Al-Quran: Kanzul Imaan 
২.সূরা আল-বাকারা (কাঞ্জুল ইমান)
আয়াত সংখ্যা ২৮৬

بِسمِ اللَّهِ الرَّحمٰنِ الرَّحيمِ

 الم
2:1 আলিফ-লাম-মীম।
ذٰلِكَ الكِتٰبُ لا رَيبَ فيهِ هُدًى لِلمُتَّقينَ
2:2 সে-ই উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন কিতাব (ক্বোরআন) কোন সন্দেহের ক্ষেত্র নয়। তাতে হিদায়ত রয়েছে খোদাভীতিসম্পন্নদের জন্য;
الَّذينَ يُؤمِنونَ بِالغَيبِ وَيُقيمونَ الصَّلوٰةَ وَمِمّا رَزَقنٰهُم يُنفِقونَ
2:3   তারাই, যারা না দেখে ঈমান আনে, নামায কায়েম  রাখে  এবং আমার  দেয়  জীবিকা থেকে আমার পথে ব্যয় করে।
وَالَّذينَ يُؤمِنونَ بِما أُنزِلَ إِلَيكَ وَما أُنزِلَ مِن قَبلِكَ وَبِالءاخِرَةِ هُم يوقِنونَ
2:4   এবং   তারাই,    যারা ঈমান  আনে   এর উপর যা, হে  মাহবুব!  আপনার প্রতি  অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা আপনার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে আর পরলোকের উপর নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে।
أُولٰئِكَ عَلىٰ هُدًى مِن رَبِّهِم وَأُولٰئِكَ هُمُ المُفلِحونَ
2:5   সে  সব  লোক    তাদের   রবের   পক্ষ  থেকে  হিদায়তের  উপর   প্রতিষ্ঠিত     এবং   তারাই সফলকাম।
إِنَّ الَّذينَ كَفَروا سَواءٌ عَلَيهِم ءَأَنذَرتَهُم أَم لَم تُنذِرهُم لا يُؤمِنونَ
2:6  নিশ্চয় তারা, যাদের  অদৃষ্টে কুফর রয়েছে তাদের  জন্য সমান-চাই   আপনি তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করুন কিংবা না-ই করুন। তারা ঈমান আনার নয়।
خَتَمَ اللَّهُ عَلىٰ قُلوبِهِم وَعَلىٰ سَمعِهِم وَعَلىٰ أَبصٰرِهِم غِشٰوَةٌ وَلَهُم عَذابٌ عَظيمٌ
2:7 আল্লাহ্‌ তাদের অন্তরগুলোর উপর এবং কানগুলোর উপর মোহর ছেপে দিয়েছেন। আর তাদের চোখের উপর কালো-ঠুলী (আবরণ) রয়েছে এবং তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।
وَمِنَ النّاسِ مَن يَقولُ ءامَنّا بِاللَّهِ وَبِاليَومِ الءاخِرِ وَما هُم بِمُؤمِنينَ
2:8  এবং   কিছু  লোক বলে,  ‘আমরা আল্লাহ্‌ ও শেষ দিনের   উপর  ঈমান     এনেছি।’  এবং (প্রকৃতপক্ষে) তারা ঈমানদার নয়।
يُخٰدِعونَ اللَّهَ وَالَّذينَ ءامَنوا وَما يَخدَعونَ إِلّا أَنفُسَهُم وَما يَشعُرونَ
2:9  ধোকা  দিতে   চায়   আল্লাহ্‌  তা’আলা   ও  ঈমানদেরকে  এবং   প্রকৃতপক্ষে,  তারা  ধোকা দিচ্ছে না, কিন্তু নিজেদের আত্মাকেই এবং তাদের অনুভূতি নেই।
فى قُلوبِهِم مَرَضٌ فَزادَهُمُ اللَّهُ مَرَضًا وَلَهُم عَذابٌ أَليمٌ بِما كانوا يَكذِبونَ
2:10  তাদের  অন্তরগুলোতেই   ব্যাধি   রয়েছে,    অত:পর  আল্লাহ্‌  তাদের  ব্যাধি  আরো  বৃদ্ধি করে   দিয়েছেন    এবং   তাদের   জন্য    অবধারিত   রয়েছে   কষ্টদায়ক     শাস্তি,   তাদের   মিথ্যার  পরিণামে।

وَإِذا قيلَ لَهُم لا تُفسِدوا فِى الأَرضِ قالوا إِنَّما نَحنُ مُصلِحونَ
2:11   তাদেরকে   যখন   বলা   হয়,    ‘পৃথিবীতে   বিবাদ    সৃষ্টি   করোনা’    তখন    তারা    বলে, ‘আমরাই তো সংশোধনবাদী।’
أَلا إِنَّهُم هُمُ المُفسِدونَ وَلٰكِن لا يَشعُرونَ
2:12 শুনছো! তারাই বিবাদ সৃষ্টিকারী; কিন্তু তাদের সে অনুভূতি নেই।
وَإِذا قيلَ لَهُم ءامِنوا كَما ءامَنَ النّاسُ قالوا أَنُؤمِنُ كَما ءامَنَ السُّفَهاءُ أَلا إِنَّهُم هُمُ السُّفَهاءُ وَلٰكِن لا يَعلَمونَ
2:13  এবং   যখন  তাদেরকে  বলা  হয়,  ‘ঈমান   আনো   যেমন  অপরাপর     লোকেরা  ঈমান এনেছে’ তখন তারা বলে, ‘নির্বোধদের মতো  কি আমরাও   বিশ্বাস (ঈমান)  স্থাপন করবো?’ শুন্‌ছো! তারাই হলো নির্বোধ; কিন্তু তারা তা জানেনা।
وَإِذا لَقُوا الَّذينَ ءامَنوا قالوا ءامَنّا وَإِذا خَلَوا إِلىٰ شَيٰطينِهِم قالوا إِنّا مَعَكُم إِنَّما نَحنُ مُستَهزِءونَ
2:14   এবং যখন  ঈমানদারদের সাথে সাক্ষাৎ  করে তখন  বলে,   ‘আমরা ঈমান  এনেছি।’  আর  যখন  নিভৃতে   তাদের  শয়তানদের  সাথে  মিলিত   হয়  তখন  বলে,  ‘আমরা  তোমাদের  সাথে রয়েছি। আমরা তো এমনিতে তাদের সাথে ঠাট্টা-তামাশা করে থাকি।’
اللَّهُ يَستَهزِئُ بِهِم وَيَمُدُّهُم فى طُغيٰنِهِم يَعمَهونَ
2:15   আল্লাহ্‌    তাদের   সাথে   ‘ইস্তিহ্‌যা’   করেন   (যেমনি    তাঁর   জন্য   শোভা    পায়)      এবং  তাদেরকে অবকাশ দেন, যেন তারা তাদের অবাধ্যতায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াতে থাকে।
أُولٰئِكَ الَّذينَ اشتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالهُدىٰ فَما رَبِحَت تِجٰرَتُهُم وَما كانوا مُهتَدينَ
2:16   তারা  এমন  সব  লোক, যারা হিদায়তের  বিনিময়ে গোমরাহী ক্রয় করেছে।   সুতরাং  তাদের    এ     ব্যবসা    কোন   লাভ   আনয়ন   করেনি     এবং   তারা   ব্যবসার    (লাভজনক)   পন্থা জানতোই না।
مَثَلُهُم كَمَثَلِ الَّذِى استَوقَدَ نارًا فَلَمّا أَضاءَت ما حَولَهُ ذَهَبَ اللَّهُ بِنورِهِم وَتَرَكَهُم فى ظُلُمٰتٍ لا يُبصِرونَ
2:17 তাদের দৃষ্টান্ত  ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যে আগুন প্রজ্জ্বলিত করেছে; অত:পর যখন তা দ্বারা আশেপাশে সবকিছু আলোকিত  হয়ে  উঠলো,  তখন  আল্লাহ্‌  তাদের জ্যোতি  অপসারণ  করে নিলেন এবং তাদেরকে  (এমনভাবে) অন্ধকাররাশিতে ছেড়ে  দিলেন যে, তারা কিছুই দেখতে পায় না।
صُمٌّ بُكمٌ عُمىٌ فَهُم لا يَرجِعونَ
2:18 বধির, বোবা ও অন্ধ। সুতরাং তারা ফিরে আসার নয়;
أَو كَصَيِّبٍ مِنَ السَّماءِ فيهِ ظُلُمٰتٌ وَرَعدٌ وَبَرقٌ يَجعَلونَ أَصٰبِعَهُم فى ءاذانِهِم مِنَ الصَّوٰعِقِ حَذَرَ المَوتِ وَاللَّهُ مُحيطٌ بِالكٰفِرينَ
2:19  কিংবা  যেমন,    আস্‌মান  থেকে  বর্ষণরত   বৃষ্টি,  যাতে  রয়েছে  অন্ধকাররাশি,  বজ্র  ও বিদ্যুৎ-চমক;  (তারা)   নিজেদের    কানে   আঙ্গুল    প্রবেশ   করিয়ে    দিচ্ছে  বজ্র-ধ্বনির  কারনে, মৃত্যুর ভয়ে; এবং আল্লাহ্‌ কাফিরদেরকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন।
يَكادُ البَرقُ يَخطَفُ أَبصٰرَهُم كُلَّما أَضاءَ لَهُم مَشَوا فيهِ وَإِذا أَظلَمَ عَلَيهِم قاموا وَلَو شاءَ اللَّهُ لَذَهَبَ بِسَمعِهِم وَأَبصٰرِهِم إِنَّ اللَّهَ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ
2:20   বিদ্যুৎ-চমক  এমনি  মনে    হয়   যেন  তাদের  দৃষ্টি-শক্তি    কেড়ে   নিয়ে  যাবে।  যখনই সামান্য    বিদ্যুতালোক  (তাদের  সম্মুখে)  উদ্ভাসিত  হলো   তখন   তাতে  চলতে  লাগলো  এবং যখন   অন্ধকারচ্ছন্ন হলো তখন তারা  দাঁড়িয়ে রইলো।    আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে  তাদের  কান ও চোখ নিয়ে যেতেন। নিঃসন্দেহে, আল্লাহ্‌ সব কিছু করতে সক্ষম।
يٰأَيُّهَا النّاسُ اعبُدوا رَبَّكُمُ الَّذى خَلَقَكُم وَالَّذينَ مِن قَبلِكُم لَعَلَّكُم تَتَّقونَ
2:21 হে মানবকুল! (তোমরা) স্বীয় রবের ইবাদত করো, যিনি তোমাদের এবং তোমাদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন; এ আশায় যে, তোমাদের পরহেযগারী অর্জিত হবে।
الَّذى جَعَلَ لَكُمُ الأَرضَ فِرٰشًا وَالسَّماءَ بِناءً وَأَنزَلَ مِنَ السَّماءِ ماءً فَأَخرَجَ بِهِ مِنَ الثَّمَرٰتِ رِزقًا لَكُم فَلا تَجعَلوا لِلَّهِ أَندادًا وَأَنتُم تَعلَمونَ
2:22 এবং যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে বিছানা এবং আস্‌মানকে ইমারত করেছেন এবং আস্‌মান  থেকে     পানি  বর্ষন    করেছেন।  অতঃপর  তা’দ্বারা  কিছু   ফল  সৃষ্টি   (উৎপন্ন)  করেন তোমাদের আহারের জন্য। সুতরাং জেনে-বুঝে আল্লাহ্‌র জন্য সমকক্ষ দাঁড় করাবে না।
وَإِن كُنتُم فى رَيبٍ مِمّا نَزَّلنا عَلىٰ عَبدِنا فَأتوا بِسورَةٍ مِن مِثلِهِ وَادعوا شُهَداءَكُم مِن دونِ اللَّهِ إِن كُنتُم صٰدِقينَ
2:23 এবং যদি তোমাদের কোন সন্দেহ হয় তাতে, যা আমি স্বীয় (এ খাস) বান্দার উপর নাযিল    করেছি,   তবে   এর    অনুরুপ   একটা   সূরা   তো   নিয়ে   এসো   এবং   আল্লাহ্‌    ব্যতীত  নিজেদের সকল সহায়তাকারীকে আহবান  করো    (সাহায্যের   জন্য), যদি  তোমরা সত্যবাদী হও!
فَإِن لَم تَفعَلوا وَلَن تَفعَلوا فَاتَّقُوا النّارَ الَّتى وَقودُهَا النّاسُ وَالحِجارَةُ أُعِدَّت لِلكٰفِرينَ
2:24   অতঃপর  যদি  আনয়ন  করতে  না  পারো,   আর  আমি   চ্যালেন্জ  করছি  যে,  কখনো আনতে   পারবে না,  তবে    ভয় করো   ঐ   আগুনকে,  যার ইন্ধন হচ্ছে মানুষ ও পাথর,   (যা) তৈরী রাখা হয়েছে কাফিরদের জন্য।
وَبَشِّرِ الَّذينَ ءامَنوا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ أَنَّ لَهُم جَنّٰتٍ تَجرى مِن تَحتِهَا الأَنهٰرُ كُلَّما رُزِقوا مِنها مِن ثَمَرَةٍ رِزقًا قالوا هٰذَا الَّذى رُزِقنا مِن قَبلُ وَأُتوا بِهِ مُتَشٰبِهًا وَلَهُم فيها أَزوٰجٌ مُطَهَّرَةٌ وَهُم فيها خٰلِدونَ
2:25 এবং সুসংবাদ দিন তাদেরকে, যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে যে, তাদের জন্য   বাগান    (জান্নাত)  রয়েছে,   যার   নিম্নদেশে   নহরসমূহ   প্রবাহমান।  যখন  তাদেরকে  ঐ বাগানগুলো থেকে কোন ফল খেতে দেয়া হবে তখনই তারা (সেটার বাহ্যিক আকার  দেখে) বলবে,  ‘এতো  সে-ই  রিযক্ব,  যা  আমরা  পূর্বে  পেয়েছিলাম;  এবং  সে-ই  ফল,  যা  (বাহ্যিক  আকৃতিগতভাবে)     পরষ্পর     সাদৃশ্যময়,     তাদেরকে   দেয়া    হবে   এবং   তাদের     জন্য   সে-ই বাগানগুলোতে  (জান্নাতসমূহ)  পবিত্র  স্ত্রীগণ  রয়েছে  এবং  তারা  ওইগুলোর  মধ্যে  স্থায়ীভাবে  থাকবে।
إِنَّ اللَّهَ لا يَستَحيۦ أَن يَضرِبَ مَثَلًا ما بَعوضَةً فَما فَوقَها فَأَمَّا الَّذينَ ءامَنوا فَيَعلَمونَ أَنَّهُ الحَقُّ مِن رَبِّهِم وَأَمَّا الَّذينَ كَفَروا فَيَقولونَ ماذا أَرادَ اللَّهُ بِهٰذا مَثَلًا يُضِلُّ بِهِ كَثيرًا وَيَهدى بِهِ كَثيرًا وَما يُضِلُّ بِهِ إِلَّا الفٰسِقينَ
2:26    নিশ্চয় আল্লাহ্‌ যে  কোন জিনিষের  দৃষ্ঠান্ত বর্ণনা  করতে    লজ্জাবোধ  করেন না- মশা হোক  কিংবা  তদপেক্ষা  বড়  কিছু।  সুতরাং  যারা  ঈমান  এনেছে  তারা  তো  জানে  যে,  এটা  তাদের রবের   পক্ষ থেকে, সত্য।  বাকী  রইলো কাফিরগণ,  তারা বলে,  ‘এ ধরণের উপমায় আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্য কি?’ আল্লাহ্‌ তা দ্বারা অনেককে  গোমরাহ্‌  করেন এবং অনেককে  হিদায়ত করেন, এবং তা দ্বারা তাদেরকেই পথভ্রষ্ট করেন, যারা অবাধ্য-
الَّذينَ يَنقُضونَ عَهدَ اللَّهِ مِن بَعدِ ميثٰقِهِ وَيَقطَعونَ ما أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَن يوصَلَ وَيُفسِدونَ فِى الأَرضِ أُولٰئِكَ هُمُ الخٰسِرونَ
2:27 তারাই, যারা আল্লাহ্‌র অঙ্গীকার ভঙ্গ  করে পাকাপোক্ত হবার পর এবং ছিন্ন করে ঐ  সম্পর্ককে,  যা   জুড়ে    রাখার  জন্য  আল্লাহ্‌   নির্দেশ  দিয়েছেন    এবং  যমীনে  ফ্যাসাদ  ছড়িয়ে বেড়ায়; তারা ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।
كَيفَ تَكفُرونَ بِاللَّهِ وَكُنتُم أَموٰتًا فَأَحيٰكُم ثُمَّ يُميتُكُم ثُمَّ يُحييكُم ثُمَّ إِلَيهِ تُرجَعونَ
2:28   আশ্চর্য! তোমরা কিরুপে আল্লাহ্‌কে   অস্বীকারকারী হবে?    অথচ তোমরা  মৃত ছিলে, তিনি  তোমাদেরকে  জীবিত  করেন,  আবার তোমাদের   মৃত্যু ঘটাবেন, পুনরায় তোমাদেরকে জীবিত করবেন; আবার তাঁরই দিকে দিকে ফিরে যাবে।
هُوَ الَّذى خَلَقَ لَكُم ما فِى الأَرضِ جَميعًا ثُمَّ استَوىٰ إِلَى السَّماءِ فَسَوّىٰهُنَّ سَبعَ سَمٰوٰتٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيءٍ عَليمٌ
2:29  তিনিই,  যিনি  তোমাদের   জন্য  সৃষ্টি   করেছেন  যা  কিছু  পৃথিবীতে  রয়েছে;  অতঃপর তিনি আসমানের   দিকে ‘ইস্তিওয়া’ (ইচ্ছা)  করলেন,  তখন   ঠিক সপ্ত-আস্‌মান  সৃষ্টি করলেন, এবং তিনি সবকিছু জানেন।
هُوَ الَّذى خَلَقَ لَكُم ما فِى الأَرضِ جَميعًا ثُمَّ استَوىٰ إِلَى السَّماءِ فَسَوّىٰهُنَّ سَبعَ سَمٰوٰتٍ وَهُوَ بِكُلِّ شَيءٍ عَليمٌ
وَإِذ قالَ رَبُّكَ لِلمَلٰئِكَةِ إِنّى جاعِلٌ فِى الأَرضِ خَليفَةً قالوا أَتَجعَلُ فيها مَن يُفسِدُ فيها وَيَسفِكُ الدِّماءَ وَنَحنُ نُسَبِّحُ بِحَمدِكَ وَنُقَدِّسُ لَكَ قالَ إِنّى أَعلَمُ ما لا تَعلَمونَ
2:30    এবং     (স্মরণ    করুন!)    যখন    আপনার    রব    ফিরিশ্‌তাদেরকে    বলেছিলেন,    আমি  পৃথিবীতে     আপন   প্রতিনিধি  সৃষ্টিকারী।’  (তারা)  বললো,     ‘আপনি  কি  এমন  কোন  সৃষ্টিকে প্রতিনিধি   করবেন,   যে   তাতে    ফ্যাসাদ   ছড়াবে   ও   তাতে   রক্তপাত   ঘটাবে?   আর    আমরা আপনার প্রশংসা পূর্বক    আপনার   তাস্‌বীহ (স্তূতিগান) করি  এবং  আপনার  পবিত্রতা  ঘোষণা করি।’ তিনি বললেন, আমার জানা আছে যা তোমরা জানোনা।
وَعَلَّمَ ءادَمَ الأَسماءَ كُلَّها ثُمَّ عَرَضَهُم عَلَى المَلٰئِكَةِ فَقالَ أَنبِـٔونى بِأَسماءِ هٰؤُلاءِ إِن كُنتُم صٰدِقينَ
2:31 এবং আল্লাহ্‌ তা’আলা আদমকে যাবতীয় (বস্তুর) নাম শিক্ষা দিলেন অতঃপর সমুদয় (বস্তু)   ফিরিশ্‌তাদের সামনে  উপস্থাপন   করে  এরশাদ করলেন, ‘সত্যবাদী   হলে এসব   বস্তুর নাম বলো তো!’
