কোরআন ও হাদিসের আলোকে পিতা-মাতার মর্যাদ
জুমার খুতবা
============
৩য় জুমা, জুমাদা আল উলা, ১৪৩৯হি:, February ২০১৮ সাল

কুরআন ও হাদীসে পিতা-মাতার মর্যাদা
***********************************************
সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আয্হারী
খতিব, মুসাফিরখানা জামে মসজিদ, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম। সহকারী অধ্যাপক, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম। #

بسم الله الرحمن الرحيم
মাতা-পিতার সাথে সন্তানের উত্তম ব্যবহার দুনিয়া ও আখেরাতের সৌভাগ্যের অন্যতম ওসীলাহ। সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহ তাআলা এবং রাসূল হিসাবে প্রিয় নবী হযরত মুহাম¥দ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হক্ব বা অধিকারের পর মানুষের উপর সবচাইতে বড় অধিকার হল মাতা-পিতার অধিকার। পবিত্র কুরআনে আল্লাহর ইবাদাতের সাথে মাতা-পিতার অধিকারের কথা বর্ণনা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। অধিকারের পাশাপাশি পবিত্র কুরআনে পিতা-মাতার কৃতজ্ঞতা স্বীকারের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
“আর তোমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। যদি পিতা-মাতার কোনও একজন কিংবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হন, তবে তুমি তাদেরকে ‘উফ’ শব্দটি পর্যন্ত বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না বরং তাদের সাথে বিনম্রভাবে সম্মাসূচক কথা বল। আর তাদের প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা মমতাপূর্ণ আচরণের সাথে তাদের সামনে নিজেকে বিনয়াবনত কর। আর দোয়া কর, হে আমার প্রতিপালক! তাদের উভয়ের প্রতি রহমতের আচরণ করুন, যেভাবে তাঁরা শৈশবে আমাকে লালন-পালন করেছেন (সূরা বনী ঈসরাইল আয়াত: ২৩-২৪)

অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেন, وَاعْبُدُوا اللَّهَ وَلَا تُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا ۖ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا “তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, কোন কিছুর সাথে তার শরিক করোনা এবং পিতা-মাতার সাথে উত্তম ব্যবহার কর” (সূরা নিসা ৩৬ আয়াত)।

অন্যত্র আল্লাহ বলেন, أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ‘আমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর এবং তোমার মাতা-পিতারও কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর’ (সূরা লোকমান আয়াত নং-১৪)।

কোরান মাজিদ বারংবার ঘোষণা করেছে যে, আল্লাহ তাআলা এবং প্রিয় নবী হযরত মুহাম¥দ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হক্ব বা অধিকারের পরেই পিতামাতার হক। যদি আমরা তাঁদের সাথে সদ্ব্যবহার করি তবে আল্লাহ তাআলার আদেশেরই আনুগত্য করি। যদি আমরা তাঁদের অসম্মান করি তবে আমরা আল্লাহর আদেশকেই অমান্য করি। অতঃপর তার ফলে পরিণামস্বরূপ জাহান্নামে যেতে হবে।

হাদিস শরীফের আলোকে মাতা-পিতা:
—————————————
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসসমূহ পিতামাতার প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে বহু মূল্যবাণ উপদেশ বাণী সবিস্তারে বিবরণ প্রদান করেছে। তাতে পিতামাতার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে পুরষ্কার এবং তাঁদের অবাধ্য হলে শাস্তির বর্ণনাও প্রদান করেছে। নিচে কিছু সংশ্লিষ্ট হাদিস পেশ করা হল:
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” مَا مِنْ وَلَدٍ بَارٍّ يَنْظُرُ إِلَى وَالِدَتِهِ نَظْرَةَ رَحْمَةٍ إِلَّا كَانَ لَهُ بِكُلِّ نَظْرَةٍ حَجَّةٌ مَبْرُورَةٌ “، قَالُوا: وَإِنْ نَظَرَ إِلَيْهَا كُلَّ يَوْمٍ مِائَةَ مَرَّةٍ؟ قَالَ: ” نَعَمْ، اللهُ أَكْبَرُ وَأَطْيَبُ “رواه أبو بكر الإسماعيلي في “معجم أسامي الشيوخ” (৮) – ومن طريقه البيهقي في “شعب الإيمان” (১০/২৬৫) .
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আববাস রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু হতে বর্ণিত, হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন, যে নেক্কার ছেলে নিজ মাতা-পিতার প্রতি রহমত ও আন্তরিকতার দৃষ্টিতে একবার তাকাবে, আল্লাহ তায়ালা প্রত্যেক দৃষ্টির বিনিময়ে তার জন্য একটি মাবরুর হজ্বের (মকবুল হজ্বের) ছওয়াব লিপিবদ্ধ করবেন। সাহাবাগণ আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি উক্ত ব্যক্তি দৈনন্দিন একশত বার তাকায়, তাহলে? তিনি উত্তরে বলেন, হ্যাঁ! আল্লাহ তায়ালা সুমহান ও বড় করুণাময়।(বায়হাক্বী: শুয়াবুল ঈমান ১০/২৬৫)

অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে:
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ أَنَّ رَجُلاً أَتَاهُ فَقَالَ : إِنَّ لِيَ امْرَأَةً وَإِنَّ أُمِّي تَأْمُرُنِي بِطَلاقِهَا ، قَالَ : أَبُو الدَّرْدَاءِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : الْوَالِدُ أَوْسَطُ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ فَإِنْ شِئْتَ فَأَضِعْ ذَلِكَ الْبَابَ أَوْ احْفَظْهُ) ] وعزاه إلى أبي داود الطيالسي ، وأحمد ، وابن ماجه ، والحاكم وصححه ، ( ووافقه الذهبي ) . ا هـ .وقد رمز له السيوطي في الجامع الصغير بالصحة ؛ كما في الفيض ( ৬ / ৩৭১ ) .قال المناوي في فيض القدير ( ৬ / ৩৭১ ) : ” الوالد أوسط أبواب الجنة ” أي : طاعته ، وعدم عقوقه مؤدٍ إلى دخول الجنة من أوسط أبوابها ، ذكره العراقي .وقال البيضاوي : أي خير الأبواب وأعلاها ، والمعنى : أنَّ أحسن ما يتوصل به إلى دخول الجنة ، ويتوصل به إلى الوصول إليها مطاوعة الوالد ، ورعاية جنابه .وقال المباركفوري في تحفة الأحوذي ( ৬ / ২৫ ) : …وقال غيره : إنَّ للجنة أبواباً ، وأحسنها دخولاً أوسطها ، وإنَّ سبب دخول ذلك الباب الأوسط هو محافظةً على حقوق الوالدين ؛ فالمراد بالوالد : الجنس ، أو إذا كان حكم الوالد هذا فحكم الوالدة أقوى . اهـ .(
পিতা মাতা জান্নাতের মাঝের দরজা। যদি চাও, দরজাটি নষ্ট করে ফেলতে পারো, নতুবা তা রক্ষা করতে পারো। [তিরমিযী, তুহফাতুল আহওয়াযী, ৬/২৫)

হিজরত ও জিহাদের চেয়েও পিতা-মাতার হক্ব অগ্রগন্য:
——————————————————
عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ رَجُلًا أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنِّي جِئْتُ أُبَايِعُكَ عَلَى الْهِجْرَةِ، وَلَقَدْ تَرَكْتُ أَبَوَيَّ يَبْكِيَانِ قَالَ: ্রارْجِعْ إِلَيْهِمَا فَأَضْحِكْهُمَا كَمَا أَبْكَيْتَهُمَا(سنن النسائي – البيعة (৪১৬৩) سنن أبي داود – الجهاد (২৫২৮) ( رواه أحمد ২/১৬০ وأبو داود ৩/৩৮ ))গ্ধ
“এক ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে ক্রন্দনরত অবস্থায় রেখে হিজরতের উদ্দেশ্যে বাইয়াত করার জন্য নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে পৌঁছলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ফিরে যাও তোমার পিতা-মাতার কাছে এবং তাদেরকে খুশি করে এসো যেমন ভাবে তাদেরকে কাঁদিয়ে এসেছো।” (নাসায়ী-৪১৬৩, আবু দাউদ-২৫২৮, আহমদ-২/১৬০)।

أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ ، قَالَ : أَقْبَلَ رَجُلٌ إِلَى نَبِيِّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ : أُبَايِعُكَ عَلَى الْهِجْرَةِ وَالْجِهَادِ أَبْتَغِي الأَجْرَ مِنَ اللَّهِ , قَالَ : ” فَهَلْ مِنْ وَالِدَيْكَ أَحَدٌ حَيٌّ ؟ ” قَالَ : نَعَمْ ، بَلْ كِلاهُمَا , قَالَ : ” فَتَبْتَغِي الأَجْرَ مِنَ اللَّهِ ؟ ” قَالَ : نَعَمْ ، قَالَ : ” ارْجِعْ إِلَى وَالِدَيْكَ فَأَحْسِنْ صُحْبَتَهُمَا ” ( صحيح مسلم গ্ধ كِتَاب الْبِرِّ ، وَالصِّلَةِ ، وَالْآدَابِ গ্ধ بَاب بِرِّ الْوَالِدَيْنِ وَأَنَّهُمَا أَحَقُّ بِهِ … رقم الحديث: ৪৬৩০). وهذا لفظ مسلم. وفي رِوَاية لهما: جاء رجل فاستأذنه في الجهاد فقال: أَحَيٌّ وَالِدَاكَ؟ قال: نعم. قال: فَفِيهما فَجَاهِدْ. ( رواه البخاري ৪/১৮ )
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আছ রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আগমন করল এবং বলল, আমি আপনার কাছে হিজরত ও আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের বায়আত হতে এসেছি। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতে চাইলেন, তার পিতা-মাতা বেঁচে আছে কিনা। লোকটি উত্তর করল, হ্যাঁ, উভয়েই বেঁচে আছেন। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, তোমার পিতামাতার কাছে ফিরে যাও এবং তাদের সেবা কর। (বুখারি ৪/১৮, মুসলিম-৪৬৩০)

তাঁরা আমাদের বেহেশত ও দোযখ:
———————————–
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، أَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا حَقُّ الْوَالِدَيْنِ عَلَى وَلَدِهِمَا؟ قَالَ: ্রهُمَا جَنَّتُكَ وَنَارُكَ(رواه ابن ماجه. [৪৯৪১
“হযরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরয করলো, হে আল্লাহর রসূল! সন্তানের ওপর পিতা-মাতার হক কি আছে? তিনি বললেন, তারা তোমার বেহেশত ও দোযখ” (ইবনে মাজাহ-৪৯৪১)।

