ইসকাত (নামায রোজার কাফফারা) এর আলোচনা

<div style="text-align: justify;">ইসকাত (নামায রোজার কাফফারা) এর আলোচনা</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">        </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এখানে তিনটি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে-ইসকাতের অর্থ ইসকাত করার সঠিক নিয়ম এবং এর প্রমাণ। যেহেতু কতেক লোক ইসকাতকে সম্পুর্ণ অস্বীকার করে এবং নানা রকম আপত্তি উত্থাপন করে, সেহেতু এ আলোচনাকেও দু’টি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে উপরোক্ত তিনটি বিষয়ে আলোকপাত এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ে উত্থাপিত আপত্তির জবাব দেয়া হয়েছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div><div style="text-align: justify;">প্রথম অধ্যায়</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইসকাতের নিয়ম ও এর প্রমাণ</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">        </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">এ অধ্যায়ে ইসকাতের অর্থ, এর সঠিক নিয়ম, এর উপকার এবং এর প্রমাণ-এ চারটি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ইসকাতের শাব্দিক অর্থ হলো-ফেলে দেয়া। ফিকহ শাস্ত্রের পারিভাষিক অর্থ হলো মইয়তের জিম্মায় যে সব আহকামে শরীয়ত অনাদায়ী রয়ে যায় এগুলো থেকে ওকে দায় মুক্ত করা।</div><div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div class="separator" style="clear: both; text-align: justify;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-5b-od3mQQUI/Z2L6PjGrYZI/AAAAAAAAQIA/vKp6NqgNO3YjqqvRxNqJr0_PAAdboxyBgCNcBGAsYHQ/s1600/1000006435.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="424" data-original-width="640" height="212" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-5b-od3mQQUI/Z2L6PjGrYZI/AAAAAAAAQIA/vKp6NqgNO3YjqqvRxNqJr0_PAAdboxyBgCNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000006435.jpg" width="320" /></a></div><div style="text-align: justify;"><br /></div></div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">✧ যেমন- وجيزالصراط গ্রন্থে উল্লে­খিত আছে-</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">اسقاط آں چيز است كه دور كرده شود از ذمه ميت به ايں قدر كه ميسرشود</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">-মইয়তকে যতটুকু সম্ভব দায়মুক্ত করাকে ইসকাত বলা হয়।’’</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইসকাতের উপকার হলো- মুসলমানের জিম্মায় শরীয়তের অনেক আহকাম ইচ্ছাকৃত কারণে, অবহেলা জনিত বা ভুলবশতঃ থেকে যায়, যা সে স্বীয় জীবনে আদায় করতে পারেনি এবং মৃত্যুর পর শাস্তির সন্মুখীন হয়েছে। তখন তো আর আদায় করার ক্ষমতা নেই এবং রেহাই পাবারও উপায় নেই। পবিত্র শরীয়ত এ অসহায় মৃত ব্যক্তির সাহায্যার্থে কিছু নিয়ম বর্ণনা করেছেন। যদি মৃত ব্যক্তির অলী সেই নিয়ম অনুসারে আমল করে, তাহলে মৃত বেচারা পেতে পারে। এ নিয়মটার নাম ইসকাত। এটা আসলে মইয়তের জন্য এক প্রকার সাহায্য। দেওবন্দী ওহাবীরা যেভাবে জীবিত মুসলমানের শত্রু, তদ্রুপ মৃতদেরও শত্রু। তারা মইয়তের উপকার করা থেকে লোকদেরকে বাধা দেয়। মোট কথা মৃত্যুর পরও তাদের পিছু ছাড়ে না। ইসকাতের নিয়ত হচ্ছে-প্রথমে মৃত ব্যক্তির বয়স ব্যক্তির নির্ণয় করুন। অতঃপর এর থেকে মহিলার বেলায় নয় বছর এবং পুরুষের বেলায় বার বছর বাদ দিন। এখন যত বছর অবশিষ্ট আছে, এতে হিসাব করে দেখুন কত দিন সে বেনাযামী বা বেরোযাদার ছিল। অথবা নামাযের উপযুক্ত হওয়ার পর কি পরিমাণ সে নামায পড়েনি এবং এর কাযা আদায় করেনি। এর একটা আনুমানিক হিসাব নির্ণয় করুন। সেই হিসাব অনুপাতে প্রতি ওয়াক্ত নামাযের জন্য ১৭৫ টাকায় যতগুলো আট আনি হয়, সেই ওজনের গম দান করে দিন। অর্থাৎ ফিতরার জন্য যে হার নির্ধারিত, নামায-রোযার ফিদয়ার জন্যও তা প্রযোজ্য। তাহলে এক দিনে ছয় নামাযের (পাঁচ ফরয, এক ওয়াজিব-বিতির) জন্য ফিদয়া আসে প্রায় সের গম, এক মাসের জন্য আসে প্রায় নয় মণ গম এবং বছরের জন্য আসে প্রায় ১০৮ মণ গম। যদি কারো জিম্মায় বিশ বছরের নামায অনাদায় থেকে যায়, তাহলে কয়েক হাজার মণ গম খয়রাত করতে হবে। হয়ত কোন বড় ধনীর পক্ষে তা সম্ভব হতে পারে। কিন্তু গরীবের জন্য তা অসম্ভব। তাদের জন্য একটি উপায় হলো মইয়তের অলি সামর্থানুসারে গম বা এর সমতুল্য টাকা নিবে এবং কোন মিসকিনকে দিয়ে দিবে। সেই মিসকিন আবার অন্য মিসকিনকে বা স্বয়ং মালিককে দান করবে। সে পুনরায় সেই ফকীরকে সাদকা দিবে। প্রত্যেক বার সাদকায় এক মাসের নামাযের ফিদায়া আদায় হয়ে যাবে। এ ভাবে ১২ বার সদকা করলে, এক বছরের ফিদয়া আদায় হয়ে গেল। এভাবে কয়েকবার আদান প্রদান করলে সম্পূর্ণ ফিদয়া আদায় হয়ে যাবে। নামাযের ফিদায়া আদায় করার পর এভাবে রোযার ফিদয়া আদায় করুন। এতে আশা করা যায় দয়াময় আল্লাহ তা’আলা মাফ করবেন। এটাই হচ্ছে ইসকাতের সঠিক নিয়ম। পাঞ্জাবে সাধারণভাবে একটি প্রথা প্রচলিত আছে যে মসজিদ থেকে এক কপি কুরআন শরীফ সংগ্রহ করে এর উপর একটি টাকা রাখে এবং কয়েক জন লোক এতে হাত লাগায়। অতঃপর পুনরায় কুরআন শরীফটা মসজিদে ফেরত দেয়। এ রকম করার দ্বারা নামাযের ফিদয়া আদায় হবে না। কুরআন অমূল্যবান। যদি কুরআন শরীফের একটি কপি খয়রাত করে দেয়া হয়, তাহলে সব নামাযের ফিদয়া আদায় হয়ে গেল। কিন্তু এটা ভুল ধারণা। কেননা এখানে তো কুরআনের কাগজ ও মুদ্রণ খরচটাই বিবেচ্য। যদি এ কপিটার দাম দুই টাকা হয়, তাহলে দু’টাকা দানেরই ছওয়াব পাবে। তা নাহলে ওই সমস্ত ধনীরা যাদের হাজার হাজার টাকা যাকাত ওয়াজিব হয়, তারা এত টাকা খরচ করতে যাবে কেন, কেবল একটি কুরআন শরীফ দান করে দিলেই হলো। মোট কথা হলো এ নিয়ম বিশুদ্ধ নয়। অর্থাৎ এর দ্বারা ইসকাতের উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে না। তবে একে হারাম বলা যাবে না। কোন কিছুকে বিনা দলীলে কেবল নিজস্ব রায় দ্বারা হারাম বলা দেওবন্দী মহারথীদের কাজ।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">        </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">বিঃদ্রঃ-আমি ফিদয়ার যে পরিমাণ বর্ণনা করেছি অর্থাৎ ছয় নামাযের জন্য বার সের গম, তা প্রত্যেক জায়গার জন্য প্রযোজ্য নয়। এক নামাযের ফিদয়া হচ্ছে ১৭৫ টাকা পরিমাণ আট আনি ওজনের গম। সেই অনুপাতে নিজ নিজ এলাকায় প্রচলিত পরিমাপ মুতাবিক আদায় করতে হবে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">        </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">ইসকাতের প্রথম অধ্যায়কে তিনটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম পরিচ্ছেদে হারাম থেকে রেহাই, ছওয়াব অর্জন বা শরীয়তের কোন প্রয়োজনীয় কাজ পূর্ণ করার জন্য শরয়ী হীলা জায়েযের প্রমাণ।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">        </div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;">দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে নামাযের ফিদয়া জিনিস দ্বারা আদায় হওয়ার প্রমাণ এবং তৃতীয় পরিচ্ছেদে স্বয়ং ইসকাতের প্রমাণ দেয়া হয়েছে।</div><div style="text-align: justify;"><br /></div><div style="text-align: justify;"><br /></div></div>

ইসকাত (নামায রোজার কাফফারা) এর আলোচনা

ইসকাত (নামায রোজার কাফফারা) এর আলোচনা          এখানে তিনটি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে-ইসকাতের অর্থ ইসকাত করার সঠিক নিয়ম এবং এর প্রমাণ। যেহেতু কত...

Read more »