قالوا سُبحٰنَكَ لا عِلمَ لَنا إِلّا ما عَلَّمتَنا إِنَّكَ أَنتَ العَليمُ الحَكيمُ
2:32  (তারা)  বললো, ‘পবিত্রতা   আপনারই, আমাদের কোন জ্ঞান    নেই,  কিন্তু (ততটুকুই) যতটুকু আপনি আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আপনিই জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।’
قالَ يٰـٔادَمُ أَنبِئهُم بِأَسمائِهِم فَلَمّا أَنبَأَهُم بِأَسمائِهِم قالَ أَلَم أَقُل لَكُم إِنّى أَعلَمُ غَيبَ السَّمٰوٰتِ وَالأَرضِ وَأَعلَمُ ما تُبدونَ وَما كُنتُم تَكتُمونَ
2:33 তিনি এরশাদ করলেন, ‘হে আদম! বলে দাও তাদেরকে সমুদয় (বস্তুর) নাম।’ যখন তিনি (অর্থাৎ আদম) তাদেরকে  সমুদয় বস্তুর নাম বলে  দিলো, এরশাদ করলেন,  ‘আমি  কি (একথা)  বলছিলাম না   যে, আমি জানি আস্‌মানসমূহ এবং   যমীনের সমস্ত গোপন (অদৃশ্য) বস্তু সম্পর্কে এবং আমি
وَإِذ قُلنا لِلمَلٰئِكَةِ اسجُدوا لِءادَمَ فَسَجَدوا إِلّا إِبليسَ أَبىٰ وَاستَكبَرَ وَكانَ مِنَ الكٰفِرينَ
2:34 এবং (স্মরণ করুন!) যখন আমি ফিরিশ্‌তাদেরকে নির্দেশ দিলাম, ‘তোমরা আদমকে সাজদা করো।’  তখন সবাই  সাজদা করেছিলো, ইবলীস ব্যতীত; সে   অমান্যকারী   হলো ও অহংকার করলো এবং কাফির হয়ে গেলো।
وَقُلنا يٰـٔادَمُ اسكُن أَنتَ وَزَوجُكَ الجَنَّةَ وَكُلا مِنها رَغَدًا حَيثُ شِئتُما وَلا تَقرَبا هٰذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكونا مِنَ الظّٰلِمينَ
2:35  এবং আমি এরশাদ করলাম, ‘হে  আদম!   তুমি ও তোমার স্ত্রী এই জান্নাতে অবস্থান করো  এবং   খাও এখানে   কোন বাধা-বিঘ্ন ব্যাতিরেকেই, যেখানে তোমাদের মন   চায়; কিন্তু এই গাছের নিকটে যেওনা! গেলে, (তোমরা) সীমা অতিক্রমকারীদের অন্তুর্ভূক্ত হয়ে যাবে।’
وَقُلنا يٰـٔادَمُ اسكُن أَنتَ وَزَوجُكَ الجَنَّةَ وَكُلا مِنها رَغَدًا حَيثُ شِئتُما وَلا تَقرَبا هٰذِهِ الشَّجَرَةَ فَتَكونا مِنَ الظّٰلِمينَ
فَأَزَلَّهُمَا الشَّيطٰنُ عَنها فَأَخرَجَهُما مِمّا كانا فيهِ وَقُلنَا اهبِطوا بَعضُكُم لِبَعضٍ عَدُوٌّ وَلَكُم فِى الأَرضِ مُستَقَرٌّ وَمَتٰعٌ إِلىٰ حينٍ
2:36    অতঃপর   শয়তান     জান্নাত  থেকে  তাদের   পদস্খলন  ঘটালো    এবং   যেখানে  ছিলো সেখান থেকে তাঁদেরকে আলাদা করে দিলো। আর আমি এরশাদ করলাম, ‘(তোমরা) নীচে নেমে    যাও!    তোমরা    পরষ্পর    পরষ্পরের    শত্রু;    এবং    তোমাদেরকে    একটা    (নির্দ্ধারিত)  সময়সীমা পর্যন্ত পৃথিবীতে অবস্থান ও
فَتَلَقّىٰ ءادَمُ مِن رَبِّهِ كَلِمٰتٍ فَتابَ عَلَيهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوّابُ الرَّحيمُ
2:37 অতঃপর শিখে নিলেন আদম  আপন রবের নিকট থেকে কিছু কলেমা (বাণী)। তখন আল্লাহ্‌   তা’আলা   তাঁর   তওবা   কবুল   করলেন।   নিশ্চয়   তিনিই   অত্যন্ত   তাওবা   কবুলকারী,  দয়ালু।
قُلنَا اهبِطوا مِنها جَميعًا فَإِمّا يَأتِيَنَّكُم مِنّى هُدًى فَمَن تَبِعَ هُداىَ فَلا خَوفٌ عَلَيهِم وَلا هُم يَحزَنونَ
2:38    আমি এরশাদ করলাম,  ‘তোমরা  সবাই জান্নাত থেকে  নেমে  যাও! অতঃপর   পরে যদি তোমাদের নিকট  আমার পক্ষ থেকে কোন হিদায়ত আসে, তবে যে ব্যক্তি আমার সেই হিদায়তের অনুসারী হবে, তার জন্য না কোন ভয়, (এবং) না কোন দুঃখ থাকবে।
وَالَّذينَ كَفَروا وَكَذَّبوا بِـٔايٰتِنا أُولٰئِكَ أَصحٰبُ النّارِ هُم فيها خٰلِدونَ
2:39 আর ওই সব লোক, যারা কুফর করবে এবং আমার নির্দশনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে, তারা হলো দোযখবাসী, তাদেরকে সেখানেই সর্বদা থাকতে হবে।
يٰبَنى إِسرٰءيلَ اذكُروا نِعمَتِىَ الَّتى أَنعَمتُ عَلَيكُم وَأَوفوا بِعَهدى أوفِ بِعَهدِكُم وَإِيّٰىَ فَارهَبونِ
2:40 হে ইয়া’কুবের  বংশধরগণ!    (তোমরা) স্মরণ  করো  আমার  ঐ অনুগ্রহকে, যা     আমি তোমাদের উপর করেছি    এবং  আমার অঙ্গীকার  পূরণ করো। আমি ও তোমাদের   অঙ্গীকার  পূরণ করবো এবং বিশেষ করে, আমারই ভয় (অন্তরে) রাখো।
وَءامِنوا بِما أَنزَلتُ مُصَدِّقًا لِما مَعَكُم وَلا تَكونوا أَوَّلَ كافِرٍ بِهِ وَلا تَشتَروا بِـٔايٰتى ثَمَنًا قَليلًا وَإِيّٰىَ فَاتَّقونِ
2:41   এবং   (তোমরা)  ঈমান   আনো  সেটার       উপর,  যা    আমি   অবতীর্ণ  করেছি  সেটারই সত্যায়ন-কারীরুপে  যা  তোমাদের  সাথে  আছে  এবং  সর্বপ্রথম   সেটার  অস্বীকারকারী  হয়ো  না।  আর  আমার আয়াতগুলোর বিনিময়ে স্বল্পমূল্য গ্রহণ করো  না এবং  শুধু  আমাকেই ভয় করো।
وَلا تَلبِسُوا الحَقَّ بِالبٰطِلِ وَتَكتُمُوا الحَقَّ وَأَنتُم تَعلَمونَ
2:42  এবং সত্যের সাথে  বাতিলকে  মিশ্রিত করো না আর দেখে-জেনে   সত্যকে      গোপন  করো না।
وَأَقيمُوا الصَّلوٰةَ وَءاتُوا الزَّكوٰةَ وَاركَعوا مَعَ الرّٰكِعينَ
2:43 এবং নামায কায়েম রাখো ও যাকাত দাও এবং যারা রুকু’ করে তাদের সাথে রুকু’ করো।
أَتَأمُرونَ النّاسَ بِالبِرِّ وَتَنسَونَ أَنفُسَكُم وَأَنتُم تَتلونَ الكِتٰبَ أَفَلا تَعقِلونَ
2:44 তোমরা কি মানুষকে  সৎকর্মের  নির্দেশ দিচ্ছো  এবং  নিজেদের  আত্মাগুলোকে  ভুলে বসছো? অথচ তোমরা কিতাব পড়ছো। তবু ও কি তোমাদের বিবেক নেই?
وَاستَعينوا بِالصَّبرِ وَالصَّلوٰةِ وَإِنَّها لَكَبيرَةٌ إِلّا عَلَى الخٰشِعينَ
2:45   এবং  ধৈর্য ও   নামাযের মাধ্যমে  সাহায্য  প্রার্থনা  করো। এবং  নিশ্চয়  নিশ্চয়  নামায  ভারী, কিন্তু তাদের জন্য (নয়), যারা আন্তরিকভাবে আমার প্রতি বিনীত হয়;
الَّذينَ يَظُنّونَ أَنَّهُم مُلٰقوا رَبِّهِم وَأَنَّهُم إِلَيهِ رٰجِعونَ
2:46  যাদের  অন্তরে  এই  দৃঢ়  বিশ্বাস  রয়েছে  যে,  তাদেরকে  আপন  রবের  সাথে  সাক্ষাৎ  করতে হবে এবং তাঁরই দিকে যেতে হবে।
يٰبَنى إِسرٰءيلَ اذكُروا نِعمَتِىَ الَّتى أَنعَمتُ عَلَيكُم وَأَنّى فَضَّلتُكُم عَلَى العٰلَمينَ
2:47 হে ইয়া’কুবের বংশধরগণ! স্মরণ  করো, আমার সেই অনুগ্রহকে যা আমি তোমাদের উপর করেছি। আর এ কথাও যে, আমি এই সমগ্র যুগের উপর তোমাদের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি।
وَاتَّقوا يَومًا لا تَجزى نَفسٌ عَن نَفسٍ شَيـًٔا وَلا يُقبَلُ مِنها شَفٰعَةٌ وَلا يُؤخَذُ مِنها عَدلٌ وَلا هُم يُنصَرونَ
2:48 এবং ভয় করো ঐ দিনকে, যেদিন কোন আত্মা অন্য কারো বিনিময় হতে পারবে না আর না কাফিরদের  পক্ষে কোন  সুপারিশ  গ্রহণ করা হবে এবং  না কোন কিছু নিয়ে   (তার) আত্মাকে মুক্তি দেয়া হবে এবং না তারা কোন প্রকার সাহায্য পাবে।
وَإِذ نَجَّينٰكُم مِن ءالِ فِرعَونَ يَسومونَكُم سوءَ العَذابِ يُذَبِّحونَ أَبناءَكُم وَيَستَحيونَ نِساءَكُم وَفى ذٰلِكُم بَلاءٌ مِن رَبِّكُم عَظيمٌ
2:49 এবং (স্মরণ   করো)!   যখন আমি তোমাদেরকে   ফিরআউনি   সম্প্রদায় থেকে  নিষ্কৃতি  দান করেছি, যারা তোমাদেরকে মর্মান্তিক যন্ত্রণা দিতো; তোমাদের পুত্রদেরকে যবেহ করতো আর তোমাদের  কন্যাদেরকে জীবিত রাখতো;  এবং এর  মধ্যে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে এক মহা ‘বালা’ ছিলো (অথবা মহা পুরষ্কার)।
وَإِذ فَرَقنا بِكُمُ البَحرَ فَأَنجَينٰكُم وَأَغرَقنا ءالَ فِرعَونَ وَأَنتُم تَنظُرونَ
2:50  এবং  আমি   যখন  তোমাদের  জন্য  সাগরকে   দ্বিধা-বিভক্ত  (ফাঁক)  করেছি,  অতঃপর তোমাদেরকে রক্ষা করেছি।    আর ফিরআউনি সম্প্রদায়কে তোমাদের চোখের  সামনে ডুবিয়ে দিয়েছি।
وَإِذ وٰعَدنا موسىٰ أَربَعينَ لَيلَةً ثُمَّ اتَّخَذتُمُ العِجلَ مِن بَعدِهِ وَأَنتُم ظٰلِمونَ
2:51  এবং  যখন  আমি  মুসাকে   চল্লিশ  রাতের    ওয়াদা    দিয়েছি।   অতঃপর  তার    পশ্চাতে (প্রস্থানের    পর)   তোমরা   গো-বৎসের    পূজা   আরম্ভ     করে    দিয়েছিলে   এবং   তোমরা   ছিলে অত্যাচারী।
ثُمَّ عَفَونا عَنكُم مِن بَعدِ ذٰلِكَ لَعَلَّكُم تَشكُرونَ
2:52 অতঃপর,  এ (ঘটনা)র   পর  আমি তোমাদেরকে  ক্ষমা  করে  দিয়েছি,   যাতে  তোমরা  অনুগ্রহ স্বীকার করো।
وَإِذ ءاتَينا موسَى الكِتٰبَ وَالفُرقانَ لَعَلَّكُم تَهتَدونَ
2:53  এবং   যখন   আমি  মুসাকে  কিতাব  এবং  হক   ও  বাতিলের  মধ্যে   পার্থক্যকারী  দান করেছি, যাতে তোমরা সঠিক পথে এসে যাও।
وَإِذ قالَ موسىٰ لِقَومِهِ يٰقَومِ إِنَّكُم ظَلَمتُم أَنفُسَكُم بِاتِّخاذِكُمُ العِجلَ فَتوبوا إِلىٰ بارِئِكُم فَاقتُلوا أَنفُسَكُم ذٰلِكُم خَيرٌ لَكُم عِندَ بارِئِكُم فَتابَ عَلَيكُم إِنَّهُ هُوَ التَّوّابُ الرَّحيمُ
2:54 এবং যখন মুসা স্বীয় সম্প্রদায়ের   লোকদেরকে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা গো-বাছুর  তৈরী   করে   নিজেদের  আত্মার  উপর  অবিচার  করেছো।   সুতরাং  তোমরা  আপন সৃষ্টিকর্তার দিকে ফিরে এসো। অতঃপর তোমরা একে অপরকে হত্যা করো। এটা তোমাদের স্রষ্টার নিকট তোমাদের জন্য শ্রেয়।’ অতঃপর তিনি তোমাদের তওবা কবুল করলেন। নিশ্চয় তিনিই হলেন অত্যন্ত তওবা কবুলকারী, দয়ালু।
وَإِذ قُلتُم يٰموسىٰ لَن نُؤمِنَ لَكَ حَتّىٰ نَرَى اللَّهَ جَهرَةً فَأَخَذَتكُمُ الصّٰعِقَةُ وَأَنتُم تَنظُرونَ
2:55   এবং  যখন  তোমরা  বলেছিলে,   ‘হে   মুসা!    আমরা  কখনো    আপনার   কথা   বিশ্বাস করবো   না   যতক্ষণ  না   আমরা   আল্লাহ্‌কে  প্রকাশ্যভাবে  দেখে  নিই।’    তখন    তোমাদেরকে  বজ্রাঘাত পেয়ে বসলো আর তোমরা দেখতে পাচ্ছিলে।
ثُمَّ بَعَثنٰكُم مِن بَعدِ مَوتِكُم لَعَلَّكُم تَشكُرونَ
2:56  অতঃপর তোমাদেরকে মৃত্যুর পর    আমি   পূনর্জীবিত করেছি, যাতে তোমরা   অনুগ্রহ স্বীকার করো।
وَظَلَّلنا عَلَيكُمُ الغَمامَ وَأَنزَلنا عَلَيكُمُ المَنَّ وَالسَّلوىٰ كُلوا مِن طَيِّبٰتِ ما رَزَقنٰكُم وَما ظَلَمونا وَلٰكِن كانوا أَنفُسَهُم يَظلِمونَ
2:57 এবং আমি    তোমাদের   উপর মেঘকে  ছাউনি করেছি আর  তোমাদের প্রতি ‘মান্ন্‌’ ও ‘সাল্‌ওয়া’   অবতরণ   করেছি।  খাও,  আমার  প্রদত্ত   পবিত্র   (হালাল)    বস্তুগুলো।   এবং   তারা  আমার কোন ক্ষতি করেনি; হাঁ, তবে তারা নিজেদের আত্মারই ক্ষতি সাধন করেছিলো।
وَظَلَّلنا عَلَيكُمُ الغَمامَ وَأَنزَلنا عَلَيكُمُ المَنَّ وَالسَّلوىٰ كُلوا مِن طَيِّبٰتِ ما رَزَقنٰكُم وَما ظَلَمونا وَلٰكِن كانوا أَنفُسَهُم يَظلِمونَ
وَإِذ قُلنَا ادخُلوا هٰذِهِ القَريَةَ فَكُلوا مِنها حَيثُ شِئتُم رَغَدًا وَادخُلُوا البابَ سُجَّدًا وَقولوا حِطَّةٌ نَغفِر لَكُم خَطٰيٰكُم وَسَنَزيدُ المُحسِنينَ
2:58  এবং   যখন  আমি  বললাম,  ‘এ  লোকালয়ে   প্রবেশ   করো।  অতঃপর  তাতে  যেখানে ইচ্ছা  কোন প্রকার বাধা-বিপত্তি ছাড়াই আহার করো এবং ‘দরজা’ দিয়ে  সাজদারত অবস্থায় প্রবেশ করো    আর  বলো,  ‘আমাদের   গুনাহের  ক্ষমা  হোক!’ আমি  তোমাদের অপরাধগুলো ক্ষমা করে দেবো এবং অনতিবিলম্বে আমি নেককার লোকদেরকে আরো বেশী দেবো।’
فَبَدَّلَ الَّذينَ ظَلَموا قَولًا غَيرَ الَّذى قيلَ لَهُم فَأَنزَلنا عَلَى الَّذينَ ظَلَموا رِجزًا مِنَ السَّماءِ بِما كانوا يَفسُقونَ
2:59 অতঃপর যালিমগণ যা তাদেরকে বলা হয়েছিলো তা ব্যতীত অন্য বাক্য বদলে দিল, তারপর আমি  আস্‌মান   থেকে  তাদের   উপর আযাব নাযিল করেছি   তাদের আদেশ অমান্য করার প্রতিফল স্বরুপ।
وَإِذِ استَسقىٰ موسىٰ لِقَومِهِ فَقُلنَا اضرِب بِعَصاكَ الحَجَرَ فَانفَجَرَت مِنهُ اثنَتا عَشرَةَ عَينًا قَد عَلِمَ كُلُّ أُناسٍ مَشرَبَهُم كُلوا وَاشرَبوا مِن رِزقِ اللَّهِ وَلا تَعثَوا فِى الأَرضِ مُفسِدينَ
2:60 এবং যখন মুসা নিজ সম্প্রদায়ের জন্য পানি প্রার্থনা করলো তখন আমি বললাম, ‘এ পাথরের উপর তোমার লাঠি দ্বারা  আঘাত করো।’ তৎক্ষণাৎ এর ভিতর থেকে বারটি প্রস্রবণ প্রবাহিত হলো। প্রত্যেক গোত্র নিজ নিজ ঘাট (পান-স্থান) চিনে নিলো। (তোমরা) খাও এবং পান করো খোদা প্রদত্ত রিযক্ব এবং পৃথিবীতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে বেড়িয়ো না।