হাদিসটির মূল কথা হচ্ছে, সন্তান পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করলে বেহেশতের অধিকারী হবে এবং পিতা-মাতার অধিকারসমূহকে পদদলিত করলে, পিতা-মাতার চেয়ে অন্য কোন মানুষকে, আত্মীয়-স্বজনকে অগ্রাধিকার দিলে দোযখের অধিকারী হবে।

عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ্রرَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ، ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُগ্ধ، قِيلَ: مَنْ؟ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: ্রمَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ، أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَগ্ধ أخرجه مسلم، كتاب البر والصلة والآداب، باب رغم أنف من أدرك أبويه أو أحدهما عند الكبر، فلم يدخل الجنة، (৪/১৯৭৮)، برقم: ২৫৫১. مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (২/৩৪৬)
রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তার নাক ধূলায় মলিন হোক (৩ বার) সাহাবায়ে কেরাম আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! সেই হতভাগ্য ব্যক্তিটি কে?

রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, সে হলো ঐ ব্যক্তি, যে তার পিতা-মাতা উভয়কে অথবা একজনকে পেল অথচ তাদের সেবা করে জান্নাত হাছিল করতে পারলো না” (মুসলিম-৪/১৯৭৮, হা-২৫৫১)। অর্থাৎ তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করলে সে জান্নাতে যেত। সে জান্নাত পেয়েও জান্নাতে গেল না, সে বড় হতভাগ্য।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন,
وعنْ عبدِ اللَّهِ بنِ عمرٍو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُما، عن النبيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قالَ: رِضَا اللَّهِ فِي رِضَا الْوَالِدَيْنِ، وَسَخَطُ اللَّهِ فِي سَخَطِ الْوَالِدَيْنِ. (أَخْرَجَهُ التِّرمذيُّ، وصَحَّحَهُ ابنُ حِبَّانَ والحاكِمُ. أخرجه يحيى بن سلام في “تفسيره” (১/১২৭) و (২/৬৭৫ – ৬৭৬) عنه أخرجه أبو نعيم في “الحلية” (৮/২১৫) أخرجه الترمذي في “جامعه” (১৮৯৯) ،وفي “العلل الكبير” (৫৭৯) ، والبزار في “مسنده” (২৩৯৪) ، والحسن بن سفيان في “الأربعون” (৩১)– ومن طريقه ابن حبان في صحيحه (৪২৯) ، و أبو محمد البغوي في “تفسيره” (৩/১২৮) ، و في شرح السنة (৩৪২৪) ، و ابن الجوزي في “البر والصلة” (১২৮)– ، وابن شاهين في “الترغيب” (২৯৯) ، و أبي طاهر السلفي في “احاديث وحكايات” (رقم ১৯ – مخطوط)
“আল্লাহর সন্তুষ্টি পিতার সন্তুষ্টিতে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি পিতার অসন্তুষ্টিতে নিহিত।” (তিরমিযি-১৮৯৯)

মাতা-পিতার দুয়া অবশ্যই কবুল হয়:
—————————————
অন্যত্র তিনি বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
عَنْ أَبِي جَعْفرٍ ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ، يَقُولُ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” ثَلَاثُ دَعَوَاتٍ مُسْتَجَابَاتٌ لَا شَكَّ فِيهِنَّ : دَعْوَةُ الْمَظْلُومِ ، وَدَعْوَةُ الْمُسَافِرِ ، وَدَعْوَةُ الْوَالِدَيْنِ عَلَى وَلَدِهِمَا ” . (رواه الترمذي ( ১৯০৫ ) وأبو داود ( ১৫৬৩ ) وابن ماجه ( ৩৮৬২ ) )
তিন প্রকারের দোয়া নিঃসন্দেহে কবুল হয়। পিতা-মাতার দোয়া (তার সন্তানের জন্যে), (আল্লাহর পথের) মুসাফিরের দোয়া ও মযলুমের দোয়া। (আবু দাউদ-১৫৬৩, ইবনে মাজাহ৩৮৬২, তিরমিযি১৯০৫)

পিতামাতার আনুগত্যের পুরষ্কার:
———————————————–
ﺑِﺮُّﻭْﺍ ﺁﺑَﺎﺋَﻜُﻢْ ﺗَﺒِﺮُّﻛُﻢْ ﺃَﺑْﻨَﺎﺋُﻜُﻢْ( رواه العقيلي في ” الضعفاء ” ( ২৯৯ ) ، و الحاكم ( ৪/১৫৪ ) ، و أبو نعيم (৬/৩৩৫ ) ، و الخطيب ( ৬/৩১১ ) )
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, পিতামাতার আনুগত্য কর এবং তাদের সাথে সদয় ব্যবহার কর। কেননা, যদি তুমি তেমনটি কর তবে তোমার ছেলেমেয়েরাও তোমার আনুগত্য করবে এবং তোমার সাথে সদয় ব্যবহার করবে। (হাকেম-৪/১৫৪. আবু নুয়াইম-৬/৩৩৫)

