[হাদিস ১-৪৬ বাবা-মার সাথে সদাচরণ সম্পর্কিত]

(কৃতজ্ঞতায়ঃ দুররুস সা'আদাত) 
بَابُ قَوْلِهِ تَعَالَى: {وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا} [العنكبوت: 8]

অনুচ্ছেদ ১ আল্লাহর বাণী: আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করতে। সূরা আনকাবূত ৮

হাদিস ১

1 – عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: سَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيُّ الْعَمَلِ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ؟ قَالَ: «الصَّلَاةُ عَلَى وَقْتِهَا» ، قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «ثُمَّ بِرُّ الْوَالِدَيْنِ» ، قُلْتُ: ثُمَّ أَيٌّ؟ قَالَ: «ثُمَّ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ» قَالَ: حَدَّثَنِي بِهِنَّ، وَلَوِ اسْتَزَدْتُهُ لَزَادَنِي

صحيح

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, মহিমান্বিত আল্লাহর নিকট সব চাইতে প্রিয় আমল কি? তিনি বললেন, যথাসময়ে নামায আদায় করা। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন,  পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, এরপর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। রাবী বলেনঃ তিনি (সা)  আমাকে এগুলো বললেন, যদি আমি আরো অধিক প্রশ্ন করতাম, তবে তিনি অবশ্যই আরও অধিক বলতেন।

হাদিস ২

2 – حَدَّثَنَا آدَمُ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ: حَدَّثَنَا يَعْلَى بْنُ عَطَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ: رِضَا الرَّبِّ فِي رِضَا الْوَالِدِ، وَسَخَطُ الرَّبِّ فِي سَخَطِ الْوَالِدِ

حسن موقوفا وصح مرفوع

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ প্রতিপালকের সন্তুষ্টি পিতার সন্তুষ্টির মধ্যে এবং প্রতিপালকের অসন্তুষ্টি পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যে নিহিত।

2 – باب بر الأم

অনুচ্ছেদ ২ মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার

হাদিস ৩

3 – حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ بَهْزِ بْنِ حَكِيمٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَنْ أَبَرُّ؟ قَالَ: «أُمَّكَ» ، قُلْتُ: مَنْ أَبَرُّ؟ قَالَ: «أُمَّكَ» ، قُلْتُ: مَنْ أَبَرُّ؟ قَالَ: «أُمَّكَ» ، قُلْتُ: مَنْ أَبَرُّ؟ قَالَ: «أَبَاكَ، ثُمَّ الْأَقْرَبَ فَالْأَقْرَبَ»

حسن

হযরত বহয বিন হাকীম তার পিতা থেকে তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি কার সাথে উত্তম ব্যবহার করব? তিনি বললেন, তোমার মায়ের সাথে। আমি (দ্বিতীয়বার ) জিজ্ঞাসা করলাম, (এরপর) আমি কার সাথে উত্তম ব্যবহার করব? তিনি বললেন, তোমার মায়ের সাথে। আমি (তৃতীয়বার ) জিজ্ঞাসা করলাম, (এরপর) আমি কার সাথে উত্তম ব্যবহার করব? তিনি বললেন, তোমার মায়ের সাথে। আমি (চতুর্থবার ) জিজ্ঞাসা করলাম, (এরপর) আমি কার সাথে উত্তম ব্যবহার করব? তিনি বললেন, তোমার বাবার সাথে। এরপর যে অধিক নিকটবর্তী।

হাদিস ৪

4 – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ قَالَ: أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ أَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ: إِنِّي خَطَبْتُ امْرَأَةً، فَأَبَتْ أَنْ تَنْكِحَنِي، وَخَطَبَهَا غَيْرِي، فَأَحَبَّتْ أَنْ تَنْكِحَهُ، فَغِرْتُ عَلَيْهَا فَقَتَلْتُهَا، فَهَلْ لِي مِنْ تَوْبَةٍ؟ قَالَ: أُمُّكَ حَيَّةٌ؟ قَالَ: لَا، قَالَ: تُبْ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَتَقَرَّبْ إِلَيْهِ مَا اسْتَطَعْتَ. فَذَهَبْتُ فَسَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ: لِمَ سَأَلْتَهُ عَنْ حَيَاةِ أُمِّهِ؟ فَقَالَ: إِنِّي لَا أَعْلَمُ عَمَلًا أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ بِرِّ الْوَالِدَةِ

صحيح

আতা ইবন ইয়াসার (রা) বলেনঃ এক ব্যক্তি হযরত ইবন আব্বাস (রা)-এর খেদমতে হাযির হয়ে আরয করল, আমি একটি মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব দিলে সে আমার সাথে বিবাহ করতে অস্বীকার করল।  অতঃপর এক ব্যক্তি তাকে বিবাহের প্রস্তাব দিল এবং সে ঐ প্রস্তাবে রাযি হয়ে গেল। এতে আমার আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগল আর আমি তাকে হত্যা করে ফেললাম। এখন আমার তওবা কবুল হবে কি? তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মা কি জীবিত আছে? সে বলল, না। তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর নিকট তওবা কর এবং সাধ্যনুযায়ী নেক কাজ করে আল্লাহর  নৈকট্য লাভে সচেষ্ট হও!

রাবী বলেন, তখন আমি হযরত ইবন আব্বাস (রা) এর নিকট গেলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি তার মায়ের জীবিত থাকার বিষয়টি কেন জিজ্ঞাসা করলেন? তিনি বললেন, মায়ের সাথে ভাল আচরণের মত  আল্লাহর নৈকট্য লাভের উত্তম কোন আমল আমার জানা নাই।

3- باب بر الأب

অনুচ্ছেদ ২ বাবার সাথে সদ্ব্যবহার

হাদিস ৫

5 – حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ قَالَ: حَدَّثَنَا وُهَيْبُ بْنُ خَالِدٍ، عَنِ ابْنِ شُبْرُمَةَ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَنْ أَبَرُّ؟ قَالَ: «أُمَّكَ» ، قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «أُمَّكَ» ، قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «أُمَّكَ» ، قَالَ: ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ: «أَبَاكَ»

[قال الشيخ الألباني] :  صحيح

হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন। একবার রাসূলুল্লাহ (সা)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! উত্তম আচরণের সবচেয়ে বেশী হকদার কে? তিনি বললেন,  তোমার মা। অতঃপর জিজ্ঞাসা করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার মা। পুণরায় জিজ্ঞাসা করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন,  তোমার মা। সে ব্যক্তি পুনরায় প্রশ্ন করলেন, তারপর কে? তিনি বললেন, তোমার পিতা।

হাদিস ৬

6 – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ قَالَ: أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو زُرْعَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَتَى رَجُلٌ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: مَا تَأْمُرُنِي؟ فَقَالَ: «بِرَّ أُمَّكَ» ، ثُمَّ عَادَ، فَقَالَ: «بِرَّ أُمَّكَ» ، ثُمَّ عَادَ، فَقَالَ: «بِرَّ أُمَّكَ» ، ثُمَّ عَادَ الرَّابِعَةَ، فَقَالَ: «بِرَّ أَبَاكَ» صحيح

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন। এক ব্যক্তি নবী করীম (সা)-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে কি করতে আদেশ করেন? তিনি বললেন, তোমার মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করবে। সে আবার এসে প্রশ্ন করল। তিনি বললেন, তোমার মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করবে। সে আবার ফিরে এসে একই প্রশ্ন করল। তিনি বললেন, তোমার মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করবে। অতঃপর সে ব্যক্তি চতুর্থবার ফিরে এসে প্রশ্ন করল, তিনি বলিলেন, তোমার পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে।

4- باب بر والديه وإن ظلما

অনুচ্ছেদ ৪ বাব-মার সাথে সদ্ব্যবহার করা যদিও তারা যুলুম করে

হাদিস ৭

7 –  عن ابن عباس – رضي الله عنهم – قَالَ: مَا مِنْ مُسْلِمٍ لَهُ وَالِدان مُسلمان يُصْبِحُ إِلَيْهِمَا مُحْتَسِبًا إِلَّا فَتْحَ لَهُ اللَّهُ بابين -يعنى من الجنة – وإن كان واحد فَوَاحِدٌ وَإِنْ أَغْضَبَ أَحَدَهُمَا لَمْ يرضَ اللَّهُ عَنْهُ حَتَّى يَرْضَى عَنْهُ قِيلَ: وَإِنْ ظَلَمَاهُ؟ قال وإن ظلماه.

ضعيف الإسناد

হযরত ইবন আব্বাস (রা) বলেন, যে মুসলমানের  পিতামাতা মুসলিম এবং সে ভোরে তাদের খোঁজ খবর নেয়। তবে আল্লাহ তার জন্য দুটি দরজা খুলে দেন। অর্থাৎ জান্নাতের দরজা। যদি (তাদের মধ্যে) একজন থাকে তবে একটি। আর যদি সে তাদের মধ্যে কোন একজনকে অসন্তুষ্ট করে, তবে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ সন্তুষ্ট হন না যে পর্যন্ত তারা তার প্রতি সন্তুষ্ট না হন। জিজ্ঞাসা করা হলো, যদি তারা তার উপর যুলুম করে তাহলেও? তিনি বললেন, হাঁ, যদি তারা তার উপর যুলুমও করে।

5- باب لين الكلام لوالديه

অনুচ্ছেদ ৫ বাবা-মার সাথে নরম ভাষায় কথা বলা

হাদিস ৮

8 – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ قَالَ: حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ مِخْرَاقٍ قَالَ: حَدَّثَنِي طَيْسَلَةُ بْنُ مَيَّاسٍ قَالَ: كُنْتُ مَعَ النَّجَدَاتِ، فَأَصَبْتُ ذُنُوبًا لَا أَرَاهَا إِلَّا مِنَ الْكَبَائِرِ، فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِابْنِ عُمَرَ قَالَ: مَا هِيَ؟ قُلْتُ: كَذَا وَكَذَا، قَالَ: لَيْسَتْ هَذِهِ مِنَ الْكَبَائِرِ، هُنَّ تِسْعٌ: الْإِشْرَاكُ بِاللَّهِ، وَقَتْلُ نَسَمَةٍ، وَالْفِرَارُ مِنَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ الْمُحْصَنَةِ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ، وَإِلْحَادٌ فِي الْمَسْجِدِ، وَالَّذِي يَسْتَسْخِرُ، وَبُكَاءُ الْوَالِدَيْنِ مِنَ الْعُقُوقِ. قَالَ لِي ابْنُ عُمَرَ: أَتَفْرَقُ النَّارَ، وَتُحِبُّ أَنْ تَدْخُلَ الْجَنَّةَ؟ قُلْتُ: إِي وَاللَّهِ، قَالَ: أَحَيٌّ وَالِدُكَ؟ قُلْتُ: عِنْدِي أُمِّي، قَالَ: فَوَاللَّهِ لَوْ أَلَنْتَ لَهَا الْكَلَامَ، وَأَطْعَمْتَهَا الطَّعَامَ، لَتَدْخُلَنَّ الْجَنَّةَ مَا اجْتَنَبْتَ الْكَبَائِرَ

صحيح

তাইসালা ইবন মাইয়াস বলেন,  আমি নাজদীদের সাথে ছিলাম। তখন আমি একটি গুনাহ করে ফেলি যেটাকে আমি কবীরা গুনাহ মনে করতাম। তখন আমি হযরত ইবন উমর (রা)-এর নিকট তা বললে, তিনি জিজ্ঞাসা করেন,  তা কি? আমি বললাম, এই এই। তিনি বললেন, এগুলো কবীরা গুনাহর মধ্যে নয়। কবীরা গুনাহ হলো নয়টি- ১. আল্লাহর সাথে শিরক করা। ২. কাউকে হত্যা করা। ৩. (জিহাদের সময়) সৈন্যদের থেকে পলায়ন করা। ৪. সতীসাধ্বী নারীকে অপবাদ দেওয়া। ৫. সুদ খাওয়া। ৬. ইয়াতীমের মাল (অবৈধভাবে) ভক্ষণ করা। ৭. মসজিদে বদ-দীনি ছড়ানো। ৮. উপহাস করা এবং ৯. পিতা-মাতার (সন্তানের) অবাধ্যতার জন্য ক্রন্দন করা।

ইবন উমর (রা) জিজ্ঞাসা করিলন, তুমি কি জাহান্নাম থেকে দূরে থাকতে এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে চাও? আমি বললাম, আল্লাহর কসম, আমি তা চাই। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার পিতামাতা কি জীবিত আছে? আমি বললাম, আমার নিকট শুধু আমার মা আছেন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, তুমি যদি তার সাথে নম্রভাষায় কথা বল এবং তাকে আহার করাও তবে তুমি অবশ্যই জান্নাতে যাবে। যে পর্যন্ত তুমি কবীরা গুনাহসমূহ থেকে বেঁচে থাকবে।

হাদিস ৯

9 – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: {وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ} [الإسراء: 24] ، قَالَ: لَا تَمْتَنِعْ مِنْ شَيْءٍ أَحَبَّاهُ

صحيح  

হযরত হিশাম ইবন উরওয়া তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি এই আয়াত পাঠ করেন-

 وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ ‏

দয়ার্দ্রতার সাথে বিনয় ও নম্রতার ডানা তাদের জন্য সম্প্রসারিত করে দাও।

এরপর (ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে) বলেন- তারা যে জিনিসই পছন্দ করে, তাতে আপত্তি কর না।

6- باب جزاء الوالدين

অনুচ্ছেদ:৬ বাবা মার প্রতিদান

হাদিস ১০

10 – حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَجْزِي وَلَدٌ وَالِدَهُ، إِلَّا أَنْ يَجِدَهُ مَمْلُوكًا فَيَشْتَرِيَهُ فَيُعْتِقَهُ»

[قال الشيخ الألباني] :  صحيح

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন। নবী করীম (সা) ইরশাদ করেন- সন্তান তার পিতার প্রতিদান দিতে পারবে না।  তবে এটা ব্যতীত যে, সে যদি তাকে গুলাম অবস্থায় পায় এবং সে তাকে ক্রয় করে আযাদ করে দেয়।

হাদিস ১১

11 – عن أبى بردة قال سمعت أبي يحدث (بن أبي موسى الأشعري، اسمه الحارث وقيل عامر) أنه شهدابن عُمَرَ ورجلُ يَمَانِيٌّ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ – حَمَلَ أُمَّهُ وراء ظهره – يقول:

إِنِّي لَهَا بَعِيرُهَا الْمُذَلَّلُ  إِنْ أُذْعِرَتْ رِكَابُهَا لَمْ أُذْعَرِ

ثُمَّ قَالَ: يَا ابْنَ عُمَرَ أَتُرَانِي جَزَيْتُهَا؟ قَالَ: لَا وَلَا بِزَفْرَةٍ وَاحِدَةٍ،

ثُمَّ طَافَ ابْنُ عُمَرَ فَأَتَى الْمَقَامَ فَصَلَّى ركعتين ثم قال: يا بن أَبِي مُوسَى إِنَّ كُلَّ رَكْعَتَيْنِ تُكّفِران مَا أمامهما.

صحيح الإسناد.

