷺ). এর অনুপস্থিতিতে মুসলিমদের করণীয়
3 144 وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِن مَّاتَ أَوْ قُتِلَ انقَلَبْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَن يَنقَلِبْ عَلَىَ عَقِبَيْهِ فَلَن يَضُرَّ اللّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللّهُ الشَّاكِرِينَ
মুহাম্মদ একজন রাসুল মাত্র; তার পূর্বে বহু রাসুল গত হয়েছে। সুতরাং যদি সে মৃত্যুবরণ করে অথবা নিহত হয় তবে তোমরা কি উল্টো (কুফুরীর) দিকে ফিরে যাবে? আর কেউ উল্টো দিকে ফিরে গেলে সে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না; আর আল্লাহ্‌ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদেরকে পুরষ্কৃত করবেন।
রাসুলের নির্দেশ অমান্যের পরিণামে উহুদ যুদ্ধে মুসলিমদের বিপর্যয় হয়েছিলঃ
3 :152
وَلَقَدْ صَدَقَكُمُ اللّهُ وَعْدَهُ إِذْ تَحُسُّونَهُم بِإِذْنِهِ حَتَّى إِذَا فَشِلْتُمْ وَتَنَازَعْتُمْ فِي الأَمْرِ وَعَصَيْتُم مِّن بَعْدِ مَا أَرَاكُم مَّا تُحِبُّونَ مِنكُم مَّن يُرِيدُ الدُّنْيَا وَمِنكُم مَّن يُرِيدُ الآخِرَةَ ثُمَّ صَرَفَكُمْ عَنْهُمْ لِيَبْتَلِيَكُمْ وَلَقَدْ عَفَا عَنكُمْ وَاللّهُ ذُو فَضْلٍ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ
আর অবশ্যই আল্লাহ্‌ তোমাদের সাথে তার ওয়াদা পূর্ণ করলেন, যখন তোমরা তার অনুমোদন ক্রমে তাদেরকে (কাফিরদের) বিনাশ করছিলে, যতক্ষন না তোমরা সাহস হারালে ও (রাসুলের) নির্দেশ সমন্ধে মতভেদ করলে এবং তোমাদের কাম্য বস্তু (গনিমত, বিজয়) দেখানোর পর তোমরা অবাধ্য হলে। তোমাদের কতক দুনিয়া চাচ্ছিল আর কতক আখিরাত চাচ্ছিল। অতপর তিনি পরীক্ষা করার জন্য তোমাদেরকে তাদের থেকে ফিরিয়ে দিলেন। অবশ্য তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন, আর আল্লাহ্‌ মুমিনদের প্রতি অনুগ্রহশীল।
3 :153
إِذْ تُصْعِدُونَ وَلاَ تَلْوُونَ عَلَى أحَدٍ وَالرَّسُولُ يَدْعُوكُمْ فِي أُخْرَاكُمْ فَأَثَابَكُمْ غُمَّاً بِغَمٍّ لِّكَيْلاَ تَحْزَنُواْ عَلَى مَا فَاتَكُمْ وَلاَ مَا أَصَابَكُمْ وَاللّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
(And remember) when you ran away (dreadfully) without even casting a side glance at anyone, and the Messenger (Muhammad SAW) was in your rear calling you back. There did Allâh give you one distress after another by way of requital to teach you not to grieve for that which had escaped you, nor for that which had befallen you. And Allâh is WellAware of all that you do.
(স্মরণ কর) যখন তোমরা (উহুদ যুদ্ধেক্ষেত্র থেকে) উর্দ্ধমুখে ছুটছিলে এবং পিছন ফিরে কারও দিকে তাকাচ্ছিলে না, অথচ রাসুল তোমাদেরকে পিছন থেকে আহ্বান করছিলেন। ফলে তিনি তোমাদের বিপদের উপর বিপদ দিলেন তোমাদের শিক্ষা দেয়ার জন্য তোমরা যা হারিয়েছ অথবা যে দুর্যোগ তোমাদের উপর এসেছে তার জন্য দুঃখিত না হও। তোমরা যা কর আল্লাহ্‌ তা বিশেষভাবে অবহিত।
রাসুল (ﷺ). হলেন আল্লাহর অনুগ্রহ, ওহীর সংবাদ দানকারী, উম্মতের পরিশুদ্ধকারী, কিতাব ও হিকমাহ্ শিক্ষাদানকারীঃ
3 :164
لَقَدْ مَنَّ اللّهُ عَلَى الْمُؤمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولاً مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُواْ مِن قَبْلُ لَفِي ضَلالٍ مُّبِينٍ
আল্লাহ্‌ মুমিনদের উপর অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের নিজেদের মধ্য থেকে তাদের নিকট একজন রাসুল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাঁর (আল্লাহর) আয়াত সমূহ তাদের নিকট পাঠ করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং তাদেরকে শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমাত (প্রজ্ঞা), যদিও তারা ইতিপূর্বে সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিল।
মতভেদ হলে আল্লাহ্ ও রাসুলের দিকে প্রত্যাবর্তনের নির্দেশঃ
4: 59
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ فَإِن تَنَازَعْتُمْ فِي شَيْءٍ فَرُدُّوهُ إِلَى اللّهِ وَالرَّسُولِ إِن كُنتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ ذَلِكَ خَيْرٌ وَأَحْسَنُ تَأْوِيلاً
হে মু‘মিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ্‌র, আনুগত্য কর রাসুলের এবং তাদের যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী। কোন বিষয়ে মতভেদ ঘটিলে তা প্রত্যার্পণ কর আল্লাহ্‌ ও রাসুলের (অর্থাৎ আল্লাহ্ ও মুহাম্মদ সা. এর বিধানের) প্রতি -যদি তোমরা আল্লাহ্‌ ও পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাক। এটাই উত্তম এবং পরিণামে প্রকৃষ্টতর।
যারা আল্লাহ্ ও রাসুলের ফয়সালা উপেক্ষা করে তাগুতের কাছ বিচার প্রার্থী তারা মুনাফিকঃ
4 :60 أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آمَنُواْ بِمَا أُنزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنزِلَ مِن قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَن يَتَحَاكَمُواْ إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُواْ أَن يَكْفُرُواْ بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُضِلَّهُمْ ضَلاَلاً بَعِيدًا
তুমি কি তাদেরকে দেখনি যারা দাবী করে যে, তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং তোমার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তারা বিশ্বাস করে, অথচ তারা তাগুতের কাছে বিচার প্রার্থী হতে চায়, যদিও তা প্রত্যাখ্যান করার জন্য তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর শয়তান তাদেরকে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট করতে চায়?
