১. ইমাম আলী ইবন আল মাদীনী (মৃঃ ২৩৪ হিজরি) বলেছেনঃ “আল্লাহ তা’আলা রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর পর দুই জন ব্যাক্তির মাধ্যমেই ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন, একজন হলেন আবু বকর(রাদিয়াল্লাহু আনহু) অপরজন হলেন আহমাদ ইবন হাম্বল”  [তবকাত আল-হানাবিলাহ, পৃঃ ১/৩১]

২.  ইমাম আব্দুল ওয়াহহাব আল ওয়াররাক বলেনঃ “আমি ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বলের মত আর কাউকে দেখিনি, তাকে জিজ্ঞাসা করা হল আপনি অন্যের চেয়ে ইমাম আহমাদের মাঝে জ্ঞান বা মর্যাদার বেশী পেয়েছেন কি? তিনি বললেনঃ ইমাম আহমাদ এমন একজন ব্যাক্তি যাকে ৬০,০০০ (ষাট হাজার) প্রশ্ন করা হল, তিনি সকল প্রশ্নের জবাবে হাদ্দাছানা ওয়া আখবারানা অর্থাৎ শুধু হাদীস হতে জাবাব দিয়েছেন অন্য কিছু বলেন নি”  [তবকাত আল-হানাবিলাহ, পৃঃ ১/৯]
বিঃ দ্রঃ  ৬০,০০০ (ষাট হাজার) প্রশ্নের জবাব ইমাম আহমাদ শুধু মাত্র হাদীস হতে দিয়েছেন, অন্য কিছু বলেন নি, এ থেকেই ইমাম আহমাদের জ্ঞান সম্পর্কে বুঝা যায়।

৩. ইমাম আবু হাতীম মুহাম্মাদ বিন ইদ্রীস আর-রাযী (মৃঃ ২৭৭ হিজরি) বলেছেনঃ “সহীহ ও যইফ(দুর্বল) হাদীস সম্পর্কে আহমাদ ইবন হাম্বল খুব ভাল বুঝতেন” [Al-Jarh wat ta’deel: 1/302]

৪. ইমাম আবু হাতীম আরো বলেছেনঃ “যদি তুমি কোন মানুষকে দেখ আহমাদ ইবন হাম্বলকে ভালবাসতে তাহলে যেনে রেখ সে একজন সুন্নাহ এর অনুসারী” [Al-Jarh wat ta’deel: 1/308]
ইমাম আবু হাতীম, আহমাদ ইবন হাম্বলকে আলী ইবন আল-মাদীনী থেকেও বড় ফকীহ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [Al-Jarh wat ta’deel: 1/209]

৫. ইমাম আবু রাজা কুতাইবা বিন সা’ইদ (মৃঃ ২৪০ হিজরি) বলেছেনঃ “আহমাদ ইবন হাম্বল হলেন পুড় পৃথিবীর ইমাম” [Al-Jarh wat ta’deel: 1/295]

৬. ইমাম আবু রাজা কুতাইবা আরো বলেছেনেঃ “যদি আহমাদ ইবন হাম্বল সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন ছাওরী,মালিক,আওযাই এবং লাইছ ইবন সা’দ এর যুগের তাহলে তিনি(ইমাম আহমাদ) তাদের থেকেও উচ্চতর”
(আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন শাবওয়াইহ বলেন) আমি আবু রাজা কুতাইবাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ “আহমাদ ইবন হাম্বলকে কি তাবেয়ীদের সাথে তুলনা করা হত?”
তিনি(ইমাম আবু রাজা কুতাইবা) জবাবে বললেনঃ “(হ্যাঁ, তাকে(ইমাম আহমাদ) তুলনা করা হত) প্রখ্যাত তাবেয়ীদের সাথে”     [Al-Jarh wat ta’deel: 1/293,2/69]
বিঃ দ্রঃ
উপরে উল্লেখিত ছাওরী হলেন সুফিয়ান ছাওরী যিনি প্রখ্যাত ইমাম ও মুজতাহিদ ছিলেন।
উপরে উল্লেখিত মালিক হলেন ইমাম মালিক যিনি প্রখ্যাত ইমাম ও মুজতাহিদ ও মালিকি মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা।
উপরে উল্লেখিত আওযাই হলেন প্রখ্যাত ইমাম ও মুজতাহিদ ইমাম আওযাই।
উপরে উল্লেখিত লাইছ ইবন সা’দ হলেন ইমাম ও মুজতাহিদ এবং লাইছী মাযহাবের প্রবর্তক।