عَن عَائِشَةَ – رضي الله عنها – عَن النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلْتُ الْجَنَّةَ فَسَمِعْتُ فِيهَا قِرَاءَةً قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا حَارِثَةُ بْنُ النُّعْمَانِ كَذَاكُمْ الْبِرُّ كَذَاكُمْ الْبِرُّ (رواه الإمام أحمد (৩৯/৮২ رقم ২৩৬৭৭) السلسلة الصحيحة . (২/ ৬১৬رقم৯১৩ ).)
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আমি নিদ্রামগ্ন ছিলাম এবং স্বপ্নে দেখতে পেলাম যে, আমি বেহেস্তে প্রবেশ করেছি। তাতে কাউকে কোরান তেলাওয়াত করতে শুনলাম এবং আমি জানতে চাইলাম, আল্লাহর কোন বান্দা বেহেস্তের মধ্যে কোরান তেলাওয়াত করছে? আমাকে বলা হল, তিনি হচ্ছেন হারিছা ইবনে নুমান। পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, হারিছা ইবনে নুমান তার মায়ের খুব অনুগত ছিল এবং তার খুব সেবা যতœ করত। (আহমদ-৮২/৩৯, হা-২৩৬৭৭)

قال رسولُ الله – عليه الصلاة والسلام -: مَن أصْبحَ مُطيعًا لله في والِدَيه أصْبحَ له بابانِ مَفتوحانِ مِن الجنَّة، وإنْ أمسى فمِثْل ذلك، ومَن أصْبحَ عاصيًا لله في والِدَيه أصْبحَ له بابانِ مَفتوحانِ إلى النَّار، وإنْ أمْسى فمِثْل ذلك، وإنْ كان واحدًا فواحدٌ، قال رجل: وإنْ ظَلَماه؟ قال: وإنْ ظَلَماه، وإنْ ظَلَماه، وإنْ ظَلَماهما( رواه البيهقي في “شعب الإيمان” (১০/৩০৬) . تخريج الإحياء” (২/২১৬) . ورواه البخاري في “الأدب المفرد” (১৬)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, পিতা-মাতার হকের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার অনুগত হয়ে যে ব্যক্তি ভোরে ঘুম থেকে জেগে ওঠে, প্রভাতে তার জন্যে জান্নাতের দুটি দরজা খুলে যায়। আর যদি কেবল একজন বেচে থাকেন তখন তার জন্যে শুধু একটি দরজা খুলে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি পিতা-মাতার হকের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার অবাধ্য হয় তার জন্যে জাহান্নামের দুটি দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। আর যদি কেবল একজন বেঁচে থাকেন তবে শুধু একটি দরজাই খুলে দেওয়া হয়। এক ব্যক্তি জানতে চাইল, যদি পিতা-মাতা তার প্রতি নিষ্ঠুর হয়, তবুও কি এরূপ হবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন, যদিও পিতা-মাতা তার প্রতি নিষ্ঠুর হয়। যদিও পিতা-মাতা তার প্রতি নিষ্ঠুর হয়। যদিও পিতা-মাতা তার প্রতি নিষ্ঠুর হয়। (বায়হাকি: শুয়াবুল ঈমান- ১০/৩০৬। বুখারী: আদাবুল মুফরাদ-১৬)

আয়ু ও রিযক বৃদ্ধি পায়:
—————————–
عَنْ ثَوْبَانَ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لَا يَزِيدُ فِي الْعُمْرِ إِلَّا الْبِرُّ ، وَلَا يَرُدُّ الْقَدَرَ إِلَّا الدُّعَاءُ ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيُحْرَمُ الرِّزْقَ بِخَطِيئَةٍ يَعْمَلُهَا ” .( سنن ابن ماجه رقم الحديث: ৮৭)
হযরত ছাওবান রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, দোয়া ব্যতিত অন্য কিছুই ভাগ্যকে বদলাতে পারে না এবং পিতামাতার প্রতি সদাচার ব্যতিত অন্য কিছুই আয়ুকে প্রলম্বিত করতে পারে না। কোন ব্যক্তি তার পাপের কারণে তার রিযিক থেকে বঞ্চিত হয়। (ইবনে মাজাহ-৮৭)


পিতামাতার অবাধ্যতার শাস্তি দুনিয়াতেই:
————————————————-
عن أبي بكرة ، رضي الله عنه قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وآله وسلم يقول : ” كل الذنوب يؤخر الله ما شاء منها إلى يوم القيامة إلا عقوق الوالدين فإن الله تعالى يعجله لصاحبه في الحياة قبل الممات ” ( المستدرك على الصحيحين গ্ধ كتاب الأطعمة গ্ধ كل الذنوب يؤخر الله ما شاء منها إلا عقوق الوالدين.رقم الحديث- ৭৩৪৫)
হযরত আবু বারকাহ রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা ইচ্ছা করলে সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন, পিতা-মাতার নাফরমানী ব্যতিত। আর তিনি পিতা-মাতার অবাধ্যতার শাস্তি মৃত্যুর পূর্বে দুনিয়াতেই দিয়ে দেন। (মুসতাদরাক-৭৩৪৫)

দুধ মাতার সাথেও সদ্ব্যবহার করতে হবে:
——————————————-
عنْ أَبِي الطُّفَيْلِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ، يَقْسِمُ لَحْمًا بِالْجِعْرَانَةِ فَجَاءَتْهُ امْرَأَةٌ بَدْوِيَّةٌ فَبَسَطَ لَهَا رِدَاءَهُ، فَقُلْتُ: مَنْ هَذِهِ؟ قَالُوا: هَذِهِ أُمُّهُ الَّتِي كَانَتْ تُرْضِعُهُ ( أخرجه البيهقي في دلائل النبوة ح১৯৫৬-৫/২৭১ . مسند البزار (২৭৮১))
“হযরত আবু তোফায়েল থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জায়রানা নামক স্থানে গোশত বন্টন করতে দেখলাম। এমন সময় জনৈক এক মহিলা এসে তাঁর সামনে হাজির হলো। তখন রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের চাদর মুবারক বিছিয়ে দিলে মহিলা সেই চাদরের ওপর বসলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, উনি কে? লোকেরা বললো, উনি হলেন তাঁর দুধ মাতা হালিমা রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহা। যিনি তাঁকে দুধ পান করিয়েছেন” (বায়তাকী: ;দালায়েল-১৯৫৬)।