হযরত সাঈদ ইবন আবূ বুরদা বলেন,  আমি আমার পিতাকে বলিতে শুনেছি যে, তিনি হযরত ইবন উমর (রা) এবং জনৈক ইয়েমেনী যুবককে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতে দেখলেন। আরো দেখলেন যে, ঐ যুবক তার মাকে পিঠে নিয়ে তাওয়াফ করছে আর এই কবিতা পাঠ করছে-

إِنِّي لَهَا بَعِيرُهَا الْمُذَلَّلُ  إِنْ أُذْعِرَتْ رِكَابُهَا لَمْ أُذْعَرِ

নিঃসন্দেহে আমি তার অনুগত উটের মত। যদি তার সওয়ারীকে ভয় দেখানো হয় তবে সে ভীত হওয়ার নয়।

অতঃপর সে বলল, হে ইবনে উমর! আমার ব্যাপারে আপনার কি ধারণা? আমি কি আমার মায়ের অেনুগ্রহের প্রতিদান দিতে পেরেছি? এর উত্ত তিনি বললেন, না। বরং এক মাসেরও প্রতিদানও নয়। অতঃপর হযরত ইবনে উমর (রা) তাওয়াফ করলেন এবং মাকামে ইবরাহিমের নিকট এসে দুই রাকাত নামায আদায় করলেন। আর বললেন, হে আবু মূসার পুত্র! দই রাকাত নামায আদায় করা পূর্ববর্তী গুনাহর কাফফারা স্বরুপ।

হাদিস ১২

12 –  عَنْ أَبِي مُرَّةَ مَوْلَى عَقِيلٍ أَنَّ أَبَا هريرة – رضي الله عنه – كَانَ يَسْتَخْلِفُهُ مَرْوَانُ وَكَانَ يَكُونُ بِذِي الْحُلَيْفَةِ فَكَانَتْ أُمُّهُ فِي بَيْتٍ وَهُوَ فِي آخَرَ قَالَ فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَخْرُجَ وَقَفَ عَلَى بَابِهَا فَقَالَ السَّلَامُ عَلَيْكِ يَا أُمَّتَاهُ وَرَحْمَةُ الله وبركاته فتقول وعليك يَا بُنَيَّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ فَيَقُولُ رَحِمَكِ اللَّهُ كَمَا رَبَّيْتِنِي صَغِيرًا فَتَقُولُ رَحِمَكَ اللَّهُ كَمَا بَرَرْتَنِي كَبِيرًا ثُمَّ إِذَا أَرَادَ أَنْ يدخل صنع مثله.

ضعيف الإسناد، فيه سعيد بن أبي هلال، كان اختلط

হযরত আবু মুররা থেকে বর্ণিত।  হযরত আবূ হুরায়রা (রা) কে মারওয়ান তার স্থলাভিষিক্ত করেছিল এবং তিনি যুলহুলায়ফায় থাকতেন। সেখানে তার মা থাকতেন একটি ঘরে আর তিনি থাকতেন আরেকটি ঘরে। যখন তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করতেন, তখন তিনি তার মায়ের ঘরের দরজার পাশে দাড়িয়ে বলতেন-

السَّلَامُ عَلَيْكِ يَا أُمَّتَاهُ وَرَحْمَةُ الله وبركاته

আপনার প্রতি সালাম হে আমার আম্মা! আর অপনার প্রতি আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

তখন তার মা এর উত্তরে বলতেন-

وعليك يَا بُنَيَّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ

হে আমার বৎস! তোমার প্রতিও।  আর তোমার উপরও আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

আবু হুরায়রা (রা) বলেন-

رَحِمَكِ اللَّهُ كَمَا رَبَّيْتِنِي صَغِيرًا

আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন যেমনিভাবে শৈশবে আপনি আমাকে লালন পালন করেছেন।

তার মা বলেন-

رَحِمَكَ اللَّهُ كَمَا بَرَرْتَنِي كَبِيرًا

আল্লাহ তোমার প্রতিও রহম করুন যেভাবে তুমি আমার বৃদ্ধাবস্থায় আমার দেখভাল করেছ।

এমনিভাবে যখনই তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার (আসা যাওয়ার) ইচ্ছা করতেন এমন করতেন।

হাদিস ১৩

13 – عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنهما قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُبَايِعُهُ عَلَى الْهِجْرَةِ وَتَرَكَ أَبَوَيْهِ يَبْكِيَانِ فَقَالَ: (ارْجِعْ إِلَيْهِمَا وأضْحِكْهُما كَمَا أبْكَيْتَهُما)

صحيح

হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি নবী (সা) এর নিকট হিজরতের উদ্দেশ্যে বায়’আত হওয়ার জন্য আগমন করেন। আর সে তার বাবা-মাকে ক্রন্দনরত অবস্থায রেখে এসেছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, তাদের নিকট ফিরে যাও। আর তাদের মুখে সেভাবে হাসি ফোটাও যেভাবে তাদেরকে কাঁদিয়েছ।

হাদিস ১৪

14 – (ث 8) عَنْ أَبِي حَازِمٍ أَنَّ أَبَا مُرَّةَ مَوْلَى أم هانئ بنت أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ رَكِبَ مَعَ أَبِي هريرة – رضي الله عنه – إِلَى أَرْضِهِ بِالْعَقِيقِ فَإِذَا دَخَلَ أَرْضَهُ صَاحَ بِأَعْلَى صَوْتِهِ عَلَيْكِ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ يَا أُمَّتَاهُ،

تَقُولُ وَعَلَيْكَ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، يَقُولُ رَحِمَكِ اللَّهُ رَبَّيْتِنِي صَغِيرًا، فَتَقُولُ يَا بُنَيَّ وَأَنْتَ فَجَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا وَرَضِيَ عَنْكَ كَمَا بَرَرْتَنِي كَبِيرًا، قَالَ مُوسَى كَانَ اسْمُ أَبِي هُرَيْرَةَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو

حسن الاسناد

হযরত আবু মুররা থেকে বর্ণিত।  হযরত আবূ হুরায়রা (রা) কে মারওয়ান তার স্থলাভিষিক্ত করেছিল এবং তিনি যুলহুলায়ফায় থাকতেন। সেখানে তার মা থাকতেন একটি ঘরে আর তিনি থাকতেন আরেকটি ঘরে। যখন তিনি ঘর থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা করতেন, তখন তিনি তার মায়ের ঘরের দরজার পাশে দাড়িয়ে বলতেন-

عَلَيْكِ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ يَا أُمَّتَاهُ

আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক- হে আমার আম্মা!

তখন তার মা এর উত্তরে বলতেন-

وَعَلَيْكَ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ

তোমার প্রতিও সালাম এবং  আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।

আবু হুরায়রা (রা) বলেন-

رَحِمَكِ اللَّهُ رَبَّيْتِنِي صَغِيرًا

আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করুন যেমনিভাবে আপনি আমাকে শৈশবে লালন পালন করেছেন।

তার মা বলেন-

يَا بُنَيَّ وَأَنْتَ فَجَزَاكَ اللَّهُ خَيْرًا وَرَضِيَ عَنْكَ كَمَا بَرَرْتَنِي كَبِيرًا

হে আমার বৎস! আল্লাহ তো্মাক উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং তোমার প্রতি সন্তুষ্ট হোন যেভাবে তুমি আমার বৃদ্ধাবস্থায় আমার সেবাযত্ন করেছ।

বর্ণনাকারী মূসা বলেন- হযরত আবু হুরায়রা (রা) এর (আসল) নাম ছিল আব্দুল্লাহ ইবনে আমর।

7- باب عقوق الوالدين

অনুচ্ছেদ ৭ পিতা-মাতার অবাধ্যতা

হাদিস ১৫

15 – حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ قَالَ: حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْفَضْلِ قَالَ: حَدَّثَنَا الْجُرَيْرِيُّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ؟» ثَلَاثًا، قَالُوا: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «الْإِشْرَاكُ بِاللَّهِ، وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ – وَجَلَسَ وَكَانَ مُتَّكِئًا – أَلَا وَقَوْلُ الزُّورِ» ، مَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى قُلْتُ: لَيْتَهُ سَكَتَ

  صحيح

হযরত আবু বাকরাহ (রা) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- আমি কি তোমাদেরকে কবীরা গুনাহ সম্পর্কে বলব না? এ কথাটি তিনি তিনবার বললেন। সাহাবীগণ আরয করলেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শরীক করা। মা-বাবার অবাধ্যতা করা। রাসূলুল্লাহ (সা) হেলান দিয়ে বসা ছিলেন, তখন উঠে বসলেন (এবং বললেন)- আর মিথ্যা কথা বলা। রাসূলূল্লাহ (সা) এই কথাটি এতবার বলতে লাগলেন যে, এমনকি আমি (নিজে নিজে) বললাম যে, যদি তিনি নীরব হয়ে যেতেন।

হাদিস ১৬

16 – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا جَرِيرٌ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ وَرَّادٍ، كَاتِبِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ، قَالَ: كَتَبَ مُعَاوِيَةُ إِلَى الْمُغِيرَةِ: اكْتُبْ إِلَيَّ بِمَا سَمِعْتَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. قَالَ وَرَّادٌ: فَأَمْلَى عَلَيَّ وَكَتَبْتُ بِيَدَيَّ: إِنِّي سَمِعْتُهُ يَنْهَى عَنْ كَثْرَةِ السُّؤَالِ، وَإِضَاعَةِ الْمَالِ، وَعَنْ قِيلَ وَقَالَ

صحيح

হযরত মুগীরা ইবন শু’বার কাতিব ওয়াররাদ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত মুয়াবিয়া (রা) হযরত মুগীরার নিকট পত্র লিখলেন যে,  রাসূলুল্লাহ (সা)-এর থেকে তুমি যা শুনেছ, তা আমার নিকট লিখে পাঠাও। ওয়াররাদ বলেন, তখন তিনি আমাকে দিয়ে লিখলেন এবং আমি নিজের হাতে লিখলাম- নিশ্চয়ই আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে [মায়েদের অবাধ্যতা করতে,]  মানুষের নিকট বেশী চাইতে, সম্পদের অপচয়  করতে এবং অনর্থক কথাবার্তায় লিপ্ত হতে নিষেধ করতে শুনেছি।

8- باب لعن الله من لعن والديه

অনচ্ছেদঃ ৮ ঐ ব্যক্তির প্রতি অভিসম্পাত যে তার পিতা মাতাকে অভিশাপ প্রদান করে

হাদিস ১৭

17 – حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مَرْزُوقٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ أَبِي بَزَّةَ، عَنْ أَبِي الطُّفَيْلِ قَالَ: سُئِلَ عَلِيٌّ: هَلْ خَصَّكُمُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشَيْءٍ لَمْ يَخُصَّ بِهِ النَّاسَ كَافَّةً؟ قَالَ: مَا خَصَّنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشَيْءٍ لَمْ يَخُصَّ بِهِ النَّاسَ، إِلَّا مَا فِي قِرَابِ سَيْفِي، ثُمَّ أَخْرَجَ صَحِيفَةً، فَإِذَا فِيهَا مَكْتُوبٌ: «لَعَنَ اللَّهُ مَنْ ذَبَحَ لِغَيْرِ اللَّهِ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ سَرَقَ مَنَارَ الْأَرْضِ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ لَعَنَ وَالِدَيْهِ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ آوَى مُحْدِثًا»

صحيح

হযরত আবু তোফায়েল থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,  হযরত আলী (রা) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, রাসূলুল্লাহ (সা) কি আপনার সাথে এমন কোন বিষয়ে কথা বলেছেন, যা অন্য কারো সাথে কখনো বলেন নাই। হযরত আলী (রা) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমার সাথে এমন কোন বিষয়ে কথা বলেন নাই, যা অন্যের সাথে বলেন নাই। তবে ঐ বিষয়টি ব্যতীত যা আমার এই তরবারীর কোষে রয়েছে। অতঃপর তিনি এর মধ্য থেকে একটি সহিফা বের করলেন যার মধ্যে লিখা ছিল- ঐ ব্যক্তির প্রতি আল্লাহর অভিশাপ- যে আল্লাহ ব্যতীত অপর কারো নামে যবেহ করে। যে ব্যক্তি যমীনের সীমানা চুরি করে তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ। যে ব্যক্তি পিতা-মাতাকে অভিশাপ দেয় তার প্রতিও আল্লাহর অভিশাপ। আর ঐ ব্যক্তির প্রতিও আল্লাহর অভিশাপ যে বিদআতকে প্রশ্রয় দেয়।

9- بَابُ يَبَرُّ وَالِدَيْهِ مَا لَمْ يَكُنْ مَعْصِيَةً

অনুচ্ছেদঃ ৯ বাবা মার সাথে সদাচরণ করা যে পর্যন্ত তা গুনাহর বিষয় না হয়

হাদিস ১৮

18 – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ الْخَطَّابِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ الْبَصْرِيُّ – لَقِيتُهُ بِالرَّمْلَةِ – قَالَ: حَدَّثَنِي رَاشِدٌ أَبُو مُحَمَّدٍ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ، عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ، عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ: أَوْصَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِتِسْعٍ: لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ شَيْئًا؛ وَإِنْ قُطِّعْتَ أَوْ حُرِّقْتَ، وَلَا تَتْرُكَنَّ الصَّلَاةَ الْمَكْتُوبَةَ مُتَعَمِّدًا، وَمَنْ تَرَكَهَا مُتَعَمِّدًا بَرِئَتْ مِنْهُ الذِّمَّةُ، وَلَا تَشْرَبَنَّ الْخَمْرَ، فَإِنَّهَا مِفْتَاحُ كُلِّ شَرٍّ، وَأَطِعْ وَالِدَيْكَ، وَإِنْ أَمَرَاكَ أَنْ تَخْرُجَ مِنْ دُنْيَاكَ فَاخْرُجْ لَهُمَا، وَلَا تُنَازِعَنَّ وُلَاةَ الْأَمْرِ وَإِنْ رَأَيْتَ أَنَّكَ أَنْتَ، وَلَا تَفْرُرْ مِنَ الزَّحْفِ، وَإِنْ هَلَكْتَ وَفَرَّ أَصْحَابُكَ، وَأَنْفِقْ مِنْ طَوْلِكَ عَلَى أَهْلِكَ، وَلَا تَرْفَعْ عَصَاكَ عَنْ أَهْلِكَ، وَأَخِفْهُمْ فِي اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ “

حسن

হযরত আবূদ দারদা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আমাকে নয়টি বিষয়ের ওসিয়ত করেছেন। তা হলো-

১. আল্লাহর সাথে কারো শরীক করো না- যদিও তোমাকে টুকরা টুকরা করে ফেলা হয় অথবা জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

২. জেনে-বুঝে ফরয নামায ছেড়ে দিবে না। যে ব্যক্তি তা জেনে-বুঝে ছেড়ে দিবে, তার উপর থেকে (আল্লাহর) দায়িত্ব উঠিয়ে নেওয়া হবে।

৩. মদ পান করবে না। কেননা, তা হলো সকল অনিষ্টের মূল।

৪. বাবা-মার আনুগত্য করবে। তারা যদি তোমাকে দুনিয়া (নিজের সবকিছু) ছেড়ে দিতে বলে, তবে তাও করবে।

৫ কারো সাথে ঝগড়া-বিবাদ করবে না। যদিও তুমি মনে কর যে, তমি হকের উপর আছ, তথাপি।

৬. যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাবে না। যদিও তুমি নিহত হয়ে যাও এবং তোমার সাথীরা পালিয়ে যায়।