আবদুন নবী, আবদুর রাসুল নামকরণের বিরোধীদের জবাব

<div>দ্বিতীয় অধ্যায়</div><div><br></div><div>উত্থাপিত আপত্তিসমূহ এবং এর জবাব</div><div><br></div><div><br></div><div>        ১নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>‘আবদ’ এর অর্থ হচ্ছে আবেদ-ইবাদতকারী। তাহলে আবদুন নবীর অর্থ হবে নবীর ইবাদতকারী এবং এ ধরনের অর্থবোধক নাম সুস্পষ্ট শিরক। সুতরাং এ ধরনের নামকরণ নিষেধ।</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>উত্তরঃ আবদের অর্থ আবিদ (ইবাদতকারী) ও হতে পারে, আবার খাদিমও হতে পারে। যখন আবদ শব্দটা আল্লাহর দিকে ইঙ্গিত করা হবে, তখন এর অর্থ হবে আবিদ ইবাদতকারী আর যখন গায়রুল্লাহর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়, তখন এর অর্থ হবে খাদিম, গোলাম ইত্যাদি। সুতরাং আবদুন নবীর অর্থ হলো নবীর গোলাম।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ ফাতওয়ায়ে আলমগীরীর কিতাবুল কারাহিয়াতে تَسْمِيَة الْأَوْلَاد وكناهم وَالْعَقِيقَة শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>وَالتَّسْمِيَةِ بَاسِمٍ يُوجَدُ فِي كِتَابِ اللَّهِ تَعَالَى كَالْعَلِيِّ وَالْكَبِيرِ وَالرَّشِيدِ وَالْبَدِيعِ جَائِزَةٌ لِأَنَّهُ مِنْ الْأَسْمَاءِ الْمُشْتَرَكَةِ وَيُرَادُ فِي حَقِّ الْعِبَادِ غَيْرُ مَا يُرَادُ فِي حَقِّ اللَّهِ تَعَالَى كَذَا فِي السِّرَاجِيَّةِ.</div><div><br></div><div>অর্থাৎ যে নাম কুরআন শরীফে পাওয়া যায়, সে নামে নামকরণ জায়েয। যেমন আলী, রশীদ, বদি। কেননা ওগুলো সংযুক্ত নামসমূহের অর্ন্তভূক্ত এবং বান্দার জন্য এগুলোর সেই অর্থই বোঝানো হবে, যা আল্লাহর জন্য বোঝানো হবে না।’’ ৪৩৩</div><div><br></div><div>➥433. মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী, কিতাবুুল কারাহিয়্যাত, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩৬২।</div><div><br></div><div><br></div><div>এর থেকে বোঝা গেল যে, আল্লাহর নামও আলী আবার হযরত আলী (رضي الله عنه) এর নামও আলী। অনুরূপ খোদার নামও রশীদ, বদি ইত্যাদি। আবার বান্দার জন্যও এ নাম হতে পারে। তবে আল্লাহর জন্য এসব শব্দের অর্থ এক রকম, আর বান্দার বেলায় অন্য রকম। তদ্রুপ ‘আবদুল্লাহ’ এর অর্থ আল্লাহর আবিদ ইবাদতকারী আর আবদুন নবীর অর্থ নবীর গোলাম। যদি এ ধরনের প্রতি বিধান করা না যায়, তাহলে কুরআনের আয়াত।’’ ৪৩৪</div><div><br></div><div>➥434. সূরা নূর, আয়াত নং-৩২।</div><div><br></div><div><br></div><div> مِنْ عِبَادِكُمْ এর কি অর্থ করা যেতে পারে?</div><div><br></div><div><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-KYHJqDqD9fk/Z2L9RWewxSI/AAAAAAAAQIw/smCOp0M6qjUEkuyQmoN-bDfPafzvRl5MgCNcBGAsYHQ/s1600/1000007483.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="410" data-original-width="728" height="180" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-KYHJqDqD9fk/Z2L9RWewxSI/AAAAAAAAQIw/smCOp0M6qjUEkuyQmoN-bDfPafzvRl5MgCNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000007483.jpg" width="320"></a></div><br></div><div>২নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফের الادب الاسامى অধ্যায়ে এবং মুসলিম শরীফের দ্বিতীয় খণ্ড كتاب الالفاظ من الادب বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>لَا يَقُولَنَّ أَحَدُكُمْ عَبْدِي وَأَمَتِي كُلُّكُمْ عَبِيدُ اللهِ، وَكُلُّ نِسَائِكُمْ إِمَاءُ اللهِ، وَلَكِنْ لِيَقُلْ غُلَامِي وَجَارِيَتِي</div><div><br></div><div>তোমাদের মধ্যে কেউ عَبْدِي (আমার বান্দা) বলিও না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা এবং তোমাদের সমস্ত মহিলা আল্লাহর বাদী। কিন্তু ‘আমার গোলাম’ ও ‘আমার চাকরাণী’ বলতে পারেন।’’ ৪৩৫</div><div><br></div><div>➥435. ইমাম নাসাঈ, আস-সুনানুল কোবরা, হা/৯৯৯৯, ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৭৬৪, হাদিস/২২৪৯</div><div><br></div><div><br></div><div>এর থেকে প্রতীয়মান হলো যে, ‘আবদ’ শব্দটি গায়রুল্লাহর প্রতি ইঙ্গিত করা হাদীছের বিপরীত, তাই হারাম। ‘আবদুন নবী’ নামেও এ ইঙ্গিতটা রয়েছে, তাই নিষেধ।</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ এ নিষেধাজ্ঞাটা হচ্ছে মাকরূহ তনযিহি পর্যায়ের, অর্থাৎ আমার বান্দা বলা ঠিক নয়, বরং আমার গোলাম বলাই শ্রেয়।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ উক্ত হাদীছের প্রেক্ষাপটে নববী শরহে মুসলিমে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>فَإِنْ قِيلَ فَقَدْ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ تَلِدَ الْأَمَةُ رَبَّتَهَا أَوْ رَبَّهَا فَالْجَوَابُ مِنْ وَجْهَيْنِ أَحَدُهُمَا أَنَّ الْحَدِيثَ الثَّانِي لِبَيَانِ الْجَوَازِ وَأَنَّ النَّهْيَ في الأول للأدب وكراهة التنزيه لا للتحريم</div><div><br></div><div>-যদি বলা হয় যে, হুযুর (ﷺ) আলামতে কিয়ামত প্রসঙ্গে বলেছেন-বাঁদী নিজের প্রভুকে জন্ম দিবে। (অর্থাৎ বান্দাকে প্রভু বলেছেন) এর দু’রকম উত্তর রয়েছে-</div><div><br></div><div>এক. দ্বিতীয় হাদীছটি বৈধতা প্রকাশার্থে এবং প্রথম হাদীছের নিষেধাজ্ঞাটা হচ্ছে সম্মানসূচক এবং মাকরূহ তানযিহি, তাহরীমা নয়।’’  ৪৩৬</div><div><br></div><div>➥436. ইমাম নববী, শরহে সহীহ মুসলিম, খণ্ড-১৫, পৃষ্ঠা-৬।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ সেই একই জায়গায় মুসলিম শরীফে আছে-</div><div><br></div><div>وَلَا يَقُولَنَّ أَحَدُكُمْ لِلْعِنَبِ الْكَرْمَ، فَإِنَّ الْكَرْمَ الرَّجُلُ الْمُسْلِمُ</div><div><br></div><div>একই জায়গায় এটাও উল্লে­খিত আছে  - ৪৩৭</div><div><br></div><div>لَا تُسَمُّوا الْعِنَبَ الْكَرْمَ، فَإِنَّ الْكَرْمَ الرَّجُلُ الْمُسْلِمُ</div><div><br></div><div>অর্থাৎ আঙ্গুরকে করম বল না, কেননা করমতো মুসলমান।’’</div><div><br></div><div>➥437. ইমাম মুুসলিম, আস-সহীহ, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৭৬৩, হা/২২৪৭।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফের কিতাবুল আদব শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>إِنَّ اللَّهَ هُوَ الْحَكَمُ وَإِلَيْهِ الْحُكْمُ، فَلِمَ تُكَنَّى أَبَا الْحَكَمِ</div><div><br></div><div>-আল্লাহ তো হুকুম এবং হুকুমের মালিক তিনি।’’ ৪৩৮</div><div><br></div><div>➥438. সুনানে নাসাঈ, ৮/২২৬ পৃ: হা/৮৩৮৭, ইমাম নাসাঈ, আস-সুনানিল কোবরা, ৫/৪০৩ পৃ: হা/৫৯০৭, ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, ৪/২৮৯ পৃ: হা/৪৯৫৫</div><div><br></div><div><br></div><div>তাহলে তোমার নাম আবুল হুকুম কেন?</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফের সেই জায়গায় আরও আছে -</div><div><br></div><div>عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا تُسَمِّيَنَّ غُلَامَكَ يَسَارًا، وَلَا رَبَاحًا، وَلَا نَجِيحًا، وَلَا أَفْلَحَ</div><div><br></div><div>-‘‘নিজের গোলামের নাম এসার (প্রাচুর্য) রাবা (উপকার) নজিহ (ধৈর্যশীল) এবং আফলাহ (সাফল্য) রেখো না।’’ ৪৩৯</div><div><br></div><div>➥439. খতিব তিবরিযি, মিশকাত, কিতাবুুল আদাব, ৪০৭, সহীহ মুসলিম, ৩/১৬৮৫ পৃ: হা/২১৩৭, ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, ৪/২৯০ পৃ: হাদিস/৪৯৫৮</div><div><br></div><div><br></div><div>উপরোক্ত সমস্ত হাদীছে ওই সব নামের প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা জ্ঞাপন করা হয়েছে, তা মাকরূহ তানযিহি হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। তা না হলে কুরআন হাদীছের মধ্যে বিশেষ  করে হাদীছের সমূহের মধ্যে ভীষণ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হবে। দেখুন,</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ রব খোদার নাম কিন্তু কুরআন করীমে বান্দাদেরকেও রব বলা হয়েছে। যেমন -৪৪০</div><div><br></div><div>﴿كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا﴾ ارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ</div><div><br></div><div>যদি কোন ব্যক্তি কাউকে নিজের মুরুব্বী বা রব বলে, তাহলে মুশরিক হবে না। তবে এর থেকে বিরত থাকতে পারলে ভাল।</div><div><br></div><div>➥440. সূূূরা বানি ইসরাঈল, আয়াত নং-২৪, সূরা ইউসূফ, আয়াত নং-৫০।</div><div><br></div><div><br></div><div>কারণ এ ধরনের নামকরণ আবশ্যক নয়। অবশ্য বর্তমান যুগের দেওবন্দীদেরকে চেতানোর জন্য যদি এ রকম নাম রাখা হয়, তাহলে ছওয়াবের ভাগী হবে, যেমন হিন্দুস্থানে গাভীর কুরবানী। আমি এর বিশ্লেষণে ফাতিহা শীর্ষক আলোচনায় বলেছি যে, যেই মুস্তাহাব কাজে দ্বীনের শত্রুরা বাধা দিতে চেষ্টা করে ওটা নিশ্চয়ই করা চাই।</div><div><br></div><div><br></div><div><br></div><div><br></div>

আবদুন নবী, আবদুর রাসুল নামকরণের বিরোধীদের জবাব

দ্বিতীয় অধ্যায় উত্থাপিত আপত্তিসমূহ এবং এর জবাব         ১নং আপত্তিঃ  ‘আবদ’ এর অর্থ হচ্ছে আবেদ-ইবাদতকারী। তাহলে আবদুন নবীর অর্থ হবে নবীর ইবাদত...

Read more »

আবদুন নবী, আবদুর রাসুল নামকরণের বৈধতার প্রমাণ

<div>প্রথম অধ্যায়</div><div><br></div><div>আবদুন নবী, আবদুর রাসুল নামকরণের বৈধতার প্রমাণ</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>وَأَنْكِحُوا الْأَيَامَى مِنْكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ</div><div><br></div><div>অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিবাহ সম্পাদন কর এবং তোমাদের উপযুক্ত বান্দা ও বাঁদীদেরও’’  ৪৩০</div><div><br></div><div>➥430. সূূরা নূর, আয়াত নং-৩২।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ এ আয়াতের عِبَادِ শব্দটাকে كُمْএর সাথে সম্পর্কিত করা হয়েছে, যার অর্থ- তোমাদের বান্দাগণ। আর এক জায়গায় ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ</div><div><br></div><div>অর্থাৎ হে মাহবুব (ﷺ) বলে দিন- ওহে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আল্লাহর অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ো না।’’  ৪৩১</div><div><br></div><div>➥431. সূূূরা জুমার, আয়াত নং-৫৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>এ আয়াতে يَا عِبَادِيَ  শব্দের দু’টি অর্থ প্রকাশ পায়। এক, আল্লাহ বলেন, ওহে আমার বান্দাগণ; দুই, হুযুর (ﷺ) কে নির্দেশ দেয়া হয়েছ, আপনি বলে দিন ওহে আমার বান্দাগণ। এ দ্বিতীয় অর্থে রসুলুল্লাহর বান্দা বোঝানো হয়েছে অর্থাৎ (ﷺ) এর গোলাম এবং উম্মত। অনেক বুযুর্গানে দ্বীন দ্বিতীয় অর্থটি গ্রহণ করেছেন।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ আল্লামা রুমী মসনবী শরীফে বলেছেন-</div><div><br></div><div>بنده خود خواند احمد در رشد</div><div><br></div><div>جمله عالم را بخواں قل يا عباد</div><div><br></div><div>অর্থাৎ সমগ্র জগতবাসীকে হুযুর (ﷺ) স্বীয় বান্দা বলেছেন। কুরআন শরীফে দেখুন يَا عِبَادِيَ (বলে দিন, ওগো আমার বান্দাগণ) বলা হয়েছে।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ হাজী ইমাদুল্লাহ সাহেবের রচিত নফহায়ে মক্কিয়ার অনুবাদ শমায়েমে ইমদাদিয়ার ১৩৫ পৃষ্ঠায় উল্লে­খিত আছে-ইবাদুল্লাহকে ইবাদুর রসুল বলা যায়। যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেছেন-</div><div><br></div><div>قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ</div><div><br></div><div>এখানে عِبَادِيَ এর ى সর্বনাম দ্বারা হুযুর (ﷺ) কে বোঝানো হয়েছে। মৌলভী আশরাফ আলী থানবী উক্ত আয়াতের অর্থ করেছেন-"আপনি বলে দিন, ওহে আমার বান্দাগণ।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧  ازالة الخفاء গ্রন্থে শাহ ওলীউল্লাহ সাহেব আল রেয়াজুন নফরা ইত্যাদি কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন যে হযরত উমর (رضي الله عنه) মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে গিয়ে বলেছিলেন-</div><div><br></div><div>قد كنت مع رسول الله ﷺ فكنت عبده وخادمه</div><div><br></div><div>অর্থাৎ আমি হুযুর (ﷺ) এর সাথে ছিলাম। তখন আমি তাঁর (ﷺ) বান্দা ও খাদেম ছিলাম।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মছনবী শরীফে সেই ঘটনাটা উদ্ধৃত করা হয়েছে। যখন হযরত সিদ্দীক আকবর (رضي الله عنه) হযরত বিলালকে ক্রয় করে হুযুর (ﷺ) এর দরবারে আনলেন তখন আরয করলেন-</div><div><br></div><div>گفت مادو بندگان كوئے تو</div><div><br></div><div>كرد مش آزاد هم برروئے تو</div><div><br></div><div>আমরা দু’জন হলাম আপনার দরবারের বান্দা। আমি একে আপনার সামনে আযাদ করছি।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ দুর্রুল মুখতারের ভূমিকায় লেখক স্বীয় জ্ঞান অর্জনের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন-</div><div><br></div><div>فَإِنِّي أَرْوِيهِ عَنْ شَيْخِنَا الشَّيْخِ عَبْدِ النَّبِيِّ الْخَلِيلِيِّ</div><div><br></div><div>আমি এটা আমার শেখ আবদুন নবী খলীলী থেকে বর্ণনা করছি।’’৪৩২  </div><div><br></div><div>➥432. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৯।</div><div><br></div><div><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-d4i9XSfKKWw/Z2L9LSf3fQI/AAAAAAAAQIo/Ul2vp43qoM85e7ETVePhlIIWGE2BDc41wCNcBGAsYHQ/s1600/1000006435.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="424" data-original-width="640" height="212" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-d4i9XSfKKWw/Z2L9LSf3fQI/AAAAAAAAQIo/Ul2vp43qoM85e7ETVePhlIIWGE2BDc41wCNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000006435.jpg" width="320"></a></div><br></div><div>এতে বোঝা গেল যে, দুর্রুল মোখতারের লেখকের উস্তাদের নাম আবদুন নবী ছিল।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মৌলভী রশীদ আহমদ গাঙ্গুহীর শোক গাথায় মৌলভী মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী লিখেছেন-</div><div><br></div><div>قبوليت اسے كهتے هيں مقبول ايسے هوتے هيں</div><div><br></div><div>عبد سود كا ان كے لقب هے يوسف ثانى</div><div><br></div><div>এ শে’র এর ভাবার্থ হলো যে মৌলভী রশীদ আহমদের কালো বান্দাও দ্বিতীয় ইউসুফ দাবী করে।</div><div><br></div><div><br></div><div>মোট কথা হলো, গায়রুল্লাহর বেলায় বান্দা শব্দের প্রয়োগ কুরআন, হাদীছ, ফকীহগণের উক্তিসমূহ ও বিরোধিতাকারীদের বিভিন্ন বক্তব্য থেকে প্রমাণিত। আরববাসীরা সাধারণভাবে বলে যে عبدى حر (আমার বান্দা আযাদ) জনৈক আরব্য কবি বলেছেন- ع-الواهب المائة الهجان وعبدها</div><div><br></div><div><br></div><div>একটি মজার কথাঃ তাকবিয়াতুল ঈমানে আলী বখশ, পীর বখশ, গোলাম আলী, মাদার বখশ, আবদুন নবী ইত্যাদি নাম রাখাকে শিরক বলা হয়েছে। কিন্তু তাযকিরাতুর রশীদের প্রথম খণ্ডের ১৩ পৃষ্ঠায় রশীদ আহমদ সাহেবের বংশগত শাজরায় এরূপ বর্ণিত আছে ‘মৌলানা রশীদ আহমদ, ইবনে মৌলানা হেদায়েত আহমদ, ইবনে কাজী পীর বখশ, ইবনে গোলাম আলী আর মায়ের দিক থেকে বংশ পরিচয় এভাবে লিখা হয়েছে-রশীদ আহমদ ইবনে করিমুন নিসা, বিনতে ফরিদ বখশ ইবনে গোলাম কাদির, ইবনে মোহাম্মদ সালেহ ইবনে গোলাম মুহাম্মদ। বলুন, দেওবন্দীরা, মৌলভী-রশীদ আহমদের পারিবারিক মুরুব্বীগণ মুশরিক মুরতেদ ছিল কিনা? যদি না বলেন, তাহলে কেন? আর যদি হ্যাঁ বলেন, তাহলে ধর্মদ্রোহীর বংশ বৈধ, না অবৈধ?  </div><div><br></div><div><br></div><div><br></div><div><br></div>

আবদুন নবী, আবদুর রাসুল নামকরণের বৈধতার প্রমাণ

প্রথম অধ্যায় আবদুন নবী, আবদুর রাসুল নামকরণের বৈধতার প্রমাণ ✧ কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান- وَأَنْكِحُوا الْأَيَامَى مِنْكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ ...