4 :61  وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْاْ إِلَى مَا أَنزَلَ اللّهُ وَإِلَى الرَّسُولِ رَأَيْتَ الْمُنَافِقِينَ يَصُدُّونَ عَنكَ صُدُودًا
তাদেরকে যখন বলা হয় আল্লাহ্‌ যা অবতীর্ণ করেছেন তার দিকে এবং রাসুলের দিকে এসো, তখন মুনাফিকদের তুমি তোমার নিকট থেকে সম্পূর্ণরূপে মুখ ফিরিয়ে নিতে দেখবে।
4 :62 فَكَيْفَ إِذَا أَصَابَتْهُم مُّصِيبَةٌ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ ثُمَّ جَآؤُوكَ يَحْلِفُونَ بِاللّهِ إِنْ أَرَدْنَا إِلاَّ إِحْسَانًا وَتَوْفِيقًا
তাদের কৃতকর্মের জন্য যখন তাদের কোন মুসীবত হবে তখন তাদের কি অবস্থা হবে? অতপর তারা আল্লাহ্‌র নামে শপথ করে তোমার নিকট এসে বলবে, ‘আমরা কল্যাণ ও সম্প্রীতি ছাড়া অন্য কিছুই চাইনি।’
4: 63 أُولَئِكَ الَّذِينَ يَعْلَمُ اللّهُ مَا فِي قُلُوبِهِمْ فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ وَعِظْهُمْ وَقُل لَّهُمْ فِي أَنفُسِهِمْ قَوْلاً بَلِيغًا
এরাই তারা, যাদের অন্তরে কী আছে আল্লাহ্‌ তা জানেন। সুতরাং তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও এবং তাদেরকে তাদের মর্ম স্পর্শ করে এমন কথা বল।
4 :65 فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّىَ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لاَ يَجِدُواْ فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسْلِيمًا
কিন্তু না, তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মু‘মিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসম্বাদের বিচার ভার তোমার উপর অর্পণ না করে; অতপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে তাদের মনে কোন সংশয় না থাকে এবং সর্বান্তকরণে তা মেনে না নেয়।
রাসুল প্রেরণের উদ্দেশ্য আল্লাহর নির্দেশের আনুগত্য করা, রাসুলের আনুগত্যই আল্লাহর আনুগত্যঃ
4: 64 وَمَا أَرْسَلْنَا مِن رَّسُولٍ إِلاَّ لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللّهِ وَلَوْ أَنَّهُمْ إِذ ظَّلَمُواْ أَنفُسَهُمْ جَآؤُوكَ فَاسْتَغْفَرُواْ اللّهَ وَاسْتَغْفَرَ لَهُمُ الرَّسُولُ لَوَجَدُواْ اللّهَ تَوَّابًا رَّحِيمًا
রাসুল এই উদ্দেশ্যেই প্রেরণ করেছি যে, আল্লাহ্‌র নির্দেশ অনুসারে তাঁর আনুগত্য করা হবে। যখন তারা নিজেদের প্রতি যুলুম করে তখন তারা তোমার নিকট আসলে ও আল্লাহ্‌র ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং রাসুলও তাদের জন্য ক্ষমা চাইলে তারা আল্লাহ্‌কে পরম ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালুরূপে পাবে।
4: 80 مَّنْ يُطِعِ الرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ اللّهَ وَمَن تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا
কেউ রাসুলের আনুগত্য করিলে সে তো আল্লাহ্‌রই আনুগত্য করল, কিন্তু যে মুখ ফিরিয়ে নেয় (সেক্ষেত্রে) তোমাকে তার উপর তত্ত্ববধায়করূপে প্রেরণ করিনি।
হিজরত্ও আল্লাহ্ এবং রাসুলের দিকে হয়েছিলঃ
4: 100 وَمَن يُهَاجِرْ فِي سَبِيلِ اللّهِ يَجِدْ فِي الأَرْضِ مُرَاغَمًا كَثِيرًا وَسَعَةً وَمَن يَخْرُجْ مِن بَيْتِهِ مُهَاجِرًا إِلَى اللّهِ وَرَسُولِهِ ثُمَّ يُدْرِكْهُ الْمَوْتُ فَقَدْ وَقَعَ أَجْرُهُ عَلى اللّهِ وَكَانَ اللّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا
আর যে আল্লাহ্‌র পথে হিজরত করবে সে দুনিয়ায় বহু আশ্রয়স্থল ও প্রাচুর্য খুজে পাবে। আর যে কেউ আল্লাহ্‌ ও রাসুলের উদ্দেশ্যে নিজ গৃহ থেকে মুহাজির হয়ে বের হল এবং তার মৃত্যু ঘটলো, তবে নিশ্চিতরূপে তার পুরস্কারের দায়ীত্ব আল্লাহ্‌র উপর; আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
আল্লাহ রাসুল (ﷺ). এর শিক্ষক ও তার প্রতি আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহঃ
4 :113 وَلَوْلاَ فَضْلُ اللّهِ عَلَيْكَ وَرَحْمَتُهُ لَهَمَّت طَّآئِفَةٌ مُّنْهُمْ أَن يُضِلُّوكَ وَمَا يُضِلُّونَ إِلاُّ أَنفُسَهُمْ وَمَا يَضُرُّونَكَ مِن شَيْءٍ وَأَنزَلَ اللّهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ وَكَانَ فَضْلُ اللّهِ عَلَيْكَ عَظِيمًا
(হে রাসূল!) তোমার প্রতি আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তাদের একদল তোমাকে পথভ্রষ্ট করতে সংকল্প করেই ফেলেছিল; কিন্তু (প্রকৃত পক্ষে) তারা নিজেদেরকে ব্যতীত আর কাউকে পথভ্রষ্ট করে না এবং তোমার কোনই ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহ্‌ তোমার প্রতি কিতাব এবং হিক্‌মত নাযিল করেছেন এবং তুমি যা জানতে না তা তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন। তোমার প্রতি আল্লাহ্‌র বিরাট অনুগ্রহ রয়েছে।
