আল মুস্তাদরাক হাকীম

অধ্যায়ঃ কিতাবুল ইমান

1 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا»

১. হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মুমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ ইমানদার ঐ ব্যক্তি যার চরিত্র সবচাইতে উত্তম।

2 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا»

২. [ভিন্ন সূত্রে] হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মুমিনদের মধ্যে পরিপূর্ণ ইমানদার ঐ ব্যক্তি যার চরিত্র সবচাইতে উত্তম।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

3 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَجِدْ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ، فَلْيُحِبِ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ»

৩. হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি ইমানের স্বাদ লাভ করে আনন্দিত হতে চায়, তবে সে যেন আল্লাহর জন্যই কাউকে ভালবাসে আর আল্লাহর জন্যই কাউকে ঘৃণা করে।

4 – عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ عُمَرَ، خَرَجَ إِلَى الْمَسْجِدِ يَوْمًا فَوَجَدَ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ عِنْدَ قَبْرِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَبْكِي، فَقَالَ: مَا يُبْكِيكَ يَا مُعَاذُ؟ قَالَ: يُبْكِينِي حَدِيثٌ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «الْيَسِيرُ مِنَ الرِّيَاءِ شِرْكٌ، وَمَنْ عَادَى أَوْلِيَاءَ اللَّهِ فَقَدْ بَارَزَ اللَّهَ بِالْمُحَارَبَةِ، إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْأَبْرَارَ الْأَتْقِيَاءَ الْأَخْفِيَاءَ، الَّذِينَ إِنْ غَابُوا لَمْ يُفْتَقَدُوا، وَإِنْ حَضَرُوا لَمْ يُعْرَفُوا، قُلُوبُهُمْ مَصَابِيحُ الْهُدَى، يَخْرُجُونَ مِنْ كُلِّ غَبْرَاءَ مُظْلِمَةٍ»

৪. হযরত যায়দ ইবনে আসলাম (رضي الله عنه) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। একবার হযরত উমর (رضي الله عنه) মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন দেখলেন, হযরত মুয়ায (رضي الله عنه) রাসূলূল্লাহ (ﷺ) এর কবরের পাশে বসে কাঁদছেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, হে মুয়ায! তুমি কেন কাঁদছ?  তিনি বললেন, আমাকে ঐ হাদীসটি কাঁদাচ্ছে যা আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি।

তিনি ইরশাদ করেছেন- সামান্য রিয়াও শির্‌ক। আর যে আল্লাহর কোন ওলীর সাথে শত্রুতা করে তবে সে যেন আল্লাহর সাথে যুদ্ধে নামে। আল্লাহ তাআলা এমন লোকদেরকে ভালবাসেন যারা নেক, মুত্তাকী ও নিজেকে গোপনকারী হয়। তারা এমন যে, তারা যদি অনুপস্থিত থাকে তবে তাদেরকে পাওয়া যায়না আর উপস্থিত থাকলে চেনা যায় না। তাদের অন্তর হিদায়াতের মশাল আর তারা প্রত্যেক অপরিচ্ছন্নতা ও অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসেন।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

5 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الْإِيمَانَ لَيَخْلَقُ فِي جَوْفِ أَحَدِكُمْ كَمَا يَخْلَقُ الثَّوْبُ الْخَلِقُ، فَاسْأَلُوا اللَّهَ أَنْ يُجَدِّدَ الْإِيمَانَ فِي قُلُوبِكُمْ»

৫. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- তোমাদের মধ্যে ইমানের দুর্বলতা এমনভাবে এসে যায়, যেমনিভাবে কাপড় পুরনো হয়ে যায়। অতএব তোমরা  আল্লাহর নিকট দুআ কর, যেন তিনি তোমাদের অন্তরের ইমানকে সজিব ও তরতাজা করে দেন।

6 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِذَا أَذْنَبَ الْعَبْدُ نُكِتَ فِي قَلْبِهِ نُكْتَةٌ سَوْدَاءُ، فَإِنْ تَابَ صُقِلَ مِنْهَا، فَإِنْ عَادَ زَادَتْ حَتَّى تَعْظُمَ فِي قَلْبِهِ، فَذَلِكَ الرَّانُ الَّذِي ذَكَرَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ {كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ} [المطففين: 14]

৬. হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যখন বান্দা গুনাহ করে তখন তার হৃদয়ে একটি কাল দাগ লাগিয়ে দেয়া হয়। যদি সে তওবা করে তবে তা মিটিয়ে দেয়া হয়। আর যদি সে আরো গুনাহ করে তবে তা আরো সম্প্রসারিত হয়, এমনকি  শেষ পর্যন্ত পুরো অন্তরকে আচ্ছন্ন করে নেয়। এটাই সেই رَانُ – মরীচা, যার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ কখনো নয়, বরং তাদের অন্তরে মরীচা পড়ে গেছে। – সূরা তাতফীফ:১৪

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

7 – عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: ” لَمْ يَزَلْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسْأَلُ عَنِ السَّاعَةِ حَتَّى نَزَلَتْ: {فِيمَ أَنْتَ مِنْ ذِكْرَاهَا إِلَى رَبِّكَ مُنْتَهَاهَا} [النازعات: 44]

৭. হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আল্লাহর নিকট কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত জিজ্ঞাসা করতে থাকেন। অতএব এর প্রেক্ষীতে এই আয়াত নাযিল হয়-

فِيمَ أَنْتَ مِنْ ذِكْرَاهَا إِلَى رَبِّكَ مُنْتَهَاهَا

এর আলোচনার সাথে আপনার কি সম্পর্ক? এর চূড়ান্ত জ্ঞান তো আল্লাহর নিকট রয়েছে।– সূরা নাযিআত:৪৩-৪৪

8 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَأَبِي سَعِيدٍ أَنَّهُمَا شَهِدَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” إِذَا قَالَ الْعَبْدُ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ صَدَّقَهُ رَبُّهُ، قَالَ: صَدَقَ عَبْدِي، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا وَأَنَا وَحْدِي، وَإِذَا قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ صَدَّقَهُ رَبُّهُ قَالَ: صَدَقَ عَبْدِي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا وَلَا شَرِيكَ لِي، وَإِذَا قَالَ: لَا إِلَهَ أَلَا اللَّهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، قَالَ: صَدَقَ عَبْدِي، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا لِيَ الْمُلْكُ وَلِيَ الْحَمْدُ، وَإِذَا قَالَ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، قَالَ: صَدَقَ عَبْدِي، لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِي

৮. হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) এবং হযরত আবু সাঈদ আল খুদরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তারা উভয়েই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর খিদমতে উপস্থিত ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যখন বান্দা বলে- لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, তিনি মহান। তখন আল্লাহ তাআলা তার সত্যায়নে বলেন- আমার এই বান্দা সত্য বলেছে, সত্যিই আমি ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, আমি একক ও অদ্বিতীয়।

আর যখন বান্দা বলে, لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, তিনি একক, তার কোন শরীক নাই। তখন আল্লাহ তাআলা তার সত্যায়নে বলেন- আমার এই বান্দা সত্য বলেছে, সত্যিই আমি ব্যতীত কোন মাবুদ নাই আর আমার কোন শরীক নাই।

আবার যখন কোন বান্দা বলে, لَا إِلَهَ أَلَا اللَّهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, রাজত্ব আল্লাহরই, প্রশংসা একমাত্র তারই জন্য। তখন আল্লাহ তাআলা বলেন- আমার এই বান্দা সত্য বলেছে, সত্যিই আমি ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, রাজত্ব আমারই এবং প্রশংসা আমারই জন্য।

আর যখন কোন বান্দা বলে, لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং তার সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নাই। তখন আল্লাহ তাআলা বলেন- আমার এই বান্দা সত্য বলেছে, সত্যিই আমি ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, আর আমি ব্যতীত না কারো শক্তি আছে না কারো সামর্থ্য।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

9 – عَنْ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْمَعَافِرِيِّ الْحُبُلِيِّ، قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ اللَّهَ يَسْتَخْلِصُ رَجُلًا مِنْ أُمَّتِي عَلَى رُءُوسِ الْخَلَائِقِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَنْشُرُ عَلَيْهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ سِجِلًّا، كُلُّ سِجِلٍّ مِثْلُ هَذَا، ثُمَّ يَقُولُ: أَتُنْكِرُ مِنْ هَذَا شَيْئًا؟ أَظَلَمَكَ كَتَبَتِي الْحَافِظُونَ؟ فَيَقُولُ: لَا يَا رَبِّ، فَيَقُولُ: أَفَلَكَ عُذْرٌ؟ فَيَقُولُ: لَا يَا رَبِّ، فَيَقُولُ: بَلَى، إِنَّ لَكَ عِنْدَنَا حَسَنَةً، وَإِنَّهُ لَا ظُلْمَ عَلَيْكَ الْيَوْمَ، فَيُخْرِجُ بِطَاقَةً فِيهَا أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، فَيَقُولُ: يَا رَبِّ، مَا هَذِهِ الْبِطَاقَةُ مَعَ هَذِهِ السِّجِلَّاتِ؟ فَقَالَ: إِنَّكَ لَا تُظْلَمُ، قَالَ: فَتُوضَعُ السِّجِلَّاتُ فِي كِفَّةٍ، وَالْبِطَاقَةُ فِي كِفَّةٍ فَطَاشَتِ السِّجِلَّاتُ وَثَقُلَتِ الْبِطَاقَةُ، وَلَا يَثْقُلُ مَعَ اسْمِ اللَّهِ شَيْءٌ «.»

৯. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুয়াফিরী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আমি আবদুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ  (ﷺ) ইরশাদ করেন-  আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের  এক ব্যক্তিকে সমস্ত সৃষ্টির সমক্ষে আলাদা করে এনে হাযির করবেন। তার সামনে নিরানববইটি (আমলের) নিবন্ধন খাতা খুলে দিবেন, যার সব একই রকম হবে। এরপর তিনি তাকে বলবেন, এর একটি কিছুও কি অস্বীকার করতে পার? আমার সংরক্ষণকারী লিপিকারগণ (কিরামান কাতিবীন) কি তোমার উপর কোন যুলুম করেছে? লোকটি বলবে- না, হে আমার পরওয়ারদিগার। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তোমার কিছু বলার আছে কি?  লোকটি বলবে- না, হে পরওয়ারদিগার। তিনি বলবেন- হ্যাঁ, আমার কাছে তোমার একটি নেকী আছে। আজ তোমার উপর কোন যুলুম করা হবে না। তখন একটি ছোট কাগজের টুকরা বের করা হবে। এতে আছে-

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (ﷺ) তাঁর বান্দা ও রাসূল।

তখন লোকটি বলবে, হে আমার রব! এই একটি ছোট টুকরা এত বড় দফতরের সামনে কি ভূমিকা রাখে? অর্থাৎ তা তো কিছুই নয়। তখন তাকে বলা হবে, আজ তোমার উপর কোন যুলুম করা হবে না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন-  অনন্তর সবগুলো নিবন্ধন খাতা এক পাল্লায় রাখা হবে আর কাগজের ছোট সেই টুকরাটিকে আরেক পাল্লায় রাখা হবে। তখন সবগুলো দপ্তর হালকা হয়ে যাবে আর কাগজের ছোট টুকরাটিই ভারি হয়ে যাবে। আল্লাহর নামের মুকাবেলায় কোন জিনিসই ভারি হতে পারে না।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

10 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «افْتَرَقَتِ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى وَسَبْعِينَ فِرْقَةً أَوِ اثْنَتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً، وَالنَّصَارَى مِثْلُ ذَلِكَ، وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِي عَلَى ثَلَاثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً

১০. হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- ইহুদীরা একাত্তর অথবা বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়েছিল। অনুরুপ নাসারা বা খ্রিষ্টানরাও বিভক্ত হয়েছে। আর আমার উম্মত তিহাত্তর দলে বিভক্ত হবে। 

11 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْعَهْدُ الَّذِي بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمُ الصَّلَاةُ، فَمَنْ تَرَكَهَا فَقَدْ كَفَرَ»

১১. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুরায়দা (رضي الله عنه) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আমাদের মধ্যে ও তাদের (কাফিরদের) মধ্যে নামাযই পার্থক্যকারী। অতএব যে তা ছেড়ে দিবে, সে কাফির।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ এই হাদীসটির সনদ সহিহ

12 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: «كَانَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَرَوْنَ شَيْئًا مِنَ الْأَعْمَالِ تَرْكُهُ كُفْرًا غَيْرَ الصَّلَاةِ»

১২. হযরত  আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- সাহাবায়ে কিরাম (رضي الله عنه) নামায পরিত্যাগ করা ব্যতীত আর কোন আমল পরিত্যাগ করাকে কুফর মনে করতেন না।

13 – عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَصَابَ حَدًّا فَعَجَّلَ اللَّهً لَهُ عُقُوبَتَهُ فِي الدُّنْيَا فَاللَّهُ أَعْدَلُ مِنْ أَنْ يُثَنِّي عَلَى عَبْدِهِ الْعُقُوبَةَ فِي الْآخِرَةِ، وَمَنْ أَصَابَ حَدًّا فَسَتَرَهُ اللَّهُ عَلَيْهِ وَعَفَا عَنْهُ فَاللَّهُ أَكْرَمُ مِنْ أَنْ يَعُودَ فِي شَيْءٍ قَدْ عَفَا عَنْهُ»

১৩. হযরত আলী ইবন আবূ তালিব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- কেউ  যদি  গুনাহে  লিপ্ত হয় এবং দুনিয়াতেই তার শাস্তি হয়ে যায় তবে আখিরাতে দ্বিতীয়বার তাঁর এই বান্দাকে শাস্তি প্রদানের বিষয়ে আল্লাহ  তা’আলা তো বেশী ন্যায়নিষ্ঠ অর্থাৎ তিনি তাকে পুনরায় শাস্তি দিবেন না।  আর কেউ যদি হদযোগ্য কোন গুনাহ করে ফেলে আর আল্লাহ তা’আলা তার বিষয়টি গোপন করে রাখেন এবং মাফ করে দেন।  তবে মাফ করে দেওয়ার পর পুনরায় সেই বিষয়ে শাস্তি প্রদানের ব্যপারে আল্লাহ তা’আলা তো আরো অধিক দয়াবান। অর্থাৎ তার ক্ষমাপরায়ণতার জন্য তিনি তাকে শাস্তি দিবেন না।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَاد  এই হাদীসটির সনদ সহিহ

14  حَدَّثَنَا إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي، أَنَّهُ كَانَ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ بِفَرَسٍ لَهُ يَقُودُهَا عَقُوقٍ وَمَعَهَا مُهْرَةٌ لَهَا يَتْبَعُهَا، فَقَالَ: مَنْ أَنْتَ؟ فَقَالَ: «أَنَا نَبِيٌّ» ، قَالَ: مَا نَبِيٌّ؟ قَالَ: «رَسُولُ اللَّهِ» ، قَالَ: مَتَى تَقُومُ السَّاعَةُ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «غَيْبٌ وَلَا يَعْلَمُ الْغَيْبَ إِلَّا اللَّهُ» قَالَ: أَرِنِي سَيْفَكَ، فَأَعْطَاهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيْفَهُ، فَهَزَّهُ الرَّجُلُ ثُمَّ رَدَّهُ عَلَيْهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَمَا إِنَّكَ لَمْ تَكُنْ تَسْتَطِيعُ الَّذِي أَرَدْتَ» قَالَ: وَقَدْ كَانَ. . . قَالَ: اذْهَبْ إِلَيْهِ فَسَلْهُ عَنْ هَذِهِ الْخِصَالِ