وَإِذ قُلتُم يٰموسىٰ لَن نَصبِرَ عَلىٰ طَعامٍ وٰحِدٍ فَادعُ لَنا رَبَّكَ يُخرِج لَنا مِمّا تُنبِتُ الأَرضُ مِن بَقلِها وَقِثّائِها وَفومِها وَعَدَسِها وَبَصَلِها قالَ أَتَستَبدِلونَ الَّذى هُوَ أَدنىٰ بِالَّذى هُوَ خَيرٌ اهبِطوا مِصرًا فَإِنَّ لَكُم ما سَأَلتُم وَضُرِبَت عَلَيهِمُ الذِّلَّةُ وَالمَسكَنَةُ وَباءو بِغَضَبٍ مِنَ اللَّهِ ذٰلِكَ بِأَنَّهُم كانوا يَكفُرونَ بِـٔايٰتِ اللَّهِ وَيَقتُلونَ النَّبِيّۦنَ بِغَيرِ الحَقِّ ذٰلِكَ بِما عَصَوا وَكانوا يَعتَدونَ
2:61    এবং যখন তোমরা বলেছো, ‘হে  মুসা! একই খাদ্যের উপর  তো আমাদের কখনো ধৈর্য  হবে   না।  সুতরাং   আপনি স্বীয়  রবের নিকট    দো’আ করুন যেন (তিনি) জমির উৎপন্ন দ্রব্য  আমাদের  জন্য  উৎপাদন  করেন-কিছু   শাক-সব্জী,  কাকুড়, গম,   মসুর  এবং পেঁয়াজ।’ এরশাদ   ফরমালেন,    ‘(তোমরা)    কি   নিকৃষ্টতর   বস্তুকে   উৎকৃষ্টতর    বস্তুর   পরিবর্তে   চাচ্ছো? আচ্ছা! মিশর   অথবা কোন এক শহরে অবতরণ   করো!   সেখানে তোমরা পাবে যা তোমরা চেয়েছো।’  এবং  তাদের  উপর  অবধারিত  করে  দেয়া  হলো লাঞ্ছনা  ও দারিদ্র  এবং  (তারা) আল্লাহ্‌র  ক্রোধের   প্রতি  ধাবিত  হলো। এটা  পরিণতি  ছিলো এ  কথারই  যে,  তারা  আল্লাহ্‌র আয়াতগুলোকে অস্বীকার করতো  এবং নবীগণকে অন্যায়ভাবে শহীদ করতো; এটা পরিণতি ছিলো তাদের অবাধ্যতাগুলো ও সীমালংঘনের।
إِنَّ الَّذينَ ءامَنوا وَالَّذينَ هادوا وَالنَّصٰرىٰ وَالصّٰبِـٔينَ مَن ءامَنَ بِاللَّهِ وَاليَومِ الءاخِرِ وَعَمِلَ صٰلِحًا فَلَهُم أَجرُهُم عِندَ رَبِّهِم وَلا خَوفٌ عَلَيهِم وَلا هُم يَحزَنونَ
2:62 নিশ্চয়  ঈমানদারগণ,   অনুরুপভাবে ইহুদী, খৃষ্টান  ও   তারকা-পূজারীদের মধ্যে যারা  সত্য    অন্তরে  আল্লাহ্‌  ও  শেষ   দিনের   উপর   ঈমান  এনেছে   আর   সৎ  কাজ     করে,  তাদের প্রতিদান তাদের রবের নিকট রয়েছে এবং তাদের জন্য না কোন ভয়-ভীতি আছে, না কোন প্রকার দুঃখ।
وَإِذ أَخَذنا ميثٰقَكُم وَرَفَعنا فَوقَكُمُ الطّورَ خُذوا ما ءاتَينٰكُم بِقُوَّةٍ وَاذكُروا ما فيهِ لَعَلَّكُم تَتَّقونَ
2:63 এবং যখন আমি তোমাদের থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়েছি এবং তোমাদের উপর ‘তূর’ (পাহাড়)   তুলে   ধরেছি;   ‘গ্রহণ    করে   নাও    যা     কিছু   আমি    তোমাদেরকে   প্রদান   করেছি,  শক্তভাবে   এবং   এর   সারমর্মগুলো   স্মরণ    করো,    এ   আশায়   যে,   তোমাদের   পরহেযগারী  (খোদাভীতি) অর্জিত হবে।’
ثُمَّ تَوَلَّيتُم مِن بَعدِ ذٰلِكَ فَلَولا فَضلُ اللَّهِ عَلَيكُم وَرَحمَتُهُ لَكُنتُم مِنَ الخٰسِرينَ
2:64  অতঃপর,  এর  পরে  তোমরা  ফিরে  গেছো।  তারপর  যদি  আল্লাহ্‌র  কৃপা  এবং  তাঁর  রহমত তোমাদের উপর না হতো, তবে তোমরা ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যেত।
وَلَقَد عَلِمتُمُ الَّذينَ اعتَدَوا مِنكُم فِى السَّبتِ فَقُلنا لَهُم كونوا قِرَدَةً خٰسِـٔينَ
2:65   এবং  নিশ্চয়    নিশ্চয়  তোমাদের   জানা   আছে-  তোমাদের  মধ্যকার  ওই    সব   লোক সম্পর্কে,  যারা  শনিবারে  সীমা   লংঘন  করেছে।  অতঃপর  আমি    তাদের  উদ্দেশ্যে    বললাম, ‘(তোমরা) হয়ে যাও ধিকৃত বানর!’
فَجَعَلنٰها نَكٰلًا لِما بَينَ يَدَيها وَما خَلفَها وَمَوعِظَةً لِلمُتَّقينَ
2:66  অতঃপর  আমি  (ঐ  বস্তির)   এ   ঘটনাকে  এর   পূর্ব   ও  পরবর্তীদের   জন্য  (শিক্ষণীয়) দৃষ্টান্ত করেছি এবং পরহেযগারদের জন্য উপদেশ।
وَإِذ قالَ موسىٰ لِقَومِهِ إِنَّ اللَّهَ يَأمُرُكُم أَن تَذبَحوا بَقَرَةً قالوا أَتَتَّخِذُنا هُزُوًا قالَ أَعوذُ بِاللَّهِ أَن أَكونَ مِنَ الجٰهِلينَ
2:67 এবং যখন   মুসা আপন সম্প্রদায়কে  বলেছিলেন, ‘খোদা তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন- তোমরা একটা গরু যবেহ করো।’ বললো, ‘আপনি কি আমাদেরকে ঠাট্টার পাত্র বানাচ্ছেন?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্‌র শরণ (এ থেকে) যে, আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভূক্ত হই!’
قالُوا ادعُ لَنا رَبَّكَ يُبَيِّن لَنا ما هِىَ قالَ إِنَّهُ يَقولُ إِنَّها بَقَرَةٌ لا فارِضٌ وَلا بِكرٌ عَوانٌ بَينَ ذٰلِكَ فَافعَلوا ما تُؤمَرونَ
2:68  (তারা)   বললো,    ‘আপন  রবের  নিকট  প্রার্থনা  করুন  যেন  তিনি  আমাদেরকে  বলে দেন-  গরুটা কেমন!’ তিনি (হযরত মুসা) বললেন,  তিনি (আল্লাহ্‌) এরশাদ করেছেন-  সেটা এমন এক গাভী, যা  না  বৃদ্ধ,  না অল্প বয়স্কা;  বরং উভয়ের  মাঝামাঝি  (বয়সের)। সুতরাং পালন করো, তোমাদের প্রতি যা করার নির্দেশ হচ্ছে।’
قالُوا ادعُ لَنا رَبَّكَ يُبَيِّن لَنا ما لَونُها قالَ إِنَّهُ يَقولُ إِنَّها بَقَرَةٌ صَفراءُ فاقِعٌ لَونُها تَسُرُّ النّٰظِرينَ
2:69 (তারা) বললো, ‘আপনি আপন রবের নিকট প্রার্থনা করুন যেন (তিনি) আমাদেরকে বলে  দেন-   এর  রং  কিরুপ  হবে।’   (হযরত  মুসা)  বললেন,  ‘তিনি  (আল্লাহ্‌  পাক)  এরশাদ  করেছেন-   তা    একটা      হলুদ   বর্ণের   গাভী,   যার    রং    হবে    গাঢ়   উজ্জ্বল     (চমকিত),    (যা) দর্শকদেরকে আনন্দ দেয়।’
قالُوا ادعُ لَنا رَبَّكَ يُبَيِّن لَنا ما هِىَ إِنَّ البَقَرَ تَشٰبَهَ عَلَينا وَإِنّا إِن شاءَ اللَّهُ لَمُهتَدونَ
2:70    (তারা)    বললো,    ‘আপন    রবের    নিকট     প্রার্থনা    করুন    যেন    তিনি    আমাদেরকে  স্পষ্পভাবে  জানিয়ে দেন, সেই গাভীটা কেমন!  নিশ্চয় গাভীগুলো সম্পর্কে আমাদের সন্দেহ হয়ে গেছে এবং আল্লাহ্‌ যদি চান, তবে আমরা দিশা পেয়ে যাবো।’
قالَ إِنَّهُ يَقولُ إِنَّها بَقَرَةٌ لا ذَلولٌ تُثيرُ الأَرضَ وَلا تَسقِى الحَرثَ مُسَلَّمَةٌ لا شِيَةَ فيها قالُوا الـٰٔنَ جِئتَ بِالحَقِّ فَذَبَحوها وَما كادوا يَفعَلونَ
2:71 (হযরত মুসা) বললেন, ‘তিনি (আল্লাহ্‌) এরশাদ করেছেন, তা এমন একটা গাভী, যা দ্বারা  কোন খিদমত নেয়া  হয় না,  না  সেটা জমি কর্ষণ  করে,   না  ক্ষেতে পানি  সেচন করে, নিখুঁত-   যাতে   কোন    প্রকার   দাগ   নেই।’    (তারা)   বললো,    ‘এখনই   আপনি    সঠিক   বর্ণনা এনেছেন।’   অতঃপর   তারা   তা  যবেহ   করেছিলো   এবং   তারা   যে     যবেহ  করবে   তা   বুঝা যাচ্ছিলো না।
وَإِذ قَتَلتُم نَفسًا فَادّٰرَءتُم فيها وَاللَّهُ مُخرِجٌ ما كُنتُم تَكتُمونَ
2:72  এবং  যখন  তোমরা  একটা   খুন  সংঘটিত     করেছো,  তখন  একে  অন্যের  প্রতি  এর অপবাদ  চাপিয়ে   দিচ্ছিলে     এবং   আল্লাহ্‌র   প্রকাশ  করে  দেয়ার  ছিলো  যা   তোমরা  গোপন  করছিলে।
فَقُلنَا اضرِبوهُ بِبَعضِها كَذٰلِكَ يُحىِ اللَّهُ المَوتىٰ وَيُريكُم ءايٰتِهِ لَعَلَّكُم تَعقِلونَ
2:73 অতঃপর আমি বললাম,  ‘এ নিহত ব্যক্তির গায়ে  ওই গাভীর  একটা টুকরো   নিক্ষেপ করো।’    আল্লাহ্‌  এভাবেই  মৃতকে  জীবিত   করবেন   এবং   তোমাদেরকে   আপন  (কুদরতের) নিদর্শনসমূহ দেখাচ্ছেন, যাতে তোমরা উপলব্ধি করতে পারো।
ثُمَّ قَسَت قُلوبُكُم مِن بَعدِ ذٰلِكَ فَهِىَ كَالحِجارَةِ أَو أَشَدُّ قَسوَةً وَإِنَّ مِنَ الحِجارَةِ لَما يَتَفَجَّرُ مِنهُ الأَنهٰرُ وَإِنَّ مِنها لَما يَشَّقَّقُ فَيَخرُجُ مِنهُ الماءُ وَإِنَّ مِنها لَما يَهبِطُ مِن خَشيَةِ اللَّهِ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمّا تَعمَلونَ
2:74  অতঃপর,  এরপর তোমাদের  হৃদয়  কঠিন হয়ে গেলো।  তখন   তা পাথরসমূহে ন্যায় হয়; বরং  তদপেক্ষাও  কঠিনতর এবং  পাথরগুলোর মধ্যে  তো  কিছু  এমনও আছে,  যেগুলো থেকে  নদীসমূহ  প্রবাহিত   হয়  এবং   কতেক  এমনও  রয়েছে,   যেগুলো     ফেটে  যায়-    তখন  সেগুলো থেকে পানি নির্গত হয়; এবং কতেক এমনও আছে, যেগুলো  আল্লাহ্‌র ভয়ে গড়িয়ে পড়ে। এবং আল্লাহ্‌ তোমাদের কৃতকর্মগুলো সম্পর্কে অনবগত নন।
2:74  অতঃপর,  এরপর তোমাদের  হৃদয়  কঠিন হয়ে গেলো।  তখন   তা পাথরসমূহে ন্যায় হয়; বরং  তদপেক্ষাও  কঠিনতর এবং  পাথরগুলোর মধ্যে  তো  কিছু  এমনও আছে,  যেগুলো থেকে  নদীসমূহ  প্রবাহিত   হয়  এবং   কতেক  এমনও  রয়েছে,   যেগুলো     ফেটে  যায়-    তখন  সেগুলো থেকে পানি নির্গত হয়; এবং কতেক এমনও আছে, যেগুলো  আল্লাহ্‌র ভয়ে গড়িয়ে পড়ে। এবং আল্লাহ্‌ তোমাদের কৃতকর্মগুলো সম্পর্কে অনবগত নন।
ثُمَّ قَسَت قُلوبُكُم مِن بَعدِ ذٰلِكَ فَهِىَ كَالحِجارَةِ أَو أَشَدُّ قَسوَةً وَإِنَّ مِنَ الحِجارَةِ لَما يَتَفَجَّرُ مِنهُ الأَنهٰرُ وَإِنَّ مِنها لَما يَشَّقَّقُ فَيَخرُجُ مِنهُ الماءُ وَإِنَّ مِنها لَما يَهبِطُ مِن خَشيَةِ اللَّهِ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمّا تَعمَلونَ
أَفَتَطمَعونَ أَن يُؤمِنوا لَكُم وَقَد كانَ فَريقٌ مِنهُم يَسمَعونَ كَلٰمَ اللَّهِ ثُمَّ يُحَرِّفونَهُ مِن بَعدِ ما عَقَلوهُ وَهُم يَعلَمونَ
2:75  অতঃপর,  হে  মুসলমানগণ!   তোমরা  কি    এ    আশা  পোষণ  করো  যে,  এ  ইহুদীগণ তোমাদেরকে   বিশ্বাস   করবে?   আরা    তাদের    মধ্যকার   একদল   এমনই   ছিলো    যে,    তারা আল্লাহ্‌র কালাম (বাণী) শুনতো অতঃপর বুঝার পর সেটাকে জেনেশুনে বিকৃত করতো।
وَإِذا لَقُوا الَّذينَ ءامَنوا قالوا ءامَنّا وَإِذا خَلا بَعضُهُم إِلىٰ بَعضٍ قالوا أَتُحَدِّثونَهُم بِما فَتَحَ اللَّهُ عَلَيكُم لِيُحاجّوكُم بِهِ عِندَ رَبِّكُم أَفَلا تَعقِلونَ
2:76 এবং যখন মুসলমানদের সাথে মিলতো তখন বলতো, ‘আমরা ঈমান এনেছি।’ আর যখন পরষ্পর  আলাদাভাবে   মিলিত হয় তখন বলে, ‘ওই  জ্ঞান,  যা আল্লাহ্‌ তোমাদের উপর খুলে  দিয়েছেন   তা  কি  মুসলমানদেরকে  বলে   দিচ্ছো?  এতে  করে  তারা  তোমাদের   রবের দরবারে তোমাদের বিরুদ্ধে দলিল পেশ করবে। তোমাদের কি বুঝ-শক্তি নেই?’
أَوَلا يَعلَمونَ أَنَّ اللَّهَ يَعلَمُ ما يُسِرّونَ وَما يُعلِنونَ
2:77  তারা কি  জানে  না যে,  আল্লাহ্‌ জানেন যা    কিছু তারা গোপন  করে    এবং  যা কিছু  তারা প্রকাশ করে?
وَمِنهُم أُمِّيّونَ لا يَعلَمونَ الكِتٰبَ إِلّا أَمانِىَّ وَإِن هُم إِلّا يَظُنّونَ
2:78    এবং  তাদের   মধ্যে এমন কিছু নিরক্ষর লোক রয়েছে,  যারা  কিতাব সম্পর্কে   কোন জ্ঞান    রাখে   না,   কিন্তু   মৌখিকভাবে   পড়তে    জানে     মাত্র   কিংবা   নিজেদের    কিছু   মনগড়া  কথাবার্তা; আর তারা নিরেট কল্পনার মধ্যে রয়েছে।
فَوَيلٌ لِلَّذينَ يَكتُبونَ الكِتٰبَ بِأَيديهِم ثُمَّ يَقولونَ هٰذا مِن عِندِ اللَّهِ لِيَشتَروا بِهِ ثَمَنًا قَليلًا فَوَيلٌ لَهُم مِمّا كَتَبَت أَيديهِم وَوَيلٌ لَهُم مِمّا يَكسِبونَ
2:79  সুতরাং  দুর্ভোগ  তাদের  জন্যই   যারা কিতাব  নিজেদের হাতে  রচনা  করে, অতঃপর  বলে বেড়ায়, ‘এটা  আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে;’ এ উদ্দেশ্যেই যে, এর পরিবর্তে তারা স্বল্প মূল্যই অর্জন করবে। সুতরাং দুর্ভোগ তাদের জন্যই, তাদের আপন হাতে (কিতাব) রচনার কারণে। আর দুর্ভোগ তাদের জন্যই, তাদের এ (অবৈধ) উপার্জনের দরুন।
وَقالوا لَن تَمَسَّنَا النّارُ إِلّا أَيّامًا مَعدودَةً قُل أَتَّخَذتُم عِندَ اللَّهِ عَهدًا فَلَن يُخلِفَ اللَّهُ عَهدَهُ أَم تَقولونَ عَلَى اللَّهِ ما لا تَعلَمونَ
2:80 এবং তারা (ইহুদীগণ) বললো,  ‘আমাদেরকে তো আগুন স্পর্শ  করবে  না, কিস্তু মাত্র দিন  কতেক।’  (হে   হাবীব!)   আপনি  বলে  দিন,   ‘তোমরা  কি  আল্লাহ্‌র  নিকট  থেকে  কোন অঙ্গীকার নিয়ে রেখেছো? তবে   তো আল্লাহ্‌ তা’আলা   আপন অঙ্গীকার কখনো ভঙ্গ  করবেন না, কিংবা আল্লাহ্‌ সম্পর্কে এমন কিছূ উক্তি করেছো যা সম্পর্কে তোমাদের জ্ঞান নেই!’
