পৃথিবীর কিছু ঘটনা এতটা নির্মম, এতটা অমানবিক যা বলার

কোন ভাষা থাকে না। সৃষ্টি জগৎ যেন হতভম্ব হয়ে থেমে যায়

শোকে, আকাশ বাতাস হাহাকার করতে থাকে। আর মানব

হৃদয়ে অনন্তকাল ধরে চলতে থাকে রক্তক্ষরন। কারবালার

হৃদয়বিদারক ইতিহাস সবারই কম বেশি জানা আছে। সবাই

জানেন সেই কারবালা প্রন্তরে হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক

ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দৌহিত্র

সাইয়্যিদুনা ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম এবং উনার

পরিবারবর্গের অনেককে নির্মম ভাবে শহীদ করা হয়। শুধু তাই

নয়, সেই কর্তিক মস্তক নিয়ে আনন্দ মিছিলও করে সেই

কুলাঙ্গারের দলেরা। ইতিহাস সাক্ষী , হাজার হাজার

কিতাব, ইমাম মুস্তাহিদদের বক্তব্য সাক্ষী এই ভয়াবহ নির্মম

হত্যাকান্ড চালিয়েছিলো ইয়াযীদি বাহীনি। ইয়াযীদের

প্রকাশ্য নির্দেশে তার সৈন্য বাহীনি ইমাম হুসাইন

আলাইহিস সালাম উনাকে এবং উনার পরিবারের

সদস্যদেরকে অবরোধ করে রাখে ফোরাত নদীর তীরে। এক

ফোঁটা পানিও পান করতে দেয় নাই পিশাচেরা।

পরিশেষে তারা ইতিহাসের সবচাইতে নির্মম, হৃদয়বিদারক ,

পৈশাচিক ঘটনার অবতারনা করে ইমাম হুসাইন আলাইহিস

সালাম এবং উনার পরিবারের সদস্যদের শহীদ করার মাধ্যমে।

যেটা মেনে নেয়া কারো পক্ষে কোনদিনও সম্ভব নয়।

অথচ আফসোস লাগে, হতবাক হতে হয় তখন, আজ উক্ত ঘটনার

১৩৭২ বছর পর যখন শুনতে হয় ইয়াযীদের মত সৃষ্টির

সবচাইতে নিকৃষ্ট মালউনকে মুসলমান ছদ্মবেশীএক শ্রেনীর

ধর্মব্যবসায়ী, ইতিহাস বিকৃতকারী, ইহুদী এজেন্ট “তাবেয়ী,

আমীরুল মু’মিনিন, রদ্বিয়াল্লাহু আনহু” ইত্যাদি শব্দ

দ্বারা সম্ভাষন করে। কি বিশ্বাস হয় না ?

দেখুন, দেওবন্দী সিলসিলার মাহীউদ্দীন সম্পাদীত “” মাসিক

মদীনা”” পত্রিকায় এই কাফের ইয়াজীদকে সমর্থন

করে কি বলা হয়েছে-

” ইয়াজীদ তাবেয়ী ছিলো। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার

ব্যাপারে তার প্রতি মন্দরুপ কিংবা কিছু বলা ঠিক হবে না।””

নাউযুবিল্লাহ মিন জালিক !

প্রমান-

√ মাসিক মদীনা ,এপ্রিল,২০১০ সংখ্যা , প্রশ্ন উত্তর বিভাগ।

ইহুদীদের অন্যতম দালাল জাকির নায়েক নামক কাফির

নায়েক কারবালার ময়দানের ঘৃণিত পশু ইয়াযীদকে ‘তাবে-

তাবীঈন’ বলে উল্লেখ করে তাকে জান্নাতী বলে এবং তার

নামের শেষে ‘রহমতুল্লাহি আলাইহি’ উচ্চারণ

করে থাকে। (নাঊযুবিল্লাহ)

প্রমান : http://www.youtube.com/watch?v=1mMQbR_48IU

তাই একজন আহলে বাইতে শরীফ উনার একজন অতি নগন্য

গোলাম হিসাবে এ বিষয়ে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়ার কোন

বিকল্প নেই। তাই আজ আপনাদের খেদমতে আহলে সুন্নত ওয়াল

জামায়াতের দৃষ্টিতে ইয়াযীদ যে কাফির, লা’নতপ্রাপ্ত,

মরদুদ, পথভ্রষ্ট সে বিষয়ে দলীল পেশ করবো।

এ বিষয়টা সম্পূর্ণ বোঝার জন্য আমাদের সর্বপ্রথম হযরত

আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং খাছ করে হযরত

সাইয়্যিদুনা ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার ফযীলত

জানতে হবে এবং উপলব্ধি করতে হবে।

কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফের আলোকে হযরত

আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদে রসূল

ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ফযীলত :

মহান আল্লাহ পাক কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-

ﻗﻞ ﻻ ﺍﺱﺀﻟﻜﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﺟﺮﺍ ﺍﻻ ﺍﻟﻤﻮﺩﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮ ﺑﻲ

অর্থ: হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম !

আপনি ( উম্মতদের ) বলুন, আমি তোমাদের নিকট নবুওয়াতের

দায়িত্ব পালনের কোন প্রতিদান চাই না। তবে আমার

নিকটজন তথা আহলে বাইত উনাদের প্রতি তোমরা সদাচারন

করবে।”

( সূরা শূরা : আয়াত শরীফ ২৩ )

এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তফসীর

“তাফসীরে মাযহারীতে” উল্লেখ আছে-

ﻻ ﺍﺱﺀﻟﻜﻢ ﺍﺟﺮﺍ ﺍﻻ ﺍﻥ ﺗﻮﺩﻭﺍ ﺍﻗﺮﺑﺎﺀﻱ ﻭﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻲ ﻭ ﻋﺘﺮﺗﻲ ﻭﺫﻟﻚ ﻻﻧﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﺧﺎﺗﻢ

ﺍﻟﻨﺒﻴﻦ ﻻ ﻧﺒﻲ ﺑﻌﺪﻩ

অর্থ: আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাই

না তবে তোমরা আমার নিকটাত্মীয়, আহলে বাইত ও বংশধর

উনাদের ( যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক) হক্ব আদায় করবে।

কেননা আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন শেষ নবী। উনার

পরে কোন নবী নেই।”

দলীল-

√ তাফসীরে মাযহারী ৮ম খন্ড ৩২০ পৃষ্ঠা।

আহলে বাইত শরীফ উনাদের ফযীলত সম্পর্কে বহু হাদীস

শরীফ বর্নিত আছে।

সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের

উনাদের মুবারক শানে পৃথিবীর সকল হাদীস শরীফের

কিতাবে “আহলে বাইত শরীফ উনাদের ফযীলত” নামক সতন্ত্র

অধ্যায় সন্নিবেশিত আছে।

তন্মধ্যে কতিপয় হাদীস শরীফ থেকে হযরত সাইয়্যিদুনা ইমাম

হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার ফযীলত নিম্নে উল্লেখ

করা হলো :

” উম্মুল মু’মিনিন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা আলাইহাস সালাম

তিনি বলেন, একদা ভোরবেলা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একখানা কালো বর্নের

পশমী নকশী কম্বল শরীর মুবারকে জড়িয়ে বের হলেন। এমন

সময় হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম

তিনি সেখানে আসলেন, তিনি উনাকে কম্বলের ভিতর প্রবেশ

করিয়ে নিলেন। তারপর ইমাম হযরত হুসাইন আলাইহিস

সালাম তিনি আসলেন, উনাকেও হযরত ইমাম হাসান

আলাইহিস সালাম উনার উনার সাথে প্রবেশ করিয়ে নিলেন।

অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিছা হযরত ফাতিমাতুয

যাহরা আলাইহিস সালাম তিনি আসলেন উনাকেও

তাতে প্রবেশ করিয়ে নিলেন। তারপর হযরত আলী আলাইহিস

সালাম তিনি আসলেন,উনাকেও তার ভিতর প্রবেশ

করিয়ে নিলেন। অতঃপর হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম কুরআন শরীফের এই আয়াত

শরীফখানা পড়লেন, হে আমার আহলে বাইত ! আল্লাহ

তায়ালা তিনি আপনাদেরকে সকল প্রকার

অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রেখে পবিত্র করার মত পবিত্র

করবেন।”

অর্থাৎ পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন।

দলীল-

√ সহীহ মুসলিম শরীফ – বাবু ফাদ্বায়িলু আহলে বাইতিন

নাব্যিয়ি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ৬০৪৩

নং হাদীস শরীফ। (ইফা)

হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে-

ﺍﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻟﻌﻠﻲ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻭ ﻓﺎﻃﻤﺔ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻋﻠﻴﻪ

ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺍﻧﺎ ﺣﺮﺏ ﻟﻤﻦ ﺣﺎﺭﺑﻬﻢ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻟﻤﻦ ﺳﺎﻟﻤﻬﻢ

অর্থ: হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

তিনি বলেন, নিশ্চয়ই রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী আলাইহিস সালাম ,

সাইয়্যিদাতুনা ফাতিফাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম, হযরত

ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম , ইমাম হুসাইন আলাইহিস

সালাম উনাদের সম্পর্কে বলেছেন, যারা উনাদের

প্রতি শত্রুতা পোষন করবে, আমি তাদের শত্রু।

পক্ষান্তরে যে উনাদের সাথে সদ্ব্যবহার করবে, আমি তাদের

সাথে সদ্ব্যবহার করবো।”

দলীল-

√ সহীহ তিরমিযী শরীফ – আহলে বাইত শরীফ উনাদের

ফযীলত অধ্যায়।

হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে-

ﻋﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﺍﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺍﻟﺤﺴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ

ﻭ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭ ﺍﻟﺤﺴﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺳﻴﺪﺍ ﺷﺒﺎﺏ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺠﻨﺔ

অর্থ: হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বলেন,

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক

করেন, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম ও ইমাম হুসাইন

আলাইহিস সালাম উনারা দু’জনেই জান্নাতী যুবকগনের

সাইয়্যিদ।”

দলীল-

√ তিরমীযি শরীফ – আহলে বাইত শরীফ উনাদের ফযীলত

অধ্যায়।

হাদীস শরীফে ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম

উনাকে মুহব্বত প্রসঙ্গে আরো বর্নিত আছে –

ﻋﻦ ﻳﻌﻠﻲ ﺑﻦ ﻣﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺣﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻣﻨﻲ ﻭ ﺍﻧﺎ

ﻣﻦ ﺣﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﺍﺣﺐ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺍﺣﺐ ﺣﺴﻴﻨﺎ

অর্থ : হযরত ইয়ালা ইবনে মুররাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু

তিনি বলেন, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

তিনি ইরশাদ করেন, ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম

তিনি আমার থেকে আর আমি হযরত হুসাইন আলাইহিস

সালাম উনার থেকে। যে ব্যক্তি হুসাইন আলাইহিস সালাম

উনাকে মুহব্বত করবে আল্লাহ পাক তিনি তাকে মুহব্বত

করবেন।’”

দলীল-

√ সহীহ তিরমিযী শরীফ- আহলে বাইত শরীফ উনাদের

ফযীলত।

সহীহ হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে-

ﻋﻦ ﺣﻀﺮﺕ ﺍﺑﻲ ﺫﺭ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺍﻧﻪ ﻗﺎﻝ ﻭﻫﻮ ﺍﺧﺬ ﺑﺒﺎﺏ ﺍﻟﻜﻌﺒﺔ ﺳﻤﻌﺖ ﺍﻧﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ

ﻳﻘﻮﻝ ﺍﻻ ﺍﻥ ﻣﺜﻞ ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻲ ﻓﻴﻜﻢ ﻣﺜﻞ ﺳﻔﻴﻨﺔ ﻧﻮﺡ ﻣﻦ ﺭﻛﺒﻬﺎ ﻧﺠﺎ ﻭﻣﻦ ﺗﺨﻠﻒ ﻋﻨﻬﺎ ﻫﻠﻚ

অর্থ: হযরত আবু যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্নিত,

তিনি কা’বা শরীফের দরজা ধরে বলেছেন, আমি হুজুর পাক

ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি ,

সাবধান ! আমার আহলে বাইত শরীফ হলেন তোমাদের জন্য নূহ

আলাইহিস সালাম উনার নৌকার মত। যে তাতে আরোহন

করবে, সে রক্ষা পাবে। আর

যে তাতে পশ্চাতে থাকবে সে ধব্বং হবে।”

দলীল-

√ মুসনাদে আহমদ শরীফ ।

কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ থেকে প্রমান

হলো আহলে বাইত শরীফ উনাদের মুহব্বত করা ঈমান।

এবং সন্তুষ্টি রেযামন্দী পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম। আর কেউ

যদি বিন্দু মাত্র বিদ্বেষ করে সে কাট্টা কাফির হয়ে যাবে।

বিবেকবান মানুষেরা একটু দেখুন, হাদীস শরীফে আছে-

ﺳﺒﺎﺏ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﻓﺴﻮﻕ ﻭﻗﺘﺎﻟﻪ ﻛﻔﺮ

অর্থ- মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকি আর কতল করা কুফরী !”

দলীল-

√ বুখারী শরীফ

√ মুসলিম শরীফ

এখন একজন সাধারণ মানুষকে হত্যা করা যদি কুফরী হয়

তাহলে নবীজী উনার পরিবারের অন্যতম , বেহেশতের যুবকদের

প্রধান , যিনি নবীজী উনার নামাজের সময় নবীজীর কাঁধ

মুবারকে উঠলে নবীজী সেজদী দীর্ঘায়িত করতেন এমন

মর্যাদার অধিকারী ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার

শহীদ কারী কি মুসলমান থাকে ?

তাবেয়ী থাকে ?

সেকি কাফের হয় না ?

অথচ মালাউন দেওবন্দী গ্রুপের মাসিক পত্রিকা মদীনার

সম্পাদক মাহীউদ্দীন , জাকির নায়েক নামক কাফির নায়েক

তাকেও তাবেয়ীর মর্যাদা দান করছে !” কি জবাব দিবেন ?

একজন সাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার বিরোধিতা করাই

কুফরী, আর সেখানে সাহাবীতো বটেই বরং নববী পরিবারের

সদস্য ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ

করে কেই মুসলমান থাকতে পারে ?

হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাদের ফযীলত

এবং উনাদের সাথে বেয়াদবী করার ফলাফল :

https://m.facebook.com/notes/noor-e-julfikar/হযরত-ছাহাবায়ে-

কিরাম-রদ্বিয়াল্লাহু-আনহুগন-ঈমান-এবং-সত্যের-

মাপকাঠিঅস্বীকারকারীরা/1541747792710931/?refid=21

এবার আসুন আমরা দলীল দিয়ে প্রমান করি ইয়াজীদ কাফির

এবং লানতের উপযুক্ত ছিলো। বিখ্যাত ইমাম ও মুফাসসির

আল্লামা আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার

কিতাবে সূরা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

উনার ২২ নং আয়াত শরীফের তাফসীরে এ বিষয়ে সকল ইমাম

মুস্তাহিদ উনাদের রায় অনুযায়ী বিস্তারিত প্রমাণ পেশ

করেছেন-

ﻭﻗﺪ ﺻﺮﺡ ﺑﻜﻔﺮﻩ ﻭﺻﺮﺡ ﺑﻠﻐﻨﻪ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻣﻨﻬﻢ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﻧﺎﺻﺮ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﺠﻮﺯﻱ ﻭﺳﺒﻘﻪ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ

ﺍﺑﻮ ﻳﻌﻠﻲ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻌﻼﻣﺔ ﺍﻟﺘﻔﺘﺎﺯﺍﻧﻲ ﻻﻧﺘﻮﻗﻒ ﻓﻲ ﺷﺎﻧﻪ ﺑﻞ ﻓﻲ ﺍﻳﻤﺎﻧﻪ ﻟﻌﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻧﺼﺎﺭﻩ

ﻭﺍﻋﻮﺍﻧﻪ ﻭﻣﻤﻦ ﺻﺮﺡ ﺑﻠﻌﻨﻪ ﺍﻟﺠﻼﻝ ﺍﻟﺴﻴﻮﻃﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﺖ

অর্থ- ইয়াজীদ কাফির হওয়া সম্পর্কে এবং তার প্রতি লানত

করা বৈধতার বিষয়ে এক জামাতের উলামা পরিস্কার মন্তব্য

করেছেন। উনারা হলেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুন্নতের মদদগার ইবনুল

জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আর উনার পূর্বে হযরত

কাজী আবু ইয়ালা রহমাতুল্লাহি আলাইহি। আর

আল্লামা হযরত তাফতানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,

আমরা ইয়াজীদের ব্যাপারে দ্বিধা করবো না। এমনকি তার

ঈমানের ব্যাপারে ও না। তার প্রতি, তার সাহায্যকারী দের

প্রতি , এবং শুভকামনা কারীদের প্রতি আল্লাহ পাকের

লানত। যারা ইয়াজীদ সুস্পষ্ট লানত করেছেন তাদের

মধ্যে ইমাম জালালুদ্দীন

সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনিও রয়েছেন।”