Read more »

কিতাবুল ফিতানঃ নুয়াইম বিন হাম্মাদ (১০৬ টি হাদিস)

<p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃআঃ হইতে বর্ণিত</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন একদা রসূল সাঃআঃ আমাদের নিয়ে একটু বেলা থাকতেই আসরের নামায আদায় করেন। অতঃপর সূর্য অস্ত ভাষণ দিলেন। উক্ত ভাষণে কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু ঘটবে তার সমস্ত কিছুই বর্ণনা করেন। তাহাঁর সেই ভাষণটি যারা ভুলে যাওয়ার তারা ভুলে গিয়েছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর রাঃআঃ হইতে বর্ণিত</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা আমার সম্মুখে দুনিয়াকে উঁচু করে ধরলেন। অতঃপর দুনিয়াকে এবং তাতে কিয়ামত পর্যন্ত সংঘটিতব্য বিষয়গুলো দেখছিলাম যেমন আমার দুই হাতের তালুগুলো দেখছি এটা হলো আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বিষয়, যা তিনি প্রকাশ করেছিলেন তার পূর্ববর্তি নবীগনকে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩. হযরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাঃআঃ হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, কিয়ামত পর্যন্ত সংঘটিতব্য সমস্ত ফিতনা সম্পর্কে আমি সবচেয়ে বেশী অবগত। রসূল সাঃআঃ আমার নিকট সেই ফিতনা সম্পর্কে অনেক গোপন বিষয় আলোচনা করিয়াছেন যা আমাকে ছাড়া অন্য কারো কাছে বর্ণনা করেন্নি। কিন্তু একদিন রসূল সাঃআঃ এক মজলিসে আগমণ করিলেন। এরপর ছোট বড় বহু ফিতনা সম্পর্কে আলোচনা করিলেন। উল্লেখ্য ঐ মজলিসে যারা উপস্থিত ছিল আমি ছাড়া প্রত্যেকেই দুনিয়া থেকে চলে গেছেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪. হযরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাঃআঃ হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, ঘোর অন্ধকার রাত্রির টুকরোর মত ফিতনা একের পর এক আসতেই থাকিবে। তা তোমাদের কাছে গরুর চেহারার ন্যায় একই রকম মনে হইবে। লোকেরা জানবেনা যে কোন টা কি কারণে হচ্ছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫. হযরত হুযাইফা বা হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন। এই ফিতনা গরুর ন্যায়। তাতে বহু মানুষ ধ্বংশ হইবে। তবে যারা পূর্বেই এ সম্পর্কে অবগতি লাভ করিবে তারা ধ্বংশ হইবে না।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করেন, কিয়ামতের পূর্বে যখন যুগ পরস্পর নিকটে এসে যাবে তোমাদের কাছে কালো, বুড়ো ধরনের একটি উট এসে বসবে ফিতনার রূপ ধারণ করে। যেন মনে হইবে সেটা অন্ধকারে ছেয়ে যাওয়া রাত্রের একটি টুকরা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭. র্কুয ইবনু আল্কামা খুযায়ী হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর কাছে এক লোক জানতে চাইল ইসলামের কি কোনো শেষ রয়েছে? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন হ্যাঁ, আরব বা অনারব যে কোনো এলাকার কারো ঘরের সদস্যদের প্রতি আল্লাহ তাআলা কল্যাণ কামনা করলে তাদেরকে তিনি ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">জিজ্ঞাসা করা হল, এরপর কি হইবে? রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, এরপর পাহাড় তুল্য ফিৎনা প্রকাশ পাবে। অতঃপর ঐ লোক বলল, আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ! ইয়া রাসূলুল্লাহ! এটা কখনো হতে পারেনা। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, কসম সে সত্ত্বার যার হাতে আমার রূহ, অবশ্যই হইবে। এরপর উক্ত ফিৎনা চলাকালীন তোমরা আশ্রয় নিবে ফনাতুলা কালো বিষাক্ত সাপের। যেখানে তোমরা একে অপরের সাথে মারামারি, হানাহানিতে লিপ্ত হইবে। বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ইবনু শিহাব যুহরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, কালো বিষাক্ত যখন কাউকে দংশন করে তখন দংশিত স্থানে মুখের লালা জাতীয় কিছু বিষ লাগিয়ে দেয়ার পর মাথা উঠিয়ে লেজের উপর দাড়িয়ে যাবার চেষ্টা করে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮..০ভিন্ন সুত্রে উপরের হাদিস বর্নিত হয়েছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯. ফেৎনাকালীন আত্মরক্ষা করা মোস্তাহাব</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০. হযরত আবু মুসা আশআরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রসূল সাঃআঃ ইরশাদ করিয়াছেন, কিয়ামত আসার পূর্বে ‘হারজ’ সংঘটিত হইবে। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো হারজ কী? তিনি বলিলেন হত্যা এবং মিথ্যা লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো হে আল্লাহর রসূল! এখন কাফেররা যে ভাবে নিহত হচ্ছে তার চেয়ে বেশী হত্যা সংঘটিত হইবে? রসূল সাঃআঃ বলিলেন তোমাদের মাধ্যমে কাফেররা নিহত হইবেনা বরং মানুষ তার প্রতিবেশী, আপন ভাই ও চাচাতো ভাইকে হত্যা করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১১. হযরত উসাইদ ইবনু মুতাশাসি ইবনু মুয়াবিয়া (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আমি আবু মুসা (রাঃআঃ) কে বলিতে শুনিয়াছি যে, কিয়ামত আসার পূর্বে মুসলমানদের মধ্য হতে ফিতনা ও হত্যা সংঘটিত হইবে। এমনকি মানুষ তার দাদা,চাচাতো ভাই, পিতা ও আপন ভাইকে হত্যা করিবে। আল্লাহর শপথ! আমি আশংকা করছি যে, না জানি আমি এবং তোমরা তাতে জড়িত হয়ে যাই।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১২. হযরত আবু মুসা আশআরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নিশ্চয় তোমাদের সম্মুখে ঘোর অন্ধকার রাত্রির একাংশের ন্যায় ফিতনা সংঘটিত হতে থাকিবে,তাতে কোন ব্যক্তি সকালে মুমিন ও বিকালে কাফের এবং বিকালে মুমিন ও সকালে কাফেরে পরিণত হতে থাকিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৩. হযরত মুজাহিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নবী করীম (সাঃআঃ) বলেছেন, অন্ধকার রাত্রির টুকরোর মত ফিতনা দেখা দিবে। সে সময় সকালে একজন মুমিন হলে বিকালে কাফের হয়ে যাবে। বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফের হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে কেউ পার্থিব সামান্য সামগ্রির বিনিময়ে তার দ্বীন বিক্রি করে বসবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৪. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, এই ফিতনা ঘোর অন্ধকার রাত্রির একাংশের ন্যায় ছায়া ফেলবে। যখনই কোন এক প্রকার ফিতনা চলে যাবে, তখনই আরেক প্রকার ফিতনা প্রকাশ পাবে। তাতে কোন ব্যক্তি সকালে মুমিন হলে বিকালে কাফের হয়ে যাবে, এবং বিকালে মুমিন হলে সকালে কাফের হয়ে যাবে। আর তখন লোকেরা পার্থিব সামান্য সামগ্রির বিনিময়ে তাদের দ্বীনকে বিক্রি করে দিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৫. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর রাযিঃ হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন, নিশ্চয় ফিৎনা আল্লাহর শহরগুলোতে এমনভাবে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকিবে তার লাগামকে সাড়ানো হইবে। কারো জন্য তাকে জাগ্রত করা জায়েয হইবেনা। ধ্বংস ঐসব ব্যক্তির জন্য যারা তার লাগাম ধরে টানাটানি করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আবুয্ জাহিরিয়্যাহ বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর রাযিঃ বলেন, নিঃসন্দেহে তোমরা এ জগতে নানান ধরনের বালা-মসিবত এবং ফিৎনা-ফাসাদই দেখতে পাবে। ধীরে ধীরে মানুষের যাবতীয় অবস্থা কঠিনই হতে থাকিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৬. রাসুলুল্লাহ সাঃআঃ এর রহস্য সম্বন্ধে অবগত সাহাবী হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ এরশাদ করেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">ফিৎনার সাথে সংশ্লিষ্ট লোক থেকে প্রায় তিনশতজন পর্যন্ত এমন রয়েছে, আমি ইচ্ছা করলে তাদের নাম, তাদের পিতা এবং গ্রামের নাম পর্যন্ত বলিতে পারবো। যারা কিয়ামত পর্যন্ত। তার সবকিছুই রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে জানিয়ে গিয়েছেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">উপস্থিত লোকজন জিজ্ঞাসা করলো, সরাসরি কি তাদেরকে দেখানো হয়েছে? উত্তরে তিনি বলিলেন, তাদের আকৃতি দেখানো হয়েছে। যাদেরকে ওলামায়ে কেরাম এবং ফুকাহায়ে এজাম চিনতে পারবেন। হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ বলেন, তোমরা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর কাছে কল্যাণ সম্বন্ধে জানতে চাও, কিন্তু আমি জানতে চেষ্টা করি অকল্যাণ বা খারাপী সম্বন্ধে আর তোমরা তাহাঁর কাছে জানতে চাও ঘটে যাওয়া বিষয় সম্বন্ধে, আমি জানতে চাই ভবিষ্যতে যা হইবে সে সম্বন্ধে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৭. হযরত হুজাইফা রাযিঃ এরশাদ করেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার ওম্মতের মধ্যে এমন তিনশত লোক প্রকাশ পাবে যাদের সাথে তিনশত পতাকা থাকিবে, যদ্বারা তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে। বংশীয়ভাবে এরা খুবই পরিচিত হইবে। তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের কথা প্রকাশ করলেও যুদ্ধ করিবে সুন্নাতের বিপরীত পথভ্রষ্টার উপর।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৮. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হুজাইফা ইবনুল এমান রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, যাবতীয় ফিৎনা ফাসাদ আমি যা জানি, সেগুলো যদি তোমাদেরকে বয়ান করি তাহলে তোমরা আমার সাথে বিনিদ্র অবস্থায় থাকতে পারবে না।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১৯. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল আস রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, তোমাদের ওপর ফিৎনা-ফাসাদ, অব্যাহত থাকিবে এবং মোয়ামালা ধীরে ধীরে আরো কঠিন আকার ধারন করিবে। যখন কোনো রাষ্ট্রপ্রধান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে দেশ পরিচালনা করে না এবং রাষ্ট্রনায়কগণ আল্লাহ তাআলার এবাদত করেনা তখন তোমরা আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হওয়াকে খুবই ভয় কর। কেননা, আল্লাহ তাআলা অসন্তুষ্ট হওয়া মানুষের অসন্তুষ্ট হওয়া থেকে মারাত্মক।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২০. আবু ইদরীস হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আমি, আবু সালেহ এবং আবু মুসলিম একসাথে ছিলাম। তারা দুইজনের একজন অপরকে বলল, তোমরা কি কোনো বিষয়ের ভয় করছ? তারা বলল, আমরা মানুষের লোভ সম্বন্ধে শংকিত। অতঃপর আমি বললাম, এমন লোভ একমাত্র আখেরী যামানার মানুষের মাঝে প্রকাশ পাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">উত্তরে তার বলল, তুমি ঠিকই বলেছ, কেউ লোভবিহীন কখনো ছিনতাই ডাকাতী করিতে পারেনা এবং মানুষ সবচেয়ে বেশি ছিনতাই ইত্যাদির সম্মুখিন হইবে একমাত্র ইসলামের ক্ষেত্রে। নিঃসন্দেহে যাবতীয় ফিৎনা ফাসাদ ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে এবং উক্ত ফিৎনা আখেরী যামানাতেই ব্যাপক আকার ধারন করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২১. কায়েস ইবনু আবু হোসেন হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রসূল (সাঃআঃ) বলেছেন, বৃষ্টির ন্যায় পৃথিবীতে ফিতনা বিস্তার লাভ করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২২. হযরত ওবাইদুল্লাহ ইবনু আবু জাফর রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">যখন আল্লাহ তাআলা হযরত মুসা আঃ এর কাছে উম্মাতে মুহাম্মাদিয়া মর্যাদা সম্বন্ধে আলোচনা করিলেন তখন হযরত মুসা আঃ উম্মাতে মুহাম্মাদিয়ার অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করিলেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, হে মুসা! উক্ত ওম্মতের মাঝে আখেরী যুগে অনেক ধরনের বালা মসিবত প্রকাশ পাবে। একথা শুনে হযরত মুসা আঃ বলিলেন, হে আল্লাহ! এধরনের বালা মসিবতকালীন কে ধৈর্য্য ধারন করিতে পারবে? জবাবে আল্লাহ তাআলা বলিলেন, ঐ মুহূর্তে যারা ধৈর্য্য ধারন করে ঈমানের উপর অটল থাকিবে তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের বালা মসিবত সহজ হয়ে যাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৩. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল’আস হইতে বর্ণিত;</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, অচিরেই আমার উম্মতের মধ্যে এমন ফিতনা আসবে যে, তাতে মানুষ তার পিতা ও ভাই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এমনকি মানুষ তার বিপদের ব্যাপারে অপমান বোধ করিবে, যেমন ব্যভিচারীনি মহিলা তার ব্যভিচারের অপমান বোধ করে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৪. আবু তামীম জায়শানী হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, অবিরাম বৃষ্টির ন্যায় তোমাদের নিকট ফিতনা প্রবলভাবে বর্ষন হতে থাকিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৫. হযরত উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, একদা নবী করীম (সাঃআঃ) একটি দুর্গের উপর আরোহন করে (লোকদেরকে) বলিলেন, আমি যা দেখছি তোমরাও কি তা দেখছ? নিশ্চয় আমি দেখছি যে, তোমাদের গৃহের ফাঁকে ফাঁকে বৃষ্টির ন্যায় ফিতনা পতিত হচ্ছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৬.</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">মিশর-শাম এলাকায় মতপার্থক্য সৃষ্টিকারী ঝান্ডার বর্ননা ও তাদের বিজয়</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৭. হযরত হুজাইফা রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আল্লাহর কসম শহরের রাস্তাগুলো থেকে এমন কোনো রাস্তা কিংবা গ্রামের গলিসমূহ থেকে এমন কোনো গলি নেই যার সম্বন্ধে আমি জানিনা যে, হযরত ওসমান রাযিঃ কে শহীদ করার পর যাবতীয় ফিৎনা ফাসাদ প্রকাশ পাবে। অর্থাৎ, সবকিছু আমার কাছে পূর্ব থেকে জানা আছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৮. হযরত আবু সালেম জায়শানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি হযরত আলী রাযিঃ কে কূফাতে বলিতে শুনিয়াছি, কিয়ামতের পূর্বে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এমন তিনশত লোক প্রকাশ পাবে আমি ইচ্ছা করলে তাদেরকে পরিচালনাকারী এবং উৎসাহদাতাদের নাম ঠিকানা সবকিছু বলে দিতে পারব।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ২৯. হুযাইফা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিকট কল্যাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করত। আর আমি ক্ষতিকর বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম এই ভয়ে যেন আমি তাতে লিপ্ত না হই। হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমরা এক সময় মুর্খতা ও মন্দের মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম অতঃপর আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে এই কল্যাণ (অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম) দান করেন। তবে কি কল্যাণের পর পুনরায় অকল্যাণ (ফিতনা-ফাসাদ) আসবে? রসূল (সাঃআঃ) বলিলেন হ্যাঁ, আসবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম সেই অকল্যাণের পরে কি আবার কল্যাণ আসবে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ আসবে। তবে তা হইবে ধোঁয়াযুক্ত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সেই ধোঁয়া কি প্রকৃতির? তিনি বলিলেন, লোকেরা আমার সুন্নত বর্জন করে অন্য তরিকা গ্রহণ করিবে এবং আমার পথ ছেড়ে লোকদেরকে অন্য পথে পরিচালিত করিবে। তখন তুমি তাদের মধ্যে ভাল কাজও দেখতে পাবে এবং দেখতে পাবে মন্দ কাজও। আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম, সেই কল্যাণের পরও কি অকল্যাণ আসবে? তিনি বলিলেন হ্যাঁ, দোজখের দ্বারে দাঁড়িয়ে কতিপয় আহ্বানকারী লোকদেরকে সেই দিকে আহ্বান করিবে। যারা তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে তাদেরকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাকে তাদের পরিচয় জানিয়ে দিন। তিনি বলিলেন, তারা আমাদের মতোই মানুষ হইবে এবং আমাদের ভাষায় কথা বলবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩০. হযরত হাসসান ইবনু আতিয়্যাহ হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) থেকে</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">অনুরূপ বর্ণনা করেন, (অর্থাৎ ২৯ নং হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন)।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩১. হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আমার সঙ্গির কল্যাণ সম্পর্কে শিক্ষা করিতে। আর আমি অকল্যাণ বিষয় সম্পর্কে শিক্ষা করতাম তার মধ্যে পতিত হওয়ার ভয়ে। (বর্ণনাকারী ঈসা বলেন) অর্থাৎ ফিতনার মধ্যে পতিত হওয়ার ভয়ে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩২. হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামানে (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা এক সময় মুর্খতা ও মন্দের মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই কল্যাণ (অর্থাৎ দ্বীন-ইসলাম) দান করেন। তবেকি এই কল্যাণের পর পুনরায় অকল্যান আসবে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আসবে। তবে তা হইবে ধোঁয়াযুক্ত। ঐ সমস্ত লোকেরা আমাদের মতই মানুষ হইবে এবং আমাদের ভাষাই কথা বলবে। তুমি তাদের মধ্যে ভালো কাজও দেখতে পাবে এবং মন্দ কাজও দেখতে পাবে। জাহান্নামের দ্বারে দাঁড়িয়ে কতিপয় আহ্বানকারী লোকদেরকে সেই দিকে আহ্বান করিবে। যে ব্যক্তি তাদের অনুসরণ করিবে, তাকে তারা জাহান্নামে প্রবিষ্ট করে ছাড়বে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩৩. হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) থেকে</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন (অর্থাৎ ৩২ নং হাদীসের অনুরূপ)।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩৪. হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিকট কল্যাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করত। আর আমি ক্ষতিকর বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম এই ভয়ে যেন আমি তাতে লিপ্ত না হই। একদিন আমি রসূল (সাঃআঃ) এর নিকট বসা ছিলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যেই কল্যাণ দান করিয়াছেন সেই কল্যাণে পর কি পুনরায় অকল্যাণ দান করিয়াছেন। সেই কল্যাণের পর কি পুনরায় অকল্যাণ আসবে? যা পূর্বেও ছিল। তিনি বলিলেন হ্যাঁ, আসবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম তারপর কি হইবে? রসূল (সাঃআঃ) বলিলেন, ধোকার উপর সন্ধি চুক্তি হইবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সন্ধিচুক্তির পর কি হইবে? তিনি বলিলেন,কতিপয় আহ্বানকারী গোমরাহীর দিকে আহ্বান করিবে। যদি তুমি তখন আল্লাহর কোন খলীফা (শাসক) এর সাক্ষাৎ পাও তাহলে অবশ্যই তার আনুগত্য করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩৫. হযরত হুজায়ফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন। আমার ওম্মত ধ্বংস হইবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের মধ্যে তামায়ুয, তামায়ুল ও মাআমূ প্রকাশ না পাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">হুজাইয়া রাযিঃ বলেন, আমি বললাম, ইয়ারাসূলুল্লাহ আমার আব্বা, আম্মা আপনার জন্য কুরবান হউক তামায়ুম কি জিনিস? রাসুলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, তামায়ুম হচ্ছে আমাবিয়্যাত বা স্বজনপ্রীতি যা আমার পরে মানুষের মাঝে ইসলামের ক্ষেত্রে প্রকাশ পাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">অতঃপর জিজ্ঞাস করলাম, তামায়ুল কি জিনিস? জবাবে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, এক গোত্র অন্য গোত্রে প্রতি হামলা করিবে এবং অত্যাচারের মাধ্যমে একে অপরের উপর আক্রমণ করাকে বৈধ মনে করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">এরপর জানতে চাইলাম ইয়া রাসূলুল্লাহ! মাআমূ কি জিনিস? রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ জবাব দিলেন, এক শহরবাসী অন্য শহরবাসীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হইবে, যার কারণে তারা একে অপরের বিরোধীতায় মেতে উঠবে। এটা বুঝাতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এক হাতের আঙ্গুল অন্য হাতে প্রবেশ করালেন। তিনি আরো বলিলেন, এ অবস্থা তখনই হইবে যখন ব্যাপকভাবে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশৃংঙ্খলা দেখা দিবে এবং বিশেষ কিছু লোকের অবস্থা তুলনামূলক ভালো থাকিবে। সুসংবাদ ঐ ব্যক্তির জন্য যাকে আল্লাহ তাআলা খাছ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে এসলাহ দান করিয়াছেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩৬. হযরত ইবনু আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, বনী ইসরাঈলদের মধ্যে এমন কোন বিষয় ছিলনা যা তোমাদের মধ্যে সংঘটিত হইবেনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩৭. হযরত আবুল আলিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, যখন তাসতুর নামক এলাকা বিজয় হয়,তখন আমরা হরমুজের স্টোর রুমে একটা জিনিষ পেলাম, দেখলাম, খাটিয়ার উপর রাখা একটি লাশের মাথার পার্শ্বে একটা লিখিত কিছু রেখে দেয়া আছে। ধারনা করা হয় এটা হযরত দানিয়াল আঃ এর লাশ।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">অতঃপর আমরা সেটাকে আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওমর রাযিঃ এর কাছে পাঠিয়ে দিলাম। হযরত আবুল আলিয়া বলেন, আরবদের থেকে আমিই সেটাকে সর্বপ্রথম পাঠ করি। পরবর্তীতে লিখিত কাগজগুলোকে কা’ব এর নিকট পাঠানো হলো তিনি সেগুলো আরবী ভাষায় অনুবাদকালে, দেখা গেল; হযরত দানিয়াল আঃ এর সাথে থাকা কাগজের মধ্যে যাবতীয় সব ফিৎনার বর্ণনা স্পষ্টভাবে রয়েছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩৮. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি নিম্নের আয়াত সম্বন্ধে বলেন, এখনো পর্যন্ত উক্ত আয়াতের মর্ম প্রকাশ পায়নি। আয়াতটি হচ্ছে, —————————————–</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">——————————————— অর্থাৎ, হে মুমিনগন! তোমরা নিজেদের চিন্তা কর। তোমরা যখন সৎপথে রয়েছে, তখন কেউ পথভ্রান্ত হলে তাতে তোমাদের কোনো ক্ষতি নেই। (সূরা মায়েদাহ-১০৫)</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাযিঃ বলেন, আল্লাহ তাআলা সর্ব বিষয়কে সামনে রেখে কুরআন শরীফ নাযিল করিয়াছেন। তার মধ্যে এমন কতক বিষয় রয়েছে, যা কুরআন অবতির্ণ হওয়ার পূর্বেই প্রকাশ পেয়েছে, আবার কতক আয়াত এমন রয়েছে যার ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর যুগে প্রকাশ পেয়েছে। কিছু আয়াত এমন আছে, যার সামান্য ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার পর সংঘটিত হয়েছে। কিছু আয়াত এমন আছে, যার ব্যাখ্যা পরবর্তী যুগে প্রকাশ পাবে। আবার কিছু আয়াতের ব্যাখ্যা ফুটে উঠবে হিসাব-নিকাশের দিন। সেগুলো হচ্ছে, ঐ সব আয়াত যার মধ্যে হিসাব-নিকাশ, জান্নাত-জাহান্নাম সম্বন্ধে লেখা রয়েছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৩৯. ওমাইর ইবনু হানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন আমাদেরকে বর্ণনা করিয়াছেন এমন কতক শাইখ যারা সিফফীন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করিয়াছেন। তারা বলেন, আমরা যূদী পাহাড়ে এসে হঠাৎ করে আবু হুরাইরা রাযিঃ এর সাক্ষাৎ হলো। আমরা তাকে একহাত অন্যহাতের উপর রেখে পিছনে ধরে রাখা অবস্থায় পেলাম। পাহাড়ের সাথে ঠেশ দিয়ে বসে আল্লাহ তাআলার যিকিররত থাকতে দেখলাম। আমরা তাকে সালাম দিলে তিনি সালামের উত্তর দিলেন। আমরা তাঁকে বললাম,এ ফিৎনা সম্বন্ধে আমাদেরকে কিছু অবগত করুন। অতঃপর তিনি বলিলেন, নিশ্চয় তোমরা উক্ত ফিৎনার ক্ষেত্রে তোমরা তোমাদের শত্র“র বিরুদ্ধে সাহায্যপ্রাপ্ত হইবে। এরপর তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের ফিৎনা প্রকাশ পাবে, যা মূলতঃ মধুর মধ্যে পানির ন্যায়। তেমনিভাবে তোমাদেরকে ধ্বংস করে দেয়াহইবে, অথচ তোমরা নগন্য এবং লজ্জিত হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪০. হযরত সামুরা ইবনু জুনদুব রাযিঃ বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিয়ামত সংঘঠিত হইবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা বড় বড় কিছু বিষয় স্বচক্ষ্যে দেখবেনা এবং তোমরা সেগুলো নিজেদের মধ্যেও আলোচনা করার সাহস পাবে না।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪১. হযরত সালমা ইবনু নুকাইল রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ কে বলিতে শুনিয়াছি, তোমরা আমার পর এমন কিছু সময় অবস্থান করিবে, যার মধ্যে তোমরা একে অপরের শত্র“তে পরিণত হইবে এবং অতিসত্ত্বর তোমরা কিছু সন্যের উপর হামলা করিবে, যারা এক দল অন্য দলের উপর হামশে পড়বে। কিয়ামতের পূর্বে ব্যাপক হত্যা প্রকাশ পাবে এবং এর পর কিছু বৎসর এমনভাবে অতিবাহিত হইবে যেন সেগুলো ভুমিকম্পের বৎসর।