লিখেছেন : কলম সৈনিক

আহলে হাদীস সর্দার মুজাফফর বিন মুহসিন নামক উদ্ভট মুফতী বলেছেন,
পানি থাকা অবস্থায় কুলুখ নেয়া শরিয়ত সম্মত নয়। কুলুখ নেয়ার পর পানি ব্যবহার সম্পর্কিত যে হাদীস বর্ণনা করা হয়, তা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন।
বেচারা আরো বলেন,
“সুতরাং সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত উক্ত মিথ্যা প্রথাকে অবশ্যই উচ্ছেদ করতে হবে। পানি থাকা অবস্থায় যেন কোন স্থানে কুলুখের স্তুপ সৃষ্টি না হয়”।
দেখুন,
জাল হাদীসের কবলে রাসুলুল্লাহ (সা) এর সালাত/৩৯

জবাবঃ

কুলুখ ব্যবহার করে পানি নেয়া সংক্রান্ত সহীহ হাদীসঃ
___________________________
হযরত আলী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তীরা শক্ত পায়খানা করতো। আর তোমরা কর নরম ভাবে। সুতরাং তোমরা পাথর (কুলুখ) ব্যবহার করে তারপর পানি ব্যবহার কর।
রেফারেন্সঃ
আস সুনানুল কুবরা, মুসান্নাফ ইবনি আবী শাইবাহ।

ইবনু হাজার আসকালানী (রাহ) এর পর্যালোচনাঃ
_________________________
ইমাম ইবনু হাজা আসকালানী (রাহ) বলেন, এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম ইবনু আবী শাইবাহ এবং ইমাম বাইহাকী হাসান সনদে।
অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ।
রেফারেন্সঃ
আদ দিরায়াহ-১/৯৭
হাদীসটির পূর্ণ সনদ উল্লেখ করেছেন ইমাম যায়লায়ী (রাহ)।
রেফারেন্সঃ
নাসবুর রায়াহ-১/২১৮

ইমাম নববী (রাহ) এর ফতোয়াঃ
_________________
ইমামগণ ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, পানি এবং পাথর দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করা উত্তম। আর তা হচ্ছে প্রথমে পাথর (কুলুখ) দ্বারা এবং তারপর পানি দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করা। তবে কেউ যদি এ দুটি (পাথর এবং পানি) এর কোন একটি দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করে, তবে তা জায়েয।
রেফারেন্সঃ
শারহু মুসলিম লিন নাওয়াওয়ী-৩/১৬৩
এমন কথাই বলেছেন জামিউত তিরমিযীর ব্যাখ্যাকার মুবারকপুরী।
তুহফাতুল আহওয়াযী-১/৭৮

ইবনু তাইমিয়্যাহ এর ফতোয়াঃ
__________________
ইবনু তাইমিয়্যাহ বলেন,
প্রথমে কুলুখ ব্যবহার এবং পরে পানি ব্যবহার করে পবিত্রতা হাসিল করা- এটাই হচ্ছে উত্তম কাজ। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল ও এটাকে জায়েয বলেছেন। তাছাড়া আরেকটি দলীল হলো, মদীনা মুনাওওয়ারার আনসারগণ পবিত্রতা হাসিলের জন্য পাথর এবং পরে পানি ব্যবহার করতেন। আর এর স্বপক্ষে আল্লাহ আয়াত নাযিল করেছেন,
(সূরা তাওবাহ,১০৮)

রেফারেন্সঃ
শারহু উমদাতিল ফিকহ
তাহারাত অধ্যায়, টয়লেটে প্রবেশ করা পরিচ্ছদ।

______________
সম্মানিত পাঠক,
তাহলে ব্যাপারটি কী দাঁড়ালো?
প্রশ্রাব পায়খানার পর পবিত্রতা হাসিলের জন্য উত্তম হলো প্রথমে কুলুখ এবং পরে পানি ব্যবহার করা উত্তম। আর এটাই সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, যা উপরে আলোচনা করা হলো।
কিন্তু এসব সহীহ হাদীস এবং বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিসগনণের রায় এমনকি তাদের ইমামের ফতোয়া উপেক্ষা করে নামধারী আহলে হাদীস সর্দার মুজাফফর বিন মুহসিন বলে দিলেন, সমাজে প্রচলিত কুলুখ ব্যবহার একটি
“মিথ্যা প্রথা”!!!!!!
আর এ সংক্রান্ত হাদীস নাকি
মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন!!!!!!!
আজব খেলা!
_________________
লেখাটি শেয়ার / কপি করুন। প্রচার করুন। সকলকে এ প্রতারণা সম্পর্কে সচেতন করুন।
 
Top