১৪. হযরত ইয়াস বিন সালামাহ (رضي الله عنه) বলেন। আমাকে আমার পিতা বলেছেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি তার গর্ভবতী ঘোড়ীসহ আগমন করে, যার সাথে তার (অন্য) বাছুরও ছিল। সে জিজ্ঞাসা করল, আপনি কে? তিনি (ﷺ) বললেন, আমি আল্লাহর নবী। সে বলল, নবী কে হয়? তিনি (ﷺ) বললেন, যিনি আল্লাহর প্রেরিত হন। সে আবার জিজ্ঞাসা করল, কিয়ামত কবে হবে? তিনি (ﷺ) বললেন, এটা অজানা বিষয় যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। সে বলল, আমাকে আপনার তলোয়ার দেখান। নবী (ﷺ) তার তলোয়ার তাকে দিলেন। লোকটি তা ঝাঁকিয়ে ফিরিয়ে দিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, যা তোমার ইচ্ছা ছিল তা তুমি পুরা করতে পারবে না। সে বলল, এটা হয়েছে….[মূল কিতাবে এই স্থানে ইবারত নেই] তিনি বললেন, তার নিকট গিয়ে এই নিদর্শন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কর।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

15 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَتَى عَرَّافًا أَوْ كَاهِنًا فَصَدَّقَهُ فِيمَا يَقُولُ، فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»

১৫. হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি কোন জ্যোতিষী অথবা কোন ভবিষ্যদ্বক্তার কাছে গেল, আর সে যা বলে তা সত্য মনে করল, তবে সে মুহাম্মমদ (ﷺ) এর উপর নাযিলকৃত দীনকে অস্বীকার করল।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

16 – حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ: «مَا عَلَى الْأَرْضِ نَفْسٌ تَمُوتُ لَا تُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا تَشْهَدُ أَنِّي رَسُولُ اللَّهِ، يَرْجِعُ ذَلِكَ إِلَى قَلْبٍ مُوقِنٍ إِلَّا غَفَرَ اللَّهُ لَهَا»

১৬. হযরত মুয়ায ইবন জাবাল (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি এই যমীনে শিরক না করে মৃত্যুবরণ করে, আমার ব্যাপারে এই সাক্ষ্য দেয় যে আমি [মুহাম্মদ (ﷺ)] আল্লাহর রাসূল, আর অন্তর থেকে এর প্রতি ইয়াকীন রাখে, তবে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন।

 هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

17 – عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْحَيَاءُ وَالْعِيُّ شُعْبَتَانِ مِنَ الْإِيمَانِ، وَالْبَذَاءُ وَالْبَيَانُ شُعْبَتَانِ مِنَ النِّفَاقِ»

১৭. হযরত আবু উমামা বাহিলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- লজ্জাশীলতা এবং স্বল্পভাষী হওয়া ইমানের দুটি শাখা। আর অশ্লিলতা ও বাচালতা নিফাকের দুটি শাখা। 

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

18 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أُمَامَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْبَذَاذَةُ مِنَ الْإِيمَانِ، الْبَذَاذَةُ مِنَ الْإِيمَانِ»

১৮. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু উমামা (رضي الله عنه) তার পিতা থেকে থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন- অনাড়ম্বর (সরল) জীবন যাপন ইমানের প্রতিক। অনাড়ম্বর জীবন যাপন ইমানের প্রতিক।

19 – عَنْ أَبَا أُمَامَةَ الْبَاهِلِيَّ، يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ يَوْمَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ: «اعْبُدُوا رَبُّكُمْ، وَصَلُّوا خَمْسَكُمْ، وَصُومُوا شَهْرِكُمْ، وَأَدُّوا زَكَاةَ أَمْوَالِكُمْ، وَأَطِيعُوا ذَا أَمْرِكُمْ تَدْخُلُوا جَنَّةَ رَبِّكُمْ»

১৯. হযরত আবু উমামা বাহিলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বিদায় হজে বলতে শুনেছি- তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত কর। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় কর। রমাযান মাসের রোযা রাখ। তোমাদের সম্পদের যাকাত আদায় কর। আমীরের নির্দেশ মান্য কর। তাহলে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

20 – عَنْ صَفْوَانَ بْنِ عَسَّالٍ الْمُرَادِيُّ، قَالَ: قَالَ يَهُودِيٌّ لِصَاحِبِهِ: اذْهَبْ بِنَا إِلَى هَذَا النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَسْأَلَهُ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ {وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى تِسْعَ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ}[الإسراء: 101] فَقَالَ: لَا تَقُولُوا لَهُ نَبِيٌّ، فَإِنَّهُ لَوْ سَمِعَكَ لَصَارَتْ لَهُ أَرْبَعَةُ أَعْيُنٍ، قَالَ: فَسَأَلَاهُ، فَقَالَ: «لَا تُشْرِكُوا بِاللَّهِ شَيْئًا، وَلَا تَسْرِقُوا، وَلَا تَزْنُوا، وَلَا تَقْتُلُوا النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ، وَلَا تَسْحَرُوا، وَلَا تَأْكُلُوا الرِّبَا، وَلَا تَمْشُوا بِبَرِيءٍ إِلَى ذِي سُلْطَانٍ لِيَقْتُلَهُ، وَلَا تَقْذِفُوا مُحْصَنَةً، وَأَنْتُمْ يَا يَهُودُ عَلَيْكُمْ خَاصَّةً أَلَا تَعْدُوا فِي السَّبْتِ» فَقَبَّلَا يَدَهُ وَرِجْلَهُ، وَقَالَا: نَشْهَدُ أَنَّكَ نَبِيٌّ، فَقَالَ: «مَا مَنَعَكُمَا أَنْ تُسْلِمَا؟» قَالَا: إِنَّ دَاوُدَ عَلَيْهِ السَّلَامُ دَعَا أَنْ لَا يَزَالَ مِنْ ذُرِّيَّتِهِ نَبِيٌّ، وَإِنَّا نَخْشَى أَنْ يَقْتُلَنَا يَهُودُ

২০. হযরত সাফওয়ান ইবন আসসাল (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ইহুদী তার অপর আর এক সাথি ইহুদীকে বললো- আমার সাথে চল, আমরা এই নবীকে এই আয়াতের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করব-

وَلَقَدْ آتَيْنَا مُوسَى تِسْعَ آيَاتٍ بَيِّنَاتٍ

নিশ্চয়ই আমি মূসাকে নয়টি স্পষ্ট নির্দশন প্রদান করেছিলাম।- ইসরা:১০১

সে বললো- তাকে নবী বলো না, যদি সে তোমার কথা শুনতে পায়, তবে খুশীতে আত্মহারা হয়ে যাবে।

এরপর তারা রাসুলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলে রাসুলুলল্লাহ (ﷺ) বললেন (সেগুলো হলো)- ১.আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না। ২.চুরি করো না। ৩.ব্যভিচার করো না। ৪.আল্লাহ যার হত্যা হারাম করেছেন অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করো না। ৫.যাদু করো না। ৬.সুদ খেয়ো না। ৭.কাউকে হত্যা করার (বা শাস্তির) জন্য হাকিমের কাছে নিও না। ৮.পবিত্র নারীদেরকে ব্যভিচারের অপবাদ দিও না। ৯.আর হে ইহুদীরা! একটি আদেশ তো বিশেষভাবে তোমাদের জন্য যে, তোমরা শনিবারের ব্যাপারে সীমালংঘন করো না।

একথা শুনে উভয় ইহুদী তার হাত পায়ে চুমু খেয়ে আরয করল- আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি নবী। তিনি (ﷺ) বললেন, তাহলে মুসলমান হওয়াতে তোমাদের বাঁধা কোথায়? তারা বললো, হযরত দাউদ (আ) দুআ করেছিলেন যে, তার বংশে যেন নবী হতে থাকে। তাই আমরা ভয় করছি (এর জন্য) ইহুদীরা আমাদেরকে হত্যা করবে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

21 – حَدَّثَنَا أَبُو الْعَبَّاسِ مُحَمَّدُ بْنُ يَعْقُوبَ، ثنا بَحْرُ بْنُ نَصْرٍ الْخَوْلَانِيُّ، أَنْبَأَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، وَحَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ، أَنْبَأَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ زِيَادٍ، ثنا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، أَخْبَرَنِي ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «وَاللَّهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللَّهِ لَا يُؤْمِنُ، وَاللَّهِ لَا يُؤْمِنُ» قَالُوا: وَمَا ذَاكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: «جَارٌ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ» قَالُوا: وَمَا بَوَائِقُهُ؟ قَالَ: «شَرُّهُ» . عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ»

২১.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহর শপথ! ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর শপথ! ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর শপথ! ঐ ব্যক্তি মুমিন নয়। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! কে সে? তিনি বললেন, যে ব্যক্তির প্রতিবেশী তার অসদাচরণ থেকে নিরাপদ থাকে না। জিজ্ঞাসা করা হলো, কি অসদচারণ? তিনি (ﷺ) বললেন, তার অনিষ্ট।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ»

(অপর সূত্রে) হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন- ঐ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরপদ নয়।

22 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُؤْمِنُ مَنْ أَمِنَهُ النَّاسُ عَلَى دِمَائِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ»

২২.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মুসলমান ঐ ব্যক্তি যার যবান ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। আর মুমিন ঐ ব্যক্তি যার থেকে মানুষের জান ও মাল নিরাপদ থাকে।

23 – حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، سَمِعَ جَابِر يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ»

২৩.হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করন- পূর্ণ ইমানদার ঐ ব্যক্তি- যার যবান ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে।

24 – عَنْ فَضَالَةَ بْنِ عُبَيْدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ: «أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِالْمُؤْمِنِ؟ مَنْ أَمِنَهُ النَّاسُ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَأَمْوَالِهِمْ، وَالْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُجَاهِدُ مَنْ جَاهَدَ نَفْسَهُ فِي طَاعَةٍ، وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ الْخَطَايَا وَالذُّنُوبَ»

২৪.হযরত ফাযালা ইবনে উবাইদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুলল্লাহ (ﷺ) বিদায় হজের সময় বলেছেন- আমি কি তোমাদেরকে মুমিনের পরিচয় বলব না? মুমিন তো ঐ ব্যক্তি- যার থেকে মানুষের জান ও মাল নিরাপদ থাকে। মুসলমান ঐ ব্যক্তি- যার যবান ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। মুজাহিদ ঐ ব্যক্তি- যে ইবাদতের জন্য নিজের নফসের সাথে জিহাদ করে। আর মুহাজির ঐ ব্যক্তি যে গুনাহ ও পাপ কাজ ছেড়ে দেয়।

25 – عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُؤْمِنُ مَنْ أَمِنَهُ النَّاسُ، وَالْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ السُّوءَ، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَبْدٌ لَا يَأْمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ»

২৫.হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মুমিন ঐ ব্যক্তি- যার থেকে মানুষ নিরাপদ থাকে। মুসলমান ঐ ব্যক্তি- যার যবান ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। আর মুহাজির ঐ ব্যক্তি যে গুনাহ ও পাপ কাজ ছেড়ে দেয়। আল্লাহর শপথ! যার নিয়ন্ত্রণে আমার প্রাণ! ঐ বান্দা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরপদ নয়।

26 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ: خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: «إِيَّاكُمْ وَالظُّلْمَ، فَإِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَإِيَّاكُمْ وَالْفُحْشَ وَالتَّفَحُّشَ، وَإِيَّاكُمْ وَالشُّحَّ فَإِنَّمَا هَلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ بِالشُّحِّ، أَمَرَهُمْ بِالْقَطِيعَةِ فَقَطَعُوا، وَالْبُخْلِ فَبَخِلُوا، وَبِالْفُجُورِ فَفَجَرُوا» فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّ الْإِسْلَامِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «أَنْ يَسْلَمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِكَ وَيَدِكَ» . فَقَالَ ذَلِكَ الرَّجُلُ أَوْ غَيْرُهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ الْهِجْرَةِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «أَنْ تَهْجُرَ مَا كَرِهَ رَبُّكَ» قَالَ: ” وَالْهِجْرَةُ هِجْرَتَانِ: هِجْرَةُ الْحَاضِرِ، وَهِجْرَةُ الْبَادِي، فَهِجْرَةُ الْبَادِي: أَنْ يُجِيبَ إِذَا دُعِيَ، وَيُطِيعَ إِذَا أُمِرَ، وَهِجْرَةُ الْحَاضِرِ أَعْظَمُهُمَا بَلِيَّةً وَأَفْضَلُهُمَا أَجْرًا

২৬.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদেরকে খুতবায় বলেছেন- তোমরা যুলুম থেকে বাঁচ, কেননা যুলুম কিয়ামতের দিন অন্ধকার রূপ ধারণ করবে। তোমরা অশ্লিলতা ও বেহুদা কথাবার্তা থেকে বাঁচ। তোমরা লোভ লালসা থেকে বাঁচ। কেননা তা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে ধ্বংস করেছে। এটা মানুষকে সম্পর্ক ছিন্ন করতে উৎসাহিত করে, ফলে মানুষ সম্পর্ক ছিন্ন করে। এটা মানুষকে কৃপণতা করতে নির্দেশ দেয়, ফলে মানুষ কৃপণতা করে। আর এটা মানুষকে গুনাহ ও পাপ কাজের দিকে ধাবিত করে, ফলে মানুষ গুনাহ ও পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ে।

তখন দাড়ানো এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন ইসলাম উত্তম? তিনি বললেন, তোমার যবান ও হাত থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকা। অপর এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন হিজরত উত্তম? তিনি বললেন, তুমি সেসব কিছু ছেড়ে দিবে যা তোমার প্রতিপালক অপছন্দ করে।

হিজরত দুই ধরণের। শহুরে লোকের হিজরত এবং গ্রামীণ লোকের হিজরত। গ্রামীণ লোকের হিজরত হলো এই যে, যখন তাকে আহ্বান করা হয় তখন সাড়া দেয় আর যখন আদেশ করা হয় তখন মেনে নেয়। আর শহুরে লোকের হিজরতে তার পরীক্ষাও বেশী এবং প্রতিদানও বেশী।

27 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اتَّقُوا الظُّلْمَ» فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ

২৭.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- তোমরা যুলুম থেকে বাঁচ। অতঃপর দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন।

28 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِيَّاكُمْ وَالْفُحْشَ وَالتَّفَحُّشَ، فَإِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ الْفَاحِشَ الْمُتَفَحِّشَ، وَإِيَّاكُمْ وَالظُّلْمَ فَإِنَّهُ هُوَ الظُّلُمَاتُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَإِيَّاكُمْ وَالشُّحَّ فَإِنَّهُ دَعَا مَنْ قَبْلَكُمْ فَسَفَكُوا دِمَاءَهُمْ، وَدَعَا مَنْ قَبْلَكُمْ فَقَطَعُوا أَرْحَامَهُمْ، وَدَعَا مَنْ قَبْلَكُمْ فَاسْتَحَلُّوا حُرُمَاتِهِمْ»

২৮.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- তোমরা অশ্লীলতা ও বেহুদা কথাবার্তা থেকে বাঁচ। কেননা আল্লাহ তাআলা অশ্লীলতা ও বেহুদা কথাবার্তা পছন্দ করেন না। তোমরা যুলুম থেকে বাঁচ, কেননা যুলুম কিয়ামতের দিন অন্ধকার রূপ ধারণ করবে। তোমরা কৃপণতা ও লোভ লালসা থেকে বাঁচ। কেননা এটা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে পরস্পরের রক্তপাত ঘটাতে আহ্বান করেছে। এটা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সম্পর্ক ছিন্ন করতে আহ্বান করেছে। এটা তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে হারামকৃত জিনিসকে হালাল করতে আহ্বান করেছে।

29 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ، وَلَا اللِّعَانِ، وَلَا الْفَاحِشِ، وَلَا الْبَذِيءِ» .