রাসুলের বিরুদ্ধাচারীকে বিভ্রান্ত করে জাহান্নামে পাঠানো হবেঃ
4 :115 وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءتْ مَصِيرًا
যে কেউ রাসুলের (অর্থাৎ মুহাম্মদ সা. এর) সাথে মতভেদ ও বিরুদ্ধাচরন করে, তার নিকট সৎপথ বয়ান করার পরও সে যদি  বিশ্বাসীদের পথ ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করে তবে যেদিকে সে ফিরে যায় সেদিকেই তাকে ফিরিয়ে দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব; আর তা কত জঘন্য আবাস!
যারা আল্লাহ্ ও রাসুলদের মধ্যে পার্থক্য করে তারা কাফেরঃ
4: 150 إِنَّ الَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِاللّهِ وَرُسُلِهِ وَيُرِيدُونَ أَن يُفَرِّقُواْ بَيْنَ اللّهِ وَرُسُلِهِ وَيقُولُونَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَنَكْفُرُ بِبَعْضٍ وَيُرِيدُونَ أَن يَتَّخِذُواْ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلاً
যারা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুলদের প্রত্যাখ্যান করে এবং আল্লাহ্ ও তার রাসুলের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় (যথা আল্লাহর উপর ঈমান আনবে কিন্তু সব রাসুলের উপর আনবে না) এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি ও কতককে প্রত্যাখ্যান করি’ এবং এর মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করতে চায়-
4 :151 أُوْلَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ حَقًّا وَأَعْتَدْنَا لِلْكَافِرِينَ عَذَابًا مُّهِينًا .
এসব লোকই যথার্থ কাফির। আর জন্য কাফিরদের জন্য আমি লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছি।
রাসুল (ﷺ). ছিলেন নুরঃ
5: 15 يَا أَهْلَ الْكِتَابِ قَدْ جَاءكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِّمَّا كُنتُمْ تُخْفُونَ مِنَ الْكِتَابِ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ قَدْ جَاءكُم مِّنَ اللّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ
হে কিতাবীগণ! নিশ্চয়ই আমার রাসুল (মুহাম্মদ ﷺ.) তোমাদের নিকট এসেছেন, তোমরা কিতাবের যা গোপন করতে তিনি সেগুলোর অনেক কিছু তোমাদের নিকট প্রকাশ করেন এবং অনেক উপেক্ষা করে থাকেন। (এখন তো) আল্লাহ্‌র নিকট থেকে তোমাদের নিকট এসেছে এক নুর (মুহাম্মদ ﷺ.) ও স্পষ্ট কিতাব (কুরআন)।
আল্লাহ্ ও রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধকারীর শাস্তিঃ
5 :33 إِنَّمَا جَزَاء الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُواْ أَوْ يُصَلَّبُواْ أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلافٍ أَوْ يُنفَوْاْ مِنَ الأَرْضِ ذَلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا وَلَهُمْ فِي الآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ
যারা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, (তাদের শাস্তি এই যে) তাদেরক হত্যা করা হবে অথবা শুলীবিদ্ধ করা হবে অথবা তাদের বিপরীত দিকের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। এটা তাদের জন্য দুনিয়ায় লাঞ্ছনা, আর আখিরাতে তাদের জন্য রয়েছে (আরও) কঠিন শাস্তি।
আল্লাহ্ মুহাম্মদ (ﷺ). মানুষ থেকে রক্ষার ঘোষনা দিয়েছেনঃ
5: 67 يَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنزِلَ إِلَيْكَ مِن رَّبِّكَ وَإِن لَّمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللّهَ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ
হে রাসুল (মুহাম্মদ)! তোমার প্রতি তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে যা নাযিল হয়েছে তা প্রচার কর; যদি তা না কর তবে তো তুমি তার বার্তা পৌছে দিলে না। আল্লাহ্‌ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ কাফির সম্প্রদায়কে পথ-প্রদর্শন করেন না।
আল্লাহ্ মুহাম্মদ (ﷺ). কে সমগ্র মানব জাতির জন্য রাসুল রূপে প্রেরণ করেছেনঃ
