উত্তরঃ পুল এবং সিরাত একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। পুল হলো ফার্সী শব্দ এবং সিরাত হলো আরবী শব্দ। পুল ব্যবহারিক অর্থে- নদী, খাল বা কোন অগম্য জায়গার উপর দিয়ে  পার হয়ে যাওয়ার সিড়ি। আর সিরাত অর্থ-রাস্তা রাজপথ- ইত্যাদি। ফার্সী ও আরবী উভয় শব্দ দু’টি যুক্ত  হয়ে বাংলা ভাষায় পুল্সিরাত একটি যুক্তশব্দে পরিনত হয়েছে। পুল্সিরাত বলতে দুনিয়ার কোন পুল বা রাস্তাকে বুঝায়না। পরিভাষায় পরকালে হিসাব-নিকাশ   ও মিযানে ওজনের পর সর্বশেষ অগ্নিপরীক্ষা হিসাবে জাহান্নামের উপর স্থাপিত দীর্ঘ  পুল্কেই  পুল্সিরাত বলা হয়। পুল্সিরাত অর্থ, পুলের উপর দিয়ে চলার রাস্তা।

এই পুল্ পার হয়ে জাহান্নাম অতিক্রম করে সবাইকে ওপারে   অবস্থিত জান্নাতে যেতে হবে। কাফির, মুনাফিক ও কোন কোন গুনাহ্গারকে পুলসিরাতের কড়া ও শিকল টেনে নীচে নামিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। এই পুল্সিরাত ত্রিশ হাজার  বছরের রাস্তার সমান দীর্ঘ, চুলের মত চিকন ও সরু এবং তলোয়ারের চেয়েও তীক্ষ্ম।

(১) এ প্রসঙ্গে হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেন-
بلغنی۔ ان الجسر ادق من الشعر واحد من السیف۔ وفی روایۃ ادق من الشعر۔ رواھا مسلم۔ وفی  روایۃ الفضیل بن عیاض۔ بلغنا۔ ان الصراط مسیرۃ خمس عشرۃ الف سنۃ۔ خمسۃ  الاٰف صعود۔ وخمسۃ الاٰف ھبوط۔ وخمسۃ الاٰف مستوی ۔ مواھب صف۶۶۷
অর্থাৎঃ “আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) বলেন- আমার নিকট এমর্মে হাদীস পৌঁছেছে যে, পুল্সিরাত হবে  চুলের চেয়েও সরু এবং তলোয়ারের চেয়েও ধারালো”। অন্য বর্ণনায় এসেছে- ادق من الشعر অর্থাৎঃ চুলের চেয়েও চিকন। (মুসলিম শরীফ)।

ফোযায়েল ইবনে আয়ায (রহঃ) বলেন- পুলসিরাতের দৈর্ঘ হবে পনের হাজার বছরের রাস্তা। (যাতায়াত সহ ত্রিশ হাজার)। উপরের দিকে পাঁচ  হাজার বছরের রাস্তা, নামার দিকে পাঁচ  হাজার বছরের রাস্তা এবং মধ্যখানের সিঁড়ি  পাঁচ হাজার  বছরের রাস্তা। (মাওয়াহিব ৬৬৭ পৃষ্ঠা)।

ব্যাখ্যাঃ পুলসিরাতের প্রতিশব্দ আরবীতে جسر এবং قنطرۃ ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। جسر -এর বহু বচন جسور এবং - قنطرۃ এর বহুবচন قناطیر এই দীর্ঘ পথটি জাহান্নামের উপরে স্থাপিত। সুতরাং এর উপর দিয়ে প্রত্যেককেই পার হতে হবে। আম্বিয়ায়ে কেরাম জায়গায়  জায়গায় দাঁড়ানো থাকবেন- আর রাব্বি সাল্লিম, রাব্বি সাল্লিম- বলে নিজ নিজ উম্মতের সহীহ্ সালামতে পার হয়ে যাওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করতে থাকবেন।

আমাদের প্রিয়নবী (ﷺ) কোন কোন উম্মতকে পতিত হতে দেখে টেনে তুলে নিবেন এবং পুল্সিরাত পার হতে সাহায্য করবেন। মুমিন বান্দাগণ জাহান্নামের ভয়াবহ অবস্থা অবলোকন করতে করতে অতিক্রম করতে  থাকবে- আর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে থাকবে।

এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে।  নিম্মে কিছু আয়াত ও কিছু হাদীস পেশ করা হলো।