২৯.হযরত আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) নবী (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন।, তিনি বলেছেন-  মু’মিন ব্যক্তি খোঁটা দানকারী, অভিসম্পাতকারী, অশ্লীল এবং অশ্লীলভাষী ও নোংড়া স্বভাব বিশিষ্ট হয় না। 

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

30 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيْسَ الْمُؤْمِنُ بِالطَّعَّانِ، وَلَا اللِّعَانِ، وَلَا الْفَاحِشِ، وَلَا الْبَذِيءِ»

৩০.(ভিন্ন সূত্রে) আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মু’মিন ব্যক্তি খোঁটা দানকারী, অভিসম্পাতকারী, অশ্লীল কর্মকারী এবং অশ্লীলভাষী ও খারাপ চরিত্রের হয় না।  

31 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «الْمُؤْمِنُ لَيْسَ بِالطَّعَّانِ، وَلَا الْفَاحِشِ، وَلَا الْبَذِيءِ»

৩১.হযরত আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মু’মিন ব্যক্তি দোষারোপকারী বা আঘাতদানকারী, অশ্লীল কর্মকারী এবং অশ্লীলভাষী ও খারাপ চরিত্রের হয় না।

 32 – عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «مَنْ عَمِلَ سَيِّئَةً فَكَرِهَهَا حِينَ يَعْمَلُ، وَعَمِلَ حَسَنَةً فَسُرَّ بِهَا فَهُوَ مُؤْمِنٌ»

৩২ – হযরত আবু মূসা আল আশআরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করার সময় তা খারাপ মনে করে, আর নেককাজ তাকে আনন্দিত করে তবে সে মুমিন।

33 – عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَأَلَهُ رَجُلٌ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الْإِيمَانُ؟ قَالَ: «إِذَا سَرَّتْكَ حَسَنَتُكَ وَسَاءَتْكَ سَيِّئَتُكَ فَأَنْتَ مُؤْمِنٌ» . فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الْإِثْمُ؟ قَالَ: «إِذَا حَاكَ فِي صَدْرِكَ شَيْءٌ فَدَعْهُ»

৩৩ – হযরত আবু উমামা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইমান কি? তিনি (ﷺ) বললেন, যখন তুমি নেককাজ করার দ্বারা খুশি অনুভব কর এবং মন্দ কাজ করার দ্বারা দুঃখিত হও, তখন তুমি মুমিন।

সে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! গুনাহ কি? তিনি (ﷺ) বললেন, যখন তোমার মনে কোন কাজের ব্যাপারে খটকা (দ্বীধা) লাগে, তবে তা গুনাহ।

أَمَّا حَدِيثُ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ

আলী ইবনে মুবারক বর্ণিত হাদীস

34 – عَنْ جَدِّهِ أَبِي سَلَّامٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ، يَقُولُ: سَأَلَ رَجُلٌ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، مَا الْإِيمَانُ؟ قَالَ: «إِذَا سَرَّتْكَ حَسَنَتُكَ وَسَاءَتْكَ سَيِّئَتُكَ فَإِنَّكَ مُؤْمِنٌ»

৩৪. হযরত আবু সাল্লাম বলেন, আমি আবু উমামা (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছি, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জিজ্ঞাসা করল, ইমান কি? তিনি (ﷺ) বললেন, যখন নেককাজ তোমাকে আনন্দিত করে এবং মন্দ কাজ দুঃখিত করে, তখন তুমি মুমিন।

وَأَمَّا حَدِيثُ مَعْمَرٍ

মা’মার সূত্রে বর্ণিত হাদীস

35 – عَنْ أَبِي سَلَّامٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ: مَا الْإِيمَانُ؟ فَقَالَ: «مَنْ سَرَّتْهُ حَسَنَتُهُ، وَسَاءَتْهُ سَيِّئَتُهُ فَهُوَ مُؤْمِنٌ»

৩৫.হযরত আবু উমামা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে ইমানের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, ইমান কি? তিনি (ﷺ) বললেন, যার নেককাজ তাকে আনন্দ দেয় আর মন্দ কাজ পীড়া দেয়, তবে সে মুমিন।

هَذِهِ الْأَحَادِيثُ كُلُّهَا صَحِيحَةٌ  এই সবকয়টি হাদীস সহিহ

36 – حَدَّثَنَا أَبُو الْعَبَّاسِ مُحَمَّدُ بْنُ يَعْقُوبَ، ثنا الرَّبِيعُ بْنُ سُلَيْمَانَ، ثنا بِشْرُ بْنُ بَكْرٍ، حَدَّثَنِي ابْنُ جَابِرٍ، قَالَ: سَمِعْتُ سُلَيْمَ بْنَ عَامِرٍ، يَقُولُ: سَمِعْتُ عَوْفَ بْنَ مَالِكٍ الْأَشْجَعِيَّ، يَقُولُ: نَزَلْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْزِلًا فَاسْتَيْقَظْتُ مِنَ اللَّيْلِ، فَإِذَا لَا أَرَى فِي الْعَسْكَرِ شَيْئًا أَطْوَلَ مِنْ مُؤْخِرَةِ رَحْلِي، لَقَدْ لَصَقَ كُلُّ إِنْسَانٍ وَبَعِيرُهُ بِالْأَرْضِ، فَقُمْتُ أَتَخَلَّلُ النَّاسَ حَتَّى دَفَعْتُ إِلَى مَضْجَعِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَإِذَا لَيْسَ فِيهِ، فَوَضَعْتُ يَدِي عَلَى الْفِرَاشِ، فَإِذَا هُوَ بَارِدٌ فَخَرَجْتُ أَتَخَلَّلُ النَّاسَ أَقُولُ: {إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ} [البقرة: 156] ذُهِبَ بِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى خَرَجْتُ مِنَ الْعَسْكَرِ كُلِّهِ، فَنَظَرْتُ سَوَادًا فَرَمَيْتُ بِحَجَرٍ، فَمَضَيْتُ إِلَى السَّوَادِ، فَإِذَا مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ وَأَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ، وَإِذَا بَيْنَ أَيْدِينَا صَوْتٌ كَدَوِيِّ الرَّحَا، أَوْ كَصَوْتِ الْهَصْبَاءِ حِينَ يُصِيبُهَا الرِّيحُ، فَقَالَ بَعْضُنَا لِبَعْضٍ: يَا قَوْمِ اثْبُتُوا حَتَّى تُصْبِحُوا أَوْ يَأْتِيَكُمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: فَلَبِثْنَا مَا شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ نَادَى «أَثَمَّ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ وَأَبُو عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ وَعَوْفُ بْنُ مَالِكٍ؟» فَقُلْنَا: أَيْ نَعَمْ، فَأَقْبَلَ إِلَيْنَا فَخَرَجْنَا نَمْشِي مَعَهُ لَا نَسْأَلُهُ عَنْ شَيْءٍ وَلَا نُخْبِرُهُ بِشَيْءٍ فَقَعَدَ عَلَى فِرَاشِهِ، فَقَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا خَيَّرَنِي بِهِ رَبِّي اللَّيْلَةَ؟» فَقُلْنَا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: «فَإِنَّهُ خَيَّرَنِي بَيْنَ أَنْ يُدْخِلَ نِصْفَ أُمَّتِي الْجَنَّةَ، وَبَيْنَ الشَّفَاعَةِ، فَاخْتَرْتُ الشَّفَاعَةَ» قُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنَا مِنْ أَهْلِهَا ” قَالَ: «هِيَ لِكُلِّ مُسْلِمٍ»

৩৬.হযরত আউফ বিন মালিক আশজায়ী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে একটি স্থানে (নিদ্রা ও বিশ্রামের জন্য) অবতরণ করলাম। রাতের এক প্রহরে আমি জাগ্রত হয়ে গেলাম। হঠাৎ দেখলাম যে সৈন্যদের মধ্যে আমার সওয়ারী ভিন্ন আর কারো সওয়ারীর পিছনে অংশ লম্বা নয়। প্রত্যেকে তার সওয়ারী যমীনে বসিয়ে দিয়েছে। আমি উঠলাম এবং লোকদের মাঝ দিয়ে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বিছানা পর্যন্ত পৌছলাম। দেখলাম যে তিনি (ﷺ) সেখানে উপস্থিত নেই। আমি আমার হাত (তার) বিছানায় রাখলাম তো দেখলাম যে তা ঠান্ডা। তখন ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পাঠ করে সামনে গেলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বেরিয়ে গেছেন।

আমি সব সৈন্যদের অতিবাহিত করে গেলাম এবং (সামনে) কালো নিশান দেখলাম। আমি একটি পাথর নিক্ষেপ করলাম যা ঐ নিশান পর্যন্ত পৌছল। দেখলাম যে সেখানে হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল এবং হযরত আবু উবায়দাহ ইবনুল জাররাহ রয়েছেন। আর এদিকে আমার সম্মুখের দিকে চাক্কী পেষার মত অথবা বায়ূপ্রবাহের মত আওয়ায হচ্ছিল। অতএব আমাদের মধ্যে একজন অপরজনকে বলল, হে ভাই! ভোর পর্যন্ত এখানেই বসে থাক অথবা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আগমন করা পর্যন্ত অপেক্ষা কর। অতএব আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী আমরা ঐখানে বসে রইলাম।

অতঃপর একজন আওয়ায দিল যে, এখানে কি মুয়ায ইবনে জাবাল এবং হযরত আবু উবায়দাহ ইবনুল জাররাহ এবং আউফ বিন মালিক আশজায়ী রয়েছেন? আমরা বললাম, হ্যাঁ আমরা আছি। এর মধ্যেই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাদের মাঝে তাশরীফ আনলেন। আমরা তার সঙ্গী হলাম, না আমরা তাকে কিছু বললাম, আর না তিনি আমাদেরকে কিছু বললেন।

তিনি (ﷺ) তার বিছানায় উপবেশন করে বললেন, তোমরা কি জান, আজ রাতে আমার প্রতিপালক আমাকে কি অধিকার দিয়েছেন? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)  বললেন, তিনি আমাকে এই অধিকার দিয়েছেন যে, আমার উম্মাতের অর্ধেক সংখ্যক জান্নাতে প্রবেশ করবে অথবা তাদের নাজাতের জন্য আমি শাফাআত করতে পারব। আমি শাফাআতের অধিকার গ্রহণ করলাম। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন, যেন তিনি আমাদেরকে এর অন্তর্ভুক্ত  করেন। তিনি বললেন, এই শাফাআত প্রত্যেক মুসলমানের জন্য।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

37 – عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: «مَا قَاتَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَوْمًا حَتَّى دَعَاهُمْ»

৩৭.হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোন সম্প্রদায়ের সাথে ঐ সময় পর্যন্ত লড়াই করেন নি, যে পর্যন্ত না তাদেরকে (ইসলাম ও শান্তির প্রতি) আহ্বান করেছেন।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

حَدِيثِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَوْنٍ، كَتَبْتُ إِلَى نَافِعٍ مَوْلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَسْأَلُهُ عَنِ الْقِتَالِ قَبْلَ الدُّعَاءِ فَكَتَبَ إِلَيَّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَغَارَ عَلَى بَنِي الْمُصْطَلِقِ «الْحَدِيثَ، وَفِيهِ» وَكَانَ الدَّعْوَةُ قَبْلَ الْقِتَالِ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আউন বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবন উমর (رضي الله عنه) এর গুলাম হযরত নাফে (رحمة الله) কে লিখলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম, ইসলামের প্রতি অহ্বান করার পূর্বে লড়াই করার কি হুকুম? এর উত্তরে তিনি লিখেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বনু মস্তালিক গোত্রের প্রতি হামলা করেছিলেন– আল হাদিস। এর মধ্যে এটাও রয়েছে যে, তিনি এর পূর্বে তাদেরকে ইসলামের প্রতি আহ্বান করেছিলেন। 

38 – حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، سَمِعَ رَبِيعَةَ بْنَ عِبَادٍ الدُّؤَلِيَّ يَقُولُ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِنًى فِي مَنَازِلِهِمْ قَبْلَ أَنْ يُهَاجِرَ إِلَى الْمَدِينَةِ، يَقُولُ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللَّهَ يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَعْبُدُوهُ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا» . قَالَ: وَوَرَاءَهُ رَجُلٌ، يَقُولُ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ هَذَا يَأْمُرُكُمْ أَنْ تَتْرُكُوا دَيْنَ آبَائِكُمْ، فَسَأَلْتُ مَنْ هَذَا الرَّجُلُ؟ قِيلَ: أَبُو لَهَبٍ

৩৮.হযরত মুহাম্মদ ইবনুল মুনকাদির (رحمة الله) বলেন- আমি রাবিআ বিন ইবাদ আদু দুআলীকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে মদীনায় হিজরত করার পূর্বে মিনায় তাদের (কুরায়শদের) ঠিকানায় দেখলাম। তিনি বলছিলেন, হে মানুষ! আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা তার ইবাদত করবে আর তার সাথে কাউকে শরীক করবে না। বর্ণনকারী বলেন, আমি দেখলাম, পেছন থেকে কেউ বলছিল যে, হে লোকসকল! এই লোক তোমাদেরকে বলছে যে, তোমরা তোমাদের বাপ দাদাদের ধর্ম ছেড়ে দাও। তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কে? বলা হলো যে, এটা আবু লাহাব।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

39 – حَدَّثَنِي رَبِيعَةُ بْنُ عِبَادٍ الدُّؤَلِيُّ، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ بِسُوقِ ذِي الْمَجَازِ وَهُوَ يَقُولُ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ، قُولُوا لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ تُفْلِحُوا» قَالَ: يُرَدِّدُهَا مِرَارًا وَالنَّاسُ مُجْتَمِعُونَ عَلَيْهِ يَتَّبِعُونَهُ، وَإِذَا وَرَاءَهُ رَجُلٌ أَحْوَلُ ذُو غَدِيرَتَيْنِ وَضِيءُ الْوَجْهِ يَقُولُ: إِنَّهُ صَابِئٌ كَاذِبٌ، فَسَأَلْتُ: مَنْ هَذَا؟ فَقَالُوا: عَمُّهُ أَبُو لَهَبٍ

৩৯.হযরত রাবিআ বিন ইবাদ আদু দুআলী বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে জাহিলিয়াতের সময় যুলমাজাজের বাজারে দেখেছি। তিনি বলছিলেন, হে লোকসকল! তোমরা বল, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! তাহলে নাজাত ও সফলতা লাভ করবে।

হযরত রাবিআ বিন ইবাদ আদু দুআলী বলেন, তিনি বারবার এমন বলছিলেন, আর লোকজন একত্রিতভাবে তার পিছনে ছিলেন। হঠাৎ দেখলাম তার পিছনে একজন ট্যাঁরা চোখ, দুই ঝুঁটি এবং উজ্জল চেহারা বিশিষ্ট লোক বলছিল, এই লোক প্রতারক ও মিথ্যাবাদী। আমি জিজ্ঞাসা করলাম লোকটি কে? লোকেরা বলল, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর চাচা আবু লাহাব।

