Do you want to log in to or join Facebook?


পবিত্র জুম’আর দিনের বিস্তারিত ফজিলত এবং নির্দেশনা
●●আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, “মুমিনগণ,জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়,তখন তোমরা আল্লাহর ইবাদতের জন্য দ্রুত যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ কর।এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।”-[আল কুরআন;সূরা আল জুমুআহ;০৯]
ফজিলতঃ
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মুমিনের জন্য জুম’আর দিন হল সাপ্তাহিক ঈদের দিন।”-[ইবনে মাজাহ;১০৯৮]
●●“জুম’আর দিনটি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনের চেয়েও শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিনটি আল্লাহর কাছে অতি মর্যাদা সম্পন্ন।”-[মুসনাদে আহমদ-৩/৪৩০;ইবনে মাজাহ-১০৮৪]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
“হে মুসলমানগণ, জুম‘আর দিনকে আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের জন্য (সাপ্তাহিক) ঈদের দিন হিসাবে নির্ধারণ করেছেন (جَعَلَهُ اللهُ عِيْدًا)। তোমরা এদিন মিসওয়াক কর, গোসল কর ও সুগন্ধি লাগাও।”-[মুওয়াত্তা, ইবনু মাজাহ, মিশকাত; হাদিস নং-১৩৯৮, ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘পরিচ্ছন্নতাঅর্জন ও সকাল সকাল মসজিদে গমন’ অনুচ্ছেদ-৪৪]
●●“উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এটি একটি মহান দিন। এ জুম’আর দিনটিকে সম্মান করার জন্য ইহুদী-নাসারাদের উপর ফরজ করা হয়েছিল; কিন্তু তারা মতবিরোধ করে এই দিনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। অতঃপর ইহুদীরা শনিবারকে আর খ্রিষ্টানরা রবিবারকে তাদের ইবাদতের দিন বানিয়েছিল। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা এ উম্মতের জন্য শুক্রবারকে মহান দিবস ও ফযীলতের দিন হিসেবে দান করেছেন। আর উম্মতে মুহাম্মদী তা গ্রহন করে নিল।”-[বুখারী – ৮৭৬, ইফা –৮৩২, মুসলিম – ৮৫৫]
●●“জান্নাতে প্রতি জুম’আর দিনে জান্নাতীদের হাট বসবে। জান্নাতী লোকেরা সেখানে প্রতি সপ্তাহে একত্রিত হবেন। তখন সেখানে এমন মনমুগ্ধকর হাওয়া বইবে, যে হাওয়ায় জান্নাতীদের সৌন্দর্য অনেক গুণে বেড়ে যাবে এবং তাদের স্ত্রীরা তা দেখে অভিভূত হবে। অনুরূপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি স্ত্রীদের বেলায়ও হবে।”-[মুসলিম;২৮৩৩, ৭১/৭৫৩]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
সূর্য উদিত হয় এরুপ দিনগুলোর মধ্যে জুম’আর দিনটিই হল সর্বোত্তম।
(১)এই দিনেই আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল – [ আবু দাউদ – ১০৪৬ ],
(২)এই দিনে তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং
(৩)এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল – [মুসলিম;জুম’আর নামাজ পর্ব ],
(৪)এই দিনে তাঁকে দুনিয়াতে পাঠানো হয়েছিল,
(৫)এই দিনেই তাঁর তওবা কবুল করা হয়েছিল এবং
(৬)এই দিনেই তাঁর রূহ কবজ করা হয়েছিল – [ আবু দাউদ – ১০৪৬ ],
(৭)এই দিনেই শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়া হবে – [ আবু দাউদ – ১০৪৭ ],
(৮)এই দিনেই কিয়ামত হবে – [ আবু দাউদ – ১০৪৬ ],
(৯)এই দিনেই সকলেই বেহুঁশ হয়ে যাবে – [ আবু দাউদ – ১০৪৭ ],