৭. ইমাম আবু রাজা কুতাইবা আরো বলেছেনেঃ “আহমাদ ইবন হাম্বল আর এখানে নেই, দ্বীনের(ধর্মের) চাড়া মরে গেছে” [Hilyat al-Awliyaa: 9/168]

৮. ইমাম আবু রাজা কুতাইবা আরো বলেছেনেঃ “আস-সাওরী এখানে নেই, ন্যায়পরায়নতা মরে গেছে; আহমাদ(ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) এখানে নেই, মানুষেরা দ্বীনের(ধর্মের) মধ্যে বিদ’আত প্রবেশ করিয়ে ফেলবে”  [Taareekh Baghdaad: 4/417]

৯. ইমাম আবু উবাইদ আল-কাসীম বিন সালাম (মৃঃ ২২৪ হিজরি) বলেছেনঃ “জ্ঞান চার জনের মধ্যে শেষ হয়েছে(আহমাদ,ইবন আল-মাদীনী,ইবন মঈন এবং আবু বকর ইবন আবী শায়বাহ), আহমাদ ইবন হাম্বল তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ফকীহ ছিলেন”    [Al-Jarh wat ta’deel: 1/293]

১০. আবু ছাওর ইবরাহীম বিন খালীদ আল-ফকীহ (মৃঃ ২৪০ হিজরি) বলেছেনঃ “আহমাদ ইবন হাম্বল বড় ফকীহ ছিলেন সুফিয়ান ছাওরী থেকে”  [Al-Jarh wat ta’deel: 1/293]


১১. ইমাম আলী ইবন আব্দুল্লাহ আল-মাদীনী (মৃঃ ২৩৪ হিজরি) বলেছেনঃ “আমাদের সঙ্গীদের মধ্যে আবু আব্দুল্লাহ আহমাদ ইবন হাম্বল(ইমাম আহমাদ) থেকে বড় হাফীয অন্য কেউ নেই”   [Al-Jarh wat ta’deel: 1/295; 2/69]

১২. ইমাম ইবন আল-মাদীনী আরো বলেছেনঃ “আহমাদ ইবন হাম্বল আমাদের নেতা(ইমাম)”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/165,171 ; Taareekh Baghdaad: 4/417 ;  Manaaqib Ahmad: page-109]

১৩. আমর বিন মুহাম্মাদ বিন বুকায়র আল-নাকীব (মৃঃ ২৩২ হিজরি) বলেছেনঃ “যদি আহমাদ ইবন হাম্বল হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে আমাকে সঙ্গতি দেয়, তাহলে আমি ভ্রুক্ষেপ করি না যে কে আমার বিরধিতা করছে”   [Al-Jarh wat ta’deel: 1/296]

১৪. মুহাদ্দিস কবীর ইমাম আহমাদ বিন সিনান আল-ওয়াসিতি (মৃঃ ২৫৯ হিজরি) বলেছেনঃ “ইয়াযীদ বিন হারুন(মৃঃ ২০৬ হিজরি) কে আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে অন্য কাউকে বেশী প্রশংসা করতে আমি দেখি নি। যখন তিনি আমাদের নিকট কোন হাদীস বর্ণনা করতেন তখন তাকে(ইমাম আহমাদ) তার(ইয়াযীদ বিন হারুন) সাথে বসাতেন; এবং যখন আহমাদ অসুস্থ হলেন, তার(ইমাম আহমাদ) সুস্থ হওয়ার খবর নেওয়ার জন্য  ইয়াযীদ বিন হারুন তার(ইমাম আহমাদ) কাছে গমন করতেন”   [Al-Jarh wat ta’deel: 1/297]

