(১) উমাইয়া খলিফা  হযরত ওমর ইবনে আবদুল আযিয (রহঃ) তাঁর বন্ধুদের প্রতি অসিয়ত নামা এভাবে লিখেছিলেন-

وقد بلغنی واللّٰہ اعلم واحکم ۔ ان ملک الموت رأسہ فی  السماء ورجلاہ فی الارض والدنیا کلھا فی ید ملک الموت کالقصعۃ بین یدی احدکم یأکل  منھا ۔ وقد بلغنی واللّٰہ اعلم واحکم ۔  ان ملک الموت ینظر فی  وجہ کل آدمی ثلاث ماءۃ وستا وستین نظرۃ ۔ وبلغنی ان ملک الموت ینظر فی کل بیت تحت ظل السماء ست مأءۃ مرۃ وبلغنی ان ملک الموت قائم وسط الدنیا فینظر الدنیا  کلھا برھا وبحرھا وجبا لھا وھی بین یدیہ کالبیضۃ بین رجلی احدکم ۔ وبلغنی ان ملک الموت اعوانا۔ اللّٰہ اعلم بھم لیس منھم ملک الا لو اذن لہ ان یلتقم السمٰوٰت والارض فی لقمۃ واحدۃ لفعل ۔ وبلغنی ان  ملک الموت تفزع منہ الملائکۃ اشد من فزع  من احدکم من السبح ۔ وبلغنی ان حملۃ العرش اذا قرب ملک الموت من احدھم ذاب حتی یصیر مثل الشعرۃ من الفزع منہ ۔ وبلغنی ان ملک الموت ینتزع روح نبی آدم من تحت عضوہ وظفرہ وعروقۃ وشعرۃ ولا تصل الروح من مفصل الی مفصل الاکان اشد علیہ من الف ضربۃ بالسیف ۔ وبلغنی  انہ لو وضع وجع شعرہ من المیت علی السمٰوٰت والارض لاذا بھا حتی اذا بلغت الحلقوم ولی القبض ملک الموت ۔  وبلغنی ان ملک الموت اذا قبض روح المؤمن جعلھا فی حریرۃ بیضاء ومسک اذ فر ۔ واذا قبض روح الکافر جعلھا فی خرقۃ سوداء فی فخار من نار اشد نتنا من الجیف ۔