পিতা-মাতার ইন্তিকালের পর আমাদের করণীয়:
————————————————————-
ইসলামে পিতামাতার অধিকার এতই স্বতন্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ যে, তা কখনো শেষ হয় না, এমনকি তাদের মৃত্যুর পরও। এই হাদিস আমাদের উপর তাঁদের মৃত্যু পরবর্তী কিছু অধিকারের কথা তুলে ধরে।
عَنْ أَبِي أُسَيْدٍ مَالِكِ بْنِ رَبِيعَةَ السَّاعِدِيِّ قَالَ: بَيْنَا نَحْنُ جلوس عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ, إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سَلَمَةَ, فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ, هَلْ بَقِيَ مِنْ بِرِّ أَبَوَيَّ شَيْءٌ أَبَرُّهُمَا بِهِ بَعْدَ مَوْتِهِمَا؟ فقَالَ: نَعَمْ، الصَّلَاةُ عَلَيْهِمَا، وَالِاسْتِغْفَارُ لَهُمَا, وَصِلَةُ الرَّحِمِ الَّتِي لَا تُوصَلُ إِلَّا بِهِمَا، وَإِكْرَامُ صَدِيقِهِمَا( رواه أبو داود في الأدب برقم ৪৪৭৬، وأحمد في مسند المكيين برقم ১৫৪৭৯.)
হযারত আবু উসাইদ মালিক ইবনু রাবীআহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, কোনো এক দিন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে বসা ছিলাম। এমন সময় বানী সালামা সম্প্রদায়ের জনৈক ব্যক্তি এসে আরয করল, হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! পিতা-মাতার মারা যাবার পরও আমার উপর তাদের প্রতি সদাচারণ করার দায়িত্ব আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তাদের জন্য দুআ করবে, তাদের গুনাহের মাগফিরাত প্রার্থনা করবে, তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করবে, তাদের আত্মীয়-স্বজনের সাথে এ জন্যে উত্তম ব্যবহার করবে যে, এরা তাদেরই আত্মীয় বন্ধু-বান্ধব এবং তাদের বন্ধু-বান্ধবকে সম্মান দেখাবে। [আবু দাউদ, হাঃ ৫১৪২, ইবন মাজাহ, হাঃ ৩৬৬৪, মিশকাত, হাঃ ৪৯৩৬]

ابن عمر -رضي الله تعالى عنهما- أن النبي -صلى الله عليه وسلم- قال: “إِنّ مِنْ أَبَرِّ البِرِّ أَنْ يَصِلَ الرَّجُلُ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ بَعْد أَنْ يُولِّي”( أخرجه مسلم، كتاب البر والصلة والآداب، باب صلة أصدقاء الأب والأم، ونحوهما، (৪/১৯৭৯)، رقم: (২৫৫২).)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, পিতা-মাতার প্রতি সর্বাধিক উত্তম আনুগত্য হল তাদের মৃতুর পর তাদের সঙ্গী সাথীদের সাথে সদ্ব্যবহার করা। (মুসলিম-২৫৫২)