১৫. আসমা উল রিজাল এর একজন প্রখ্যাত ইমাম, ইমাম ইয়াহইয়া ইবন মঈন (মৃঃ ২৩৩ হিজরি) বলেছেনঃ “মানুষেরা বলে যে আহমাদ ইবন হাম্বল এর মত আমার হওয়া উচিত, না আল্লাহর শপথ! আমি আহমাদ ইবন হাম্বল এর মত হতে পারব না”   [Al-Jarh wat ta’deel: 1/298]

১৬. আবু আল আব্বাস মুহাম্মাদ বিন আল হুসাইন বিন আব্দুর রাহমান আল-আনমাতি (মৃঃ ২৯৩ হিজরি) বলেছেনঃ “আমরা একটি জনসমাবেশে ছিলাম যেখানে ইয়াহইয়া ইবন মঈন, আবু খাইথামাহ জুহাইর বিন হারব, প্রধান আলেমদের একটি দল উপস্থিত ছিল।  তারা আহমাদ ইবন হাম্বল এর প্রশংসা করছিলেন এবং তার গুনাবলী ব্যক্ত করছিলেন, তাই একজন বললোঃ ‘এসব কথা বলার ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রম করবেন না।’ ইয়াহইয়া ইবন মঈন বললেনঃ ‘আহমাদ ইবন হাম্বল এর বেশী প্রশংসা করা কি
নিন্দামূলক কাজ? এমনকি যদি আমরা তার প্রশংসা করা শুরু করি আমাদের সকল সমাবেশে তার পরও আমরা তার সম্পূর্ণ গুনাবলী বর্ণনা করে শেষ করতে পারব না’”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/169, 170 ; Taareekh Baghdaad: 4/421]

১৭. মুহাদ্দিস আবু জা’ফর মুহাম্মাদ বিন হারুন আল-মাখরামি (মৃঃ ২৬৫ হিজরি) বলেছেনঃ  “যদি তুমি কাউকে দেখ যে সে আহমাদ ইবন হাম্বলকে হীন করছে তাহলে যেনে রাখ সেই ব্যক্তি একজন পথভ্রষ্ট বিদ’আতী”  [Al-Jarh wat ta’deel: 1/309]

১৮. ইমাম ইবরাহীম বিন ইসহাক বিন ইবরাহীম বিন বাশীর আল-হারবী (মৃঃ ২৮৫ হিজরি) বলেছেনঃ “সা’ঈদ ইবন আল-মুসাইয়াব তার জমানায় ইমাম ছিলেন, সুফইয়ান ছাওরী তার জমানায় ইমাম ছিলেন, এবং আহমাদ ইবন হাম্বল তার জমানায় ইমাম ছিলেন”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/167 ; Taareekh Baghdaad: 4/417]

তিনি আরো বলেছেনঃ “আমি আহমাদ ইবন হাম্বল কে দেখেছি; নারীরা তার(আহমাদ ইবন হাম্বল) মত কাউকে জন্ম দেওয়া থেকে বঞ্চিত”  [Taareekh Baghdaad: 7/73]

১৯. যখন ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া আল-নিসাবুরী আল-ধাহলী (মৃঃ ২৫৮ হিজরি) শুনেছিলেন ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল এর মৃত্যুর খবর, তখন তিনি বলেছিলেনঃ “বাগদাদের সকল মানুষ তাদের গৃহে দুঃখিত আহমাদ ইবন হাম্বল এর জন্যে”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/170]