দলীল-

√ তাফসিরে রুহুল মায়ানী ২৫ খন্ড ৭২ পৃষ্ঠা

বিশ্ব বিখ্যাত সুন্নী আক্বায়ীদের কিতাব

“আক্বীয়ীদে নাসাফী” কিতাবে বর্নিত আছে –

ﻭﺑﻌﻀﻬﻢ ﺍﻃﻠﻖ ﺍﻟﻠﻌﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﻟﻤﺎ ﺍﻧﻪ ﻛﻔﺮ ﺣﻴﻦ ﺍﻣﺮ ﻳﻘﻨﻞ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻭ ﺍﺗﻔﻘﻮﺍ ﻋﻠﻲ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﻠﻌﻦ

ﻋﻠﻲ ﻣﻦ ﻗﺘﻠﻪ ﺍﻭ ﺍﻣﺮ ﺑﻪ ﺍﻭ ﺍﺟﺎﺯﻩ ﻭﺭﺿﻲ ﺑﻪ ﻭﺍﻟﺤﻖ ﺍﻥ ﺭﺿﺎ ﻳﺰﻳﺪ ﻳﻘﺘﻞ ﺣﻀﺮﺕ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭ

ﺍﺳﺘﺒﺸﺎﺭﻩ ﺑﺰﻟﻚ ﻭ ﺍﻫﺎﻧﺔ ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺖ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﻤﺎ ﺗﻮﺍﺗﺮ ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺍﻥ ﻛﺎﻥ ﺗﻔﺎﺻﻴﻠﻪ ﺍﺣﺎﺩﺍ

ﻓﻨﺤﻦ ﻻﻧﺘﻮﻗﻒ ﻓﻲ ﺷﺎﻧﻪ ﺑﻞ ﻓﻲ ﺍﻳﻤﺎﻧﻪ ﻟﻌﻨﺖ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻧﺼﺎﺭﻩ ﻭﺍﻋﻮﺍﻧﻪ

অর্থ- কতক আলেম ইয়াজীদদের প্রতি লা’নত বর্ষন করেছেন।

কারন ইয়াজীদ লা’নতুল্লাহি আলাইহি ইমাম হুসাইন

আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করার নির্দেশ

দিয়ে কাফিরের কর্ম করে। আর যে ইমাম হুসাইন আলাইহিস

সালাম উনাকে শহীদ করেছে, যে উনাকে শহীদ করার

নির্দেশ জারী করেছে , যে উনাকে শহীদ করাকে বৈধ

বলে মত পোষন করেছে , এসব কান্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছে –

এরুপ লোকদের প্রতি লা’নত ও অভিসম্পাত দেয়াকে সকলেই

বৈধ বলেছেন। আর সত্য হলো, ইয়াজীদ ইমাম হুসাইন

আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করার

ব্যাপারে রাজি ছিলো। উনার শহাদাত বরনের

ব্যাপারে সে উল্লসিত ছিলো। সে নবীজী উনার পরিবারের

মানহানী করে আনন্দিত হয় । নাউযুবিল্লাহ ! কাজেই

আমরা ( আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত) ইয়াজীদের

ব্যাপারে এতটুকু দ্বীধা করবো না , এমনকি তার ঈমানের

প্রশ্নেও না। ইয়াজীদের প্রতি লা’নত ও অভিসম্পাত ,

ইয়াজীদের

সাহায্যকারী দের প্রতি লানত ও অভিসম্পাত। ইয়াজীদের

পক্ষ সমর্থন

কারীদের প্রতি লা’নত ও অভিসম্পাত।”

দলীল–

√ শরহে আক্বায়ীদে নসফী ১৬২ পৃষ্ঠা!

বিখ্যাত ইমাম ও মুস্তাহিদ হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল

রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইয়াজিদের প্রতি লা’নত

করাকে বৈধ বলে কুরআন শরীফের আয়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ

করেছেন।

এ প্রসঙ্গে বর্নিত আছে-

ﺍﻧﺎ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﺍﺣﻤﺪ ﺳﺄﻟﻪ ﻭﻟﺪ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ ﻟﻌﻦ ﻳﺬﻳﺪ ﻗﺎﻝ ﻛﻴﻒ ﻻ ﻳﻠﻌﻦ ﻣﻦ ﻟﻌﻨﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺑﻪ ؟ ﻓﻘﺎﻝ

ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺪ ﻗﺮﺃﺕ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ ﻓﻠﻢ ﺍﺟﺪ ﻓﻴﻪ ﻟﻌﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﻻﻣﺎﻡ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻳﻘﻮﻝ ﻓﻬﻞ

ﻋﺴﻴﺘﻢ ﺍﻥ ﺗﻮﻟﻴﺘﻢ ﺍﻥ ﺗﻔﺴﺪﻭ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ﻭ ﺗﻘﻄﻌﻮﺍ ﺍﺭﺣﺎﻣﻜﻢ ﺍﻭﻝﺀﻙ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﻟﻌﻨﻬﻢ ﺍﻟﻠﻪ. ﻭﺍﻱ ﻓﺴﺎﺩ ﻭﻗﻄﻴﻌﺔ

ﺍﺷﺪ ﻣﻤﺎ ﻓﻌﻠﻪ ﻳﺰﻳﺪ ؟

অর্থ : হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল

রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ছেলে হযরত আবদুল্লাহ

রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার

পিতাকে ইয়াজিদকে লা’নত করা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন।

তিনি ছেলেকে বলেন, আল্লাহ পাক যাকে উনার কিতাব

( কুরআন শরীফে) এ লা’নত করেছেন তাকে লা’নত

করা যাবে না কেন ? হযরত আব্দুল্লাহ

রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি আল্লাহ পাক

উনার কিতাব পাঠ করেছি। কুরআন

শরীফে ইয়াজিদকে লা’নতের সন্ধান পাই নাই। হযরত ইমাম

আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার

ছেলেকে বলেন, আল্লাহ পাক তিনি বলেন,

হতে পারে তোমরা ফিরে যাবে আর পৃথিবীতে উপদ্রব

সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের রেহমী বা জঠর সম্পর্ক ছিন্ন

করবে। এরূপ লোকদের প্রতি আল্লাহ পাক তিনি লা’নত করেন।

কাজেই ইয়াজিদ লা’নতুল্লাহি আলাইহি যা করেছে তার

চেয়ে অধিক উপদ্রব ও রেহমী সম্পর্ক ছিন্ন করা আর

কি হতে পারে ?”