وعن عبدِ اللَّهِ بن دينارٍ عن عبد اللَّه بن عمر رضي اللَّه عنهما أَنَّ رجُلاً مِنَ الأَعْرابِ لقِيهُ بِطرِيق مكَّة، فَسلَّم عَليْهِ عَبْدُ اللَّه بْنُ عُمرَ، وحملهُ عَلَى حمارٍ كَانَ يرْكَبُهُ، وأَعْطَاهُ عِمامةً كانتْ عَلَى رأْسِهِ، قَالَ ابنُ دِينَارٍ: فقُلنا لهُ: أَصْلَحكَ اللَّه إِنَّهمْ الأَعْرابُ وهُمْ يرْضَوْنَ بِاليسِيرِ. فَقَالَ عبدُ اللَّه بنُ عمر: إِنَّ أَبَا هَذَا كَان وُدّاً لِعُمَرَ بنِ الخطاب رضي اللَّه عنه، وإِنِّي سمِعْتُ رَسُول اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يقول:”إِنَّ أَبرَّ البِرِّ صِلةُ الرَّجُلِ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ وفي روايةٍ عن ابن دينار عن ابن عُمَر أَنَّهُ كَانَ إِذا خَرَجَ إِلَى مَكَّةَ كَانَ لَهُ حِمارٌ يَتَروَّحُ عليْهِ إِذَا ملَّ رُكُوب الرَّاحِلَةِ، وعِمامةٌ يشُدُّ بِها رأْسهُ، فَبيْنَا هُو يوْما عَلَى ذلِكَ الحِمَارِ إذْ مَرَّ بِهِ أَعْرابيٌّ، فَقَالَ: أَلَسْتَ فُلانَ بْنَ فُلانٍ؟ قَالَ: بلَى: فَأَعْطَاهُ الحِمَارَ، فَقَالَ: ارْكَبْ هَذَا، وأَعْطاهُ العِمامةَ وَقالَ: اشْدُدْ بِهَا رأْسَكَ، فَقَالَ لَهُ بَعْضُ أَصْحابِهِ: غَفَر اللَّه لَكَ، أَعْطَيْتَ هذَا الأَعْرابيِّ حِماراً كنْتَ تَروَّحُ عليْهِ، وعِمامَةً كُنْتَ تشُدُّ بِهَا رأْسَكَ؟ فَقَالَ: إِنِّي سَمِعْتُ رسولَ اللَّه صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم يُقولُ: “إِنْ مِنْ أَبَرِّ البِرِّ أَنْ يَصِلَ الرَّجُلُ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ بَعْد أَنْ يُولِّي” وإِنَّ أَبَاهُ كَانَ صَدِيقاً لِعُمر رضي اللَّه عنه،( رواه مسلم (২৫৫২)، وأبو داود (৫১৪৩.)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার বর্ণনা করেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা মক্কার পথে এক বেদুঈনের সাক্ষাত পেলেন। তিনি তাকে সালাম দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি অমুকের পুত্র অমুক? লোকটি উত্তর করল, হ্যাঁ। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা তাকে তার আরোহনের একমাত্র গাধাটি দিয়ে দিলেন এবং এতে আরোহন করতে বললেন। তিনি তাকে তাঁর পাগড়িটিও দিয়ে দিলেন এবং তা মাথায় পরে নিতে বললেন। তাঁর কিছু সহচর বলল, আল্লাহ আপনার কল্যাণ করুন! সে তো কেবলই একজন বেদুঈন। আর বেদুঈনরা সামান্যতেই তুষ্ট হয়ে থাকে। আপনি তাকে আপনার গাধা ও পাগড়ি দিয়ে দিলেন? অথচ এ সবে আপনার নিজেরও প্রয়োজন রয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা উত্তর দিলেন, তার পিতা ছিলেন আমার পিতার (হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বন্ধু এবং আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, একটি বড় পূণ্যের কাজ হল, পিতার বন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে উত্তম আচরণ করা। (মুসলিম-২৫৫২, আবু দাউদ-৫১৪৩)

তাঁদের জন্য ইছালে ছাওয়াব করা:
——————————————
মৃতের জন্যে জীবিতের পক্ষ থেকে উত্তম হাদিয়া হলো ইছালে সওয়াব। সন্তানের উপর পিতা-মাতার জন্যে ইছালে সওয়াব করা অপরিহার্য, এক মুসলমানের উপর অপরাপর মুসলিম ভাইয়ের জন্যে ইছালে সওয়াব করা উত্তম।
قال النَّبيّ الكريمُ صلّى الله تعالى عليه وآله وسلّم: ্রما الْمَيّتُ في القَبْرِ إلاّ كالْغَرِيْق الْمُتَغَوِّثِ يَنتَظِرُ دَعْوَةً تَلحَقُه مِن أبٍ أوْ أُمٍّ أوْ أخٍ أوْ صَدِيقٍ فإذا لَحِقَتْه كانَتْ أحَبَّ إليه مِن الدُّنيا ومَا فيها وإنَّ اللهَ عزّ وجلّ لَيُدخِلُ على أهْلِ القُبُورِ مِن دُعاءِ أهْلِ الأَرْضِ أمْثَالَ الجِبالِ وإنَّ هَديَّةَ الأَحْيَاءِ إلى الأَمْوَاتِ الاِسْتِغفارُ لهم ( هذا الحديث أخرجه البيهقي في “شعب الإيمان”، ٦/٢٠٣، (٧٩٠٥). أخرجه أبوعبدالله الحافظ في ” فوائد الشيخ ـ كما في الشعب ” , ومن طريقه البيهقي في ” الشعب ” ১০ : ৭৫২৭ و ১১ : ৮৮৫৫ , والديلمي في ” مسنده ـ زهر الفردوس ” ج৫ : ل ২৪ : أ ـ ب , من طريق الفضل بن محمد الباهلي , ثنا عبدالله بن المبارك , ثنا يعقوب بن القعقاع , عن مجاهد , عن ابن عباس به مرفوعاً . وأورد هذا الحديث الذهبي في ” الميزان ” ৪ : ৪১৬ , و تبعه الحافظ في ” اللسان ” ৫ : ৯৯ )
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা থেকে বর্নিত রসুল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ডুবন্ত ত্রানপ্রার্থী ব্যক্তির যে অব¯হা , অবিকল সেই অব¯হা হলো কবরে শায়িত মৃতু ব্যক্তির। সে দু‘আর অপেক্ষায় থাকে, যে দু‘আ পিতা-মাতা, ভাই-বন্ধুদের পক্ষ থেকে তার কাছে পৌছবে। যখন এরূপ কোন দু‘আ তার কাছে পৌছে তখন তা তার কাছে দুনিয়া ও দুনিয়ার সকল সম্পদ অপেক্ষা প্রিয়তর মনে হয় (বায়হাকী: ৬/২০৩)।

