🖋Salma Ahmed Essa

জবাবঃ- মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,

كل نفس ذائعة الموت.
অর্থাৎ “প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে।” (সূরা আলে ইমরান/১৮৫. সূরা আম্বিয়া/৩৫, সূরা আনকাবূত/৫৭)
কাজেই কোন মুসলমান মৃত্যুবরণ করার পর জীবিতদের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে যথা শীঘ্র মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করা এবং দাফন কার্য্যে বিলম্ব না করা। কেননা হুযূর পাক ﷺ বলেন,

اذا مات احد كم فلا تحبسوه واسرعوابه الى قبره.
অর্থ: তোমাদের মধ্যে যখন কেউ মৃত্যূ বরণ করে তখন তাকে আবদ্ধ করে রেখে দিওনা বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে দাফন করতে কবরে নিয়ে যাও। "তাবারানী) অবশ্য দাফনের পূর্বে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী কাজ রয়েছে, যেমন প্রথমতঃ মাইয়্যেতকে গোসল করানো, দ্বিতীয়তঃ কাফনের কাপড় পরিধান করানো, তৃতীয়তঃ মাইয়্যেতের উপর জানাযা পড়া। মূলতঃ মাইয়্যেতের উপর জানাযা পড়া শুধু ফযীলত লাভেরই কারণ নয় বরং মাইয়্যেতের উপর জানাযা পড়া স্বয়ং আল্লাহ্ তায়ালার নির্দেশ। যেমন রাসুলে পাক ﷺ-কে লক্ষ্য করে আল্লাহ্ তায়া’লা বলেন,

صل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থ : “(হে নবী ﷺ) আপনি তাদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাদের জন্য শান্তির কারণ সরূপ।” (সূরা তাওবা/১০৩) অত্র আয়াতে স্বয়ং আল্লাহ্ তায়া’লা জানাযা নামাযের গুরুত্ব, ফাযায়েল-ফযীলত বর্ণনা করেছেন। আর তা মু’মিন-মুসলমানগণের জন্য রহমত, বরকত ও শান্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নিম্নে ধারাবাহিকভাবে জানাযা নামাযের ফাযায়েল-ফযীলত ও গুরুত্ব-তাৎপর্য সম্পর্কিত দলীলসমূহ উল্লেখ করা হল-
রাসুল ﷺ জানাযা নামায পড়ার কারণেই এটা মু’মিনগণের জন্য শান্তি স্বরূপ।

عن عوف بن مالك رضى الله عنه يقول صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم على جنازة فحفظت من دعائه وهو يقول اللهم اغفرله وارحمه وعافه واعف عنه واكرم نزله ووسع مد خله واغسله بالماء والثلج والبرد ونقه من الخطايا كما نقيت الثوب الابيض من الدنس وابدله دارا خيرا من داره واهلا خيرا من اهله وزوجا خيرا من زوجه وادخله الجنة واعذه من عذاب القبر ومن عذاب النار قال حتى تمنيت ان اكون انا ذلك الميت. (مسلم شريف ج 1 ص 311- مسلم بشرح النووى ج 4 ص 30- مسلم بشرح الابى والسنوسى ج 3 ص 372- مشكوة شريف ص 145- مرقاة- شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة المعات- مظاهر حق- مراة المناجيح- مصنف ابن ابى شيبة ج 3 ص 291)
অর্থ: হযরত আউফ ইবনে মালিক আশ্জায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুল ﷺ এক জানাযা নামায পড়লেন। আমি তাঁর দুয়ার কিছু অংশ মুখস্ত রেখেছি। তিনি দুয়াতে বলেছেনঃ “আয় আল্লাহ্ পাক! আপনি তাকে মাফ করুন, তার প্রতি রহম (দয়া) করুন, তাকে শান্তিতে রাখুন, তার অবস্থানকে মর্যাদাময় করুন, তার কবর-অবস্থান স্থলকে প্রশস্ত করুন, তাকে পাক-পবিত্র করে দিন, পানি, বরফ ও বৃষ্টির পানি দ্বারা। তাকে গুণাহ থেকে এভাবে পবিত্র করে দিন, যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। তাকে তার বাড়ী থেকে উত্তম বাড়ী দান করুন, তার পরিবার থেকে উত্তম পরিবার, তার স্ত্রী থেকে উত্তম স্ত্রী দান করুন। তাকে কবরের ও দোযখের আযাব থেকে রক্ষা করুন।” হযরত আউফ (রাঃ) বলেন, আমি আকাঙ্কা করতে লাগলাম যে, হায়! আমি যদি এই মৃত ব্যক্তিই হতাম! (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩১১ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৩য় জিঃ ২৯১পৃষ্ঠা)
عن ابى هريرة رضى اله عنه ان اسود رجلا او امرأة كان يكون فى المسجد يقم المسجد فمات ولم يعم النبى صلى الله عليه وسلم بموته فذكره ذات يوم فقال مافعل ذلك الانسان قالوا مات يارسول الله صلى الله عليه وسلم قال افلا اذنتمونى فقالوا انه كان كذا وكذا قصته قال فحقر واشانه قال فدلونى على قبره قال فاتى قبره فصلى عليه. (بخارى شريف ج1 ص 178- فتح البارى ج3 ص 205- عمدة القارى ج 8 ص 142- البخارى بشرح الكرمانى ج 8 ص 116- تيسير البارى ج 2 ص 295)
অর্থ: হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আসওয়াদ নামক একজন পুরুষ অথবা মহিলা মসজিদে থাকত এবং মসজিদ ঝাড়ু দিত। সে মারা গেল কিন্তু নবী করীম ﷺ তার মৃত্যুর সংবাদ পেলেন না। অন্যদিন তার কথা স্বরণ হলে তিনি বললেন, ঐ লোকটি কোথায়? সকলেই বলে উঠলো ইয়া রাসুল ﷺ সেতো মারা গেছে। তিনি বললেন, তোমরা আমাকে জানালে না কেন? তাঁরা লোকটির কাহিনী বলে বলল, সে তো এরূপ এরূপ লোক ছিল। নবী করীম ﷺ তখন বললেন, আমাকে দেখিয়ে দাও তার কবর কোথায়। (দেখানো হলো) অতপর তিনি তার কবরের পার্শ্বে উপস্থিত হলেন এবং জানাযা নামায আদায় করলেন।” (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ১৭৮ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ৩য় জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, উমদাতুল্ ক্বারী ৮ম জিঃ ১৪২ পৃষ্ঠা, আল বুখারী বিশরহিল কিরমানী ৭ম জিঃ ১১৬ পৃষ্ঠা)