৭. সামর্থ্য অনুযায়ী তোমার পরিবারের জন্য ব্যয় করবে।

৮. তোমার লাঠি (শাসন) তোমার পরিবার থেকে উঠিয়ে নিও না এবং

৯. তোমার পরিবারকে আল্লাহর ভয় প্রদর্শন করবে।

হাদিস ১৯

19 – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: جِئْتُ أُبَايِعُكَ عَلَى الْهِجْرَةِ، وَتَرَكْتُ أَبَوَيَّ يَبْكِيَانِ؟ قَالَ: «ارْجِعْ إِلَيْهِمَا فَأَضْحِكْهُمَا كَمَا أَبْكَيْتَهُمَا»

صحيح

হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট উপস্থিত হয়ে আরয করল- (ইয়া রাসূলাল্লাহ!) আমি অপনার কিট হিজরতের উপর বায়আত হতে এসেছি এবং (দেশ ছাড়তে হবে একারণে) আমার মা বাবাকে ক্রন্দনরত রেখে এসেছি। রাসূলুল্লাহ (সা) তাকে বললেন, ফিরে যাও। আর তাদের মুখে হাসি ফোটাও যেভাবে তাদেরকে কাঁদিয়েছ।

হাদিস ২০

20 – حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ قَالَ: أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا الْعَبَّاسِ الْأَعْمَى، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُرِيدُ الْجِهَادَ، فَقَالَ: «أَحَيٌّ وَالِدَاكَ؟» فَقَالَ: نَعَمْ، فَقَالَ: «فَفِيهِمَا فَجَاهِدْ» صحيح

হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি জিহাদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট উপস্থিত হয়। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার বাবা-মা জীবিত আছে? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি (সা) বললেন, তবে তুমি তাদের জিহাদে (সেবা-যত্নে) শরীক হও।

10- بَابُ مَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ

অনুচ্ছেদ ১০ যে ব্যক্তি তার বাবা মাকে পেল কিন্তু জান্নাতে যেতে পারল না

হাদিস ২১

21 – حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ قَالَ: حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ قَالَ: حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «رَغِمَ أَنْفُهُ، رَغِمَ أَنْفُهُ، رَغِمَ أَنْفُهُ» ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ؟ قَالَ: «مَنْ أَدْرَكَ وَالِدَيْهِ عِنْدَ الْكِبْرِ، أَوْ أَحَدَهُمَا، فَدَخَلَ النَّارَ»

صحيح

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) নবী (সা) থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- ঐ ব্যক্তির নাক ধূলিমলীন হোক। ঐ ব্যক্তির নাক ধূলিমলীন হোক। সাহাবীগণ আরয করলেন, কার ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি (সা) বললেন,  যে তার তার পিতামাতা দুজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পেল বা একজনকে পেল, অথচ সে (তাদের সেবাযত্নে অবহেলা করে) জাহান্নামে গেল।

11- بَابُ مَنْ بَرَّ وَالِدَيْهِ زَادَ اللَّهُ فِي عمره

অনুচ্ছেদ ১১ যে ব্যক্তি বাবা মার সাথে সদাচরণ করে আল্লাহ তার আয়ু বাড়িয়ে দেন

হাদিস ২২

22 – حَدَّثَنَا أَصْبَغُ بْنُ الْفَرَجِ قَالَ: أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَيُّوبَ، عَنْ زَبَّانَ بْنِ فَائِدٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ بَرَّ وَالِدَيْهِ طُوبَى لَهُ، زَادَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِي عُمْرِهِ»

ضعيف

হযরত সাহল ইবন মু’আয (রা) তার পিতার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি নিজের বাবা মার সাথে সদ্ব্যবহার করে, তার জন্য সুসংবাদ। মহান আল্লাহ তার আয়ু বাড়িয়ে দেন।

12- باب لا يستغفر لأبيه المشرك

অনুচ্ছেদ ১২ মুশরিক পিতার জন্য মাগফিরাত কামনা করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা

হাদিস ২৩

23 – عن ابن عباس رضي الله عنهما فِي قَوْلِهِ عَزَّ وَجَلَّ: (إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاهُمَا فَلا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلاً كَرِيماً) إِلَى قَوْلِهِ (كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيراً) (الإسراء: 23- 24) فَنَسَخَتْهَا الْآيَةُ فِي بَرَاءَةَ (مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ) (التوبة: 113) حسن الإسناد.

হযরত ইবন আব্বাস (রা) বলেন, আল্লাহ তা’আলার বাণী-

(إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِنْدَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاهُمَا فَلا تَقُلْ لَهُمَا أُفٍّ وَلا تَنْهَرْهُمَا وَقُلْ لَهُمَا قَوْلاً كَرِيماً) إِلَى قَوْلِهِ (كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيراً)

যদি তোমার পিতা মাতা দুজন অথবা কোন একজন তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং তাদের সাথে নম্রভাবে কথা বল। তাদের সামনে ভালবাসার সাথে, নম্রভাবে মাথা নত করে দাও এবং বল, হে আমার প্রতিপালক! তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর, যেভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালন করেছেন।– সূরা ইসরা ২৩-২৪

এটি সূরা বারা’আতের নিম্নের আয়া দ্বারা রহিত হয়ে গেছে-

مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَنْ يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَى مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ

নবী ও মুমিনদের জন্য উচিত নয় মুশরিকদের জন্য মাগফিরাত কামনা করে দুআ করা, যদিও তারা নিকটাত্মীয় হোক- একথা সুস্পষ্ট হওয়ার পর যে তারা জাহান্নামী।– সূরা তাওবা:১১৩

13- باب بر الوالد المشرك

অনুচ্ছেদ ১৩ মুশরিক পিতার সাথে সদাচরণ করা

হাদিস ২৪

24 –  عن سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ قَالَ: نَزَلَتْ فِيَّ أَرْبَعُ آيَاتٍ مِنْ كِتَابِ اللَّهِ تَعَالَى، كَانَتْ أُمِّي حَلَفَتْ أَنْ لَا تَأْكُلَ وَلَا تَشْرَبَ حَتَّى أُفَارِقَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: (وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفاً) . وَالثَّانِيَةُ: أَنِّي كُنْتُ أَخَذْتُ سَيْفًا أَعْجَبَنِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ هَبْ لِي هَذَا فَنَزَلَتْ: (يَسْأَلونَكَ عَنِ الْأَنْفَالِ) وَالثَّالِثَةُ: أَنِّي مَرِضْتُ فَأَتَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أُرِيدُ أَنْ أَقْسِمَ مَالِي أَفَأُوصِي بِالنِّصْفِ فَقَالَ لَا فَقُلْتُ الثُّلُثُ فَسَكَتَ فَكَانَ الثُّلُثُ بَعْدَهُ جَائِزًا. وَالرَّابِعَةُ إِنِّي شَرِبْتُ الْخَمْرَ مَعَ قَوْمٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَضَرَبَ رَجُلٌ مِنْهُمْ أنفى بلحيى جَمَلٍ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فأنزل عز وجل تحريم الخمر.

صحيح

হযরত মুসআব বিন সাদ তার পিতা হযরত সা’দ ইবন আবূ ওয়াক্কাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা তার কিতাবে আমার ব্যাপারে চারটি বিষয় নাযিল করেছেন।

আমার মা কসম খেয়েছিলেন যে- সে না কিছু খাবে আর না কিছু পান করবে, যে পর্যন্ত না আমি আমি মুহাম্মাদ (সা) কে পরিত্যাগ না করব। তখন আল্লাহ তা’আলা এই আয়াত নাযিল করলেন-

وَإِنْ جَاهَدَاكَ عَلَى أَنْ تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلا تُطِعْهُمَا وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفاً

পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে চাপ দেয়, যার জ্ঞান তোমার নেই, তবে তুমি তাদের কথা মানবে না। এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস করবে।– সূরা লোকমান:১৫

দ্বিতীয়ত একবার আমি একটি তলোয়ার নেই যা আমার পছন্দ হয়। আমি আরয করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! এটা আমাকে হেবা (উপহার) করুন। তখন এই আয়াত নাযিল হয়-

يَسْأَلونَكَ عَنِ الْأَنْفَالِ

লোকেরা আপনাকে যুদ্ধলব্ধ সম্পদের ব্যাপারে প্রশ্ন করে।– সূরা আনফাল:১

তৃতীয়ত একবার আমি রোগাক্রান্ত হই। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) আমার নিকট তাশরীফ আনেন। আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার সম্পদ বন্টন করে দিতে চাই।  আমি কি আমার অর্ধেক সম্পত্তি বন্টন করে দিব? রাসূলুলল্লাহ (সা) বললেন, না। আমি আরয করলাম এক তৃতীয়াংশ? তিনি নীরব রইলেন। অতঃপর এক তৃতীয়াংশ ওসীয়ত করা  বৈধ করা হয়।

চতুর্থত একবার আমি আনসারীদের সাথে মদ পান করি। তখন তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি (নেশাবস্থায়) উটের নীচের চোয়ালের হাড় আমার নাকের উপর মারে। তখন আমি নবী (সা) এর নিকট (অভিযোগ নিয়ে) আগমন করি, তো আল্লাহ তাআলা মদ হারাম করে আয়াত নাযিল করেন।

হাদিস ২৫

25 – عن أسماء بنت أبى بكر رضي الله عنها قَالَتْ: أَتَتْنِي أُمِّي رَاغِبَةً فِي عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى الله عليه وسلم أفأصلها؟ قَالَ: (نَعَمْ) .

قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيهَا: (لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ َ)

صحيح

হযরত আসমা বিনতে আবূ বকর (রা) বলেন, আমার আম্মা নবী করীম (সা)-এর যুগে আগ্রহী হয়ে আমার কাছে আসলে আমি নবী করীম (সা)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি কি তার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখব? তিনি (সা) বললেন, হ্যাঁ।

ইবনে উয়য়াইনাহ (রহ) বলেন, আল্লাহ তাআলা এই ব্যাপারে আয়াত নাযিল করেন-

لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ

আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করতে নিষেধ করেন না, যারা তোমাদের সাথে তোমাদের দীনের ব্যাপারে লড়াই করে না।– সূরা মুমতাহিনা:৮

হাদিস ২৬

26 – حَدَّثَنَا مُوسَى قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُولُ: رَأَى عُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ حُلَّةً سِيَرَاءَ تُبَاعُ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ابْتَعْ هَذِهِ، فَالْبَسْهَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَإِذَا جَاءَكَ الْوُفُودُ، قَالَ: «إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ» ، فَأُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهَا بِحُلَلٍ، فَأَرْسَلَ إِلَى عُمَرَ بِحُلَّةٍ، فَقَالَ: كَيْفَ أَلْبَسُهَا وَقَدْ قُلْتَ فِيهَا مَا قُلْتَ؟ قَالَ: «إِنِّي لَمْ أُعْطِكَهَا لِتَلْبَسَهَا، وَلَكِنْ تَبِيعَهَا أَوْ تَكْسُوَهَا» ، فَأَرْسَلَ بِهَا عُمَرُ إِلَى أَخٍ لَهُ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ

صحيح

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার (রহ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত ইবনে উমর (রা) কে বলতে শুনেছি যে, একবার হযরত উমর (রা) একটি রেশমী পোষাক বিক্রি হতে দেখলেন। তখন তিনি আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি তা কিনে নেন। আপনি তা জুমার দিন এবং কোন প্রতিনিধি দলের আগমন হলে তা পড়বেন। তিনি (সা) বললেন, এটা সেই পড়বে যার (আখিরাতে) কোন অংশ নাই। এরপর নবী (সা) এর নিকট কিছু রেশমী পোষাক আসলে তিনি তার থেকে একটি হযরত উমর (রা) এর জন্য পাঠিয়ে দিলেন। হযরত উমর (রা) আরয করলেন, আমি তা কিভাবে পড়তে পারি, যখন আপনি এর ব্যপারে যা বলার তা বলেছেন। তখন নবী (সা) বললেন, আমি তা তোমাকে পরিধান করার জন্য পাঠাইনি। বরং এজন্য পাঠয়েছি, যেন তুমি তা বিক্রি কর (আর তা দিয়ে প্রয়োজন মেটাও) অথবা অপর কাউকে পরিধান করার জন্য দিয়ে দাও। তখন হযরত উমর (রা) তা তার এক মুশরিক ভাইয়ের জন্য পাঠিয়ে দেন, যে মক্কায় থাকত আর যিনি তখনও ইসলাম গ্রহণ করেন নি।

14- باب لا يسب والديه

অনুচ্ছেদ ১৪ নিজের পিতা-মাতাকে গালি না দেওয়া

হাদিস ২৭

27 – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ قَالَ: حَدَّثَنِي سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مِنَ الْكَبَائِرِ أَنْ يَشْتِمَ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ» ، فَقَالُوا: كَيْفَ يَشْتِمُ؟ قَالَ: «يَشْتِمُ الرَّجُلَ، فَيَشْتُمُ أَبَاهُ وَأُمَّهُ»

صحيح

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- কবীরা গুনাহ হলো কোন ব্যক্তির নিজের বাবা-মাকে গালি দেয়া। তখন লোকেরা আরয করলো, কিভাবে কেউ তাদেরকে গালি দিতে পারে? নবী (সা) বললেন, কোন ব্যক্তি কাউকে গালি দেয় আর সে ব্যক্তি তার বাবা-মাকে গালি দেয়।

হাদিস ২৮

28 – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا مَخْلَدٌ قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ: سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ الْحَارِثِ بْنِ سُفْيَانَ يَزْعُمُ، أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ عِيَاضٍ أَخْبَرَهُ، أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ يَقُولُ: مِنَ الْكَبَائِرِ عِنْدَ اللَّهِ تَعَالَى أَنْ يَسْتَسِبَّ الرَّجُلُ لِوَالِدِهِ

حسن

হযরত উরওয়া ইবনে আয়ায থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আমর ইবনুল আস (রা) বলতে শুনেছি- আল্লাহর নিকট এটা কবীর গুনাহর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত যে, ব্যক্তি তার পিতাকে গালি দেয়ার জন্য পেশ করে (অপরকে গালি দেয়ার সুযোগ দেয়)।  

15- باب عقوبة عقوق الوالدين

অনুচ্ছেদ ১৫ পিতা-মাতার অবাধ্যতার শাস্তি

হাদিস ২৯

29 – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ قَالَ: حَدَّثَنَا عُيَيْنَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا مِنْ ذَنْبٍ أَجْدَرُ أَنْ يُعَجَّلَ لِصَاحِبِهِ الْعُقُوبَةُ مَعَ مَا يُدَّخَرُ لَهُ، مِنَ الْبَغِيِّ وَقَطِيعَةِ الرَّحِمِ»

صحيح

হযরত আবু বাকরাহ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা) ইরশাদ করেছেন- যুলুম এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা ব্যতীত কোন গুনাহ এমন নাই যার সম্পাদনকারীর আখিরাতের নির্ধারিত শাস্তির পাশাপাশি দুনিয়াতেও দ্রুত শাস্তি ভোগ করতে হয় ।

হাদিস ৩০

30 – حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ بِشْرٍ قَالَ: حَدَّثَنَا الْحَكَمُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا تَقُولُونَ فِي الزِّنَا، وَشُرْبِ الْخَمْرِ، وَالسَّرِقَةِ؟» قُلْنَا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «هُنَّ الْفَوَاحِشُ، وَفِيهِنَّ الْعُقُوبَةُ، أَلَا أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ؟ الشِّرْكُ بِاللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ» ، وَكَانَ مُتَّكِئًا فَاحْتَفَزَ قَالَ: «وَالزُّورُ»