(১০)নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগন,আকাশ,পৃথিবী,বাতাস,পর্বত ও সমুদ্র সবই জুম’আর দিনে শংকিত হয়। – [ ইবনে মাজাহ – ১০৮৪; মুয়াত্তা ইমাম মালেক ]।
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “জুম’আর রাতে বা দিনে যে ব্যক্তি ঈমান নিয়ে মারা যায়; আল্লাহ তায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে মুক্তি দিবেন।”-[তিরমিযী;১০৭৮]
করণীয় সমূহঃ
(১) বেশি বেশি দরূদ পাঠ করাঃ
●● বনে আওস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমাদের দিনগুলির মধ্যে সর্বোত্তম একটি দিন হচ্ছে জুম'আর দিন। সুতারাং ঐ দিনে তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ কর। কেননা, তোমাদের পাঠ করা দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।"--[আবূ দাউদ ১০৪৭, নাসায়ী ১৩৭৪, ইবনে মাজাহ্ ১৬৩৬, আহমাদ ১৫৭২৯]
●●“জুমুআ’র দিনে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি বেশী বেশী দরূদ পাঠ করার জন্য আমাদের সকলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”-[নাসাঈ;১৩৭৭]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
“যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ পাঠ করবে আল্লাহ্ তা’আলা তার উপর দশবার রহমত নাযিল করবেন, তার দশটি গুনাহ্ মিটিয়ে দেয়া হবে এবং তার দশটি মর্যাদা উন্নীত করা হবে।”-[নাসাঈ;১৩০০]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে এই দরূদ পড়তে শিখিয়েছেন,
“আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইব্রাহিমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহিমা, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।”-[বুখারী,মুসলিম]
(২) সূরা কাহ্‌ফ পাঠ করাঃ
●●“যে ব্যক্তি জুম’আর দিনে সুরা কাহফের প্রথম ১০ আয়াত পড়বে, সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে।”-[মুসলিম]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি জুম’আর দিনে সূরা আল-কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য মহান আল্লাহ্ দুই জুম’আর মাঝে নূর আলোকিত করবেন।”-[ইমাম নাসাঈ ও বায়হাকী হাদিসটি বর্ণনা করেন ।]
(৩) গোসল করাঃ
●●আমিরুল মুমিমীন ওমর (রা) এর ছেলে বিশিষ্ট সাহাবা আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্নিত যে, তিনি নবী করীম (সল্লাল্লাহু আলাইহি আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, “যে ব্যক্তি জুমু’আর নামাজে উপস্থিত হবে সে যেন গোসল করে নেয়।”-[সুনানে তিরমিযী-৪৯২]
●●আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্নিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “জুমু’আর দিনে গোসল করলে চুলের গোড়ায় জমে থাকা পাপও দূর হয়ে যায়।”-[তিরবানী, মাজমাউজ জাওয়ায়েদ]
(৪) মিস্‌ওয়াক করা ও গন্ধযুক্ত খাবার পরিহার করাঃ
●●জুম’আর দিনেঃ “মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন না খাওয়া (ধুমপান না করা)।”-[বুখারী;৮৫৩]
●●জুম’আর দিনেঃ “মিস্ওয়াক করা।”-[বুখারী;৮৮৭,ইফা;৮৪৩,ইবনে মাজাহ;১০৯৮]
(৫) সাজসজ্জা গ্রহন করাঃ
●●জুম’আর দিনেঃ “গায়ে তেল ব্যবহার করা।”-[বুখারী;৮৮৩]
●●জুম’আর দিনেঃ “জুম’আর সালাতের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা।”-[বুখারী;৮৮০]
