গোসলের তিনটি অংশ, তার একটিও কম হলে গোসল হবে না।এরুপও বলা যায় যে, গোসলের ফরজ তিনটি।

১. কুলি করাঃ
মুখের প্রত্যেক অংশের কোণা, ঠোঁট থেকে কন্ঠনালির গোড়া পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় যেন পানি পৌঁছে। অধিকাংশ লোক মনে করে যে, সামান্য পানি মুখে নিয়ে নিক্ষেপ করলেই কুলি হয়ে যায়।যদিও মুখের গোড়া এবং কণ্ঠনালীর গোসল করার পর নামাজও জায়িজ হবে না। বরং মাড়ি, দাঁত, দাঁতের ফাঁক জিহবার উভয় পার্শে গলার কিনারা পর্যন্ত পানি প্রবাহিত করা ফরজ।
☞ইমাম আহমদ রেজা, ফতোয়ায়ে রযভিয়্যাহ, ১/৪৩৯-৪৪০ পৃঃ

মাস'আলাঃ ০১
দাঁতের গোঁড়া, বা মাড়িতে এমন কোন বস্তু আটকে থাকলে যা পানি প্রবাহিত করতে বাঁধা সৃষ্টি করে, তা ছুড়িয়ে ফেলা জরুরি। যদি ছুটাতে ক্ষতি বা অসুবিধা না হয়।যেমনঃ চাউলের দানা বা মাংসের টুকরা। আর যদি ছুটাতে ক্ষতি বা অসুবিধা হয়। যেমনঃ অনেক বেশী বেশী পান খাওয়ার ফলে দাঁতের গোড়ার ফাঁকে চুন জমে যায় বা মহিলাদের দাঁতে, মাজনের উপকরণ, যা ঘষে দাঁতের বা মাড়ির ক্ষতি হওয়ার আশংকা থাকলে তা মাফ।
☞ ইমাম আহমদ রেজা, ফতোয়ায়ে রযভিয়্যাহ, ১/৪৪০-৪৪১পৃঃ



মাস'আলাঃ ০২
সংযুক্ত দাঁত তার দ্বারা বা উপড়ে ফেলা দাঁত কোন উপকরণ দিয়ে বাধায়ে নিল এবং পানি তার বা উপকরণের নিচ দিয়ে পৌঁছে না, তখন মাফ। খাদ্য বা পান এর চিলকা দাঁতে আটকে আছে, যা বের করে পৃথক করা এবং মুখ ধুয়ে নেয়া জরুরি, যদি পানি পৌঁছাতে অন্তরায় না হয়।
☞ইমাম আহমদ রেজা, ফতোয়ায়ে রযভিয়্যাহ, ১/৪৫২-৪৫৩ পৃঃ

২. নাকে পানি দেওয়াঃ
নাকের উভয় ছিদ্রে যতদূর নরম জায়গা আছে ওই পর্যন্ত ধৌত করা। পানি নাক দ্বারা টেনে উপরে নিয়ে যাওয়া,যেন চুল বরাবর কোন অংশ বাকি না থাকে। অন্যথায় গোসল হবে না।নাকের ভিতর শেষ্মা শুকিয়ে থাকলে তা পরিষ্কার করাও ফরজ।নাকের পশম ধৌত করাও ফরজ।
☞ ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফতোয়ায়ে শামী, কিতাবুত তাহারাত, পরিচ্ছেদ: গোসল, ১/৩১২ পৃঃ

মাস'আলাঃ ০৩
নাকের অগ্রভাগে ব্যবহৃত অলংকার বিশেষের ছিদ্র যদি বন্ধ না থাকে,তার মধ্যে পানি পৌঁছানো জরুরী, সংকীর্ণ হলে নাড়া দেয়া জরুরী ; অন্যথায় নয়।
☞ইমাম আহমদ রেজা, ফতোয়ায়ে রযভিয়্যাহ, ১/৪৪৫ পৃঃ

৩. সমস্ত শরীরে পানি প্রবাহিত করাঃ
মাথার চুল থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত শরীরের প্রত্যেক শুকনো স্থানে পানি প্রবাহিত করা, অনেক সাধারণ মানুষ এমনকি কতেক শিক্ষিত লোকেরা পর্যন্ত মাথার উপর পানি ঢেলে শরীরের উপর হাত ফিরিয়ে নেয়। আর মনে করে, গোসল হয়ে গেছে।অথচ এমন অনেক অঙ্গ রয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত বিশেষভাবে তা ধৌত করা হবে না, গোসলই হবে না।
☞ইমাম আহমদ রেজা, ফতোয়ায়ে রযভিয়্যাহ, ১/৪৪৩ পৃঃ
 
Top