40 – عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: جَاءَتْ عَجُوزٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ عِنْدِي، فَقَالَ: لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَنْتِ؟» قَالَتْ: أَنَا جَثَّامَةُ الْمُزَنِيَّةُ، فَقَالَ: «بَلْ أَنْتِ حَسَّانَةُ الْمُزَنِيَّةُ، كَيْفَ أَنْتُمْ؟ كَيْفَ حَالُكُمْ؟ كَيْفَ كُنْتُمْ بَعْدَنَا؟» قَالَتْ: بِخَيْرٍ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَلَمَّا خَرَجَتْ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، تُقْبِلُ عَلَى هَذِهِ الْعَجُوزِ هَذَا الْإِقْبَالَ؟ فَقَالَ: «إِنَّهَا كَانَتْ تَأْتِينَا زَمَنَ خَدِيجَةَ، وَإِنَّ حُسْنَ الْعَهْدِ مِنَ الْإِيمَانِ»

৪০ – হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) বলেন। আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে ছিলাম। এমন সময় এক বয়ষ্ক ব্যক্তি আগমন করে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কে? সে বলল, আমি মযিনা গোত্রের জাসসামা। তিনি (ﷺ) বললেন, না বরং তুমি মযিনা গোত্রের হাসসানা। এখন বল, তুমি কেমন আছ, তোমাদের কি অবস্থা, আমাদের পর তোমরা কেমন আছ? সে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার প্রতি আমার বাবা মা কুরবান হোক, সব ঠিক আছে। যখন সে চলে গেল তখন আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বললাম, আপনি এই বয়ষ্ক লোকটার প্রতি অনেক অন্তরঙ্গতা প্রকাশ করলেন। তিনি (ﷺ) বললেন, এই ব্যক্তি খাদিজা থাকাকালিন আমাদের নিকট আসা যাওয়া করত। নিশ্চয়ই উত্তম প্রতিশ্রুতি বা অঙ্গীকার পুরা করা ইমানের মধ্য থেকে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ

41 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ لِلَّهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مِائَةً إِلَّا وَاحِدَةٍ، مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ، إِنَّهُ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ

৪১ -হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলার এক কম একশতটি নাম রয়েছে। যে তা মুখস্থ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তাআলা বেজোড় আর তিনি বেজোড়কে পছন্দ করেন- (সেই নামগুলো হলো)-

هُوَ اللَّهُ – الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الرَّحْمَنُ، الرَّحِيمُ الْمَلِكُ الْقُدُّوسُ، السَّلَامُ، الْمُؤْمِنُ، الْمُهَيْمِنُ، الْعَزِيزُ، الْجَبَّارُ، الْمُتَكَبِّرُ، الْخَالِقُ، الْبَارِئُ، الْمُصَوِّرُ، الْغَفَّارُ، الْقَهَّارُ، الْوَهَّابُ، الرَّزَّاقُ، الْفَتَّاحُ، الْعَلِيمُ، الْقَابِضُ، الْبَاسِطُ، الْخَافِضُ، الرَّافِعُ، الْمُعِزُّ، الْمُذِلُّ، السَّمِيعُ، الْبَصِيرُ، الْحَكَمُ، الْعَدْلُ، اللَّطِيفُ، الْخَبِيرُ، الْحَلِيمُ، الْعَظِيمُ، الْغَفُورُ، الشَّكُورُ، الْعَلِيُّ، الْكَبِيرُ، الْحَفِيظُ، الْمُغِيثُ» . وَقَالَ صَفْوَانُ فِي حَدِيثِهِ: الْمُقِيتُ، وَإِلَيْهِ ذَهَبَ أَبُو بَكْرٍ مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ فِي مُخْتَصَرِ الصَّحِيحِ، الْحَسِيبُ، الْجَلِيلُ، الْكَرِيمُ، الرَّقِيبُ، الْمُجِيبُ، الْوَاسِعُ، الْحَكِيمُ، الْوَدُودُ، الْمَجِيدُ، الْبَاعِثُ، الشَّهِيدُ، الْحَقُّ، الْوَكِيلُ، الْقَوِيُّ، الْمَتِينُ، الْوَلِيُّ، الْحَمِيدُ، الْمُحْصِي، الْمُبْدِي، الْمُعِيدُ، الْمُحْيِي، الْمُمِيتُ، الْحَيُّ، الْقَيُّومُ، الْوَاجِدُ، الْمَاجِدُ، الْوَاحِدُ، الصَّمَدُ، الْقَادِرُ، الْمُقْتَدِرُ، الْمُقَدِّمُ، الْمُؤَخِّرُ، الْأَوَّلُ، الْآخَرُ، الظَّاهِرُ، الْبَاطِنُ، الْوَالِي، الْمُتَعَالِي، الْبَرُّ، التَّوَّابُ، الْمُنْتَقِمُ، الْعَفُوُّ، الرَّءُوفُ، مَالِكُ، الْمُلْكِ، ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ، الْمُقْسِطُ، الْجَامِعُ، الْغَنِيُّ، الْمُغْنِي، الْمَانِعُ، الضَّارُّ، النَّافِعُ، النُّورُ، الْهَادِي، الْبَدِيعُ، الْبَاقِي، الْوَارِثُ، الرَّشِيدُ، الصَّبُورُ

42 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” إِنَّ لِلَّهِ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ

৪২ -হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলার এক কম একশতটি নাম রয়েছে। যে তা মুখস্থ করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (সেই নামগুলো হলো)-

اللَّهُ، الرَّحْمَنُ، الرَّحِيمُ، الْإِلَهُ، الرَّبُّ، الْمَلِكُ، الْقُدُّوسُ، السَّلَامُ، الْمُؤْمِنُ، الْمُهَيْمِنُ، الْعَزِيزُ، الْجَبَّارُ، الْمُتَكَبِّرُ، الْخَالِقُ، الْبَارِئُ، الْمُصَوِّرُ، الْحَلِيمُ، الْعَلِيمُ، السَّمِيعُ، الْبَصِيرُ، الْحَيُّ، الْقَيُّومُ، الْوَاسِعُ، اللَّطِيفُ، الْخَبِيرُ، الْحَنَّانُ، الْمَنَّانُ، الْبَدِيعُ، الْوَدُودُ، الْغَفُورُ، الشَّكُورُ، الْمَجِيدُ، الْمُبْدِئُ، الْمُعِيدُ، النُّورُ، الْأَوَّلُ، الْآخِرُ، الظَّاهِرُ، الْبَاطِنُ، الْغَفَّارُ، الْوَهَّابُ، الْقَادِرُ، الْأَحَدُ، الصَّمَدُ، الْكَافِي، الْبَاقِي، الْوَكِيلُ، الْمَجِيدُ، الْمُغِيثُ، الدَّائِمُ، الْمُتَعَالِ، ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ، الْمَوْلَى، النَّصِيرُ، الْحَقُّ، الْمُبِينُ، الْبَاعِثُ، الْمُجِيبُ، الْمُحْيِي، الْمُمِيتُ، الْجَمِيلُ، الصَّادِقُ، الْحَفِيظُ، الْكَبِيرُ، الْقَرِيبُ، الرَّقِيبُ، الْفَتَّاحُ، التَّوَّابُ، الْقَدِيمُ، الْوِتْرُ، الْفَاطِرُ، الرَّزَّاقُ، الْعَلَّامُ، الْعَلِيُّ، الْعَظِيمُ، الْغَنِيُّ، الْمَلِيكُ، الْمُقْتَدِرُ، الْأَكْرَمُ، الرَّءُوفُ، الْمُدَبِّرُ، الْمَالِكُ، الْقَدِيرُ، الْهَادِي، الشَّاكِرُ، الرَّفِيعُ، الشَّهِيدُ، الْوَاحِدُ، ذُو الطَّوْلِ، ذُو الْمَعَارِجِ، ذُو الْفَضْلِ، الْخَلَّاقُ، الْكَفِيلُ، الْجَلِيلُ، الْكَرِيمُ

43 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «الطِّيَرَةُ شِرْكٌ، وَلَكِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ»

৪৩.হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- কুলক্ষণ ধরা শিরক। তবে আল্লাহর উপর তাওয়াককুল করার দ্বারা তার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

44 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «الطِّيَرَةُ مِنَ الشِّرْكِ وَمَأْمَنًا، وَلَكِنَّ اللَّهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ»

৪৪.হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- কুলক্ষণ ধরা শিরক, আর যে তা ধরে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে আল্লাহর উপর তাওয়াককুল করার দ্বারা তার থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ سَنَدُهُ এই হাদীসটির সনদ সহিহ

45 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ كَفَرَ»

৪৫.হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি আল্লাহর নাম ব্যতীত অপর কারো নামে কসম খেল, সে কুফরী করল।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

46 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «كُلُّ يَمِينٍ يُحْلَفُ بِهَا دُونَ اللَّهِ شِرْكٌ»

৪৬.হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি- প্রত্যেক ঐ কসম যা আল্লাহর নাম ব্যতীত অপর কারো নামে হয়, তা শিরক।

47 – عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ، قَالَ: أَتَانِي أَبُو الْعَالِيَةِ أَنَا وَصَاحِبًا لِي، فَقَالَ: هَلُمَّا فَأَنْتُمَا أَشَبُّ وَأَوْعَى لِلْحَدِيثِ مِنِّي، فَانْطَلَقَ بِنَا حَتَّى أَتَيْنَا نَصْرَ بْنَ عَاصِمٍ اللَّيْثِيَّ، فَقَالَ: حَدِّثْ هَذَيْنِ حَدِيثَكَ، قَالَ: نَصْرٌ، ثنا عُقْبَةُ بْنُ مَالِكٍ، وَكَانَ مِنْ رَهْطِهِ، قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَرِيَّةً فَأَغَارُوا عَلَى قَوْمٍ فَشَذَّ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَاتَّبَعَهُ رَجُلٌ مِنَ السَّرِيَّةِ مَعَهُ السَّيْفُ شَاهِرٌ، فَقَالَ الشَّاذُّ مِنَ الْقَوْمِ: إِنِّي مُسْلِمٌ، فَلَمْ يَنْظُرْ فِيهَا، فَضَرَبَهُ فَقَتَلَهُ، فَنَمَى الْحَدِيثُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: قَوْلًا شَدِيدًا فَبَلَغَ الْقَاتِلَ، فَبَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَخْطُبُ إِذْ قَالَ الْقَاتِلُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَاللَّهِ مَا قَالَ الَّذِي قَالَ إِلَّا تَعَوُّذًا مِنَ الْقَتْلِ، فَأَعْرَضَ عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَعَنْ مَنْ قِبَلَهُ مِنَ النَّاسِ وَأَخَذَ فِي خُطْبَتِهِ، ثُمَّ قَالَ الثَّانِيَةَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاللَّهِ مَا قَالَ الَّذِي قَالَ إِلَّا تَعَوُّذًا مِنَ الْقَتْلِ، فَأَعْرَضَ عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَنْ مَنْ قِبَلَهُ مِنَ النَّاسِ وَأَخَذَ فِي خُطْبَتِهِ، ثُمَّ لَمْ يَصْبِرْ أَنْ قَالَ الثَّالِثَةَ: وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا قَالَ الَّذِي قَالَ إِلَّا تَعَوُّذًا مِنَ الْقَتْلِ، فَأَقْبَلْ عَلَيْهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُعْرَفُ الْمَسَاءَةُ فِي وَجْهِهِ ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَبَى عَلَيَّ مَنْ قَتَلَ مُؤْمِنًا» قَالَهَا ثَلَاثًا

৪৭.হযরত হুমায়দ বিন হিলাল বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি আর আমার এক সাথি উপস্থিত ছিলাম, তখন আবুল আলিয়া আসলেন। তিনি বললেন, আস! তুমি আমার তুলনায় যুবক এবং হাদীস বেশী স্মরণে রাখতে পার। অতএব তিনি আমাকে নিয়ে চললেন। আমরা হযরত নসর বিন আসিম লাইসী এর নিকট গেলাম। তিনি তাকে বললেন, এই দুজনকে ঐ হাদীসটি শুনাও। তখন সে বলল, আমাকে হযরত উতবা বিন মালিক বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এক যুদ্ধে ছোট একটি বাহিনী পাঠালেন, তখন তারা একটি কওমের উপর হামলা চালালেন। তাদের এক ব্যক্তি সেখান থেকে বের হয়ে পড়লেন। তখন এক যোদ্ধা তলোয়ার উঁচু করে তার পিছু নিলেন। (এক পর্যায়ে) কওমের বেরিয়ে পড়া সেই ব্যক্তি বলে উঠল, আমি মুসলমান। সৈন্যটি কোন দিকে না দেখে তাকে কতল করে ফেলল। এই সংবাদ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট পৌছলে তিনি কঠিন মন্তব্য করলেন আর তার উক্তি হত্যাকারী পর্যন্ত পৌছল।

এরপর এক সময় রাসূলুল্লাহ খুতবাহ দিচ্ছিলেন, তখন হত্যাকারী উপস্থিত হয়ে আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নিহত ব্যক্তি বাঁচার জন্য এ কথা বলেছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার ও তার সামনের লোকদের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে খুতবা দিতে থাকলেন। তিনি দ্বিতীয়বার আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নিহত ব্যক্তি বাঁচার জন্য এ কথা বলেছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার ও তার সামনের লোকদের দিকে ভ্রুক্ষেপ না কর খুতবা দিতে থাকলেন। হত্যকারী ব্যক্তি ধৈর্য রাখতে পারছিলেন না। তখন তৃতীয়বার আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! নিহত ব্যক্তি বাঁচার জন্য এ কথা বলেছিল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার দিকে অসন্তুষ্টি নিয়ে দৃষ্টিপাত করে বললেন, আল্লাহ তাআলা মুমিনের হত্যকারীর প্রতি সন্তুষ্ট নন। কথাটি তিনি তিনবার বললেন।

48 – عَنْ عُقْبَةَ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: ” أَمَّا بَعْدَ، فَمَا بَالُ الرَّجُلِ يَقْتُلُ الرَّجُلَ وَهُوَ يَقُولُ: أَنَا مُسْلِمٌ؟ ” فَقَالَ الْقَاتِلُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّمَا قَالَهَا مُتَعَوِّذًا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَكَذَا وَكَرِهَ مَقَالَتَهُ، وَحَوَّلَ وَجْهَهُ عَنْهُ، فَقَالَ: «أَبَى اللَّهُ عَلَى مَنْ قَتَلَ مُسْلِمًا، أَبَى اللَّهُ عَلَى مَنْ قَتَلَ مُسْلِمًا»

৪৮.হযরত উকবা বিন মালিক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইশাদ করেন- আম্মা বাদ! ঐ  ব্যক্তির কি অবস্থা হবে- যে ঐ সময় কোন মুসলমানকে হত্যা করে ফেলে, যখন সে বলে যে, আমি মুসলমান। তখন হত্যাকারী আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে বাঁচার জন্য এ কথা বলেছিল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এমনই বললেন এবং তার কথাকে পছন্দ করলেন না, বরং চেহারা মুবারক ফিরিয়ে নিয়ে বললেন- আল্লাহ তাআলা মুসলমানের হত্যকারীর প্রতি সন্তুষ্ট নন। আল্লাহ তাআলা মুসলমানের হত্যকারীর প্রতি সন্তুষ্ট নন।