●●আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
“হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও,”-[আল কুরআনঃ সূরা আল আ’রাফ;আয়াত নং-৩১]
●●জুম’আর দিনেঃ “উত্তম পোশাক পরিধান করে জুম’আ আদায় করা।”-[বুখারী, মুসলিম, আহমাদ, ইবনে মাজাহ; ১০৯৭]
(৬) মসজিদের বসার আদাবঃ
●●জুম’আর দিনেঃ “মুসুল্লীদের ফাঁক করে মসজিদে সামনের দিকে এগিয়ে না যাওয়া।”-[বুখারী;৯১০,৮৮৩]
●●জুম’আর দিনেঃ “কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা।”-[বুখারী;৯১১,মুসলিম;২১৭৭,২১৭৮]
(৭) পায়ে হেটে আগে আগে মসজিদে যাওয়া , বেহুদা কাজ পরিত্যাগ না করা ও মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনাঃ
●●হযরত ইয়াযীদ ইবনে আবি মারয়াম(র) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদিন পায়ে হেঁটে জুম’আর জন্য যাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার সাথে আবায়া ইবনে রিফায়া (র) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। তিনি বললেন, সুসংবাদ গ্রহণ কর! তোমার এই পদচারণা আল্লাহর পথেই। আমি আবু আবস (রা) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তির পদদ্বয় আল্লাহর পথে ধূলিময় হলো, তার পদদ্বয় জাহান্নামের জন্য হারাম করা হলো।”-[জামে তিরমিযি,হাদিস নং-১৬৩৮, সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৯০৭]
●●আবু হুরায়রা (রঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “জুমু’আর দিন মসজিদের দরজায় ফেরেশ্তাগন অবস্থান করেন এবং ক্রমানুসারে আগে আগমনকারীদের নাম লিখতে থাকেন। যে সবার আগে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি মোটাতাজা উট কুরবানী করে। তারপর যে আসে সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে একটি গাভী কুরবানী করে। তারপর আগমনকারী ব্যক্তি মুরগী দানকারীর ন্যায়। এরপর আগমনকারী ব্যক্তি একটি ডিম দানকারীর ন্যায়। তারপর ইমাম যখন বের হন (খুতবার জন্য) ফেরেশ্তাগন তাঁদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শোন্তে থাকেন।”-[বুখারী;২য় খন্ড,৮৮২]
●●জুম’আর দিনেঃ “খুৎবার সময় খতীবের কোন কথার মার্জিত ভাবে সাড়া দেওয়া বা তার প্রশ্নের জবাব দানে শরীক হওয়া জায়েজ।”-[বুখারী;১০২৯]
●●হযরত আবু হুরাইরা (রা) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন ,
“যে ব্যক্তি গোসল করে জুমু’আর উদ্দেশ্যে আসে এবং যে পরিমাণ নফল নামায পড়ার তাওফীক হয় তা পড়ে, এরপর ইমামের খুতবা শেষ হওয়া পর্যন্ত চুপ থাকে এবং ইমামের সঙ্গে নামায আদায় করে, আল্লাহ তা’আলা তার দশ দিনের (সগীরা) গুনাহ মাফ করে দেন।”-[সহীহ মুসলিম;১/২৮৩]
●●আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি উত্তমরূপে উযু করার পর জুমু’আর নামাযে এলো, নীরবে মনযোগ সহকারে খুত্বা (আলোচনা) শুনলো, তার পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ্ মাফ করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি (অহেতুক) একটি কঙ্কর(পাথর) স্পর্শ করলো সে অনর্থক কাজ করলো।”-[মুসলিম;৩য় খন্ড – ১৮৬৫]