◾মাসয়ালা
উল্লেখ্য, হানাফী মাযহাব মুতাবিক কাউকে যদি বিনা জানাযায় দাফন করা হয় তবে দাফন করা থেকে তিন দিনের মধ্যে তার কবরে জানাযা পড়া জায়িয রয়েছে। তিন দিনের পরে কবরে জানাযা পড়া জায়িয নেই।
মৃত ব্যক্তির জন্য জানাযা আদায় কারীদের সুপারিশ কবুল করা হয়
عن كريب موى ابن عباس عن عبد الله بن عباس رضى الله عنها انه مات ابن له بقديد او بعسفان فقال ياكريب انظر مااجتمع له من الناس قال فخرجت فاذا ناس قد اجتمعوا له فاخبرته فقال تقول هم اربعون قال نعم قال اخرجوه فانى سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ما من رجل مسلم يموت فيقوم على جنازته اربعون رجلا لا يشر كون بالله شيأ الا شفعهم الله فيه. (مسلم شريف ج1ص308- مسلم بشرح النووى ج4 ص 18- مسلم بشرح الابى والسنوسى ج 3 ص 35- مشكوة شريف ص 145- مرقاة- شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة اللمعات- مظاهر حق- مراة المناجيح- ابن ماجة ص 108)
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ)’র গোলাম কুরাইব হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, কুদাইদ অথবা উসফান নামক স্থানে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ)-এর এক পুত্র মারা গেল। তখন তিনি বললেন, কুরাইব যেয়ে দেখে আস তার জানাযায় জন্য কত সংখ্যক লোক জমা হয়েছে। কুরাইব বলেন, আমি বের হলাম এবং দেখলাম যে অনেক লোক জমা হয়েছে। তাঁকে এই সংবাদ দিলাম। তিনি বললেন, চল্লিশজন হবে বলে তুমি মনে কর? আমি হাঁ বললাম। তখন তিনি বললেন, তাঁকে (মৃতু ব্যক্তিকে) বের করে আন। অতঃপর তিনি বললেন, আমি ﷺ-কে বলতে শুনেছি, যে কোন মুসলমান ব্যক্তি মারা যায় আর তার জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক দাঁড়ায় যারা আল্লাহর সহিত কাউকে শরীক করেনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক তার সম্পর্কে তাদের সুপারিশ কবুল করেন বা দুয়া কবুল করেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী ৪র্থ জিঃ ১৮ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, শরহুত্ ত্ববী, ইবনু মাজাহ্ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা)
عن كريب عن ابن عباس رضى الله عنهما قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول مامن مسلم يموت فيقوم على جنازته ارتعون رجلا لايشركون بالله شيئا الا شفعوا فيه. (ابو داؤد شريف ج 2 ص 96- بذل المجهوده ص 198 – عون امعبود ج 3 ص 176- شرح ابى داؤد لبد لبدر الدين العينى ج 6 ص 99)

অর্থ: হযরত কুরাইব হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি নবী করীম ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে, যখন কোন মুসলমান লাশের উদ্দেশ্যে এমন চল্লিশজন লোক জানাযা নামায পড়ে, যারা আল্লাহ্ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক করেনা, তাদের সুপারিশ ঐ মৃত ব্যক্তির জন্য কবুল করা হয়।” (আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ৯৬ পৃষ্ঠা)

عن عائشة رضى الله عنها عن النبى صلى الله عليه وسم قال مامن ميت تصلى عليه امة من المسلمين يبلغون مائة كلهم يشفعون له الاشفعوا فيه قال فحدثت به شعيب بن الحبحاب فقال حدثنى به انس بن مالك رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم. (مسلم شريف ج1 ص 308- مسلم بشرح النووى ج 4 ص 17- مسلم بشرح الابى والسنوسى ج 3 ص 356- مشكوة شريف ص 145- مرقاة- شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة اللمعات- مظاهرحق- مراة المناجيح)

অর্থ : “হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নবী করীম ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী করীম ﷺ বলেছেন, যদি কোন মৃত ব্যক্তির জানাযা নামায পড়ে একদল মুসলমান যাদের সংখ্যা একশত পর্যন্ত পৌঁছে এবং প্রত্যেকে সুপারিশ করে তার জন্য, নিশ্চয়ই তার (মৃত্যু ব্যক্তির) সম্পর্কে তাদের সুপারিশ কবুল করা হয়। হযরত আব্দুল্লাহ্ বলেন, আমি এ হাদীস শুয়াইব ইবনে হাবহাব কে জানালাম। তিনি বললেন, হযরত আনাস ইবনে মালিক (রাঃ)ও আমার নিকট রাসুল ﷺ থেকে এই হাদীস শুনেছেন বলে বর্ণনা করেছেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৮পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৫ পৃষ্ঠা)

