হায়েজের বর্ণনা


মাসআলাঃ যে রক্ত সন্তান প্রসব ছাড়া স্ত্রীলোকদের জরায়ু থেকে আসে তাকে হায়েজ বলে। হায়েজ শব্দের আভিধানিক অর্থ প্রবাহিত হওয়া। শরীয়তের পরিভাষায় প্রতিমাসে বালেগা মেয়েদের জরায়ু থেকে যোনিপথে যে রক্ত প্রবাহিত হয় তাকে হায়েজ তথা ঋতুস্রাব বলে। কুরআন ও হাদীসে এই রক্তকে অপবিত্র বলা হয়েছে, যা গলীজ তথা গাঢ় নাজাসাতের অন্তর্ভুক্ত। কাপড়ে লাগলে কাপড় ধুয়ে পাক করে নিতে হবে। আর হায়েজের রক্তের রং লাল, কালো, হলুদ, সবুজ, ঘোলা ও মেঠো হয়। ৯

➥৯. আলমগীরী।


উল্লেখ্য যে, হায়েজের মেয়াদ সর্বনিম্ন তিন দিন তিন রাত আর ঊর্ধ্বে দশ দিন দশ রাত। তাই তিন দিন তিন রাত থেকে কম এবং দশ দিন দশ রাত থেকে বেশী হয়েজের খুন তথা রক্ত হয়না। যদি এ নির্দিষ্ট মেয়াদ থেকে কম বা বেশী হয়, তাহলে এ ধরনের রক্তকে ইস্তেহাজা বলা হবে। ১০

➥১০.  তান্বিরুল আবছার, দুররে মুখতার, শামী, পৃষ্ঠা-১৯৮।

 

মাসআলাঃ যদি কোন মহিলা পবিত্রাবস্থায় নামায অথবা রোযা আরম্ভ করল, অতঃপর নামায রোযার ভিতরে স্রাব আরম্ভ হয়ে গেল এক্ষেত্রে যদি নামায অথবা রোযা নফল হয় তবে উভয়ের ক্বাজা ওয়াজিব হবে। আর যদি ফরয হয় তবে শুধুমাত্র ফরয রোযার ক্বাজা ওয়াজিব হবে। নামাযের নয়।  ১১

➥১১.  দুররে মুখতার, শামী, পৃষ্ঠা- ১৯৩।

 

মাসআলাঃ ঋতুবতী ও প্রসুতি তথা হায়েজ ও নেফাসদারী মহিলার জন্য নামায পড়া, রোযা রাখা, কাবা ঘরের তাওয়াফ করা, কোরআন শরীফ পড়া, কোরআন শরীফ স্পর্শ করা ও সঙ্গম করা হারাম। ১২

➥১২. আলমগীরী, দুররে মুখতার।

 

মাসআলাঃ ঋতুবতী মহিলার হাত দ্বারা খাবার পাক করানো ও তৈরীকৃত খাবার খাওয়া এবং তার ব্যবহৃত দ্রব্য ব্যবহার করা সব জায়েয আছে। আর ঋতুবতী মহিলাকে নিজ বিছানা থেকে পৃথক করা উচিত নয়। এ ধরনের কাজ হিন্দু ও ইহুদীদের কাজের অনুরূপ। ১৩

➥১৩. ফতোয়ায়ে শামী।

 

মাসআলাঃ ইস্তেহাজা একটি রোগ বিশেষের নাম। ইস্তেহাজার খুন জরায়ু থেকে নির্গত হয় না। বরং যোনি পথের অভ্যন্তরের সাথে সম্পৃক্ত কোন রগ ফেটে গিয়ে যে রক্ত নির্গত হয় তাকে ইস্তেহাজা বলে। এ সময় সহবাস ও নামায ইত্যাদি জায়েয আছে। তবে ঐ মহিলা মাযুর তথা অপারগ ব্যক্তির মত প্রত্যেক নামাযের জন্য নতুন অযু করবে।


মাসআলাঃ যদি কোন মহিলা শিক্ষিকা হয়, তবে হায়েজ ও নেফাজের অবস্থায় কোরআন শরীফ শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে একটি শব্দ করে শিখাবে এবং দুই শব্দের মধ্যখানে থামবে। অর্থাৎ থেমে থেমে উচ্চারণ করবে। কোরআন শরীফ বানান করানো তার জন্য জায়েয আছে। তবে কোরআন শরীফ পড়া এবং স্পর্শ করা হারাম।

 
Top