49 – عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” ثَلَاثٌ أَحْلِفُ عَلَيْهِنَّ: لَا يَجْعَلُ اللَّهُ مَنْ لَهُ سَهْمٌ فِي الْإِسْلَامِ كَمَنْ لَا سَهْمَ لَهُ وَسِهَامُ الْإِسْلَامِ الصَّوْمُ وَالصَّلَاةُ وَالصَّدَقَةُ، وَلَا يَتَوَلَّى اللَّهُ عَبْدًا فَيُوَلِّيهِ غَيْرَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَلَا يُحِبُّ رَجُلٌ قَوْمًا إِلَّا جَعَلَهُ اللَّهُ مَعَهُمْ، وَالرَّابِعَةُ إِنْ حَلَفْتُ عَلَيْهَا رَجَوْتُ أَنْ لَا آثَمَ: مَا يَسْتُرُ اللَّهُ عَلَى عَبْدٍ فِي الدُّنْيَا إِلَّا سَتَرَ عَلَيْهِ فِي الْآخِرَةِ

৪৯.হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- তিনটি বিষয় এমন যে, আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তিকে যার ইসলামে অংশ আছে- তার মত করবেন না যার ইসলামে কোন অংশ নাই। আর ইসলামের অংশ তিনটি- সাওম, সালাত ও যাকাত। আর আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে যার অভিভাবকত্ব নিবেন আখিরাতেও তাকে অন্য কারো উপর সোপর্দ করবেন না। আর যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে মহব্বত রাখে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাকে তাদের সাথেই উঠাবেন। চতুর্থ বিষয় এমন তার জন্য যদি আমি কসম খাই, তবে আশা করি গুনাহগার হব না। তা হলো- দুনিয়াতে আল্লাহ যার দোষ গোপন রাখবেন, কিয়ামতের দিনও তার দোষ গোপন রাখবেন।

50 – عَنْ فَضَالَةَ اللَّيْثِيِّ، قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ: إِنِّي أُرِيدُ الْإِسْلَامَ فَعَلِّمْنِي شَرَائِعَ مِنْ شَرَائِعِ الْإِسْلَامِ، فَذَكَرَ الصَّلَاةَ وَشَهْرَ رَمَضَانَ وَمَوَاقِيتَ الصَّلَاةِ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّكَ تَذْكُرُ سَاعَاتٍ أَنَا فِيهِنَّ مَشْغُولٌ، وَلَكِنْ عَلِّمْنِي جِمَاعًا مِنَ الْكَلَامِ، قَالَ: «إِنْ شُغِلْتَ فَلَا تُشْغَلْ عَنِ الْعَصْرَيْنِ» قُلْتُ: وَمَا الْعَصْرَانِ؟ وَلَمْ تَكُنْ لُغَةَ قَوْمِي، قَالَ: «الْفَجْرُ وَالْعَصْرُ»

৫০.হযরত ফাযালা লাইসী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করলাম, আমি ইসলাম গ্রহণ করতে চাই, অতএব আপনি আমাকে ইসলামের বিধি-বিধান বলে দিন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে নামায, মাহে রমজান এবং নামাযের সময় সম্পর্কে বললেন। আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি যে সময়গুলোর কথা বললেন, সে সময়গুলোতে আমি ব্যস্ত থাকি (তাই যথাসময়ে আদায় করা সম্ভব হবে না)। আমাকে এমন কিছু বলুন যার উপর আমি আমল করতে পারি। তিনি (ﷺ) বললেন, যদি তুমি সত্যিই কর্মব্যস্ত হও তবে ‘আসরাইন’ এর ব্যাপারে অলসতা করো না। সে বলল, এই ‘আসরান’ কি? এটাতো আমাদের ভাষা নয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তা হলো ফজর ও আসর।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ এই হাদীসটি সহিহ।

51 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ فَضَالَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: عَلَّمَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَانَ فِيمَا عَلَّمَنِي أَنْ قَالَ: «حَافِظْ عَلَى الصَّلَوَاتِ الْخَمْسِ» فَقُلْتُ: هَذِهِ سَاعَاتٌ لِي فِيهَا اشْتِغَالٌ، فَحَدِّثْنِي بِأَمْرٍ جَامِعٍ إِذَا أَنَا فَعَلْتُهُ أَجْزَأَ عَنِّي، قَالَ: «حَافِظْ عَلَى الْعَصْرَيْنِ» قَالَ: وَمَا كَانَتْ مِنْ لُغَتِنَا قُلْتُ: وَمَا الْعَصْرَانِ؟ قَالَ: «صَلَاةٌ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ، وَصَلَاةٌ قَبْلَ غُرُوبِهَا»

৫১ – হযরত আব্দুল্লাহ বিন ফাযালা তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমাকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কিছু বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন। তার মধ্যে এটাও বলেছেন যে- পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের হিফাযত কর। আমি আরয করলাম যে, ঐ সময়গুলোতে আমি কর্মব্যস্ত থাকি, অতএব এমন পরিপূর্ণ কোন কিছু বলুন, যা করার দ্বারা ফরয আদায় হয়ে যাবে। তিনি (ﷺ) বললেন, ‘আসরাইন’ এর হিফাযত কর। তিনি বলেন, এটা আমার ভাষার মধ্যে ছিল না। অতএব আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এই ‘আসরান’ কি? তিনি (ﷺ) বললেন, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বের দুটি নামায (ফজর ও আসর)।

52 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِنَّ لِلْإِسْلَامِ ضَوْءًا وَمَنَارًا كَمَنَارِ الطَّرِيقِ»

৫২.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- ইসলাম একটি আলোকবর্তীকা এবং পথে দাড়ানো একটি (সুউচ্চ) মিনারে মত।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

53 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «الْإِسْلَامُ أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ لَا تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيمَ الصَّلَاةَ، وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ، وَتَصُومَ رَمَضَانَ، وَتَحُجَّ الْبَيْتَ، وَالْأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ، وَالنَّهْيُ عَنِ الْمُنْكَرِ، وَتَسْلِيمُكَ عَلَى أَهْلِكَ، فَمَنِ انْتَقَصَ شَيْئًا مِنْهُنَّ فَهُوَسَهْمٌ مِنَ الْإِسْلَامِ يَدَعُهُ، وَمَنْ تَرَكَهُنَّ كُلَّهُنَّ فَقَدْ وَلَّى الْإِسْلَامَ ظَهْرَهُ»

৫৩.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- ইসলাম হলো এই যে- তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে আর তার সাথে কোন কিছু শরীক করবে না। নামায কায়েম করবে। ফরয যাকাত আদায় করবে। রমজানের রোযা রাখবে এবং বায়তুল্লাহর হজ করবে। সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করবে। আর নিজের ঘরের লোকদেরকে সালাম করবে। এসবের মধ্য থেকে যে একটি অংশ ছেড়ে দিল, সে ইসলামের একটি অংশ ছেড়ে দিল। আর যে সব ছেড়ে দিল, সে ইসলামকে পিছনে ফেলে দিল।

هَذَا الْحَدِيثُ مِثْلُ الْأَوَّلِ فِي الِاسْتِقَامَةِ

এই হাদীসটি পূর্বের হাদীসের মত সঠিক

54 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” أَلَا أُعَلِّمُكَ – أَوْ قَالَ: أَلَا أَدُلُّكَ – عَلَى كَلِمَةٍ مِنْ تَحْتِ الْعَرْشِ مِنْ كَنْزِ الْجَنَّةِ؟ تَقُولُ: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ، فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: أَسْلَمَ عَبْدِي وَاسْتَسْلَمَ

৫৪.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আমি কি তোমাকে জানাব না অথবা বললেন, আমি কি বলে দেব না এমন কালিমার কথা যা আরশের নিম্নস্থিত খাযানা থেকে নাযিল হয়েছে। (তা হলো) ‘লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।’ (যখন বান্দা এটা বলে) তখন আল্লাহ তাআলা বলেন- আমার বান্দা আমার অনুগত হয়েছে এবং ইসলামকে মেনে নিয়েছে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

55 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ أَنَّ رَجُلَيْنِ دَخَلَا فِي الْإِسْلَامِ فَاهْتَجَرَا كَانَ أَحَدُهُمَا خَارِجًا مِنَ الْإِسْلَامِ حَتَّى يَرْجِعَ الظَّالِمُ»

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

56 – أَنَّ سَعِيدَ بْنَ أَبِي سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا زَنَى الْعَبْدُ خَرَجَ مِنْهُ الْإِيمَانُ، وَكَانَ كَالظُّلَّةِ، فَإِذَا انْقَلَعَ مِنْهَا رَجَعَ إِلَيْهِ الْإِيمَانُ»

৫৬.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেছেন- কোন বান্দা যখন যিনা করে তখন তার ভিতর থেকে ঈমান বের হয়ে যায় এবং ছায়ার মত তার মাথার উপর অবস্থান করে। যখন সে এই কাজ থেকে ফিরে আসে তখন পুণরায় ঈমান তার কাছে ফিরে আসে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

57 – عَنِ ابْنِ حُجَيْرَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ زَنَى وَشَرِبَ الْخَمْرَ نَزَعَ اللَّهُ مِنْهُ الْإِيمَانَ كَمَا يَخْلَعُ الْإِنْسَانُ الْقَمِيصَ مِنْ رَأْسِهِ»

৫৭.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি ব্যভিচার ও মদ পান করে, তখন আল্লাহ তাআলা তার থেকে ইমান এমনভাবে খুলে নেন যেভাবে শরীর থেকে জামা খুলে ফেলা হয়।

58 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْحَيَاءُ وَالْإِيمَانُ قُرِنَا جَمِيعًا، فَإِذَا رُفِعَ أَحَدُهُمَا رُفِعَ الْآخَرُ»

৫৮.হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- লজ্জা ও ইমান পরস্পর অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। যখন তার মধ্য হতে একটি চলে যায় তখন অন্যটিও চলে যায়।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

59 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَأْلَفُ، وَلَا خَيْرَ فِيمَنْ لَا يَأْلَفُ وَلَا يُؤْلَفُ»

৫৯.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মুমিন ব্যক্তি বন্ধুবৎসল ও আকর্ষণকারী। তার মধ্যে কোন কল্যাণ নাই, যে বন্ধুবৎসল ও আকর্ষণকারী নয় এবং নিজেও আকর্ষিত হয় না।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

60  عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ عَبْدٍ يَعْبُدُ اللَّهَ وَلَا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَيُقِيمُ الصَّلَاةَ، وَيُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَيَجْتَنِبُ الْكَبَائِرَ إِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ» قَالَ: فَسَأَلُوهُ مَا الْكَبَائِرُ؟ قَالَ: «الْإِشْرَاكُ بِاللَّهِ، وَالْفِرَارُ مِنَ الزَّحْفِ، وَقَتْلُ النَّفْسِ»

৬০.হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে আর তার সাথে কোন কিছুর শরীক করে না। নামায কায়েম করে, যাকাত প্রদান করে এবং বড় গুনাহসমূহ থেকে বেঁচে থাকে, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করল, বড় গুনাহ কি কি? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আল্লাহর সাথে শরীক করা। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়ন করা এবং কোন মানুষকে হত্য করা।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

61 – عَنْ هَانِئٍ، أَنَّهُ لَمَّا وَفَدَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّ شَيْءٍ يُوجِبُ الْجَنَّةَ؟ قَالَ: «عَلَيْكَ بِحُسْنِ الْكَلَامِ، وَبَذْلِ الطَّعَامِ»

৬১.হযরত (উম্মে) হানি (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কোন বিষয়টি জান্নাত ওয়াজীব করে? তিনি (ﷺ) বললেন, তুমি উত্তম কথা এবং খাবার খাওয়ানোকে আবশ্যক করে নাও।

هَذَا حَدِيثٌ مُسْتَقِيمٌ  এই হাদীসটি সঠিক

62 – حَدَّثَنِي أَبِي هَانِئِ بْنِ يَزِيدَ، أَنَّهُ وَفَدَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُكَنُّونَهُ بِأَبِي الْحَكَمِ، فَقَالَ: «إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَكَمُ لِمَ تُكَنَّى بِأَبِي الْحَكَمِ؟» قَالَ: إِنَّ قَوْمِي إِذَا اخْتَلَفُوا حَكَمْتُ بَيْنَهُمْ فَرَضِيَ الْفَرِيقَانِ، قَالَ: «هَلْ لَكَ وَلَدٌ؟» ، قَالَ: شُرَيْحٌ وَعَبْدُ اللَّهِ وَمُسْلِمٌ بَنُو هَانِئٍ، قَالَ: «فَمَنْ أَكْبَرُهُمْ؟» قَالَ: شُرَيْحٌ، قَالَ: «فَأَنْتَ أَبُو شُرَيْحٍ فَدَعَا لَهُ وَلِوَلَدِهِ»

৬২.হযরত আবি হানি বিন ইয়াযিদ (رضي الله عنه) বলেন- সে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি (ﷺ) তার ব্যাপারে শুনতে পারলেন যে, তিনি আবুল হিকাম উপনাম রেখেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, আল্লাহই একমাত্র হিকাম (ফয়সালাকারী)। তুমি এই উপনাম কেন রেখেছ? সে বলল, যখন আমার সম্প্রদায়ের মধ্যে কোন ঝগড়া বিবাদ হত তখন আমি তার মীমাংসা করে দিতাম আর তারা এর উপর সন্তুষ্ট হয়ে যেত (আর তাই এই নাম প্রসিদ্ধ হয়ে যায়)।

তিনি (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কোন ছেলে আছে? সে বলল, আমার  ছেলে শুরায়হ, আব্দুল্লাহ এবং মুসলিম। তারপর জিজ্ঞাসা করলেন, তার মধ্যে বড় কে? সে বলল, শুরাইহ। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তাহলে তুমি (আজ থেকে) আবু শুরাইহ। অতঃপর তিনি তার জন্য ও তার ছেলেদের  জন্য দুআ করলেন।

63 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: ” قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ {إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا} [النساء: 58] فَوَضَعَ إِصْبَعَةَ الدُّعَاءِ عَلَى عَيْنَيْهِ وَإِبْهَامَيْهِ عَلَى أُذُنَيْهِ

৬৩.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তিলাওয়াত করলেন-

إِنَّ اللَّهَ كَانَ سَمِيعًا بَصِيرًا

নিশ্চয়ই আল্লাহ সব শুনেন ও দেখেন।– সূরা নিসা:৫৮

তখন তিনি তার আঙ্গুলগুলো চোখের উপর রাখলেন আর বৃদ্ধাঙ্গুলি দুই দুই কানের উপর।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

64 – عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا كَانَتْ مِنْ فِتْنَةٍ وَلَا تَكُونُ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ أَعْظَمَ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ، وَمَا مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا وَقَدْ حَذَّرَ قَوْمَهُ، وَلَا أَخْبَرْتُكُمْ مِنْهُ بِشَيْءٍ مَا أَخْبَرَ بِهِ نَبِيٌّ قَبْلِي» فَوَضَعَ يَدَهُ عَلَى عَيْنِهِ ثُمَّ، قَالَ: «أَشْهَدُ أَنَّ اللَّهَ تَعَالَى لَيْسَ بِأَعْوَرَ»

৬৪.হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- দাজ্জালের চেয়ে বড় কোন ফিতনা- না আছে, আর না কিয়ামত পর্যন্ত হবে। প্রত্যেক নবী তার সম্প্রদায়কে এর ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তবে আমি ব্যতীত আর কেউ তার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেন নি। অতঃপর তিনি তার হাত দুটো চোখের উপর রেখে বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা এক চোখ বিশিষ্ট নয়।