অর্থঃ “হযরত  ওমর ইবনে আবদুল আযিয (রহঃ) অসিয়তনামায় লিখেছেন- আমার কাছে এই হাদীস পৌঁছেছে যে,  (আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ  ও সর্বকৌশলী) ”মালাকুল মউত বা আযরাঈলের মাথা হলো আকাশে- আর দু’পা ঠেকেছে যমীনে। সমগ্র দুনিয়া আযরাঈলের হাতে এত ছোট- যেন কোন লোক ছোট একটি বাসন নিয়ে খানা খাচ্ছে। আমার কাছে আরও রেওয়ায়াত পৌঁছেছে যে, আযরাঈল প্রতিটি লোকের প্রতি তিনশত ছিষট্টিবার দৃষ্টিপাত করে। আর আকাশের ছায়াতলে পৃথিবীর প্রত্যেকটি  গৃৃহের দিকে ছয়শত বার নযর করে। আমার  কাছে আরো  রেওয়ায়াত আছে- আযরাঈল দুনিয়ার মধ্যখানে  দাঁড়ানো আছে। সে একনযরে দুনিয়ার জল, স্থল, পাহাড়, পর্বত সবকিছু একসাথে দেখে। ঐগুলো মালাকুল মউতের সামনে ছোট একটি অণ্ডকোষের ন্যায়- যা তোমাদের দু’পায়ের মধ্যখানে থাকে। আমার কাছে আরো রেওয়ায়াত  এসেছে- মালাকুত  মউতের অনেক সাহায্যকারী ফিরিস্তা আছে- যাদের সংখ্যা আল্লাহ্ই ভাল জানেন। তাঁদের এক একজনের এমন হজমশক্তি আছে- যদি তাকে হুকুম করা  হয় যে, আসমান  যমীন এক লোকমায় খেয়ে  ফেলো- তাহলে সে একাই এক লোকমায় আসমান যমিন হজম করে ফেলতে পারবে। আমার কাছে আরও রেওয়ায়াত এসেছে যে, অন্যান্য ফিরিস্তারা  আযরাঈলকে এমন ভয় পায়- যেমন ভয় পায় তোমাদের কেউ বনের হিংস্রপশু দেখে। আমার কাছে আরো বর্ণনা এসেছে যে, আযরাঈল যদি আরশ বহনকারী কোন  ফিরিস্তার কাছাকাছি যায়, তাহলে তাঁরা তাঁর ভয়ে লবনের মত গলে চুলের মত সুক্ষ্ম হয়ে যাবে। আমার কাছে আরো বর্ণনা   এসেছে যে, আযরাঈল বনী আদমের রূহ্ খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে  তাঁদের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ,  নখ, চুল, রগ থেকে বের করে নিয়ে আসবে। রূহ্ এক গ্রন্থি থেকে অন্য গ্রন্থিতে পৌঁছলে মৃত্যুযাত্রীর  কাছে তা এক হাজার তলোয়ারের  আঘাতের চেয়েও কঠিন বলে মনে হবে। আমার কাছে আরো রেওয়ায়াত  এসেছে যে, মৃতব্যক্তির একটি চুলের ব্যথা যদি আসমান যমীনে  রাখা হয়, তাহলে আসমান যমিন গলে যাবে। রূহ্ যখন কণ্ঠদেশে পৌঁছে- তখন মালাকুল মউত রূহ্কে ধরে ফেলে। আমার কাছে আরো  বিস্ময়কর রেওয়ায়াত  এসেছে যে, এত শক্তিশালী আযরাঈল যখন মোমিনের রূহ্ কব্জ করে- তখন রূহ্কে সাদা রেশমী রুমালে রাখে- যার সুগন্ধি হবে  অতি ব্যাপক। আর যখন কাফিরের রূহ্ কব্জ করে- তখন ঐ রূহ্ রাখে কালো খসখসে মোটা পশমী কাপড়ে। মনে হয়- যেন রৌদ্রে শুকিয়ে ঠনঠনে করে রাখা হয়েছে। ঐ রূহ্ থেকে মৃত জন্তুর দুর্গন্ধ বের হতে থাকে”। (তাযকিরাহ্ পৃঃ২৬)।

(২) আযরাঈল কারো প্রতি যুলুম করেনাঃ
=====
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর  রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
قال اذا قبض ملک الموت روح المؤمن قام علی عتبۃ الباب ولا ھل البیت ضجۃ فمنھم الصاکۃ وجھھا ومنھم الناشرۃ شعرھا ۔ ومنھم الداعیۃ بویلھا ۔ فیقول ملک الموت علیہ السلام ۔ فیم الجزع ؟ فواللّٰہ ما انقصت لاحد منکم عمرا ولا ذھبت لاحدمنکم برزق ۔ ولا ظلمت  لاحد منکم شیئا ۔ فان کانت شکایتکم وسخطکم علی فان واللّٰہ مامور ۔ وان کان ذلک علی میتکم ۔ فانہ فی ذلک مقھور ۔ وان کان ذلک علی ربکم فانتم بہ کفرۃ وان لی فیکم عودۃ ثم عودۃ ۔ فلوانھم یرون مکانہ او یسمعون  کلامہ لذھلوا عن میتھم ولبکوا علی انفسکم ۔ خرجہ ابو مطیع مکحول بن الفضل النسفی فی کتاب اللؤلؤیات۔

অর্থঃ “হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন- যখন মালাকুল মউত মোমিনের রূহ্  কব্জ করে, তখন সে দরজার চৌকাঠে দাঁড়ায়। মৃত্যুর কারণে ঘরের লোকদের মধ্যে তখন কান্নার রোল পড়ে যায়। কেউ কপাল চাপড়ায়, কেউ চুল ছিঁড়ে, কেউ বিলাপ করে। তখন মালাকুল মউত তাঁদেরকে লক্ষ্য করে বলে- কি ব্যাপার, এত অস্থিরতা কেন? আল্লাহর শপথ- আমি তো তোমাদের কারো  হায়াত কমাইনি, তোমাদের কারো রিযিকও কেড়ে নেইনি, কারো ওপরে বিন্দুমাত্র যুলুমও করিনি। যদি আমার উপর তোমাদের কারো গোস্বা থাকে, কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ  করে, তাহলে আমি বলবো- আমি তো আল্লাহ্ কর্তৃক নির্দেশিত। আর যদি মৃতব্যক্তির উপর তোমাদের ঐ ধরণের আচরণ হয়- তাহলে বলবো- সে এ ব্যাপারে তোমাদের আক্রোশের পাত্র।  আর যদি তোমাদের গোস্বা ও শেকায়েত আল্লাহর বিরুদ্ধে হয়- তাহলে জেনে রাখো- এটা তাঁর সাথে  কুফরী সমতুল্য।  আমি তোমাদের কাছে বারেবারে আসতেই থাকবো”।

হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন- ঘরের লোকেরা যদি মালাকুত মউতের সূরত দেখতো- অথবা তাঁর কথা শুনতো-  তাহলে তারা মৃতব্যক্তির কথা ভুলে গিয়ে নিজেদের ব্যাপারেই কান্নাকাটি করতো বেশী (আবু মুতী’ মাকহুল ইবনে ফযর নসফী তার “লু’ লুইয়াত” গ্রন্থে এই হাদীসখানা সংকলন করেছেন)।

(৩) হযরত আনাছ ইবনে মালেক (রাঃ) মালাকুল মউত সম্পর্কে বর্ণনা করেন-
قال رسول اللّٰہ ﷺ ’’ مامن بیت الا وملک الموت یقف علی بابہ فی کل یوم خمسن مرات فاذا وجد الانسان قد نفذ اکلہ وانقطع اجلہ القی علیہ غمرات الموت فغشیۃ کربتہ وغمرتہ فمن اھل بیتہ الناشرہ شعرھا والضاربۃ وجھھا والباکیۃ لشجوھا والصارخۃ بویلھا۔ فیقول ملک الموت ویلکم مما الفزع ومما الجزع ؟ ما اذ ھبت لاحدمنکم رزقا ولا  قربت لہ اجلہ ولا اٰتیتہ حتی امرت ۔ ولا قبضت روحہ حتی استأمرت وان لی فیکم  عودۃ فعودۃ حتی لا ابقی منکم احدا ۔ (الاربعین خبر مشھور)

অর্থঃ “রাসুল মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন “এমন কোন ঘর নেই-  যে ঘরের দরজায় মালাকুল মউত দিনে পাঁচবার না দাঁড়ায়। যখন সে দেখে যে, কোন মানুষের রিযিক শেষ হয়ে গিয়েছে এবং নির্ধারিত সময় ফুরিয়ে এসেছে- তখন তার উপর মৃত্যুর যন্ত্রনা বর্তিয়ে  দেয়। তখন মৃতব্যক্তিকে তার মৃত্যুযন্ত্রনা ও বেদনা ঢেকে ফেলে। ঘরের স্ত্রী তখন চুল ছিঁড়ে, কপাল চাপড়ায়, শোকে কান্নাকাটি করে এবং চিৎকার  করে বিলাপ করে। তখন মালাকুল মউত বলতে থাকে- তোমাদের সর্বনাশ হোক- কেন  এত ভয়-ভীতি, কেন এত ছটফটানী?  আমি তো কারো রিযিক কেড়ে  নেইনি, কারো মৃত্যুকালও এগিয়ে আনিনি, আল্লাহর আদেশ ছাড়াও আসিনি এবং নির্দেশ ছাড়াও তাঁর রূহ্ কব্জ করিনি। আমি তোমাদের সবার কাছেই বারেবারে ফিরে আসবো। এমনকি- তোমাদের একজনকেও ছাড়বোনা”।  (হাদীসে মশহুর এবং অর্থগত দিক দিয়ে মারফু’ (আরবাঈন)।

(৪) নবী করিম (ﷺ) আযরাঈলকে দেখেনঃ
======
হযরত জা’ফর ইবনে মুহাম্মদ তাঁর  পিতা মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করেন-
قال ۔  نظر رسول اللّٰہ ﷺ الی ملک الموت عند رأس  رجل من الانصار فقال لہ النبی ﷺ ارفق بصاحبی فانہ مؤمن ۔ فقال ملک الموت علیہ السلام یا محمد طب نفسا وقر عینا فانی بکل مؤمن رفیق ۔ واعلم ان مامن اھل بیت مد رولا شعر فی بر ولا بحر الا وانا اتصحفھم فی کل یوم خمس مرات حتی   لانا اعرف بصغیرھم وکبیرھم منھم لانفسھم ۔ و اللّٰہ یا محمد لوانی اردت ان اقبض روح بعوضۃ ما قدرت علی ذلک حتی یکون اللّٰہ ھو الاٰمر بقبضھا ۔