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪২. হযরত মাকহুল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আল্লাহতায়ালর বাণী ———————————- অর্থাৎ “তোমরা এক সিঁড়ি থেকে আরেক সিঁড়িতে আরোহন করিবে।” (সূরা ইনশিক্বাক্বঃ ১৯) (বর্ণনাকারী এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ) প্রত্যেক বিশ বছরের মধ্যে তোমরা যে অবস্থাতে ছিলে, সেটা ছাড়া অন্য অবস্থাতে থাকিবে। (অর্থাৎ প্রতি বিশ বছর পর পর তোমাদের অবস্থা পরিবর্তন হতে থাকিবে।)</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪৩. হযরত সা’য়াদ ইবনু আবী ওয়াক্কাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এই আয়াত তিলাওয়াত করিলেন, তথা ————————————————————————– অর্থাৎ “হে নবী আপনি বলে দিন ঃ তিনিই (আল্লাহ) শক্তিমান যে, তোমাদের উপর কোন শাস্তি উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পদতল থেকে প্রেরণ করবেন।” (সূরাঃআঃ আন’আমঃ ৬৫)। অতঃপর রসূল (সাঃআঃ) বলেছেন, জেনে রেখ! নিশ্চয় তা সংঘটিত হইবে। (বর্ণনাকারী বলেন) এর পর তার আর কোন ব্যাখ্যা করেননি।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪৪. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত মুআম ইবনু জাবাল রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নিঃ সন্দেহে তোমরা দুনিয়াতে ফিৎনা ফাসাদ এবং বালা-মসিবতই দেখতে পাবে। ধীরে ধীরে মোয়ামালা কঠিন থেকে কঠিনতর হতে থাকিবে। যেসব বালা মসিবতগুলো তোমাদের কাছে ভয়াবহ এবং মারাত্মক মনে হইবে কিন্তু তোমাদের পরবর্তীদের কাছে খুবই সহজলভ্য মনে হইবে, যেহেতু তারা এর থেকে আরো কঠিন বিপদ আপদের সম্মুখিন হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪৫. মির ইবনু হুবাইশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি হযরত আলী রাযিঃ কে বলিতে শুনেছেন, তোমরা আমার কাছে জানতেচাও, আল্লাহর কসম! কিয়ামতের পূর্বে প্রকাশ পাওয়া শত শত দল যারা যুদ্ধে লিপ্ত হইবে তাদের সম্বন্ধে আমার কাছে জানতে চাওয়া হলে,আমি তাদের সেনাপ্রধান, পরিচালনাকারী এবং আহবানকারী সকলের নাম বলে দিতে পারব। তোমাদের এবং কিয়ামতের মাঝখানে যা কিছু সংঘটিত হইবে সবকিছু পরিস্কারভাবে বলিতে পারব।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪৬. হযরত মুয়াবিয়া ইবনু আবু সুফিয়ান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, জেনে রাখ! দুনিয়াতে বিপদ ও ফিতনা ছাড়া কোন কিছুই অবশিষ্ট থাকিবে না।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪৭. হযরত যুবায়ের ইবনু আদী আনাস ইবনু মালেক (রাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছেন যে,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আগামীতে তোমাদের উপর যে বছর আসবে তা অতীত অপেক্ষা আরো মন্দ হইবে।  একথাগুলো আমি তোমাদের নবী (সাঃআঃ) হতে শুনিয়াছি।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪৮. হযরত আবুল জিল্দ জিলান হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নিশ্চয় মুসলমানরা বিপদে আপতিত হইবে পর মানুষ তাদের চতুর্দিকে ঘোরাঘুরি করিতে থাকিবে। ফলে মুসলমান কষ্টের কারণে ইহুদী ও খৃষ্টান হয়ে প্রত্যাবর্তন করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৪৯. হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) ও হযরত আবু মুসা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তারা উভয়ে রসূল (সাঃআঃ) কে বলিতে শুনেছেন, যে, কিয়ামতের পূর্বে এমন দিন আসবে যে তাতে মুর্খতা অবতীর্ণ হতে থাকিবে এবং ‘হারজ’ বেড়ে যাবে। লোকেরা প্রশ্ন করলো ইয়া রাসূলাল্লাহ ‘হারজ’ কী? তিনি বলিলেন হত্যা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫০. বিশিষ্ট তাবেঈ হযরত আ’নাশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তার কাছে যিনি বর্ণনা করেছে তার কাছ থেকে তিনি নকল করিয়াছেন, তিনি বলেন, তোমাদের কাছে যখনই এমন কোনো বালা মসিবত প্রকাশ পায়,যার কারণে তোমরা চিল্লাচিল্লি করিবে, কিন্তু পিছনে এমন আরো বালা-মসিবত অপেক্ষা করছে যা এর থেকেও মারাত্মক। যে বালা মসিবত তোমাদেরকে পূর্বের মসিবতকে ভুলিয়ে দিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫১. হযরত আবু ওয়ায়েল হযরত আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, যখন ফিতনা তোমাদেরকে জড়াবে তখন তোমাদের কি অবস্থা হইবে? তাতে বড়রা অতিবৃদ্ধ হয়ে যাবে এবং ছোটরা বড় হতে থাকিবে। মানুষ তাকে সুন্নত হিসাবে গ্রহণ করিবে। যখন তা থেকে কোন কিছু ছেড়ে দিবে,তখন বলা হইবে তুমি সুন্নতকে ছেড়ে দিয়েছ। কেউ প্রশ্ন করিল হে আবু আব্দুর রহমান, তা কখন হইবে? তিনি বলিলেন যখন তোমাদের মধ্যে অজ্ঞব্যক্তিরা ব্যাপকতা লাভ করিবে,আর আলেমগণ কমে যাবে। কারী ও নেতা বৃদ্ধি পেতে থাকিবে আমানতদার ব্যক্তি কমে যাবে। আখেরাতের আমলের মাধ্যমে দুনিয়া অন্বেষণ করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫২. হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন,তোমাদের মাঝে এবং তোমাদের উপর অকল্যান নিপতিত হওয়ার মাঝে একমাত্র দুরত্ব হলো ওমর (রাঃআঃ) এর মৃত্যু। (অর্থাৎ ওমর (রাঃআঃ) এর মৃত্যুর পর থেকেই অকল্যাণ তথা ফিতনা আসতে থাকিবে।)</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৩. হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, তোমাদের মাঝে এবং অকল্যাণের মাঝে একমাত্র দূরত্ব হলো একজন ব্যক্তি। তিনি যখন মৃত্যুবরণ করবেন তখন তোমাদের উপর অকল্যাণকে ঢেলে দেওয়া হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৪. হযরত আব্দুর রহমান ইবনু আউফ রাযিঃ এর এক গোলাম বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি একদিন হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ কে দেখলাম, যে অবস্থায় তিনি কতক বাচ্চাকে একথা বলিতে শুনেছেন, “পরবর্তীতে অবস্থা খুবই ভয়াবহ হইবে”। একথা শুনার সাথে সাথে হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ বলে উঠলেন,কসম যে সত্ত্বার যার হাতে আমার প্রাণ, কিয়ামতের দিন পর্যন্ত আরো অনেক কঠিন ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখিন হতে হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৫. হযরত হুজায়ফা রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি একদিন আমেরকে বলিলেন, হে আমের! তুমি যা অবলোকন করছ যেগুলো যেন তোমাকে ধোকায় ফেলে না দেয়, হতে পারে এগুলো খুব দ্রুত তাদেরকে তাদের দ্বীন থেকে বের করে আনবে। যেমন,এক মহিলা অন্য মহিলার সামনে তার লজ্জাস্থানকে প্রকাশ করে থাকে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৬. হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন, সর্বপ্রথম পারস্যবাসীরা ধ্বংস হইবে। তাদের ধ্বংসের পরপর আরবের অধিবাসীগণ ধ্বংস হতে থাকিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৭. হযরত উবাই ইবনু কা’ব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নবী করীম (সাঃআঃ) এর যুগে আমরা একদিকে মনোযোগি ছিলাম, অতঃপর যখন রসূল (সাঃআঃ) ইন্তেকাল করিলেন তখন আমরা এদিক সেদিক মনোযোগ দিতে লাগলাম।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৮. মুহাম্মদ ইবনু আব্দুর রহমান ইবনু আবিযি’ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন আমি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনুয যুবায়ের রাযিঃ কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার রাষ্ট্র পরিচালনা সম্বন্ধে হযরত কা’ব যেসব মসিবতের কথা বলেছেন আমি আমার জিম্মাদারী পালন করিতে গিয়ে সবকিছুর সম্মুখিন হয়েছি।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৫৯. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু রাযিঃ হতে বিশিষ্ট তাবেঈ হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">একদিন হযরত ইবনু ওমর রাযিঃ আবু কুবাইদের উপর কিছু সূউচ্চ বাড়ি দেখতে পেয়ে বলিলেন, হে মুজাহিদ! যখন তুমি মক্কার ঘর বাড়িকে তার আশ্বপাশ্বের বাড়ি ঘর থেকে উঁচু দেখতে পাবে এবং তার অলি-গলিতে পানি প্রবাহিত হতে দেখবে তখন তুমি অবশ্যই এগুলো থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬০. হযরত আবু ওয়ায়েল (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি হুযায়ফা (রাঃআঃ) কে বলিতে শুনিয়াছি একদা আমরা হযরত ওমর (রাঃআঃ) এর বসা ছিলাম। তখন তিনি বলিলেন, তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর ফিতনা সম্পর্কীয় বাণী স্মরণ আছে? হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) বলেন, আমি বললাম, আমার স্মরণ আছে তিনি যে ভাবে বলেছেন, হযরত ওমর (রাঃআঃ) বলিলেন, এ ব্যাপারে তুমি সৎসাহসী সুতরাং তা পেশ কর। আমি বললাম মানুষ ফিতনায় পড়বে তার পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে, মালসম্পদের ব্যাপারে, তার নিজের সন্তানসন্ততি ও পাড়া প্রতিবেশীর ব্যাপারে। তবে নামাজ, সদকা এবং ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ তা মিটিয়ে দেবে। হযরত ওমর (রাঃআঃ) বলিলেন, আমি এ ফিতনা সম্পর্কে জানতে চাইনি, বরং যে ফিতনা সমুদ্রের তরঙ্গমালার মত উত্থিত হইবে এবং তোলপাড় করে ফেলবে, সে ফিতনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) বলেন, তখন আমি বললাম,হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি ভয় করবেন না, (তা তো আপনাকে পাবেনা।) কেননা সেই ফিতনা ও আপনার মধ্যে একটি আবদ্ধ দরজা রয়েছে। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা সেই দরজাটি কি ভেঙ্গে দেওয়া হইবে, না খোলা হইবে? হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) বলেন, আমি বললাম, খোলা হইবে না; বরং ভেঙ্গে দেওয়া হইবে। তখন হযরত ওমর (রাঃআঃ) বলেন, তাহলে তা আর কখনো বন্ধ করা হইবেনা। আমি বললাম হ্যাঁ। রাবী বলেন, তখন আমরা হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম আচ্ছা হযরত ওমর (রাঃআঃ) কি জানতেন দরজাটি কে? উত্তরে তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, তিনি এমন নিশ্চিতভাবে জানতেন যেমন আগামীকালের পূর্বে রাত্রির আগমন সুনিশ্চিত। আমি তাঁকে (ওমর (রাঃআঃ)কে) এমন একটি হাদীস বর্ণনা করেছে,যা কোন গোলক ধাঁধা নয়। রাবী শাক্বীক্ব বলেন, আমরাতো এ ব্যাপারে হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ)কে জিজ্ঞাসা করিতে ভয় পাচ্ছিলাম তাই হযরত মাসরূক্বকে বললে তিনি হযরত হুযায়ফাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, দরজাটি কে? উত্তরে তিনি বলিলেন, দরজাটি হলেন ‘ওমর’ নিজেই।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬১. হযরত কা’ব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নিশ্চয় মানুষের উপর এমন যুগ আসবে যে, মুমিন ব্যক্তি তার ঈমানের ব্যাপারে অপমানবোধ করিবে। যেমন আজকাল পাপিষ্ট তার পাপের ব্যাপারে অপমান বোধ করে। এমনকি যে কোন ব্যক্তিকে বলা হইবে যে, তুমি মুমিন, ফকীহ। (ফিক্হশাস্ত্রবিদ)</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬২. হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, যখন মিথ্যা প্রকাশ পাবে তখন হত্যা বেশী হতে থাকিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬৩. হযরত আয্রা ইবনু কাইছ থেকে বর্ণিতঃ</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">একদিন হযরত খাশেদ ইবনু ওলীদ রাযিঃ শামের মধ্যে খুতবা দেয়া অবস্থায় এক লোক দাড়িয়ে বলল, নিঃ সন্দেহে ফিৎনা প্রকাশ পেয়ে গেল। একথা শুনে হযরত খালেদ বিন ওলীদ রাযিঃ বলিলেন, হযরত ওযর রাযিঃ যত দিন জীবিত থাকিবেন ততদিন নয়। সেটা তখনই হইবে যখন মানুষ বিভিন্ন প্রকার বালা মসিবতে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যে বালা-মসিবত থেকে বাঁচার জন্য মানুষে বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিতে চেষ্টা করিবে কিন্তু যে রকম কোনো আশ্রয়স্থল তারা পাবে না। মূলতঃ তখনই ফিৎনাসমূহ প্রকাশ পেতে থাকিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬৪. হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নিশ্চয় রাত্রি সমূহ, দিন সমূহ, মাস সমূহ এবং যুগ সমূহ এর অকল্যাণ কিয়ামতের বেশী নিকটবর্তি।