ইমাম বোখারী ও ইমাম মুসলিম লেখেন:
————————————-
عنْ مَالِكٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ شُرَحْبِيلَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ: خَرَجَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَعْضِ مَغَازِيهِ، وَحَضَرَتْ أُمَّهُ الْوَفَاةُ بِالْمَدِينَةِ، فَقِيلَ لَهَا: أَوْصِي، فَقَالَتْ: فِيمَ أُوصِي؟ الْمَالُ مَالُ سَعْدٍ، فَتُوُفِّيَتْ قَبْلَ أَنْ يَقْدَمَ سَعْدٌ، فَلَمَّا قَدِمَ سَعْدٌ ذُكِرَ ذَلِكَ لَهُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلْ يَنْفَعُهَا أَنْ أَتَصَدَّقَ عَنْهَا؟ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ্রنَعَمْগ্ধ، فَقَالَ سَعْدٌ: حَائِطُ كَذَا وَكَذَا صَدَقَةٌ عَنْهَا، لِحَائِطٍ سَمَّاهُ(سنن النسائي – الوصايا (৩৬৫০) ) (س) ৩৬৬৪ , (د) ১৬৭৯ , (جة) ৩৬৮৪ , (حم) ২২৫১২ (২) (د) ১৬৮১ , انظر صحيح الترغيب والترهيب: ৯৬২عن ابْن عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا : (أَنَّ سَعْدَ بْنَ عُبَادَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ تُوُفِّيَتْ أُمُّهُ وَهُوَ غَائِبٌ عَنْهَا ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّ أُمِّي تُوُفِّيَتْ وَأَنَا غَائِبٌ عَنْهَا ، أَيَنْفَعُهَا شَيْءٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ بِهِ عَنْهَا؟قَالَ : نَعَمْ .قَالَ : فَإِنِّي أُشْهِدُكَ أَنَّ حَائِطِيَ الْمِخْرَافَ صَدَقَةٌ عَلَيْهَا) رواه البخاري (২৭৫৬) ، ومسلم (১০০৪). عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، أَنَّهُ قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أُمَّ سَعْدٍ مَاتَتْ، فَأَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ؟، قَالَ: ্রالْمَاءُগ্ধ، قَالَ: فَحَفَرَ بِئْرًا، وَقَالَ: هَذِهِ لِأُمِّ سَعْدٍ(سنن النسائي – الوصايا (৩৬৬৪) سنن النسائي – الوصايا (৩৬৬৫) سنن النسائي – الوصايا (৩৬৬৬) سنن أبي داود – الزكاة (১৬৮১))
“এক ব্যক্তি (ছাদ বিন ওবাদা) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে আরয করেন, ‘(হে আল্লাহর রাসূল) আমার মা অকস্মাৎ ইন্তেকাল করেছেন এবং তিনি কোনো অসিয়ত করে যাননি। তবে আমার মনে উদয় হয়েছে, তিনি তা চাইলে হয়তো কোনো দান-সদকা করার কথা আমাকে বলতেন। এক্ষণে আমি তাঁর পক্ষ থেকে কোনো দান-সদকাহ করলে তিনি কি এর সওয়াব পাবেন? মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে এরশাদ করেন, ‘হ্যাঁ।’ এমতাবস্থায় ওই ব্যক্তি বলেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমি আপনাকে আমার (খেজুর) ফলে পরিপূর্ণ বাগানটি সদকাহ হিসেবে দানের ব্যাপারে সাক্ষী করলাম’ তিনি বললেন হ্যাঁ। অন্য বর্ণনায়- আমি বললাম কি ছদকা দেবো? উত্তরে বললেন, পানি পান করার ব্যবস্থা কর। (অর্থাৎ কূপ খনন করে দাও)। হযরত সা’আদ রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু একটি কূপ খনন করে বলেছিলেন “এটা সা’দের মায়ের নামে উৎসর্গীত হল।” (আল-বোখারী, ‘অসিয়ত’ অধ্যায়, ৪র্থ খ-, বাব নং ৫১, হাদীস নং ১৯. মুসলিম, ‘অসিয়ত‘ অধ্যায়, বাব নং ১৩, হাদীস নং ৪০০৩)

যারা তাঁদের জীবদ্দশায় যথাযথ সেবা যতœ করতে পারে নি তাদের জন্য করণীয়:
——————————————————————————-
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنَّ الرَّجُلَ لَيَمُوتُ وَالِدَاهُ وَهُوَ عَاقٌّ لَهُمَا ، فَيَدْعُو لَهُمَا مِنْ بَعْدِ مَمَاتِهِمَا فَيَكْتُبَهُ اللَّهُ مِنَ الْبَارِّينَ ” (شعب الإيمان للبيهقي গ্ধ الْخامسُ وَالْخَمْسُونَ مِنْ شُعَبِ الإِيمَانِ وهو … গ্ধ فَصْلٌ فِي حِفْظِ حَقِّ الْوَالِدَيْنِ بَعْدَ مَوْتِهِمَا … رقم الحديث: ৭৪০৪ [مشكاة المصابيح جـ ৩ رقم ৪৯৪২].)
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, প্রায়ই এমনটি হয়ে থাকে যে, কোন ব্যক্তির পিতামাতার একজন কিংবা উভয়েই মৃত্যুবরণ করে, কিন্তু সে তাদের জীবদ্দশায় যথাযথ সেবা যতœ করতে পারে নি। এভাবে নিজেকে তাদের সন্তুষ্টি অর্জন থেকে বঞ্চিত করে। অতঃপর সে তার দোয়ার মধ্যে তাদেরকে স্মরণ করে এবং তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। তখন আল্লাহ তাআলা তার নাম মাতা-পিতার নাফরমানদের তালিকা থেকে পরিবর্তন করে অনুগতশীলদের তালিকাভুক্ত করে নেন। (বায়হাকি-৭৪০৪)

