নবুয়ত    এমন    একটি   খোদাপ্রদত্ত   নিয়ামত    যা   চেষ্টা সাধনা  করে অর্জন করা যায়   না।   ইহা আসে   শুধুমাত্র  আল্লাহর    পক্ষ    থেকে।    কোন     মানুষ      তার      ইবাদত বন্দেগী, মোরাকাবা, মোশাহাদা তথা  সাধনার মাধ্যমে নবুয়ত  অর্জন  করতে  পারবে  না।  আল্লাহ  যাকে  ইচ্ছা  তাকে  নবী  মনোনীত   করেই   দুনিয়ায়   প্রেরণ   করেন। সুতরাং      সমস্ত    নবীগণকে    দুনিয়ায়     প্রেরণের    পূর্বেই আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে নবুয়ত প্রদান করেছেন।

যার প্রমাণ আল্লাহ নিজেই বর্ণনা করেছেন-

واذ  اخذ   الله   ميثاق  النبيين  لما  اتيتكم  من    كتاب  و حكمة
অর্থ: আল্লাহ যখন নবীগণের কাছ থেকে অঙ্গীকার গ্রহণ করলেন   যে,   আমি   তোমাদেরকে   কিতাব  ও  হিকমত দান করেছি। (সূরা আল ইমরান- ৮১)

এ আয়াতের ব্যাখ্যা ইতোপূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। এখানে শুধু বলতে চাই, আল্লাহ  তায়ালা   নবীদের কাছ থেকে    যে   অঙ্গীকারনামা    গ্রহণ    করেছিলেন   তা   ছিল তাদেরকে  পৃথিবীতে    প্রেরণের  পূর্বে।  তথাপি  তখনও  আল্লাহ তাদেরকে নবী বলেই সম্বোধন করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন-

الله اعلم حيث يجعل رسالته
অর্থ:  আল্লাহ   এ    বিষয়ে   সুপরিজ্ঞাত  যে  কোথায়  স্বীয় রিসালত রাখতে হবে। (সূরা আনয়াম- ১২৪)

এ  ব্যাপারে  মুফতি  আমজাদ  আলী  রাদিয়াল্লাহু  আনহু  বাহারে শরিয়ত গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন-

نبوت   کسبی نہی-  کہ  آدمی عبادت  وریاضت کی ذريعہ سے حاصل کر سکے -بلکہ محض عطاے الھی ہے- کہ جیسے چاھتاہے اپنے فضل سے دیتا ہے-
اور جو اسے کسبی مانے کہ  آدمی  اپنے  کسب وریاضت سے منصب نبوت تک پہنچ سکتاہے کافر ہے-

অর্থ:-    নবুয়ত  কসবি   বা   অর্জনযোগ্য   নয়   যে,   কোন লোক ইবাদত ও রিয়াজতের মাধ্যমে তা অর্জন করতে  পারবে?  বরং ইহা সম্পূর্ণ  আল্লাহ তায়ালার দান, যাকে ইচ্ছা আল্লাহ স্বীয়  অনুগ্রহে তা প্রদান  করেন। এবং  যে ব্যক্তি ইহাকে অর্জনযোগ্য মনে করবে যে, কোন লোক তার চেষ্টা সাধনা ও রিয়াজতের মাধ্যমে  নবুয়ত অর্জন  করতে     পারবে    সে    কাফির।    (বাহারে     শরিয়ত    ১ম অধ্যায়)

ইমাম       শারানী        اليواقيت       والجواهير       গ্রন্থে      বর্ণনা করেছেন-

ليست     النبوة     مكتسبة    حتى     يتوصل     اليها     بالسك والرياضات   كما    ظنه   جماعة  من  الحمقى-   فالنبوة  اذن  محض فضل    الله تعالى  وقد افتى  المالكية  وغيرهم  بكفر من قال ان النبوة مكتسبة-

অর্থ: নবুয়ত অর্জনযোগ  নয়  যে,  ইহা ইবাদত  বন্দেগী ও চেষ্টা সাধনার মাধ্যমে অর্জিত হবে। যা একদল অজ্ঞ লোক    ধারণা    করে    থাকেন।    বরং     নবুয়ত     শুধুমাত্র  আল্লাহর  দয়া  ও   অনুগ্রহ। এজন্য মালেকী মাযহাবসহ  অন্যান্য উলামায়ে কেরামগণ ফতোয়া প্রদান করেছেন, যে ব্যক্তি বলবে- নবুয়ত অর্জনযোগ্য সে কুফুরি করল। (বাহারে শরিয়ত ১ম অধ্যায় হাশিয়া)

অনুরূপভাবে  আল্লামা ফজলে  রাসূল  বাদায়ুনী  المعتقد المنتقد গ্রন্থে উল্লেখকরেছেন-

النبوة ليست كسبية- قال التورفشتى فى المعتمد اعتقاد حصول النبوة بالكسب كفر-

অর্থ:   নবুয়ত  অর্জনযোগ্য   নয়।   ইমাম   তুরফুস্তী    আল মুতামিদ  গ্রন্থে   বলেছেন    নবুয়ত  অর্জনযোগ্য   আক্বিদা পোষণ     করা   কুফুরি।   (বাহারে   শরিয়ত     ১ম    অধ্যায় হাশিয়া)

সম্মানিত  পাঠকগণ  এবার  হামিদী  সাহেবের  বক্তব্যটি  মনোযোগ সহকারে পাঠ করুন তিনি লিখেছেন-

‘নবুয়তপ্রাপ্তির    পূর্বের  ৪০   বৎসর   পর্যন্ত  যদিও   তিনি  উম্মতের    জন্য   অনুকরণীয়   আদর্শ   ছিলেন    না।   তবে একজন আদর্শ মহামানব   ও নবী হওয়ার জন্য যতটুকু যোগ্যতার     প্রয়োজন    ছিল     এই    সময়ে    তিনি    তাহা   সম্পূর্ণরুপে   অর্জন   করে   নিয়েছিলেন।    তাই    এই   ৪০ বছরের জীবন ছিল তাহার নবুয়তের যোগ্যতা অর্জনের সময়কাল। ’

সুহৃদ পাঠকগণ! এবার আপনারাই বিচার করুন হামিদী সাহেবের    এই    মনগড়া     বক্তব্যের    কারণে     হামিদী   সাহেবের উপরে কি ফতোয়া হতে পারে?

ভিজিট করুন এই ব্লগ সাইটটিও ইসলামী জীবন
 
Top