(২) আল্লাহ্পাক এরশাদ করেন,
وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا كَانَ عَلَى رَبِّكَ حَتْمًا مَّقْضِيًّا
অর্থাৎঃ “তোমাদের মধ্যে এমন কেউ   নেই যে, জাহান্নাম অতিক্রম করবে  না। হে প্রিয় হাবীব! এটা আপনার পালনকর্তার অনিবার্য ফায়সালা”।  (সূরা মরিয়ম ৭১  আয়াত)। ইবনে আব্বাসের মতে- এই আয়াত কাফেরদের শানে নাযিল হয়েছে।

উক্ত আয়াতের বিভিন্ন ব্যাখ্যাঃ

(ক) মুমিন ও কাফের প্রত্যেককেই জাহান্নাম অতিক্রম করতে হবে। এই অতিক্রমের অর্থ কি? হযরত ইবনে আব্বাস, হযরত ইবনে মাসউদ ও কা’ব আহ্বার (রাঃ) وارد (পৌঁছানো) শব্দের অর্থ করেছেন مرور বা অতিক্রম করা। কেননা জাহান্নামের  উপর স্থাপিত পুল্সিরাত অতিক্রম করে  প্রত্যেককে জান্নাতে যেতে হবে। এ ব্যাখ্যার  প্রমাণ স্বরূপ   তাঁরা নবী করীম  (ﷺ)  -এর একখানা হাদীস পেশ করেছেন। যথাঃ
قال رسول اللّٰہ ﷺ تقول النار للمؤمن یوم القیامۃ۔ جز یا مؤمن۔ فقد اطفأ نورک لھبی۔
অর্থাৎঃ রাসুলকরীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- “কিয়ামতের দিন দোযখ মোমেনকে লক্ষ্য  করে বলবে-  হে মোমিন! তুমি তাড়াতাড়ি পুল্সিরাত অতিক্রম করে চলে যাও। কেননা, তোমার ঈমান ও আমলের নূর আমার জ্বলন্ত লেলিহান শিখাকে নির্বাপিত করে দিচ্ছে”। (আবু বকর নাজজাদ কর্তৃক ইয়ালা ইবনে মুনাব্বিহ সূত্রে বর্ণিত হাদীস)। বুঝাগেল- জাহান্নামে পৌঁছার অর্থ  প্রবেশ নয়- বরং অতিক্রম করা।

ব্যাখ্যা (খ): হযরত আবু সায়ীদ খুদরী, হযরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ্ প্রমূখ সাহাবায়ে  কেরামের মতে আয়াতে উল্লেখিত শব্দের অর্থ হলো  কোন কোন মুমিনের জাহান্নামে প্রবেশ করা। হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রাঃ) বলেন,
فیدخلھا العصاۃ بجرائمھم۔ والاولیأ لشفاعتھم
অর্থাৎঃ গুনাহ্গাররা  জাহান্নামে  প্রবেশ করবে অপরাধের কারণে ও শাস্তিভোগের  উদ্দেশ্যে। আর আল্লাহর বন্ধুরা প্রবেশ করবেন  তাদের জন্য  শাফাআতের উদ্দেশ্যে। (যেমন জেলখানায় কয়েদীরা প্রবেশ করে শাস্তি ভোগ করার জন্য, আর অফিসাররা প্রবেশ করে তাদের খোঁজ খবর নেয়ার  উদ্দেশ্যে)। বুঝা গেল- মুমিনদের মধ্যে শুধু শাফাআতকারীরাই জাহান্নামে প্রবেশ করবেন। অন্য  মুমিনগণ প্রবেশ করবে না।

ব্যাখ্যা (গ): হযরত জাবের (রাঃ) অন্য বর্ণনায় বলেন- ورود বা পৌঁছার অর্থ সকলের প্রবেশ করা। একথার প্রমান স্বরূপ তিনি নিম্মোক্ত হাদীস পেশ করেন-
عن جابر بن عبد  اللّٰہ قال: سمعت رسول اللّٰہ  ﷺ یقول: الورود الدخول۔ لا یبقی بر ولا فاجر الالیدخلھا۔ فتکون علی المؤمنین بردا وسلاما۔کما کانت علی ابراھیم۔ (ثم ننجی الذین اتقوا ونذر الظالمین فیھا جثیا)۔
অর্থাৎঃ হযরত জাবের (রাঃ) বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার  জবানে শুনেছি যে,আয়াতে উল্লেখিত ورود বা পৌঁছার অর্থ হচ্ছে-  দোযখে  সকলের প্রবেশ করা। এমন কোন নেক্কার অথবা বদকার নেই যে, তারা জাহান্নামে  প্রবেশ করবেনা। তবে মোমেনদের জন্য জাহান্নামের আগুন হবে শীতল এবং শান্তিদায়ক- যেমন হয়েছিল হযরত ইব্রাহীম (আঃ)-এর উপর  নমরূদের  অগ্নিকুণ্ডের আগুন।