দলীল-

√ তাফসীরে রূহুল মাআনী ২৫ তম খন্ড ৭২ পৃষ্ঠা।

সুনির্দিষ্টভাবে ইয়াজিদের প্রতি লা’নত করা বৈধ হওয়ার

প্রশ্নে হযরত

আল্লামা আলুসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মত

প্রদান করে বলেন,-

ﻋﻠﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ‏( ﺍﻱ ﻋﻠﻲ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺑﻌﻌﻦ ﻣﻌﻴﻦ ‏) ﻻﻧﻮﻗﻒ ﻓﻲ ﻟﻌﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻜﺜﺮﺓ ﺍﻭﺻﺎﻓﻪ ﺍﻟﺨﺒﻴﺜﺔ

ﻭﺍﺭﺗﻜﺎﺑﻪ ﺍﻟﻜﺒﺎﺀﺭ ﻓﻲ ﺟﻤﻴﻊ ﺍﻳﺎﻡ ﺗﻜﻠﻴﻔﻪ ﻭﻳﻜﻔﻲ ﻣﺎ ﻓﻌﻠﻪ ﺍﻳﺎﻡ ﺍﺳﺘﻼﺀﻩ ﺑﺎﻫﻞ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻭﻣﻜﺔ ﻓﻘﺪ ﺭﻭﻱ

ﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻲ ﺑﺴﻨﺪ ﺣﺴﻦ : ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻣﻦ ﻇﻠﻢ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻭﺍﺧﺎﻓﻬﻢ ﻓﺎﺧﻔﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻟﻌﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻣﻼﺀﻛﺔ ﻭﺍﻟﻨﺎﺱ

ﺍﺟﻤﻌﻴﻦ ﻻﻳﻘﺒﻞ ﻣﻨﻪ ﺻﺮﻑ ﻭﻻﻋﺪﻝ

ﻭﺍﻟﻄﺎﻣﺔ ﺍﻟﻜﺒﺮﻱ ﻣﺎ ﻓﻌﻠﻴﻪ ﺑﺎﻫﻞ ﺍﻟﺒﻴﺖ ﻭﺭﺿﺎﻩ ﺑﻘﺘﻞ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻋﻠﻲ ﺟﺪﻩ ﻭﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺼﺎﻭﺓ ﻭﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺍﺳﺘﺒﺸﺎﺭﺓ

ﺑﺬﺍﻟﻚ ﻭﺍﻫﺎﻧﺘﻪ ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ ﻣﻤﺎ ﺗﻮﺍﺗﺮ ﻣﻌﻨﺎﻩ ﻭﺍﻥ ﻛﺎﻧﺖ ﺗﻔﺎﺻﻴﻠﻪ ﺍﺣﺪﺍ .

অর্থ: এ কথার ভিত্তিতে ( সুনির্দিষ্টভাবে অভিসম্পাত

দানের বৈধতার ভিত্তিতে) ইয়াযিদ

লা’নাতুল্লাহি আলাইহিকে লা’নত করার

প্রশ্নে আমরা দ্বিধা করবো না। সে বহুবিধ নিকৃষ্টমানের

দোষ করেছে। তার জবর দখলের দিনগুলোতে সে মদীনা শরীফ

ও মক্কা শরীফ এর অধিবাসীদের সাথে যে আচরন করেছে তার

ব্যাপারে বিচার করতে গেলেই যথেষ্ট। প্রসঙ্গত হযরত ইমাম

তাবরানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি হাসান সনদে হাদীস

শরীফ বর্ননা করেছেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন,

হে বারে ইলাহী ! যে মদীনাবাসীদের প্রতি যুলুম করবে,

উনাদের সন্ত্রস্ত করবে, আপনি তাকেও ভীতির সম্মুখীন করুন।”

এরূপ ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ পাক, ফেরেশতাকুল, মানবকুলসহ

সকলে অভিসম্পাত ( লা’নত) বর্ষিত হোক। এরূপ ব্যক্তির কোন

ফরজ ও নফল ইবাদত কবুল করা হবে না।

আর মহাপ্রলয়ের ন্যায় ইয়াযিদ

লা’নাতুল্লাহি আলাইহি হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইত শরীফ

(পরিবারবর্গ) উনাদের সাথে যা করেছে আর হযরত ইমাম

হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার

শাহাদাতকে যেভাবে সানন্দে সে গ্রহণ করেছে।

নাউযুবিল্লাহ । হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার

নানা ও উনাদের উভয়ের প্রতি ছলাত ও সালাম বিনিময়

নিবেদন করি এবং হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম

উনার পরিবারবর্গের সাথে সে যেসব মানহানিকর ব্যবহার

করেছে, তার বিস্তারিত বিবরন সূত্রগত একক বর্ননায় বর্নিত

হলেও অর্থ ও তথ্য দৃষ্টে (মুতাওয়াতির) ব্যাপক সূত্রে বর্নিত।”

দলীল-

√ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭২ নং পৃষ্ঠা।

বিখ্যাত মুফাসসির ও মুহাদ্দিস , মুফতীয়ে বাগদাদ হযরত

আল্লামা আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইয়াজিদ

কাফির হওয়া প্রসঙ্গে বলেন,-

ﺍﻧﺎ ﺍﻗﻮﻝ : ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻐﻠﺐ ﻋﻠﻲ ﻇﻨﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﺨﺒﻴﺚ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻣﺼﺪﻗﺎ ﺑﺮﺳﺎﻟﺔ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺍﻥ

ﻣﺠﻤﻮﻉ ﻣﺎ ﻓﻌﻞ ﻣﻊ ﺍﻫﻞ ﺣﺮﻡ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻭﺍﻫﻞ ﺣﺮﻡ ﻧﺒﻴﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻻ ﻻﺓ ﻭ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﻋﺘﺮﺗﻪ ﺍﻟﻄﻴﺒﻴﻦ ﺍﻟﻄﺎﻫﺮﻳﻦ

ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻴﺎﺓ ﻭ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﻤﻮﺍﺕ ﻭﻣﺎ ﺻﺪﺭ ﻣﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺨﺎﺯﻱ ﻟﻴﺲ ﺑﺎﺿﻌﻒ ﺩﻻﻟﺔ ﻋﻠﻲ ﻋﺪﻡ ﺗﺼﺪﻳﻘﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻘﺎﺀ

ﻭﺭﻗﺔ ﺍﻟﺼﻔﻒ ﺍﻟﺸﺮﻳﻒ ﻓﻲ ﻗﺬﺭ

অর্থ: আমি বলছি, আমার এটাই অধিক ধারনা যে,

খবীসটি হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রসূল বলে বিশ্বাস করতো না।

সে আল্লাহ পাক উনার হেরেম শরীফে (কা’বা শরীফ

প্রান্তে) অবস্থানকারীদের সাথে, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হেরেম শরীফ (মদীনা শরীফ) এ

অবস্থানকারীদের সাথে এবং উনার পূত-পবিত্র বংশধর

উনাদের সাথে উনার জীবদ্দশায় এবং উনাদের বেছাল

শরীফের পরে যে আচরন করেছে, এছাড়া তার দ্বারা যে সমস্ত

অনাচার প্রকাশ পেয়েছে তা তার ঈমান না থাকার

ব্যাপারটি স্পষ্ট করে, (তার ঈমান থাকার) ব্যাপারটি প্রমান

করতে কোন দুর্বল দলীলও নাই। কারন এ কাজটি ছিলো কুরআন

শরীফের পাতা অবহেলা অবজ্ঞার সাথে ময়লা আবর্জনায়

নিক্ষেপ করার মতো অন্যায়।”

দলীল-

√ তাফসীরে রূহুল মা’য়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা।

যারা ইয়াযিদের প্রতি লা’নত করাকে বৈধ মনে করবে না,

তাকে পাপী মনে করবে না তারা ইয়াযিদের সহচরদের

অন্তর্ভুক্ত

বলে আল্লামা আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি

সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। আর তিনি ইয়াযিদের সহচরদের

প্রতি ইয়াযিদের ন্যায় লা’নত করেছেন। তিনি বলেন-

ﻭﻳﻠﺤﻖ ﺑﻪ ﺍﺑﻦ ﺯﻳﺎﺩ ﻭﺍﺑﻦ ﺳﻌﺪ ﻭﺟﻤﺎﻋﺔ ﻓﻠﻌﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﺟﻤﻌﻴﻦ ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻧﺼﺎﺭﻫﻢ ﻭﺍﻋﻮﺍﻧﻬﻢ

ﻭﺷﻴﻌﺘﻬﻢ ﻭﻣﻦ ﻣﺎﻝ ﺍﻟﻴﻬﻢ ﺍﻟﻲ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻣﺎ ﺩﻣﻌﺖ ﻋﻴﻦ ﻋﻠﻲ ﺍﺑﻲ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ

অর্থ: আর লা’নতের উপযোগী হওয়ার ব্যাপারে ইয়াযীদের

সাথে শামিল উবাইদুল্লাহ ইবনু যিয়াদ, আমর ইবনু সা’আদ,

এবং তার দলবল। তাদের সবার প্রতি আল্লাহ পাক উনার

লা’নত ও অভিসম্পাত। তাদের সাহায্যকারী ও

শভানধ্যয়ী এবং সাঙ্গ পাঙ্গদের প্রতি লা’নত। আর

যারা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাবে তাদের প্রতিও লা’নত

ক্বিয়ামতের দিন পর্যন্ত। যতদিন হযরত আবু আব্দুল্লাহ হযরত

ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার জন্য একটি মাত্র

চোখও অশ্রু ঝরাবে।”

দলীল-

√ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা ।

আর যারা ইয়াজীদ কে কোনরুপ দোষারোপ করতে চায়

না তাদের সম্পর্কে হযরত

আলুসী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ﺫﺍﻟﻚ ﻟﻌﻤﺮﻱ ﻫﻮ ﺍﻟﻀﻼﻝ ﺍﻟﺒﻌﻴﺪ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻜﺎﺩ

ﻳﺰﻳﺪ ﻋﻠﻲ ﺿﻼﻝ ﻳﺰﻳﺪ

অর্থ-আমি কসম করে বলি , এটা হলো চরম ভ্রষ্টতা।

যা ইয়াজীদের ভ্রষ্টতাকে অতিক্রম করেছে।”

দলীল-

√ রুহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা ।

উপরোক্ত দলীল দ্বারা প্রামান হলো ইয়াযীদ হচ্ছে লা’নত

প্রাপ্ত, খবীস, আত্মীয় সম্পর্ক ছিন্নকারী,

সর্বোপরি আহলে বাইত শরীফ উনাদের শহীদ

কারী কাট্টা কাফির। এবং শুধু তাই নয় যারা কিয়ামত পর্যন্ত

যারা ইয়াযীদকে সমর্থন করবে তারাও অভিশপ্ত এবং কাফির।

ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার কর্তিত মস্তক মুবারক

দেখে ইয়াজিদের খুশি প্রকাশ :

ইবনে যিয়াদ ইয়াযীদের নির্দেশে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইত

উনাদেরকে বন্দী করে এবং কারবালায় শাহাদাত প্রাপ্ত

উনাদের কর্তিত মস্তক মুবারক নিয়ে মিছিল

করে দামাস্কে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিমার ইবনে জুল

জাউশান ইবনে সালাবা, শীস ইবনে রাবী, আমর ইবনে,

হাজ্জাজ এবং আরো কতক লোককে নিযুক্ত করে। তাদের হুকুম

দেয় তারা যে শহরে পৌঁছাবে সেখানে যেন কর্তিত মস্তক

মুবারকের প্রদর্শনী করা হয়। নাউযুবিল্লাহ !! এরূপ

মিছিলটি পহেলা ছফর দামেস্ক শহরের দ্বার দেশে পৌঁছে।

ইয়াযীদ তখন জায়রূন রাজপ্রাসাদে অবস্থা করছিলো।

সে প্রাসাদের বেলকুনীতে বসে দৃশ্য উপভোগ করছিলো।

নাউযুবিল্লাহ ! সে দেখতে পেলো আহলে বাইত শরীফ

আলাইহিমুস সালাম বন্দী অবস্থায় আসছেন। কর্তিত শির

মুবারক সমূহ বর্শার আগায় বিদ্ধ রয়েছে। জয়রূন

উপকন্ঠে মিছিল পৌঁছালে পরে ওখানকার কাকগুলো কলরব

করে বিলাপ প্রকাশ করতে লাগলো। ইয়াযীদ তখন

কবিতা আবৃত্তি করে বিজয় উল্লাস করে বলে-

ﻟﻤﺎ ﺑﺪﺕ ﺗﻠﻚ ﺍﻟﺤﻤﻮﻝ ﻭﺍﻟﺸﺮﻗﺖ + ﺗﻠﻚ ﺍﻟﺮﺅﺱ ﻋﻠﻲ ﺷﻔﺎ ﺟﻴﺮﻭﻥ + ﻧﻌﺐ ﺍﻟﻐﺮﺍﺏ ﻓﻘﻠﺖ ﻗﻞ ﺍﻭ ﻻﺗﻘﻞ +

ﻓﻘﺪ ﺍﻗﺘﻀﻴﺖ ﻣﻦ ﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﺩﻳﻮﻧﻲ

অর্থ: যখন ওইসব বাহন চোখে পড়লো, আর ওইসব মস্তক

সামনে ভেসে উঠলো জয়রূন উপকন্ঠে তখন কাককুল কলরব

করে উঠলো। আমি বললাম, কলরব করো বা নাই করো,

আমি রসূলের নিকট হতে আমার ঋনগুলো শোধ করে নিয়েছি।”

আসতাগফিরুল্লাহ !! নাউযুবিল্লাহ !!!

দলীল-

√ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৪ পৃষ্ঠা ।

ইয়াযীদ কাফির যে তার কবিতায় কথিত ঋনের

কথা বলেছে সে বিষয়ে আল্লামা আলূসী বাগদাদী

রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,-

” ইয়াযীদ তার উক্তি আমি রসূলের নিকট হতে আমার

ঋনগুলো শোধ করে নিয়েছি দ্বারা বুঝাতে চাচ্ছে যে, হুজুর

পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বদর

যুদ্ধে ইয়াযীদের নানা উতবা এবং তার মামাকে ও অন্যান্য

আপনজনকে হত্যা করেছিলেন। যার প্রতিশোধরূপে ইয়াযীদ

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার

আহলে বাইত শরীফ উনাদের শহীদ করেছে। নাউযুবিল্লাহ!

এটা স্পষ্ট কুফরীর প্রমান। তার এ উক্তি প্রমানিত হওয়ায়

ইয়াযীদ এজন্য অবশ্যই কাফির হয়ে গেছে।”

দলীল-

√ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৪ পৃষ্ঠা

এখানে দেখা গেলো ইয়াযীদ ইসলামের প্রথম সমর ( বদরের

যুদ্ধে) তার কাফির পূর্বপুরুষদের নিহত হওয়ার প্রতিশোধ গ্রহন

করেছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার

আহলে বাইত শরীফ উনাদের শহীদ করে। নাউযুবিল্লাহ ! এ

থেকে বোঝা গেলো ইয়াযীদের অন্তরে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার আহলে বাইত শরীফ

উনাদের প্রতি চরম বিদ্বেষ এবং দুশমনী ছিলো।

এখন বলুন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

এবং আহলে বাইত শরীফ উনাদের

প্রতি দুশমনি করা কি মুসলমানের বৈশিষ্ট্য নাকি কাফিরের

বৈশিষ্ট্য ??

ইয়াযিদের মত নাপাক, পাপাচার, মুরতাদ এতই নিকৃষ্ট

যে তাকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের সকল ইমামগন এক

বাক্যে খলীফা, আমীরুল মু’মিনিন,

তাবেয়ী ইত্যাদি বলতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন। কারন

ইয়াজিদ ছিলো চরম দুরাচার, লা’নতগ্রস্থ, এবং কাফির।

যে তাকে আমীরুল মু’মিনিন বলবে তাদের ইসলামী দন্ড

মুতাবিক দোররা মারা হয়েছে এবং হবে। এ বিষয়ে হযরত

ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

ﻗﺎﻝ ﻧﻮﻓﻞ ﺑﻦ ﺍﺑﻲ ﺍﻟﻔﺮﺍﺕ ﻛﻨﺖ ﻋﻨﺪ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ﻓﺬﻛﺮ ﺭﺟﻞ ﻳﺰﺩ ﻓﻘﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺍﻣﻴﺮ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﻳﺰﻳﺪ

ﺑﻦ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻋﻨﻪ ﻓﺎﻝ ﺗﻘﻮﻝ ﺍﻣﻴﺮ ﺍﻟﻤﺆﻣﻮﻳﻦ ؟ ﻭﺍﻣﺮ ﺑﻦ ﻓﻀﺮﺏ ﻋﺸﺮﻳﻦ ﺳﻮﻃﺎ

অর্থ: নাওফিল ইবনু আবীল ফুরাত বলেন, আমি খলীফা উমর

ইবনে আব্দুল আযীয রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট

ছিলাম, সেখানে এক ব্যক্তি ইয়াজিদ

প্রসঙ্গে বর্ননা করতে দিয়ে বলে ফেলে ” হযরত

মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু পুত্র আমীরুল মু’মিনিন ইয়াযীদ