●●হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্নিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “ইমামের খুত্বা দেয়ার সময় যদি তুমি কাউকে চুপ থাকতেও বল তবে তুমি বেহুদা কাজ করলে।”-[বুখারী; ২য় খন্ড – ৮৮৭, মুসলিম, নাসাঈ, আবু দাউদ; ২য় খন্ড – ১১১২]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
“জুম’আর সালাতে তিন ধরনের লোক হাজির হয়।
(ক) এক ধরনের লোক আছে যারা আল্লাহর মসজিদে প্রবেশের পর তামাশা করে, তারা বিনিময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তামাশা ছাড়া কিছুই পাবে না।
(খ) দ্বিতীয় আরেক ধরনের লোক আছে যারা জুম’আয় হাজির হয় সেখানে কিছু দু’আ মুনাজাত করে, ফলে আল্লাহ যাকে চান তাকে কিছু দেন আর যাকে ইচ্ছা দেন না।
(গ) তৃতীয় প্রকার লোক হল যারা জুম’আয় হাজির হয়, চুপচাপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কারও ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে আগায় না, কাউকে কষ্ট দেয় না, তাদের দুই জুম’আর মধ্যবর্তী ৭ দিন সহ আরও তিনদিন যোগ করে মোট দশ দিনের গুনাহ আল্লাহ তায়ালা মাফ করে দেন।” – [আবু দাউদ]
●●“যে ব্যক্তি ভালভাবে ওযূ করে জুম’আর নামাজে এসে চুপ থেকে মনোযোগ সহকারে খুতবা শ্রবণ করে নামাজ আদায় করে,আল্লাহ তাআলা দুই জুম’আর মধ্যবর্তি সময় ও অতিরিক্ত আরো তিন দিনের ছোট পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেবেন।”-[মুসলিম]
(৮) প্রতি কদমে এক বছরের নফল ছালাত ও ছিয়ামের সমান নেকী হাসিল করাঃ
আউস ইব্‌ন আউস সাকাফি ‎রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:
“জুমার দিন যে গোসল করল, ভালো করে; অতঃপর আগেভাগে মসজিদে গেল; হেঁটে চলল, বাহনে চড়ল না; ইমামের নিকটবর্তী হল; অনর্থক কর্মে লিপ্ত না হয়ে মনোযোগসহ শ্রবণ করল; তার প্রতি কদমে লেখা হবে এক বছরের আমল তথা এক বছরের সিয়াম ও কিয়ামের সওয়াব”।
[ আহমদ ফি ‘ফাতহুল রাব্বানি’: (৬/৫১), তিরমিযি: (৪৯৬), আবু দাউদ: (৩৪৫), নাসায়ি: (১৩৮১), ইব্‌ন মাজাহ: (১০৮৭), দারামি: (১৫৪৭), হাকেম: (১০৪১), ইব্‌ন খুজাইমাহ: (১৭৫৮), আল-বানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন, দেখুন: সহিহ আল-জামে: (৬৪০৫)]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
“যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে রওনা হয় এবং ইমামের অতি নিকটে বসে চুপচাপ খুতবা শোনে,সে প্রতি পদক্ষেপে এক বছর রোযা রাখার এবং এক বছর রাতে কিয়াম করার নেকী পায়। আর এটা আল্লাহর জন্য বড় সহজ ব্যাপার।”-[আহমদ;নাসায়ী;তিরিমিযি (সহিহ)]
●●“কোন ব্যক্তি জুম‘আর দিন গোসল করল, ওযূ করে মসজিদে গেল এবং খুৎবা শুনল। তার প্রতি কদমে এক বছরের নফল ছালাত ও ছিয়ামের সমান নেকী হয়।”-[আবুদাঊদ;৩৭৩,মিশকাত;১৩৮৮]
●●“খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। কোনো ব্যাক্তি যদি জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হয়, কিন্তু, ইচ্ছা করে জুমুয়ার নামাজে ইমাম থেকে দূরে বসে, তবে সে বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”-[আবু দাউদ-১১০৮]
(৯) নফল সালাহ আদায় করাঃ
●●জুম’আর দিনেঃ “জুম’আর ফরজ নামাজ আদায়ের পর মসজিদে ৪ রাকা’আত সুন্নাত সালাত আদায় করা।”-[বুখারী;১৮২,মুসলিম;৮৮১,আবু দাউদ;১১৩০]
●●জুম’আর দিনেঃ “যেখানে জুম’আর ফরজ আদায় করেছে, উত্তম হল ঐ একই স্থানে সুন্নাত না পড়া। অথবা কোন কথা না বলে এখান থেকে গিয়ে পরবর্তী সুন্নাত সালাত আদায় করা।”-[মুসলিম;৭১০,বুখারী;৮৪৮]