ضعيف

হযরত ইমরান ইবনে হুসায়ন (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- তোমরা যিনা, মদ্যপান ও চুরির অপরাধ সম্পর্কে কি বল? আমরা আরয করলাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। তিনি (সা) বললেন, এগুলো নিকৃষ্ট গুনাহ আর এগুলোর জন্য শাস্তি নির্ধারিত আছে। আমি কি তোমাদেরকে কবীরা গুনাহর ব্যাপারে বলব না? (কবীরা গুনাহ হলো) আল্লাহর সাথে শরীক করা এবং বাবা-মার অবাধ্য হওয়া। নবী (সা) হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। এরপর উঠে বসে বললেন, আর হলো মিথ্যা।

16- باب بكاء الوالدين

অনুচ্ছেদ ১৬ বাবা মার কান্না

হাদিস ৩১

31 – حَدَّثَنَا مُوسَى قَالَ: حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ زِيَادِ بْنِ مِخْرَاقٍ، عَنْ طَيْسَلَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عُمَرَ يَقُولُ: بُكَاءُ الْوَالِدَيْنِ مِنَ الْعُقُوقِ وَالْكَبَائِرِ

صحيح

হযরত ইবনে উমর (রা) বলেন- বাবা মাকে কাঁদানো অবাধ্যতা ও কবীরা গুনাহর অন্তর্ভুক্ত।

17- باب دعوة الوالدين

অনুচ্ছেদ ১৭ বাবা মার দুআ

হাদিস ৩২

32 – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ يَحْيَى هُوَ ابْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” ثَلَاثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ لَهُنَّ، لَا شَكَّ فِيهِنَّ: دَعْوَةُ الْمَظْلُومِ، وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ، وَدَعْوَةُ الْوَالِدِ عَلَى وَلَدِهِ

  حسن

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- তিনটি দু’আ এমন যা অবশ্যই কবুল হয়। মযলুমের দুআ, মুসাফিরের দুআ এবং সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দুআ।

হাদিস ৩৩

33 – حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قُسَيْطٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ شُرَحْبِيلَ، أَخِي بَنِي عَبْدِ الدَّارِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا تَكَلَّمَ مَوْلُودٌ مِنَ النَّاسِ فِي مَهْدٍ إِلَّا عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَصَاحِبُ جُرَيْجٍ» ، قِيلَ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ، وَمَا صَاحِبُ جُرَيْجٍ؟ قَالَ: ” فَإِنَّ جُرَيْجًا كَانَ رَجُلًا رَاهِبًا فِي صَوْمَعَةٍ لَهُ، وَكَانَ رَاعِيَ بَقَرٍ يَأْوِي إِلَى أَسْفَلِ صَوْمَعَتِهِ، وَكَانَتِ امْرَأَةٌ مِنْ أَهْلِ الْقَرْيَةِ تَخْتَلِفُ إِلَى الرَّاعِي، فَأَتَتْ أُمُّهُ يَوْمًا فَقَالَتْ: يَا جُرَيْجُ، وَهُوَ يُصَلِّي، فَقَالَ فِي نَفْسِهِ وَهُوَ يُصَلِّي: أُمِّي وَصَلَاتِي؟ فَرَأَى أَنْ يُؤْثِرَ صَلَاتَهُ، ثُمَّ صَرَخَتْ بِهِ الثَّانِيَةَ، فَقَالَ فِي نَفْسِهِ: أُمِّي وَصَلَاتِي؟ فَرَأَى أَنْ يُؤْثِرَ صَلَاتَهُ، ثُمَّ صَرَخَتْ بِهِ الثَّالِثَةَ، فَقَالَ: أُمِّي وَصَلَاتِي؟ فَرَأَى أَنْ يُؤْثِرَ صَلَاتَهُ، فَلَمَّا لَمْ يُجِبْهَا قَالَتْ: لَا أَمَاتَكَ اللَّهُ يَا جُرَيْجُ حَتَّى تَنْظُرَ فِي وَجْهِ الْمُومِسَاتِ، ثُمَّ انْصَرَفَتْ. فَأُتِيَ الْمَلِكُ بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ وَلَدَتْ، فَقَالَ: مِمَّنْ؟ قَالَتْ: مِنْ جُرَيْجٍ، قَالَ: أَصَاحِبُ الصَّوْمَعَةِ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، قَالَ: اهْدِمُوا صَوْمَعَتَهُ، وَأْتُونِي بِهِ، فَضَرَبُوا صَوْمَعَتَهُ بِالْفُئُوسِ حَتَّى وَقَعَتْ. فَجَعَلُوا يَدَهُ إِلَى عُنُقِهِ بِحَبْلٍ، ثُمَّ انْطُلِقَ بِهِ، فَمَرَّ بِهِ عَلَى الْمُومِسَاتِ، فَرَآهُنَّ فَتَبَسَّمَ، وَهُنَّ يَنْظُرْنَ إِلَيْهِ فِي النَّاسِ، فَقَالَ الْمَلِكُ: مَا تَزْعُمُ هَذِهِ؟ قَالَ: مَا تَزْعُمُ؟ قَالَ: تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا مِنْكَ، قَالَ: أَنْتِ تَزْعُمِينَ؟ قَالَتْ: نَعَمْ، قَالَ: أَيْنَ هَذَا الصَّغِيرُ؟ قَالُوا: هَذا هُوَ فِي حِجْرِهَا، فَأَقْبَلَ عَلَيْهِ فَقَالَ: مَنْ أَبُوكَ؟ قَالَ: رَاعِي الْبَقَرِ. قَالَ الْمَلِكُ: أَنَجْعَلُ صَوْمَعَتَكَ مِنْ ذَهَبٍ؟ قَالَ: لَا، قَالَ: مِنْ فِضَّةٍ؟ قَالَ: لَا، قَالَ: فَمَا نَجْعَلُهَا؟ قَالَ: رُدُّوهَا كَمَا كَانَتْ، قَالَ: فَمَا الَّذِي تَبَسَّمْتَ؟ قَالَ: أَمْرًا عَرَفْتُهُ، أَدْرَكَتْنِي دَعْوَةُ أُمِّي، ثُمَّ أَخْبَرَهُمْ “

صحيح

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি-  ঈসা ইবন মরিয়ম (আ) এবং জুরায়জের সঙ্গী ছাড়া আর কেউ মাতৃকোলে কথা বলে নাই। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! জুরায়জের সঙ্গী কে? তিনি ইরশাদ করলেন,  জুরায়জ ছিলেনে একজন সন্ন্যাসী আর সে তার গির্জায় থাকত। তার গির্জার নিচেই এক রাখাল থাকত এবং গ্রামের এক মহিলা সেই রাখালের কাছে আসা যাওয়া করত। এক দিন জুরায়জের মা তার নিকট আসল। এসে ডাকল, হে জুরায়জ! সে তখন সে নামায বা উপাসনারত ছিলেন। সে তখন নিজে নিজে ভাবলেন, এক দিকে মা অপর দিকে উপাসনা! তখন তিনি উপাসনাকে অগ্রাধিকার দিলেন। অতঃপর তার মা দ্বিতীয়বার ডাক দিলেন। তিনি আবার নিজে নিজে ভাবলেন, এক দিকে মা অপর দিকে উপাসনা! তখন তিনি (আবার) উপাসনাকে অগ্রাধিকার দিলেন। অতঃপর তৃতীয়বার তার মা তাকে ডাক দিলেন। তিনি আবার নিজে নিজে ভাবলেন, এক দিকে মা অপর দিকে উপাসনা! তখন তিনি (আবার) উপসনাকে অগ্রাধিকার দিলেন। যখন জুরায়জ তার মায়ের ডাকের কোন উত্তর দিলেন না, তখন তার মা তাকে বললেন, হে জুরায়য! যে পর্যন্ত তুই বদকার মেয়েলোকের মুখ না দেখবি, সে পর্যন্ত যেন তোর মৃত্যু না হয়। অতঃপর তিনি চলে গেলেন।

অতএব (ঘটনাক্রমে) ঐ মহিলার যখন বাচ্চা হয় (যে রাখালের নিকট আসা যাওয়া করত)। তখন মহিলাকে বাদশাহর নিকট নিয়ে যাওয়া হয়। বাদশাহ মহিলাকে জিজ্ঞাসা করল, এই বাচ্চা কার? সে বলল, জুরায়জের। বাদশাহ বললেন, গির্জার অধিবাসী (জুরায়জ)?  সে বলল, হ্যাঁ। বাদশাহ নির্দেশ দিলেন, তার গির্জা ভেঙ্গে দাও এবং তাকে আমার নিকট নিয়ে আস। অতএব লোকেরা কুঠার দ্বারা তার গির্জা ভেঙ্গে চুড়মার করে দিল এবং রশি দিয়ে তার হাত গর্দানের সাথে বেঁধে ঐ মহিলার সামনে দিয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হলো। যাওয়ার সময় তিনি ঐ মহীলাকে দেখে মৃদু হাসি দিলেন। আর ঐ মহীলাও লোক পরিবেষ্টিত অবস্থায় তাকে দেখছিলেন।

বাদশাহ জুরায়জকে জিজ্ঞাসা করলেন, এই মহিলা কি বলছে? জুরায়জ বললেন, সে কি বলছে? বাদশাহ বললেন, সে বলছে- এই বাচ্চা তোমার থেকে হয়েছে। তিনি (মহিলাকে) বললেন, তুমি কি এই কথা বলেছ? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেন, বাচ্চা কোথায়? লোকেরা বলল, এই যে, মহিলার কোলে। তখন জুরায়য বাচ্চার দিকে মনোযোগ দিয়ে বললেন, তোমার বাবা কে? বাচ্চাটি বলল, গ্রামের ঐ রাখাল।

(এই ঘটনা দেখে) বাদশাহ বললো, আমরা আপনার গির্জা স্বর্ণ দ্বারা নির্মাণ করে দিব। তিনি বললেন, না। বাদশাহ বললেন, তবে রৌপ্য দ্বারা। তিনি বললেন, না। বাদশাহ বলল, তবে আমরা তার কি করব? তিনি বললেন, ওটাকে যেমন ছিল তেমনই বানিয়ে দেয়া হোক। বাদশাহ বললেন, আপনি হেসেছিলেন কেন?  তিনি বললেন, একটি কারণে। আর তা হলো আমার উপর আমার মায়ের বদ দুআ লেগেছিল। এরপর তিনি বাদশাকে পুরো ঘটনা বললেন।

18- باب عرض الإسلام على الأم النصرانية

অনুচ্ছেদ ১৮ খৃষ্টান [বা বিধর্মী] মা [বাবার] নিকট ইসলামের দাওয়াত প্রদান

হাদিস ৩৪

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বলেন- [সকল মুসলমানসহ] যে ইয়াহূদী বা খৃস্টানও আমার ব্যাপারে শুনেছে  সে-ই আমার সাথে মহব্বত পোষণ করেছে। কেননা (ব্যাপার হলো) আমি আমার মাকে ইসলামের দিকে আকৃষ্ট করতাম। আর সে তা অস্বীকার করত। অনুরুপ আমি তাকে (ইসলামের) কথা বলতাম আর সে তা অস্বীকার করত। অতএব আমি রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট এসে বললাম, আপনি আমার মায়ের জন্য দুআ করুন। তখন নবী (সা) তার জন্য দুআ করলেন। যখন আমি ঘরে আসলাম, তখন সে দরজা বন্ধ করা অবস্থায় ছিল। তিনি বললেন, হে আবু ‍হুরায়রা! আমি মুসলমান হয়ে গেছি। তখন আমি রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট গেলাম এবং তাকে তার মুসলমান হওয়ার সংবাদ দিলাম। আর আরয করলাম, আমার জন্য এবং আমার মায়ের জন্য দুআ করুন। তখন নবী (সা) দুআ করলেন- হে আল্লাহ! তোমার বান্দা আবু হুরায়রা ও তার মাকে সকলের নিকট প্রিয় করে দাও।

19- باب برالوالدين بعد موتهما

অনুচ্ছেদ ১৯ বাবা মার মৃত্যুর পর তাদের সাথে সদাচরণ করা

হাদিস ৩৫

35 – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيلِ قَالَ: أَخْبَرَنِي أُسَيْدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ عُبَيْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا أُسَيْدٍ يُحَدِّثُ الْقَوْمَ قَالَ: كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلْ بَقِيَ مِنْ بِرِّ أَبَوَيَّ شَيْءٌ بَعْدَ مَوْتِهِمَا أَبَرُّهُمَا؟ قَالَ: ” نَعَمْ، خِصَالٌ أَرْبَعٌ: الدُّعَاءُ لَهُمَا، وَالِاسْتِغْفَارُ لَهُمَا، وَإِنْفَاذُ عَهْدِهِمَا، وَإِكْرَامُ صَدِيقِهِمَا، وَصِلَةُ الرَّحِمِ الَّتِي لَا رَحِمَ لَكَ إِلَّا مِنْ قِبَلِهِمَا “

ضعيف

হযরত আবূ উসায়দ (রা) বলেন, আমরা নবী করীম (সা)-এর পাশে উপস্থিত ছিলাম। এক ব্যক্তি আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার বাবা-মার মৃত্যুর পরও কি তাদের সাথে কোন নেক আচরণের সুযোগ আছে? তিনি (সা) বললেন, হ্যাঁ চারটি স্বভাব রয়েছে। তাদের জন্য দুআ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা। তাদের অঙ্গীকার পুরা করা। তাদের বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা এবং যাদের সাথে তাদের নিকটাত্মীয়তা ছিল তাদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা।

হাদিস ৩৬

36 – حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرٍ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: تُرْفَعُ لِلْمَيِّتِ بَعْدَ مَوْتِهِ دَرَجَتُهُ. فَيَقُولُ: أَيْ رَبِّ، أَيُّ شَيْءٍ هَذِهِ؟ فَيُقَالُ: وَلَدُكَ اسْتَغْفَرَ لَكَ

  حسن

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মৃত ব্যক্তির জন্য মৃত্যুর পরও তার মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে। তখন সে আরয করে, হে আমার রব! এটা কি ব্যাপার?  তখন তাকে বলা হয়, তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা চেয়েছে।

হাদিস ৩৭

37 – حَدَّثَنَا مُوسَى قَالَ: حَدَّثَنَا سَلَّامُ بْنُ أَبِي مُطِيعٍ، عَنْ غَالِبٍ قَالَ: قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ سِيرِينَ: كُنَّا عِنْدَ أَبِي هُرَيْرَةَ لَيْلَةً، فَقَالَ: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِأَبِي هُرَيْرَةَ، وَلِأُمِّي، وَلِمَنِ اسْتَغْفَرَ لَهُمَا قَالَ لِي مُحَمَّدٌ: فَنَحْنُ نَسْتَغْفِرُ لَهُمَا حَتَّى نَدْخُلَ فِي دَعْوَةِ أَبِي هُرَيْرَةَ

صحيح

হযরত গালিব (রহ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ ইবন সীরীন (রহ) বলেন, এক রাতে আমি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি দুআ করলেন- হে আল্লাহ! আবূ হুরায়রা এবং আমার মাকে আর যারা এই দুইজনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে- সবাইকে তুমি ক্ষমা কর। মুহাম্মাদ ইবন সীরীন (র) আমাকে বলেন- অতএব আমরা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি যাতে আমরাও তার দু’আর অন্তর্ভুক্ত হতে পারি।