এরপর তিনি  প্রমাণস্বরূপ ছুরা মরিয়ম  থেকে তিলাওয়াত  করলেন-  (“অতঃপর  আমি  পরহেজগারদেরকে উদ্ধার করবো এবং যালেমদেরকে নতজানু  অবস্থায় জাহান্নামে ছেড়ে দেবো”)। (সূরা মরিয়ম ৭২ আয়াত ১৬ পারা)।

এতে বুঝা গেল- সবাই জাহান্নামে প্রবেশ করবে। তবে মুমিনরা সহি সালামতে বের হয়ে আসবে।

ব্যাখ্যা (ঘ): অন্য একদল পণ্ডিত বলেন- “প্রত্যেকেই জাহান্নামে পৌঁছবে” এর অর্থ হলো- সকলে জাহান্নাম “প্রত্যক্ষ” করবে।  তাঁদের মতে কবরে প্রত্যেককে জাহান্নাম দেখানো হবে। যারা কবরের প্রশ্নের সঠিক জওয়াব দিবে- তারা জাহান্নাম থেকে মুক্ত হবে। আর যাদের ভাগ্যে  জাহান্নাম লিখা আছে- তারা প্রথমে জাহান্নামে  পৌঁছবে। তারপর শাফাআতের মাধ্যমে অথবা আল্লাহর দয়ায় মুক্তি পাবে। এ দলের লোকেরা প্রমান স্বরূপ নিম্মোক্ত হাদীস পেশ করেন-
عن عبد اللّٰہ بن عمر : ان احدکم  اذا مات۔ عرض علیہ مقعدہ بالغداۃ والعشی۔
অর্থাৎঃ হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর  (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, “তোমাদের কেউ মৃত্যুবরন করলে  তাকে সকাল সন্ধ্যায় তার নির্ধারিত স্থান দেখানো হবে”। (তাযকিরাহ্ ৩৬৩ পৃষ্ঠা)।

এখানে শুধু জান্নাত ও  জাহান্নাম প্রদর্শনের উল্লেখ আছে- প্রবেশের নয়। এটি দূর্র্বল মতামত।

ব্যাখ্যা  (ঙ): কোন কোন তাফসীর বিশারদ বলেন- আয়াতে উল্লেখিত واردھا শব্দটির অর্থ- উঁকি মেরে জাহান্নামের অবস্থা দেখা। এ অর্থে আয়াতের  মর্ম হলো- “হাশরবাসীগণ   হাশরের ময়দান থেকেই অনতিদূরে জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করবে এবং উঁকি মেরে দেখবে”। দোযখ অতিক্রম করা  বা দোযখে প্রবেশ করার নাম ورود নয়।

যেমন আল্লাহ্পাক সূরা  কাসাস ২৩ নম্বর আয়াতে এরশাদ করেছেন-
وَلَمَّا وَرَدَ مَاء مَدْيَنَ
অর্থাৎঃ “হযরত মূছা (আঃ) যখন মাদ্ইয়ান শহরের একটি কুপের নিকটে গিয়ে উঁকি মেরে দেখলেন- কিছু লোক আপন  ছাগপালকে পানি পান করাতে রত রয়েছে”।

তাঁরা আর একটি প্রমান পেশ করে বলছেন- অর্থ যে প্রবেশ নয়-  তার প্রমাণ হলো-   রাসুলেপাক (ﷺ) এরশাদ করেছেন- “বদর যুদ্ধে এবং হোদায়বিয়ার সন্ধিতে যারা শরীক ছিল- তাঁদের কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করবে না”।

একথা শুনে হযরত হাফ্সা (রাঃ) বল্লেন- আল্লাহ্পাক তো বলেছেন-
وَإِن مِّنكُمْ إِلَّا وَارِدُهَا
অর্থাৎঃ (তিনির মতে) “তোমাদের  প্রত্যেককেই জাহান্নামে প্রবেশ করতে হবে”। তিনি বলেন- আল্লাহর কালামের কি বিপরীত হয়ে যাচ্ছে না আপনার বাণী? হুযুর (ﷺ) বল্লেন- না- ورود  অর্থ প্রবেশ নয়, প্রবেশের পূর্বেই তাঁদেরকে নাজাত দিয়ে দিবেন।

বুঝা  গেল- ورود শব্দের এক রকম অর্থ বুঝেছিলেন হযরত হাফ্সা (রাঃ)। কিন্তু হুযুর (ﷺ) ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিলেন-  ورود শব্দের আরেক অর্থ আছে। তাহলো নিকট থেকে উঁকি মেরে দেখা”। আহ্লে বদর ও আহ্লে হোদায়বিয়াসহ সবাই হাশর ময়দান  থেকে খুব কাছেই জাহান্নাম দেখবেন। এটাকেই বলা হয়েছে।  তাঁরা জাহান্নামের ভিতরে প্রবেশ করবেন না।