عن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال من صلى عليه مائة من المسلمين غفرله. (ابن ماجة شريف ص 108)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) রাসুল ﷺ থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুল ﷺ বলেছেন, যে কোন মৃত ব্যক্তির উপর একশতজন মুসলমান নামাযে জানাযা পড়লো, সেই মৃত ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হয়।” (ইবনু মাজাহ্ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা)

عن مرثد بن عبد الله اليزنى رحمة الله عليه قال كان مالك بن هبيرة اذا صلى على جتازة فتقال الناس عليها جزا اهم ثلثة اجزاء ثم قال قال رسول الله صلى الله عليه وسم من صلى عليه ثلثة صفوف فقد اوجب. (ترمذى شريف ج ১ ص ১২২- تحفة الاحوذى ج 4 ص 113-113- عارضة الاحوذى د4 ص 246- شرح الطيبى- التعليق الصبيح—مظاهرحق- مراة المناجيح- ابن ماجة شريف ص 108)
অর্থ: হযরত মারছাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইয়াযানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত মালিক ইবনে হুবাইরা (রাঃ) যখন জানাযা নামায পড়াতেন তখন লোকজনদের উপস্থিতি কম হলে তিনি তাদেরকে তিন সারিতে ভাগ করতেন। অতপর তিনি বলতেন, রাসুল ﷺ বলেছেন, তিন কাঁতার লোক যার জানাযা নামায পড়ছে তার জন্য বেহেশ্ত ওয়াজিব হয়েছে।” (তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৭ পৃষ্ঠা, ইবনু মাজাহ্ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা)

◾শুধু জানাযা নামায পড়লে ‘এক’ক্বীরাত্ব’ সওয়াব হাছিল হয়ঃ
যে ব্যক্তি শুধু জানাযা নামায পড়ল কিন্তু দাফন করা পর্যন্ত থাকল না সে এক ক্বীরাত্ব সাওয়াব পাবে। আর যে নামায পড়ার পর দাফনও সমাধা করল সে দুই ক্বীরাত সওয়াব পাবে। আর ক্বীরাত্ব হচ্ছে উহুদ পাহাড় পরিমাণ সওয়াব। যেমন, এ সম্পর্কে হাদীস শরীফের কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে,

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول ﷺ من شهد الجنازة حتى يصلى عليه فله قيراط ومن شهد حتى يدفن كان له قيرا طان قيل وما القيراطان قال مثل الجبلين العظيمين. (بخارى شريف ج 1 ص 177- فتح البارى ج 2 ص 196- عمدة القارى ج 8 ص 169، مسلم شريف ج1 ص 307)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল ﷺ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জানাযায় উপস্থিত হয়ে নামায পড়বে সে এক ক্বীরাত ছওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি দাফন পর্যন্ত থাকবে সে দু’ক্বীরাত ছওয়াব পাবে। জিজ্ঞাসা করা হল ক্বীরাত কি? হুযূর পাক ﷺ বললেন, দুটি বড় পর্বত সমতুল্য ছওয়াব।” (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ১৭৭ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ৩য় জিঃ ১৯৬ পৃষ্ঠা, উমদাতুল ক্বারী ৮ম জিঃ ১৬৯ পৃষ্ঠা, মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা)

عن سعيد بن المسيب رضى الله عنه عن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى ﷺ الى قوله الجبلين العظيمين ولم يذكر امابعده وفى حديث عبد الاعلى حتى يفرغ منها وفى حديث عبد الرزاق حتى توضع فى اللحد. (مسلم ج 1 ص 307)

অর্থ: হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যিব (রাঃ) হযরত আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি নবী করীম ﷺ থেকে (ক্বিরাত হলো) দুটি বড় পাহাড়, পর্যন্ত বর্ণনা করেন। নবী করীম ﷺ এর পরবর্তী অংশ বর্ণনা করেননি। আর আব্দুল আ’লা (রহ)-এর বর্ণনায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং আব্দুর রায্যাক (রহ)-এর বর্ণনায় কবরে না রাখা পর্যন্ত বর্ণিত রয়েছে।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭পৃষ্ঠা)

কুরআন ও সুন্নাহর উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্য ভাবেই প্রমাণিত হলো যে, মৃত ব্যক্তির উপর জানাযা পড়ার ফাযায়েল-ফযীলত ও গুরুত্ব তাৎপর্য অনেক। এখানে আমি মাত্র কয়েকটা হাদিস শরীফ নোট করলাম, এবিষয়ে সহিহ রেওয়াতে অনেক হাদিস বিদ্যমান।

জানাযা নামায পড়া ফরযে কিফায়াহ্ যা এলাকা বা মহল্লার কিছু সংখ্যক লোক আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব (কর্তব্য) পালিত হয়ে যায়। জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্ হওয়ার কারণ হলো, যেহেতু এসম্পর্কে আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশ হচ্ছে।
صل عليهم ان صلاتك سكن لهم-
অর্থঃ- “(হে নবী ﷺ) আপনি তাঁদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাঁদের জন্য শান্তির কারণ স্বরূপ।” (সূরা তাওবা/১০৩) আর রাসুল ﷺ ও জানাযা নামায পড়ার জন্য নির্দেশ করেছেন,

قوله ﷺ صلوا على كل بر وفاجر (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ج 1 ص 382- اشرف اهداية شرح اردو هذاية ج 2 ص 422)
অর্থঃ- “হুযূর পাক ﷺ বলেছেন, তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার বা পাপী লোকের উপর নামায (জানাযা) পড়।” (হাশিয়াতুত্ ত্বহ্ত্বাবী আলা মারাকিইল্ ফালাহ্ ১ম জিঃ ৩৮২ পৃষ্ঠা, আশরাফুল হিদায়াহ শরহে উর্দূ হিদায়াহ্ ২য় জিঃ ৪২২ পৃষ্ঠা)