২০. ইমাম আবু আল-ওয়ালীদ হিশাম বিন আব্দুল মালিক আত-তিয়ালসি আল-বাহিলী আল-বাসারী (মৃঃ ২২৭ হিজরি) বলেছেনঃ “বাসরাহ এবং কুফাতে আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে অন্য কেউ আমার বেশী প্রিয় নয়”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/171 Chain Hasan ; Taareekh Dimashq: 5/299 Chain Hasan]

২১. প্রখ্যাত ইমাম এবং ফাকীহ, আবু মুহাম্মাদ ইশহাক বিন ইবরাহীম বিন মাখলাদ আল-হানধালী আল-মারওয়াযী, ইশহাক বিন রাহওয়াহ নামে পরিচিত (মৃঃ ২৩৮ হিজরি) বলেছেনঃ “যদি আহমাদ ইবন হাম্বল এখানে না থাকতেন, এবং তার জীবন বিসর্জন না দিতেন তাহলে (আমি মনেকরি) ইসলাম বিলুপ্ত হয়ে যেত”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/171, Chain Hasan]


২২. মুহাদ্দিস আবু আল-হাসান ইদরীস বিন আব্দুল করীম আল-হাদ্দাদ আল-মাকরী আল-বাগদাদী (মৃঃ ২৯২ হিজরি) বলেছেনঃ “আমি আমাদের উলামাদের দেখেছি, যেমন হাইথাম বিন খারিজাহ, মুস’আব আয-যুবাইরি, ইয়াহইয়া ইবন মঈন, আবু বকর বিন আবী শাইবাহ, উসমান বিন আবী শাইবাহ, মুহাম্মাদ বিন আব্দুল মালিক বিন আবী আশ-শাওারীব, আলী ইবন আল-মাদীনী, উবাইদুল্লাহ ইবন উমার আল-কাওারেরী, আবু খায়থামা জুহাইর বিন হারব, আবু মা’মার আল-কাতী’ঈ, মুহাম্মাদ বিন জাফর আল-ওয়ারকানী, আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন আয়্যুব শাহীব আল-মাঘাআযি, মুহাম্মাদ বিন বাক্কার আর-রায়্যাআন, আমর বিন মুহাম্মাদ আল-নাকীদ, আবু আর-রাবী আল-যাহিরানী, এবং আর অনেক জ্ঞানী ও ফকীহ। তারা সকলে আহমাদ ইবন হাম্বল এর প্রশংসা করতেন। তারা তাকে(আহমাদ ইবন হাম্বল) জালীল উল-ক্বাদর বলে বিবেচনা করতেন এবং তাকে সম্মান করতেন। তারা তার তারীফ করতেন, তারা প্রায়ই তাকে(আহমাদ ইবন হাম্বল) তাদের সালাম সমর্পণ করতে চাইতেন(যখন তার কাছে দেখা করতে যেতেন)”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/171 ; Taareekh Baghdaad: 4/416 ; Taareekh Dimashq: 5/312]

২৩. আসমা উল রিজাল রাস্ত্রের ইমাম, আবু সা’ইদ ইয়াহইয়া ইবন সা’ইদ বিন ফারুখ আল-কাত্তান আল-বাসরী (মৃঃ ১৯৮ হিজরি) বলেছেনঃ “আহমাদ ইবন হাম্বল এবং ইয়াহইয়া ইবন মঈন এর মত অন্য কেউ কখনই আমাদের কাছে আসে নাই”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/165, Chain Hasan]
তিনি আরও বলেছেনঃ “বাগদাদ থেকে এমন কেউ কখনই আমার কাছে আসে নাই, যে আহমাদ বিন হাম্বল থেকে আমার কাছে বেশী প্রিয়”  [Taareekh Dimashq: 5/295, Chain Hasan]