ব্যাখ্যাঃ (চ) হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)   অন্য রেওয়ায়াতে বলেন- ورود শব্দের মূল  অর্থ হলো “অতিক্রম করা অথবা প্রবেশ করা”। তবে জাহান্নামে উপস্থিতি ও প্রবেশের কথা অত্র আয়াতে  কেবল কাফেরদের বেলায়ই বলা হয়েছে। অত্র আয়াতের  পূর্বাপর আয়াত সমূহ পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, এই আয়াতের শানে নুযুল হচ্ছে কাফেরদের পরিনতি।  কাফেরদের প্রসঙ্গেই অত্র আয়াত নাযিল হয়েছে। সুতরাং ورود শব্দের অর্থ হবে “হে কাফেরগণ, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যে, জাহান্নামে প্রবেশ করবে না”। (সুরা মরিয়ম-৭১)। মোদ্দাকথা হলো-  আয়াতের মর্মাথ হলো- কাফেরগণ জাহান্নামে পড়ে যাবে এবং মুমিনরা অতিক্রম করে চলে যাবে।

(৩) নবী  করীম (ﷺ) পুল্সিরাতে দাঁড়িয়ে উম্মতের তদারকি করবেন

এ প্রসঙ্গে সহীহ্ মুসলিম শরীফ ও তিরমিযি শরীফের দুখানা হাদীস প্রতিধানযোগ্য।

(ক) মুসলিম শরীফ,
قال رسول اللّٰہ ﷺ: ونبیکم قائم علی الصراط یقول: رب سلم سلم۔
অর্থঃ নবী করীম  (ﷺ) সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ্য  করে  এরশাদ করেছেন-  “তোমাদের প্রিয় নবী (ﷺ) পুল্সিরাতে দাঁড়িয়ে “রাব্বি সাল্লিম সাল্লিম” বলতে  থাকবেন”- অর্থাৎ-“হে রব! আমার উম্মতকে সহীহ্ সালামতে পার করো”।

(খ) তিরমিযি শরীফ,
عن المغیرۃ   بن شعبۃ قال : قال  رسول اللّٰہ ﷺ ’’ شعار المؤمنین علی الصراط رب سلم سلم
অর্থঃ হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা (রাঃ) বলেন- নবী করীম (ﷺ)  এরশাদ করেছেন- “পুলসিরাতের উপর মোমিনদের প্রতীকচিহ্ন  হবে- “আমি তাদের জন্য বলবো- রাব্বি সাল্লিম সাল্লিম”।

(৪) কোন কোন মুমিন চোখের পলকে পুলসিরাত পার হয়ে যাবে

হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত,
عن  ابی ھریرۃ قال  : قال لی رسول  اللّٰہ ﷺ: علم الناس سنتی وان کرھوا ذلک وان احببت ان لا توقف علی الصراط طرفۃ عین حتی۔ تدخل الجنۃ۔ فلا تحدث فی دین اللّٰہ برأیک ۔ (ذکر الوائلی ابو نصر فی کتاب الابانۃ)۔
অর্থঃ হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ)  বলেন- আমাকে রাসুলকরিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- “তুমি আমার সুন্নাত বা তরিকা এবং নিয়ম কানুন লোকদেরকে শিক্ষা দাও- যদিও তারা তা ভাল মনে না করুক। আর তুমি যদি চোখের পলকের পূর্বে পুলসিরাত পার হয়ে জান্নাতে  যেতে চাও- তাহলে তোমার নিজের মনগড়া কোন জিনিস আল্লাহর দ্বীনের মধ্যে সংযোজন করোনা। ” (ওয়ায়েলী আবু নছরকৃত- কিতাবুল ইবানা সূত্রে আত্ তাযকিরাহ্ ৩৬৬ পৃষ্ঠা)।

(৬) নবী করীম (ﷺ)  কে হাশরের দিনে পুল্সিরাত সহ তিন জায়গায় পাওয়া যাবে
عن انس بن  مالک ص۔  قال: سألت رسول اللّہ ﷺ ان یشفع لی یوم القیامۃ۔ قال: انا فاعل ان شاء اللّٰہ۔ قال : فاین اطلبک ؟ قال: اول ما تطلبنی  علی الصراط۔ قلت: فان لم القک؟ قال: فاطلبنی عند المیزان۔  قلت: فان لم القک عند المیزان ؟ قال: فاطلبنی عند الحوض۔ فانی لا اخطی ھذہ الثلاثۃ مواطن۔ رواہ الترمذی ۔