হাদিস ৩৮

38 – حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ قَالَ: حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا الْعَلَاءُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِذَا مَاتَ الْعَبْدُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ: صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ، أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ، أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ “

صحيح

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- বান্দা যখন মৃত্যুবরণ করে, তখন তাঁহার সব আমল বন্ধ হয়ে যায় তিনটি আমল ব্যতীত- সাদকায়ে জারিয়া, এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং নেক সন্তান যে তার জন্য দুআ করে।  

হাদিস ৩৯

39 – حَدَّثَنَا يَسَرَةُ بْنُ صَفْوَانَ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أُمِّي تُوُفِّيَتْ وَلَمْ تُوصِ، أَفَيَنْفَعُهَا أَنْ أَتَصَدَّقَ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»

صحيح

হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি আরয করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমার মা মৃত্যুবরণ করেছেন আর তিনি আমাকে কোন অসিয়ত করেন নাই। যদি আমি তার পক্ষ সাদকা করি তবে তার দ্বারা সে কি উপকৃত হবে? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেলেন, হ্যাঁ।

20- باب بر من كان يصله أبوه

অনুচ্ছেদ নিজের পিতার সাথে দেখা-সাক্ষাতকারীদেরকে সম্মান করা

হাদিস ৪০

40 – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ قَالَ: حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ: مَرَّ أَعْرَابِيٌّ فِي سَفَرٍ، فَكَانَ أَبُو الْأَعْرَابِيِّ صَدِيقًا لِعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، فَقَالَ لِلْأَعْرَابِيِّ: أَلَسْتَ ابْنَ فُلَانٍ؟ قَالَ: بَلَى، فَأَمَرَ لَهُ ابْنُ عُمَرَ بِحِمَارٍ كَانَ يَسْتَعْقِبُ، وَنَزَعَ عِمَامَتَهُ عَنْ رَأْسِهِ فَأَعْطَاهُ. فَقَالَ بَعْضُ مَنْ مَعَهُ: أَمَا يَكْفِيهِ دِرْهَمَانِ؟ فَقَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «احْفَظْ وُدَّ أَبِيكَ، لَا تَقْطَعْهُ فَيُطْفِئَ اللَّهُ نُورَكَ»

ضعيف

হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত আছে। এক সফরে তিনি এক বেদুইনকে  দেখলেন যার পিতার সাথে তার পিতার বন্ধুত্ব ছিল। তিনি তাকে বললেন, তুমি কি অমুকের পুত্র নও? সে বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি তাকে (বাহন হিসাবে) একটি গাধা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন, যা বাহন হিসাবে তিনি তার সাথে রাখতেন এবং নিজের মাথার পাগড়ী খুলে তাকে দিয়ে দিলেন। তখন তার সাথে যারা ছিল তাদের কেউ বলল, তার জন্য কি দুটি দিরহামই যথেষ্ট ছিল না? তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন- তোমার পিতার (বন্ধুত্ব ও আত্মীয়তার) সম্পর্কের হিফাযত কর, তাকে ছিন্ন করো না। অন্যথায় আল্লাহ তোমার নূর (ইমানের আলো বা জীবন সৌন্দর্য) নিভিয়ে দিবেন।

হাদিস ৪১

41 – حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ قَالَ: حَدَّثَنَا حَيْوَةُ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو عُثْمَانَ الْوَلِيدُ بْنُ أَبِي الْوَلِيدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ أَبَرَّ الْبِرِّ أَنْ يَصِلَ الرَّجُلُ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ»

صحيح

হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- কোন ব্যক্তির নিজের পিতার (অপরাপর) সম্পর্ককে বজায় রাখা উত্তম আমলের অন্তর্ভুক্ত।

21- بَابُ لَا تَقْطَعْ مَنْ كَانَ يَصِلُ أَبَاكَ فيطفأ نورك

অনুচ্ছেঃ২১

নিজের পিতার (অপরাপর) সম্পর্ককে ছিন্ন না করা অন্যথায় তোমার নূর নিভিয়ে দেওয়া হবে

হাদিস ৪২

42 – أَخْبَرَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ لَاحِقٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ الزُّرَقِيُّ، أَنَّ أَبَاهُ قَالَ: كُنْتُ جَالِسًا فِي مَسْجِدِ الْمَدِينَةِ مَعَ عَمْرِو بْنِ عُثْمَانَ، فَمَرَّ بِنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَلَّامٍ مُتَّكِئًا عَلَى ابْنِ أَخِيهِ، فَنَفَذَ عَنِ الْمَجْلِسِ، ثُمَّ عَطَفَ عَلَيْهِ، فَرَجَعَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ: مَا شِئْتَ عَمْرَو بْنَ عُثْمَانَ؟ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا، فَوَالَّذِي بَعَثَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْحَقِّ، إِنَّهُ لَفِي كِتَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ، مَرَّتَيْنِ: لَا تَقْطَعْ مَنْ كَانَ يَصِلُ أَبَاكَ فَيُطْفَأَ بِذَلِكَ نُورُكَ

ضعيف

হযরত সা’দ ইবন উবাদাহ আয যুরকী (রহ) বলেন, তার পিতা বলেছেন- আমি হযরত আমর বিন উসমানের সাথে মদীনার মসজিদে বসা ছিলাম। আমাদের পাশ দিয়ে হযরত আবদুল্লাহ ইবন সালাম (রা) তার ভাতিজার সাহায্য নিয়ে অতিক্রম করছিলেন এবং মসজিদ অতিক্রম করে গেলেন। অতঃপর তিনি পিছনে ফিরে আসলেন এবং বললেন, হে আমর ইবনে উসমান! এখন তোমার যা ইচ্ছা কর। এটা তিনি দুই অথবা তিনবার বললেন। কসম সেই সত্তার! যিনি হযরত মুহাম্মদ (সা) কে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর (নাযিলকৃত পূর্ববর্তী তাওরাত) কিতাবে দুইবার লিখা আছে- যার সাথে তোমার পিতার (আত্মীয়তা ও বন্ধুত্বের) সম্পর্ক ছিল তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করো না। অন্যথায় এর জন্য তোমার নূর (ইমানের আলো বা জীবন সৌন্দর্য) নিভিয়ে দেওয়া হবে।

22- باب الود يتوارث

অনুচ্ছেদঃ ২২ মহব্বত ও ভালাবাসাও উত্তরাধীকার সৃষ্টি করে

হাদিস ৪৩

43 – حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ: أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ قَالَ: أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ فُلَانِ بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ حَزْمٍ، عَنْ رَجُلٍ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: كَفَيْتُكَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الْوُدَّ يُتَوَارَثُ»

ضعيف

আবূ বকর ইবন হাযম যিনি নবী করীম (সা)-এর সাহাবীদের মধ্যে ছিলেন। তার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- তোমার জন্য আমার এটা বলাই যথেষ্ট যে, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন- নিঃসন্দেহে মহব্বত ও ভালবাসাও উত্তরাধীকার সৃষ্টি করে।

23- بَابُ لَا يُسَمِّي الرَّجُلُ أَبَاهُ وَلَا يَجْلِسُ قبله ولا يمشى أمامه

অনুচ্ছেদঃ২৩ কোন ব্যক্তির তার বাবাকে নাম ধরে না ডাকা তার অগে না বসা ও না চলা

হাদিস ৪৪

44 – حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ زَكَرِيَّا قَالَ: حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ , أَوْ غَيْرِهِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ أَبْصَرَ رَجُلَيْنِ، فَقَالَ لِأَحَدِهِمَا: مَا هَذَا مِنْكَ؟ فَقَالَ: أَبِي، فَقَالَ: لَا تُسَمِّهِ بِاسْمِهِ، وَلَا تَمْشِ أَمَامَهُ، وَلَا تَجْلِسْ قَبْلَهُ

  صحيح

হিশাম ইবন উরওয়া তার পিতা বা অন্য কারও থেকে বর্ণনা করেন। হযরত আবূ হুরায়রা (রা) একবার দুই ব্যক্তিকে দেখলেন। তাদের একজনকে বললেন,  ইনি তোমার কি হয়? সে বলল, আমার বাবা। তখন তিনি বললেন- তাকে (কখনও) নাম ধরে ডাকবে না, তার আগে চলবে না আর তার আগে বসবে না।

24- باب هل يكنى أباه

অনুচ্ছেদ:২৪ পিতাকে কি তার উপনামে নামে ডাকা যায়

হাদিস ৪৫

45 – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ شَيْبَةَ قَالَ: أَخْبَرَنِي يُونُسُ بْنُ يَحْيَى بْنِ نُبَاتَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ، عَنْ شَهْرِ بْنِ حَوْشَبٍ قَالَ: خَرَجْنَا مَعَ ابْنِ عُمَرَ، فَقَالَ لَهُ سَالِمٌ: الصَّلَاةَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ

  ضعيف

হযরত শাওহার বিন হাওশাব থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমরের সাথে সফরে বের হলাম। তখন (তার ছেলে) সালিম এভাবে বলল, হে আব্দুর রহমানের পিতা! সালাত! (নামাযের সময় হয়েছে)।

হাদিস ৪৬

46 – قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ يَعْنِي: الْبُخَارِيَّ: حَدَّثَنَا أَصْحَابُنَا، عَنْ وَكِيعٍ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ:لَكِنْ أَبُو حَفْصٍ عُمَرُ قَضَى

  صحيح

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন দীনার (রহ) হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি (তার বাবার উপনাম ধরে) বলেন- তবে হাফসের পিতা উমর বিচার-মীমাংসা করিয়াছেন।

চলবে

[হাদিস ৪৭-৭৫ আত্মীয়-স্বজনের সাথে সদাচরণ সম্পর্কিত]

25- باب وجوب وصلة الرحم

অনুচ্ছেদ: আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখা অত্যাবশ্যক

হাদিস ৪৭

47 – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ: حَدَّثَنَا ضَمْضَمُ بْنُ عَمْرٍو الْحَنَفِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا كُلَيْبُ بْنُ مَنْفَعَةَ قَالَ: قَالَ جَدِّي: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَنْ أَبَرُّ؟ قَالَ: «أُمَّكَ وَأَبَاكَ، وَأُخْتَكَ وَأَخَاكَ، وَمَوْلَاكَ الَّذِي يَلِي ذَاكَ، حَقٌّ وَاجِبٌ، وَرَحِمٌ مَوْصُولَةٌ»

  ضعيف

হযরত কুলায়ব বিন মুনাফফায়া থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার দাদা আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কার সাথে সদাচরণ করব? তিনি (সা) বললেন, তোমার মা, বাবা, বোন, ভাই এবং নিকটাত্মীয়ের সাথে। এটা তাদের অধিকার এবং ওয়াজিব। আর আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখবে। 

হাদিস ৪৮

48 – حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ مُوسَى بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ} [الشعراء: 214] قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَنَادَى: «يَا بَنِي كَعْبِ بْنِ لُؤَيٍّ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ. يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ. يَا بَنِي هَاشِمٍ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ. يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ، أَنْقِذُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ النَّارِ. يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ، أَنْقِذِي نَفْسَكِ مِنَ النَّارِ، فَإِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكِ مِنَ اللَّهِ شَيْئًا، غَيْرَ أَنَّ لَكُمْ رَحِمًا سَأَبُلُّهُمَا بِبِلَالِهَا»

صحيح

হযরত আবু হুরায়রা (রা) বর্ণনা করেন। যখন এই আয়াত নাযিল হয়-

وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ

আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দেরকে ভয় প্রদর্শন করুন।– সূরা শুআরা:২১৪

তখন রাসূলুল্লাহ (সা) দাড়িয়ে ডাক দিলেন, হে বনী কাব বিন লুই! তোমরা নিজেদেরকে আগুন থেকে বাঁচাও। হে আবদে মানাফ! তোমরা নিজেদেরকে আগুন থেকে বাঁচাও। হে বনী হাশিম, তোমরা নিজেদেরকে আগুন থেকে বাঁচাও। হে আব্দুল মুত্তালিব! তোমরা নিজেদেরকে আগুন থেকে বাঁচাও। হে মুহাম্মদরে কন্যা ফাতিমা! তোমরা নিজেদেরকে আগুন থেকে বাঁচাও। কেননা আমি তোমাদের কোন কিছুর মালিক নই, শুধু এতটুকু যে, তোমাদের সাথে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক। আর আমি আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখব।

26- باب صلة الرحم

অনুচ্ছেদঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা

হাদিস ৪৯

49 – حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ: حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَوْهَبٍ قَالَ: سَمِعْتُ مُوسَى بْنَ طَلْحَةَ يَذْكُرُ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ، أَنَّ أَعْرَابِيًّا عَرَضَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَسِيرِهِ، فَقَالَ: أَخْبِرْنِي مَا يُقَرِّبُنِي مِنَ الْجَنَّةِ، وَيُبَاعِدُنِي مِنَ النَّارِ؟ قَالَ: «تَعْبُدُ اللَّهَ وَلَا تُشْرِكْ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيمُ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَتَصِلُ الرَّحِمَ»

صحيح

হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (রা) বর্ণনা করেন। এক গ্রাম্য ব্যক্তি সফর করে রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট এসে আরয করল, আমাকে এমন কোন আমল বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতের নিকটবর্তী করবে এবং জাহান্নাম থেকে দূরে রাখবে। তিনি (সা) বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত কর আর তার সাথে কোন কিছুর শরীক করো না। নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে আর আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখবে।

হাদিস ৫০

50 – حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ قَالَ: حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ بِلَالٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي مُزَرِّدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” خَلَقَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ الْخَلْقَ، فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهُ قَامَتِ الرَّحِمُ، فَقَالَ: مَهْ، قَالَتْ: هَذَا مَقَامُ الْعَائِذِ بِكَ مِنَ الْقَطِيعَةِ، قَالَ: أَلَا تَرْضَيْنَ أَنْ أَصِلَ مَنْ وَصَلَكِ، وَأَقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ؟ قَالَتْ: بَلَى يَا رَبِّ، قَالَ: فَذَلِكَ لَكِ ” ثُمَّ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ: اقْرَؤُوا إِنْ شِئْتُمْ: {فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ} [محمد: 22]

صحيح

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত যে রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তা’আলা সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করলেন। আর এ থেকে তিনি ফারেগ হলে ‘রেহেম’ (রক্তসম্পর্ক) দাঁড়িয়ে গেল। তিনি তাকে বললেন, থামো। সে বলল, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারী ব্যক্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনার জন্যই আমি এখানে দাঁড়িয়েছি। আল্লাহ বললেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, যে তোমাকে সম্পৃক্ত রাখে, আমিও তাকে সম্পৃক্ত রাখব। আর যে তোমার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে, আমিও তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করব। সে বলল, নিশ্চয়ই, হে আমার প্রভু। তিনি বললেন, যাও তোমার জন্য তাই করা হল। অতঃপর হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বলেন, ইচ্ছা হলে তোমরা পড়তে পার-

فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ

“ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবত তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে।”- সূরা মুহাম্মদ:২২