২৪.  আল মুহাদ্দিস আল-সুদুক, ইমাম আবু আল-কাসীম আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন আব্দুল আযীয আল-বাঘায়ি (মৃঃ ৩১৭ হিজরি) বলেছেনঃ “আহমাদ ইবন হাম্বল আমাদের বর্ণনা করেছেন, তিনি পুড় পৃথিবীর ইমাম”  [Al-Kaamil by ibn Adee: 1/128, Chain Hasan]

২৫. আবু আল হাসান আব্দুল ওয়াহহাব বিন আবুল হাকাম বিন নাফী’ আল-ওয়াররাক আল-বাগদাদী (মৃঃ ২৫১ হিজরি) বলেছেনঃ “তিনি(আহমাদ ইবন হাম্বল) তার যুগের সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষ ছিলেন”  [Taareekh Baghdaad: 4/418,419 Chain Hasan ; Narrated ibn al-Jawzee in Manaaqib Al-Imaam Ahmad: p. 142]

২৬. মুহাদ্দীস কবীর, আহমাদ বিন ইবরাহীম বিন কাসীর বিন যায়দ আদ-দাউরাকী আন-নুকরী আল-বাগদাদী (মৃঃ ২৪৬ হিজরি) বলেছেনঃ “যদি তুমি কাউকে আহমাদ ইবন হাম্বল সম্পর্কে দুর্বল(মন্দ) কিছু বলতে শুন তাহলে সেই ব্যক্তির ইসলাম(দ্বীন) আছে কিনা তা সন্দেহ কর”  [Taareekh Baghdaad: 4/420 Chain Hasan Garib ; Manaaqib Al-Imaam Ahmad of ibn al-Jawzee: p.494,495]

২৭. ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবন ইদরীস বিন আব্বাস আশ-শাফিঈ আল-মুতলাবী আল-মাক্কী আল-মিসরি {ইমাম শাফিঈ নামে পরিচিত, তিনি শাফিঈ মাযহাবের ইমাম,মুজতাহীদ} (মৃঃ ২০৪ হিজরি) বলেছেনঃ “আমি বাগদাদ থেকে বের হয়ে আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে বড় কোন ফকীহ, বড় কোন কঠোর তপস্বী, বেশী আল্লাহ ভীরু এবং বেশী জ্ঞানী আর কাউকে পাই নি”  [Ma’rifah Uloom ul-Hadeeth By Haakim: p. 72  H. 140, Chain Hasan ; Taareekh Baghdaad: 4/419 ;  Taareekh Dimashq: 5/298 ; Manaaqib Al-Imaam Ahmad of ibn al-Jawzee: p. 107]

২৮.  ইমাম শাফিঈ, ইমাম আহমাদ কে বলেছেনঃ “হে আবু আব্দুল্লাহ! আপনি আমাদের থেকে বেশী সহীহ বর্ণনা(হাদীস এর বর্ণনা) জানেন, তাই যদি কোন সহীহ বর্ণনা থাকে তাহলে আমাকে জানাবেন(বর্ণনাটির সম্পর্কে) যাতে আমি এটি(বর্ণিত হাদীস) অনুসরন করতে পারি”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/170]

২৯. আবু নাসর আল-ফাথ বিন শাখরাফ বিন দাওদ বিন মুযাহীম আল-আবিদ (মৃঃ ২৭৩ হিজরি) বলেছেনঃ “এবং ইবন হাম্বল(আহমাদ ইবন হাম্বল) তার সময়ের (সবচেয়ে বড় আলেম ছিলেন)”
এটি শুনে, আবু আব্দুল্লাহ আল-হারিছ বিন আসাদ আল-মুহাসিবী আল-বাগদাদী (মৃঃ ২৪৩ হিজরি) বলেছেনঃ “আহমাদ ইবন হাম্বল অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন যা সুফইয়ান আছ-ছাওরী এবং আল-আওযায়ী এর সাথে ঘটেনি”  [Hilyat al-Awliyaa: 9/167 Chain Hasan ; Manaaqib Al-Imaam Ahmad of ibn al-Jawzee: p. 121 Chain Hasan]