উল্লিখিত আয়াত এবং হাদীস শরীফ গুলোর প্রতি লক্ষ্য করে উলামা-ই-কিরাম তথা ফুক্বাহা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ জানাযা নামায পড়া ‘ফরযে ক্বিফায়াহ্’ হিসেবে ফতওয়া দিয়েছেন। নিম্নে বিশ্ব বিখ্যাত ও বিশ্বসমাদৃত, সর্বজনমান্য ফিক্বাহের কিতাব থেকে ‘জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্’ বিয়টি আলোচনা করা হলো-

وصلوته فرض كفاية ش اى ان ادى البعض سقط عن الباقين وان لم يود احياثم الجميع- (شرح وقاية ج 1 ص 181 شرح وقايه كامل اردو ترجمه ج 1 ص 181)
অর্থঃ- “জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্। অর্থাৎ কিছু লোক আদায় করলে অন্যান্যদের থেকে আদায়ের কর্তব্য পালিত হবে। আর যদি একজনও আদায় না করে তবে সকলেই গুণাহ্গার হবে।” (শরহু বিকায়াহ্ ১ম জিঃ১৮১ পৃষ্ঠা, শরহে বিকায়াহ্ কামিল উর্দূ তরজমা’ ১মজিঃ ১৮১ পৃষ্ঠা)

فرض ھونے کی دلیل یہ ھے کہ فرمایا خدای تعالی نے وصل علیھم ان صلاتک سکن لھم یعنی اے محمد (ﷺ) نماذ پڑہ ان پر اس واسطے کہ تمھاری نماز ان کے واسطے أرام ھے اور فرض کفایہ ھونا اس سے معلوم ھوتاھے کہ انحضرت نے ایک جنازہ پر خود نمازنھیں پڑھی، صحا بہ سے فرمایا صلوا علی صا حبکم یعنی نماز پڑ ھو اپنے صا حب پڑپس. (شرح وقایہ بحاشیۃ ندوی ج1 ص 181)
অর্থঃ- “(জানাযা নামায) ফরয হওয়ার দলীল এই যে, আল্লাহ্ তায়ালা ইরশাদ করেছেন,
وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থাৎ- “হে মুহম্মদ ﷺ! আপনি তাঁদের জন্য নামায পড়ুন, নিশ্চয়ই আপনার নামায তাঁদের জন্য শান্তির কারণ। (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ্ এটা থেকে স্পষ্ট হয় যে, হুযূর পাক ﷺ একদা এক মৃত ব্যক্তির নিজেই নামায না পড়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম (রাঃ)-গণক ফরমালেন,
صلوا على صاحبكم
অর্থাৎ তোমরা তোমাদের সাথীর জন্য নামাযে জানাযা পড়।” (শরহে বিকায়াহ্ বিহাশিয়ায়ে নদবী ১ম জিঃ ১৮১ পৃষ্ঠা)

(وصلوته) اى مصلوة الناس عليه (فرض كفاية) اجماعا لظاهر قوله تعالى (وصل عليهم) مع قوله ﷺ صلوا على صاحبكم. (شرح النقاية شرح مختصر الوقاية ج 1 ص 315)
অর্থঃ- “(জানাযা নামায) অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে জীবিত ব্যক্তির নামায (ফরযে কিফায়াহ) যার উপর ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,(وصل عليهم) অর্থাৎ হে নবী ﷺ! আপনি তাঁদের মৃতব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন) তৎসঙ্গে হুযূর পাক ﷺ-এর উক্তি “তোমরা তোমাদের সঙ্গী-সাথীদের উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়।” (শরহুন্ নিক্বায়াহ্ শরহে মুখতাছারুল বিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৫ পৃষ্ঠা)

(وصلوته فرض كفاية) فاذا قام البعض صار حقه مؤدى فسقط عن الباقين كالتكفين. (شرح للمولوى الياس بحاشية شرح النقاية ج 1 ص 315)
অর্থঃ-“(জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্) যদি কিছু সংখ্যক লোক তা আদায় করে তবে এই আদায়ের মাধ্যমে অন্যান্যদের থেকে কর্তব্য পালিত হবে। যেমন কাফনের ব্যাপারে হয়ে থাকে।” (শরহু লিমাউলুবী ইল্ইয়াস বিহাশিয়ায়ে শরহুন্ নিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৫ পৃষ্ঠা)

قولہ صلوا علیہ جنازہ کی نماز بالاتفاق فرض کفایہ ھے اسطرح اس کی تجھیز وتکفین اور دفن وغسل بھی. (المصبا ح النوری شرح اردو مختصر القد وری ص 53)
অর্থঃ- “মাইয়্যিতের উপর নামায পড়বে” সকলের ঐক্যমতে জানাযা নামায পড়া ফরযে কিফায়াহ্। যেমন মাইয়্যিতকে তাড়াতাড়ি তাজহীয (মাইয়্যিতকে সাজানো), কাফন এবং দাফন ও গোসল করানো।” (আল মিছবাহুন্ নূরী শরহে মুখতাছারুল্ কুদূরী ৫৩ পৃষ্ঠা)

نماذ جنازہ کے مشروع ھونے پرباری تعالی کا قول وصل علیھم ان صلاتک سگن لھم دلیل ھے اور حضور صلی اللہ علیہ وسلم کا قول صلوا علی کل بر وفاجر ھے اور اجماع امت ھے (کفایہ) نماز جنازہ فرض علی الکفایہ ھے. (اشرف الھدایہ شرح اردو ھدایہ ج 2 ص 422، کفایہ)