হাদিস ৫১

51 – حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي سَعْدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي مُوسَى، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: {وَآتِ ذَا الْقُرْبَى حَقَّهُ وَالْمِسْكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ. . .} [الإسراء: 26] ، قَالَ: بَدَأَ فَأَمَرَهُ بِأَوْجَبِ الْحُقُوقِ، وَدَلَّهُ عَلَى أَفْضَلِ الْأَعْمَالِ إِذَا كَانَ عِنْدَهُ شَيْءٌ فَقَالَ: {وَآتِ ذَا الْقُرْبَى حَقَّهُ وَالْمِسْكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ} [الإسراء: 26] ، وَعَلَّمَهُ إِذَا لَمْ يَكُنْ عِنْدَهُ شَيْءٌ كَيْفَ يَقُولُ، فَقَالَ: {وَإِمَّا تُعْرِضَنَّ عَنْهُمُ ابْتِغَاءَ رَحْمَةٍ مِنْ رَبِّكَ تَرْجُوهَا فَقُلْ لَهُمْ قَوْلًا مَيْسُورًا} [الإسراء: 28] عِدَّةً حَسَنَةً كَأَنَّهُ قَدْ كَانَ، وَلَعَلَّهُ أَنْ يَكُونَ إِنْ شَاءَ اللَّهُ، {وَلَا تَجْعَلْ يَدَكَ مَغْلُولَةً إِلَى عُنُقِكَ} [الإسراء: 29] لَا تُعْطِي شَيْئًا، {وَلَا تَبْسُطْهَا كُلَّ الْبَسْطِ} [الإسراء: 29] تُعْطِي مَا عِنْدَكَ، {فَتَقْعُدَ مَلُومًا} [الإسراء: 29] يَلُومُكَ مَنْ يَأْتِيكَ بَعْدُ، وَلَا يَجِدُ عِنْدَكَ شَيْئًا {مَحْسُورًا} [الإسراء: 29] ، قَالَ: قَدْ حَسَّرَكَ مَنْ قَدْ أَعْطَيْتَهُ

ضعيف

হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَآتِ ذَا الْقُرْبَى حَقَّهُ وَالْمِسْكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ

আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে দাও তার প্রাপ্য এবং অভাবগ্রস্ত মিসকীন ও মুসাফিরকেও।–ইসরা:২৬

আল্লাহ তাআলা যাদের অর্থ-সম্পদ আছে তাদের জন্য এই আয়াতে তাদের কর্তব্য নির্ধারণ করে দিয়ে বলেন- “আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে দাও তার প্রাপ্য এবং অভাবগ্রস্ত মিসকীন ও মুসাফিরকেও।”

আর যখন তার কাছে কিছু থাকবে না তখন তার ব্যাপারে শিক্ষা দিলেন-

وَإِمَّا تُعْرِضَنَّ عَنْهُمُ ابْتِغَاءَ رَحْمَةٍ مِنْ رَبِّكَ تَرْجُوهَا فَقُلْ لَهُمْ قَوْلًا مَيْسُورًا

তাদেরকে যদি তোমার বঞ্চিত করতে হয় (এই অবস্থায় যে,) তুমি তোমার প্রতিপালকের রহমত লাভের প্রত্যাশায় (আছ), তখন তাদের সাথে নম্রভাবে কথা বল।- ইসরা:২৮

অর্থাৎ কল্যাণের প্রতিশ্রুতী দাও যেমন, [এখন একটু সমস্য আছে] এই হয়ে যাবে বা আশা করি হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

وَلَا تَجْعَلْ يَدَكَ مَغْلُولَةً إِلَى عُنُقِكَ

আর তুমি ব্যয়কুণ্ঠ হয়ো না। ইসরা:২৯  

অর্থাৎ একেবারেই না দিয়ো না।

وَلَا تَبْسُطْهَا كُلَّ الْبَسْطِ

আর একবারেই মুক্তহস্ত হয়ো না। ইসরা:২৯

অর্থাৎ যা আছে তা সব দিয়ে দিও না।

فَتَقْعُدَ مَلُومًا

তাহলে তুমি তিরষ্কৃত হবে। ইসরা:২৯

অর্থাৎ পরে যারা আসবে তারা যেন তোমার কাছে না পেয়ে তোমাকে তিরষ্কার না করে।

مَحْسُورًا

আর তুমি নিঃস্ব ও রিক্ত হস্ত হয়ে যাবে।- ইসরা:২৯

অর্থাৎ যা দান করে দিয়েছ তার জন্য পরে যেন আক্ষেপ করতে না হয়।

بَابُ فَضْلِ صِلَةِ الرَّحِمِ

অনুচ্ছেদ: আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখার ফযীলত

হাদিস ৫২

52 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: أَتَى رَجُلٌ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ لِي قَرَابَةً أَصِلُهُمْ وَيَقْطَعُونَ، وَأُحْسِنُ إِلَيْهِمْ وَيُسِيئُونَ إِلَيَّ، وَيَجْهَلُونَ عَلَيَّ وَأَحْلُمُ عَنْهُمْ، قَالَ: «لَئِنْ كَانَ كَمَا تَقُولُ كَأَنَّمَا تُسِفُّهُمُ الْمَلَّ، وَلَا يَزَالُ مَعَكَ مِنَ اللَّهِ ظَهِيرٌ عَلَيْهِمْ مَا دُمْتَ عَلَى ذَلِكَ»

صحيح

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা)! আমার আত্মীয়-পরিজন আছে। আমি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করি আর তারা ছিন্ন করে। আমি তাদের উপকার করি, কিন্তু তারা আমার অপকার করে। তারা আমার সঙ্গে মূর্খতাসূলভ আচরণ করে, আর আমি তা সহ্য করি। তখন তিনি বললেন, তুমি যা বললে, যদি প্রকৃত অবস্হা তাই হয় তাহলে তুমি যেন তাদের উপর জ্বলন্ত অঙ্গার নিক্ষেপ করছ। সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী (ফিরিশতা) থাকবে, যতক্ষন তুমি এই অবস্থায় বহাল থাকবে ।

হাদিস ৫৩

53 – عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: ” قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: أَنَا الرَّحْمَنُ، وَأَنَا خَلَقْتُ الرَّحِمَ، وَاشْتَقَقْتُ لَهَا مِنَ اسْمِي، فَمَنْ وَصَلَهَا وَصَلْتُهُ، وَمَنْ قَطَعَهَا بَتَتُّهُ “

صحيح

হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন- আমি রহমান আর আমি রেহেম (আত্মীয়তার বন্ধনকে) সৃষ্টি করেছি এবং আমার নাম থেকে তাকে নির্গত করেছি। অতএব যে তাকে জুড়ে রাখবে আমি তাকে জুড়ে রাখব। আর যে তাকে ছিন্ন করবে, আমি তাকে ছিন্ন করব।

হাদিস ৫৪

54 – عَنْ أَبِي الْعَنْبَسِ قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو فِي الْوَهْطِ – يَعْنِي أَرْضًا لَهُ بِالطَّائِفِ – فَقَالَ: عَطَفَ لَنَا النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِصْبَعَهُ فَقَالَ: «الرَّحِمُ شُجْنَةٌ مِنَ الرَّحْمَنِ، مَنْ يَصِلْهَا يَصِلْهُ، وَمَنْ يَقْطَعْهَا يَقْطَعْهُ، لَهَا لِسَانٌ طَلْقٌ ذَلْقٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»

  صحيح

হযরত আবুল আম্বাস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আমি হযরত ইবনে উমর (রা) এর সাথে ওহত্ব এ আসলাম। অর্থাৎ তার বাড়িতে যা তায়েফে ছিল। তখন তিনি বলেন, নবী কারীম (সা) আমাদের দিকে তার আঙ্গুলগুলো একত্র করে বললেন- রেহেম (আত্মীয়তার বন্ধন) হলো রহমান এর অংশ। যে তাকে যুক্ত রাখবে আল্লাহ তাকে যুক্ত রাখবেন। আর যে তাকে ছিন্ন করবে, রহমান তাকে ছিন্ন করবেন। কিয়ামতের দিন (অভিযোগের জন্য) তার তীক্ষ্ন যবান হবে।

হাদিস ৫৫

55 – عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الرَّحِمُ شُجْنَةٌ مِنَ اللَّهِ، مَنْ وَصَلَهَا وَصَلَهُ اللَّهُ، وَمَنْ قَطَعَهَا قَطَعَهُ اللَّهُ»

صحيح

হযরত আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- রেহেম আল্লাহর একটি অংশ। যে তাকে জুড়ে রাখবে, আল্লাহও তাকে জুড়ে রাখবেন। আর যে তাকে ছিন্ন করবে আল্লাহও তাকে ছিন্ন করবেন।

চলবে ইনশাআল্লাহ

بَابُ صِلَةِ الرَّحِمِ تَزِيدُ فِي الْعُمْرِ

আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখা আয়ূ বৃদ্ধি করে

56 – عَنِ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ أَحَبَّ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ، وَأَنْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ، فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ»

صحيح

৫৬- হযরত ইবনে শিহাব থেকে বর্ণিত যে, আমাকে হযরত আনাস (রা) বলেছেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি এটা পছন্দ করে যে, তার রিযিক প্রশস্ত হোক, তার পশ্চাদ্ধাবনকারী (মৃত্যু) বিলম্বিত হোক, তবে তার উচিত আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখা।

57 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ، وَأَنْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ، فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ»

صحيح

৫৭- হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছি- যে ব্যক্তির এই বিষয়টি আনন্দ দেয় যে, তার রিযিক প্রশস্ত হোক, তার পশ্চাদ্ধাবনকারী (মৃত্যু) বিলম্বিত হোক, তবে তার উচিত আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখা।

بَابُ مَنْ وَصَلَ رَحِمَهُ أَحَبَّهُ أَهْلُهُ

যে আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখে তাকে তার স্বজন-পরিজনরা পছন্দ কর

58 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: مَنِ اتَّقَى رَبَّهُ، وَوَصَلَ رَحِمَهُ، نُسِّئَ فِي أَجَلِهِ، وَثَرَى مَالُهُ، وَأَحَبَّهُ أَهْلُهُ

  حسن

৫৮- হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- যে ব্যক্তি তার প্রতিপালককে ভয় করে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, তার আয়ূ লম্বা করে দেয়া হয়, তার সম্পদ বাড়িয়ে দেয়া হয় এবং তার স্বজন-পরিজনরা তাকে মহব্বত করতে থাকে।

59 – قَالَ ابْنُ عُمَرَ: مَنِ اتَّقَى رَبَّهُ، وَوَصَلَ رَحِمَهُ، أُنْسِئَ لَهُ فِي عُمْرِهِ، وَثَرَى مَالُهُ، وَأَحَبَّهُ أَهْلُهُ

  حسن

৫৯- হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- যে ব্যক্তি তার প্রতিপালককে ভয় করে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, তার আয়ূ লম্বা করে দেয়া হয়, তার সম্পদ বাড়িয়ে দেয়া হয় এবং তার স্বজন-পরিজনরা তাকে মহব্বত করতে থাকে।

بَابُ بِرِّ الْأَقْرَبِ فَالْأَقْرَبِ

নিকটবর্তীতা অনুযায়ী নিকট আচরণ

60 – عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِي كَرِبَ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ يُوصِيكُمْ بِأُمَّهَاتِكُمْ، ثُمَّ يُوصِيكُمْ بِأُمَّهَاتِكُمْ، ثُمَّ يُوصِيكُمْ بِآبَائِكُمْ، ثُمَّ يُوصِيكُمْ بِالْأَقْرَبِ فَالْأَقْرَبِ»

صحيح

৬০- হযরত মিকদাম ইবনে মাদিকারব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছেন- নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়েদের ব্যাপারে সদ্ব্যবহার করতে উপদেশ প্রদান করছেন। অতঃপর আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়েদের ব্যাপারে (আবারো) সদ্ব্যবহার করতে উপদেশ প্রদান করছেন। অতঃপর আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের পিতাদের ব্যাপারে সদ্ব্যবহার করতে উপদেশ প্রদান করছেন। অতঃপর আল্লাহ তোমাদেরকে নিকটবর্তীতা অনুযায়ী নিকটাত্মীয়দের ব্যাপারে সদ্ব্যবহার করতে উপদেশ প্রদান করছেন।

চলবে ইনশাআল্লাহ

61 – أَخْبَرَنَا أَبُو أَيُّوبَ سُلَيْمَانُ مَوْلَى عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ قَالَ: جَاءَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ عَشِيَّةَ الْخَمِيسِ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ فَقَالَ: أُحَرِّجُ عَلَى كُلِّ قَاطِعِ رَحِمٍ لَمَا قَامَ مِنْ عِنْدِنَا، فَلَمْ يَقُمْ أَحَدٌ حَتَّى قَالَ ثَلَاثًا، فَأَتَى فَتًى عَمَّةً لَهُ قَدْ صَرَمَهَا مُنْذُ سَنَتَيْنِ، فَدَخَلَ عَلَيْهَا، فَقَالَتْ لَهُ: يَا ابْنَ أَخِي، مَا جَاءَ بِكَ؟ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ كَذَا وَكَذَا، قَالَتِ: ارْجِعْ إِلَيْهِ فَسَلْهُ: لِمَ قَالَ ذَاكَ؟ قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ أَعْمَالَ بَنِي آدَمَ تُعْرَضُ عَلَى اللَّهِ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَشِيَّةَ كُلِّ خَمِيسٍ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ، فَلَا يَقْبَلُ عَمَلَ قَاطِعِ رَحِمٍ»

ضعيف

১- হযরত আবু আউয়ুব (রহ) বলেন। আমাদের এখানে এক বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়  জুমারাতে হযরত আবু হরায়রা (রা) আগমন করেন এবং এসে বললেন, আমি প্রত্যেক আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারীর প্রতি কঠোর হব। যদি কোন আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী এখানে থাকে, তবে সে যেন এখান থেকে উঠে যায়। এতে যখন কেউ উঠল না, তখন তিনি তিনবার একথা বললেন। অতএব এক যুবক তখন সেখান থেকে উঠে তার ফুফুর নিকট গেল, যার সাথে সে দুই বৎসর যাবত সম্পর্ক ছিন্ন করে রেখেছিল। যখন তিনি ফুফর কাছে গেলেন, তখন ফুফু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে ভাতিজা! তুমি কি মনে করে এখানে আসলে? সে বলল, হযরত আবু হুরায়রা (রা) এমন এমন বললেন, তাই এসেছি। তিনি বললেন, তুমি যাও, তার নিকট গিয়ে জিজ্ঞাসা কর, কেন তিনি এমন বললেন। (সে যাওয়ার পর) আবু হুরায়রা (রা) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছি- আদম সন্তানের আমল প্রতি বৃহস্পতিবার জুমারাতে আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়, তখন আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারীর আমল কবুল হয় না।  

62 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ: مَا أَنْفَقَ الرَّجُلُ عَلَى نَفْسِهِ وَأَهْلِهِ يَحْتَسِبُهَا إِلَّا آجَرَهُ اللَّهُ تَعَالَى فِيهَا، وَابْدَأْ بِمَنْ تَعُولُ، فَإِنْ كَانَ فَضْلًا فَالْأَقْرَبَ الْأَقْرَبَ، وَإِنْ كَانَ فَضْلًا فَنَاوِلْ