65 – عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا قَشِفُ الْهَيْئَةِ، قَالَ: «هَلْ لَكَ مِنْ مَالٍ؟» قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: «مِنْ أَيِّ الْمَالِ؟» قُلْتُ: مِنْ كُلٍّ مِنَ الْإِبِلِ وَالْخَيْلِ وَالرَّقِيقِ وَالْغَنَمِ، قَالَ: «فَإِذَا آتَاكَ اللَّهُ مَالًا فَلْيُرَ عَلَيْكَ» قَالَ: وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” هَلْ تُنْتَجُ إِبِلُ قَوْمِكَ صِحَاحٌ آذَانُهَا فَتَعْمَدُ إِلَى الْمُوسَى فَتَقْطَعُ آذَانَهَا وَتَقُولُ: هِيَ بُحْرٌ، وَتَشُقُّهَا أَوْ تَشُقُّ جُلُودَهَا، وَتَقُولُ: هِيَ حَرَمٌ فَتُحَرِّمُهَا عَلَيْكَ وَعَلَى أَهْلِكَ؟ ” قَالَ: قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: «فَكُلُّ مَا آتَاكَ اللَّهُ لَكَ حِلٌّ، وَسَاعِدُ اللَّهِ أَشَدُّ مِنْ سَاعِدِكَ، وَمُوسَى اللَّهِ أَحَدُّ مِنْ مُوسِكَ»

৬৫.হযরত আবুল হাউজ (رضي الله عنه) তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট হাযির হলাম এমন অবস্থায় যে, আমার (বাহ্যিক) অবস্থা ছিল বিবর্ণ। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি সম্পদ আছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি (ﷺ) বললেন, কি ধরণের সম্পদ? আমি বললাম, উট, ঘোড়া, গুলাম, বকরী সবকিছু আছে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, যখন আল্লাহ তাআলা তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন তখন তোমার উপর তার নিআমতের প্রকাশ হওয়া বাঞ্ছনীয়।

অতঃপর বললেন, তোমার সম্প্রদায়ের উটনিগুলো কি বাচ্চা প্রদান করে, যার কান সঠিক হয়। আর তোমরা অস্ত্র নিয়ে কান কেটে দিয়ে তার নাম রাখ ‘বুহর’। আর তা ফাটিয়ে বা তার চামড়া ফাটিয়ে তার নাম ‘হারাম’ রাখ। আর তা তোমাদের ও তোমাদের পরিবারের জন্য হারাম সাব্যস্ত কর? সে বলল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, (এমন করো না) আল্লাহ তাআলা যা কিছু তোমাদের (ভোগ-ব্যবহারের) জন্য দিয়েছেন তা হালাল। জেনে রাখ! আল্লাহর শক্তি তোমাদের শক্তি থেকে বেশী। আল্লাহর শাস্তি তোমাদের শাস্তি থেকে কঠিন।

 هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ এই হাদীসটির সনদ সহিহ

66 – عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ فِي هَذِهِ الْآيَةِ: {فَلَمَّا تَجَلَّى رَبُّهُ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُ} [الأعراف: 143] «بَدَا مِنْهُ قَدْرُ هَذَا»

৬৬.হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এই আয়াত তিলাওয়াত করেন-

فَلَمَّا تَجَلَّى رَبُّهُ لِلْجَبَلِ جَعَلَهُ

যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ের প্রতি জ্যোতি প্রকাশ করলেন।– [সূরা আরাফ:১৪৩]

এবং বলেন- এর দ্বারা পাহাড়ের মর্যাদা ও সম্মান জানা যাচ্ছে।

67 – عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَرَأَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ {قَالَ رَبِّ أَرِنِي أَنْظُرْ إِلَيْكَ} [الأعراف: 143] قَالَ: «فَأَخْرَجَ مِنَ النُّورِ مِثْلَ هَذَا، وَأَشَارَ بِيَدِهِ إِلَى نِصْفِ أُنْمُلَةِ الْخِنْصَرِ، فَضَرَبَ بِهَا صَدْرَ حَمَّادٍ» ، قَالَ: «فَسَاخَ الْجَبَلُ»

৬৭.হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এই আয়াত তিলাওয়াত করেন-

قَالَ رَبِّ أَرِنِي أَنْظُرْ إِلَيْكَ

মূসা (আ) বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দেখা দিন আমি আপনাকে দেখব।-[সূরা আরাফ:১৪৩]

এবং বলেন, আল্লাহ তাআলা এতটুকু নূর প্রকাশ করেছিলেন। এটা বলে তিনি তার কনিষ্ঠাঙ্গুলির অর্ধেক প্রকাশ করে হাম্মাদ এর সিনায় (হাল্কাভাবে) মারলেন। অতঃপর বললেন, এতে পাহাড় নিচে দেবে গেল।

 هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

68 – عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” ثَلَاثَةٌ يُحِبُّهُمُ اللَّهُ وَيَضْحَكُ إِلَيْهِمُ: الَّذِي إِذَا تَكَشَّفَ فِئَةً قَاتَلَ وَرَاءَهَا بِنَفْسِهِ لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ

৬৮.হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- তিন ব্যক্তি এমন যাদেরকে আল্লাহ তাআলা মহব্বত করেন এবং তাদেরকে দেখে হাসেন। (তাদের মধ্যে) এক ব্যক্তি হলো সে, যখন শত্রুর দল সামনে আসে তখন সে পিছন দিক থেকে এসে আল্লাহর জন্য তাদের সাথে লড়াই করে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

69 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: «لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ حَبَّةٌ مِنْ كِبْرٍ» فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّهُ لَيُعْجِبُنِي أَنْ يَكُونَ ثَوْبِي جَدِيدًا، وَرَأْسِي دَهِينًا، وَشِرَاكُ نَعْلِي جَدِيدًا، قَالَ: وَذَكَرَ أَشْيَاءَ حَتَّى ذَكَرَ عِلَاقَةَ سَوْطِهِ، فَقَالَ: «ذَاكَ جَمَالٌ، وَاللَّهُ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ، وَلَكِنَّ الْكِبْرَ مَنْ بَطِرَ الْحَقَّ وَازْدَرَى النَّاسَ»

৬৯.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- যার অন্তরে অনু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তখন এক ব্যক্তি আরয করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি পছন্দ করি যে, আমার পোষাকটা যেন সুন্দর হয়, চুল পরিপাটি হয়, আমার জুতার ফিতা পরিচ্ছন্ন হয়। বর্ণনাকারী বলেন, সে আরো কিছু বিষয়ের কথা বলল, এমনকি তার সুন্দর লাঠির কথাও বলল। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, এটাতো সৌন্দর্যের বিষয়। আল্লাহ তাআলা সুন্দর, তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। অহংকার তো হলো সত্যকে পদানত করা এবং মানুষকে তুচ্ছজ্ঞান করা।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ  এই হাদীসটির সনদ সহিহ

70 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمِنَ الْكِبْرِ أَنْ أَلْبَسَ الْحُلَّةَ الْحَسَنَةَ؟ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ»

৭০.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমি উত্তম সুন্দর পোষাক পরিধান করি, তবে কি তা অহংকার হবে? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন,  নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা সুন্দর আর তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন।

71 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” دَعَا اللَّهُ جَبْرَائِيلَ فَأَرْسَلَهُ إِلَى الْجَنَّةِ، فَقَالَ: انْظُرْ إِلَيْهَا وَمَا أَعْدَدْنَا فِيهَا لِأَهْلِهَا، فَقَالَ: وَعِزَّتِكَ لَا يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَهَا، فَحُفَّتْ بِالْمَكَارِهِ، قَالَ: ارْجِعْ إِلَيْهَا فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَرَجَعَ، فَقَالَ: وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لَا يَدْخُلَهَا أَحَدٌ

৭১.আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তা’আলা জিবরাইল (আ)-কে ডেকে জান্নাতের দিকে পাঠালেন এবং বললেন, তুমি জান্নাত এবং জান্নাতীদের জন্য  যা কিছু প্রস্ত্তত করে রাখা হয়েছে তা দেখে আস। জিবরাইল [(আ) দেখে এসে] বললেন, আপনার ইযযত ও সম্মানের কসম, যে কেউ এর কথা শুনবে, সে তাতে যাওয়ার ইচ্ছা করবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা জান্নাতকে কষ্টকর জিনিস দ্বারা বেষ্টন করে দিয়ে বললেন, আবার সেখানে গিয়ে তার অবস্থা দেখে আস। জিবরাইল [(আ) দেখে এসে] বললেন, আপনার ইযযত ও সম্মানের কসম,  আমার আশঙ্কা হয় যে, কেউ এতে প্রবেশ করতে পারবে না।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ  এই হাদীসটি সহিহ

72 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” لَمَّا خَلَقَ اللَّهُ الْجَنَّةَ قَالَ: يَا جَبْرَائِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا، قَالَ: فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا، فَقَالَ: لَا يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَهَا، ثُمَّ حَفَّهَا بِالْمَكَارِهِ، ثُمَّ قَالَ: اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا، قَالَ: فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا، فَقَالَ: وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لَا يَدْخُلَهَا أَحَدٌ، ثُمَّ خَلَقَ النَّارَ، فَقَالَ: يَا جَبْرَائِيلُ اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا، قَالَ: فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا، فَقَالَ: لَا يَسْمَعُ بِهَا أَحَدٌ فَيَدْخُلَهَا، قَالَ: فَحَفَّهَا بِالشَّهَوَاتِ، ثُمَّ قَالَ: اذْهَبْ فَانْظُرْ إِلَيْهَا، قَالَ: فَذَهَبَ فَنَظَرَ إِلَيْهَا، فَقَالَ: يَا رَبِّ وَعِزَّتِكَ لَقَدْ خَشِيتُ أَنْ لَا يَبْقَى أَحَدٌ إِلَّا دَخَلَهَا “

৭২. হযরত হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তা’আলা জান্নাত সৃষ্টি করে জিবরাইল (আ)-কে বললেন, যাও! জান্নাত এবং তার মধ্যে যা আছে তা দেখে আস। তখন তিনি গেলেন এবং তা দেখলেন। অতঃপর বললেন, যে কেউ এর কথা শুনবে সে তাতে যাওয়ার ইচ্ছা করবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা জান্নাতকে কষ্টকর জিনিস দ্বারা বেষ্টন করে দিয়ে বললেন, এখন আবার গিয়ে তা দেখে আস। জিবরাইল (আ) তা দেখে এসে বললেন, আপনার ইযযত ও সম্মানের কসম,  আমার আশঙ্কা হয় যে, কেউ এতে প্রবেশ করতে পারবে না।

অতঃপর আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম সৃষ্টি করে জিবরাইল (আ)-কে বললেন, যাও! জাহান্নাম এবং তার মধ্যে যা আছে তা দেখে আস। তখন তিনি গেলেন এবং তা দেখলেন। অতঃপর বললেন, যে কেউ এর কথা শুনবে সে তাতে কখনো যেতে চাইবে না।  অতঃপর আল্লাহ তাআলা জাহান্নামকে আকর্ষনীয় জিনিস দ্বারা বেষ্টন করে দিয়ে বললেন, এখন আবার গিয়ে তা দেখে আস। জিবরাইল (আ) তা দেখে এসে বললেন, আপনার ইযযত ও সম্মানের কসম, আমার আশঙ্কা হয় যে, কেউ এতে প্রবেশ না করে থাকবে না।

73 – عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ: ” ائْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا. قَالَ لِلسَّمَاءِ: أَخْرِجِي شَمْسَكِ وَقَمَرَكِ وَنُجُومَكِ، وَقَالَ لِلْأَرْضِ: شَقِّقِي أَنْهَارَكِ وَأَخْرِجِي ثِمَارَكِ، فَقَالَتَا: أَتَيْنَا طَائِعِينَ

হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। আল্লাহ তাআলার ইরশাদ-

فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ: ” ائْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا

তিনি আসমান ও যমীনকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছায়।- সূরা ফুসসিলাত:১১

তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা আসমানকে বললেন, তুমি সূর্য চন্দ্র ও তারকা বের কর। আর যমীনকে বললেন, তুমি নহরসমূহ তৈরী কর এবং ফল-ফলাদি বের কর। অতএব তখন তারা উভয়ে আরয করল-

أَتَيْنَا طَائِعِينَ

আমরা আসলাম অনুগত হয়ে।- সূরা ফুসসিলাত:১১

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

74 – عَنْ مُسْلِمِ بْنِ يَسَارٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، سُئِلَ عَنْ هَذِهِ الْآيَةِ، {وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ} [الأعراف: 172] ، قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُسْأَلُ عَنْهَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ آدَمَ ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ بِيَمِينِهِ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً، فَقَالَ: خَلَقْتُ هَؤُلَاءِ لِلْجَنَّةِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ يَعْمَلُونَ، ثُمَّ مَسَحَ ظَهْرَهُ فَاسْتَخْرَجَ مِنْهُ ذُرِّيَّةً، فَقَالَ: خَلَقْتُ هَؤُلَاءِ لِلنَّارِ وَبِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ يَعْمَلُونَ

৭৪.মুসলিম ইবন ইয়াসার (رحمة الله) থেকে বর্ণিত। হযরত উমর ইবন খাত্তাব (رضي الله عنه)-কে এই আয়াতটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল-

وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ

যখন তোমার প্রতিপালক বনী আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের সন্তানদেরকে বের করলেন।–সূরা আরাফ:১৭২

উমর ইবন খাত্তাব (رضي الله عنه) বললেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ)-কেও এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আদম (আ)-কে সৃষ্টি করে তার ডান হাত তার পিঠে বুলালেন, ফলে তা থেকে তার একদল সন্তান-সন্ততি বের হলো। আল্লাহ বললেন, আমি এদেরকে জান্নাতের জন্য সৃষ্টি করেছি। অতএব এরা জান্নাতীদের মত আমল করবে। এরপর তিনি আদমের পিঠে তার বাম হাত বুলালেন, এ থেকে তার আরো একদল সন্তান-সন্ততি বের হলো। আল্লাহ তাআলা বললেন, আমি এদেরকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। অতএব এরা জাহান্নামীদের মত আমল করবে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحٌ   এই হাদীসটি সহিহ

75 – عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” أَخَذَ اللَّهُ الْمِيثَاقَ مِنْ ظَهْرِ آدَمَ فَأَخْرَجَ مِنْ صُلْبِهِ ذُرِّيَّةً ذَرَاهَا فَنَثَرَهُمْ نَثْرًا بَيْنَ يَدَيْهِ كَالذَّرِّ، ثُمَّ كَلَّمَهُمْ، فَقَالَ: أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ؟ قَالُوا: بَلَى، شَهِدْنَا أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ، أَوْ تَقُولُوا إِنَّمَا أَشْرَكَ آبَاؤُنَا مِنْ قَبْلُ، وَكُنَّا ذُرِّيَّةً مِنْ بَعْدِهِمْ، أَفَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ الْمُبْطِلُونَ

৭৫.হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলা আদম (আ) এর সন্তানদের থেকে অঙ্গীকার নেওয়ার ইচ্ছা করলেন। অতএব তিনি তার পিঠ থেকে সকলকে বের করে পিঁপড়ার মত ছড়িয়ে দিলেন। অতঃপর জিজ্ঞাসা করলেন-

