আল্লাহ তায়ালা দেহবিশিষ্ট নন। অতএব তিনি যেকোনো উপাদানের উর্ধ্বে। হ্যাঁ, যেকোনো উপাদান হতেই। চাই তা নূর হোক বা অন্য কিছু।

কুরআন-হাদীস বা উলামায়ে আহলে সুন্নাহর বক্তব্যে যদি এমন কিছু থাকে, যা বাহ্যিক অর্থে দেহ, উপাদান বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ইঙ্গিত করে- তবে বুঝতে হবে, মোটেই তা বাহ্যিক অর্থে নয়। নিশ্চয় বক্তা তা বাহ্যিক অর্থে বুঝেননি, বুঝানওনি।

নবি আল্লাহর জাতি নূরে সৃজন, আল্লাহর চেহারা, তাদের হাতের উপর আল্লাহর হাত, আরশে আযীমে আল্লাহ, আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে নেমে আসেন, আপন হাতে আদম আ. কে তৈরি করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলোর ব্যাখ্যাহীন বাহ্যিক অর্থে বিশ্বাস নিশ্চিত ভ্রান্তি।

তাই যিনি প্রকৃতই হক্বপন্থী, তিনি জেনেশুনে কখনো এমন অর্থ মিন করেন না,করবেন না। যিনি করবেন, তিনি হক্বপন্থী থাকবেন না। ভুলক্রমে করলে, শুধরে নেবেন। শুধরে না নিলে, ভ্রান্ত থাকবেন। এটা তো তিনি চাইবেনই না।

তাই আমাদের উচিত, হক্বপন্থী কারো বক্তব্য শুনেই তাকে হুটহাট ফতোয়া দিয়ে না বসা। বরং অপেক্ষা করা। যোগাযোগ সম্ভব হলে যোগাযোগ করা। এ ব্যাপারে প্রকৃতই তার আক্বীদা জানা। অন্তত গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যার সুযোগ থাকলে তার সুযোগ দেয়া। দিলে তা মেনে নেয়া। (গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যার সুযোগ)না থাকলে শুধরানোর সুযোগ দেয়া। এর আগে ফতোয়া না দেয়া। হ্যাঁ।

উচিত- সাইয়্যেদী আ'লা হযরত র. এর পদাঙ্ক অনুসরণ। তিনি কতজনের কুফুরি পেয়েও হুটহাট ফতোয়া দেননি। অপেক্ষা করেছেন বছরের পর বছর। হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। বছরের পর বছরই। সুযোগ দিয়েছেন শুধরানোর।
কারণ ইসলাম অনেকটাই উদার। ইসলাম চায়, মানুষকে কিভাবে বাঁচানো যায়। কিভাবে কাউকে শুধরানো যায়। কিভাবে কাউকে রাখা যায় কাছে। আনা যায় টেনে বুকে। ইসলাম সর্বশেষ চেষ্টাটুকু করতে চায় পর্যন্ত।

অথচ আমরা যেন ভাঙতে পারলেই খুশি। কাউকে দূর দূর তাড়াতে পারলেই যেন বাহবা। ভাঙতে ভাঙতে অনুতে পরিণতই যেন হতে চাই আমরা। ভুলকে ছুতো বানিয়ে ভাইকে চিরতরে বাইরে রেখে হক্বের ঘরে নিজেই যেন থাকতে চাই একা! তাইতো শুধরানোর সুযোগটুকু পর্যন্ত দিতে চাই না কাউকে।
আহ আফসোস!

যেখানে কাফিরকে আকর্ষণ করে মুসলিম বানানোর কথা আমাদের, সেখানে মুসলিমকে শুধরানোর চেষ্টা না করে দমাদম ফতোয়া মেরে কুফুরীতেই ঠেলে ধরে রাখার চেষ্টা আমাদের!

আহ, আফসোস!

বঙ্গীয় সুন্নীয়তের দিগ্বিদিক ফাটল ও পতনোন্মুখতার অন্যমত কারণ এটা। সন্দেহ কী! আল্লাহ হিফাযত করুন।

- ফা লা ক্ব
 
Top