ضعيف

২.হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। যে ব্যক্তি সওয়াব ও প্রতিদানের আশায় নিজের ও নিজের পরিবারে প্রতি খরচ করে, তবে আল্লাহ তাকে তার প্রতিদান দান করেন। আর নিজের পরিবার থেকে খরচ করা শুরু কর, যারা তোমার তত্বাবধানে আছে। অতঃপর যদি অর্থ সম্পদ অবশিষ্ট থাকে তবে নিকটাত্মীয়দের প্রতি খরচ কর। অতঃপর যদি আরো বেশী হয়, তখন যেথা ইচ্ছা (বৈধভাবে) খরচ কর।

চলবে ইনশাআল্লাহ

بَابُ لَا تَنْزِلُ الرَّحْمَةُ عَلَى قَوْمٍ فِيهِمْ قَاطِعُ رَحِمٍ

যে সম্প্রদায়ের মধ্যে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী থাকে তাদের প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয় না

63 – أَخْبَرَنَا سُلَيْمَانُ أَبُو إِدَامٍ قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ أَبِي أَوْفَى يَقُولُ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّالرَّحْمَةَ لَا تَنْزِلُ عَلَى قَوْمٍ فِيهِمْ قَاطِعُ رَحِمٍ»

ضعيف

৬৩.হযরত আব্দুল্লাহ বিন আবি আউফা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- ঐ সম্প্রদায়ের প্রতি আল্লাহর রহমত হয় না, যাদের মধ্যে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী থাকে।

بَابُ إِثْمِ قَاطِعِ الرَّحِمِ

আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করার গুনাহ

64 – أَنَّ جُبَيْرَ بْنَ مُطْعِمٍ أَخْبَرَهُ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ»

صحيح

৬৪.হযরত যুবায়র বিন মুতয়িম (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারী বেহেশতে প্রবেশ করবে না।

65 – حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ قَالَ: حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ: أَخْبَرَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْجَبَّارِ قَالَ: سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ كَعْبٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يُحَدِّثُ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” إِنَّ الرَّحِمَ شُجْنَةٌ مِنَ الرَّحْمَنِ، تَقُولُ: يَا رَبِّ، إِنِّي ظُلِمْتُ، يَا رَبِّ، إِنِّي قُطِعْتُ، يَا رَبِّ، إِنِّي إِنِّي، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ. فَيُجِيبُهَا: أَلَا تَرْضَيْنَ أَنْ أَقْطَعَ مَنْ قَطَعَكِ، وَأَصِلَ مَنْ وَصَلَكِ؟ “

حسن

৬৫.হযরত আবু হুরায়রা (রা) নবী (সা) থেকে বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই রেহেমের মূল হলো রহমান। রেহেম বলে, হে আমার প্রতিপালক! আমার প্রতি যুলুম করা হয়েছে। হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ছিন্ন করা হয়েছে। হে আমার প্রতিপালক! আমি আমি। হে আমার প্রতিপালক! এমন এমন। আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে যে তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব। আর যে তোমাকে জুড়ে রাখবে, আমিও তাকে জুড়ে রাখব।

66 – حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ سَمْعَانَ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ يَتَعَوَّذُ مِنْ إِمَارَةِ الصِّبْيَانِ وَالسُّفَهَاءِ. فَقَالَ سَعِيدُ بْنُ سَمْعَانَ: فَأَخْبَرَنِي ابْنُ حَسَنَةَ الْجُهَنِيُّ أَنَّهُ قَالَ لِأَبِي هُرَيْرَةَ: مَا آيَةُ ذَلِكَ؟ قَالَ: أَنْ تُقْطَعَ الْأَرْحَامُ، وَيُطَاعَ الْمُغْوِي، وَيُعْصَى الْمُرْشِدُ

  صحيح

৬৬.হযরত সাঈদ বিন সামআন বর্ণনা করেন। তিনি বলেন- আমি হযরত আবু হুরায়রা (রা) কে বাচ্চা ও নির্বোধদের কর্তৃত্ব থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে শুনেছি। হযরত সাঈদ বিন সামআন বলেন, আমাকে ইবনে হাসানাহ জুহনী বলেছেন। তিনি হযরত আবু হুরায়রা (রা) কে জিজ্ঞাসা করলেন, তার আলামত কি? বললেন, তার আলামত হলো, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হবে। পথভ্রষ্টদের অনুসরণ করা হবে। আর হিদায়াতপ্রাপ্তদের নাফরমানী করা হবে।

بَابُ عُقُوبَةِ قَاطِعِ الرَّحِمِ فِي الدُّنْيَا

দুনিয়াতে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্নকারীর শাস্তি

67 – عَنْ أَبِي بَكْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ ذَنْبٍ أَحْرَى أَنْ يُعَجِّلَ اللَّهُ لِصَاحِبِهِ الْعُقُوبَةَ فِي الدُّنْيَا، مَعَ مَا يَدَّخِرُ لَهُ فِي الْآخِرَةِ، مِنْ قَطِيعَةِ الرَّحِمِ وَالْبَغْيِ»

صحيح

৬৭.আবু বাকরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- যুলুম এবং আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করার মত এমন কোন গুনাহ নাই, যার আখিরাতের শাস্তির পাশাপাশি দুনিয়াতেও শাস্তি ভোগ করতে হয়।

بَابُ لَيْسَ الْوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ

পারস্পরিক সম্পর্কে বরাবরকারী আত্মীয়তা সম্পর্ক রক্ষাকারী নয়

68 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَيْسَ الْوَاصِلُ بِالْمُكَافِئِ، وَلَكِنَّ الْوَاصِلَ الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا»

صحيح

৬৮.হযরত আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- সমান সমান ব্যাবহারের মনোভাব নিয়ে সম্পর্ক রক্ষাকারী আত্নীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী নয়, বরং কেউ কোন ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক নষ্ট করলেও সে যদি তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে, তবে সে-ই হচ্ছে প্রকৃত সম্পর্ক স্থাপনকারী।

بَابُ فَضْلِ مَنْ يَصِلُ ذَا الرَّحِمِ الظَّالِمَ

যে যুলমকারী আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক  রক্ষা করে তার মর্যাদা

69 – عَنِ الْبَرَاءِ قَالَ: جَاءَ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ: يَا نَبِيَّ اللَّهِ، عَلِّمْنِي عَمَلًا يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ، قَالَ: «لَئِنْ كُنْتَ أَقَصَرْتَ الْخُطْبَةَ لَقَدْ أَعْرَضْتَ الْمَسْأَلَةَ، أَعْتِقِ النَّسَمَةَ، وَفُكَّ الرَّقَبَةَ» قَالَ: أَوَ لَيْسَتَا وَاحِدًا؟ قَالَ: «لَا، عِتْقُ النَّسَمَةِ أَنْ تَعْتِقَ النَّسَمَةَ، وَفَكُّ الرَّقَبَةِ أَنْ تُعِينَ عَلَى الرَّقَبَةِ، وَالْمَنِيحَةُ الرَّغُوبُ، وَالْفَيْءُ عَلَى ذِي الرَّحِمِ، فَإِنْ لَمْ تُطِقْ ذَلِكَ، فَأْمُرْ بِالْمَعْرُوفِ، وَانْهَ عَنِ الْمُنْكَرِ، فَإِنْ لَمْ تُطِقْ ذَلِكَ، فَكُفَّ لِسَانَكَ إِلَّا مِنْ خَيْرٍ»

صحيح

৬৯.হযরত বারা (রা) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন- এক গ্রাম্য ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট আগমন করে বলল, হে আল্লাহর নবী! আমাকে এমন কোন আমল বলে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যদিও তুমি সংক্ষেপ কথা বলেছ, তথাপি তা অনেক ব্যাপক বিষয়সম্পন্ন। (তুমি) প্রাণবিশিষ্ট জান (গুলাম) আযাদ কর এবং গর্দান মুক্ত কর (বোঝা লাঘব কর)।

সে বলল, এই দুটি কি একই বিষয নয়। তিনি (সা) বললেন, না। প্রাণবিশিষ্ট জান (গুলাম) আযাদ করারর অর্থ হলো তুমি নিজে তা মুক্ত করা। আর গর্দান মুক্ত করার অর্থ হলো তুমি তা মুক্ত করতে সহায়তা করা। (যেমন) তোমার পছন্দনীয় কোন গৃহপালিত জন্তুকে দুধের জন্য নিজের কোন আত্মীয়কে দেয়া, তাদের প্রতি ইহসান করা।

যদি তুমি তা করতে সমর্থ না হও তবে সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করা। যদি তুমি এটাও করতে সমর্থ না হও তবে নিজের যবানকে ভাল কথা ভিন্ন বন্ধ রাখা।

بَابُ مَنْ وَصَلَ رَحِمَهُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ ثُمَّ أَسْلَمَ

যে জাহিলিয়াতের যুগে নেক আমল করেছে অতঃপর ইসলাম গ্রহণ করেছে

70 – أَنَّ حَكِيمَ بْنَ حِزَامٍ أَخْبَرَهُ، أَنَّهُ قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَرَأَيْتَ أُمُورًا كُنْتُ أَتَحَنَّثُ بِهَا فِي الْجَاهِلِيَّةِ، مِنْ صِلَةٍ، وَعَتَاقَةٍ، وَصَدَقَةٍ، فَهَلْ لِي فِيهَا أَجْرٌ؟ قَالَ حَكِيمٌ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَسْلَمْتَ عَلَى مَا سَلَفَ مِنْ خَيْرٍ»

  صحيح

৭০.হযরত হাকীম ইবনে হিযাম (রা) বর্ণনা করেন। তিনি নবী (সা) এর নিকট আরয করেন- আমার অতিবাহিত হওয়া সময় সম্পর্কে আপনি কি বলেন, যা আমি জাহিলিয়াতের যুগে আত্মীয়দের সাথে সদ্ব্যবহার, গুলাম আযাদ করা এবং দান-সাদকা স্বরুপ করেছি- তার জন্য কোন প্রতিদান পাব কি? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, তোমার অতীতের কৃত নেক আমলের বদৌলতেই তুমি ইসলাম গ্রহণ করতে পেরেছ।

بَابُ صِلَةِ ذِي الرَّحِمِ الْمُشْرِكِ وَالْهَدِيَّةِ

মুশরিক আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা এবং তাকে হাদিয়া প্রদান করা

71 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رَأَى عُمَرُ حُلَّةً سِيَرَاءَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَوِ اشْتَرَيْتَ هَذِهِ، فَلَبِسْتَهَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَلِلْوُفُودِ إِذَا أَتَوْكَ، فَقَالَ: «يَا عُمَرُ، إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لَا خَلَاقَ لَهُ» ، ثُمَّ أُهْدِيَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْهَا حُلَلٌ، فَأَهْدَى إِلَى عُمَرَ مِنْهَا حُلَّةً، فَجَاءَ عُمَرُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، بَعَثْتَ إِلَيَّ هَذِهِ، وَقَدْ سَمِعْتُكَ قُلْتَ فِيهَا مَا قُلْتَ، قَالَ: «إِنِّي لَمْ أُهْدِهَا لَكَ لِتَلْبَسَهَا، إِنَّمَا أَهْدَيْتُهَا إِلَيْكَ لِتَبِيعَهَا أَوْ لِتَكْسُوَهَا» ، فَأَهْدَاهَا عُمَرُ لِأَخٍ لَهُ مِنْ أُمِّهِ مُشْرِكٍ

صحيح

৭১.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা উমর (রা) এক জোড়া রেশমী ডোরাদার কাপড় বিক্রি হতে দেখলেন। এরপর তিনি নবী (সা)-কে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ আপনি এটি ক্রয় করুন, জুমুআর দিন এবং আপনার কাছে যখন প্রতিনিধি দল আসে তখন আপনি তা পড়বেন। তিনি বললেন- এটা সে-ই পড়তে পারে, যার জন্য কল্যাণের কোন অংশ নেই।

এরপর নবী (সা)-এর নিকট কিছু কারুকার্যময় কাপড় আসে। তিনি তা থেকে এক জোড়া কাপড় উমর (রা)-এর নিকট পাঠিয়ে দেন। তখন তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট তিনি এসে বললেন, আপনি আমার কাছে এটা পাঠিয়েছেন অথচ এ বিষয়ে আপনি যা বলার তা শুনেছি। নবী (সা) বললেন, আমি তোমাকে এটি পড়ার জন্য দেইনি, বরং এই জন্যেই দিয়েছি যে, তুমি ওটা বিক্রি করে দেবে অথবা অন্যকে পরতে দেবে। তখন উমর (রা) তার এক বৈপিত্রেয় (মা এক পিতা ভিন্ন) মুশরিক ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন।

بَابُ تَعَلَّمُوا مِنْ أَنْسَابِكُمْ مَا تَصِلُونَ بِهِ أَرْحَامَكُمْ

তোমাদের নিজেদের বংশ পরিচয় জেনে রাখ যেন তোমরা তাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে পার

72 – أَنَّ جُبَيْرَ بْنَ مُطْعِمٍ أَخْبَرَهُ، أَنَّهُ سَمِعَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَقُولُ عَلَى الْمِنْبَرِ: «تَعَلَّمُوا أَنْسَابَكُمْ، ثُمَّ صِلُوا أَرْحَامَكُمْ، وَاللَّهِ إِنَّهُ لِيَكُونُ بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ أَخِيهِ الشَّيْءُ، وَلَوْ يَعْلَمُ الَّذِي بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ مِنْ دَاخِلَةِ الرَّحِمِ، لَأَوْزَعَهُ ذَلِكَ عَنِ انْتِهَاكِهِ»

حسن الإسناد وصح مرفوعا

৭২.হযরত যুবায়র ইবনুল মুতয়িম (রা) বর্ণনা করেন। তিনি হযরত উমর (রা)-কে মিম্বরের উপর বলতে শুনেছেন- তোমরা তোমাদের বংশ পরিচয় জেনে রাখ অতঃপর আত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখ। আল্লাহর শপথ! কখনো কোন ব্যক্তির তার (মুসলিম) ভাইয়ের সাথে কিছু একটা (রাগ-ঝগড়া) হয়ে যায় অথচ যদি সে জানত যে, তার সাথে তার আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে, তবে সে তার সম্মানের প্রতি কখনো আঁচও আসতে দিত না।

73 – عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ قَالَ: احْفَظُوا أَنْسَابَكُمْ، تَصَلُوا أَرْحَامَكُمْ، فَإِنَّهُ لَا بُعْدَ بِالرَّحِمِ إِذَا قَرُبَتْ، وَإِنْ كَانَتْ بَعِيدَةً، وَلَا قُرْبَ بِهَا إِذَا بَعُدَتْ، وَإِنْ كَانَتْ قَرِيبَةً، وَكُلُّ رَحِمٍ آتِيَةٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَمَامَ صَاحِبِهَا، تَشْهَدُ لَهُ بِصِلَةٍ إِنْ كَانَ وَصَلَهَا، وَعَلَيْهِ بِقَطِيعَةٍ إِنْ كَانَ قَطَعَهَا

صحيح الإسناد وصح مرفوعا

৭৩.হযরত ইবনে অব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- তোমরা তোমাদের বংশপঞ্জিকা সংরক্ষণ কর এবং পরস্পর আত্মীয়তা সম্পর্ক বজায় রাখ। কেননা আত্মীয়তার জন্য কোন দূরত্ব থাকে না, যখন সম্পর্ক ভাল হয়- যদিও আত্মীয় দূরের হয়। অনুরুপ আত্মীয়তার জন্য কোন নৈকট্য থাকে না, যখন সম্পর্ক ভাল না হয়- যদিও আত্মীয় কাছের হয়। আত্মীয়তা সম্পর্ক কিয়ামতের দিন আত্মীয়তার সম্পর্কের অধিকারীর নিকট আসবে এবং সে তার আত্মীয়তা সম্পর্কের সাক্ষ্য প্রদান করবে। যদি সে সম্পর্ক রক্ষাকারী হয় তবে তার পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করবে। আর যদি সে সম্পর্ক ছিন্নকারী হয় তবে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করবে। 

بَابُ: هَلْ يَقُولُ الْمَوْلَى: إِنِّي مِنْ فُلَانٍ؟

গুলাম কি এই কথা বলবে যে আমার অমুক গোত্রের সাথে সম্পর্ক আছে?