وَقالوا لَن تَمَسَّنَا النّارُ إِلّا أَيّامًا مَعدودَةً قُل أَتَّخَذتُم عِندَ اللَّهِ عَهدًا فَلَن يُخلِفَ اللَّهُ عَهدَهُ أَم تَقولونَ عَلَى اللَّهِ ما لا تَعلَمونَ
بَلىٰ مَن كَسَبَ سَيِّئَةً وَأَحٰطَت بِهِ خَطيـَٔتُهُ فَأُولٰئِكَ أَصحٰبُ النّارِ هُم فيها خٰلِدونَ
2:81  হ্যাঁ, কেন  এমন  হবে না-    যারা   পাপার্জন করেছে এবং তাদের পাপরাশি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে- তারা দোযখবাসীদেরই অন্তর্ভূক্ত; স্থায়ীভাবে তাতে থাকতে হবে।
وَالَّذينَ ءامَنوا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ أُولٰئِكَ أَصحٰبُ الجَنَّةِ هُم فيها خٰلِدونَ
2:82   যারা ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম  করেছে, তারা জান্নাতবাসী। তারা   তাতে   স্থায়ীভাবে  থাকবে।
وَإِذ أَخَذنا ميثٰقَ بَنى إِسرٰءيلَ لا تَعبُدونَ إِلَّا اللَّهَ وَبِالوٰلِدَينِ إِحسانًا وَذِى القُربىٰ وَاليَتٰمىٰ وَالمَسٰكينِ وَقولوا لِلنّاسِ حُسنًا وَأَقيمُوا الصَّلوٰةَ وَءاتُوا الزَّكوٰةَ ثُمَّ تَوَلَّيتُم إِلّا قَليلًا مِنكُم وَأَنتُم مُعرِضونَ
2:83 এবং যখন আমি বনী  ইস্রাঈল থেকে অঙ্গীকার নিয়েছি, ‘আল্লাহ্‌  ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করবে না  এবং  মাতা-পিতার  সাথে  সদ্ব্যবহার  করো আর আত্মীয়-স্বজনদের সাথে, এতিম ও মিসকিনদের সাথে এবং মানুষের সাথে সদালাপ   করো,  নামায কায়েম  রাখো ও যাকাত দাও।’ অতঃপর তোমরা ফিরে গিয়েছো, কিন্তু (ফিরে যায় নি) তোমাদের মধ্যে থেকে অল্প সংখ্যক লোক; এবং তোমরা বিমুখ।
وَإِذ أَخَذنا ميثٰقَكُم لا تَسفِكونَ دِماءَكُم وَلا تُخرِجونَ أَنفُسَكُم مِن دِيٰرِكُم ثُمَّ أَقرَرتُم وَأَنتُم تَشهَدونَ
2:84 এবং যখন আমি তোমাদের অঙ্গীকার নিয়েছি (এ মর্মে) যে, আপন লোকদেরকে খুন করবে  না  এবং   আপন   লোকদেরকে  তাদের  বস্তিগুলো   থেকে   তাড়িয়ে  দেবেনা।   অতঃপর তোমরা তা স্বীকার করেছো এবং তোমরা সাক্ষী রয়েছো।
ثُمَّ أَنتُم هٰؤُلاءِ تَقتُلونَ أَنفُسَكُم وَتُخرِجونَ فَريقًا مِنكُم مِن دِيٰرِهِم تَظٰهَرونَ عَلَيهِم بِالإِثمِ وَالعُدوٰنِ وَإِن يَأتوكُم أُسٰرىٰ تُفٰدوهُم وَهُوَ مُحَرَّمٌ عَلَيكُم إِخراجُهُم أَفَتُؤمِنونَ بِبَعضِ الكِتٰبِ وَتَكفُرونَ بِبَعضٍ فَما جَزاءُ مَن يَفعَلُ ذٰلِكَ مِنكُم إِلّا خِزىٌ فِى الحَيوٰةِ الدُّنيا وَيَومَ القِيٰمَةِ يُرَدّونَ إِلىٰ أَشَدِّ العَذابِ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمّا تَعمَلونَ
2:85 অতঃপর,   এই  যে  তোমরা!  আপন লোকদেরকে হত্যা করতে আরম্ভ  করেছো  এবং আপন লোকদের মধ্যে থেকে একটা দলকে তাদের মাতৃভূমি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছো, তাদের বিরুদ্ধে  (তাদের প্রতিপক্ষকে) গুনাহ ও  সীমালংঘনে সাহায্য করছো। আর  যদি   তারা  বন্দী হয়ে তোমাদের নিকট আসে, তবে  তোমরা বিনিময় (মুক্তিপণ) দিয়ে (তাদেরকে) মুক্ত করে  নিয়ে থাকো এবং  তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া তোমাদের  উপর হারাম। তবে  কি খোদার কিছু  সংখ্যক   নির্দেশের   উপর   ঈমান   আনছো   এবং  কিছু  সংখ্যক  নির্দেশকে  অস্বীকার   করছো? সুতরাং    তোমাদের  মধ্যে    যে   এরূপ  করে   তার   প্রতিফল    কি?   কিন্তু  দুনিয়াতে   অপমানিত হওয়াই এবং ক্বিয়ামতে  কঠিনতম শাস্তির  দিকে  ধাবিত    করা হবে;  এবং  আল্লাহ্‌ তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে অনবগত নন।
2:85 অতঃপর,   এই  যে  তোমরা!  আপন লোকদেরকে হত্যা করতে আরম্ভ  করেছো  এবং আপন লোকদের মধ্যে থেকে একটা দলকে তাদের মাতৃভূমি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছো, তাদের বিরুদ্ধে  (তাদের প্রতিপক্ষকে) গুনাহ ও  সীমালংঘনে সাহায্য করছো। আর  যদি   তারা  বন্দী হয়ে তোমাদের নিকট আসে, তবে  তোমরা বিনিময় (মুক্তিপণ) দিয়ে (তাদেরকে) মুক্ত করে  নিয়ে থাকো এবং  তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া তোমাদের  উপর হারাম। তবে  কি খোদার কিছু  সংখ্যক   নির্দেশের   উপর   ঈমান   আনছো   এবং  কিছু  সংখ্যক  নির্দেশকে  অস্বীকার   করছো? সুতরাং    তোমাদের  মধ্যে    যে   এরূপ  করে   তার   প্রতিফল    কি?   কিন্তু  দুনিয়াতে   অপমানিত হওয়াই এবং ক্বিয়ামতে  কঠিনতম শাস্তির  দিকে  ধাবিত    করা হবে;  এবং  আল্লাহ্‌ তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে অনবগত নন।
أُولٰئِكَ الَّذينَ اشتَرَوُا الحَيوٰةَ الدُّنيا بِالءاخِرَةِ فَلا يُخَفَّفُ عَنهُمُ العَذابُ وَلا هُم يُنصَرونَ
2:86 এরাই হচ্ছে ঐসব লোক, যারা পরকালের পরিবর্তে পার্থিব জীবনকে খরিদ করেছে। সুতরাং তাদের উপর থেকে না শাস্তি হ্রাস করা হবে এবং না তাদের সাহায্য করা হবে।
وَلَقَد ءاتَينا موسَى الكِتٰبَ وَقَفَّينا مِن بَعدِهِ بِالرُّسُلِ وَءاتَينا عيسَى ابنَ مَريَمَ البَيِّنٰتِ وَأَيَّدنٰهُ بِروحِ القُدُسِ أَفَكُلَّما جاءَكُم رَسولٌ بِما لا تَهوىٰ أَنفُسُكُمُ استَكبَرتُم فَفَريقًا كَذَّبتُم وَفَريقًا تَقتُلونَ
2:87 এবং নিশ্চয়ই আমি মুসাকে কিতাব দান করেছি, এবং তারপর একের পর এক রসূল প্রেরণ    করেছি  এবং    আমি     মারয়ামের  পুত্র  ঈসাকে   স্পষ্ট  নির্দশনসমূহ  দান  করেছি   এবং ‘পবিত্র রূহ’ দ্বারা  তাকে সাহায্য করেছি। তবে কি যখন কোন রসূল তোমাদের  নিকট এমন কিছু (বিধান) নিয়ে আসেন, যা তোমাদের মনঃপূত হয়না, (তখনই তোমরা) অহংকার করো? অতঃপর     ওই   সব     (নবী)-এর   মধ্য    থেকে    একদলকে    তোমরা    অস্বীকার    করছো    এবং একদলকে শহীদ করছো?
وَقالوا قُلوبُنا غُلفٌ بَل لَعَنَهُمُ اللَّهُ بِكُفرِهِم فَقَليلًا ما يُؤمِنونَ
2:88      এবং  ইহুদিগণ  বললো,  ‘আমাদের  হৃদয়গুলোর  উপর  পর্দা  (আচ্ছাদান)  পড়েছে’ বরং   আল্লাহ্‌  তা’আলা   তাদের  উপর  তাদের   কুফরের  কারণে  অভিশাপ  করেছেন।  সুতরাং তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক লোকই ঈমান আনে।
وَلَمّا جاءَهُم كِتٰبٌ مِن عِندِ اللَّهِ مُصَدِّقٌ لِما مَعَهُم وَكانوا مِن قَبلُ يَستَفتِحونَ عَلَى الَّذينَ كَفَروا فَلَمّا جاءَهُم ما عَرَفوا كَفَروا بِهِ فَلَعنَةُ اللَّهِ عَلَى الكٰفِرينَ
2:89  এবং   যখন  তাদের  নিকট  আল্লাহ্‌  তা’আলার  ওই  কিতাব  (ক্বোরআন)  এসেছে,  যা  তাদের সাথে রয়েছে এমন কিতাব (তাওরীত) এর  সত্যায়ন করে  এবং এর পূর্বে তারা  ওই নবীর ‘ওসীলা’ ধরে কাফিরদের  উপর বিজয় প্রার্থনা  করতো; অতঃপর যখন  তাদের নিকট   সেই  পরিচিত  সত্তা  তাশরীফ  আনলেন   তখন   তাঁকে  অস্বীকারকারী   হয়ে  বসলো।  অতএব, অস্বীকারকারীদের উপর আল্লাহ্‌র লা’নত।
بِئسَمَا اشتَرَوا بِهِ أَنفُسَهُم أَن يَكفُروا بِما أَنزَلَ اللَّهُ بَغيًا أَن يُنَزِّلَ اللَّهُ مِن فَضلِهِ عَلىٰ مَن يَشاءُ مِن عِبادِهِ فَباءو بِغَضَبٍ عَلىٰ غَضَبٍ وَلِلكٰفِرينَ عَذابٌ مُهينٌ
2:90   কতোই   নিকৃষ্ট   বিনিময়ে   তারা    আপন   আত্মাগুলোকে   খরিদ    করেছে!   (তা’হলো) আল্লাহ্‌র নাযিলকৃত কিতাবকে (তারা) অস্বীকার করেছে মনের এ যাতনায় যে, আল্লাহ্‌ আপন অনুগ্রহে  স্বীয় যে বান্দার উপর ইচ্ছা করেন ‘ওহী’  নাযিল  করেন। সুতরাং   (তারা)  ক্রোধের  উপর ক্রোধের উপযোগী হয়েছে। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনার শাস্তি।
وَإِذا قيلَ لَهُم ءامِنوا بِما أَنزَلَ اللَّهُ قالوا نُؤمِنُ بِما أُنزِلَ عَلَينا وَيَكفُرونَ بِما وَراءَهُ وَهُوَ الحَقُّ مُصَدِّقًا لِما مَعَهُم قُل فَلِمَ تَقتُلونَ أَنبِياءَ اللَّهِ مِن قَبلُ إِن كُنتُم مُؤمِنينَ
2:91 এবং যখন তাদেরকে বলা হয়,  আল্লাহ্‌র নাযিলকৃতের (কিতাব) উপর ঈমান আনো, তখন   বলে,  ‘যা   আমাদের   উপর  নাযিল    হয়েছে,  আমরা   তার   উপর    ঈমান   রাখি;   এবং বাকীগুলোকে    তারা    অস্বীকার     করে;     অথচ    তা    সত্য,     তাদের    নিকট    যা    আছে     তার  সত্যায়নকারী। (হে   হাবীব)   আপনি  বলে   দিন,  ‘অতঃপর  তোমরা পূর্ববর্তী  নবীগণকে কেন শহীদ করেছো, যদি তোমাদের আপন কিতাবের উপর ঈমান ছিলো?’
وَلَقَد جاءَكُم موسىٰ بِالبَيِّنٰتِ ثُمَّ اتَّخَذتُمُ العِجلَ مِن بَعدِهِ وَأَنتُم ظٰلِمونَ
2:92    এবং  নিশ্চয়    তোমাদের  নিকট   মুসা  স্পষ্ট  নির্দশনসমূহ    নিয়ে  তাশরীফ  এনেছেন। অতঃপর,   তোমরা    এর    পরে   গো-বাছুরকে   উপাস্য   করে   নিয়েছো    এবং    তোমরা    ছিলে   অত্যাচারী।
وَإِذ أَخَذنا ميثٰقَكُم وَرَفَعنا فَوقَكُمُ الطّورَ خُذوا ما ءاتَينٰكُم بِقُوَّةٍ وَاسمَعوا قالوا سَمِعنا وَعَصَينا وَأُشرِبوا فى قُلوبِهِمُ العِجلَ بِكُفرِهِم قُل بِئسَما يَأمُرُكُم بِهِ إيمٰنُكُم إِن كُنتُم مُؤمِنينَ
2:93     এবং    স্মরণ   করো   যখন    আমি    তোমাদের   থেকে      অঙ্গীকার   নিয়েছি   এবং    ‘তুর পাহাড়’কে    তোমাদের    মাথার     উপর     তুলে    ধরেছি।    ‘দৃঢ়ভাবে        গ্রহণ      করো    যা    আমি  তোমাদেরকে দিচ্ছি এবং শুনো!’ (তারা)  বললো ‘আমরা   শুনেছি  ও অমান্য করেছি।’   আর   তাদের  কুফরের   কারণে  তাদের হৃদয়গুলোতে  গো-বাছুর সিঞ্চিত হয়েছিলো।   (হে  হাবীব!)  আপনি  বলে   দিন, ‘তোমাদেরকে তোমাদের ঈমান কী নিকৃষ্ট নির্দেশ দিচ্ছে, যদি (তোমরা) ঈমান রাখো!’
قُل إِن كانَت لَكُمُ الدّارُ الءاخِرَةُ عِندَ اللَّهِ خالِصَةً مِن دونِ النّاسِ فَتَمَنَّوُا المَوتَ إِن كُنتُم صٰدِقينَ
2:94   (হে    হাবীব!)    আপনি     বলে   দিন,    ‘যদি   পরকালীন    নিবাস    আল্লাহ্‌র   নিকট   শুধু তোমাদের   জন্যই নির্দিষ্ট  হয়,   না অন্য কারো জন্য, তবে তো   ভালো,  মৃত্যু কামনা  করো, যদি সত্যবাদী হও!’
وَلَن يَتَمَنَّوهُ أَبَدًا بِما قَدَّمَت أَيديهِم وَاللَّهُ عَليمٌ بِالظّٰلِمينَ
2:95     এবং  অবশ্যই   কখনো  তারা  এর  কামনা   করবে   না  ওই  অপকর্মগুলোর    কারণে,  যেগুলো তারা পূর্বে করেছে এবং আল্লাহ্‌ অত্যাচারীদেরকে ভালোভাবে জানেন।
وَلَتَجِدَنَّهُم أَحرَصَ النّاسِ عَلىٰ حَيوٰةٍ وَمِنَ الَّذينَ أَشرَكوا يَوَدُّ أَحَدُهُم لَو يُعَمَّرُ أَلفَ سَنَةٍ وَما هُوَ بِمُزَحزِحِهِ مِنَ العَذابِ أَن يُعَمَّرَ وَاللَّهُ بَصيرٌ بِما يَعمَلونَ
2:96 এবং নিঃসন্দেহে,  আপনি অবশ্যই তাদেরকে এমনই পাবেন যে,  তারা সব লোকের চেয়েও অধিকাল জীবিত থাকার একান্ত কামনা রাখে এবং মুশরিকদের মধ্যে এক (দল) এর কামনা হচ্ছে  যেন হাজার বছর  বেঁচে থাকে এবং তার এ দীর্ঘায়ু প্রদত্ত হওয়া তাকে আযাব থেকে মুক্তি দেবে না। আর আল্লাহ্‌ তাদের কৃতকর্ম দেখছেন।
وَلَتَجِدَنَّهُم أَحرَصَ النّاسِ عَلىٰ حَيوٰةٍ وَمِنَ الَّذينَ أَشرَكوا يَوَدُّ أَحَدُهُم لَو يُعَمَّرُ أَلفَ سَنَةٍ وَما هُوَ بِمُزَحزِحِهِ مِنَ العَذابِ أَن يُعَمَّرَ وَاللَّهُ بَصيرٌ بِما يَعمَلونَ
قُل مَن كانَ عَدُوًّا لِجِبريلَ فَإِنَّهُ نَزَّلَهُ عَلىٰ قَلبِكَ بِإِذنِ اللَّهِ مُصَدِّقًا لِما بَينَ يَدَيهِ وَهُدًى وَبُشرىٰ لِلمُؤمِنينَ
2:97 (হে হাবীব!) আপনি বলে দিন, ‘যে কেউ জিব্রাঈলের শত্রু হয়,  তবে সে (জিব্রাঈল) তো  আপনারই   হৃদয়ের    উপর   আল্লাহ্‌র  নির্দেশে  এ    ক্বোরআন  নাযিল   করেছেন,   পূর্ববর্তী কিতাবগুলোর     প্রত্যায়নকারী    হিসেবে    এবং    সঠিক      পথ-প্রদর্শন     ও    সুসংবাদ    (হিসেবে) মুসলমানদের জন্য।
مَن كانَ عَدُوًّا لِلَّهِ وَمَلٰئِكَتِهِ وَرُسُلِهِ وَجِبريلَ وَميكىٰلَ فَإِنَّ اللَّهَ عَدُوٌّ لِلكٰفِرينَ
2:98   যে কেউ শত্রু হয় আল্লাহ্‌র,  তাঁর  ফিরিশ্‌তাদের,  তাঁর রসূলগণের, জিব্রাঈলের  এবং মীকাইলের, তবে আল্লাহ্‌ কাফিরদের শত্রু।
وَلَقَد أَنزَلنا إِلَيكَ ءايٰتٍ بَيِّنٰتٍ وَما يَكفُرُ بِها إِلَّا الفٰسِقونَ
2:99  এবং   নিঃসন্দেহে,    আমি   তোমাদের  প্রতি  স্পষ্ট    নির্দশনসমূহ  নাযিল  করেছি;  আর এগুলোকে অস্বীকার করবে না কিন্তু ফাসিক্ব লোকেরা।
أَوَكُلَّما عٰهَدوا عَهدًا نَبَذَهُ فَريقٌ مِنهُم بَل أَكثَرُهُم لا يُؤمِنونَ
2:100  এবং  তবে  কি    যখনই   কেউ  কোন  অঙ্গীকার  করে  (তখনই)  তাদের  মধ্য   থেকে একদল সেটাকে ছুঁড়ে মারে? বরং তাদের অনেকের ঈমান নেই।
وَلَمّا جاءَهُم رَسولٌ مِن عِندِ اللَّهِ مُصَدِّقٌ لِما مَعَهُم نَبَذَ فَريقٌ مِنَ الَّذينَ أوتُوا الكِتٰبَ كِتٰبَ اللَّهِ وَراءَ ظُهورِهِم كَأَنَّهُم لا يَعلَمونَ
2:101 এবং যখন তাদের  নিকট তাশরীফ আনলেন আল্লাহ্‌র নিকট থেকে  একজন রসূল, তাদের কিতাবগুলোর সমর্থকরুপে, তখন কিতাবীদের একটা দল আল্লাহ্‌র কিতাবকে তাদের পৃষ্ঠ-পেছনে নিক্ষেপ করেছে, যেন তারা কোন জ্ঞানই রাখে না।
وَاتَّبَعوا ما تَتلُوا الشَّيٰطينُ عَلىٰ مُلكِ سُلَيمٰنَ وَما كَفَرَ سُلَيمٰنُ وَلٰكِنَّ الشَّيٰطينَ كَفَروا يُعَلِّمونَ النّاسَ السِّحرَ وَما أُنزِلَ عَلَى المَلَكَينِ بِبابِلَ هٰروتَ وَمٰروتَ وَما يُعَلِّمانِ مِن أَحَدٍ حَتّىٰ يَقولا إِنَّما نَحنُ فِتنَةٌ فَلا تَكفُر فَيَتَعَلَّمونَ مِنهُما ما يُفَرِّقونَ بِهِ بَينَ المَرءِ وَزَوجِهِ وَما هُم بِضارّينَ بِهِ مِن أَحَدٍ إِلّا بِإِذنِ اللَّهِ وَيَتَعَلَّمونَ ما يَضُرُّهُم وَلا يَنفَعُهُم وَلَقَد عَلِموا لَمَنِ اشتَرىٰهُ ما لَهُ فِى الءاخِرَةِ مِن خَلٰقٍ وَلَبِئسَ ما شَرَوا بِهِ أَنفُسَهُم لَو كانوا يَعلَمونَ
2:102   আর   (তারা)   তারই   অনুসারী   হয়েছে,     যা    শয়তান   পাঠ    করতো     সুলায়মানের রাজত্বকালে;   এবং   সুলায়মান   কুফর    করেনি।    হাঁ,   কাফির    হয়েছে    শয়তান-গণ;    (তারা)  মানুষকে  যাদু শিক্ষা দেয় আর  ওই  যাদুও, যা ‘বাবেল’   শহরে দু’জন  ফিরিশ্‌তা-  হারূত  ও মারূতের উপর অবতীর্ণ হয়েছে। আর তারা দু’জন কাউকে কিছু শিক্ষা দিত না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা  এ  কথা  বলে  দিতো  না,  ‘আমরা  তো  নিছক  পরীক্ষা।  কাজেই,  নিজ  ঈমান  হারিয়ে  বসোনা।’   অতঃপর  (তারা)  তাদের  নিকট  থেকে    তাই  শিখতো,   যা  বিরোধ   বিচ্ছেদ   সৃষ্টি  করতো পুরুষ এবং তার স্ত্রীর মধ্যে।  আর তা দ্বারা কারো  ক্ষতি  সাধন  করতে   পারতো না, আল্লাহ্‌রই  নির্দেশে  ব্যতীত।  এবং  তারা  তাই  শিক্ষা  করে,  যা  তাদের  ক্ষতি  সাধন  করবে,  উপকার  করবে   না  এবং  নিশ্চয়  নিশ্চয়  তাদের  জানা  আছে  যে,   যে  ব্যক্তি  এ  সওদা  ক্রয় করেছে পরকালে তার কোন  অংশ নেই; এবং নিশ্চয়  তা কতোই   নিকৃষ্ট  বস্তু, যার বিনিময়ে তারা নিজেদের আত্মাসমূহ বিক্রি করেছে! যদি কোন রকমের তাদের জ্ঞান হতো!