7 :158 قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنِّي رَسُولُ اللّهِ إِلَيْكُمْ جَمِيعًا الَّذِي لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ لا إِلَهَ إِلاَّ هُوَ يُحْيِي وَيُمِيتُ فَآمِنُواْ بِاللّهِ وَرَسُولِهِ النَّبِيِّ الأُمِّيِّ الَّذِي يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَكَلِمَاتِهِ وَاتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمْ تَهْتَدُونَ
বল (হে মুহাম্মদ ﷺ.) ‘হে মানব জাতি! আমি তোমাদের সকলের জন্য প্রেরিত আল্লাহর রাসুল, যিনি আসমান যমীনের সার্বভৌমত্বের অধিকারী। তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্‌ নেই; তিনিই জীবিত করেন ও মৃত্যু ঘটান। সুতরাং তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তার বার্তাবাহক উম্মী নবীর প্রতি (অর্থাৎ অ-ইসরাঈলীয় নবী মুহাম্মদ সা. এর প্রতি) যে আল্লাহ্ ও তার বানীতে (তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল ও এই কুরআনে) ঈমান এনেছে, আর তোমরা তাকেই (অর্থাৎ মুহাম্মদ সা. কেই) অনুসরণ কর যেন তোমরা সঠিক পথ পেতে পার।’
আল্লাহ্ ও রাসুল (ﷺ). আনফালের (যুদ্ধলব্ধ গনীমতের) মালিকঃ
8: 1 يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأَنفَالِ قُلِ الأَنفَالُ لِلّهِ وَالرَّسُولِ فَاتَّقُواْ اللّهَ وَأَصْلِحُواْ ذَاتَ بِيْنِكُمْ وَأَطِيعُواْ اللّهَ وَرَسُولَهُ إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ
(হে মুহাম্মদ ﷺ.) তারা তোমাকে আনফাল (যুদ্ধলব্ধ মালামাল) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, আনফাল আল্লাহ্ ও রাসুলের। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ও নিজেদের মধ্যকার বিষয়সমূহ সংশোধন কর (পরস্পর সদ্ভাব বজায় রাখ), আর আল্লাহ্ ও তার রাসুল (মুহাম্মদ ﷺ.) এর আনুগত্য কর- যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাক।
8: 41 وَاعْلَمُواْ أَنَّمَا غَنِمْتُم مِّن شَيْءٍ فَأَنَّ لِلّهِ خُمُسَهُ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ إِن كُنتُمْ آمَنتُمْ بِاللّهِ وَمَا أَنزَلْنَا عَلَى عَبْدِنَا يَوْمَ الْفُرْقَانِ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعَانِ وَاللّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
আর জেনে রেখ যে, তোমরা যে যুদ্ধলব্ধ গণীমত লাভ কর তার এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহর, রাসুলের, রাসুলের স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিসকীনদের এবং মুসাফিরদের, (তোমরা এ নির্দেশের অনুসরণ কর) যদি তোমরা ঈমান রাখ আল্লাহর উপর এবং তার উপর যা (সত্য-মিথ্যার) ফয়সালার দিন আমি আমার বান্দার উপর নাযিল করেছিলাম- যেদিন দুদল পরস্পর মুখোমুখী হয়েছিল (বদর যুদ্ধে)। আর আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান (অর্থাৎ কর্ম, হুকুম ও বিধানের মালিক)।
রাসুল (ﷺ) থেকে বিমুখ হয়ো নাঃ
8 :20 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَرَسُولَهُ وَلاَ تَوَلَّوْا عَنْهُ وَأَنتُمْ تَسْمَعُونَ
ওহে যারা ঈমান এনেছ তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর ও তার রাসুলের এবং তোমরা তার (মুহাম্মদ সা. এর) থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না (এরপরও) যখন তোমরা (তার আহ্বান) শুনেছ।
রাসুল (ﷺ). এর উপস্থিতিতে আল্লাহ্ শাস্তি পাঠাবেন না অথচ অন্য নবীদের উপস্থিতিতে বিরোধীদের উপর শাস্তি এসেছিলঃ
8: 33 وَمَا كَانَ اللّهُ لِيُعَذِّبَهُمْ وَأَنتَ فِيهِمْ وَمَا كَانَ اللّهُ مُعَذِّبَهُمْ وَهُمْ يَسْتَغْفِرُونَ
আল্লাহ্ এমন নন যে তাদের শাস্তি দিবেন যখন তুমি (মুহাম্মদ ﷺ) তাদের মধ্যে রয়েছ (রাসুল ﷺ. কে আল্লাহ্ বিশ্বজগতের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন- তার উপস্থিতিতে গযব আসা সমীচিন নয় [২১:১০৭])। আর আল্লাহ্ এমনও নন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে (অর্থাৎ আল্লাহ্ তো জানেন যে ভবিষ্যতে মুহাম্মদ সা. এর পুরো কওমই ইসলাম গ্রহণ করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে) অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দিবেন।
রাসুল (ﷺ). কে প্রেরণ করা হয়েছে হেদায়েত ও সত্যসহ সকল ধর্মের উপর বিজয়ী হওয়ার জন্যঃ
9 :33 هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ
তিনিই তাঁর রাসুল (মুহাম্মদ ﷺ.) কে প্রেরণ করেছেন হেদায়েত ও সত্য ধর্ম সহকারে তা অপরাপর সকল ধর্মের উপর বিজয়ী হওয়ার জন্য, যদিও তা মুশরিকরা অপছন্দ করে।
মুমিনদের জন্য রাসুল ﷺ. রহমত স্বরূপ, তাঁকে কষ্টদানকারীর জন্য রয়েছে যন্ত্রণাময় শাস্তিঃ