وقد تقدم عن عائشۃ ص انہ علیہ السلام  قال: اما ثلاثۃ مواطن۔ فلا یذکر احد احدا عند المیزان۔ وعند تطایر الصحف۔ وعند الصراط ۔
অর্থঃ হযরত আনাছ ইবনে মালেক (রাঃ) বর্ণনা করেন- আমি রাসুলকরিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে আমার জন্য কিয়ামতের  দিনে সুপারিশ করার আরয  করলাম। হুযুর (ﷺ) ওয়াদা করলেন- ইন্শা আল্লাহ্- আমি  তা করবো। আনাছ  (রাঃ) বললেন- তাহলে কোথায় আপনাকে তালাশ করবো? হুযুর (ﷺ) বললেন- প্রথমেই তালাশ করবে পুলসিরাতের উপরে। আমি  বললাম- যদি সেখানে আপনাকে না পাই? হুযুর  (ﷺ) বললেন-  তাহলে আমাকে তালাশ করবে মিযানের কাছে। আমি পুনরায় আরয করলাম-  যদি সেখানেও না পাই?   হুযুর  (ﷺ) বললেন-  তাহলে  হাউযে কাউছারের কাছে। কেননা, আমি এই তিন জায়গায় থাকতে ভুলবনা”। (তিরমিযি)।

ইতিপূর্বে হিসাব নিকাশ অধ্যায়ে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে  বর্ণিত   হয়েছে  যে, নবী করীম  (ﷺ) এরশাদ করেছেন- তিন জায়গায় কেউ কারো খোঁজ নিবে  না (১) মিযানে (২) আমল নামা উড়ন্ত  অবস্থায় হাতে আসার সময়  (৩)  পুলসিরাতের নিকটে। ” এখন প্রশ্ন হলো- নবী করিম (ﷺ) উক্ত তিন জায়গায় তো সুপারিশ করবেন। তাহলে এর উত্তর কি?

উত্তর হলো- নবীজী ব্যতিত অন্যেরা তিন  জায়গায় কেউ কারো খোঁজ নিবেনা।

ব্যাখ্যাঃ  রাসুলপাক (ﷺ) -এর  একনিষ্ট খাদেম হযরত আনাছ (রাঃ) রাসুলে পাকের সুপারিশ- তথা সাহায্যের ভিখারী- আর আমাদের কেউ কেউ হুযুরের শাফাআতকেই অস্বীকার করছে। তারা রেডিও টিভিতে আযানের  দোয়া হতে “ওর্য়াযুক্না শাফাআতাহু ইয়াওমাল কিয়ামাহ্”- শব্দটি বাদ দিয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে। তারা অজুহাত হিসাবে  বলে- এই বাক্যটি নাকি সিহাহ্ সিত্তায় নেই। এই জ্ঞানপাপীরা তাবরানী শরীফ ও ফতোয়াগ্রন্থ সগীরী খুলে দেখল না যে, ইমাম তাবরানী ও ইবরাহীম হলবী পুর্ন দোয়া বা মুনাজাতটি এভাবে উল্লেখ করেছেন এবং  নবীজীর হাদীস বলে উল্লেখ করেছেন-
قال رسو ل اللّٰہ ﷺ: من سأل اللّٰہ لی الوسیلۃ۔ وقال:  ’’اللھم رب ھذہ الدعوۃ التامۃ۔ والصلاۃ القائمۃ۔ آت محمد الوسیلۃ والفضیلۃ والدرجۃ الرفیعۃ۔وابعثہ مقاما محمودان الذی وعدتہ۔ وارزقنا شفاعتہ یوم القیامۃ۔‘‘ حلت لہ شفاعتی۔

অর্থঃ ইমাম ইবরাহীম হলবী তাঁর ফতোয়াগ্রন্থ সগীরী আযান অধ্যায়ে নবীজীর  হাদিস এভাবে লিখেছেন- হুযুর  (ﷺ)  এরশাদ করেছেন- “যেব্যক্তি আযানের পর আমার জন্য আল্লাহর দরবারে এই বলে প্রার্থনা করে যে, “হে আল্লাহ্! এই পরিপূর্ণ আহ্বানের (আযান) মালিক তুমি, (আমরা প্রচারক) এবং প্রতিষ্ঠিত নামাযেরও মালিক তুমিই। প্রিয়  মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লামকে তুমি দান করো ওয়াছিলা (শাফাআত), মর্যাদা এবং উচ্চ আসন। তাঁকে তুমি প্রেরণ করো “মাক্কামে মাহমুদে”- যার প্রতিশ্রুতি তুমি দিয়েছো তাঁকে। আর আমাদেরকে নসীব করো কিয়ামতের দিনে তাঁর  শাফাআত। নবী  করীম (ﷺ) বলেন- যারা এভাবে শুধু আমার জন্য দোয়া করবে-  তাদের জন্য আমার শাফাআত বৈধ হয়ে যাবে”। (সগিরী)

