সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজের ফজিলত।
------------------------

ইমাম মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ (রা.) উম্মুল মু'মিনীন উম্মে হাবীবা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দিনে ও রাতে ১২ রাকাত নামায পড়বে তার জন্য জান্নাতে একখানা ঘর নির্মাণ করা হবে।

[রেফারেন্স: ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ১/৫০২ পৃ:, হা নং ৭২৮, সুনানে ইবনে মাজাহ, হা নং ১১৪১, মুসনাদে আহমদ, ৪৪/৩৫২ পৃ:, হা নং ৭৬৭৬৯, সুনানে নাসাঈ, ৩/২৬৩ পৃ:, হা নং ১৮০৬ এবং আস-সুনানুল কোবরা, ২/১৮৪ পৃ:, হা নং ১৪৭৮, ইমাম তাবরানী, মু'জামুল কাবীর, ২৩/২৩৪ পৃ:, হা নং ৪৪৯, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ২/২০ পৃ:, হা নং ৫৯৭৬, ইমাম মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ১/২২২ পৃ:, হা নং ৮৩৯, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৭/৭৭৭ পৃ:, হা নং ২১৩৬২, তবে এ বিষয়ে হযরত আবু মূসা আশ'আরী (রাঃ) হতেও হাদিস বর্ণিত আছে। (ইমাম হাইসামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, ২/২৩১ পৃ:, হা নং ৩৩৮৮]

(১২ রাকাতের ব্যাখ্যা তিরমিজির বর্ণনায় এভাবে এসেছে)

হযরত উম্মে হাবিবাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দিনে ও রাতে ১২ রাকাত নামাজ পড়বে, তার জন্য জান্নাতে একখানা বালাখানা নির্মাণ করা হবে। যোহরের ফরজ নামাজের পূর্বে ৪ রাকাত, যোহরের ফরজ নামাজের পর ২ রাকাত, মাগরীবের ফরজ নামাজের পর ২ রাকাত, ইশার ফরজ নামাজের পর ২ রাকাত এবং ফজরের ফরজের পূর্বে ২ রাকাত। এ রাকাতের বিবরণ শুধুমাত্র সুনানে তিরমিযীতে উল্লেখ আছে।

[রেফারেন্স: ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান, ২/২৭৪ পৃ:, হা নং ৪১৫, তিনি বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। সুনানে নাসাঈ, ৩/২৬৩ পৃ:, হা নং ১৮০৩, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, ৩/৪৪৩ পৃ:, হা নং ৮৬৬, খতিব তিবরিযি, মিশকাত, হা নং ১১৫৯, ইমাম ইবনে আছির, জামেউল উসূল, হা নং ৪০৬৬, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ৭/৭৭৭ পৃ:, হা নং ২১৩৬৩, ইমাম মুনযিরী, তারগীব ওয়াত তারহীব, ১/২২২ পৃ:, হা নং ৮৩৯]

আমাদের দেশে একশ্রেণীর অসাধু মানুষ আছেন, যারা বলে থাকেন সুন্নাত নামাজ আদায় করার কোন দরকার নেই, শুধুমাত্র ফরজ নামাজ আদায় করলেই চলবে!!

তারা যুক্তি দেখান যে, কর্মব্যস্ত এই জীবনে সুন্নাত নামাজ আদায় করার সময় কই!!

আফসোস! সেই সব মানুষদের জন্য যারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র ১ ঘন্টা আল্লাহর জন্য ব্যয় করতে পারে না।

ফরজ নামাজের মাধ্যমে কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে না। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হলে অবশ্যই ফরজ নামাজের পাশা-পাশি সুন্নাত ও নফল ইবাদত করতে হবে।

সহীহ বুখারী শরীফে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ বলেন, যারা আমার অলিদের সাথে দুশমনি করবে তারা যেন আমাকে কষ্ট দেয়। আমি তাদের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করি। ‌ বান্দার প্রতি আমি যা ফরজ করে দিয়েছি তা দ্বারা আমার নিকটবর্তী হতে পারবেনা, বরং নফল ইবাদত দ্বারাই আমার নিকটবর্তী হতে পারবে অতঃপর আমি তাকে ভালবাসতে থাকি। আর যখন আমি তাকে ভালোবাসি তখন আমি তার কান হয়ে যাই, যা দ্বারা সে শুনে, আমি তার চোখ হয়ে যাই, যা দ্বারা সে দেখে, আমি তার হাত হয়ে যাই, যা দ্বারা সে ধরে, আমি তার পা হয়ে যাই, যা দ্বারা সে চলে। আর যখনই সে আমার কাছে কিছু চায় তখন আমি তাঁকে তা দান করি।

[রেফারেন্স: সহীহ বুখারী, ২য় জি: ৯৬৩ পৃ:, হা নং ৬৫০২, সহীহ ইবনে হিব্বান শরীফ, ১ম জি: ২১০ পৃ:, হা নং ৩৪৭, ইমাম বায়হাক্বী, আসমা ওয়াস সিফাত, হা নং ১০২৯, ইমাম বাগভী, শরহে সুন্নাহ, হা নং ১২৪৭, সুনানে ইবনে মাজাহ, ২৯৬ পৃ:, হা নং ৩৯৮৯, আংশিক, মুজামে ইবনে আসাকির, হা নং ১৪৩৮, ইমাম বায়হাক্বী, সুনানে কুবরা, হা নং ৬৩৯৫, মেসকাত শরীফ, হা নং ২২৬৬, তাফছিরে রুহুল বয়ান, ২য় খন্ড, ৪৪৯ পৃ:, তাফছিরে রুহুল মায়ানী, ১১ তম খন্ড, ১৯২ পৃ:]

যারা আপনাকে সুন্নত ও নফল ইবাদত করতে অনুৎসাহিত করে, তারা মূলত আপনাকে আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরে যেতে উৎসাহিত করে।

✍🏻 M.S.R
 
Top