وَلَو أَنَّهُم ءامَنوا وَاتَّقَوا لَمَثوبَةٌ مِن عِندِ اللَّهِ خَيرٌ لَو كانوا يَعلَمونَ
2:103 এবং  যদি তারা  ঈমান আনতো  এবং  সাবধানতা অবলম্বন করতো, তবে আল্লাহ্‌র নিকটস্থিত সাওয়াব অত্যধিক উত্তম যদি কোন প্রকারে তারা জানতো!
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا لا تَقولوا رٰعِنا وَقولُوا انظُرنا وَاسمَعوا وَلِلكٰفِرينَ عَذابٌ أَليمٌ
2:104  হে ঈমানদারগণ!  ‘রা-ইনা’  বলো না এবং এভাবে  আরয করো, ‘হুযুর, আমাদের প্রতি কৃপাদৃষ্টি রাখুন!’ এবং প্রথম থেকেই মনোযোগ সহকারে শুনো। আর কাফিরদের জন্য বেদনাদায়ক শাস্তি অবধারিত।
ما يَوَدُّ الَّذينَ كَفَروا مِن أَهلِ الكِتٰبِ وَلَا المُشرِكينَ أَن يُنَزَّلَ عَلَيكُم مِن خَيرٍ مِن رَبِّكُم وَاللَّهُ يَختَصُّ بِرَحمَتِهِ مَن يَشاءُ وَاللَّهُ ذُو الفَضلِ العَظيمِ
2:105  তারাই,   যারা কাফির,    কিতাবী কিংবা মুশরিক, তারা চায়না  যে, তোমাদের উপর কোন  কল্যাণ  অবতীর্ণ হোক  তোমাদের  রবের  নিকট  থেকে এবং  আল্লাহ্‌  স্বীয় রহমত দ্বারা বিশেষভাবে মনোনিত করেন যাকে চান, এবং আল্লাহ্‌ মহা অনুগ্রহশীল।
ما نَنسَخ مِن ءايَةٍ أَو نُنسِها نَأتِ بِخَيرٍ مِنها أَو مِثلِها أَلَم تَعلَم أَنَّ اللَّهَ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ
2:106 যখন আমি কোন আয়াতকে  রহিত  করে  দিই  কিংবা  বিস্মৃত করে দিই   তখন  এর চেয়ে  উত্তম  কিংবা  এর  মতো  (কোন  আয়াত)  নিয়ে  আসবো।  তোমার  কি  খবর  নেই  যে,  আল্লাহ্‌ সব কিছু করতে পারেন?
أَلَم تَعلَم أَنَّ اللَّهَ لَهُ مُلكُ السَّمٰوٰتِ وَالأَرضِ وَما لَكُم مِن دونِ اللَّهِ مِن وَلِىٍّ وَلا نَصيرٍ
2:107 তোমাদের কি  খবর  নেই যে, আল্লাহ্‌রই  জন্য আস্‌মানসমূহ ও   যমীনের বাদশাহী এবং     আল্লাহ্‌     ব্যতীত    তোমাদের    না     আছে     কোন     অভিভাবক    এবং     না    আছে    কোন সাহায্যকারী।
أَم تُريدونَ أَن تَسـَٔلوا رَسولَكُم كَما سُئِلَ موسىٰ مِن قَبلُ وَمَن يَتَبَدَّلِ الكُفرَ بِالإيمٰنِ فَقَد ضَلَّ سَواءَ السَّبيلِ
2:108 তোমরা কি এটাই চাও যে, তোমাদের রসূলকে সেরূপই প্রশ্ন করবে, যেরূপ মুসার সাথে  পূর্বে  সংঘটিত  হয়েছিলো?  আর  যে  ব্যক্তি  ঈমানের  পরিবর্তে  কুফর  গ্রহণ  করে,  সে  সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে।
وَدَّ كَثيرٌ مِن أَهلِ الكِتٰبِ لَو يَرُدّونَكُم مِن بَعدِ إيمٰنِكُم كُفّارًا حَسَدًا مِن عِندِ أَنفُسِهِم مِن بَعدِ ما تَبَيَّنَ لَهُمُ الحَقُّ فَاعفوا وَاصفَحوا حَتّىٰ يَأتِىَ اللَّهُ بِأَمرِهِ إِنَّ اللَّهَ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ
2:109  বহু কিতাবী  কামনা করেছে, ‘তারা  যদি  তোমাদেরকে (তোমাদের) ঈমান  আনার পর কুফরের দিকে ফিরিয়ে দিতে পারতো!’ তাদের অন্তরগুলোর বিদ্বেষবশতঃ,  এর পর  যে, তাদের  নিকট  সত্য  অতিমাত্রায়  প্রকাশিত  হয়েছে।  সুতরাং  তোমরা  ছেড়ে   দাও  ও   এড়িয়ে যাও  যতক্ষণ  না  আল্লাহ্‌  নিজ     হুকুম  প্রদান  করেন।  নিশ্চয়,   আল্লাহ্‌   প্রত্যেক  কিছুর   উপর শক্তিমান।

وَأَقيمُوا الصَّلوٰةَ وَءاتُوا الزَّكوٰةَ وَما تُقَدِّموا لِأَنفُسِكُم مِن خَيرٍ تَجِدوهُ عِندَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ بِما تَعمَلونَ بَصيرٌ
2:110 এবং নামায কায়েম রাখো ও যাকাত দাও। আর নিজেদের  আত্মাগুলোর  জন্য যে উত্তম  কাজ  পূর্বে  প্রেরণ  করবে  তা  আল্লাহ্‌র  নিকট  পাবে।  নিশ্চয়  আল্লাহ্‌  আমাদের   কাজ  প্রত্যক্ষ করেছেন।
وَقالوا لَن يَدخُلَ الجَنَّةَ إِلّا مَن كانَ هودًا أَو نَصٰرىٰ تِلكَ أَمانِيُّهُم قُل هاتوا بُرهٰنَكُم إِن كُنتُم صٰدِقينَ
2:111     এবং   কিতাবীরা  বলল,  ‘নিশ্চয়  জান্নাতে   যাবে  না,  কিন্তু   সেই-ব্যক্তি,  যে   ইহুদী কিংবা   খৃষ্টান   হবে।’  এটা    তাদের  কল্পনাপ্রসুত  আশা   মাত্র।  (হে   হাবীব!)   আপনি  বলুন, ‘(তোমরা) পেশ করো স্বীয় প্রমাণ যদি সত্যবাদী হও।’
بَلىٰ مَن أَسلَمَ وَجهَهُ لِلَّهِ وَهُوَ مُحسِنٌ فَلَهُ أَجرُهُ عِندَ رَبِّهِ وَلا خَوفٌ عَلَيهِم وَلا هُم يَحزَنونَ
2:112  হাঁ, কেন (এমন) নয়? যে  ব্যক্তি আপন চেহারা ঝুঁকিয়েছে আল্লাহ্‌র জন্য এবং  সে হয়  সৎকর্মপরায়ণ,  তবে  তার  প্রতিদান  তাঁর   রবের  নিকট  রয়েছে  এবং   তাদের  না   আছে কোন শংকা এবং না আছে কোন দুঃখ।
وَقالَتِ اليَهودُ لَيسَتِ النَّصٰرىٰ عَلىٰ شَيءٍ وَقالَتِ النَّصٰرىٰ لَيسَتِ اليَهودُ عَلىٰ شَيءٍ وَهُم يَتلونَ الكِتٰبَ كَذٰلِكَ قالَ الَّذينَ لا يَعلَمونَ مِثلَ قَولِهِم فَاللَّهُ يَحكُمُ بَينَهُم يَومَ القِيٰمَةِ فيما كانوا فيهِ يَختَلِفونَ
2:113 এবং ইহুদীরা বললো, ‘খৃষ্টান কিছুই নয়।’ আর খৃষ্টান বললো, ‘ইহুদী কিছুই নয়।’ অথচ তারা  কিতাব   পাঠ করে।  এভাবে মূর্খরা তাদের মতো  কথা  বলেছে।  সুতরাং   আল্লাহ্‌ তা’আলা   ক্বিয়ামত-দিবসে   তাদের   মধ্যে   মীমাংসা   করে   দেবেন   যে   বিষয়ে   তারা   ঝগড়া  করছে।
وَمَن أَظلَمُ مِمَّن مَنَعَ مَسٰجِدَ اللَّهِ أَن يُذكَرَ فيهَا اسمُهُ وَسَعىٰ فى خَرابِها أُولٰئِكَ ما كانَ لَهُم أَن يَدخُلوها إِلّا خائِفينَ لَهُم فِى الدُّنيا خِزىٌ وَلَهُم فِى الءاخِرَةِ عَذابٌ عَظيمٌ
2:114   এবং   তার   চেয়ে   অধিক   যালিম   কে,   যে   আল্লাহ্‌র   মসজিদগুলোতে   বাধা   দেয়  সেগুলোতে আল্লাহ্‌র নামের   চর্চা   হওয়া থেকে, এবং  সেগুলোর  ধ্বংস সাধনে   প্রয়াসী   হয়? তাদের  জন্য ভয়-বিহ্‌বল  না হয়ে   মসজিদে প্রবেশ   করা সঙ্গত  ছিলো না  যে, তাদের জন্য পৃথিবীতে লাঞ্ছনা রয়েছে এবং তাদের জন্য রয়েছে পরকালের মহাশাস্তি।

وَلِلَّهِ المَشرِقُ وَالمَغرِبُ فَأَينَما تُوَلّوا فَثَمَّ وَجهُ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ وٰسِعٌ عَليمٌ
2:115  এবং  পূর্ব-পশ্চিম  সব   আল্লাহ্‌রই।  সুতরাং  তোমরা  যেদিকে   মুখ  করো  সেদিকেই ‘ওয়াজাহুল্লাহ’ (খোদার   রহমত  তোমাদের  দিকে  নিবদ্ধ) রয়েছে।  নিশ্চয় আল্লাহ্‌  সর্বব্যাপী,   সর্বজ্ঞ।
وَقالُوا اتَّخَذَ اللَّهُ وَلَدًا سُبحٰنَهُ بَل لَهُ ما فِى السَّمٰوٰتِ وَالأَرضِ كُلٌّ لَهُ قٰنِتونَ
2:116 এবং  (তারা)  বললো, আল্লাহ্‌ নিজের জন্য সন্তান রেখেছেন। পবিত্রতা  তাঁরই  বরং তাঁরই মালিকানাধীন যা কিছু আস্‌মানসমূহ এবং  যমীনে রয়েছে। সবাই তাঁর সামনে   গর্দান অবনতকারী।
بَديعُ السَّمٰوٰتِ وَالأَرضِ وَإِذا قَضىٰ أَمرًا فَإِنَّما يَقولُ لَهُ كُن فَيَكونُ
2:117  (আল্লাহ্‌)  নতুন (নমুনা   ছাড়া)  সৃষ্টিকারী আস্‌মান সমূহের ও   যমীনের  এবং  যখন কোন কিছুর নির্দেশ দেন তখন তিনি তাকে এটাই বলেন, ‘হয়ে যাও!’ তা সাথে সাথে হয়ে  যায়।
وَقالَ الَّذينَ لا يَعلَمونَ لَولا يُكَلِّمُنَا اللَّهُ أَو تَأتينا ءايَةٌ كَذٰلِكَ قالَ الَّذينَ مِن قَبلِهِم مِثلَ قَولِهِم تَشٰبَهَت قُلوبُهُم قَد بَيَّنَّا الءايٰتِ لِقَومٍ يوقِنونَ
2:118   এবং মূর্খরা বললো,   ‘আল্লাহ্‌   আমাদের   সাথে   কেন কথা  বলেন না? কিংবা যদি আমাদের  কোন  নিদর্শনও  মিলতো!’  তাদের   পূর্ববর্তীরাও  এরুপই  বলেছে-   তাদের   মতো   কথা।  এদের  ও  ওদের  অন্তরগুলো    একই  ধরণের।   নিশ্চয়ই  আমি   নিদর্শনাবলী  স্পষ্টভাবে বিবৃত করেছি- দৃঢ় বিশ্বাসীদের জন্য।
إِنّا أَرسَلنٰكَ بِالحَقِّ بَشيرًا وَنَذيرًا وَلا تُسـَٔلُ عَن أَصحٰبِ الجَحيمِ
2:119       নিশ্চয়ই       আমি       আপনাকে       সত্যসহ       প্রেরণ       করেছি       সুসংবাদদাতা       এবং  সতর্ককারীরুপে। আর আপনাকে জাহান্নামীদের সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে না।
وَلَن تَرضىٰ عَنكَ اليَهودُ وَلَا النَّصٰرىٰ حَتّىٰ تَتَّبِعَ مِلَّتَهُم قُل إِنَّ هُدَى اللَّهِ هُوَ الهُدىٰ وَلَئِنِ اتَّبَعتَ أَهواءَهُم بَعدَ الَّذى جاءَكَ مِنَ العِلمِ ما لَكَ مِنَ اللَّهِ مِن وَلِىٍّ وَلا نَصيرٍ
2:120 এবং কখনো আপনার উপর ইহুদী ও খৃষ্টানগণ সন্তুষ্ট হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি তাদের  ধর্মের  অনুসরণ  করবেন  না।  (হে  হাবীব!)  আপনি  বলে  দিন,  ‘আল্লাহ্‌র  হিদায়তই  প্রকৃত  হিদায়ত।’  এবং  (হে   শ্রোতা,  যেই    হও!)   যদি  তুমি  তাদের  খেয়াল-খুশীর  অনুসরণ করো তোমার নিকট  জ্ঞান আসার পর, তবে আল্লাহ্‌ থেকে কেউ না তোমার রক্ষাকারী  হবে  এবং না সাহায্যকারী।
الَّذينَ ءاتَينٰهُمُ الكِتٰبَ يَتلونَهُ حَقَّ تِلاوَتِهِ أُولٰئِكَ يُؤمِنونَ بِهِ وَمَن يَكفُر بِهِ فَأُولٰئِكَ هُمُ الخٰسِرونَ
2:121  যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি,  তারা  যেমন  উচিত,  তা   পাঠ করে;   তারাই তার উপর ঈমান রাখে। আর যারা এটাকে অস্বীকার করে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ।
يٰبَنى إِسرٰءيلَ اذكُروا نِعمَتِىَ الَّتى أَنعَمتُ عَلَيكُم وَأَنّى فَضَّلتُكُم عَلَى العٰلَمينَ
2:122 হে ইয়া’কুবের বংশধরগণ! স্মরণ করো আমার ওই অনুগ্রহকে, যা আমি তোমাদের উপর করেছি। আর ওটাও যে, আমি   সে যুগের সকলের  উপর    তোমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছি।
وَاتَّقوا يَومًا لا تَجزى نَفسٌ عَن نَفسٍ شَيـًٔا وَلا يُقبَلُ مِنها عَدلٌ وَلا تَنفَعُها شَفٰعَةٌ وَلا هُم يُنصَرونَ
2:123 এবং ভয় করো সেদিনকে, যেদিন কোন  প্রাণ অন্য প্রাণের  বিনিময় হবে  না এবং  না   তাকে   কিছু    বিনিময়  নিয়ে   ছেড়ে  দেয়া    হবে    আর  না  কাফিরদেরকে   কোন   সুপারিশ  উপকার করবে এবং না তাদেরকে সাহায্য করা হবে।
وَإِذِ ابتَلىٰ إِبرٰهۦمَ رَبُّهُ بِكَلِمٰتٍ فَأَتَمَّهُنَّ قالَ إِنّى جاعِلُكَ لِلنّاسِ إِمامًا قالَ وَمِن ذُرِّيَّتى قالَ لا يَنالُ عَهدِى الظّٰلِمينَ
2:124  এবং  যখন  ইব্রাহীমকে  তাঁর  রব  কতিপয়  কথা  দ্বারা  পরীক্ষা  করেছেন;  অতঃপর  তিনি সেগুলোকে পূর্ণ করে  দেখিয়েছেন। (আল্লাহ্‌) এরশাদ করেন, ‘আমি তোমাকে মানুষের ইমাম সাব্যস্তকারী হই।’ আরয করলেন, ‘এবং আমার  বংশধরদের মধ্যে থেকেও।’ এরশাদ করলো, ‘আমার প্রতিশ্রুতি অত্যাচারীদের ভাগ্যে জোটে না।’
وَإِذ جَعَلنَا البَيتَ مَثابَةً لِلنّاسِ وَأَمنًا وَاتَّخِذوا مِن مَقامِ إِبرٰهۦمَ مُصَلًّى وَعَهِدنا إِلىٰ إِبرٰهۦمَ وَإِسمٰعيلَ أَن طَهِّرا بَيتِىَ لِلطّائِفينَ وَالعٰكِفينَ وَالرُّكَّعِ السُّجودِ
2:125 এবং (স্মরণ করুন,) যখন আমি এ ঘরকে মানবজাতির জন্য আশ্রয়স্থল ও নিরাপদ স্থান করেছি  আর (বললাম,)  ‘ইব্রাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে  নামাযের  স্থানরূপে  গ্রহণ করো।’ আমি     ইব্রাহীম    ও     ইসমাঈলকে    তাগিদ    দিয়েছি,      ‘আমার    ঘরকে    খুব        পবিত্র     করো- তাওয়াফকারী, ই’তিকাফকারী এবং রুকু’ ও সাজদাকারীদের জন্য।’
وَإِذ قالَ إِبرٰهۦمُ رَبِّ اجعَل هٰذا بَلَدًا ءامِنًا وَارزُق أَهلَهُ مِنَ الثَّمَرٰتِ مَن ءامَنَ مِنهُم بِاللَّهِ وَاليَومِ الءاخِرِ قالَ وَمَن كَفَرَ فَأُمَتِّعُهُ قَليلًا ثُمَّ أَضطَرُّهُ إِلىٰ عَذابِ النّارِ وَبِئسَ المَصيرُ
