❏ প্রশ্ন-৫১ঃ কিয়ামত দিবসে নবী করীম (ﷺ)’র সুপারিশ কত প্রকারের হবে?


✍ উত্তরঃ আল্লাহর সাহায্য ও তাঁর তাওফীকের ওপর ভরসা করে উত্তর প্রদান করছি। মোস্তফা(ﷺ)  র সুপারিশ ১২ প্রকারের হবেঃ-


১.শাফা‘আতে কুবরাঃ ইতিপূর্বে এর আলোচনা করা হয়েছে।

২.شفاعة ادخال فى الجنة بلاحساب‘হিসেব-নিকেশ ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করানোর জন্য সুপারিশ।’ এটিও নবী করীম  -এর বৈশিষ্ট্য।

৩.হিসেব-নিকেশের পর জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের জন্য সুপারিশ।

৪.পদমর্যাদা উন্নতির ক্ষেত্রে জান্নাতবাসীদের জন্য সুপারিশ।

৫.কিছু সংখ্যক কাফির ও অমুসলিমদের আযাব হ্রাস করার জন্য সুপারিশ। অমুসলিম হওয়া সত্ত্বেও যারা নবীজিকে সহযোগিতা করতো এবং তাঁকে ভালোবাসতো তাদের জন্য এই সুপারিশ যেমন, আবু তালেব প্রমুখ।

৬.আমলসমূহ পরিমাপের সময় উম্মতের জন্য সুপারিশ।

৭.হিসেব গ্রহণে শিথিলতা প্রদর্শনের জন্য একটি দলের পক্ষে সুপারিশ।

৮.স্খলন ও ইবাদত-অনুগত্যে দুর্বলতা ও ত্রুটি ক্ষমা করার জন্য সুপারিশ।

৯.আ’রাফবাসীদের জন্য সুপারিশ।

১০.মুশরিক ও অমুসলিমদের শিশুদের জন্য সুপারিশ।

১১.আহলে বায়ত বা নবী-পরিবারের জন্য সুপারিশ।

১২.মক্কা, মদিনা এবং তায়েফবাসীদের জন্য সুপারিশ।


উল্লেখ্য, ইমাম ইবনে হাজর আস্কালানী (رحمه الله تعالي ) রওযা পাক যিয়ারতকারী, আযানের উত্তরদাতা এবং নবী  -এর জন্য ওয়াসিলা ও সবোর্চ্চ মর্যাদার দো‘আ পাঠকারীর জন্য সুপারিশকে পঞ্চম ভাগে অন্তরÍভূক্ত করেছেন।

আরেকটি শাফাআত বা সুপারিশ হলো তুফাইলী শাফা‘আত বা মাধ্যম দ্বারা সুপারিশ। এটি আবার কয়েক রকমের হয়ে থাকে। এই ধরনের সুপারিশে অনেকেই নবী, ওলি, আলিম-ওলামা এবং পূণ্যাত্মা মনীষীদেরও শামিল করেছেন। এসব তুফাইলী শাফা‘আত মোস্তফা (ﷺ)  -এর মাধ্যমে হবে।

হযরত শাহ আবদুল আযিয দেহলভী (رحمه الله تعالي ) স্বীয় তাফসীরগ্রন্থে বলেন, তিয়াত্তোর দল তাদের গুনাহের মাত্রা অনুসারে আযাব পাবে। এমনকি নবীগণ, ওলিগণ, আলিম-ওলামা, শহীদগণ ও ফেরেশতাদের সুপারিশে আযাব থেকে পরিত্রাণ লাভ করবে। এসব হচ্ছে তুফাইলি শাফা‘আত বা মাধ্যম দ্বারা সুপারিশ। হাশরের মাঠে হিসেব দ্রুত সম্পন্ন করতে সুপারিশ করা হবে।

হাদিস শরীফে এসেছে, কেয়ামতের দিন সুরা বাকারা ও আলে-ইমরান সূরা দু’টি মেঘ বা কালো ছায়ার আকৃতিতে আসবে। তাতে একটি আলো চমকাতে থাকবে, তা উজ্জ্বল ও আলোকিত হবে অথবা সূরা দু’টি পাখির মত দল বেঁধে সারিবদ্ধ হয়ে আসবে। এরপর এই দুই সূরা পাঠকারীর পক্ষে সুপারিশ করবে। এভাবে তাদের বেহেশত পর্যন্ত পৌঁছানোর পরই সূরা দু’টি ক্ষান্ত হবে।

ইবনে মরদুওয়াইয়াহ, ইস্পাহানী এবং দায়লামীর বরাতে হযরত জাবের বিন আবদুল্লাহ (رضى الله تعالي عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেন, ফেরেশতারা কা’বা ঘরকে নব-বধুর মত সজ্জিত করে হাশর-মাঠে আনবে। পথে তারা যখন আমার রওযা অতিক্রম করবে, তখন কা’বা ঘর স্পষ্ট ভাষায় বলবে, اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ يَا مُحَمَّد صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ হে মুহাম্মদ  ! সালাম নিন। আমি উত্তরে বলব,  وَعَلَيْكَ السَّلَام    

يَا بَيْتُ اللهِ হে বায়তুল্লাহ! তোমার ওপরও শান্তি বর্ষিত হোক। বলো তো আমার উম্মত তোমার সাথে কেমন আচরণ করেছে? আর তুমি আল্লাহর সামনে তাদের নিয়ে কী আচরণ করবে? কা’বা ঘর উত্তর দিবে, হে নবীকুল শিরোমণি! আপনার উম্মতের মধ্যে যেই আমার যেয়ারত করতে এসেছে, আমি তার জন্য যথেষ্ট সুপারিশ করব। আপনি তাদের ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে নিশ্চিন্ত থাকুন। এ-ব্যাপারে আমার ওপর আস্থা রাখুন। আর যারা আমার কাছে আসেনি, তাদের জন্য আপনিই সুপারিশ করবেন।

 
Top