তাবরানী শরীফে “ওয়ারযুক্না শাফাআতাহু” শব্দের  পরিবর্তে  واجعل لنا  شفاعتہ এসেছে- অর্থাৎ : “আমাদের জন্য হুযুরের শাফাআত নির্ধারিত করো”।

বিঃদ্রঃ বুঝা গেল-  এক শ্রেণীর নিকৃষ্ট  লোকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে কিতাব গোপন করে এবং রেডিও টিভি কর্তৃপক্ষকে ভুল তথ্য সরবরাহ করে। তাদের লবিং খুব শক্ত। পাকিস্তান ও লন্ডন- এর টিভি চ্যানেলে তাবরাণী ও সগিরীতে বর্ণিত পূর্ণ দোয়া প্রচারিত হয়। আহ্লে  সুন্নাতের পক্ষ হতে প্রমানসহ কিতাবের  ফটো কপি এবং স্মারক লিপি  সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্ত ওহাবী তোষনকারী দলীয় সরকার আমাদের কথায় কর্ণপাত   করছে না। এর জন্য প্রয়োজন  সম্মিলিত সুন্নী আন্দোলন ও রাজপথের মিছিল।

(৭) আমল অনুযায়ীই পুলসিরাত অতিক্রমের  গতি হবে
روی الطبرانی وابن ابی الدنیا عن عبد اللّٰہ بن مسعود ص انہ قال: فیعطیھم نورھم علی قدر اعمالھم۔  فمنھم من یعطی نورہ مثل الجبل العظیم یسعی بین ایدیھم۔ (الحدیث) وفیہ: فیمرون علی قدر نورھم۔ منھم من یمر کطرفۃ عین، ومنھم من یمر کالبرق، ومنھم من یمر کالسحاب، ومنھم من یمر کانقضاض الکوکب، ومنھم من یمر  کالریح۔ ومنھم من یمر کشد الفرس، ومنھم من یمر کشد الرجل۔ مواھب صفح ۶۶۶

অর্থঃ হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে এসেছে- “মুমিনদের আমল অনুযায়ীই তাদের জন্য নূর প্রদান করা হবে (কেননা পুলসিরাতে কোন আলো থাকবেনা)। কাউকে নূর বা আলো দেয়া হবে বিরাট পাহাড় সমান। ঐ নূর তার সামনে আলো বিস্তার করে চলতে থাকবে”।

ঐ  হাদীসেই  বর্ণিত হয়েছে যে, “জান্নাতীরা  পুলসিরাতের উপর তাদের আমলের পরিমান   অনুযায়ীই গতিসম্পন্ন হয়ে অতিক্রম করবে। তাদের কেউ পুলসিরাত অতিক্রম করবে বিদ্যুতের গতিতে, কেউ অতিক্রম করবে চোখের পলকে, কেউ অতিক্রম করবে  মেঘমালার গতিতে, কেউ অতিক্রম করবে তারকার গতিতে, কেউ অতিক্রম করবে বায়ুর গতিতে, কেউ অতিক্রম করবে ঘোড়ার গতিতে, কেউ অতিক্রম করবে উটে হাঁটার গতিতে”। (তাবরানী ও ইবনু আবিদ দুনিয়া সুত্রে মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া পৃঃ ৬৬৬)। (পূর্বেও প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা হয়েছে- জলিল)।

(৮) পুল্সিরাত অতিক্রমকালে যাদের কষ্ট হবে- তারা নবীজীর সাহায্য প্রার্থনা করবে

এ প্রসঙ্গে আল্লামা  কুরতুবী তাযকিরাহ্ গ্রন্থে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন-  যা ইবনে জাওযীর সূত্রে আল্লামা কাস্তুলানী তার  মাওয়াহিব গ্রন্থে  উল্লেখ করেছেন। হাদীসের মর্ম হলো-

“পুল্সিরাত অতিক্রমকালে অনেক গুনাহগারই পদস্খলন হয়ে জাহান্নামে পতিত হবে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ হবে  মেয়েলোক।  এরপর পুলসিরাতের দু দিক (ডানবাম) দিয়ে লোকেরা অতিক্রম করবে। নেক্কার লোকদেরকে  ফিরিস্তারা  ডেকে বলবে “তোমরা পুলসিরাত অতিক্রম করে চলে যাও- আর গুনাহগার ও যালেমরা থেকে যাও- আজকের এই মুহুর্তটি কতইনা ভয়ঙ্কর! আজকের উত্তাপ কতইনা অসহনীয়! দুনিয়াতে যারা ছিল তুলনামূলকভাবে দূর্বল ও হীন- আজ তারাই অগ্রগামী হবে। আর যারা ছিল শক্তিমান ও কর্তৃত্ববান- তারা আজ পিছনে পড়ে থাকবে”।