2:126 এবং   যখন   ইব্রাহীম   আরয করলেন,   ‘হে  আমার রব!  এ  শহরকে নিরাপদ  করে দাও! আর এর অধিবাসীদেরকে বিভিন্ন ধরণের ফল থেকে জীবিকা দান করো! যারা তাদের মধ্যে আল্লাহ্‌ ও পরকালের উপর ঈমান আনবে।’ এরশাদ করলেন, ‘এবং যারা কাফির হবে তাদেরকেও   এর  সামান্য   ভোগ  করার   জন্য  দেবো।  অতঃপর   তাদেরকে  দোযখের  কঠিন  শাস্তির দিকে (ধাবিত হতে) বাধ্য করবো এবং তা অত্যন্ত নিকৃষ্ট স্থান ফিরে যাবার।’
وَإِذ يَرفَعُ إِبرٰهۦمُ القَواعِدَ مِنَ البَيتِ وَإِسمٰعيلُ رَبَّنا تَقَبَّل مِنّا إِنَّكَ أَنتَ السَّميعُ العَليمُ
2:127 এবং যখন ইব্রাহীম  এ ঘরের  ভিত্তিগুলো উঠাচ্ছিলো এবং ইসমাঈল, এ প্রার্থনারত অবস্থায়- ‘হে আমাদের রব! আমাদের পক্ষ থেকে গ্রহণ করো। নিশ্চয় তুমিই শ্রোতা, জ্ঞাতা।
رَبَّنا وَاجعَلنا مُسلِمَينِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنا أُمَّةً مُسلِمَةً لَكَ وَأَرِنا مَناسِكَنا وَتُب عَلَينا إِنَّكَ أَنتَ التَّوّابُ الرَّحيمُ
2:128   হে রব আমাদের! এবং  আমাদেরকে  তোমারই সামনে  গর্দান  অবতনকারী  করো এবং     আমাদের    বংশধরদের   মধ্য  থেকে  একটা   উম্মতকে  তোমারই   অনুগত  করো।  আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদতের  নিয়ম-কানুন বলে দাও এবং আমাদের প্রতি  স্বীয় অনুগ্রহ সহকারে দৃষ্টিপাত করো। নিশ্চয় তুমিই অত্যন্ত তাওবা কবূলকারী, দয়ালু।
رَبَّنا وَابعَث فيهِم رَسولًا مِنهُم يَتلوا عَلَيهِم ءايٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الكِتٰبَ وَالحِكمَةَ وَيُزَكّيهِم إِنَّكَ أَنتَ العَزيزُ الحَكيمُ
2:129 হে রব আমাদের! এবং তাদের মধ্যে তাদেরই থেকে   একজন রসূল প্রেরণ করো, যিনি তোমার আয়াতসমূহ তাদের নিকট তেলাওয়াত করবেন এবং তাদেরকে তোমার কিতাব ও    পরিপক্ক    জ্ঞান    শিক্ষা   দেবেন    এবং    তাদেরকে   অতি     পবিত্র   করবেন।   নিশ্চয়,   তুমিই পরাত্রুমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَمَن يَرغَبُ عَن مِلَّةِ إِبرٰهۦمَ إِلّا مَن سَفِهَ نَفسَهُ وَلَقَدِ اصطَفَينٰهُ فِى الدُّنيا وَإِنَّهُ فِى الءاخِرَةِ لَمِنَ الصّٰلِحينَ
2:130  এবং ইব্রাহীমের  দ্বীন থেকে কে বিমুখ   হবে     ওই ব্যক্তি  ছাড়া, যে   অন্তরের (দিক  দিয়ে)   নির্বোধ?   আর    নিশ্চয়   নিশ্চয়  আমি  পৃথিবীতে  তাকে  মনোনীত  করে  নিয়েছি;  এবং নিশ্চয় সে পরকালে আমার খাস নৈকট্যের উপযোগীদের অন্তভূক্ত।
إِذ قالَ لَهُ رَبُّهُ أَسلِم قالَ أَسلَمتُ لِرَبِّ العٰلَمينَ
2:131  যখন  তাকে  তার রব বললেন,  ‘গর্দান   অবনত করো (আত্মসমর্পণ করো)!’ তখন আরয করলো আমি গর্দান অবনত করেছি তাঁরই জন্যই, যিনি সমগ্র বিশ্বের রব।
وَوَصّىٰ بِها إِبرٰهۦمُ بَنيهِ وَيَعقوبُ يٰبَنِىَّ إِنَّ اللَّهَ اصطَفىٰ لَكُمُ الدّينَ فَلا تَموتُنَّ إِلّا وَأَنتُم مُسلِمونَ
2:132 এবং ইব্রাহীম  তার পুত্রদেরকে ওই দ্বীন সম্পর্কে ওসীয়ত করলো এবং ইয়া‘কূবও- ‘হে   আমার  পুত্রগণ!  নিশ্চয়  আল্লাহ্‌  তোমাদের  জন্য  এ  দ্বীনকে  মনোনিত  করে   দিয়েছেন। সুতরাং মৃত্যুবরণ করো না, কিন্তু মুসলমান হয়ে।’
أَم كُنتُم شُهَداءَ إِذ حَضَرَ يَعقوبَ المَوتُ إِذ قالَ لِبَنيهِ ما تَعبُدونَ مِن بَعدى قالوا نَعبُدُ إِلٰهَكَ وَإِلٰهَ ءابائِكَ إِبرٰهۦمَ وَإِسمٰعيلَ وَإِسحٰقَ إِلٰهًا وٰحِدًا وَنَحنُ لَهُ مُسلِمونَ
2:133  বরং  তোমাদের  মধ্যে থেকে (তোমরা) নিজেরাই উপস্থিত   ছিলে   যখন ইয়া’কুবের নিকট  মৃত্যু   আসলো;  যখন   সে    আপন   পুত্রদেরকে   বললো,   ‘আমার   পরে   কার    ইবাদত করবে?’  (তারা)  আরয  করলো,  ‘আমরা  ইবাদত  করবো  তাঁরই,  যিনি  খোদা  হন  আপনার  এবং  আপনার  পিতামহ ইব্রাহীম, ইসমাঈল  এবং   ইসহাক্বের, একমাত্র খোদা;   এবং আমরা তাঁরই সামনে গর্দান রেখেছি।
تِلكَ أُمَّةٌ قَد خَلَت لَها ما كَسَبَت وَلَكُم ما كَسَبتُم وَلا تُسـَٔلونَ عَمّا كانوا يَعمَلونَ
2:134 এ এক উম্মত; যারা  গত  হয়েছে,   তাদের  জন্য রয়েছে যা   তারা  অর্জন  করেছে;  এবং  তোমাদের  জন্য     রয়েছে    যা  তোমরা  অর্জন  করবে;    এবং   তাদের  কৃতকর্ম   সম্পর্কে  তোমাদেরকে কোন প্রশ্ন করা হবে না।
وَقالوا كونوا هودًا أَو نَصٰرىٰ تَهتَدوا قُل بَل مِلَّةَ إِبرٰهۦمَ حَنيفًا وَما كانَ مِنَ المُشرِكينَ
2:135  এবং  কিতাবীরা  বললো,  ‘ইহুদী  কিংবা   খৃষ্টান  হয়ে  যাও,  ঠিক   পথ  পাবে!’   (হে হাবীব!) আপনি বলুন, ‘বরং আমরা তো ইব্রাহীমের দ্বীনকেই গ্রহণ করছি, যিনি সব রকমের বাতিল থেকে মুক্ত ছিলেন এবং মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’
قولوا ءامَنّا بِاللَّهِ وَما أُنزِلَ إِلَينا وَما أُنزِلَ إِلىٰ إِبرٰهۦمَ وَإِسمٰعيلَ وَإِسحٰقَ وَيَعقوبَ وَالأَسباطِ وَما أوتِىَ موسىٰ وَعيسىٰ وَما أوتِىَ النَّبِيّونَ مِن رَبِّهِم لا نُفَرِّقُ بَينَ أَحَدٍ مِنهُم وَنَحنُ لَهُ مُسلِمونَ
2:136  এভাবে আরয  করো, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহ্‌র  উপর   এবং সেটারই  উপর, যা   আমাদের   প্রতি  অবতীর্ণ  হয়েছে,   আর  যা  অবতারণ  করা    হয়েছে  ইব্রাহীম,  ইসমাঈল, ইসহাক্ব, ইয়া‘কূব এবং তাঁরই বংশধরদের উপর। আর (সেটারই উপর) যা দান করা হয়েছে মুসা  ও ঈসাকে   এবং  যা দান করা  হয়েছে অন্যান্য নবীগণকে তাঁদের   রবের  পক্ষ  থেকে।  আমরা  তাঁদের   কারো  উপর  ঈমান  আনার  ক্ষেত্রে   পার্থক্য    করি  না  এবং  আমরা  আল্লাহ্‌র সামনে গর্দান রেখেছি।
فَإِن ءامَنوا بِمِثلِ ما ءامَنتُم بِهِ فَقَدِ اهتَدَوا وَإِن تَوَلَّوا فَإِنَّما هُم فى شِقاقٍ فَسَيَكفيكَهُمُ اللَّهُ وَهُوَ السَّميعُ العَليمُ
2:137 অতঃপর তারাও যদি এভাবে ঈমান আনতো,  যেমন তোমরা এনেছো, তবেই তো তারা  হিদায়ত  পেয়ে  যেতো।  আর  যদি  মুখ   ফিরিয়ে  নেয়  তবে  তারা  নিরেট   একগুঁয়েমীর মধ্যে  রয়েছে। তবে হে মাহবুব! অদূর ভবিষ্যতে  আল্লাহ্‌ তাদের  দিক  থেকে আপনার জন্য যথেষ্ট হবেন এবং তিনিই শ্রোতা, জ্ঞাতা।
صِبغَةَ اللَّهِ وَمَن أَحسَنُ مِنَ اللَّهِ صِبغَةً وَنَحنُ لَهُ عٰبِدونَ
2:138 আমরা আল্লাহ্‌র রং গ্রহণ করেছি এবং আল্লাহ্‌র রং অপেক্ষা কার রং অধিক উত্তম? এবং আমরা তাঁরই ইবাদত করি।
قُل أَتُحاجّونَنا فِى اللَّهِ وَهُوَ رَبُّنا وَرَبُّكُم وَلَنا أَعمٰلُنا وَلَكُم أَعمٰلُكُم وَنَحنُ لَهُ مُخلِصونَ
2:139 (হে হাবীব!) আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্‌ সম্পর্কে (আমাদের সাথে) কি (তোমরা) বিতর্ক করছো?  অথচ তিনি  আমাদেরও  মালিক  এবং তোমাদেরও;    এবং আমাদের কর্ম  আমাদের সাথে আর তোমাদের কর্ম তোমাদের সাথে; এবং আমরা শুধু তাঁরই;
قُل أَتُحاجّونَنا فِى اللَّهِ وَهُوَ رَبُّنا وَرَبُّكُم وَلَنا أَعمٰلُنا وَلَكُم أَعمٰلُكُم وَنَحنُ لَهُ مُخلِصونَ
أَم تَقولونَ إِنَّ إِبرٰهۦمَ وَإِسمٰعيلَ وَإِسحٰقَ وَيَعقوبَ وَالأَسباطَ كانوا هودًا أَو نَصٰرىٰ قُل ءَأَنتُم أَعلَمُ أَمِ اللَّهُ وَمَن أَظلَمُ مِمَّن كَتَمَ شَهٰدَةً عِندَهُ مِنَ اللَّهِ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمّا تَعمَلونَ
2:140 বরং তোমরা  এটাই  বলে থাকো যে, ইব্রাহীম,  ইসমাঈল, ইসহাক্ব,  ইয়া‘কূব  এবং তাঁদের পুত্রগণ  ইহুদী  কিংবা খৃষ্টান ছিলেন। (হে হাবীব!) আপনি বলুন, ‘জ্ঞান কি আমাদের বেশী, না আল্লাহ্‌র? এবং তার চেয়ে অধিক অত্যাচারী কে, যার নিকট রয়েছে আল্লাহ্‌র পক্ষে সাক্ষ্য, আর সে তা গোপন করে? এবং খোদা তোমাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অনবগত নন।’
تِلكَ أُمَّةٌ قَد خَلَت لَها ما كَسَبَت وَلَكُم ما كَسَبتُم وَلا تُسـَٔلونَ عَمّا كانوا يَعمَلونَ
2:141 সেই   একটা জনগোষ্ঠী,   যারা  গত হয়েছে। তাদের জন্য    তাদের অর্জিত বস্তু আর তোমাদের জন্য  তোমাদের   অর্জিত   বস্তু। আর  তাদের কর্মসমূহ   সম্পর্কে  তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে না।
سَيَقولُ السُّفَهاءُ مِنَ النّاسِ ما وَلّىٰهُم عَن قِبلَتِهِمُ الَّتى كانوا عَلَيها قُل لِلَّهِ المَشرِقُ وَالمَغرِبُ يَهدى مَن يَشاءُ إِلىٰ صِرٰطٍ مُستَقيمٍ
2:142  এখন বলবে  নির্বোধ   লোকেরা, ‘কে ফিরিয়ে  দিলো মুসলমানদেরকে তাদের সেই ক্বিবলা  থেকে,  যার  উপর  (তারা) ছিলো?’   আপনি  বলে দিন, ‘পূর্ব-পশ্চিম  সব   আল্লাহ্‌রই। তিনি যাকে চান সোজা পথে পরিচালিত করেন।’
وَكَذٰلِكَ جَعَلنٰكُم أُمَّةً وَسَطًا لِتَكونوا شُهَداءَ عَلَى النّاسِ وَيَكونَ الرَّسولُ عَلَيكُم شَهيدًا وَما جَعَلنَا القِبلَةَ الَّتى كُنتَ عَلَيها إِلّا لِنَعلَمَ مَن يَتَّبِعُ الرَّسولَ مِمَّن يَنقَلِبُ عَلىٰ عَقِبَيهِ وَإِن كانَت لَكَبيرَةً إِلّا عَلَى الَّذينَ هَدَى اللَّهُ وَما كانَ اللَّهُ لِيُضيعَ إيمٰنَكُم إِنَّ اللَّهَ بِالنّاسِ لَرَءوفٌ رَحيمٌ
2:143 এবং কথা হলো এরূপই যে, আমি তোমাদেরকে সব উম্মতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ করেছি, যাতে তোমরা মানবজাতির উপর সাক্ষী হও। আর এ রসূল তোমাদের রক্ষক ও সাক্ষী; এবং হে  মাহবুব!  আপনি  ইতিপূর্বে  যে  ক্বিবলার  উপর  ছিলেন,  আমি  সেটাকে  এজন্যই  নির্দ্ধারণ  করেছিলাম  যেন  দেখি-কে রসূলের অনুসরণ  করছে (আর)   কে  উল্টো    পায়ে ফিরে  যাচ্ছে। এবং   নিশ্চয়   এটা   কঠিন   ছিলো,   কিন্তু   তাদের   উপর   কঠিন   ছিলো   না   যাদেরকে   আল্লাহ্‌  হিদায়ত   করেছেন। আর আল্লাহ্‌র জন্য এটা শোভা পায় না যে,   তিনি তোমাদের  ঈমানকে  ব্যর্থ করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মানুষের উপর অত্যন্ত দয়ার্দ্র, দয়ালু।
قَد نَرىٰ تَقَلُّبَ وَجهِكَ فِى السَّماءِ فَلَنُوَلِّيَنَّكَ قِبلَةً تَرضىٰها فَوَلِّ وَجهَكَ شَطرَ المَسجِدِ الحَرامِ وَحَيثُ ما كُنتُم فَوَلّوا وُجوهَكُم شَطرَهُ وَإِنَّ الَّذينَ أوتُوا الكِتٰبَ لَيَعلَمونَ أَنَّهُ الحَقُّ مِن رَبِّهِم وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمّا يَعمَلونَ
2:144  আমি  লক্ষ্য করছি বারবার  আপনার আসমানের দিকে  তাকানো। সুতরাং অবশ্যই আমি  আপনাকে ফিরিয়ে দেবো সেই ক্বিবলার দিকে, যাতে  আপনার সন্তুষ্টি  রয়েছে। এখনই আপন মুখ ফিরিয়ে নিন মসজিদে হারামের দিকে; এবং  হে মুসলমানগণ! তোমরা যেখানেই থাকো স্বীয় মুখ সেটার দিকে ফিরাও। আর ওই সব লোক, যারা কিতাব প্রাপ্ত হয়েছে, তারা নিশ্চয়  জানে যে, এটা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং  আল্লাহ্‌ তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অনবগত নন।
وَلَئِن أَتَيتَ الَّذينَ أوتُوا الكِتٰبَ بِكُلِّ ءايَةٍ ما تَبِعوا قِبلَتَكَ وَما أَنتَ بِتابِعٍ قِبلَتَهُم وَما بَعضُهُم بِتابِعٍ قِبلَةَ بَعضٍ وَلَئِنِ اتَّبَعتَ أَهواءَهُم مِن بَعدِ ما جاءَكَ مِنَ العِلمِ إِنَّكَ إِذًا لَمِنَ الظّٰلِمينَ