74 – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ قَالَ: قَالَ لِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ: «مِمَّنْ أَنْتَ؟» قُلْتُ: مِنْ تَيْمِ تَمِيمٍ، قَالَ: مِنْ أَنْفُسِهِمْ أَوْ مِنْ مَوَالِيهِمْ؟ قُلْتُ: مِنْ مَوَالِيهِمْ، قَالَ: فَهَلَّا قُلْتَ: مِنْ مَوَالِيهِمْ إِذًا؟

ضعيف

৭৪.হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবী হাবিব (রহ) বলেন- তুমি কোন গোত্রের লোক? আমি বললাম, তায়িম তামিম গোত্রের। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তাদের মধ্য থেকে না তাদের আযাদকৃত গুলামদের মধ্য হতে? আমি বললাম তাদের মুক্তদাসদের মধ্য হতে। তিনি বললেন, তবে বললে না কেন যে তুমি তাদের আযাকৃত গুলাম?

بَابُ مَوْلَى الْقَوْمِ مِنْ أَنْفُسِهِمْ

গুলামও তার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত

75 – عَنْ رِفَاعَةَ بْنِ رَافِعٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِعُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ: «اجْمَعْ لِي قَوْمَكَ» ، فَجَمَعَهُمْ، فَلَمَّا حَضَرُوا بَابَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ عَلَيْهِ عُمَرُ فَقَالَ: قَدْ جَمَعْتُ لَكَ قَوْمِي، فَسَمِعَ ذَلِكَ الْأَنْصَارُ فَقَالُوا: قَدْ نَزَلَ فِي قُرَيْشٍ الْوَحْيُ، فَجَاءَ الْمُسْتَمِعُ وَالنَّاظِرُ مَا يُقَالُ لَهُمْ، فَخَرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَامَ بَيْنَ أَظْهُرِهِمْ فَقَالَ: «هَلْ فِيكُمْ مِنْ غَيْرِكُمْ؟» قَالُوا: نَعَمْ، فِينَا حَلِيفُنَا وَابْنُ أُخْتِنَا وَمَوَالِينَا، قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” حَلِيفُنَا مِنَّا، وَابْنُ أُخْتِنَا مِنَّا، وَمَوَالِينَا مِنَّا، وَأَنْتُمْ تَسْمَعُونَ: إِنَّ أَوْلِيَائِي مِنْكُمُ الْمُتَّقُونَ، فَإِنْ كُنْتُمْ أُولَئِكَ فَذَاكَ، وَإِلَّا فَانْظُرُوا، لَا يَأْتِي النَّاسُ بِالْأَعْمَالِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَتَأْتُونَ بِالْأَثْقَالِ، فَيُعْرَضَ عَنْكُمْ “، ثُمَّ نَادَى فَقَالَ: ” يَا أَيُّهَا النَّاسُ – وَرَفَعَ يَدَيْهِ يَضَعَهُمَا عَلَى رُءُوسِ قُرَيْشٍ – أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ قُرَيْشًا أَهْلُ أَمَانَةٍ، مَنْ بَغَى بِهِمْ – قَالَ زُهَيْرٌ: أَظُنُّهُ قَالَ: الْعَوَاثِرَ – كَبَّهُ اللَّهُ لِمِنْخِرَيْهِ “، يَقُولُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ

حسن

৭৫.হযরত রিফাআ বিন রাফে (রা) বর্ণনা করেন। নবী (সা) হযরত উমর (রা) কে বললেন- আমার জন্য তোমার সম্প্রদায়ের লোকজনকে একত্রিত কর। তখন তিনি সকলকে একত্রিত করলেন। তারা যখন রাসূলুল্লাহ (সা) এর দরজার নিকটে একত্রিত হলো, তখন উমর (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট গিয়ে আরয করল- আমি আমার সম্প্রদায়ের লোকজনকে আপনার সামনে একত্রিত করেছি। আনসার সাহাবীরা শুনে বলল যে, হয়তো কুরায়শদের ব্যাপারে ওহী নাযিল হয়েছে। অতএব তারা দেখতে ও শুনতে আসল যে, তাদেরকে কি বলা হয়।

অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সা) তাদের কাছে এসে তাদের মাঝে দাড়িয়ে বললেন- তোমাদের মাঝে কি তোমাদের ছাড়া আর কেউ আছে? তারা বলল, হ্যাঁ। আমাদের সাথে আমাদের মিত্রগণ, আমাদের ভগ্নিপুত্রগণ এবং আমাদের আযাদকৃত গুলামরাও রয়েছে। নবী (সা) বললেন, আমাদের মিত্রগণ, আমাদের ভগ্নিপুত্রগণ এবং আমাদের আযাদকৃত গুলামরাও আমাদের অন্তর্ভুক্ত। আর তোমরা জেনে রাখ! তোমাদের মধ্যে যারা মুত্তাকী তারাই আমার বন্ধু ও মিত্র। যদি তোমরা তাই হও তবে তো ঠিকই আছে। আর না হয় তোমরা দেখবে যে, কিয়ামতের দিন তোমরা তোমাদের আমল ও গুনাহর বোঝা নিয়ে আগমন করবে আর তোমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

অতঃপর তিনি তাদেরকে ডেকে বললেন এবং তার দু্‌ই হাত উঁচু করে তাদের মাথার উপর রেখে বললেন- কুরায়শরা আমনতদার! যে তাদের বিরুদ্ধাচরণ করবে- রাবী বলেন- আমরা ধারণা তিনি বলেছেন- الْعَوَاثِرَ সে তার জন্য বিপদ ও জটিলতা টেনে আনবে- আল্লাহ তাআলা তাকে তার মুখের উপর উপুর করে জাহান্নামে ফেলবেন। এ কথাটি রাসূলুল্লাহ (সা) তিনবার বললেন।

চলবে ইনশাআল্লাহ

[হাদীস ৭৬- সন্তান-সন্ততীর সাথে সদাচরণ সম্পর্কিত]

41- بَابُ مَنْ عَالَ جَارِيَتَيْنِ أَوْ وَاحِدَةً

যে ব্যক্তি এক অথবা দুইজন কন্যাসন্তান প্রতিপালন করে

76 – عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ كَانَ لَهُ ثَلَاثُ بَنَاتٍ، وَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ، وَكَسَاهُنَّ مِنْ جِدَتِهِ، كُنَّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ» .صحيح

৭৬.উকবা ইবনে আমির (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছি, কারো তিনটি কন্যা সন্তান থাকলে এবং সে তাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করলে, যথাসাধ্য তাদের (পানাহার ও) পোশাক-আশাক দিলে, তারা কিয়ামতের দিন তার জন্য জাহান্নাম থেকে অন্তরায় হবে।

77 – عَنْ شُرَحْبِيلَ قَالَ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا مِنْ مُسْلِمٍ تُدْرِكُهُ ابْنَتَانِ، فَيُحْسِنُ صُحْبَتَهُمَا، إِلَّا أَدْخَلَتَاهُ الْجَنَّةَ» .حسن لغيره

৭৭.ইবনে আববাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- কোন ব্যক্তির দু’টি কন্যা সন্তান থাকলে এবং সে তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করলে, তবে তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।

78 – حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ حَدَّثَهُمْ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ كَانَ لَهُ ثَلَاثُ بَنَاتٍ، يُؤْوِيهِنَّ، وَيَكْفِيهِنَّ، وَيَرْحَمُهُنَّ، فَقَدْ وَجَبَتْ لَهُ الْجَنَّةُ الْبَتَّةَ» ، فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ بَعْضِ الْقَوْمِ: وَثِنْتَيْنِ، يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «وَثِنْتَيْنِ» .حسن

৭৮.হযরত মুহাম্মদ ইবনে মুনকাদির (রহ) বর্ণনা করেন। হযরত জাবির (রা) তার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা থাকে আর সে তাদেরকে আশ্রয় দেয় ও প্রতিপালন করে এবং তাদের সাথে দয়ার্দ্র আচরণ করে, তবে তার জন্য নিঃসন্দেহে জান্নাত ওয়াজীব। লোকদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, যদি দুটি হয়? তিনি (সা) বললেন, দুটি হলেও।

42- بَابُ مَنْ عَالَ ثَلَاثَ أَخَوَاتٍ

যে ব্যক্তি তিন বোনকে প্রতিপালন করে

79 – عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَكُونُ لِأَحَدٍ ثَلَاثُ بَنَاتٍ، أَوْ ثَلَاثُ أَخَوَاتٍ، فَيُحْسِنُ إِلَيْهِنَّ، إِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ» .حسن

৭৯.আবু সাঈদ খুদরী (রা) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা বা বোন থাকে আর সে তাদের সাথে দয়ার আচরণ করে তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

43- بَابُ فَضْلِ مَنْ عَالَ ابْنَتَهُ الْمَرْدُودَةَ

যে তার ছেড়ে দেয়া কন্যা সন্তানকে প্রতিপালন করে তার মর্যাদা

80 – حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لِسُرَاقَةَ بْنِ جُعْشُمٍ: «أَلَا أَدُلُّكَ عَلَى أَعْظَمِ الصَّدَقَةِ، أَوْ مِنْ أَعْظَمِ الصَّدَقَةِ؟» قَالَ: بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالَ: «ابْنَتُكَ مَرْدُودَةٌ إِلَيْكَ، لَيْسَ لَهَا كَاسِبٌ غَيْرُكَ» . ضعيف

৮০.হযরত মূসা বিন আলী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) সুরাকা ইবনে জু’শুম (রা)-কে বলেন, আমি কি তোমাকে সবচেয়ে বড় সাদকা অথবা যা বড় সাদকার মধ্যে গণ্য হয় তার সম্পর্কে বলব না? সে বলল, অবশ্যই ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, তা হলো, তোমার সে কন্যা (বা বোন) যে তোমার নিকট ফিরে এসেছে এবং তুমি ছাড়া তার আর কোন উপার্জনকারী নেই।

81 – عَنْ سُرَاقَةَ بْنِ جُعْشُمٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «يَا سُرَاقَةُ» مِثْلَهُ

ضعيف

৮১.হযরত সুরাকা ইবনে জু’শুম (রা) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন- হে সুরাকা! অতঃপর বর্ণনাকারী অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেন।

82 – عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِي كَرِبَ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَا أَطْعَمْتَ نَفْسَكَ فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ، وَمَا أَطْعَمْتَ وَلَدَكَ فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ، وَمَا أَطْعَمْتَ زَوْجَكَ فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ، وَمَا أَطْعَمْتَ خَادِمَكَ فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ» .صحيح

৮২.হযরত মিকদাম ইবনে মাদীকারব (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছেন- তুমি নিজের ভরণপোষণের জন্য যা ব্যয় কর তা তোমার জন্য সাদকা। তোমার সন্তানের ভরণপোষণের জন্য যা ব্যয় কর তা তোমার জন্য সাদকা। তোমার স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য যা ব্যয় কর তা তোমার জন্য সাদকা। তোমার খাদিম ও পরিচর্যাকারীর ভরণপোষণের জন্য যা ব্যয় কর তা তোমার জন্য সাদকা।

44- بَابُ مَنْ كَرِهَ أَنْ يَتَمَنَّى مَوْتَ الْبَنَاتِ

যে ব্যক্তি তার কন্যা সন্তানের মৃত্যু কামনা অপছন্দ করে

83 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَجُلًا كَانَ عِنْدَهُ، وَلَهُ بَنَاتٌ فَتَمَنَّى مَوْتَهُنَّ، فَغَضِبَ ابْنُ عُمَرَ فَقَالَ: أَنْتَ تَرْزُقُهُنَّ؟ .ضعيف

৮৩.হযরত ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত। তার নিকট একজন লোক বসা ছিল। তার কয়েকজন কন্যা ছিল। আর সে (কথায় কথায়) তাদের মৃত্যু কামনা করল। তখন ইবনে উমর (রা) তার উপর খুব রাগান্বিত হয়ে বললেন, তুমিই কি তাদেরকে রিযিক প্রদান কর?

45- بَابُ الْوَلَدُ مَبْخَلَةٌ مَجْبَنَةٌ

সন্তানের কারণে কৃপণ ও ভীরু হওয়া

84 – عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَالَ أَبُو بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يَوْمًا: وَاللَّهِ مَا عَلَى وَجْهِ الْأَرْضِ رَجُلٌ أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْ عُمَرَ، فَلَمَّا خَرَجَ رَجَعَ فَقَالَ: كَيْفَ حَلَفْتُ أَيْ بُنَيَّةُ؟ فَقُلْتُ لَهُ، فَقَالَ: أَعَزُّ عَلَيَّ، وَالْوَلَدُ أَلْوَطُ .حسن

৮৪.হযরত আয়িশা (রা) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, হযরত আবু বকর (রা) একদিন বললেন, আল্লাহর শপথ! পৃথিবীর বুকে আমার নিকট উমরের চাইতে বেশী প্রিয় আর কেউ নাই। অতঃপর তিনি বাহিরে গিয়ে ফিরে এসে বললেন, হে আমার কন্যা! আমি কি শপথ করেছিলাম? তখন আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম। তিনি বললেন, সে আমার নিকট খুব আদরনীয়। আর সন্তান তো কলিজার টুকরা হয়ে থাকে।

85 – عَنِ ابْنِ أَبِي نُعْمٍ قَالَ: كُنْتُ شَاهِدًا ابْنَ عُمَرَ إِذْ سَأَلَهُ رَجُلٌ عَنْ دَمِ الْبَعُوضَةِ؟ فَقَالَ: مِمَّنْ أَنْتَ؟ فَقَالَ: مِنْ أَهْلِ الْعِرَاقِ، فَقَالَ: انْظُرُوا إِلَى هَذَا، يَسْأَلُنِي عَنْ دَمِ الْبَعُوضَةِ، وَقَدْ قَتَلُوا ابْنَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «هُمَا رَيْحَانَيَّ مِنَ الدُّنْيَا» .صحيح

৮৫.ইবনে আবু নু’ম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ের সাক্ষী যে, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে উমর (রা) এর নিকট মশার রক্ত বিষয়ে (মাসআলা) জিজ্ঞাসা করল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কোথাকার অধিবাসী? সে বলল, আমি ইরাকের অধিবাসী। তিনি বললেন, তোমরা এর দিকে দেখ, সে (তুচ্ছ বিষয়) মশার রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে। অথচ তারা নবী (সা) এর সন্তান [নাতী- হুসায়ন (রা)]-কে হত্যা করেছে। আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি- এই দুজন (হাসান-হুসাইন) আমার দুনিয়ার দুটি ফুল।

চলবে
 
Top