9 :61 وَمِنْهُمُ الَّذِينَ يُؤْذُونَ النَّبِيَّ وَيِقُولُونَ هُوَ أُذُنٌ قُلْ أُذُنُ خَيْرٍ لَّكُمْ يُؤْمِنُ بِاللّهِ وَيُؤْمِنُ لِلْمُؤْمِنِينَ وَرَحْمَةٌ لِّلَّذِينَ آمَنُواْ مِنكُمْ وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ اللّهِ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
আর তোমাদের মধ্যে এমন লোকও রয়েছে যারা নবীকে (মুহাম্মদ ﷺ. কে) কষ্ট দেয় এবং বলে, ‘সে তো (সকল কথায়) কর্ণপাতকারী।’ বল (হে মুহাম্মদ ﷺ.!), ‘তার কর্ণপাত তো তোমাদের জন্য কল্যাণকর।’ সে তো আল্লাহর উপর (সুদৃঢ়) ঈমান রাখে এবং মুমিনদের বিশ্বাস করে। তোমাদের মধ্যে যারা মুমিন তিনি তাদের জন্য রহমত, কিন্তু যারা আল্লাহর রাসুলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাময় শাস্তি।
রাসুল ﷺ. উম্মতের জন্য অতি কল্যাণকামী ও সমব্যথিঃ
9 :128 لَقَدْ جَاءكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের নিকট এক রাসুল (মুহাম্মদ ﷺ.) এসেছেন (অর্থাৎ তোমরা তাকে ভাল করেই চিন)। তোমাদেরকে যা বিপন্ন করে (যেমন জিহাদের যখম অথবা অন্যবিধ কষ্ট ও ক্ষতি) তা তার জন্য কষ্টদায়ক (অর্থাৎ তাকে মর্মকষ্ট দেয়)। তিনি তোমাদের জন্য কল্যাণকামী (টিকাঃ হারীছুন অর্থ কল্যাণে অত্যাকাংখী যেন তোমরা সত্যিকারের হেদায়েত পাও এবং আল্লাহর নিকট তওবা করে ক্ষমা প্রাপ্ত হও, জাহান্নামের অগ্নি থেকে বাঁচতে পার ও জান্নাতে প্রবীষ্ট হতে পার), মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও মেহেরবান।
কুরআন ঘোষনা করছে যে মুহাম্মদ ﷺ. ও কুরআনের উল্লেখ পূর্ববর্তী কিতাবসমূহে ছিলঃ
10 :94 فَإِن كُنتَ فِي شَكٍّ مِّمَّا أَنزَلْنَا إِلَيْكَ فَاسْأَلِ الَّذِينَ يَقْرَؤُونَ الْكِتَابَ مِن قَبْلِكَ لَقَدْ جَاءكَ الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَلاَ تَكُونَنَّ مِنَ الْمُمْتَرِينَ
সুতরাং যদি তুমি তোমার নিকট যা নাযিল করেছি তাতে (অর্থাৎ কুরআন বা তোমার নাম যে তাওরাত ও ইঞ্জিল এ উল্লেখিত রয়েছে সে বিষয়ে) সন্দেহ কর তবে যারা পূর্বের কিতাব (অর্থাৎ তাওরাত ও ইঞ্জিল) পাঠ করেছে তাদেরকে (অর্থাৎ সেই সকল মুমিন যারা ইহুদী বা খৃষ্টান থেকে ইসলামে দাখিল হয়েছে অথবা যারা তাওরাত ও ইঞ্জিলের বানী লুকায় না তাদেরকে) জিজ্ঞেস কর; তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে অবশ্যই তোমার নিকট সত্য (কিতাব কুরআন ও জীবরাঈল) এসেছে। অতএব তুমি (কোন ভাবেই) সংশয়ীদের অর্ন্তভূক্ত হয়ো না। [সুত্র: বহু পরিবর্তন ও বিকৃতির পরও বর্তমান তাওরাত ও ইঞ্জিলে মুহাম্মদ সা. উল্লেখ রয়েছে তার গুণাবলী দিয়ে, কিন্তু তার নামকে মুছে ফেলা হয়েছে; যেমনঃ তাওরাত ২:১৮:১৫-১৯; ৫:৩৩:২-৩; তা ছারা বর্ণাবা এর বর্ণিত বাইবেলে এখনও মুহাম্মদ সা. নাম উল্লেখিত রয়েছে -কিন্তু বর্তমান খৃষ্ট সম্প্রদায় সেটাকে প্রত্যাখ্যান করে]
আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত রাসুল ﷺ. কোন মুজিজা প্রকাশ করতে পারেন নাঃ
13: 38 وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلاً مِّن قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةً وَمَا كَانَ لِرَسُولٍ أَن يَأْتِيَ بِآيَةٍ إِلاَّ بِإِذْنِ اللّهِ لِكُلِّ أَجَلٍ كِتَابٌ
তোমার আগেও অনেক রাসুল প্রেরণ করেছিলাম এবং তাদেরকে স্ত্রী ও সন্তানাদি দিয়েছিলাম। আল্লাহ্‌র অনুমতি ব্যতীত কোন নিদর্শন উপস্থিত করা কোন রাসুলের কাজ নয়। প্রত্যেক যুগের জন্য নির্ধারিত কিতাব (বিধি) রয়েছে।
রাসুল ﷺ. এর নিকট কাফিরদের মুজিজা দাবী এবং তদুত্তরে আল্লাহ্‍র নির্দেশঃ
17:90 وَقَالُواْ لَن نُّؤْمِنَ لَكَ حَتَّى تَفْجُرَ لَنَا مِنَ الأَرْضِ يَنبُوعًا
17: 91 أَوْ تَكُونَ لَكَ جَنَّةٌ مِّن نَّخِيلٍ وَعِنَبٍ فَتُفَجِّرَ الأَنْهَارَ خِلالَهَا تَفْجِيرًا
17: 92 أَوْ تُسْقِطَ السَّمَاء كَمَا زَعَمْتَ عَلَيْنَا كِسَفًا أَوْ تَأْتِيَ بِاللّهِ وَالْمَلآئِكَةِ قَبِيلاً
17: 93 أَوْ يَكُونَ لَكَ بَيْتٌ مِّن زُخْرُفٍ أَوْ تَرْقَى فِي السَّمَاء وَلَن نُّؤْمِنَ لِرُقِيِّكَ حَتَّى تُنَزِّلَ عَلَيْنَا كِتَابًا نَّقْرَؤُهُ قُلْ سُبْحَانَ رَبِّي هَلْ كُنتُ إَلاَّ بَشَرًا رَّسُولاً
আর তারা বলে, ‘আমরা কখনো তোমার প্রতি ঈমান আনব না যতক্ষণ না তুমি আমাদের জন্য ভুমি থেকে এক ঝর্ণা উৎসারিত কর, অথবা তোমার খেজুরের অথবা আংগুরের এক বাগান হবে যার ফাঁকে ফাঁকে তুমি অজস্র ধারায় ঝর্ণা প্রাবহিত করে দিবে।