বলেছে।”” এ কথা শোনার সাথে সাথেই খলীফা হযরত উমর

ইবনে আব্দুল আযীয রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলে উঠলেন,

তুমি ইয়াযীদকে আমীরুল মু’মিনিন বলছো ? হযরত উমর বিন

আব্দুল আযীয

রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি লোকটিকে দোররা মারার

নির্দেশ দিলেন। তখনই লোকটিকে বিশটি দোররা মারা হয়।”

দলীল-

√ তারীখুল খুলাফা লি জালালুদ্দীন

সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ১৯৭ পৃষ্ঠা।





এবার তাহলে বলুন, ইয়াযীদের মত কাফিরকে আমীরুল মু’মিনিন

বলার জন্য যদি বিখ্যাত তাবেয়ী এবং খলীফা হযরত উমর বিন

আব্দুল আযীয

রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি যদি বিশটা দোররা মারার

আদেশ দেন, তবে বর্তমানে ইয়াযীদকে তাবেয়ী ,

রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, জান্নাতী ইত্যাদি বলার

অপরাধে মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহীউদ্দীন এবং খবীস

জাকির নায়েককে কয়টা দোররা মারা উচিত ???

এছাড়া উপরোক্ত বিখ্যাত কিতাব “তারীখুল খুলাফাতে”

ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহির চরম স্তরের হারাম ও

কুফরী কাজের ফিরিশতি উল্লেখ করা হয়েছে –

“ইয়াযীদ ৬৩ হিজরীতে মদীনা শরীফে বিশাল সৈন্য

বাহীনি প্রেরন করে। হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্মৃতি বিজরিত পবিত্র

মদীনা শরীফ ধ্বংস স্তুপে পরিনত করে ইয়াযীদ বিখ্যাত

ছাহাবী হযরত ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে অবরুদ্ধ

করার সেনাবাহিনীকে পরবর্তী নির্দেশ দেয়। তারা হযরত

ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনাকে অবরোধ

করে রাখে এবং অবরোধ চলা কালীন সময়ে ইয়াযীদ

বাহীনি মিনযিক ( এক ধরনের কামান) থেকে আগুন ও পাথর

নিক্ষেপ করে। ফলে আগুনের গোলায় পবিত্র কাবা শরীফের

দেয়াল, ছাদ ইত্যাদি সম্পূর্ণ ভষ্মীভূত হয়ে যায়।

নাউযুবিল্লাহ !! এ ঘটনার বিবরন মুসলিম শরীফের

বরাতে ইমাম জালালুদ্দীন

সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেন-

” মদীনা শরীফের উপকন্ঠ ‘আল হাররায়’ বিপর্যয় ঘটে।

তুমি কি জানো যে, আল হাররার বিপর্যয় কি ছিলো ?

একদা হযরত ইমাম হাসান

বছরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ প্রসঙ্গে এরূপ

বর্ননা করেন- আল্লাহ পাক উনার কসম করে বলছি, এ ঘটনায়

কারো পরিত্রানের কোন উপায় ছিলো না। এ ঘটনায় বহু

সংখ্যক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এবং অন্যান্য

বহু লোক প্রান হারান। মদীনা শরীফে অবাধে লুন্ঠন

চলতে থাকে। এ ঘটনায় এক হাজার অবিবাহিতা পর্দানশীল

যুবতীর সতীত্ব বিনষ্ট করা হয়। হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে মদীনাবাসীকে ভয়

দেখাবে আল্লাহ পাক তিনি তাকে ভয় দেখাবেন। তার

প্রতি আল্লাহ পাক, ফেরেশতা এবং সকল মানুষ উনাদের

লা’নত ও অভিসম্পাত।”

দলীল-

√ মুসলিম শরীফ।

√ তারীখুল খুলাফা ১৯৭ পৃষ্ঠা ।

উপরোক্ত ঘটনা থেকে পবিত্র মক্কা শরীফ

এবং মদীনা শরীফে ইয়াযীদের বিভৎস্য হত্যাকান্ড

এবং নির্মমতার কারনে আল্লাহ পাক, ফেরেশতা, সকল

মানুষের লা’নত মালাউন এবং কাফির হয়ে গেছে।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রমান হলো, ইয়াযীদের সকল

কর্মকান্ড ছিলো চরম কুফরী। আর যে কুফরী করে সে কাফির

হয়ে মুসলমান থেকে খারীজ হয়ে যায়। যার

কারনে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের সকল ইমাম

মুস্তাহিদ, ইমাম , আওলিয়ায়ে কিরাম সকলেই

ইয়াযীদকে লা’নাতুল্লাহি আলাইহি এবং কাফির ,

জাহান্নামী বলতেও বিন্দু মাত্র দ্বিধা করেন নাই। বিখ্যাত

ইমাম হযরত আহমদ বিন হাম্বল রহমাতুল্লাহি আলাইহি ,

ইমাম হযরত আবু ইয়ালা রহমাতুল্লাহি আলাইহি , ইমাম

ইবনে জাওজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , হযরত

আল্লামা তাফতাজানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ,

আল্লামা ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি ,

হযরত ইমাম আলূসী বাগদাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি সহ

উলামায়ে কিরাম উনাদের বিরাট এক জামায়াত

ইয়াযীদকে কাফির বলে রায় দিয়েছেন।

এছাড়া আল্লামা তাবারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , শায়েখ

আব্দুল হক্ব দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি , শাহ

ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস

দেহলবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইয়াযীদকে লা’নতপ্রপ্ত,

অভিশপ্ত, নাপাক বলে উল্লেখ করেছেন।

কাজেই ইয়াযীদের মত কাট্টা অভিশপ্ত, কাফিরকে তাবেয়ী,

জান্নাতী, রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলে দেওবন্দী মাসিক

মদীনার মাহীউদ্দীন এবং ইহুদী স্পাই জাকির নায়েক

ওরফে কাফির নায়েক মুরতাদ হয়ে গেছে।





 
Top