2:145 এবং যদি  আপনি  সেই কিতাবীদের   নিকট   সমস্ত   নির্দশন  নিয়ে আসেন,   (তবুও) তারা  আপনার   ক্বিবলার     অনুসরণ  করবে  না   এবং   না  আপনি  তাদের   ক্বিবলার    অনুসরণ  করবেন-  এবং  তারা  পরষ্পরের মধ্যেও   একে  অপরের  ক্বিবলার  অনুসারী নয়;  এবং (ওহে শ্রোতা! যেই হওনা কেন) যদি তুমি তাদের খেয়াল-খুশির উপর চলো, এর পরে যে, তোমার নিকট জ্ঞান আসার পর, তবে তখন তুমি অবশ্যই যালিম হবে।
الَّذينَ ءاتَينٰهُمُ الكِتٰبَ يَعرِفونَهُ كَما يَعرِفونَ أَبناءَهُم وَإِنَّ فَريقًا مِنهُم لَيَكتُمونَ الحَقَّ وَهُم يَعلَمونَ
2:146 যাদেরকে কিতাব দান করেছি তারা এ নবীকে এমনিভাবে চিনে যেমন মানুষ তার পুত্রদের চিনে এবং নিশ্চয়ই তাদের একটা দল জেনে বুঝে সত্য গোপন করে।
الحَقُّ مِن رَبِّكَ فَلا تَكونَنَّ مِنَ المُمتَرينَ
2:147 (হে  শ্রোতা!) এটা  সত্য তোমাদের  রবের তরফ থেকে  (অথবা   সত্য হচ্ছে ওটাই, যা তোমার রবের নিকট থেকে আসে)। সুতরাং হুশিয়ার! তুমি সন্দেহ করোনা।
وَلِكُلٍّ وِجهَةٌ هُوَ مُوَلّيها فَاستَبِقُوا الخَيرٰتِ أَينَ ما تَكونوا يَأتِ بِكُمُ اللَّهُ جَميعًا إِنَّ اللَّهَ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ
2:148   এবং  প্রত্যেকের  জন্য  মুখ   করার  একটা  দিক   রয়েছে  যে  দিকে  সে   মুখ  করে। সুতরাং এটা চাও যে, সৎ কার্যাবলীতে অন্যদের থেকে এগিয়ে চলে যাবে। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন, আল্লাহ্‌ তোমাদের সবাইকে একত্রিত করে আনবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ যা চান, করেন।
وَمِن حَيثُ خَرَجتَ فَوَلِّ وَجهَكَ شَطرَ المَسجِدِ الحَرامِ وَإِنَّهُ لَلحَقُّ مِن رَبِّكَ وَمَا اللَّهُ بِغٰفِلٍ عَمّا تَعمَلونَ
2:149 এবং যেখান  থেকে আসো আপন   মুখ মসজিদে হারামের দিকে   ফিরাও এবং  তা  নিশ্চয়ই তোমার রবের পক্ষ থেকে সত্য। এবং  আল্লাহ্‌ তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে অনবগত  নন।
وَمِن حَيثُ خَرَجتَ فَوَلِّ وَجهَكَ شَطرَ المَسجِدِ الحَرامِ وَحَيثُ ما كُنتُم فَوَلّوا وُجوهَكُم شَطرَهُ لِئَلّا يَكونَ لِلنّاسِ عَلَيكُم حُجَّةٌ إِلَّا الَّذينَ ظَلَموا مِنهُم فَلا تَخشَوهُم وَاخشَونى وَلِأُتِمَّ نِعمَتى عَلَيكُم وَلَعَلَّكُم تَهتَدونَ
2:150 এবং হে  মাহবুব! আপনি  যেখান থেকেই  আসুন  না   কেন আপনার মুখ  মসজিদে  হারামের দিকে ফিরান। এবং হে মুসলমানগণ! তোমরা যেখানে থাকো না কেন, আপন মুখ সেটারই  দিকে  করো,  যাতে   তোমাদের   বিরুদ্ধে   লোকদের  কোন   বিতর্ক   না    থাকে;  কিন্তু  তাদের মধ্যে যারা অবিচার করে, তবে তাদেরকে ভয় করো না এবং আমাকেই ভয় করো। আর    এটা  এ  জন্যই   যে,  আমি   আমার  অনুগ্রহ  তোমাদের  উপর  পূর্ণ  করবো   এবং  কোন প্রকারে তোমরা সঠিক পথের দিশা পাও।
كَما أَرسَلنا فيكُم رَسولًا مِنكُم يَتلوا عَلَيكُم ءايٰتِنا وَيُزَكّيكُم وَيُعَلِّمُكُمُ الكِتٰبَ وَالحِكمَةَ وَيُعَلِّمُكُم ما لَم تَكونوا تَعلَمونَ
2:151 যেমন আমি তোমাদের মধ্যে প্রেরণ  করেছি একজন রসূল  তোমাদের  মধ্য থেকে, যিনি   তোমাদের  উপর  আমার আয়াতগুলো তেলাওয়াত  করেন,  তোমাদেরকে  পবিত্র করেন এবং কিতাব ও পরিপক্ক জ্ঞান শিক্ষা দেন। আর তোমাদের ওই শিক্ষা দান করেন, যার জ্ঞান তোমাদের ছিলো না।
فَاذكُرونى أَذكُركُم وَاشكُروا لى وَلا تَكفُرونِ
2:152 সুতরাং আমার স্মরণ করো, আমিও তোমাদের চর্চা  করবো আর   আমার কৃতজ্ঞতা  স্বীকার করো এবং আমার অকৃতজ্ঞ হয়ো না।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنُوا استَعينوا بِالصَّبرِ وَالصَّلوٰةِ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصّٰبِرينَ
2:153    হে    ঈমানদারগণ!    সবর    ও    নামাযের    মাধ্যমে    সাহায্য    চাও।    নিশ্চয়    আল্লাহ্‌  সবরকারীদের সাথে রয়েছেন।
وَلا تَقولوا لِمَن يُقتَلُ فى سَبيلِ اللَّهِ أَموٰتٌ بَل أَحياءٌ وَلٰكِن لا تَشعُرونَ
2:154 এবং যারা আল্লাহ্‌র  পথে নিহত হয় তাদেরকে মৃত  বলো   না;  বরং তারা জীবিত; হাঁ, তোমাদের খবর নেই।
وَلَنَبلُوَنَّكُم بِشَيءٍ مِنَ الخَوفِ وَالجوعِ وَنَقصٍ مِنَ الأَموٰلِ وَالأَنفُسِ وَالثَّمَرٰتِ وَبَشِّرِ الصّٰبِرينَ
2:155 এবং অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধন-সম্পদ,     জীবন     ও     ফল-ফসলের     ঘাটতি     দ্বারা।     এবং     সুসংবাদ     শুনাও     ওই     সব  সবরকারীদেরকে;
الَّذينَ إِذا أَصٰبَتهُم مُصيبَةٌ قالوا إِنّا لِلَّهِ وَإِنّا إِلَيهِ رٰجِعونَ
2:156 যারা  হচ্ছে (এমন লোক)  যে, যখন তাদের   উপর    কোন বিপদ   এসে পড়ে তখন বলে,   ‘আমরা  তো  আল্লাহ্‌রই   মালিকানাধীন   এবং  আমাদেরকে   তাঁরই  প্রতি    ফিরে  যেতে   হবে।’
أُولٰئِكَ عَلَيهِم صَلَوٰتٌ مِن رَبِّهِم وَرَحمَةٌ وَأُولٰئِكَ هُمُ المُهتَدونَ
2:157  এসব  লোক  হচ্ছে  তারাই,    যাদের  উপর   তাদের  রবের  দরুদসমূহ  এবং  রহমত বর্ষিত হয়। আর এসব লোকই সঠিক পথের উপর প্রতিষ্ঠিত।
إِنَّ الصَّفا وَالمَروَةَ مِن شَعائِرِ اللَّهِ فَمَن حَجَّ البَيتَ أَوِ اعتَمَرَ فَلا جُناحَ عَلَيهِ أَن يَطَّوَّفَ بِهِما وَمَن تَطَوَّعَ خَيرًا فَإِنَّ اللَّهَ شاكِرٌ عَليمٌ
2:158 নিশ্চয়  ‘সাফা’ ও ‘মারওয়া’ আল্লাহ্‌র নিদর্শনগুলোর   অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং যে  কেউ এ ঘরের  হজ্জ্‌  কিংবা  ওমরাহ  সম্পন্ন  করে,  তার  উপর  কোন   গুনাহ   নেই-  এ  দু’টি    প্রদক্ষিণ করায়;    এবং    যে     কেউ     কোন    সৎকর্ম    স্বতঃস্ফূর্তভাবে    করবে,    তবে    আল্লাহ্‌    সৎকর্মের  পুরষ্কারদাতা, সর্বজ্ঞ।
إِنَّ الَّذينَ يَكتُمونَ ما أَنزَلنا مِنَ البَيِّنٰتِ وَالهُدىٰ مِن بَعدِ ما بَيَّنّٰهُ لِلنّاسِ فِى الكِتٰبِ أُولٰئِكَ يَلعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلعَنُهُمُ اللّٰعِنونَ
2:159 নিশ্চয়  ওই সব   লোক, যারা আমার নাযিলকৃত সুস্পষ্ট  বার্তাগুলো    ও    হিদায়তকে গোপন  করে   এর  পরে  যে,  মানুষের   জন্য  আমি  সেটা  কিতাবের  মধ্যে   সুস্পষ্টভাবে  ব্যক্ত করেছি, তাদের উপর আল্লাহ্‌র অভিশাপ রয়েছে এবং অভিশম্পাতকারীদের অভিশম্পাতও।
إِلَّا الَّذينَ تابوا وَأَصلَحوا وَبَيَّنوا فَأُولٰئِكَ أَتوبُ عَلَيهِم وَأَنَا التَّوّابُ الرَّحيمُ
2:160 কিন্তু ওই  সব   লোক, যারা তাওবা করে,  সংশোধন করে এবং সুস্পষ্টরুপে প্রকাশ করে, তবে   আমি তার তাওবা  কবুল  করবো এবং আমিই হলাম   মহান  তাওবা কবূলকারী,  দয়ালু।
إِنَّ الَّذينَ كَفَروا وَماتوا وَهُم كُفّارٌ أُولٰئِكَ عَلَيهِم لَعنَةُ اللَّهِ وَالمَلٰئِكَةِ وَالنّاسِ أَجمَعينَ
2:161 নিশ্চয় ঐসব    লোক,  যারা  কুফর করেছে এবং কাফির অবস্থায়  মৃত্যুবরণ  করেছে, তাদের উপর অভিশম্পাত রয়েছে- আল্লাহ্‌, ফিরিশ্‌তাকুল এবং মানবকুল- সবারই।
خٰلِدينَ فيها لا يُخَفَّفُ عَنهُمُ العَذابُ وَلا هُم يُنظَرونَ
2:162 তারা  তাতে স্থায়ীভাবে  থাকবে।  না  তাদের  উপর  থেকে শাস্তি লঘু  করা হবে,  না তাদেরকে কোন বিরাম দেয়া হবে।
وَإِلٰهُكُم إِلٰهٌ وٰحِدٌ لا إِلٰهَ إِلّا هُوَ الرَّحمٰنُ الرَّحيمُ
2:163   এবং তোমাদের   মা’বূদ হলেন একমাত্র মা’বূদ। তিনি  ব্যতীত অন্য কোন   মা’বূদ নেই; কিন্তু তিনিই মহান দয়ালু, করুণাময়।
إِنَّ فى خَلقِ السَّمٰوٰتِ وَالأَرضِ وَاختِلٰفِ الَّيلِ وَالنَّهارِ وَالفُلكِ الَّتى تَجرى فِى البَحرِ بِما يَنفَعُ النّاسَ وَما أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ السَّماءِ مِن ماءٍ فَأَحيا بِهِ الأَرضَ بَعدَ مَوتِها وَبَثَّ فيها مِن كُلِّ دابَّةٍ وَتَصريفِ الرِّيٰحِ وَالسَّحابِ المُسَخَّرِ بَينَ السَّماءِ وَالأَرضِ لَءايٰتٍ لِقَومٍ يَعقِلونَ
2:164 নিশ্চয় আস্‌মানগুলো ও যমীনের সৃষ্টি, রাত ও দিনের নিয়মিত পরিবর্তন, জলযান- যা সমুদ্রের  মানুষের উপকার নিয়ে বিচরণ করে এবং আল্লাহ্‌ তা’আলা আস্‌মান  থেকে যেই পানি বর্ষন     করেন তা দ্বারা  মৃত যমীনকে পুনর্জীবিত করেছেন ও যমীনে  প্রত্যেক  প্রকারের জীবজন্তু  বিস্তার  করেছেন,  বিভিন্ন    বায়ুর  দিক  পরিবর্তন   এবং   সে-ই  মেঘ  যা  আস্‌মান  ও যমীনের মাঝখানে হুকুমের নিয়ন্ত্রনাধীন - এ সবের মধ্যে জ্ঞানবান লোকদের  জন্য অবশ্যই সমূহ নির্দশন রয়েছে।
وَمِنَ النّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دونِ اللَّهِ أَندادًا يُحِبّونَهُم كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذينَ ءامَنوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ وَلَو يَرَى الَّذينَ ظَلَموا إِذ يَرَونَ العَذابَ أَنَّ القُوَّةَ لِلَّهِ جَميعًا وَأَنَّ اللَّهَ شَديدُ العَذابِ
2:165 এবং কিছু লোক আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য উপাস্য সাব্যস্ত করে নেয়, যাদেরকে (তারা) আল্লাহ্‌র মতো ভালবাসে  এবং ঈমানদারদের অন্তরে  আল্লাহ্‌র  ন্যায় কারো  ভালবাসা   নেই। আর  কেমন  (অবস্থা)    হবে  যদি  যালিমগণ  দেখে  ওই  সময়,  যখন   আযাব  তাদের  চোখের সামনেই এসে পড়বে? এ জন্যই যে, সমস্ত শক্তি আল্লাহ্‌রই এবং এজন্যই যে, আল্লাহ্‌র শাস্তি অত্যন্ত কঠিন।
إِذ تَبَرَّأَ الَّذينَ اتُّبِعوا مِنَ الَّذينَ اتَّبَعوا وَرَأَوُا العَذابَ وَتَقَطَّعَت بِهِمُ الأَسبابُ
2:166  যখন নেতৃবৃন্দ  তাদের অনুসারীদের প্রতি   অসন্তুষ্ট হবে আর  আযাব দেখতে পাবে আর ছিন্ন হয়ে যাবে তাদের সম্পর্কের সমস্ত বন্ধন,
وَقالَ الَّذينَ اتَّبَعوا لَو أَنَّ لَنا كَرَّةً فَنَتَبَرَّأَ مِنهُم كَما تَبَرَّءوا مِنّا كَذٰلِكَ يُريهِمُ اللَّهُ أَعمٰلَهُم حَسَرٰتٍ عَلَيهِم وَما هُم بِخٰرِجينَ مِنَ النّارِ
2:167 এবং  অনুসারীরা বলবে, ‘যদি আমাদের পুনরায় ফিরে যাওয়া (সম্ভব) হতো, তবে আমরাও    তাদের   সাথে   সম্পর্ক    ছিন্ন   করতাম-যেমন   তারা    আমাদের     সাথে   সম্পর্ক   ছিন্ন করেছে। এভাবেই আল্লাহ্‌ তাদেরকে  দেখাবেন তাদের  কার্যাবলী তাদের পরিতাপরুপে আর তারা দোযখ থেকে কখনো বের হবার নয়।
يٰأَيُّهَا النّاسُ كُلوا مِمّا فِى الأَرضِ حَلٰلًا طَيِّبًا وَلا تَتَّبِعوا خُطُوٰتِ الشَّيطٰنِ إِنَّهُ لَكُم عَدُوٌّ مُبينٌ
2:168 হে মানবজাতি! তোমরা আহার করো যা কিছু যমীনে হালাল,  পবিত্র  রয়েছে এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
إِنَّما يَأمُرُكُم بِالسّوءِ وَالفَحشاءِ وَأَن تَقولوا عَلَى اللَّهِ ما لا تَعلَمونَ
2:169  সে  তোমাদেরকে  কেবল   মন্দ  ও  অশ্লীল  কাজের  নির্দেশ  দেবে  এবং  এরও   যে, আল্লাহ্‌ সম্বন্ধে এমন সব কথাবার্তা রচনা করো, যে সম্বন্ধে তোমাদের খবর নেই।
وَإِذا قيلَ لَهُمُ اتَّبِعوا ما أَنزَلَ اللَّهُ قالوا بَل نَتَّبِعُ ما أَلفَينا عَلَيهِ ءاباءَنا أَوَلَو كانَ ءاباؤُهُم لا يَعقِلونَ شَيـًٔا وَلا يَهتَدونَ
2:170 এবং  যখন তাদেরকে বলা  হয়, ‘আল্লাহ্‌র অবতীর্ণ  (নির্দেশ) এর অনুসরণ করো!’  তখন     (তারা)     বলে,     ‘বরং      আমরা      তারই      অনুসরণ      করবো,      যার      উপর     আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে   পেয়েছি।’   যদিও  কি     তাদের    পিতৃপুরুষরা   না  কোন  বিবেক   রাখে,  না  হিদায়ত?
