প্রশ্ন: সাধারণ লোকদের মাঝে প্রচলিত রয়েছে যে, হযরত আইয়ুব عليه السلام এর দেহ মুবারককে রোগের কারণে পোকা ধরেছিল, এটা কি সঠিক?
উত্তর: হযরত আইয়ুব عليه السلام এর শরীর মুবারককে পোকা ধরার কথাটি একদম ভুল। কারণ শরীরের পোকা ধরা খুবই ঘৃণার বিষয় আর আহলে সুন্নাতের এটাই আকীদা যে, আল্লাহ পাকের নবীগণ প্রতিটি এমন রোগ থেকে মাহফুজ তথা নিরাপদ থাকেন যেগুলোর কারণে মানুষ ঘৃণা করে দূরে সরে যায়। নবীদের শরীরতো ইন্তেকালের পর মাটিও ক্ষতি করতে পারবে না এজন্য যে, নবীদের শরীরকে গ্রাস করা জমিনের উপর হারাম করা হয়েছে। (ইবনে মাজাহ, ২/২৯১, হাদীস: ১৬৩৭) সুতরাং পোকাদের এমন কী ক্ষমতা রয়েছে যে, তারা হযরত আইয়ুব عليه السلام এর শরীর মুবারককে ক্ষতিসাধন করবে। (মলফুযাতে আমীরে আহলে সুন্নাত, ১/১৭৭)
১। প্রখ্যাত মুফাসসির হাকিমুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খান নাঈমী رحمه الله عليه বলেন: নবী এই ধরনের রোগ থেকে নিরাপদ থাকেন ঘৃণিত পঁচা রোগ তাদের হয় না। মুসলিম ইত্যাদির হাদীস দ্বারা এ প্রমাণিত হয়। কাপুরুষতা, বোবা, বধীর, শ্বেত ও কুষ্ট রোগ নবীদের হয় না। (মিরাতুল মানাজীহ, ৭/৫৭৪)
-------------
নবীগণের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের অন্যতম অংশ হলো: তারা শারীরিক, নৈতিক ও আত্মিকভাবে এমন দোষ ও রোগ থেকে পবিত্র, যা মানুষকে ঘৃণা করাতে পারে বা তাদের মর্যাদা হানি করে।
হযরত আইয়ুব عليه السلام -এর রোগ সম্পর্কে যেসব বর্ণনায় এসেছে যে তাঁর শরীর পঁচে গিয়েছিল বা লোকেরা তার গন্ধে দূরে থাকত— এসব কাহিনি কুরআন ও সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। বরং সেগুলো অনেক সময় ইসরাইলি বর্ণনা (ইহুদি-খ্রিস্টান সূত্র) থেকে এসেছে, যেগুলোর উপর নির্ভর করা সঠিক নয় যদি না তা কুরআন বা সহিহ হাদীস দ্বারা সমর্থিত হয়।
---
কুরআন যা বলে:
"আর আইয়ূবের কথা স্মরণ কর, যখন সে তার পালনকর্তাকে আহ্বান করে বলল, ‘আমি দুঃখ-কষ্টে পড়েছি, আর তুমি তো দয়ালুদের মধ্যে সর্বাধিক দয়ালু।’"
— সূরা আল-আম্বিয়া (২১:৮৩)
এখানে শুধু বলা হয়েছে, তিনি কষ্টে ছিলেন – বিস্তারিত কোনো বর্ণনা নেই। আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করে সুস্থ করে দেন এবং পুরস্কার দেন।
ইসলামী আকিদা অনুযায়ী:
• নবীগণ পাপমুক্ত ও উচ্চ নৈতিক চরিত্রের অধিকারী।
• তারা এমন কিছুতে আক্রান্ত হন না যা মানুষের ঘৃণা সৃষ্টি করে।
• তাদের রোগ বা কষ্টও হয় পরীক্ষার উদ্দেশ্যে, অপমানের জন্য নয়।
বিস্তারিত: https://youtu.be/NPrARcfFVxk?feature=shared
.
.
#swadhinahmed