অর্থঃ “জাফর ইবনে মুহাম্মদ (রহঃ) তাঁর পিতা মুহাম্মদ থেকে বলেন- নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম জনৈক আনসারী সাহাবীর ইন্তিকালের সময় মালাকুল  মউতকে তাঁর শিয়রে বসা অবস্থায় দেখে বললেন- হে আযরাঈল! আমার এই সাহাবীর রূহ্ খুব নম্রভাবে কব্জ করো। মালাকুল মউত বললো- হে প্রিয় মুহাম্মদ! আপনি খুশী হোন এবং চক্ষু শীতল করুন- নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক মুমিনের ঘনিষ্ট বন্ধু।  আপনি জেনে রাখুন- যেকোন ঘর- চাই তা ইটের হোক অথবা তাবুর;  স্থলভাগে  হোক বা জলভাগে- সে ঘরের বাসিন্দাদের সাথে আমি দৈনিক পাঁচবার মোসাফাহা করি। সুতরাং আমি তাদের ছোট বড় সবাইকে তাদের পরস্পরের চাইতে বেশী চিনি। আল্লাহর শপথ করে বলছি- যখনই আমি কোন একটি মশার রূহ্ কব্জ করার ইচ্ছা করি- তা আমি পারি না, যে পর্য্যন্ত না আল্লাহ্ ঐ রূহ্  কব্জ করতে  আমাকে আদেশ  করেন”। (আত্-তাযকিরাহ্ ৭৬ পৃষ্ঠা)।

(৫) হায়াত-মউতের ফিরিস্তাদের বিতর্ক ও বাহাছ-
وفی الخبر ان ملک الموت وملک الحیاۃ تناظروا فقال ملک الموت انا امیت الاحیاء وقال ملک الحیاۃ انا احی الموتی ۔ فاوحی اللّہ الیھما کونا علی عملکما وما ستخرتما لہ من الصنح وانا الممیت والمحی لا ممیت ولا محی سوائی ۔ ذکرہ ابو حامد الغزالی فی الاحیاء ۔

অর্থঃ ইমাম গাযালী (রহঃ) তাঁর ইহ্ইয়া গ্রন্থে একখানা হাদীস এভাবে বর্ণনা করেছেন- “মউতের ফিরিস্তা এবং হায়াতের ফিরিস্তার মধ্যে  বিতর্ক হচ্ছিল। মউতের ফিরিস্তা (আযরাঈল)  বললো-আমি জীবিতকে মৃত্যু দেই। মাতৃগর্ভে সন্তানের  হায়াত দানকারী ফিরিস্তা বললো- আমি মৃতকে হায়াত দেই। আল্লাহ্পাক তাঁদের উভয়ের কাছে সংবাদ পাঠালেন- তোমরা তোমাদের দায়িত্ব পালন করে যাও। তোমাদের কাউকেই আমি ঐ কাজের একক নিয়ন্ত্রনকারী বানাইনি। আমিই মৃত্যুর প্রকৃত মালিক, আমিই হায়াতের প্রকৃত মালিক। আমি ছাড়া অন্য কেউ   হায়াত-মউতের মালিক নয়”। (তাযকিরাহ্  ৭৮  পৃষ্ঠা)। (তোমরা শুধু বিভাগীয় কর্মকর্তার ন্যায়)।

(৬)  মালাকুল মউতকে রূহ্ কব্জ করার জন্য কেন নিযুক্ত করা হলো?