: أَلَسْتُ بِرَبِّكُمْ؟ قَالُوا: بَلَى، شَهِدْنَا أَنْ تَقُولُوا يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِنَّا كُنَّا عَنْ هَذَا غَافِلِينَ، أَوْ تَقُولُوا إِنَّمَا أَشْرَكَ آبَاؤُنَا مِنْ قَبْلُ، وَكُنَّا ذُرِّيَّةً مِنْ بَعْدِهِمْ، أَفَتُهْلِكُنَا بِمَا فَعَلَ الْمُبْطِلُونَ

আমি কি তোমাদের প্রভু নই? তারা বলল, হ্যাঁ, আমরা সাক্ষী থাকলাম।’ এটা এ জন্য যে, যেন তোমরা কিয়ামতের দিন বলতে না পার, আমরা এ বিষয়ে অনবহিত ছিলাম। অথবা তোমরা যেন কিয়ামতের দিন বলতে না পার যে, আমাদের পূর্ব পুরুষরাই তো আমাদের পূর্বে শিরক করেছিল। আমরা ছিলাম তাদের পরবর্তী বংশধর। সুতরাং আপনি কি আমাদেরকে সেই ভ্রান্ত ও বাতিলদের কৃতকর্মের দরুন ধ্বংস করবেন– সূরা আরাফ:১৭২

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ এই হাদীসটির সনদ সহিহ

76 – عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «يَوْمَ كَلَّمَ اللَّهُ مُوسَى كَانَ عَلَيْهِ جُبَّةُ صُوفٍ، وَسَرَاوِيلُ صُوفٍ، وَكُمَّةُ صُوفٍ، وَكِسَاءُ صُوفٍ، وَنَعْلَانِ مِنْ جَلْدِ حِمَارٍ غَيْرِ ذَكِيٍّ»

হযরত ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- হযরত মূসা (আ) এর সাথে যখন আল্লাহ তাআলা কথা বলেছেন তখন তিনি পশমী জামা পরিহিত ছিলেন। তার পাজামা ছিল পশমী, আস্তিন পশমী এবং চাদরও ছিল পশমী। আর তার জুতা ছিল এমন (মৃত) গাধার যা যবেহ করা হয় নি।

77 – عَنْ أَبِي أُمَامَةَ الْبَاهِلِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَيْكُمْ بِلِبَاسِ الصُّوفِ تَجِدُونَ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ فِي قُلُوبِكُمْ»

৭৭.হযরত আবু উমামা বাহিলী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- তোমরা পশমী পোষাক [অনাড়ম্বর পোষাক] পরিধান করবে, তাহলে তোমরা তোমাদের অন্তরে ইমানের মাধূর্য উপলব্ধী করতে পারবে।

78 – عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَهُوَ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ وَقَدْ قَارَبَ بَيْنَ أَصْحَابِهِ السَّيْرُ فَرَفَعَ بِهَاتَيْنِ الْآيَتَيْنِ صَوْتَهُ {يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ يَوْمَ تَرَوْنَهَا تَذْهَلُ كُلُّ مُرْضِعَةٍ عَمَّا أَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَى النَّاسَ سُكَارَى وَمَا هُمْ بِسُكَارَى وَلَكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ} [الحج: 2] . فَلَمَّا سَمِعَ أَصْحَابُهُ ذَلِكَ، حَثُّوا الْمَطِيَّ وَعَرَفُوا أَنَّهُ عِنْدَ قَوْلٍ يَقُولُهُ، فَلَمَّا تَأَشَّبُوا عِنْدَهُ حَوْلَهُ، قَالَ: «هَلْ تَدْرُونَ أَيُّ يَوْمٍ ذَاكُمْ؟» قَالُوا: اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ: ” ذَاكَ يَوْمُ يُنَادِي آدَمُ فَيُنَادِيهِ رَبُّهُ فَيَقُولُ: يَا آدَمُ، ابْعَثْ بَعْثَ النَّارِ، فَيَقُولُ: وَمَا بَعْثُ النَّارِ؟ فَيَقُولُ: مِنْ كُلِّ أَلْفٍ تِسْعُ مِائَةٍ وَتِسْعَةٌ وَتِسْعُونَ إِلَى النَّارِ وَوَاحِدٌ إِلَى الْجَنَّةِ ” قَالَ: فَأُبْلِسُوا حَتَّى مَا أَوْضَحُوا بِضَاحِكَةٍ، فَلَمَّا رَأَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاكَ، قَالَ: «اعْلَمُوا وَأَبْشِرُوا، فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، إِنَّكُمْ مَعَ خَلِيقَتَيْنِ مَا كَانَتَا مَعَ شَيْءٍ إِلَّا كَثَّرَتَاهُ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ وَمَنْ هَلَكَ مِنْ بَنِي آدَمَ وَبَنِي إِبْلِيسَ» قَالَ: فَسَرَّى ذَلِكَ عَنِ الْقَوْمِ، قَالَ: «اعْلَمُوا وَأَبْشِرُوا، فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، مَا أَنْتُمْ فِي النَّاسِ إِلَّا كَالرَّقْمَةِ فِي ذِرَاعِ الدَّابَّةِ أَوْ كَالشَّامَةِ فِي جَنْبِ الْبَعِيرِ»

হযরত ইমরান ইবনে হুসায়ন (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একবার সফরে ছিলেন। তিনি সাহাবীগণের সাথে চলছিলেন। এক সময় তিনি উচ্চ আওয়াযে এই আয়াত পাঠ করলেন-

… يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ

হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। নিশ্চয়ই কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়াবহ ব্যাপার। যেদিন তোমরা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী ভুলে যাবে তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে এবং প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে। আর মানুষকে দেখতে পাবে মাতালের মত, অথচ তারা নেশাগ্রস্ত নয়- বস্ত্তত আল্লাহর আযাব খুব কঠিন।– সূরা হাজ: ১-২

সাহাবীগণ যখন এটা শুনলেন তখন তারা দ্রুতবেগে সওয়ারী হাঁকালেন এবং এটাও বুঝলেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এখন কিছু বলবেন। তারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চারপাশে একত্রিত হলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা কি জান এটা কোনদিন হবে? তারা বলল, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। তিনি (ﷺ) বললেন, এটা হবে ঐ দিন যেদিন আল্লাহ তাআলা হযরত আদম (আ) কে বলবেন- হে আদম! জাহান্নামের অংশ বের করে নাও। তিনি বলবেন, হে আমার প্রতিপালক! কতজনের মধ্যে কতজনকে বের করব? আল্লাহ তাআলা বলবেন, প্রতি হাজারের মধ্যে নয়শত নিরাব্বইজনকে জাহান্নামের জন্য এবং একজনকে জান্নাতের জন্য। এটা শুনে সাহাবীগণ চিন্তিত হয়ে পড়লেন এবং নির্বাক হয়ে যান।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদের এই অবস্থা দেখে বললেন, তোমরা চিন্তিত হয়ো না বরং আমল করতে থাক এবং আশান্বিত থাক। কসম সেই সত্তার যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ! তোমাদের সাথে আরো দুটি সৃষ্টজীব থাকবে। তারা যাদের সাথে থাকবে তাদের সংখ্যাই ভারি হবে। তারা হলো ইয়াজুজ মাজুজ সম্প্রদায়। আর আদম সন্তানের মধ্যে যারা ধ্বংসপ্রাপ্ত এবং ইবলিসের সন্তান সন্ততিরাও থাকবে।

এটা শুনে সাহাবীরা খুশি হলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তোমরা আমল করতে থাক এবং আশান্বিত থাক। কসম সেই সত্তার যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ! অন্যান্য লোকের তুলনায় তোমাদের উদাহরণ ঠিক সওয়ারীর হাতের (সামনের পায়ের) সাদা চিহ্ন বা উটের তিলক এর মত।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ  এই হাদীসটির সনদ সহিহ

79 – عَنْ أَنَسٍ قَالَ: لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيمٌ} [الحج: 1] إِلَى قَوْلِهِ تَعَالَى {وَلَكِنَّ عَذَابَ اللَّهِ شَدِيدٌ} [الحج: 2] عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ فِي مَسِيرٍ لَهُ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِنَحْوِهِ.

৭৯.হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন- যখন নবী (ﷺ) এর উপর এই আয়াত নাযিল হলো-

… يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمْ إِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ

হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। নিশ্চয়ই কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়াবহ ব্যাপার।… বস্ত্তত আল্লাহর আযাব খুব কঠিন।– সূরা হাজ: ১-২

তখন তিনি সফরে ছিলেন। এরপর বর্ণনাকারী পূর্ণ হাদীস বর্ণনা করলেন।

80 – عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” يَقُولُ اللَّهُ: يَا آدَمُ، فَيَقُولُ: لَبَّيْكَ وَسَعْدَيْكَ وَالْخَيْرُ فِي يَدَيْكَ، قَالَ: يَقُولُ: أَخْرِجْ بَعْثَ النَّارِ «.»

 فَذَكَرَ الْحَدِيثَ مُخْتَصَرًا دُونَ ذِكْرِ النُّزُولِ

৮০.হযরত আবু সাঈদ আল খুদরী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা বলবেন- হে আদম! তিনি বলবেন, আমি উপস্থিত এবং আপনার প্রশংসা করছি, সকল কল্যাণ আপনারই হাতে। আল্লাহ তাআলা বলবেন, একদলকে জাহান্নামে পাঠাও।

বর্ণনকারী হাদিসটি সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন এবং আয়াত নাযিলের কথা উল্লেখ করেন নি।

81 – عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اتَّقُوا دَعَوَاتِ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهَا تَصْعَدُ إِلَى السَّمَاءِ كَأَنَّهَا شَرَارٌ»

৮১.হযরত ইবনে উমর (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- মযলুমের বদ দুআ থেকে বাঁচ। কেননা তা অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় আসমানের দিকে ধাবিত হয়।

82 – عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” أَنَا سَيِّدُ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا فَخْرَ، مَا مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَهُوَ تَحْتَ لِوَائِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَنْتَظِرُ الْفَرَجَ، وَإِنَّ مَعِي لِوَاءَ الْحَمْدِ، أَنَا أَمْشِي وَيَمْشِي النَّاسُ مَعِي حَتَّى آتِيَ بَابَ الْجَنَّةِ فَأَسْتَفْتِحُ فَيُقَالُ: مَنْ هَذَا؟ فَأَقُولُ: مُحَمَّدٌ، فَيُقَالُ: مَرْحَبًا بِمُحَمَّدٍ، فَإِذَا رَأَيْتُ رَبِّي خَرَرْتُ لَهُ سَاجِدًا أَنْظُرُ إِلَيْهِ

হযরত উবাদা ইবনে সামিত (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- কিয়ামতের দিন আমি হব মানুষের সর্দার, এতে আমার কোন গর্ব নেই। ঐ দিন প্রত্যেকেই আমার পতাকাতলে আশ্রয় নেবে এবং মুক্তির অপেক্ষা করতে থাকবে। প্রশংসার পতাকা আমার সাথে থাকবে। লোকেরা আমার সাথে চলবে আর আমি জান্নাতের দরজার উপর এসে তা খুলতে বলব। জিজ্ঞাসা করা হবে, কে? আমি বলব, মুহাম্মদ। তখন বলা হবে মুহাম্মদের জন্য মারহাবা! স্বাগতম! অতঃপর (জান্নাতে) যখন আমি আমার প্রতিপালককে দেখতে পাব, তখন সিজদায় পড়ে যাব।

هَذَا حَدِيثٌ كَبِيرٌ فِي الصِّفَاتِ وَالرُّؤْيَةِ صَحِيحٌ عَلَى شَرْطِ الشَّيْخَيْنِ وَلَمْ يُخَرِّجَاهُ

এই হাদীস কিয়ামতের সিফাত ও অবস্থার সাথে সাথে আল্লাহর দীদার বিষয়ক একটি বড় হাদীস এবং ইমাম বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহিহ, তবে তারা তা বর্ণনা করেন নি।

83 – ثنا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ فَيْرُوزَ الدَّيْلَمِيُّ، قَالَ: دَخَلْتُ عَلَى عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ وَهُوَ فِي حَائِطٍ لَهُ بِالطَّائِفِ يُقَالُ لَهُ الْوَهْطُ، وَهُوَ مُحَاضِرٌ فَتًى مِنْ قُرَيْشٍ، وَذَلِكَ الْفَتَى يَزِنُّ بِشُرْبِ الْخَمْرِ، فَقُلْتُ لِعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو: خِصَالٌ تَبْلُغُنِي عَنْكَ تُحَدِّثُ بِهَا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَّهُ مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ شَرْبَةً لَمْ تُقْبَلْ تَوْبَتُهُ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا، فَاخْتَلَجَ الْفَتَى يَدَهُ مِنْ يَدِ عَبْدِ اللَّهِ، ثُمَّ وَلَّى، فَإِنَّ الشَّقِيَّ مَنْ شَقِيَ فِي بَطْنِ أُمِّهِ، وَأَنَّهُ مَنْ خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ لَا يُرِيدُ إِلَّا الصَّلَاةَ بِبَيْتِ الْمَقْدِسِ خَرَجَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ، فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرٍو: اللَّهُمَّ إِنِّي لَا أُحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَقُولَ عَلَيَّ مَا لَمْ أَقُلْ، إِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ شَرْبَةً لَمْ تُقْبَلْ تَوْبَتُهُ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا، فَإِنْ تَابَ تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ، فَإِنْ عَادَ لَمْ تُقْبَلْ تَوْبَتُهُ أَرْبَعِينَ صَبَاحًا» فَلَا أَدْرِي فِي الثَّالِثَةِ أَوْ فِي الرَّابِعَةِ قَالَ: «فَإِنْ عَادَ كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ يَسْقِيَهُ مِنْ رَدْغَةِ الْخَبَالِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» ، قَالَ: وَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «إِنَّ اللَّهَ خَلَقَ خَلْقَهُ فِي ظُلْمَةٍ، ثُمَّ أَلْقَى عَلَيْهِمْ مِنْ نُورِهِ، فَمَنْ أَصَابَهُ مِنْ ذَلِكَ النُّورِ يَوْمَئِذٍ شَيْءٌ فَقَدِ اهْتَدَى، وَمَنْ أَخْطَأَهُ ضَلَّ فَلِذَلِكَ أَقُولُ جَفَّ الْقَلَمُ عَلَى عَلْمِ اللَّهِ» ، وَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «إِنَّ سُلَيْمَانَ بْنَ دَاوُدَ سَأَلَ رَبَّهُ ثَلَاثًا فَأَعْطَاهُ اثْنَيْنِ، وَنَحْنُ نَرْجُو أَنْ يَكُونَ قَدْ أَعْطَاهُ الثَّالِثَةَ، سَأَلَهُ حُكْمًا يُصَادِفُ حُكْمَهُ فَأَعْطَاهُ إِيَّاهُ، وَسَأَلَهُ مُلْكًا لَا يَنْبَغِي لِأَحَدٍ بَعْدَهُ فَأَعْطَاهُ، إِيَّاهُ، وَسَأَلَهُ أَيُّمَا رَجُلٍ يَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهِ لَا يُرِيدُ إِلَّا الصَّلَاةَ فِي هَذَا الْمَسْجِدِ أَنْ يَخْرُجَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَيَوْمِ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ، نَحْنُ نَرْجُو أَنْ يَكُونَ اللَّهُ قَدْ أَعْطَاهُ إِيَّاهُ»

৮৩.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ফিরুয আদ দাইলামী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (رضي الله عنه) এর নিকট গেলাম আর তিনি তায়েফে তার ‘ওহত্ব’ নামাক বাগানে ছিলেন। তিনি কুরায়শের এক যুবককে তার নিকট ডেকে ছিলেন- যে মদপানের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। আমি আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (رضي الله عنه)-কে বললাম, আমি আপনার পক্ষ থেকে তিনটি বিষয়ে জানতে পেরেছি, যা আপনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তা হলো-