অর্থঃ- “জানাযা নামায শুরু হয়; আল্লাহ্ তায়ালার বাণীঃ
وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থাৎ “(হে নবী ﷺ) আপনি তাঁদের(মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাঁদের জন্য শান্তি স্বরূপ।” এর মাধ্যমে এবং হুযূর পাক ﷺ-এর বাণীঃ
صلوا على كل بر وفاجر.
অর্থাৎ “তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার বা পাপী লোকদের উপর নামায (জানাযা) পড়।” এর মাধ্যমে। এর মাশরুইয়াতের উপর ইজ্মায়ে উম্মত তথা উম্মতগণের ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (এটা কিফায়াহ নামক কিতাবে আছে) জানাযা নামায হচ্ছে ফরযে কিফায়াহ।” (আশরাফুল হিদায়াহ শরহে উর্দূ হিদায়াহ ২য় জিঃ ৪২২ পৃষ্ঠা, কিফায়াহ)

(فصل فى الصلاة على الميت) هى فرض كفاية. (فتح القدير ج 2 ص 80)
অর্থঃ- “(পরিচ্ছেদঃ মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামায অর্থাৎ জানাযা নামায সম্পর্কে) আর তা (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ্।” (ফতহুল্ ক্বদীর ২য় জিঃ ৮০ পৃষ্ঠা)

الصلاة على الميت فرض كفاية امافر ضيته فلان الله تعالى امر بقوله عز وجل وصل عليهم. (شرح العناية على الهداية ج 2 ص 80)

অর্থঃ- “মৃতের উদ্দেশ্যে নামায ফরযে কিফায়াহ। এর ফরযিয়াত এজন্য যে, যেহেতু আল্লাহ্ তায়ালা নির্দেশ করেছেন وصل عليهم অর্থাৎ “হে নবী ﷺ! আপনি তাঁদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে জানাযা নামায পড়ুন।” (শরহুল ইনায়াহ্ আলাল্ হিদায়াহ্ ২য় জিঃ ৮০ পৃষ্ঠা)

(قوله فرض كفاية) بالاجماع فيكفر منكره لانكاره الاجماع كذا فى البدائع والقنية والاصل فيه قوله تعالى وصل عليهم وقوله صلى الله عليه وسلم صلوا على كل بر وفاجر وانما كانت فرض كفاية لقوله صلى الله عليه وسلم صلوا على صاحبكم. (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ص 382- البدائع- القنية)
অর্থঃ- “(জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ) ইজ্মা বা উম্মতগণের ঐক্যমত দ্বারা। এর অস্বীকারকারী
ইজ্মাকে অস্বীকার করার জন্য কাফির হবে। অনুরুপ আল্বাদাইউছ্ ছনাই’, আল্ কিনইয়াহ, নামক কিতাবে আছে। যার মধ্যে মূল হচ্ছে আল্লাহ্ পাক-এর বাণীঃ “হে নবী ﷺ! আপনি তাদের উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন।” এবং হুযূর পাক ﷺ-এর বাণী- صلوا على كل بر وفاجر অর্থাৎ “তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার বা পাপী ব্যক্তির জন্য নামায (জানাযা) পড়। নিশ্চয়ই এটা (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ।” হুযূর পাক ﷺ-এর বাণী- صلوا على صاحبكم “তোমরা তোমাদের সাথীর উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়।” (হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আলা মারাকিইল্ ফালাহ্ ৩৮২ পৃষ্ঠা, আল্ বাদাইউছ্ ছনাই’, আল্ ক্বিনইয়া)

(قوله وهى فرض كفاية) اى الصلاة عليه للاجماع على افتر اضها وكونها على الكفاية وما وردى بعض العبارات من انها واجبة فالمراد الافتراض وقد صرح فى القنية والفوائد التاجية يكفر من انكر فرضيتها لانه انكر الاجماع. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 179، القنية، الفوائد التاجية، منحة الخالق على البحر الرائق ج 2 ص 179، تحفة الفقها ء للسمر قندى ج 1 ص 247)

অর্থঃ- “(কানযুদ দাক্বাইক্ব গ্রন্থকার বলেন- জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্) অর্থাৎ জানাযার উদ্দেশ্যে নামায ইজ্মা’ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যা ফরযে কিফায়াহ্ হিসেবে স্বীকৃত। কিছু কিছু ইবারতে এটা ওয়াজিব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে ওয়াজিব দ্বারা ফরয (কিফায়াহ) উদ্দেশ্য হবে। ‘আল্ কিনইয়াহ্’ ও ‘আল্ ফাওয়াইদুত্ তাজিয়াহ্’ নামক কিতাবদ্বয়ে পরিস্কারভাবে লিখিত আছে যে, জানাযার ফরযিয়াতকে অস্বীকার করা কুফরী, কেননা নিশ্চয়ই এতে ইজ্মাকে অস্বীকার করা হয়।” (আল্ বাহরুর রাইক্ব শরহে কানযুদ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৭৯ পৃষ্ঠা, আল্ কিনইয়াহ্, আল্ ফাওয়াইদুত্ তাজিয়াহ্, মিনহাতুল্ খালিক আলাল বাহর্রি রাইক্ব ২য় জিঃ ১৭৯ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্ ফুক্বাহা লিস্ সমরক্বন্দী ১ম জিঃ ২৪৭ পৃষ্ঠা)

وھی فرض کفایۃ، نماز جنازہ فرض کفایہ ھے اس کا منکر کافر ھے. فرض عین قرار دینے میں بڑا حرج ودشواری لازم أتی ھے. تمام لوگ ھر مقام وھر جگہ سے ایا کرتے جس سے بڑی پریشانی. ھوتی اس لئے اسے فرض علی الکفایہ قرار دیا. چونکہ دین میں اسانی ھے. (کشف الحقائق شرح اردو کنز الدقائق ج 1 ص 337)
অর্থঃ- “এটা ফরযে কিফায়াহ্, নামাযে জানাযা ফরযে কিফায়াহ্। এর অস্বীকারকারী কাফির। ফরযে আইন হিসেবে দৃঢ়তা দিলে অনেক কঠিন ও শক্ততা লাযিম হয়। সকল লোক প্রত্যেক স্থান ও প্রত্যেক জায়গা থেকে আসতে অনেক পেরেশান, হয়রান হয়। এজন্য জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ হিসেবে তাকিদ দেয়া হয়েছে। যাতে দ্বীন ইসলাম পালনে আসানী বা সহজতা আসে।” (কাশফুল হাক্বাইক্ব শরহে ঊর্দূ কানযুদ্ দাক্বাইক ১ম জিঃ ৩৩৭ পৃষ্ঠা)