ইমাম যুহ্রী ও ওহাব ইবনে মুনাব্বেহ্ প্রমুখ তাবেয়ীগণ বর্ণনা করেছেন যে,
ان اللّٰہ ارسل جبرائل علیہ السلام لیاتیہ من تربۃ الارض فاتاھا لیأخذ منھا ۔ فاستعاذت باللّٰہ من ذلک فاعاذھا ۔ فارسل میکائل فاستعاذت منہ فاعاذھا ۔ فبعث عزرائیل فاستعاذت  منہ فلم یعذھا فاخذ منھا۔  فقال الرب تبارک وتعالی اما استعاذت بی منک؟  قال نعم قال فھل لا رحمتھا کما رحمھا صاحباک ؟ قال یارب طاعتک اوجب علی من رحمتی ایاھا ۔ قال اللّٰہ عزوجل ۔ اذھب وانت ملک الموت ۔ سلطتک علی قبض  ارواحھم ۔ فبکی۔ فقال ما یبکیک ۔؟ فقال یا رب انک تخلق من ھذا الخلق انبیاء واصفیاء ومرسلین ۔ وانک لم تخلق خلق اکرہ الیھم من الموت ۔ فاذا عرفونی ابغضونی وشتمونی ۔ قال اللّٰہ تعالی ان سا جعل للموت عدلا واسبابا ینسبون الموت الیھا ولا یذکرونک معھا ۔ فخلق اللّٰہ الاوجاع وئر الحنوف ۔

অর্থঃ “আল্লাহ্ তায়ালা সর্বপ্রথম  জিবরাঈলকে  পাঠালেন- যমীন থেকে কিছু খামিরা আল্লাহর কাছে নিয়ে আসার জন্য। জিবরাঈল পৃথিবীতে এসে যেইমাত্র খামিরা নিতে যাবেন- অমনিই পৃথিবী আল্লাহর দোহাই দিয়ে বসলো। তাই জিবরাঈল খামিরা ছেড়ে দিলেন। অতঃপর পাঠালেন মিকাঈলকে। খামিরা তার থেকেও আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থণা করলো। তাই মিকাঈলও তাকে ছেড়ে দিলেন। অতঃপর আল্লাহ্ আযরাঈলকে প্রেরণ করলেন। আযরাঈল খামিরা নেয়ার সাথে সাথে যমীন মালাকুল মউত থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ্ চাইলো। কিন্তু আযরাঈল দোহাই না মেনে খামিরা নিয়ে আল্লাহর দরবারে পৌঁছালো। আল্লাহ্ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন- খামিরা বা যমীন কি তোমার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমার দোহাই  দেয়নি? আযরাঈল বললো- হ্যাঁ। আল্লাহ্ বললেন- তাহলে তুমি তাকে দয়া করলে না কেন- যেমন দয়া করেছে তোমার দুইবন্ধু জিবরাঈল ও মিকাঈল?  আযরাঈল আরয করলো- হে এলাহী- তোমার আদেশ পালন করা তো আমার উপর ফরয ছিল- তার  প্রতি রহম  করবো কিভাবে? আল্লাহ্ বললেন- যাও তোমাকেই মালাকুল মউত নির্ধারিত  করলাম এবং তাদের রূহ্  কব্জ  করার অধিকার দিলাম”।

একথা শুনে আযরাঈল কেঁদে  ফেললো। আল্লাহ্ বললেন- কাঁদ্ছো কেন? সে বললো, হে প্রভূ- তুমি তো এই খামিরা থেকে আম্বিয়া, রাসুল ও সূফীগণকে সৃষ্টি করবে। আর তুমি তাঁদের  কাছে মৃত্যুর চেয়ে অন্য কোন বস্তুকে এত অপ্রিয় করনি। যখন তাঁরা আমাকে চিনে ফেলবে- তখন আমাকে তাঁরা গালি দিবে এবং মালামত করবে। আল্লাহ্ বললেন- আমি মৃত্যুর পূর্বে অসুখ-বিসুখ ও অন্যান্য দূর্ঘটনা জনিত সঙ্গত কারণ সৃষ্টি করে দেবো। তখন তাঁরা তোমাকে দায়ী না করে ঐ অসুখ বিসুখ ও দূর্ঘটনাকেই দায়ী করবে”। গাযালী (রহঃ) বলেন- তাই আল্লাহ্ তায়ালা মৃত্যুর পূর্বে দুঃখ কষ্ট, অসুখ-বিসুখ ও অন্যান্য দূর্ঘটনা সৃষ্টি করেছেন”। (আত্-তাযকিরাহ্-৭৮-৭৯)।


-----

 
Top