এই হাদিসটি তাদের জন্যে শুভ সংবাদ বহন করে যারা পিতামাতার উভয়কে কিংবা তাদের একজনকে হারিয়েছে। কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না যে, সে তার পিতামাতার প্রতি যথাযথ হক আদায় করেছে। অতএব, আমাদের উচিৎ হবে তাঁদের জীবদ্দশায় সাধ্যমত তাঁদের হক আদায় করার চেষ্টা করা এবং মৃত্যুর পরে তাঁদেরকে আমাদের দোয়ায় স্মরণ করা ও তাঁদের জন্য দান-খায়রাত করা। তা কেবল তাঁদের জন্যেই উপকারী হবে না, বরং তাদের জীবদ্দশায় তাদের সেবা যতœ করার ক্ষেত্রে আমাদের ত্রুটি ও দুর্বলতাকেও মোচন করে দেবে।

অন্যদের পিতামাতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন:
———————————————————-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم: ্রإِنَّ مِنْ أَكْبَرِ الْكَبَائِرِ أَنْ يَلْعَنَ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِগ্ধ. قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ يَلْعَنُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ قَالَ: ্রيَسُبُّ الرَّجُلُ أَبَا الرَّجُلِ، فَيَسُبُّ أَبَاهُ، وَيَسُبُّ أَمَّهُগ্ধ( رواه البخاري- كتاب الأدب، باب لا يسب الرجل والديه- حديث: ‏৫৬৩৬‏، ومسلم- كتاب الإيمان، باب بيان الكبائر وأكبرها- حديث:‏১৫৫‏)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একটি বড় পাপ হল, কোন ব্যক্তির তার পিতামাতাকে অভিশাপ দেয়া। তারা জানতে চাইলেন, কেউ কি তার পিতামাতাকে অভিশাপ দেয়? তিনি উত্তরে এরশাদ করলেন, কোন ব্যক্তি অন্যের পিতাকে অভিশাপ দেয়। ফলে সেও তার পিতাকে অভিশাপ দেয় এবং সে অন্যের মাকে অভিশাপ দেয়, তখন সেও তার মাকে অভিশাপ দেয়। (বুখারি-৫৬৩৬, মুসলিম-১৫৫)

এটি ইসলামের সৌন্দর্য ও মহত্ত যে, তা কেবল নিজের পিতা মাতাকেই ভালবাসতে ও সম্মান জানাতে শিক্ষা দেয় না, বরং অন্যদের পিতামাতার সাথেও অনুরূপ আচরণ করতে শিক্ষা দেয়।

পিতা-মাতার হক্ব আদায় করা কখনও সম্ভব নয়:
———————————————————————
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ ، عَنْ أَبِيهِ ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، أَنَّ رَجُلا كَانَ فِي الطَّوَافِ حَامِلا أُمَّهُ يَطُوفُ بِهَا ، فَسَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، هَلْ أَدَّيْتُ حَقَّهَا ؟ قَالَ : لا ، وَلا بِزَفْرَةٍ وَاحِدَةٍ . (البحر الزخار بمسند البزار ১০-১৩ গ্ধ مُسْنَدُ بُرَيْدَةَ بْنِ الْحُصَيْبِ رَضِيَ اللَّهُ … গ্ধ حَدِيثُ بُرَيْدَةَ بْنِ الْحُصَيْبِ رقم الحديث: ২৬৬ صحيح الأدب المفرد:৯)، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ وَاقِدٍ، نا فَرَجُ بْنُ فَضَالَةَ، نا مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَالَ: يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ، أُمِّي عَجُوزٌ كَبِيرَةٌ، أَنَا مَطِيَّتُهَا، أَجْعَلُهَا عَلَى ظَهْرِي، وَأَنْحَنِي عَلَيْهَا بِيَدِي، وَأَلِي مِنْهَا مِثْلَ مَا كَانَتْ تَلِي مِنِّي، أَوَ أَدَّيْتُ شُكْرَهَا؟ قَالَ: ্রلَاগ্ধ ، قَالَ: لِمَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ؟ قَالَ: ্রإِنَّكَ تَفْعَلُ ذَلِكَ بِهَا وَأَنْتَ تَدْعُو اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يُمِيتُهَا، وَكَانَتْ تَفْعَلُ ذَلِكَ بِكَ وَهِيَ تَدْعُو اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يُطِيلَ عُمْرَكَগ্ধ اخرجه ابن أبي الدنيا في مكارم الأخلاق ص৭৫
বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি তার বৃদ্ধ মাতাকে কাবা শরীফে নিয়ে আসে। সে তাকে তার কাঁধে নিয়ে কাবা শরীফের চারপাশে তাওয়াফ করতে থাকে। সে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখতে পেয়ে জিজ্ঞাসা করল, আমি কি এখন আমার মায়ের প্রতি কর্তব্য পালন করেছি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে উত্তর দিলেন, তুমি তোমার মায়ের একটি শ্বাস-প্রশ্বাসের হকও আদায় করনি। (বুখারী: আদাবুল মুফরাদ-০৯ বায্যার ১০/১৩, হা- ২৬৬ইবনে কাসীর, ৩য় খন্ড)

 
Top