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬৫. হযরত হুজাইফা ইবনুল এমান রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, একদিন হযরত ওমর রাযিঃ এর কাছে আসলে তিনি আমাদেরকে নিয়ে কথাবার্তা বলিতে গিয়ে বলিলেন, তোমাদেরকে নিয়ে কথাবার্তা বলিতে গিয়ে বলিলেন, তোমাদের মাঝে এমন কে আছ, যে লোক ফিৎনা সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর বাণীর হেফাজতকারী। তারা সকলে বলিলেন, এ সম্বন্ধে তো আমরা সকলেই শুনিয়াছি, এক পর্যায়ে হযরত ওমর রাযিঃ বলিলেন, হয়তো বা তোমরা তোমাদের ব্যক্তিগত এবং পরিবার গত ফিৎনার কথা বলছো। তারা সকলে বললো, হ্যাঁ আমরা সকলে এরকম ধারনা করেছি। তাদের কথা শুনে হযরত ওমর রাযিঃ বলিলেন, আমার উদ্দেশ্য কিন্তু সেটা নয়, সেটা তো নামায-রোযা দ্বারা মাফ হয়ে যাবে। বরং এমন ফিৎনা সম্বন্ধে আমি জিজ্ঞাসা করিতে চাচ্ছি, যা,সমুদ্রের যত বিশাল বিশাল আকারের ঢেউ তুলবে। হযরত ওমর রাযিঃ এর কথা শুনে উপস্থিত সকলে চুপ হয়ে যায়। আমি ভাবলাম তিনি আমারই মনোযোগ আকৃষ্ট করিতে চাচ্ছেন। ফলে আমি বলে উঠলাম, হে আমীরুল মুমিনীন! আমি বলিতে পারব। আমার কথা শুনে তিনি বলিলেন অবশ্যই, তোমার পিতা আল্লাহর জন্য কুরবান হোক।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন! উক্ত ফিৎনার বিপরীত একটা শক্তভাবে বন্ধ দরজা রয়েছে যে দরজা খোলা হইবে না হয় ভাঙ্গা হইবে। হযরত ওমর রাযিঃ বলিলেন তোমার ধ্বংস হোক যে দরজা ভাঙ্গ হইবে?</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি বললাম, হ্যাঁ! ভাঙ্গ হইবে, আমার কথাশুনে তিনি বলিলেন, যদি যে দরজা ভাঙ্গা হয়, হয়তো সেটা আর বন্ধ করা সম্ভব হইবেনা। অতঃপর আমি বললাম, হ্যাঁ যেটা ভেঙ্গে ফেলা হইবে এবং যে দরজা হচ্ছেন, একজন মহান ব্যক্তি, হয়ত তাকে হত্যা করা হইবে, না হয় তিনি স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করবেন। এটা এমন হাদীস যার মধ্যে সন্দেহের লেশমাত্র নেই।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬৬. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত নু’মান ইবনু বশির রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন, কিয়ামতের পূর্বে এমন কিছু ফিৎনা প্রকাশ পাবে, যেন যেগুলো অন্ধকার রাতের একটা টুকরা। সকাল বেলা যে লোক মুসলমান থাকিবে বিকালে যে কাফের হয়ে যাবে। একদিন সন্ধ্যার সময় যে মুসলমান থাকিবে, পরের সকালে সে কাকের হয়ে যাবে। মানুষ তাদের চরিত্রকে দুনিয়ার সামান্য ও নগন্য বস্তুর বিনিময়ে বিক্রি করে দিবে। উক্ত হাদীসের বর্ণনাকারীদের একজন হযরত হাসান বসরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আল্লাহর কসম, যিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই, নিঃসন্দেহে আমি তাদেরকে এমন সূরতে দেখেছি, যেন তাদের মধ্যে কোনো বোধশক্তি নেই, তারা যেন জ্ঞান-বুদ্ধিবিহীন কিছু শরীর। তাদেরকে দেখলে মনে হয় আগুনের বিছানা এবং লোভি মাছি। সকার করে দুই দেরহাম দ্বারা, সন্ধ্যা করে দুই দেরহামের মাধ্যমে। তারা নিজেদের দ্বীনকে বিক্রি করে দিবে, সামান্য একটা ছাগলের টাকার বিনিময়ে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬৭. হযরত আবু ওয়ায়েল শাকীক বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">হুযায়ফা (রাঃআঃ) বলেছেন, একদা হযরত ওমর (রাঃআঃ) রসূল (সাঃআঃ) এর সাহাবীদেরকে জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর ফিতনা সম্পর্কীয় বাণী শুনেছ? হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) বলেন,আমি বললাম, আমি রসূল (সাঃআঃ) কে বলিতে শুনিয়াছি যে, মানুষ ফিতনায় পড়বে তার পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে, মাল সম্পদের ব্যাপারে এবং তার পাড়া-প্রতিবেশীর ব্যাপারে। তবে রোজা, নামাজ ও সদকা তা মিটিয়ে দেবে। হযরত ওমর (রাঃআঃ) বলেন, আমি এ ফিতনা সম্পর্কে জানতে চাইনি, বরং যে ফিতনা সমুদ্রে তরঙ্গমালার মতো উত্থিত হইবে এবং তোলপাড় করে ফেলবে, আর তা একের পর এক আসতে থাকিবে, সে ফিতনা সম্পর্কে রসূল (সাঃআঃ) এর বাণী জানতে চেয়েছি। হযরত হুযাইফা (রাঃআঃ) বলেন, তখন আমি বললাম হে আমীরুল মুমিনীন! উক্ত ফিতনা সম্পর্কে আপনি ভয় করবেন না! (তা আপনাকে পাবেনা) কেননা সেই ফিতনা ও আপনার মধ্যে একটি আবদ্ধ দরজা রয়েছে। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, আচ্ছা সেই দরজাটি কেমন হইবে? তা কি ভেঙ্গে দেওয়া হইবে, না খোলা হইবে? হুযায়ফা (রাঃআঃ) বলেন, আমি বললাম, খোলা হইবে না; বরং ভেঙ্গে দেওয়া হইবে। অতঃপর কিয়ামত পর্যন্ত তা আর কখনো বন্ধ করা হইবে না।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬৮. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু মুসা আশআরী রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন, নিশ্চয়, কিয়ামতের পূর্বে হারজ বা গণহত্যা হইবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! হারজ কী? রাসূলুল্লাহ যাঃ বলিলেন, ব্যাপক হত্যা। আমরা সহসা জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসূলুল্লাহ! বর্তমানে যেমন হত্য চলছে তার থেকেও বেশি হইবে! জবাবে তিনি বলিলেন, মুসলমানদের অবস্থা তখনকার যুগে বর্তমানের চেয়ে আরো উন্নত হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">এক পর্যায়ে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলিলেন, তোমাদেরকে কাফেররা হত্যা করিবেনা, বরং তোমরা নিজেরাই একে অপরকে হত্যা করিবে। এমন কি মানুষ তার আপন ভাই, চাচাত ভাই এবং প্রতিবেশিকে হত্যা করিবে। রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর মুখ থেকে একথা শুনার সাথে সাথে উপস্থি সকলে এমনভাবে আশ্চর্য্যন্বিত হয়ে পড়ল, যার ফলে অনেক সময় স্পষ্ট বস্তুও আমাদের দৃষ্টিগোচর হতোনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৬৯. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, যখন ফিতনা তোমাদেরকে জড়াবে তখন তোমাদের কি অবস্থা হইবে? তাতে বড়রা আরো বৃদ্ধ হইবে এবং ছোটরা বড় হয়ে থাকিবে। মানুষ তাকে দ্বীন হিসেবে গ্রহণ করিবে। যখন তাতে কোন কিছু পরিবর্তিত হইবে তখন লোকেরা বলবে এটা দ্বীন পরিপন্থি। কেউ জিজ্ঞাসা করলো তা কখন ঘটবে? তখন তিনি বলিলেন, যখন তোমাদের মধ্যে নেতারা আধিক্যতা লাভ করিবে আর আমানতদার ব্যক্তি কমে যাবে। বক্তাবৃন্দ আধিক্যতা লাভ করিবে আর দ্বীনের বিজ্ঞ আলেমগন (ফকীহ) কমে যাবে। তার দ্বীন ব্যতিত অন্য কিছু (বদদ্বীন) শিক্ষা করিবে এবং তারা আখেরাতের আমলের বিনিময়ে দুনিয়া অন্বেষণ করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭০. আবু কুবাইল রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আমি মাসলামা ইবনু মাখলাদ আল আনসারীকে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি সামুদ্রিক সৈন্য প্রেরণের ক্ষেত্রে কিছুটা বৃদ্ধি করেছিলেন, যার কারণে তার অন্য সৈন্যরা অসন্তুষ্ট হয়েছিল। তিনি তাদের এ অবস্থা দেখে মিম্বরে দাড়িয়ে বলিলেন, হে মিশরবাসী! তোমরা আমাকে ভর্ৎসনা করোনা। আল্লাহর কসম নিঃসন্দেহে আমি বৃদ্ধি করেছি তোমাদের সৈন্য সংখ্যায় এবং তোমাদের রসদপত্রের মধ্যে অনেক বৃদ্ধি করেছি আর আমি তোমাদের শত্র“দের বিরুদ্ধে তোমাদেরকে শক্তিশালী করেছি। একথা জেনে রেখ, নিশ্চয় আমি তোমাদের পরবর্তীদের থেকে অনেক-অনেক উত্তম। কেননা ধীরে ধীরে মানুষের মাঝে ফিৎনা বৃদ্ধি পাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭১.  বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ কে বলিতে শুনিয়াছি, কিয়ামত সংঘটিত হইবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তোমাদের ইমামকে হত্যা করিবেনা এবং তোমরা অযথা তোমাদের তলোয়ার পরিচালনা করিবেনা। এপৃথিবীর মালিক বনে যাবে নিকৃষ্টতম লোকজন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭২. হযরত আওফ ইবনু মালেক আশজারী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রসূল (সাঃআঃ) আমাকে বলিলেন, হে আওফা কিয়ামতের পূর্বের ছয়টি নির্দেশনকে তুমি গণনা করে রাখ। (১) আমার ওফাত। (হযরত আওফ বলেন) একথা আমাকে কাদিয়ে দিল। তখন রসূল (সাঃআঃ) আমাকে চুপ করিয়ে দিলেন। অতঃপর রসূল (সাঃআঃ) বলিলেন বলো এক, (২) বায়তুল মুকাদ্দস বিজয়, (রসূল (সাঃআঃ) বলিলেন বলো দুই। (৩) ব্যাপক মহামারী যা আমার উম্মতের মধ্যে বকরির মাড়কের ন্যায় দেখা দিবে। (রসূল (সাঃআঃ) বলিলেন) বলো তিন। (৪) আমার উম্মতের মধ্যে ফিতনা সংঘটিত হইবে এবং বিরাট আকার ধারন করিবে। (রসূল সাঃআঃ বলিলেন) বলো চার। (৫) তোমাদের মধ্যে ধন সম্পদের এত প্রাচুর্য হইবে যে, কোন ব্যক্তিকে একশত দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) প্রদান করলেও সে (এটাকে নগন্য মনে করে) অসন্তুষ্টি প্রকাশ করিবে। (রসূল সাঃআঃ বলিলেন) বলো পাঁচ। (৬) বনুল আসফার (রোমবা) দের সাথে তোমাদের একটি সন্ধিচুক্তি হইবে। অতঃপর তারা তোমাদের নিকট গিয়ে তোমাদেরকে হত্যা করিবে এবং মুসলমানরা তখন এমন ভূমিতে থাকিবে যাকে মদীনার নিম্নাঞ্চল বলা হয় এবং তাকে দামেস্ক (নগরী) ও বলা হয় (যা সিরিয়ার রাজধানী)।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭৩. হযরত আউফ ইবনু মালেক রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ আমাকে সম্মোধন করে বলেছেন হে আউফ! তুমি কিয়ামতের ছয়টা আলামত চিহ্নিত করে রেখো, তার মধ্যে সর্বপ্রথম তোমাদের নবীর মৃত্যুবরণ করা। এটা হচ্ছে একটা, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বায়তুল মোকাদ্দাসের জয়লাভ করা, তৃতীয় হচ্ছে, ছাগলের মাড়কের ন্যায় ব্যাপক মহামারী দেখা দিবে। চতূর্থ হচ্ছে, তোমাদের মাঝে এমন ব্যাপক ফিৎনা দেখা দিবে যার সাথে আরবের প্রতিটি ঘর জড়িয়ে যাবে। পঞ্চম হচ্ছে, তোমাদের আর বলিল —– তথা রোমবাসীদের মাঝে চুক্তি হওয়া। অতঃপর তারা তোমাদের বিরুদ্ধে নয় মাসের গর্ভবতী মহিলাদের ন্যায় ভারি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জমায়েত হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭৪. হযরত আওফ ইবনু মালেক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নবী করীম সাঃআঃ আমাকে কিয়ামতে পূর্বের ছয়টি নিদর্শনের কথা বলেছেন। (১) তোমাদের নবীর ওফাত। (২) বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়। (৩) বকরির মাড়কের ন্যায় ব্যাপক মহামারী। (৪) তোমাদের মাঝে এবং বনুল আসফার (রোমকদের) মাঝে সন্ধি-চুক্তি হইবে। (৫) মদীনাতে কুফরীর সূচনা (৬) এবং মানুষ অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে (নগন্য মনে করে) একশত দিনার (স্বর্ণমুদ্রা) ফিরিয়ে দিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭৫. হযরত আওফ ইবনু মালেক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রসূল সাঃআঃ আমাকে কিয়ামতের পূর্বের ছয়টি নিদর্শনের কথা বলেছেন। ১. আমার ওফাত। ২. অতঃপর বায়তুল মুকাদ্দাস বিজয়। ৩. আশ্রয় স্থল হইবে, যেখানে আমার উম্মত শাম থেকে অবতরণ করিবে। ৪. তোমাদের মধ্যে এমন ফিতনা সংঘটিত হইবে যে, আরবে এমন কোন ঘর অবশিষ্ট থাকিবেনা যে ঘরে ফিতনা প্রবেশ করিবেনা (অর্থাৎ প্রতিটি ঘরেই তা প্রবেশ করিবে। ৫. অতঃপর তোমাদের সাথে রোমকদের সন্ধি-চুক্তি হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭৬. হযরত হুয়ান ইবনু আমর রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, তুয়ানার যুদ্ধে আমরা রোম ভুখন্ডে প্রবেশ করে একটি উঁচু টিলাতে অবস্থান করি। এক পর্যায়ে আমি আমার সাথীদের বাহন থেকে একটি বাহনের মাথা উঁচু করে ধরি। আর আমার সাথীরা তাদের বাহনের জন্য দানা-পানির ব্যবস্থা করিতে যায়। এমন অবস্থায় হঠাৎ শুনলাম কেউ যেন বলছে “আস্সালামু আলাইকা ওয়ারাহমাতুল্লাহ” সালামের আওয়াজ শুনে দেখলাম সাদা কাপড় পরিহিত এক লোক। আমি সালামের জবাব দিলে তিনি বলিলেন, তুমি কি আহমদের উম্মতের অর্ন্তভুক্ত আমি হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলে তিনি বলিলেন, তোমাদে ধৈর্য্যধারন করিতে হইবে। কেননা এ উম্মত মুলতঃ উম্মতে মারহুমা হতে গণ্য। আল্লাহ তাআলা তাদের উপর পাঁচ ধরনের ফিৎনা রেখেছেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ করিয়াছেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">অতঃপর আমি বললাম, সেগুলোর নাম উল্লেখ করুন। তিনি বলিলেন, পাঁচটির একটি হচ্ছে, তাদের নবীর মৃত্যুবরণ করা, যাকে কিতাবুল্লাহর ভাষায় বাগ্তাহ্ বা হঠাৎ বলা হয়েছে। অতঃপর হযরত ওসমান রাযিঃ এর শাহাদাত বরণ করা। যেটা কিতাবুল্লাহ ‘যক্ষ্মা’ — বা বধির ফিৎনা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এরপর হচ্ছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর রাযিঃ এর ফিৎনা যা কিতাবুল্লাহর ভাষায় আল আমইমা বা অন্ধফিৎনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তারপর হলো, ইবনুল আসআছ এর ফিৎনা। যাকে কিতাবুল্লাহতে আল বুতাইরা বা বেজোড় ফিৎনা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। অতঃপর এ বলে চলে যেতে লাগল, “ছালাম বাকি রইল, ছালাম বাকি রইল”। সে কীভাবে চলে গেল আমি কিন্তু জানতে পারলামনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭৭. হযরত আলী ইবনু আবু তালেব রায়িঃ হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা এ উম্মতের জন্য পাঁচটি ফিৎনা নির্ধরন করিয়াছেন। প্রথমে ব্যাপক ফিৎনা হইবে এরপর হইবে খাস ফিৎনা। অতঃপর আবারো ব্যাপক ফিৎনা দেখা দিবে। তারপর আসবে খাছ ফিৎনা। তারপর এমন কালো অন্ধাকারাচ্ছন্ন ফিৎনা প্রকাশ যদ্বারা মানুষ চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় হয়ে যাবে। অতঃপর কিছু চুক্তি হইবে এবং লোকজনকে পথভ্রষ্টার দিকে আহ্বানকারী প্রকাশ পাবে। যদি তখন আল্লাহ তাআলার দ্বীনের উপর অটল থাকার মত কোনো খলীফা বাকি থাকে তাহলে তোমরা তার আনুগত্য কর।