৩০. হাফিজ আবু ইয়া’লা আল-খালীল বিন আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন খালীল আল-খালেলী আল-কুযওয়াইনী (মৃঃ ৪৪৬ হিজরি) ইমাম আহমাদ সম্পর্কে বলেছেনঃ “এবং তিনি(আহমাদ ইবন হাম্বল) তার সময়ের সবচেয়ে বড় ফকীহ ও ন্যায়নিষ্ঠ ব্যাক্তি ছিলেন”  [Al-Irshaad fi Ma’rifah Uloom ul-Hadeeth: 2/597 T.302]


৩১. আবু আল-হাসান আলী বিন ইসমাইল বিন ইশহাক বিন সালীম আল-আশ’আরী (আবুল হাসান আশ’আরী নামে পরিচিত) (মৃঃ ৩২৪ হিজরি) বলেছেনঃ “আমাদের অভিমত এবং যেই আকীদা আমরা অনুসরন করি তা হল দৃঢ় ভাবে ধরা আল্লাহর কিতাব এবং রাসুল মুহাম্মাদ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নাহ, যা সাহাবীদের থেকে বর্ণিত হয়েছে তা, তাবেয়ী এবং হাদীসের আইম্মা থেকে আমরা আশ্রয় গ্রহন করি। এবং আমরা তাও অনুসরন করি যা আবু আব্দুল্লাহ আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বল (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) বলেছেন- আল্লাহ তার চেহারাকে উন্নীত করুক এবং তার মর্যাদা বৃদ্ধি করুক এবং তাকে সবচেয়ে ভাল বিনিময় দান করুক। যদি কোন ব্যাক্তি তার (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) কথার বিরুদ্ধে যায় তাহলে আমরা সেই ব্যক্তির কাছ থেকে বিরত থাকব, কারন তিনি (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) ছিলেন ইমাম আল-ফাযেল, এবং রা’ঈস আল-কামীল। আল্লাহ তার (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) মাধ্যমে সত্যকে স্পষ্ট করেছেন এবং পথভ্রষ্টতাকে দূরীভূত করেছেন। তিনি (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) মানহাযকে (পথকে) স্পষ্ট করেছেন (মানুশের জন্য) এবং ধ্বংস করেছেনঃ বিদ’আতীদের
বিদ’আতকে, পথভ্রষ্টদের পথভ্রষ্টতাকে, সন্দিহানদের সন্দেহকে। আল্লাহ তার দয়া দেখাক এই মুকাদ্দাম ইমামকে এবং শ্রেষ্ঠ বন্ধুকে এবং সকল মুসলিম আইম্মাদের।”  [Al-Ibaanah An Usool ad-Diyaanah: p.8]

৩২. হাফীজ আমীর আবু নাসর আলী বিন হিবাতুল্লাহ (ইবন মাকুলা নামে পরিচিত) (মৃঃ ৪৭৫ হিজরি) বলেছেনঃ “তিনি (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) বর্ণনায় ইমাম ছিলেন এবং জুহদে বিশিষ্ট ছিলেন এবং ন্যায়পরায়ণ ছিলেন; সাহাবী ও তাবেয়ীদের মাযহাব সম্বন্ধে তিনি সবথেকে বেশী জানতেন”  [Al-Ikmaal: 2/563 ; Taareekh Dimashq: 5/287, Chain Saheeh up to Ibn Makoola]

৩৩. হাফীয আবু ফারজ আব্দুর রাহমান বিন আলী বিন মুহাম্মাদ ইবন আল-জাওজী (মৃঃ ৫৯৭ হিজরি) বলেছেনঃ “তিনি(ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) ছিলেন একজন ইমাম… তিনি(ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) তার মধ্যে হাদীস,ফিকাহ,জুহদ এবং ন্যায়পরায়ণতা সংরক্ষন করে রেখেছিলেন”  [Al-Muntazim fi Taareekh al-Malook: 11/286]