(১০) দোয়া কবুলের মূহুর্ত তালাস করাঃ
●●আবু হুরায়রা রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একবার জুমার দিনের কথা আলোচনা করে বলেন , “এদিনে এমন একটি মূহূর্ত আছে যখন নামাজী বান্দা আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চায় আল্লাহ তাকে তা দেন।”-[বুখারী ও মুসলিম]
●●আবূ হুরায়রা (রা) হতে বর্ণীত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা জুমু’আর দিন সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে বললেন, “ওতে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যে কোন মুসলিম যদি ঐ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে নামায পড়া অবস্থায় আল্লাহ্র কাছে কিছু প্রার্থনা করে, তাহলে আল্লাহ্ তাকে তা দান করে থাকেন। এ কথা বলে তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন, সে মুহূর্তটি খুবুই সংক্ষিপ্ত।”-[বুখারী-৯৩৫,৫২৯৫,৬৪০০; মুসলিম-৮৫২; তিরমিজী-৪৯১; নাসায়ী-১৪৩০,১৪৩২; আবূ দাউদ-১০৪]
●●রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
“জুম’আর দিনে এমন একটি সময় আছে,যখন বান্দা আল্লাহর কাছে যা চায়,তা-ই তাকে দেওয়া হয়।আর এ সময়টি হল জুম’আর দিন আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত,একটি সময়।”-[বুখারী;৯৩৫]
●●“জুমার দিনে বারোটি প্রহর তথা সময় রয়েছে। এ সময়ে কোনো মুসলমান আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাইলে আল্লাহ তাকে তা দেন। তোমরা জুমার দিনের শেষ প্রহর তথা আছরের শেষ সময়ে এ প্রহরটিকে অনুসন্ধান করো।”-[আবূ দাউদ]
●●আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
“এবং যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্মন্ধে তোমাকে জিজ্ঞাসা করে,তখন তাদেরকে বলে দাওঃ আমি অবশ্যই তাদের সন্নিকটবর্তী,কোন আহ্বানকারী যখনই আমাকে আহ্বান করে তখনই আমি তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে থাকি,সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমাকে বিশ্বাস করে,তাহলেই তারা সঠিক পথে চলতে পারবে।”-[সূরা আল-বাক্বারা; আয়াত-১৮৬ এর বাংলা অনুবাদ]
●●জুম’আর দিনেঃ “এ দিন বেশী বেশী দোয়া করা।”-[বুখারী;৯৩৫]
●●আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,
“জুমুআর নামায সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও রিজিক খুঁজতে থাক এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ কর,যাতে তোমরা সফলকাম হও।”-[আল কুরআনঃ সূরা আল জুমুআহ-১০]
(১১) জুমুআহ পরিত্যাগ না করাঃ
●●আবূ হুরাইরা ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযিঃ) হতে বর্ণিত,তাঁরা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে তাঁর কাঠের মিম্বরের উপর দাঁড়ানো অবস্থায় এ কথা বলতে শুনেছেন যে, “লোকেরা যেন জুমুআহ ত্যাগ করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকে;নচেৎ আল্লাহ্ অবশ্যই তাদের অন্তরে মোহর লাগিয়ে দেবেন,তারপর তারা অবশ্যই উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে।”-[মুসলিম; ৮৬৫, নাসায়ী; ১৩৭০, ইবনু মাজাহ; ৭৯৪,১১২৭, আহমাদ; ২১৩৩, ২২৯০, ৩০৮৯, ৫৫৩৫, দারেমী; ১৫৭০]
 
Top