অতঃপর এই ঘোষনার পর সবাইকে পুলসিরাত  অতিক্রমের জন্য আহবান করা হবে। যেমনঃ
ثم یؤذن لجمیعھم بعد ذلک فی الجواز علی الصراط علی قدر اعمالھم۔  فاذا عصف الصراط  بامۃ محمد ﷺ۔  نادوا وامحمداہ۔ فباذرالنبی ﷺ من  شدۃ اشفاقہ  علیھم۔ وجبریل آخذ بحجرتہ۔ فینادی ﷺ رافعا صوتہ۔ رب امتی۔ لا اسألک الیوم نفسی۔ ولا فاطمۃ ابنتی۔ والملائکۃ قیام عن یمین الصراط و یسارہ ۔ ینادون۔ رب سلم۔ وقد  عظمت الاھوال واشتدت الاوجال۔ والعصاۃ یتساقطون عن الیمین والشمال، والزبانیۃ یتلقونھم بالسلاسل  والاغلال۔ وینادونھم ۔اما نھیتم عن کسب الاوزار؟اما انذرتم کل الانذار؟ اما جائکم النبی المختار؟ (ذکرہ ابن الجوزی فی فی کتابہ روضۃ المشتاق)

অর্থাৎ : উক্ত ঘোষনার পর হাশরবাসী সবাইকে যার যার আমল  পরিমানে পুল্সিরাত অতিক্রমের জন্য আহ্বান করা হবে। ঐসময় উম্মতে মোহাম্মদীর মধ্যে যাদের পুল্সিরাত অতিক্রম করা কঠিন হয়ে পড়বে- তারা “ইয়া মোহাম্মাদাহ্, ইয়া  মোহাম্মাদাহ্ “বলে নবীজীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে থাকবে। তখন নবীজী (ﷺ) তড়িৎ গতিতে তাদের প্রতি দয়াবান হয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করবেন- “হে আমার পালনকর্তা, “আমার উম্মত- আমার উম্মত। ”আমি আমার নিজের জন্য তোমার কাছে কিছু চাই না। আমার মেয়ে ফাতেমার জন্যও কিছু চাই না”।

ফিরিস্তারা পুলসিরাতের ডানেবামে দাঁড়ানো অবস্থায় বলতে থাকবে- হে রব, সহি সালামতে পার করাও। ঐ সময়টি  হবে ভয়ঙ্কর  ও ভয়াবহ পরিবেশের। গুনাহ্গাররা পুলসিরাতের ডানে বামে দোযখে পড়তে থাকবে। জাহান্নামের ফিরিস্তারা শিকল ও কড়া দিয়ে টেনে টেনে তাদেরকে গ্রহণ করবে- আর বলবে-  “তোমাদের কি গুনাহ্ করতে নিষেধ  করা হয়নি? তোমাদের কি পূর্ণভাবে সতর্ক করা হয়নি? তোমাদের নিকট কি কর্তৃত্ববান নবীর আগমন হয়নি”?  (ইবনে জাওযী তাঁর “রাওযাতুল মুস্তাক” গ্রন্থে এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন আল্লামা কুরতুবীর তাযকিরাহ্ অবলম্বনে। )

বিঃ দ্রঃ অত্র বর্ণনায় প্রমানিত হলো- নবীজীর কাছে তারা সাহায্য চাইবে। তাবলীগ জামাতের এক আমীর হাসান আলী তার “বুলগাতুল হয়রান” কিতাবে লিখেছে “আমি  স্বপ্নে   দেখলাম- নবীজী পুলসিরাত অতিক্রমকালে দোযখে পড়ে  যাচ্ছেন। আমি তখন অগ্রসর হয়ে হাত  ধরে হুযুরকে উপরে তুললাম”। (বুলগাতুল হয়রান- হাসান আলী গুজরাটি- তাবলীগ জামাআতের প্রথম সারির আমির) নাউযুবিল্লাহ।