৩৪. ইমাম আবু বকর আহমাদ ইবন আলী বিন ছাবীত আল-খাতীব আল-বাগদাদী (মৃঃ ৪৬৩ হিজরি) বলেছেনঃ “তিনি (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) মুহাদ্দিসদের ইমাম ছিলেন, দ্বীনের(ইসলাম) সাহায্যকারী ছিলেন, সুন্নাতের রক্ষক ছিলেন, দুঃখে ধৈর্যশীল ছিলেন”  [Taareekh Baghdaad: 4/412 T.2317]

৩৫. আসমা উল রিজাল এর প্রখ্যাত ইমাম, হাফিজ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন উছমান আয-যাহাবী (ইমাম যাহাবী নামে পরিচিত) (মৃঃ ৭৪৮ হিজরি) ইমাম আহমাদ সম্পর্কে বলেছেনঃ “এটি বাস্তবতা যে তিনি (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) একজন ইমাম ছিলেন, এবং এটি সত্য যে তিনি ছিলেন শায়খ উল ইসলাম”  [Siyar A’laam al-Nabula: 11/177]

৩৬. হাফীজ আবু আল-ফাজল আহমাদ বিন আলী ইবন হাজার আল-আসকালানী (ইবন হাজার আসকালানী নামে পরিচিত) (মৃঃ ৮৫২ হিজরি) বলেছেনঃ “আহমাদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন হাম্বল… তিনি আইম্মাদের মধ্য থেকে একজন ছিলেন, তিনি ছিলেন ছিকাহ,হাফিজ,ফাকীহ,হুজ্জাহ(দলীল)”  [Taqreeb at-Tahdheeb: 96]


৩৭. মুসা বিন উবায়দুল্লাহ বিন ইয়াহইয়া খাকান (মৃঃ ৩২৫ হিজরি) ইমাম আহমাদের প্রশংসায় বলেছেনঃ “তুমি দেখবে যে (প্রত্যেক) বিদ’আতী আহমাদের (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) প্রতি ঘৃণা পোষণ করে, এবং তোমার জানা উচিত যে (প্রত্যেক) ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তি ইবন হাম্বলকে (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) ভালোবাসে”  [Manaaqib Al-Imaam Ahmad of ibn al-Jawzee: p. 431]

৩৮. শামস উদ-দ্বীন মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ আল-জাজরী (মৃঃ ৮৩৩ হিজরি) বলেছেনঃ “তিনি(ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) ছিলেন শায়খ উল-ইসলাম এবং সুন্নাহ’র শাইখ, এবং তিনি (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) সেই ব্যাক্তি যিনি এই উম্মাহকে(মুসলিম উম্মাহ) দয়া করেছেন”  [Al-Mus’ad Al-Ahmad fi Khatm Musnad Al-Imaam Ahmad, With Tahqeeq of Ahmad Shaakir: 1/35]

৩৯. ইমাম হাজ্জাজ বিন আবী ইয়াকুব ইউসুফ বিন হাজ্জাজ আশ-শা’ইর আছ-ছাকাফী আল-বাগদাদী (মৃঃ ২৫৯ হিজরি) বলেছেনঃ “আমি একবার আহমাদের (ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) কপালে চুমু দিলাম এবং বললাম, ‘হে আবু আব্দুল্লাহ! তুমি সুফইয়ান(ইমাম সুফইয়ান ছাওরী) এবং মালিকের(ইমাম মালিক) পর্যায়ে পৌঁছে গেছ’”  [Manaaqib Ahmad: p.134]

৪০. ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল এর শিক্ষক, হাফিজ আবু বকর আব্দুর রাজ্জাক বিন হাম্মাম বিন নাফি আল-হুমায়রি আস-সানা’আনী (মৃঃ ২২১ হিজরি) (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক এর লেখক) বলেছেনঃ “আহমাদ বিন হাম্বল এর মত কেউ আমাদের কাছে কখনও আসে নাই”  [Manaaqib al-Imaam Ahmed  by Ibn Al-Jawzee: p.69 Chain Hasan]