(والصلاة عليه) صفتها (قرض كفاية) بالاجماع فيكفر منكرها لانه انكر الاجماع قنية (كدفنه) وغسله وتجهيز فانها فرض كفاية- (الدر المختار شرح تنوير الابصارج 2 ص 207- قنية رد المحتار، شامى ج 2 ص 207- بحر)
অর্থঃ- “(জানাযার উদ্দেশ্যে নামায) যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে (ফরযে কিফায়াহ) ইজ্মা-এর মাধ্যমে। এর (জানাযার ফরযিয়াত) অস্বীকারকারী কাফির হবে, যেহেতু এর অস্বীকৃতি ইজ্মাকে অস্বীকার করার শামিল। ক্বিনইয়াহ নামক কিতাবে অনুরূপ আছে।” (যেমন, মৃতের দাফন) গোসল ও সাজানো-গুছানো। কেননা তা ফরযে কিফায়াহ্।” (আদ্ দুররুল্ মুখতার শরহে তানবীরুল্ আবছার ২য় জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, ক্বিনইয়াহ্, রদ্দুল মুহতার, শামী ২য় জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, বাহর্রু রাইক)

الحنفية- قالوا: صفتها ان يقوم المصلى بحذاء صدر الميت، ثم ينوى اذاء فريضة صلاة الجنازة عبادة لله تعالى. كتاب الفقه على المذاثب الاربعة ج 1 ص 517، كتاب الفقه على المداهب الا ربعة (اردو) ج 1 ص 832)
অর্থঃ- “আমাদের হানাফী আলিমগণ বলেনঃ জানাযা পড়ার নিয়ম হচ্ছে মুছল্লী জুতা পাঁয়ে দেয়া অবস্থায় মাইয়্যিতের বুক বরাবর দাঁড়িয়ে অতপর জানাযার ফরয (কিফায়াহ্) নামায আদায়ের নিয়ত করবে। একমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর ইবাদতের উদ্দেশ্যেই।” (কিতাবুল্ ফিকহি আলাল্ মাযাহিবিল্ আরবায়াহ্ ১ম জিঃ ৫১৭ পৃষ্ঠা, কিতাবুল ফিকহি আলাল্ মাযাহিবিল আরবায়াহ্ (উর্দূ) ১ম জিঃ ৮৩২ পৃষ্ঠা)

الصلاة على الميت حكمها: من المتفق عليه بين ائمة الفقه، ان الصلاة على الميت، فرض كفايه، لامر رسول الله صلى الله عليه وسلم بها، ولمحافظة المسلمين عليها. (فقه السنة للسيد سابق ج 1 ص 521)
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের হুকুম-এর উপর ঐক্যমত পোষণ করে ‘আইম্মাতুল্ ফুক্বাহা’ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয়ই মৃতের উদ্দেশ্যে নামায অর্থাৎ জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্ যা আদায়ের ব্যাপারে রাসুল ﷺ -এর নির্দেশ রয়েছে। যাতে মুসলমানগণ জানাযার প্রতি যত্নবান হয়। (ফিক্বহুস্সুন্নাহ্ লিস্ সাইয়্যিদ সাবিক্ব ১ম জিঃ ৫২১ পৃষ্ঠা)

مرده مسلمان راغسل وكفن دادن ونماز جنازه خواندن ودفن كردن فرض كفايت ست وبدون غسل وكفن نماز جنازه صحيح نيست. (مالابد منه ص 93) انوار محموده شرح مالابد منه ص(74
অর্থঃ- “মুসলমান মুর্দা ব্যক্তির গোসল করানো, কাফন পড়ানো, নামাযে জানাযা পড়া এবং তাকে দাফন করা জীবিতদের জন্য ফরযে কিফায়াহ্। আর গোসল করানো এবং কাফন পরানো ছাড়া জানাযা নামায পড়া জায়েয নেই।” (মালা বুদ্দা মিনহু ৯৩ পৃষ্ঠা, আনওয়ারে মাহমূদাহ্ শরহে মালা বুদ্দা মিনহু ৭৪ পৃষ্ঠা)

উল্লিখিত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, জানাযা নামায একটি বিশেষ নামায। যা আদায় করা জীবিতদের জন্য ফরযে কিফায়াহ। যারা জানাযা নামাযকে দোয়া বলে আখ্যায়িত করে এবং নামায নয় বলে উক্তি পেশ করে, তাদের সেই বক্তব্য উল্লিখিত আলোচনার মাধ্যমে শক্তভাবে খন্ডিত করা হল।

তদ্রুপ “জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য বা মাকছূদও ঠিক তাই। কেননা কিছু লোক “ক্বিল্লতে ইলম ও ক্বিল্লতে ফাহ্ম”- অর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বলে থাকে যে, “জানাযার পর দোয়া করা বিদয়াত ও নাজায়িয।” তাদের উক্ত বক্তব্য একদিক থেকে যেরূপ ঈমান বা আক্বীদার ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ, অপর দিক থেকে আমলের ক্ষেত্রেও তদ্রুপ ক্ষতির কারণ। প্রথমতঃ ঈমানের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, আমাদের আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া হলো কোন জায়িয আমলকে নাজায়িয বলা কুফরী। অর্থাৎ ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ। অথচ বান্দার ইবাদত-বন্দিগী বা নেক আমল কবূল হওয়ার জন্যে প্রধানতম শর্ত হচ্ছে- আক্বীদা শুদ্ধ থাকা অর্থাৎ আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করা। কারণ বিশুদ্ধ আক্বীদা আমল কবূল হওয়ার পূর্ব শর্ত।