প্রতম কথা হলো- কেউ যদি এক ঢোক মদপান করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তার চল্লিশ দিনের নামায কবুল করেন না। এটা শুনে সেই যুবক হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) এর হাত থেকে তার হাত ছুটিয়ে নেন এবং ফিরে চলে যান।

দ্বিতীয় কথা হলো- প্রকতৃ দুর্ভাগা সে যে তার মায়ের পেট থেকেই দুর্ভাগা।

তৃতীয় কথা হলো- যে ব্যক্তি বায়তুল মুকাদ্দাসে নামায পড়ার ইচ্ছা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়, সে গুনাহ থেকে এমনভাবে পবিত্র হয়ে যায়, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল।

এটা শুনে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه) বললেন, হে আল্লাহ! আমি চাই না যে, কেউ আমার দিকে এমন কথা সম্পৃক্ত করে, যা আমি কখনো বলিনি। আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলতে শুনেছি- যদি কেউ সামান্য মদপান করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তার চল্লিশ দিনের নামায কবুল করেন না। যদি সে তওবা করে তবে আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন। যদি দ্বিতীয়বার পান করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তার চল্লিশ দিনের নামায কবুল করেন না। তবে এটা স্মরণ নাই যে, তৃতীয়বার না চতুর্থবার বলেছেন- যদি পূণরায় পান করে, তবে আল্লাহর হক হয়ে যায় যে, কিয়ামতের দিন তিনি তাকে জাহান্নামের নোংড়া পান করাবেন।

অতঃপর বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন- আল্লাহ তাআলা মাখলুককে অন্ধকারে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর তার উপর তার নূর বা আলো দান করেছেন। সেদিন যে এই নূর লাভ করেছে সে হিদায়াতের পথে চলেছে আর যে বঞ্চিত হয়েছে সে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে। এজন্যই আমি বলি সবকিছু আল্লাহর ইলম বা জ্ঞানে রয়েছে। 

অতঃপর বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন- হযরত সুলায়মান বিন দাউদ (আ) আল্লাহর নিকট তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেছিলেন, যার মধ্যে দুটি তাকে দেয়া হয়েছে আর আমি আশা করি তৃতীয়টি তাকে দেয়া হবে। তিনি প্রার্থনা করেছেন- তাকে যেন হিকমত ও প্রজ্ঞার সাথে বিচার ফয়সালা ও রাজ্য পরিচালনা করার গুণ দান করা হয়- আর তাকে তা দেয়া হয়েছে। তিনি প্রার্থনা করেছেন এমন রাজত্ব যা তারপর আর কেউ এর অধিকারী হবে না- আর তাকে তা দেয়া হয়েছে। তিনি প্রার্থনা করেছেন যে ব্যক্তি এই মসজিদে (বায়তুল মুকাদ্দাসে) নামায পড়ার ইচ্ছা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়, সে যেন গুনাহ থেকে এমনভাবে পবিত্র হয়ে যায়, যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল। আমরা আশা করি যে আল্লাহ তাআলা এটাও তাকে দান করেছেন।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

84 – عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ قَتَادَةَ السُّلَمِيِّ، وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: ” خَلَقَ اللَّهُ آدَمَ ثُمَّ خَلَقَ الْخَلْقَ مِنْ ظَهْرِهِ، ثُمَّ قَالَ: هَؤُلَاءِ لِلْجَنَّةِ وَلَا أُبَالِي، وَهَؤُلَاءِ لِلنَّارِ وَلَا أُبَالِي ” قَالَ: فَقِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ فَعَلَى مَاذَا نَعْمَلُ، قَالَ: عَلَى مُوَافَقَةِ الْقَدَرِ

৮৪.হযরত আব্দুর রহমান ইবনে কাতাদাহ আস সুলামী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত- যিনি নবী (ﷺ) এর সাহাবীদের মধ্যে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন- আল্লাহ তাআলা হযরত আদম (আ)-কে সৃষ্টি করলেন। অতঃপর তার পৃষ্টদেশ থেকে মাখলুককে সৃষ্টি করলেন। অতঃপর বললেন, এরা জান্নাতী- এতে আমার কোন পরোয়া নাই। আর এরা জাহান্নামী- এতেও আমার কোন পরোয়া নাই।

তখন জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তাহলে আমরা কিসের ভিত্তিতে আমল করব? তিনি (ﷺ) বললেন, যা আল্লাহর নির্ধারণ অনুযায়ী হবে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

85 – عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ خَالِقُ كُلِّ صَانِعٍ وَصَنْعَتِهِ»

৮৫.হযরত হুযায়ফা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক স্রষ্টা (কারিগর) ও তার শিল্পকর্মের স্রষ্টা।

86 – عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ خَالِقُ كُلِّ صَانِعٍ وَصَنْعَتِهِ»

        ৮৬.(অপর সূত্রে) হযরত হুযায়ফা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক স্রষ্টা (কারিগর) ও তার শিল্পকর্মের স্রষ্টা।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

87 – عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ رُقًى كُنَّا نَسْتَرْقِي بِهَا، وَأَدْوِيَةٌ كُنَّا نَتَدَاوَى بِهَا هَلْ تَرُدُّ مِنْ قَدَرِ اللَّهِ تَعَالَى؟ قَالَ: «هُوَ مِنْ قَدَرِ اللَّهِ»

৮৭.হযরত হাকীম বিন হিযাম (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! এই যে ঝাড়ফুক এবং চিকিৎসার জন্য ওষুধ ব্যবহার করি এগুলো কি তাকদীরকে পরিবর্তন করতে পারে? তিনি বললেন, এগুলোও তাকদীরের অন্তর্ভুক্ত।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

88 – عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ رُقًى كُنَّا نَسْتَرْقِي بِهَا وَأَدْوِيَةٌ كُنَّا نَتَدَاوَى بِهَا هَلْ تَرُدُّ مِنْ قَدَرِ اللَّهِ، قَالَ: «هُوَ مِنْ قَدَرِ اللَّهِ»

        ৮৮.(অপর সূত্রে) হযরত হাকীম বিন হিযাম (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা যে সব ঝাড়ফুক করি এবং ওষুধ-পত্র দ্বারা যে চিকিৎসা করি, এগুলো কি তাকদীরকে পরিবর্তন করতে পারে? তিনি বললেন, এগুলোও তাকদীরের অন্তর্ভুক্ত।

89 – عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، قَالَ: أَتَيْتُ عَائِشَةَ فَقُلْتُ: يَا أُمَّاهُ، حَدِّثِينِي بِشَيْءٍ سَمِعْتِيهِ، مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الطَّيْرُ تَجْرِي بِقَدْرٍ، وَكَانَ يُعْجِبُهُ الْفَأْلُ الْحَسَنُ»

৮৯.হযরত আবু বুরদা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আয়িশা (رضي الله عنه) এর নিকট গেলাম এবং আরয করলাম, আম্মাজান! আপনি আমাকে এমন কোন হাদীস শুনান যা আপনি রাসূলূল্লাহ (ﷺ) থেকে শুনেছেন। তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি যে, পাখি আল্লাহর তাকদীর বা নির্ধারণ অনুযায়ী উড্ডয়ন করে। আর তিনি শুভলক্ষণ ধরা পছন্দ করতেন।

90 – عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَا يُؤْمِنُ الْعَبْدُ حَتَّى يُؤْمِنَ بِأَرْبَعٍ حَتَّى يَشْهَدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ بَعَثَنِي بِالْحَقِّ، وَيُؤْمَنُ بِالْبَعْثِ بَعْدَ الْمَوْتِ، وَيُؤْمَنُ بِالْقَدَرِ»

৯০.হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- কোন বান্দা চারটি বিষয়ে ইমান না আনা পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না। তা হলো- এই সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং আমি আল্লাহর রাসূল যিনি আমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন। মৃত্যুর পর পূণরুত্থানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং তাকদীরের প্রতি ইমান আনয়ন করা।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

91 – عَنْ عَلِيٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْوَهُ.

৯১.হযরত আলী (رضي الله عنه) নবী (ﷺ) থেকে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছন।

92 – عَنْ عَلِيٍّ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” لَا يُؤْمِنُ عَبْدٌ حَتَّى يُؤْمِنَ بِأَرْبَعٍ: يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ بَعَثَنِي بِالْحَقِّ، وَأَنَّهُ مَبْعُوثٌ بَعْدَ الْمَوْتِ، وَيُؤْمَنُ بِالْقَدَرِ كُلِّهِ “

৯২.হযরত আলী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- কোন বান্দা চারটি বিষয়ে ইমান না আনা পর্যন্ত মুমিন হতে পারে না। তা হলো- এই সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, তিনি একক, তার কোন শরীক নাই। আমি আল্লাহর প্রেরিত সত্য নবী। মৃত্যুর পর পূণরুত্থানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং তাকদীরের সকল কিছুর উপর ইমান আনয়ন করা।

93 – ثنا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيُّ، يَقُولُ: سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَزَالُ أَمْرُ هَذِهِ الْأُمَّةِ مُؤَامِرًا – أَوْ قَالَ مُقَارِبًا – مَا لَمْ يَتَكَلَّمُوا فِي الْوِلْدَانِ وَالْقَدَرِ»

৯৩. জারির বিন হাযিম বলেন, আমি আবু রাজা আতারদী থেকে শুনেছি, তিনি হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) কে বলতে শুনেছেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- এই উম্মতের কর্তৃত্ব ক্ষমতা ঐ সময় পর্যন্ত কায়েম থাকবে, যে পর্যন্ত না তারা বাচ্চা ও তাকদীরের ব্যাপারে বাহাস বিতর্ক না করবে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

94 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ قَسَمَ بَيْنَكُمْ أَخْلَاقَكُمْ كَمَا قَسَمَ بَيْنَكُمْ أَرْزَاقَكُمْ، وَإِنَّ اللَّهَ يُعْطِي الدُّنْيَا مَنْ يُحِبُّ وَمَنْ لَا يُحِبُّ، وَلَا يُعْطِي الْإِيمَانَ إِلَّا مَنْ يُحِبُّ»

৯৪.হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলা তোমাদের চরিত্রকে এমনভাবে বন্টন করেছেন, যেভাবে তোমাদের জীবিকা বন্টন করেছেন। দুনিয়া তো আল্লাহ তাআলা তাকেও দান করেন, যাকে তিনি অপছন্দ করেন। তবে ইমান শুধু তাকেই দান করেন যাকে তিনি পছন্দ করেন।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

95 – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ قَسَمَ بَيْنَكُمْ أَخْلَاقَكُمْ كَمَا قَسَمَ بَيْنَكُمْ أَرْزَاقَكُمْ، وَإِنَّ اللَّهَ يُعْطِي الْمَالَ مَنْ يُحِبُّ وَمَنْ لَا يُحِبُّ، وَلَا يُعْطِي الْإِيمَانَ إِلَّا مَنْ يُحِبُّ، وَإِذَا أَحَبَّ اللَّهُ عَبْدًا أَعْطَاهُ الْإِيمَانَ»

৯৫.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- আল্লাহ তাআলা তোমাদের চরিত্রকে এমনভাবে বন্টন করেছেন, যেভাবে তোমাদের জীবিকা বন্টন করেছেন। আল্লাহ তাআলা মাল-সম্পদ তো তাকেও দান করেন যাকে তিনি পছন্দ করেন, আবার তাকেও দান করেন যাকে তিনি অপছন্দ করেন। তবে ইমান শুধু তাকেই দান করেন যাকে তিনি পছন্দ করেন। যখন আল্লাহ তাআলা কাউকে মহব্বত করেন, তখন তাকে ইমান দান করেন।

96 – ثنا الزُّهْرِيُّ، حَدَّثَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، قَالَ: سَمِعْتُ كُرْزَ بْنَ عَلْقَمَةَ، يَقُولُ: سَأَلَ رَجُلٌ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلْ لِلْإِسْلَامِ مِنْ مُنْتَهًى؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «نَعَمْ، أَيُّمَا أَهْلِ بَيْتٍ مِنَ الْعَرَبِ وَالْعَجَمِ أَرَادَ اللَّهُ بِهِمْ خَيْرًا أَدْخَلَ عَلَيْهِمُ الْإِسْلَامَ، ثُمَّ تَقَعُ الْفِتَنُ كَأَنَّهَا الظُّلَلُ»

৯৬.হযরত কুরয বিন আলকামা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। এক ব্যক্তি রাসূলাল্লাহ (ﷺ)-কে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইসলামের কি চূড়ান্ত সীমা আছে? তিনি (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ। আরব ও আজমের যার ব্যাপারেই আল্লাহ কল্যানের ইচ্ছা করেন, তাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করেন। আর পরিশেষে ছায়ার মত ফিতনা প্রকাশ পাবে।

أَمَا حَدِيثُ مَعْمَرٍ

মা’মার সূত্রে বর্ণিত হাদীস

97 – عَنْ كُرْزِ بْنِ عَلْقَمَةَ، قَالَ: قَالَ أَعْرَابِيٌّ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلْ لِلْإِسْلَامِ مِنْ مُنْتَهًى؟، فَقَالَ: «نَعَمْ، أَيُّمَا أَهْلِ بَيْتٍ مِنَ الْعَرَبِ وَالْعَجَمِ أَرَادَ اللَّهُ بِهِمْ خَيْرًا أَدْخَلَ عَلَيْهِمُ الْإِسْلَامَ، ثُمَّ تَقَعُ الْفِتَنُ كَأَنَّهَا الظُّلَلُ»

        ৯৭.(অপর সূত্রে) হযরত কুরয বিন আলকামা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। একজন গ্রাম্য ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইসলামের কি চূড়ান্ত সীমা আছে? তিনি (ﷺ) বললেন, হ্যাঁ। আরব ও আজমের যার ব্যাপারেই আল্লাহ কল্যানের ইচ্ছা করেন, তাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফীক দান করেন। আর পরিশেষে ছায়ার মত ফিতনা প্রকাশ পাবে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

98 – أَنَّ أَبَا عَلِيٍّ الْجَنْبِيَّ، أَخْبَرَهُ، أَنَّهُ سَمِعَ فَضَالَةَ بْنَ عُبَيْدٍ، يُخْبِرُ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «طُوبَى لِمَنْ هُدِيَ إِلَى الْإِسْلَامِ وَكَانَ عَيْشُهُ كَفَافًا وَقَنَعَ»

৯৮.হযরত ফাযালা ইবনে উবায়দ (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছেন-সুসংবাদ তার জন্য যাকে ইসলামের দিকে হিদায়াত করা হয়েছে এবং সে প্রয়োজনীয় পরিমাণ রিযিক লাভ করেছে আর এর উপর তুষ্ট হয়েছে।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

99 – عَنْ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ: «اللَّهُمَّ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْكُفْرِ وَالْفَقْرِ، وَعَذَابِ الْقَبْرِ»

৯৯.হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন- হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট কুফর, দারিদ্রতা ও কবরের আযাব থেকে পানাহ চাই।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ

100 – عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا أَنَا رَحْمَةٌ مُهْدَاةٌ»

১০০.হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন- হে লোক সকল! আমি (তোমাদের জন্য) রহমত ও হিদায়াতের উৎস।

هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ ِ  এই হাদীসটি সহিহ


 
Top