৪১.  হাফিয ইবন হিব্বান(মৃঃ ৩৫৪হিজরি) বলেছেনঃ “সে(ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) ছিলেন হাফিজ,ফকীহ,অসাধারন। আল্লাহ উম্মাতে মুহাম্মাদ কে তার(ইমাম আহমাদ) মাধ্যমে সাহায্য করেছেন। তিনি একটি আশ্রয়স্থল এর মত ছিলেন এবং মানুষেরা তার মধ্যে আশ্রয় খুজতো” [Ath-Thiqaat Of Ibn Hibban: vol.8 p. 18/19]

৪২. মুহাম্মাদ ইবন সা’দ ইবন মুনী আল-হাশমী আল-বাসরী আল-বাগদাদী (মৃঃ ২৩০ হিজরি) বলেছেনঃ “সে(ইমাম আহমাদ) নির্ভরযোগ্য,যথাযথ,সত্যবাদী,কাসীরুল হাদীস(প্রচুর হাদীস বর্ণনাকারী)” [Tabaqaat ibn sa’d: 7/354]


বিভিন্ন গ্রন্থে ইমাম আহমদ (রহ) থেকে বর্নিত হাদিস সংখ্যা :



★ সহীহ বুখারী তে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে বর্ণিত হাদীস রয়েছে ৫ টি, সেগুল হলঃ আরবী সহীহ বুখারী এর ৩৭৭,২১০৮,৪৪৭৩,৫১০৫,৫৮৭৯ নং হাদীস।

★ সহীহ মুসলিম এ ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে বর্ণিত হাদীস রয়েছে ১৯ টি, সেগুল হলঃ আরবী সহীহ মুসলিম এর ৪২০/১৬৬, ৫১৯/২১৫, ১১১৭/৫০২, ১৩১৩/৫৮১, ১৬৪৪/৭১০, ৩০৯৫/১২৮৪, ৩১৩৯/১২৯৮, ৩৯৬২/১৫৫১, ৪৩৭৭/১৬৭৬, ৪৫৭৪/১৭৫৬, ৪৬৯৬/১৮১৪, ৪৯৯৬/১৯৩৪, ৫৪৪৫/২০৮১, ৫৪৭৯/২০৯২, ৫৬০৪/২১৩৯, ৫২১০/২১৪৩, ৬০১৩/২৩০৯, ৬২৫৬/২৪২১, ৬৩০৯/২৪৪৯ নং হাদীস।

★ সুনানে আবু দাউদ এ ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে বর্ণিত হাদীস রয়েছে ১০ টি, সেগুল হলঃ আরবী সুনানে আবু দাউদ এর ৩৮৫,৫১৭,১৪২৮,১৮৩৭,১৯০৭,১৯৫১,২০১৬,২৩৭০,২৩৭৪,৪০০০ নং হাদীস।

★ সহীহ ইবন খুজাইমাহ এ ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে বর্ণিত হাদীস রয়েছে ১ টি, তা হলঃ আরবী সহীহ ইবন খুজাইমাহ ১/৫৯ হাদীস ১১২।

★ ইমাম ইবন হিব্বান এর সহীহ(আল-ইহসান) গ্রন্থে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল থেকে বর্ণিত হাদীস রয়েছে ২৪ টি। [সেগুলর নম্বর আমি উল্লেখ করছি না]

★ ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবন ইসমাইল আল-বুখারী(রাহিমাহুল্লাহ) , আসমা উল রিজাল শাস্ত্রে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল এর কথাকে দলীল হিসাবে গ্রহন করেছেন। [Kitab ad-Du’afa Of Imaam Bukhari- 80,110,240,260,355 ; Al-Tareekh Al-Kabeer 7/291]





 
Top