দ্বিতীয়তঃ আমলের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, তাদের উক্ত অশুদ্ধ বক্তব্যের কারণে যেরূপ ‘মাইয়্যিত’ জীবিতদের দোয়া থেকে বঞ্চিত হবে তদ্রুপ জীবিতরা বঞ্চিত হবে হাদীস শরীফের উপর আমল করা থেকে। কারণ রাসুলে পাক ﷺ ‘মাইয়্যিতের’ জন্য অধিক মাত্রায় এবং ইখলাছের সাথে দোয়া করতে বলেছেন বলে ছহীহ্ হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। শুধু তাই নয় স্বয়ং রাসুল ﷺ যেরূপ জানাযার নামাযে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন অনুরূপ জানাযার বাইরেও মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন। সুতরাং মাইয়্যিতের জন্য জানাযার নামাযে দোয়া করা যেরূপ সুন্নত, তদ্রুপ জানাযার বাইরেও সুন্নত। তা জানাযার আগেই হোক বা পরে হোক। সুতরাং বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, তাদের বক্তব্যের কারণে সাধারণ মানুষ একটি সুন্নত পালনের ফযীলত থেকে মাহরূম হবে নিঃসন্দেহে।
মূলকথা হলো, সকল মুসলমান যেন “জানাযার পর দোয়া ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়” সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা রাখতে পারে এবং সুন্নত মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ﷺ -এর সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারে।
সার সংক্ষেপ হলো- মানুষ মাত্রই মৃত্যু বরণ করবে, মানুষের মৃত্যুর পর শরীয়তের নির্দেশ হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা এবং মৃত ব্যক্তির রূহের মাগফিরাতের জন্যে মৃত ব্যক্তির উপর “ছলাতুল জানাযা” বা জানাযা নামায আদায় করা। শুধু তাই নয় জীবিত ব্যক্তিদের উপর দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্যে অধিক পরিমাণে দোয়া বা মুনাজাত করা। তাই হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
اكثرواالدعاء ও فاخلصوا له الدعا ء
অর্থঃ- “ইখলাছের সাথে ও অধিক পরিমাণে মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে দোয়া-মুনাজাত কর।” এখন প্রশ্ন হলো- মৃত ব্যক্তির জন্যে কখন দোয়া বা মুনাজাত করবে? অর্থাৎ শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার নির্দিষ্ট কোন সময় বর্ণিত আছে কি? মূলতঃ শরীয়ত মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার ব্যাপারে কোন সময় নির্দিষ্ট করে দেয়নি যে, অমুক সময় দোয়া করতে হবে, আর অমুক সময় দোয়া করা যাবেনা। বরং শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্য যে কোন সময় দোয়া করার বিধান রয়েছে। যেমন ইন্তিকালের পর জানাযার পূর্বে, জানাযার নামাযের মধ্যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে এবং দাফনের পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যে কোন সময় মৃত ব্যক্তির জন্যে হাত তুলে ও সম্মিলিতভাবে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত। নাজায়িয বা বিদয়াত মোটেও নয়। এ সম্পর্কিত বহু দলীল-আদিল্লাহ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, শরাহ, ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব সমূহ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে।

جنازے کے بعد دعا کرنے ھوتو صفوں کے ترتیب کو توڑ دیا جائے. اور ھر شخص اپنے طور پر بغیر ھاتہ اٹھائے دعاکرے تو مضائقہ نھیں. (اختلاف امت اور صراط مستقیم ج 1 ص 122)

অর্থঃ- “জানাযার পর দোয়া করতে হলে কাঁতার ভেঙ্গে দিবে এবং প্রত্যেকেই হাত উঠানো ব্যতীত দোয়া করবে। এরূপ করাতে কোন অসুবিধা নেই। (ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাকীম ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠা)

ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব ফতহুল ক্বদীর ২য় জিঃ ৮১ পৃষ্ঠা ও নূরুল হিদায়াহ্ ১ম জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
عن عبد الله بن ابى بكر قال: لما التقى الناس بمئونة، جلس رسول الله ﷺ على المنبر، وكشف له ما بينه وبين الشام، فهو ينظر الى معركتهم، فقال عليه السلام: اخذ الراية زيد ين حارثة، فمضى حتى استشهد، وصلى عليه ودعاله، وقال استغفرواله، وقد دخل الجنة، وهو يسعى، ثم اخذ الراية جعفر بن ابى طالب، فمضى حتى استشهد، فصلى عليه رسول ﷺ ودعاله، وقال: استغفروا له، وقد دخل الجنة، فهو يطير فيها بجناحين حيث شاء،
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ)গণ ‘মাঊনা’ নামক স্থানে মিলিত হলেন,  রাসুল ﷺ মিম্বরে উঠে বসলেন। তখন তার কাছে শাম দেশের (মুতার যুদ্ধের) অবস্থা স্পষ্ট প্রকাশিত হচ্ছিল। তিনি হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম (রাঃ)গণের যুদ্ধের অবস্থা দেখতে ছিলেন। অতঃপর হুযূর পাক ﷺ বলেন, (যুদ্ধে) হযরত যায়িদ ইবনে হারিসা (রাঃ) পতাকা ধরলেন, অতঃপর তিনি শহীদ হয়ে গেলেন। তাই তিনি তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফার কর। তিনি জান্নাতে চলে গেছেন,আর তা খুবই দ্রুত। হযরত জা’ফর ইবনে আবু তালিব (রাঃ) পতাকা ধরলেন অতঃপর তিনিও শহীদ হয়ে গেলেন। তাই,  রাসুল ﷺ তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফারের দোয়া কর। তিনি তাড়াতাড়ি জান্নাতে চলে গেছেন এবং সেখানে দুটি ডানা নিয়ে যেখানে ইচ্ছা সেখানে উড়বেন।”