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭৮. হযরত আলী রাযিঃ হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, এ উম্মতের জন্য পাঁচ প্রকার ফিৎনা নির্ধারন করা হয়েছে, যার মধ্যে একটি হচ্ছে, সর্বদা অন্ধ,বধির হিসেবে থাকার ফিৎনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৭৯. হযরত হুযায়ফা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, ফিতনা সংঘটিত হইবে, অতঃপর জামাত ও তাওবা হইবে। অতঃপর জামাত ও তাওবা হইবে। (এর পর চতুর্থবার উল্লেখ করিলেন) অতঃপর তাওবাও হইবেনা এবং জামাতও হইবেনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮০. হযরত যেলা – রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আমি হযরত হুজায়ফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ কে বলিতে শুনিয়াছি, ইসলামের মধ্যে চার প্রকারের ফিৎনা প্রকাশ পাবে। যাদের থেকে চতুর্থ প্রকারের ফিৎনা গিয়ে বহুরূপি দাজ্জালের নিকট আত্মসমর্পণ করিবে। তখন সবদিকে অন্ধকারে ছেঁয়ে যাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮১. হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, নবী করীম সাঃআঃ বলেছেন, ফিতনা সংঘটিত হইবে। অতঃপর জামাত হইবে। অতঃপর ফিতনা হইবে, অতঃপর জামাত হইবে। অতঃপর এমন ফিতনা হইবে যেখানে পুরুষদের বুদ্ধি থেমে যাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮২. হযরত আব্দুল্লাহ (রাঃআঃ) থেকেত বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রসূল সাঃআঃ বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে চারটি ফিতনা হইবে। আর চতুর্থবার হইবে ধ্বংশ (মৃত্যু)।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮৩. কিছু প্রবীণ সৈন্য হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তারা বলেন একদিন খালেদ ইবনু ইয়াযিদ ইবনু মোয়াবিয়া মারওয়ান ইবনু হাকামের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং তিনি ওমর ইবনু মারওয়ানের মেহমান ছিলেন, ঐ সময় তার সাথে একটি চাকু ছিল এবং হাতে কিছু কাগজ ছিল। হঠাৎ তিনি বলে উঠলেন, পাঁচ এবং দশ অতিবাহিত হয়েছে কেবলমাত্র বিশ বাকি রয়েছে, যার ক্ষতি মাশরিক-মাগরিবের সকলকে গ্রাস করে নিবে। তার থেকে একমাত্র এন্তাবলিসের বাসিন্দা ব্যতীত কেউ মুক্তি পাবেনা। শফি ইবনু ওবাইর তাকে সেই ফিৎনা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, প্রথম ফিৎনা হচ্ছে পাঁচ, দ্বিতীয় ফিৎনা দশ বৎসরে। অর্থাৎ, ফিৎনায়ে আব্দুল্লাহ ইবনু জুবাইর। এরপরে প্রকাশ পাবে তেইশ বৎসরের ফিৎনা মাশরিক মাগরিবকে গ্রাস করে দিবে। এন্তাবলিসের বাসিন্দা ব্যতীত কেও উক্ত ফিৎনা থেকে মুক্তি পেতে পারেনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮৪. আব্দুল আযীয ইবনু সালেহ হযরত হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান থেকে বর্ণনা করেন</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">(বর্ণনাকারী বলেন, রাবী ওয়ালিদ তার মাঝে ও হুযায়ফা (রাঃআঃ) মাঝে আরেকজন রাবীর কথা উল্লেখ করেন তবে তা আমার স্মরণ নেই) তিনি বলেন, রসূল সাঃআঃ এর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত চারটি ফিতনা সংঘটিত হইবে। প্রথমটি হলো ‘পাঁচ’, দ্বিতীয়টি হলো ‘দশ’, তৃতীয়টি হলো ‘বিশ’, চতুর্থটি হলো দাজ্জাল।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮৫. ইয়াযিদ ইবনু আবি হাবীব হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, আমার কাছে রাসূলুল্লা সাঃআঃ থেকে সংবাদ পৌছেছে, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেন, এমন কিছু ফিৎনা প্রকাশ পাবে যা সবাইকে গ্রাস করে নিবে। তার থেকে পশ্চিমা সৈন্য ব্যতীত কেও মুক্তি পাবেনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮৬. হযরত ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃআঃ) হতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">রসূল সাঃআঃ বলেছেন, চার প্রকারের ফিতনা সংঘটিত হইবে। ১. খুন করাকে বৈধ মনে করা হইবে। ২. অন্যের সম্পদকে বৈধ মনে করা হইবে। ৩. নারীর লজ্জাস্থানকে বৈধ মনে করা হইবে। ৪. দাজ্জালের আগমন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮৭. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাযিঃ হতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ যা, এরশাদ করিয়াছেন, আমি তোমাদেরকে আমার পরে প্রকাশিত সাত প্রকারের ফিতনা থেকে ভয় প্রদর্শন করছি। তার মধ্যে একটি পেশ আসবে মদীনা থেকে, আরেকটি প্রকাশ পাবে মক্কায়। অন্য পেশ আসবে ইয়ামান থেকে, আরেকটি শাম থেকে, আরেকটি মাশরিক থেকে, আরেকটি মাগরিব থেকে। অন্যটি প্রকাশ পাবে শামের মূলভুখন্ড থেকে এবং যেটিই হচ্ছে, ‘সুফইয়ানী ফিতনা’। এরপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ রাযিঃ বলিলেন, তোমাদের মাঝে এমন অনেকে রয়েছে যারা প্রথম ফিতনাগুলো অবলোকন করিবে এবং এ ওম্মতের অন্যরা সর্বশেষ ফিতনাগুলো অবলোকন করিবে। ওয়ালিদ ইবনু আইয়াশ বলেন, মদীনার ফিতনা হচ্ছে, তালহা এবং যুবায়ের এর পক্ষ থেকে। মক্কার ফিতনা হলো, আব্দুল্লাহ ইবনু যুবায়ের এর ফিতনা। ইয়ামানের ফিতনা হচ্ছে, যেটা নাজদার পক্ষ থেকে সংঘটিত হয়েছিল। শামের ফিতনা সংঘটিত হইবে বনূ ওমাইয়ার পক্ষ থেকে আর মাশরিকের ফিতনা হচ্ছে, এদের পক্ষ থেকে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮৮. হযরত আবু হুরাইরা রাযিঃ বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমার পরে আমার ওম্মতের মাঝে চার প্রকারের ফিতনা সংঘটিত হইবে। প্রথমতঃ পরস্পর মারামারি, হানাহানি বৃদ্ধি পাবে। দ্বিতীয়তঃ মানুষকে হত্যা করা এবং মানুষের সম্পদ বৈধ মনে করা হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তৃতীয়তঃ মানুষ হত্যা, অন্যের সম্পদ এবং বিনা ব্যভিচার ইত্যাদি জায়েয মনে করা হইবে। চতুর্থতঃ অন্ধ বধিরের ফিতনা, যা মানুষের সাথে চামড়ার ন্যায় মিশে যাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৮৯. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাযিঃ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন, আমার পরে তোমাদের মাঝে চার ধরনের ফিতনা প্রকাশ পাবে। এক. এমন ফিতনা যার মধ্যে লোকজন মানুষ হত্যা করাকে বৈধ মনে করিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">দুই. মানুষ হত্যা এবং অন্যের সম্পদকে হালাল মনে করা হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিন. এমন ফিতনা যার মধ্যে মানুষ হত্যাকরা অন্যের সম্পদ দখল করা এবং বিনা-ব্যভিচারকে বৈধ মনে করা হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">চার. অন্ধ-বধিরের ফিতনা, যা ব্যাপক আকার ধারন করিবে। সমুদ্রের ঢেউয়ের তীব্রভাবে আসতে থাকিবে। কেউ তার থেকে মুক্তির কোনো উপায় খুজে পাবে না। যে ফিতনা শাম দেশকে অবরুদ্ধ করে রাখবে এবং ইরাকেও গ্রাস করিবে। উক্ত ফিতনার হাত-পা দ্বারা জাযিরাতুন আরবকে শড়াতে থাকিবে। তখন বিভিন্ন ধরনের বালা-মসিবত মানুষের শরীরের সাথে এমনভাবে মিশ্রিত হয়ে যাবে, যেমন চামড়া শরীরের সাথে মিশে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে উক্ত ফিতনা প্রতিরোধ করার মত শক্তি কারো থাকিবেনা। অতঃপর উক্ত ফিতনা সম্বন্ধে পরিপূর্ণ অবগত হওয়ার পূর্বেই ঝড়ের গতিতে চূর্ণবিচূর্ণ করে অন্যদিকে বের হয়ে যাবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯০. হযরত আবু হুরাইর রাযিঃ বলেন</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">একদিন রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ নিম্নের আয়াতটি তিলাওয়াত করেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">———————– অর্থাৎ, তোমাদেরকে তিনি দলে উপদলে বিভক্ত করে পরস্পর মুখোমুখী দাড় করাবেন । (সূরা আনআম ৬৫)</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">এরপর রাসূলুল্লহ সাঃআঃ বলিলেন, আমার উম্মতের মধ্যে চারটি ফিতনা প্রকাশ পাবে। প্রথম ফিতনা যখন দেখা দিবে, তখন মানুষকে হত্যা করা হালাল মনে করা হইবে। দ্বিতীয় ফিতনা এমন আকার ধারন করিবে, মানুষ অন্যকে হত্যা করা এবং অন্যের সম্পদ দখল করাকে বৈধ জানবে। তৃতীয় ফিত্নাকালীন হত্যা, ডাকাতি এবং ধর্ষণ ইত্যাদি জায়েয মনে করা হইবে। চতুর্থ ফিতনা হচ্ছে অন্ধকারাচ্ছন্ন অন্ধ ফিতনা, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের বিস্তৃত হয়ে আছড়ে পড়বে। আরবের প্রত্যেক ঘরকে উক্ত ফিতনা গ্রাস করে নিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯১. আরতাত ইবনুল মুনযির রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর বক্তব্য আমাদের নিকট পৌঁেছছে, তিনি এরশাদ করিয়াছেন, আমার উম্মতের মধ্যে লাগাতার ভাবে চার প্রকারের ফিৎনা দেখা দিবে। প্রথমতঃ তাদের উপর এমনভাবে বালা-মসিবত আসতে থাকিবে, যার কারণে মুমিনগণ বলিতে থাকিবে, এইতো আমি মরে গেলাম! এরপর সেটা কিছুটা হালকা হয়ে যাবে। দ্বিতীয়তঃ এত বেশি তীব্রতার সাথে ফিতনা আসতে থাকিবে, যার ফলে প্রত্যেক মু’মিন মৃত্যুর প্রহর গুনবে, এরপর একটু হালকা হইবে। তৃতীয়তঃ একের পর এক ফিতনা আসতে থাকিবে। মনে হইবে যেন ফিতনা থেকে কিছুটা মুক্ত হতে পেরেছি, কিন্তু পরক্ষণে সেটা আবারো তীব্রভাবে আসবে। চতুর্থ ফিতনা এমনভাবে প্রকাশ পাবে, যার কারণে মানুষ ইসলাম ত্যাগ করিতে বাধ্য হইবে। এমন অবস্থার সম্মুখিন হলে মানুষ ইমাম এবং জামাআত ও একতাবদ্ধতাবিহীন দিগি¦দিক শুন্য হয়ে ছুটতে থাকিবে। অতঃপর মসীহে দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। এরপর সূর্য্য পশ্চিম দিকে উদিত হওয়া ও কিয়ামতের মাঝখানে বাহাত্তর জন দাজ্জাল প্রকাশ পাবে। তাদের মধ্যে অনেক এমন হইবে যার অনুসরণকারী হইবে মাত্র একজন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯২. আবুততোফাইল রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি হযরত হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ কে বলিতে শুনিয়াছি, মারাত্মক মারাত্মক তিন ধরনের ফিতনা প্রকাশ পাওয়ার পর চতুর্থ ফিতনা লোকজনকে দাজ্জালের দিকে নিক্ষেপ করিবে, যা মানুষকে ধ্বংসের মূখে পতিত করিবে। যে দাজ্জালের কারণে কখনো মানুষ ভালো অবস্থার সম্মুখিন হইবে আবার কখনো সম্মুখিন হইবে ভয়াবহ অবস্থার। আরেকটি ফিতনা হচ্ছে, অন্ধকারাচ্ছন্ন কালো ফিতনা, যা সমুদ্রের ঢেউয়ের ন্যায় লোকজনের উপর আছড়ে পড়বে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৩. হযরত উমাইর ইবনু হানী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রসূল সাঃআঃ বলেছেন, ‘ফিতনায়ে আহলাস’ হলো,তাতে পলায়ন হইবে। (অর্থাৎ পরস্পরের মধ্যে এমন শত্র“তা দেখা দিবে যে, একে অন্য হতে পলায়ন করিতে থাকিবে।) এবং ছিনতাই হইবে। ‘ফিতনাতুস সাবরা’ (অর্থাৎ ধরেন প্রাচুর্যের কারণে বিলাসিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ার ফিতনা), উক্ত ফিতনার ধোঁয়া কোন এক ব্যক্তির পায়ের নিচ হতে নির্গত হইবে। (অর্থাৎ সেই ব্যক্তিই উক্ত ফিতনার নায়ক হইবে।) সে আমার খানদানের লোক বলে দাবি করিবে,অথচ সে আমার আপনজনদের মধ্যে হইবেনা। প্রকৃতপক্ষে পরহেজগার লোকই হলেন আমার বন্ধু। অতঃপর লোকেরা এক ব্যক্তির উপর ক্ষমতা অর্পনে একমত হইবে, তারপর আরম্ভ হইবে অন্ধকারাচ্ছন্ন ফিতনা। যখন বলা হইবে ফিতনা শেষ হয়ে গেছে, তখন তা এত প্রসারিত হইবে যে, আরবের এমন কোন ঘর অবশিষ্ট থাকিবে না। যেখানে তারা প্রবেশ করিবেনা, (অর্থাৎ প্রতিটি ঘরে তা প্রবেশ করিবেই। আর মানুষ তখন এমন ভাবে লড়াই করিতে থাকিবে যে, সে একথা জানবেনা যে, সেকি সত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করছে? নাকি বাতিলের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এভাবে সব সময় তা চলতে থাকিবে। অবশেষে সকল মানুষ দু’টি তাবুতে (দলে) বিভক্ত হয়ে যাবে। একটি দল হইবে ঈমানের,এখানে মুনাফেকী থাকিবে না। আর অপর দলটি হইবে মুনাফেকীর যার মধ্যে ঈমান থাকিবে না। যখন উভয়টি একত্রিত হইবে, তখন তুমি দাজ্জালের আগমন প্রত্যক্ষ কর, সে ঐ দিনই অথবা পরের দিন আবির্ভূত হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৪. হযরত আব্দুলাহ ইবনু যবীর গাফেকী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">আমি হযরত আলী (রাঃআঃ) বলিতে শুনিয়াছি যে,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">চার ধরনের ফিতনা হইবে। ১. ‘ফিতনাতুস সাররা’; (অর্থাৎ প্রাচুর্যের কারণে বিলাসিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ার ফিতনা, ২. ‘ফিতনাতু র্দরা’ (অর্থাৎ দরিদ্রতার কারণে কষ্টে নিমজ্জিত হয়ে পড়ার ফিতনা), ৩. ‘এই রূপ ফিতনা’ এ কথা বলে তিনি স্বর্ণের খনির কথা আলোচনা করিলেন। অতঃপর নবী করীম সাঃআঃ এর বংশধর থেকে এমন এক ব্যক্তি আবির্ভূত হইবেন, যার হাতে আল্লাহ তায়ালা তাদের ক্ষমত ন্যাস্ত করবেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৫. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ বলেছেন, আমার পরে বহু ফিতনা সংঘটিত হইবে। তন্মধ্যে একটি হলো, ‘ফিতনায়ে আহলাম’ তাতে পলায়ন হইবে, (অর্থাৎ পরস্পরের মধ্যে এমন শত্র“তা দেখা দেবে যে, একে অন্য হতে পলায়ন করিতে থাকিবে।) এবং তাতে ছিনতাই হইবে। অতঃপর এর পরে এমন ফিতনা সংঘটিত হইবে যা তার চেয়েও আরো ভয়াভহ হইবে, তারপর এমন ফিতনা হইবে যে, যখন বলা হইবে ফিতনা শেষ হয়ে গেছে, তখন তা এত প্রসারিত হইবে যে, প্রত্যেক ঘরে তা প্রবেশ করিবেই। এবং প্রত্যেক মুসলমানকে আঘাত করিবেই। এরপর আমার বংশধর থেকে কোন এক ব্যক্তি আবির্ভূত হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৬. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু হুবায়রা (রাঃআঃ) বলেন</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">চার প্রকারের ফিতনা হইবে। ১. দৃষ্টি সম্পন্ন ফিতনা, ২. প্রবৃত্তি ফিতনা, ৩. অন্ধ ফিতনা, ৪. দাজ্জালের ফিতনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৭. হযরত কা’ব হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন তিন ধরনের ফিতনা প্রকাশ পাবে, যেমন অনেক ক্ষেত্রে পথচারীকে আটকানো হয়। কিছু ফিতনা প্রকাশিত হইবে শাম দেশে, অতঃপর পূর্বদিকে এত মারাত্মক ফিৎনা দেখা দিবে যদ্বারা বড় বড় রাজা বাদশাহগন সর্শেফুল দেখতে থাকিবে। এরপর সাথে সাথে প্রকাশ পাবে পশ্চিমা ফিতনা। অতঃপর হলুদ রংয়ের পতাকা বিশিষ্ট কিছু লোকে আবির্ভাব ঘটবে। বর্ণনাকারীর বক্তব্য হচ্ছে, পশ্চিমা ফিতনা হচ্ছে, মূলতঃ অন্ধ ফিতনা।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৮. হযরত কা’ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর এন্তেকালের পচিশ বৎসর পর পর্যন্ত আরবের উম্মানের মাঁথা ঘুরতে থাকিবে। এরপর বিভিন্ন ধরনের ফিতনা প্রকাশ পাবে, যার মধ্যে গণহত্যা থেকে শুরু করে সবকিছুই ঘটবে। এরপর মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ও নিরপত্তা অনুভব হইবে। এক পর্যায়ে তারা ঘুরতে ঘুরতে লাটিমের মত স্থীর হয়ে যাবে। এরপর এমন ফিতনা প্রকাশ পাবে যা মূলত ব্যাপক হত্যার রূপ নিবে। আমি কিতাবুল্লাহতে উক্ত ফিতনা সম্বন্ধে পেয়েছি, যেটা এমন অন্ধকারচ্ছন্ন ফিতনা যা প্রত্যেক মর্যাদা সম্পন্ন লোককে গ্রাস করে নিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ৯৯</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">ভিন্ন সুত্রে উপরের হাদিস বনর্িত হয়েছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০০. আবু সালেহ হতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন, হযরত কা’ব মসজিদে নববীর সংস্কার কাজ চলতে দেখে বলিলেন, আল্লাহর কসম! আমার ইচ্ছা হচ্ছে, মসজিদে নববীর সংস্কার করা নাহোক। কেননা তার একটি গম্বুজ স্থাপন করা হলে আরেকটি গম্বুজ খসে পড়বে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">একথা শুনে কা’বকে বলা হলো, হে আবু ইসহাক উক্ত মসজিদে নামায আদায় করলে এক হাজার নামায থেকে বেশি সওয়াব দেয়া হইবে একথা কি বলা হয়নি। অর্থাৎ, মসজিদে হারামের পর সওয়াবের দিক দিয়ে কি মসজিদে নববীর অবস্থান নয়।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">জবাবে হযরত কা’ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, হ্যাঁ আমি একথা বলছি, কিন্তু আসমান থেকে জমিনের দিকে যে ফিতনা ধাবমান হচ্ছে, সেটা একেবারে নিকটে এসে পড়েছে, আর মাত্র এক বিঘত পরিমান বাকি রয়েছে, যা মসজিদে নববীর সংস্কার কাজ সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে আছড়ে পড়বে। তখনই এই শেখ, অর্থাৎ, হযরত ওসমান ইবনু আফ্ফানকে হত্যা করা হইবে। একথা শুনে জনৈক লোক বলে উঠল, তার হত্যাকারীর সাথে কি হযরত ওমর রাযিঃ এর হত্যাকারীর ন্যায় আচরন করা হইবে না।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">জবাবে কা’ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলিলেন, লক্ষ বার অথবা তার থেকেও বেশি। এরপর বিশাল, বিস্তৃত এলাকা জুড়ে যুদ্ধ-বিগ্রহ হতে থাকিবে। অতঃপর পশ্চিমা এলাকা এবং পূর্ব দিক থেকে দুই দল সৈন্যের আগমন ঘটবে। উভয়দল ‘সিফ্ফীন’ নামক স্থানে একে অপরের মুখোমুখী হইবে এবং তাদের মাঝে তীব্র লড়াই সংঘটিত হইবে। অতঃপর তারা ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির অধীনস্থতা গ্রহণ পূর্বক যুদ্ধে বিরতী দিবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০১. হযরত কা’ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি একদিন ‘সিফ্ফীন’ নামক এলাকায় রাস্তার মধ্যে কিছু পাথর দেখতে পেয়ে হঠাৎ করে দাড়িয়ে পড়লেন এবং উক্ত পাথর খন্ডকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করিতে থাকলেন। তার অবস্থা দেখে সফরসঙ্গীদের একজন বলল, হে আবু ইসহাক! এভাবে কি দেখছেন?</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">জবাবে তিনি বলেন, উক্ত পাথরের যে বৈশিষ্ট রয়েছে সেটা আমি কিতাবে দেখতে পেরেছি যে, উক্ত পাথরের জন্য বণী ইসরাঈল নয় বার যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনেছে এবং নিঃসন্দেহে আরবরাও অতিসত্ত্বর দশমবারে যুদ্ধে লিপ্ত হইবে এবং ধ্বংস হয়ে যাবে, অথবা পাথরগুলো ছুড়ে মারতে হইবে, যেমন বনী ইসরাঈল গণ ছুড়ে মেরেছিল।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০২. হযরত আবুল জাল্দ রহমাতুল্লাহি আলাইহি হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন একেরপর এক ফিতনা প্রকাশ পাবে। প্রথম ফিতনা এবং দ্বিতীয় ফিতনা চাবুকের অগ্রভাগের গিঁটের মত হইবে যা আঘাত করিবে তরবারির ধারালো অংশের মত। এরপর এত ব্যাপক ফিতনা প্রকাশ পাবে, যার মধ্যে সব ধরনের হারাম বস্তুকে হালাল ও বৈধ মনে করা হইবে। উম্মতের সকলে কল্যাণ কামনার উপর ঐক্যমত পোষণ করলেও সেটা তাদের প্রতি খুব ধীরে ধীরে আস্তে থাকিবে, যেন ঘরের ভিতর বসেথেকে তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০৩. আবুল ওক্কাছ রহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত আলী রাযিঃ থেকে বর্ণনা করেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তোমাদেরকে কি আমি ‘তারাস্সুন’ ফিতনা সম্বন্ধে বলবোনা, তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘তারাস্সুল’ ফিতনা কি? জবাবে তিনি বলিলেন, যদি কাউকে বাতেলরা দশ প্রকারের বাঁধন দ্বারা কয়েদ করে রাখে তারপরও তার মাধ্যমে আহলে হক্বের অনেক ক্ষতি হইবে। তেমনিভাবে যদি কেউ হক্বের কারণে পরিপূর্ণভাবে গ্রেফতার অবস্থায় থাকে তারপরও তার মাধ্যমে বাতেলদের মারাত্মক ক্ষতি হইবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০৪. বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আউফ ইবনু মালেক আমজাঈ রাযিঃ হইতে বর্ণিত,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তিনি বলেন আমাকে রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এরশাদ করিয়াছেন, হে আউফ! কিয়ামতের পূর্বে ছয়টি ফিতনা প্রকাশ পাবে। তার মধ্যে প্রথম ফিতনা হচ্ছে, তোমাদের নবীর ওফাত পাওয়া, রাসূলুল্লাহ সাঃআঃ এর কথা শুনে আমি কেঁদে উঠলাম। অতঃপর তিনি বলিলেন, দ্বিতীয় ফিতনা হচ্ছে, বায়তুল মোকাদ্দাসের বিজয় হওয়া। তৃতীয় ফিতনাটি এত ব্যাপক হইবে যা শহর এবং গ্রামের প্রতিটি ঘরকেই গ্রাস করে নিবে। চতুর্থ ফিতনা হচ্ছে, মানুষের মধ্যে গণহারে মৃত্যু দেখা দিবে, যেন সকলে ছাগলের মাড়কের ন্যায় মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। পঞ্চম ফিতনা হচ্ছে, লোকজন প্রচুর সম্পদের মালিক হইবে। এমনকি কাউকে একশত দিনার দান করা হলেও যে কম মনে করে রাগে ক্ষোভে ফেটে পড়বে। আর ষষ্ঠ ফিতনা হলো, তোমাদের এবং রোমবাসীদের মাঝে একটা চুক্তি হইবে। অতঃপর তারা আশি দলে বিভক্ত হয়ে বারো হাজার সৈন্যের বিশাল কাফেলা সহকারে তোমাদের দিকে ধেয়ে আসবে।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০৫. সিলা ইবনু যুরার রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিশিষ্ট সাহাবী হযরত হোজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ কে বলিতে শুনেছেন।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">তাঁকে একজন লোক বলল, “দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটেছে”। একথা শুনে হযরত হোজাইফা রাযিঃ বলিলেন, না আল্লাহর কসম! সেটা কক্ষনো হতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের মাঝে আল্লাহর রসূল সাঃআঃ এর সাহাবায়ে কেরাম উপস্থিত থাকিবেন, ততক্ষণ দাজ্জাল আসতে পারে না। বিশেষ এক গোত্র দাজ্জালের আগমনের আশা করলেও তার আগমন ঘটবেনা। এমনকি কারো কারো নিকট দাজ্জালের আবির্ভাব এতই প্রিয় হইবে, যেমন তীব্র গরমের দিন মানুষের কাছে ঠান্ডা পানি পান করা খুবই প্রিয় হয়। এক পর্যায়ে হযরত হোজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাযিঃ বলিলেন, হে উম্মতে মুহাম্মদিয়া! অতিসত্ত্বর তোমাদের মাঝে চার প্রকারের ফিতনা প্রকাশ পাবে। তার মধ্যে এককিট হচ্ছে, সাদা-কালো মিশ্রিত ফিতনা। আরেকটি হলো, অন্ধকারাচ্ছন্ন ফিতনা। তৃতীয়টি হচ্ছে, অমুক অমুক ফিতনা। আর চতুর্থ ফিতনা তোমাদেরকে দাজ্জালের প্রতি ঠেলে দিবে, অতঃপর উক্ত সমতল ভূমিতে দুই দল যুদ্ধে বিগ্রহে লিপ্ত হয়ে পড়বে। আমার জানা নেই উভয় দল থেকে কোন দল সত্য বা হক্বের উপর রয়েছে এবং আমার তূণীরের তীর দ্বারা আমি উভয় দলের কোন দলকে সাহায্য করব।</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১০৬. বিশিষ্ট তাবেঈ হযরত তাউস রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,</span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;"><br /></span></p><p style="text-align: justify;"><span style="font-size: medium;">জনৈক লোক হযরত আবু মুসা আশআরী রাযিঃ এর কাছে জানতে চাইলো যে, এসব কি ঐ ফিতনা যা আপনি আমাদের সামনে বর্ণনা করিতেন। উক্ত ঘটনাটি মূলতঃ তখনই যখন আবু মুসা আশআরী রাযিঃ এবং হযরত আমর ইবনুল আম রাযিঃ এর মাঝে কোনো এক সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মতবিরোধ দেখা দিয়েছিল জবাবে হযরত আবু মুসা আশআরী রাযিঃ বলিলেন, এগুলো হচ্ছে, ফিতনার মারাত্মক মারাত্মক অংশসমূহ হতে একটি। অতঃপর বাকি রইল, বড় বড় অন্ধকারচ্ছন্ন ফিতনা, যা গোটা জাতিকে গ্রাস করিবে। যারা উক্ত ফিতনার প্রতি মনোনিবেশ কবে তাদেরকে অত্যন্ত নির্মমভাবে আকৃষ্ট করে নিবে। উক্ত ফিতনাকালীন যারা বসে থাকিবে তারা দন্ডায়মান থাকা লোকজন থেকে উত্তম, আর একস্থানে দাড়িয়ে থাকা লোক চলাচলকারী থেকে ভালো। স্বাভাবিক গতি সম্পন্ন লোক দ্রুতগামী থেকে অনেক উত্তম। ফিতনা সম্বন্ধে মন্তব্যকারী থেকে নীরবতা অবলম্বনকারী উত্তম আর উক্ত ফিতনার সময় ঘুমন্ত ব্যক্তি অনেক ভালো জাগ্রত লোক থেকে।</span></p><div style="text-align: justify;"><br /></div>

কিতাবুল ফিতানঃ নুয়াইম বিন হাম্মাদ (১০৬ টি হাদিস)

কিতাবুল ফিতানঃ  নুয়াইম বিন হাম্মাদ – ১. হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃআঃ হইতে বর্ণিত তিনি বলেন একদা রসূল সাঃআঃ আমাদের নিয়ে একটু বেলা থাকতেই আসরের...

Read more »