খলীল আহমদ আম্বেটী  দেওবন্দী তার বারাহীনে কাতেয়া গ্রন্থের  ২৬ পৃষ্ঠায় লিখেছে- “নবীজী নাকি স্বপ্নে তার সাথে  উর্দূতে কথা বলেছেন এবং এও বলেছেন যে- আমি আরববাসী  হয়েও  দেওবন্দ উলামাদের সাথে মিলামেশার কারণে তাদের থেকে উর্দূ শিখে ফেলেছি। ” (বারাহীনে কাতেয়া)। এই হলো তাবলীগী ও দেওবন্দীদের ফযিলতের ওয়াজ। অত্র হাদীসে বলা হয়েছে-  ‘নবীয়ে মোখতার’ বা সক্ষম। তারা বলছে-  নবীয়ে  মোদ্তার বা অক্ষম।  নাউযুবিল্লাহ্।

(৯) সাহাবায়ে কেরাম এবং আশেকে রাসুলগণের জন্য জিবরাঈল আপন নূরের পাখা পুলসিরাতে  বিছিয়ে দিবেন

এ প্রসঙ্গে আল্লামা কাস্তুলানী (রহঃ) তার “মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া” গ্রন্থের মি’রাজ অধ্যায়ে জিবরাঈলের একটি ঘটনা এভাবে উল্লেখ করেছেন-“সিদ্রাতুল মোন্তাহায় পৌঁছে যখন জিবরাঈলের গতি শেষ হয়ে গেল এবং নবীজী রফরফে আরোহন করলেন-  তখন হযরত জিবরাঈল (আঃ) নবীকরীম (ﷺ)-এর মাধ্যমে আল্লাহর  দরবারে একটি  আরজি পেশ করেছিলেন- হাশরের দিনে সরু পুলসিরাতের উপর তাঁর ছয়শত নূরের পাখা বিছিয়ে দিয়ে  নবীজীর উম্মতকে পার হবে সহযোগীতা করার জন্য। তিনি যেন আল্লাহর নিকট হতে অনুমতি নিয়ে আসেন। আল্লাহর দরবারে পৌঁছে আল্লাহর সাথে আলাপ করতে গিয়ে জিবরাঈলের আবেদনের কথা তিনি ভুলে যান। তখন আল্লাহ্পাক  নবীজীকে ঐ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন-  “জিবরাঈলের আবেদন মঞ্জুর করা হলো- তবে সবার জন্য নয়- বরং আপনার সাহাবী ও আহ্লে মহব্বতের জন্য  তা মঞ্জুর করা হলো”। আল্লাহ্পাক এভাবে বলেছিলেন, ھذا لصحبک ولاھل محبتک۔
অর্থাৎ : জিবরাঈলের আবেদন শুধু আপনার সাহাবী এবং আশেকগণের জন্য মঞ্জুর করা হলো। (বিস্তারিত দেখুন- নূরনবী মি’রাজ অধ্যায়- জলিল)।

(১০) হযরত ফাতেমা (রাঃ) অসংখ্য নারীবেষ্টিত হয়ে পুলসিরাত অতিক্রম করবেন

এ প্রসঙ্গে  ইবনে  হাজর মক্কী  (রহঃ) রচিত “আস্-সাওয়ায়িকুল মুহ্রিক্বা” আরবী গ্রন্থে উল্লেখ আছে- ময়দানে হাশরে যখন হযরত ফাতেমা (রাঃ) উপস্থিত হবেন- তখন ফিরিস্তারা হাশরবাসীদেরকে দৃষ্টি নীচু করার জন্য আহবান জানিয়ে বলবেঃ
یااھل المحشر غضوا ابصارکم۔ فان فاطمۃ بنت رسول اللّٰہ تمر علی الصراط فی النساء۔
“হে  হাশরবাসীগণ! তোমাদের দৃষ্টি অবনত করো কেননা,  ফাতেমা    বিন্তে  রাসুলুল্লাহ্ (ﷺ) এখন নারীবেষ্টিত হয়ে পুল্সিরাত অতিক্রম করবেন”।

হে আল্লাহ্! যারা হযরত ফাতেমা (রাঃ) -এর আদর্শ মত চলবে- সেসব নারীদেরকে  তাঁর সঙ্গীনীদের অন্তর্ভূক্ত করো।

উপসংহারঃ  আমাদের   প্রিয়  নবীজী  (ﷺ) হাশর, মিযান ও পুলসিরাতে বিপদের বন্ধু, দয়ার সিন্ধু। আমরা তাঁর দ্বারা উপকৃত হবো। তিনি উপকার করবেন। তাঁর মেহেরবাণী প্রাপ্তির জন্য তাঁর সুন্নাত মোতাবেক জীবন গঠন করা এবং তাঁর  প্রতি আন্তরিক  ভালবাসা পোষন করাই  ঈমানদারের লক্ষন। তাঁর প্রশংসার নামই ঈমান এবং সমালোচনার নামই কুফর। আল্লাহ্ আমাদেরকে সুস্থ বিবেক দান করুন।



------

 
Top