আল্ মাবসূত লিস্ সারাখসী ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
روى عن ابن عباس رضى الله عنهما وابن عمر رضى الله عنه انهما فاتهما الصلاة على الجنازة فلما حضرا مازادا على الاستغفار له.
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁদের দু’জনের একদা জানাযা নামায ফউত হলো। যখন তাঁরা (নামাযের পর মাইয়্যিতের কাছে) উপস্থিত হলেন, তখন মাইয়্যিতের জন্য অতিরিক্ত ইস্তিগফার করলেন।”

মীযানুল্ কুবরা লিশ্ শা’রানী কিতাবে উল্লেখ আছে,
قال ابوحنيفة الثورى ان التعزية سنة قبل الدفن لا بعده لان شدة الحزن تكون قبل الد فن فيعزى ويدعوله. (ميزان الكبرى للشعر انى ، جاء الحق حصه اص264)
অর্থঃ- “হযরত ইমাম আবূ হানীফাতাছ্ ছাওরী (রহ;) বলেন যে, দাফনের পরে নয় বরং দাফনের আগে সমবেদনা জ্ঞাপন করা সুন্নত। কেননা, দাফনের আগে বিরহ-বেদনা অনেক বেশী থাকে। তাই, (দাফনের পূর্বে) শোক প্রকাশ করবে এবং মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করবে।”

আল বাহরুর রাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
لايدعو بعد التسليم كما فى الخلاصة وعن الفضلى لابأس به. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج2ص 183، رضوية)
অর্থঃ- “সালামের পর দোয়া করবেনা যেমনটি খুলাছায় আছে। ফযলী থেকে বর্ণিত আছে যে, জানাযা নামাযের সালামের পর দোয়া করতে কোন অসুবিধা নেই- অর্থাৎ জায়িয।”

ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব ত্বহত্বাবীতে উল্লেখ আছে,
وان ابا حنيفة لما مات فختم عليه سبعون الفا قبل الدفن.
অর্থঃ- “যখন হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ইন্তিকাল করেন, তখন দাফনের আগে তাঁর জন্য সত্তর হাজার বার কুরআন শরীফ খতম করা হয়।”

কাশফুল্ হাক্বাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক ১ম জিঃ ৩৩৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
بعضے حضرات نے سلام کے بعد یہ دعاء بھی لکھی ھے. کہ یہ پڑھے. اللھم ربنا اتنا فی الد نیا حسنۃ وفی الاخرۃ حسنۃ وقنا برحمتک عذاب القبر وعذاب النار.
অর্থঃ- “কোন কোন হযরত উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি জানাযা নামাযের সালামের পর এ দোয়া পড়ার কথা লিখেছেন,
اللهم ربنا اتنا فى الدنيا حسنة وفى الاخرة حسنة وقنا بر حمتك عذاب القبر وعذاب النار.
অর্থাৎ “আয় আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার মধ্যে এবং আখিরাতের মধ্যে মঙ্গল (ভালাই) দান করুন। আর আপনার রহমতের দ্বারা আমাদেরকে কবরের আযাব এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।”

ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব শরহে বরযখে উল্লেখ আছে,
وخواندن قران مجيد بر ميت ودعادر حق او قبل بر داشتن جنازه وپیش ازدفن سبب نجات از احوال اخرت وعذاب قبراست.

অর্থঃ- “জানাযা উঠিয়ে নেয়া ও দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযা নামাযের পরে মাইয়্যিতের জন্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা ও মুনাজাত করা আখিরাতের কঠিন অবস্থা এবং কবর আযাব হতে পরিত্রাণ পাওয়ার বিশেষ কারণ।”

তুহফাতুল গাফিলীন ৩য় পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
اچھا طریقہ ثواب رسانی کا مردہ کے حق مین یہ ھیں کہ قبل دفن جس قدر ھو ستکے کلمہ یاقران شریف یا درود یا کوئی سورت اپرہ کر ثواب بخشے.
অর্থঃ- “মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করার উত্তম পদ্ধতি হলো, দাফন করার পূর্বে যতটুকু সম্ভব হয় দোয়া, দরূদ, তাসবীহ, সূরা, ক্বিরয়াত পাঠ করে বখশিয়ে দেয়া।”

জাওয়াহিরুন্ নাফীস শরহে দুররুল ক্বাইস ১৩২ পৃষ্ঠা ও নাফিউল মুসলিমীন কিতাবে উল্লেখ আছে,
وفى نافع المسلمين رجل رفع يد يه بدعاء الفاتحة
অর্থঃ-“নাফিউল মুসলিমীন”, কিতাবে উল্লেখ আছে যে, মাইয়্যিতের জন্য দাফনের পূর্বে (অর্থাৎ জানাযা নামাযের পর) উভয় হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা জায়িয।”

উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্য ভাবেই প্রমাণিত হলো যে, নির্ভরযোগ্য বহু ফিক্বাহের কিতাবেই “জানাযার পর দোয়া করাকে জায়িয বলা হয়েছে।” শুধু তাই নয় মুনাজাত বিরোধীদের মুরুব্বী দেওবন্দীদের কিতাবেও “জানাযার পর দোয়াকে জায়িয” বলা হয়েছে। অতএব, প্রমাণিত হলো যে, মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা ও চরম জিহালতপূর্ণ।

 
Top