অথবা তুমি যেমন বলে থাক তদনুযায়ী আকাশকে খণ্ড-বিখণ্ড করে আমাদের উপর পতিত করবে, অথবা আল্লাহ্‌ ও ফিরিশ্‌তাগণকে আমাদের সামনা-সামনি উপস্থিত করবে, অথবা তোমার একটি স্বর্ণ নির্মিত গৃহ হবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে। কিন্তু তোমার আকাশ আরোহণে আমরা কখনও ঈমান আনব না যতক্ষণ তুমি আমাদিগের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ না করবে যা আমরা পাঠ করব।’ বলঃ পবিত্র মহান আমার প্রতিপালক! আমি কি একজন মানুষ ও রাসুল ব্যতীত আর কিছু (যে এসব করার ক্ষমতা রাখি)?’
সকল রাসুলের নিকট একই নির্দেশঃ
21 25 وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ إِلَّا نُوحِي إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُونِ
আমি তোমার পূর্বে এমন রাসুল প্রেরণ করিনি তার প্রতি এ ওহী ব্যতীত যে, ‘আমি ব্যতীত অন্য কোন উপস্য নেই, সুতরাং তোমরা (একমাত্র) আমারই ইবাদত কর।’
নবীদের তেলাওয়াতের মধ্যে শয়তানের প্রক্ষেপ থেকে আল্লাহ্ তাঁর বানীকে হেফাজত করেনঃ
22: 51 وَالَّذِينَ سَعَوْا فِي آيَاتِنَا مُعَاجِزِينَ أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ
আর যারা আমার আয়াতসমূহকে ব্যর্থ করার প্রচেষ্টা করে তারাই হবে দোযখের অধিবাসী।
22: 52 وَمَا أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رَّسُولٍ وَلَا نَبِيٍّ إِلَّا إِذَا تَمَنَّى أَلْقَى الشَّيْطَانُ فِي أُمْنِيَّتِهِ فَيَنسَخُ اللَّهُ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ ثُمَّ يُحْكِمُ اللَّهُ آيَاتِهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
আমি তোমার পূর্বে এমন কোন রাসুল বা নবী পাঠাই নি যে, তাদের কেউ যখন কোন আকাংখা করেছে, শয়তান তখনই তার আকাংখায় কিছু ইল্‌কা (প্রক্ষেপণ) করে নি। কিন্তু শয়তান যা ইল্‌কা (প্রক্ষেপণ) করে, আল্লাহ্ তা বিদূরীত করেন। অতপর আল্লাহ্ তাঁর আয়াতসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
22: 53 لِيَجْعَلَ مَا يُلْقِي الشَّيْطَانُ فِتْنَةً لِّلَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ وَالْقَاسِيَةِ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَفِي شِقَاقٍ بَعِيدٍ
এটা এজন্য যে, শয়তান যা ইল্‌কা (প্রক্ষেপণ) করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করেন তাদের জন্য যাদের অন্তরে ব্যধি রয়েছে, যারা পাষাণহৃদয়। আর যালিমরা তো সেক্ষেত্রে বিরোধিতায় বহুদূর (অগ্রসর)।
22: 54 وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِن رَّبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ
আর এজন্যও যে, যাদেরকে জ্ঞান দেয় হয়েছে তারা জানতে পারে যে -এটা (কুরআন) তোমাদের প্রতিপালকের থেকে প্রেরিত সত্য। অতপর তারা এতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর এর প্রতি অনুগত হয়। যারা ঈমান আনে আল্লাহই তাদের পথ-প্রদর্শক, সরল পথের দিকে।
22 55 وَلَا يَزَالُ الَّذِينَ كَفَرُوا فِي مِرْيَةٍ مِّنْهُ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً أَوْ يَأْتِيَهُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَقِيمٍ
আর যারা কুফুরী করে তারা এতে (কুরআনে) সন্দেহ পোষণ থেকে বিরত হবে না, যাবৎ না তাদের নিকট কিয়ামতের দিন সহসাই এসে উপস্থিত হয়। অথবা তাদের নিকট আযাব এসে উপস্থিত হয় খারাব কোন দিনে।
রাসুল ﷺ. এর অনুমতি ব্যতীত তার মজলিস থেকে চলে যাওয়া নিষেধ, তাঁর আহ্বান এর মর্যাদাঃ
24: 62 إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ آمَنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَإِذَا كَانُوا مَعَهُ عَلَى أَمْرٍ جَامِعٍ لَمْ يَذْهَبُوا حَتَّى يَسْتَأْذِنُوهُ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَأْذِنُونَكَ أُوْلَئِكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ فَإِذَا اسْتَأْذَنُوكَ لِبَعْضِ شَأْنِهِمْ فَأْذَن لِّمَن شِئْتَ مِنْهُمْ وَاسْتَغْفِرْ لَهُمُ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
তারাই মুমিন যারা আল্লাহ্ ও তার রাসুলের উপর ঈমান আনে এবং রাসুলের সংগে সমষ্টিগত ব্যাপারে একত্রিত হলে তারা তার অনুমতি ব্যতীত চলে যায় না। যারা তোমার নিকট অনুমতি প্রার্থনা করে তারাই আল্লাহ্ ও রাসুলে বিশ্বাসী। অতএব যদি তারা কোন কিছুর জন্য তোমার অনুমতি চায়, তবে তাদের যাকে ইচ্ছা তুমি অনুমতি দিও, আর তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
