দ্বীনকে খন্ড-বিখন্ড না করার আদেশ :

নিশ্চয় যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড-বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে, তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপার আল্লাহ তা`আয়ালার নিকট সমর্পিত। অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা কিছু তারা করে থাকে।
(The Cattle (Al-Anàam)/159)

যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লসিত।
(The Romans (Ar-Rüm)/32)

অতঃপর তাদের মধ্যে থেকে বিভিন্ন দল মতভেদ সৃষ্টি করল। সুতরাং যালেমদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক দিবসের আযাবের দুর্ভোগ
(Gold Adornments (Az-Zukhruf)/65)

আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নেয়ামতের কথা স্মরণ কর, যা আল্লাহ তোমাদিগকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে, এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। তোমরা এক অগ্নিকুন্ডের পাড়ে অবস্থান করছিলে। অতঃপর তা থেকে তিনি তোমাদেরকে মুক্তি দিয়েছেন। এভাবেই আল্লাহ নিজের নিদর্শনসমুহ প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা হেদায়েত প্রাপ্ত হতে পার।
(Surah Al-Imran. 3/103)



নোট : এর থেকে বুঝা যায় যেই দলটা জান্নাতী হবে তারা দ্বীন ইসলামের মধ্যেই আছে ,আর থাকবে। বাতিল আকিদা থেকে আলাদা করে বুঝানোর জন্যই আমরা "আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাহ" বলে থাকি মুলত এটা ইসলামের বহির্ভুত কোন দল নয়। কারন ৭২টা বাতিল দলের সবাই নিজেদের দ্বীন ইসলামের উপর আছে আর সবাই মুসলিম এটা বলে সাধারন পরিচয় দেয় কিন্তু শিয়ারা তাদের আকিদা নিয়ে আছে, ওহাবীরা তাদের আকিদায়, সালাফীরা তাদেরতাদের আকিদায়, এমন যত দল আছে সবাই যার যার মতবাদ নিয়েই আছে।
তাই হক যারা তারা দ্বীনকে খন্ড করবে না কিন্তু বাতিল যারা তারাই খন্ড করে আলাদা হয়ে যাবে।




★ নবী কারীম সাঃ ইরশাদ করেছেন-পূর্বের উম্মত যাই করেছে এই উম্মতও তাই করবে নাফরমানীর দিক থেকে। তথা ওরা যত পদ্ধতিতে নাফরমানী করেছে এই উম্মতও সেই পদ্ধতীতে নাফরমানী করবে। সুতরাং আল্লাহ তায়ালার নাফরমানী করার ৭১টি পদ্ধতিওয়ালা বাতিল ফিরক্বা পূর্ব উম্মত থেকে গ্রহণ করবে এই উম্মত। তথা ৭১টি বাতিল ফিরক্বার মত ও পথ পূর্ব উম্মতের মত এই উম্মতেও থাকবে।
আর জান্নাতী ছিল পূর্ব উম্মতের ৭২ ফিরক্বার মাঝে একটি ফিরক্বা। সেটিও এ উম্মতে পূর্ব পদ্ধতি অনুযায়ী থাকবে। শুধু বাড়বে একটি বাতিল ফিরক্বা এই উম্মতে। যেই বাতিল ফিরক্বার কোন নজীর পূর্ব উম্মতের মাঝে ছিল না। সেই বর্ধিত বাতিল ফিরক্বাটি কারা? আল্লামা কুরতুবী রহঃ তার প্রণীত তাফসীরে কুরতুবীতে লিখেন-

. وقد قال بعض العلماء العارفين : هذه الفرقة التي زادت في فرق أمة محمد صلى الله عليه وسلم هم قوم يعادون العلماء ويبغضون الفقهاء ، ولم يكن ذلك قط في الأمم السالفة.( الجامع لأحكام القرآن
المؤلف : أبو عبد الله محمد بن أحمد بن أبي بكر بن فرح الأنصاري الخزرجي شمس الدين القرطبي (المتوفى : 671)

যেই ফিরক্বাটি উম্মতে মুহাম্মদীদে বাড়বে তারা হল-যারা ওলামাদের সাথে শত্রুতা করবে, আর ফুক্বাহাদের প্রতি রাখবে বিদ্বেষ। এই গ্রপটি পূর্ব উম্মতের মাঝে ছিল না। {তাফসীরে কুরতুবী, সূরাতুল আনআম)

★ অপর হাদিসে আছে :


عن عبد الله بن عمرو قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ليأتين على أمتي ما أتى على بني إسرائيل حذو النعل بالنعل حتى إن كان منهم من أتى أمه علانية لكان في أمتي من يصنع ذلك وإن بني إسرائيل تفرقت على ثنتين وسبعين ملة وتفترق أمتي على ثلاث وسبعين ملة كلهم في النار إلا ملة واحدة قالوا ومن هي يا رسول الله قال ما أنا عليه وأصحابي (سنن الترمذى-كتاب الايمان، باب ما جاء في افتراق الأمة، رقم الحديث-2641)

অর্থ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমার উম্মত তা’ই করবে যা করেছে বনী ইসরাঈলের লোকেরা। এক জুতা অপর জুতার সমান হওয়ার মত। এমনকি যদি ওদের মাঝে কেউ মায়ের সাথে প্রকাশ্যে জিনা করে থাকে, তাহলে এই উম্মতের মাঝেও এরকম ব্যক্তি হবে যে একাজটি করবে। আর নিশ্চয় বনী ইসরাঈল ছিল ৭২ দলে বিভক্ত। আর আমার উম্মত হবে ৭৩ দলে বিভক্ত। এই সব দলই হবে জাহান্নামী একটি দল ছাড়া। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন-সেই দলটি কারা? নবীজী সাঃ বললেন-যারা আমার ও আমার সাহাবাদের মত ও পথ অনুসরণ করবে।

★ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-২৬৪১,
★ আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৭৬৫৯,
★ আল মু’জামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৮৮৯,
★ কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০৬০

 
Top