24 :63 لَا تَجْعَلُوا دُعَاء الرَّسُولِ بَيْنَكُمْ كَدُعَاء بَعْضِكُم بَعْضًا قَدْ يَعْلَمُ اللَّهُ الَّذِينَ يَتَسَلَّلُونَ مِنكُمْ لِوَاذًا فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
রাসুলের আহ্বানকে তোমরা তোমাদের একে অপরের প্রতি আহ্বানের মত গণ্য করো না। তোমাদের মধ্য হতে যারা গোপণে সরে পড়ে আল্লাহ্ তাদের জানেন। সুতরাং যারা তার আদেশ অমান্য করে তাদের ভয় করা উচিৎ যে, তাদের উপর বিপর্যয় আপতিত হবে অথবা তাদের উপর আপতিত হবে কঠিন শাস্তি।
রাসুল ﷺ. কুরআন উপেক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেনঃ
25: 30 وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَذَا الْقُرْآنَ مَهْجُورًا
আর (সেইদিন) রাসুল (মুহাম্মদ সা. তাঁর ভ্রষ্ট উম্মতদের বিরূদ্ধে অভিযোগ করে) বলবে, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো (আমার পরে) এই কুরআনকে (গুরুত্ব না দিয়ে) উপেক্ষা করেছিল (অর্থাৎ তারা এতে মনোনিবেশ করেনি করেনি এবং এর বিধানের মুকাবিলায় অন্য বিধান গ্রহণ করেছিল)।’
25: 31 وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا مِّنَ الْمُجْرِمِينَ وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِيًا وَنَصِيرًا
এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য শত্রু করেছি অপরাধীদেরকে। তোমার জন্য হাদী (পথ-প্রদর্শক) ও সাহায্যকারীরূপে তোমার প্রতিপালকই যথেষ্ট।
রাসুলুল্লাহ্‍র মধ্যে উত্তম আদর্শঃ
33: 21 لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا
অবশ্যই (মুহাম্মাদুর) রাসুলুল্লাহর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ, (তার জন্য) যে আশা রাখে আল্লাহর (সাথে সাক্ষাতের), শেষ দিবসের এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।
আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল কোন সিদ্ধান্ত দিলে আর কারও মতভেদের অধিকার নেইঃ
33: 36 وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِينًا
আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুল কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত দিলে আর কোন মুমিন পুরুষ বা নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না। কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলকে অমান্য করলে সে তো সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট হবে।
মুহাম্মদ ﷺ. তদানিন্তন কোন  পুরুষের পিতা নহেন, বরং আল্লাহর রাসুল ও সর্বশেষ নবীঃ
33: 40 مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
মুহাম্মদ (ﷺ.) তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নন, বরং সে আল্লাহর রাসুল এবং নবীদের মধ্যে সর্বশেষ। আর আল্লাহ্ হলেন সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ।
রাসুল ﷺ. এর ও তার প্রতি উম্মতের আদব প্রদর্শনের নির্দেশ, তাঁর মৃত্যুর পর তার স্ত্রীদের বিবাহ হারামঃ
33: 53 يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ إِلَّا أَن يُؤْذَنَ لَكُمْ إِلَى طَعَامٍ غَيْرَ نَاظِرِينَ إِنَاهُ وَلَكِنْ إِذَا دُعِيتُمْ فَادْخُلُوا فَإِذَا طَعِمْتُمْ فَانتَشِرُوا وَلَا مُسْتَأْنِسِينَ لِحَدِيثٍ إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ يُؤْذِي النَّبِيَّ فَيَسْتَحْيِي مِنكُمْ وَاللَّهُ لَا يَسْتَحْيِي مِنَ الْحَقِّ وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِن وَرَاء حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَن تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَن تَنكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِن بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِندَ اللَّهِ عَظِيمًا
হে মুমিনগণ! তোমাদের অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাদ্য প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা না করে ভোজনের জন্য নবী-গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমাদেরকে আহ্বান করলে প্রবেশ করো এবং ভোজন শেষে তোমরা চলে যেয়ো; তোমরা কথাবার্তায় মশগুল হয়োনা। নিশ্চয়ই তা নবীকে কষ্ট দেয় কিন্তু তিনি তোমাদের (তা বলতে) সংকোচ করেন, আর আল্লাহ্ সত্য বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাদের (নবী-পত্নীদের) নিকট কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটাই তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য পবিত্রতর পন্থা। তোমাদের কারও জন্য আল্লাহর রাসুলকে কষ্ট দেয়া বা তার মৃত্যুর পর তার পত্নীদের বিবাহ করা কক্ষনো সংগত নয়। আল্লাহর দৃষ্টিতে এট গুরুতর (অপরাধ)।
যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলকে কষ্ট দেয় তাদের শাস্তিঃ
33: 57 إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَابًا مُّهِينًا
যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসুলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ্ তো তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশম্পাত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক আযাব।
আল্লাহ্ রাসুল ﷺ. কে রাসুল ও সীরাতুল মুস্তাকীমে প্রতিষ্ঠিত বলে ঘোষনা দেনঃ
36: 4 – إِنَّكَ لَمِنَ الْمُرْسَلِينَ36:3;   عَلَى صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ 
(হে মুহাম্মদ!) নিঃসন্দেহে তুমি তো রাসুলগণের অন্যতম। সরল পথের (অর্থাৎ আল্লাহ্ প্রদত্ত দ্বীন ইসলামের) উপর প্রতিষ্ঠিত আছ।
রাসুল ﷺ. কেবল ওহীরই অনুসরণ করতেনঃ
46: 9 قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنْ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا بِكُمْ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
বল (হে মুহাম্মদ ﷺ.), ‘আমি রাসুলদের মধ্যে অভিনব কেউ নই (অর্থাৎ আমিই প্রথম নবী নই), আর আমি এও জানি না যে আমার ও তোমাদের সাথে (ভবিষ্যতে বা কিয়ামতের দিন) কি (আচরণ) করা হবে। আমি তো কেবল তাই-ই অনুসরণ করি যা আমার প্রতি ওহী করা হয়। আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।’
আল্লাহর রাসুলকে সহয়তা করার নির্দেশ, রাসুলের  নিকট বাইয়াত আল্লাহ্‌র নিকটই বাইয়াত
48: 9 لِتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
যেন (হে লোক সকল!) তোমরা ঈমান আন আল্লাহর উপর ও তাঁর রাসুলের উপর; আর তাকে সাহায্য কর ও সম্মান কর, এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর (অর্থাৎ আল্লাহর) তসবীহ্ কর (পবিত্রতা মহিমা কীর্তন কর)।
48 10 إِنَّ الَّذِينَ يُبَايِعُونَكَ إِنَّمَا يُبَايِعُونَ اللَّهَ يَدُ اللَّهِ فَوْقَ أَيْدِيهِمْ فَمَن نَّكَثَ فَإِنَّمَا يَنكُثُ عَلَى نَفْسِهِ وَمَنْ أَوْفَى بِمَا عَاهَدَ عَلَيْهُ اللَّهَ فَسَيُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا
নিশ্চয়ই যারা তোমার নিকট বাইয়াত (অংগীকার) করে তারা তো প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই নিকট বাই’আত করে। (বাই’আত কালে) আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর (ছিল)। অতপর যে ভঙ্গ করে, তা ভঙ্গ করার পরিণাম তারই, আর যে পূর্ণ করে ঐ বিষয় যা সে ওয়াদা করেছে আল্লাহর সাথে, তিনি তাকে অচীরেই মহাপুরস্কার দিবেন।
রাসুল ﷺ. এর সাথে প্রেরিত ধর্ম সব ধর্মের উপরে, তার সাথীদের শ্রেষ্ঠত্ব
48: 28
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا
তিনিই (আল্লাহ্), যিনি তাঁর রাসুলকে প্রেরণ করেছেন হেদায়েত ও সত্য ধর্ম (কুরআন ও ইসলাম) সহকারে, অপর সকল ধর্মের উপর একে জয়যুক্ত করার জন্য। এ বিষয়ে সাক্ষ্যদাতা হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট।
48: 29
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاء عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاء بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا
মুহাম্মদ আল্লাহর রাসুল, আর যারা তার সাথে আছে তারা কাফিরদের প্রতি কঠোর এবং নিজেদের মধ্যে সহানুভূতিশীল। তুমি তাদের দেখবে রুকুকারী ও সিজদাকারী হিসাবে (অর্থাৎ একনিষ্ঠ নামাজি হিসেবে) আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি অন্বেষন করছে। তাদের চিহ্ন যে তাদের মুখমণ্ডলে সিজদার নিদর্শন থাকে। তাদের এই বর্ণনা উল্লেখ রয়েছে তাওরাতে। আর ইঞ্জীলে তাদের চিহ্ন এরূপ যে, যেন একটি (বপনকৃত) বীজ যা অংকুর উদগত করে, তারপর একে শক্তিশালী করে, অতপর শক্ত হয়, তখন সেটা দৃঢ়ভাবে তার কাণ্ডের উপর দাড়িয়ে যায়, কৃষককে আনন্দ দেয় যেন সে তাদের দিয়ে কাফিরদের অন্তরে দাহ করে। যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাদের ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
 
Top