وَمَثَلُ الَّذينَ كَفَروا كَمَثَلِ الَّذى يَنعِقُ بِما لا يَسمَعُ إِلّا دُعاءً وَنِداءً صُمٌّ بُكمٌ عُمىٌ فَهُم لا يَعقِلونَ
2:171  এবং    কাফিরদের   উপমা  ওই  ব্যক্তির    মতো,   যে  ডাকে   এমন   কিছুকে,  যা   শুধু ডাক-হাঁক ছাড়া আর কিছুই শুনেনা- বধির, মূক, অন্ধ। সুতরাং তাদের বুঝশক্তি নেই।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا كُلوا مِن طَيِّبٰتِ ما رَزَقنٰكُم وَاشكُروا لِلَّهِ إِن كُنتُم إِيّاهُ تَعبُدونَ
2:172   হে  ঈমানদারগণ!  খাও,   আমার   প্রদত্ত  পবিত্র  বস্তগুলো   এবং  আল্লাহ্‌র  কৃতজ্ঞতা  প্রকাশ করো, যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করো।
إِنَّما حَرَّمَ عَلَيكُمُ المَيتَةَ وَالدَّمَ وَلَحمَ الخِنزيرِ وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيرِ اللَّهِ فَمَنِ اضطُرَّ غَيرَ باغٍ وَلا عادٍ فَلا إِثمَ عَلَيهِ إِنَّ اللَّهَ غَفورٌ رَحيمٌ
2:173 তিনি এ সবই তোমাদের উপর হারাম করেছেন- মড়া, রক্ত, শূকরের মাংস,  এবং  ওই পশু, যাকে আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কারো নাম দিয়ে যবেহ করা হয়েছে; সুতরাং যে ব্যক্তি অনন্যোপায় হয়, না এমন যে, একান্ত কামনার বশবর্তী  হয়ে আহার করে, আর এমনও নয় যে, প্রয়োজনের সীমা লংঘন করে, তবে তার গুনাহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
إِنَّ الَّذينَ يَكتُمونَ ما أَنزَلَ اللَّهُ مِنَ الكِتٰبِ وَيَشتَرونَ بِهِ ثَمَنًا قَليلًا أُولٰئِكَ ما يَأكُلونَ فى بُطونِهِم إِلَّا النّارَ وَلا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ يَومَ القِيٰمَةِ وَلا يُزَكّيهِم وَلَهُم عَذابٌ أَليمٌ
2:174 ঐসব  লোক, যারা    গোপন করে  আল্লাহ্‌র  অবতীর্ণ কিতাবকে এবং  এর  পরিবর্তে  হীন বিনিময় গ্রহণ করে, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করে; এবং আল্লাহ্‌ ক্বিয়ামতের দিন না  তাদের সাথে কথা    বলবেন  এবং  না তাদেরকে পবিত্র   করবেন; আর তাদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি (অবধারিত)।
أُولٰئِكَ الَّذينَ اشتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالهُدىٰ وَالعَذابَ بِالمَغفِرَةِ فَما أَصبَرَهُم عَلَى النّارِ
2:175 ওই  সব লোক, যারা   হিদায়তের পরিবর্তে    গোমরাহী   খরিদ করেছে  এবং  ক্ষমার  পরিবর্তে আযাবকে, তবে আগুনের উপর তাদের কি পর্যায়ের বরদাশ্‌ত শক্তি রয়েছে!
ذٰلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ نَزَّلَ الكِتٰبَ بِالحَقِّ وَإِنَّ الَّذينَ اختَلَفوا فِى الكِتٰبِ لَفى شِقاقٍ بَعيدٍ
2:176    এটা    এজন্যই   যে,    আল্লাহ্‌   কিতাবকে   সত্য    সহকারে   নাযিল   করেছেন;    এবং  নিঃসন্দেহে যে সব  লোক  কিতাব সম্বন্ধে বিরোধ  সৃষ্টি করছে, নিশ্চয়ই তারা চূড়ান্ত  পর্যায়ের ঝগড়াটে।
لَيسَ البِرَّ أَن تُوَلّوا وُجوهَكُم قِبَلَ المَشرِقِ وَالمَغرِبِ وَلٰكِنَّ البِرَّ مَن ءامَنَ بِاللَّهِ وَاليَومِ الءاخِرِ وَالمَلٰئِكَةِ وَالكِتٰبِ وَالنَّبِيّۦنَ وَءاتَى المالَ عَلىٰ حُبِّهِ ذَوِى القُربىٰ وَاليَتٰمىٰ وَالمَسٰكينَ وَابنَ السَّبيلِ وَالسّائِلينَ وَفِى الرِّقابِ وَأَقامَ الصَّلوٰةَ وَءاتَى الزَّكوٰةَ وَالموفونَ بِعَهدِهِم إِذا عٰهَدوا وَالصّٰبِرينَ فِى البَأساءِ وَالضَّرّاءِ وَحينَ البَأسِ أُولٰئِكَ الَّذينَ صَدَقوا وَأُولٰئِكَ هُمُ المُتَّقونَ
2:177 কোন মৌলিক পূণ্য এ নয় যে, পূর্ব কিংবা  পশ্চিম   দিকে মুখ করবে;  হাঁ,  মৌলিক পূণ্য   হলো      এ     যে,     ঈমান   আনবে-   আল্লাহ্‌,   ক্বিয়ামত-দিবস,   ফিরিশ্‌তাগণ,    কিতাব   ও নবীগণের     উপর    এবং   আল্লাহ্‌র   প্রেমে    আপন   প্রিয়    সম্পদ     দান   করবে    আত্মীয়-স্বজন, এতিমগণ,   মিসকীনগণ,    মুসাফির    ও   সাহায্য   প্রার্থীদেরকে    আর    গর্দানসমূহ   (গোলাম   ও বন্দীদের)  মুক্তকরণে;  এবং  নামায  কায়েম   রাখবে  ও  যাকাত  প্রদান   করবে।  আর  আপন প্রতিশ্রুতি  পূরণকারীরা    যখন   অঙ্গীকার  করে  এবং  বিপদে,   সংকটে   এবং  জিহাদের  সময়  ধৈর্যধারণকারীরা। এরাই হচ্ছে-  ওই সব লোক, যারা আপন  কথা সত্য প্রমাণ করেছে  এবং এরাই হচ্ছে খোদাভীরু।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا كُتِبَ عَلَيكُمُ القِصاصُ فِى القَتلَى الحُرُّ بِالحُرِّ وَالعَبدُ بِالعَبدِ وَالأُنثىٰ بِالأُنثىٰ فَمَن عُفِىَ لَهُ مِن أَخيهِ شَيءٌ فَاتِّباعٌ بِالمَعروفِ وَأَداءٌ إِلَيهِ بِإِحسٰنٍ ذٰلِكَ تَخفيفٌ مِن رَبِّكُم وَرَحمَةٌ فَمَنِ اعتَدىٰ بَعدَ ذٰلِكَ فَلَهُ عَذابٌ أَليمٌ
2:178 হে ঈমানদারগণ! তোমাদের   উপর   ফরয   যে, যাদেরকে  অন্যায়ভাবে   হত্যা  করা হয়েছে  তাদের খুনের বদলা নেবে- আযাদের বদলে  আযাদ,   ক্রীতদাসের   বদলে ক্রীতদাস এবং নারীর  বদলে  নারী। সুতরাং যার   প্রতি  তার ভাইয়ের পক্ষ  থেকে কিছু  ক্ষমা  (প্রদর্শন   করা)  হয়েছে,  তাহলে  উত্তমভাবে  তলব  করা  এবং  সুন্দরভাবে   আদায়  করা  বিধেয়।   এটা হচ্ছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের বোঝা হাল্কা করা এবং তোমাদের উপর দয়া। অতঃপর, এর পরে যে সীমা লংঘন করবে তার জন্য বেদানাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
وَلَكُم فِى القِصاصِ حَيوٰةٌ يٰأُولِى الأَلبٰبِ لَعَلَّكُم تَتَّقونَ
2:179    এবং    খুনের    বদলা     নেওয়ার     মধ্যে    তোমাদের    জীবন    (নিহিত)     রয়েছে,    হে বিবেকসম্পন্ন লোকেরা! যেন তোমরা কোন প্রকারে বাঁচতে পারো।
كُتِبَ عَلَيكُم إِذا حَضَرَ أَحَدَكُمُ المَوتُ إِن تَرَكَ خَيرًا الوَصِيَّةُ لِلوٰلِدَينِ وَالأَقرَبينَ بِالمَعروفِ حَقًّا عَلَى المُتَّقينَ
2:180 তোমাদের  উপর ফরয  করা হয়েছে  যে, যখন তোমাদের মধ্যে কারো নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়,  যদি সে কোন ধন-সম্পদ রেখে যায়, তবে  যেন  ‘ওসীয়ত’  করে  যায়-  আপন পিতা-মাতা     ও      নিকটাত্মীয়দের       জন্য,     প্রচলিত      নিয়ম      মোতাবেক।      এটা       অপরিহার্য খোদাভীরুদের জন্য।
فَمَن بَدَّلَهُ بَعدَما سَمِعَهُ فَإِنَّما إِثمُهُ عَلَى الَّذينَ يُبَدِّلونَهُ إِنَّ اللَّهَ سَميعٌ عَليمٌ
2:181  সুতরাং  যে  ব্যক্তি  ওসীয়ত  শ্রবণ  করার  পর  পরিবর্তন  সাধন  করে,  তবে  সেটার  গুনাহ সেসব পরিবর্তনকারীদের উপরিই বর্তাবে। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ শ্রোতা, জ্ঞাতা।
فَمَن خافَ مِن موصٍ جَنَفًا أَو إِثمًا فَأَصلَحَ بَينَهُم فَلا إِثمَ عَلَيهِ إِنَّ اللَّهَ غَفورٌ رَحيمٌ
2:182 তারপর   যে   ব্যক্তি  এ   আশংকা  বোধ  করে  যে, ওসীয়তকারী কিছু  অন্যায় কিংবা পাপ করেছে, অতঃপর সে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিলে, তার উপর কোন গুনাহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا كُتِبَ عَلَيكُمُ الصِّيامُ كَما كُتِبَ عَلَى الَّذينَ مِن قَبلِكُم لَعَلَّكُم تَتَّقونَ
2:183  হে  ঈমানদারগণ!  তোমাদের  উপর  রোযা  ফরয  করা  হয়েছে  যেমন  পূর্ববর্তীদের  উপর ফরয হয়েছিল, যাতে তোমাদের পরহেয্‌গারী অর্জিত হয় ;
أَيّامًا مَعدودٰتٍ فَمَن كانَ مِنكُم مَريضًا أَو عَلىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِن أَيّامٍ أُخَرَ وَعَلَى الَّذينَ يُطيقونَهُ فِديَةٌ طَعامُ مِسكينٍ فَمَن تَطَوَّعَ خَيرًا فَهُوَ خَيرٌ لَهُ وَأَن تَصوموا خَيرٌ لَكُم إِن كُنتُم تَعلَمونَ
2:184   গণনাকৃত    দিনসমূহ।  সুতরাং   তোমাদের  মধ্যে  যে  কেউ  রুগ্ন  হও  কিংবা  সফরে থাকো, অতঃপর ততোসংখ্যক রোযা অন্যান্য দিন-সমূহে। আর যাদের মধ্যে এর সামর্থ্য না থাকে  তারা এর  বিনিময়ে (ফিদিয়া)  দেবে   একজন মিসকীনের  খাবার। অতঃপর যে  ব্যক্তি  নিজ থেকে সৎকর্ম অধিক করবে তবে তা তার জন্য উত্তম এবং রোযা রাখা তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর যদি তোমরা জানো।
شَهرُ رَمَضانَ الَّذى أُنزِلَ فيهِ القُرءانُ هُدًى لِلنّاسِ وَبَيِّنٰتٍ مِنَ الهُدىٰ وَالفُرقانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهرَ فَليَصُمهُ وَمَن كانَ مَريضًا أَو عَلىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِن أَيّامٍ أُخَرَ يُريدُ اللَّهُ بِكُمُ اليُسرَ وَلا يُريدُ بِكُمُ العُسرَ وَلِتُكمِلُوا العِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلىٰ ما هَدىٰكُم وَلَعَلَّكُم تَشكُرونَ
2:185  রমযানের মাস,  যাতে   ক্বোরআন অবতীর্ণ হয়েছে,  মানুষের জন্য হিদায়ত  ও  পথ নির্দেশ  এবং মীমাংসার সুস্পষ্ট বাণীসমূহ। সুতরাং  তোমাদের মধ্যে যে কেউ এ মাস পাবে, সে  যেন অবশ্যই  সেটার   রোযা পালন করে। আর  যে ব্যক্তি  রুগ্ন  হয়  কিংবা সফরে থাকে, তবে  ততোসংখ্যক   রোযা  অন্যান্য  দিনসমূহে।   আল্লাহ্‌  তোমাদের    উপর   সহজ   চান    এবং তোমাদের উপর ক্লেশ চান না; আর এ জন্য যে, তোমরা সংখ্যা পূরণ করবে এবং আল্লাহ্‌র মহিমা    বর্ণনা    করবে    এর   উপর  যে,   তিনি    তোমাদেরকে  হিদায়ত   করেছেন।  আর  যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও।
وَإِذا سَأَلَكَ عِبادى عَنّى فَإِنّى قَريبٌ أُجيبُ دَعوَةَ الدّاعِ إِذا دَعانِ فَليَستَجيبوا لى وَليُؤمِنوا بى لَعَلَّهُم يَرشُدونَ
2:186 এবং  হে মাহবুব! যখন আপনাকে আমার বান্দাগণ   আমার সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা  করে, আমি  তো  নিকটেই   আছি;   প্রার্থনা   গ্রহণ  করি  আহ্বানকারীর    যখন  আমাকে  আহ্বান   করে। সুতরাং তাদের উচিৎ যেন আমার নির্দেশ মান্য করে এবং আমার উপর ঈমান  আনে, যাতে পথের দিশা পায়।
أُحِلَّ لَكُم لَيلَةَ الصِّيامِ الرَّفَثُ إِلىٰ نِسائِكُم هُنَّ لِباسٌ لَكُم وَأَنتُم لِباسٌ لَهُنَّ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُم كُنتُم تَختانونَ أَنفُسَكُم فَتابَ عَلَيكُم وَعَفا عَنكُم فَالـٰٔنَ بٰشِروهُنَّ وَابتَغوا ما كَتَبَ اللَّهُ لَكُم وَكُلوا وَاشرَبوا حَتّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الخَيطُ الأَبيَضُ مِنَ الخَيطِ الأَسوَدِ مِنَ الفَجرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيامَ إِلَى الَّيلِ وَلا تُبٰشِروهُنَّ وَأَنتُم عٰكِفونَ فِى المَسٰجِدِ تِلكَ حُدودُ اللَّهِ فَلا تَقرَبوها كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ ءايٰتِهِ لِلنّاسِ لَعَلَّهُم يَتَّقونَ
2:187 রোযার রাতগুলোতে আপন স্ত্রীদের নিকটে যাওয়া তোমাদের জন্য হালাল হয়েছে; তারা  তোমাদের    পোশাক  এবং  তোমরা  তাদের  পোশাক।   আল্লাহ্‌   জেনেছেন  যে,  তোমরা নিজেদের   আত্মাগুলোকে  অবিশ্বস্ততার   মধ্যে   ফেলেছিলে,   অতঃপর  তিনি  তোমাদের  তওবা কবুল  করেছেন  এবং   তোমাদেরকে  ক্ষমা  করেছেন।   সুতরাং    এখন  তোমরা  তাদের   সাথে সঙ্গত    হও;  এবং   তালাশ   করো-    আল্লাহ্‌  যা   তোমাদের   ভাগ্যে  লিপিবদ্ধ  করেছেন;  এবং পানাহার করো এ পর্যন্ত যে, তোমাদের নিকট প্রকাশ পেয়ে যাবে শুভ্ররেখা কৃষ্ণরেখা থেকে, ভোর   হয়ে;  অতঃপর  রাত  আসা  পর্যন্ত  রোযাগুলো   সম্পূর্ণ   করো;  এবং  স্ত্রীদের  গায়ে  হাত লাগাবে না যখন তোমরা মসজিদগুলোতে ই’তিকাফরত থাকো। এগুলো আল্লাহ্‌র সীমারেখা, এগুলোর নিকটে যেওনা। আল্লাহ্‌ এভাবেই বর্ণনা করেন লোকদের জন্য আপন নির্দশনগুলো, যাতে তাদের পরহেয্‌গারী অর্জিত হয়।
وَلا تَأكُلوا أَموٰلَكُم بَينَكُم بِالبٰطِلِ وَتُدلوا بِها إِلَى الحُكّامِ لِتَأكُلوا فَريقًا مِن أَموٰلِ النّاسِ بِالإِثمِ وَأَنتُم تَعلَمونَ
2:188 এবং পরষ্পরের মধ্যে একে অপরের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস  করো না এবং না  বিচারকদের    নিকট তাদের মুকাদ্দমা এজন্য   পৌঁছাবে যে, লোকজনের  কিছু   ধন-সম্পদ অবৈধভাবে গ্রাস করে নেবে, জেনে-বুঝে।
يَسـَٔلونَكَ عَنِ الأَهِلَّةِ قُل هِىَ مَوٰقيتُ لِلنّاسِ وَالحَجِّ وَلَيسَ البِرُّ بِأَن تَأتُوا البُيوتَ مِن ظُهورِها وَلٰكِنَّ البِرَّ مَنِ اتَّقىٰ وَأتُوا البُيوتَ مِن أَبوٰبِها وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُم تُفلِحونَ
2:189 (হে  হাবীব!) আপনাকে  নতুন চাঁদ সম্পর্কে  (তারা) জিজ্ঞাসা করছে। আপনি   বলে দিন, ‘সেটা সময়ের কতগুলো প্রতীক, মানবজাতি ও হজ্জে্‌র জন্য। আর এটা কোন পূণ্যময় কাজ  নয় যে, গৃহগুলোর মধ্যে পেছনে দরজা কেটে   আসবে।  হাঁ,   পূণ্যতো খোদাভীরুতাই; এবং ঘরগুলোতে দরজা দিয়েই প্রবেশ করো।  আর আল্লাহ্‌কে ভয় করতে থাকো এ  আশায় যে, সাফল্য অর্জন করবে।’
وَقٰتِلوا فى سَبيلِ اللَّهِ الَّذينَ يُقٰتِلونَكُم وَلا تَعتَدوا إِنَّ اللَّهَ لا يُحِبُّ المُعتَدينَ
2:190 এবং আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করো   তাদের বিরুদ্ধে, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ  করে এবং সীমা অতিক্রম করো না। আল্লাহ্‌ পছন্দ করেন না সীমা অতিক্রমকারীদেরকে।
وَاقتُلوهُم حَيثُ ثَقِفتُموهُم وَأَخرِجوهُم مِن حَيثُ أَخرَجوكُم وَالفِتنَةُ أَشَدُّ مِنَ القَتلِ وَلا تُقٰتِلوهُم عِندَ المَسجِدِ الحَرامِ حَتّىٰ يُقٰتِلوكُم فيهِ فَإِن قٰتَلوكُم فَاقتُلوهُم كَذٰلِكَ جَزاءُ الكٰفِرينَ
2:191  এবং  কাফিরদেরকে  যেখানে  পাও  হত্যা   করো   এবং  তাদেরকে   বের  করে   দাও যেখান থেকে তোমাদেরকে তারা  বের করেছিলো। আর তাদের ফিৎনা  তো হত্যা অপেক্ষাও প্রচণ্ডতর  এবং  মসজিদে  হারামের  নিকট   তাদের  সাথে  যুদ্ধ  করো   না  যতক্ষণ  পর্যন্ত  তারা তোমাদের   সাথে   সেখানে   যুদ্ধ  না  করে।    আর   যদি   তোমাদের   বিরুদ্ধে   যুদ্ধ    করে,  তবে তাদেরকে হত্যা করো। কাফিরদের এটাই শাস্তি।
فَإِنِ انتَهَوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفورٌ رَحيمٌ
2:192 অতঃপর যদি তারা বিরত থাকে, তবে নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
وَقٰتِلوهُم حَتّىٰ لا تَكونَ فِتنَةٌ وَيَكونَ الدّينُ لِلَّهِ فَإِنِ انتَهَوا فَلا عُدوٰنَ إِلّا عَلَى الظّٰلِمينَ
2:193  এবং   তাদের  বিরুদ্ধে    যুদ্ধ  করো     যে   যাবৎ   কোন    ফিৎনা  না  থাকে   এবং   এক আল্লাহ্‌রই  ইবাদত  হতে  থাকে।  অতঃপর  যদি  তারা  বিরত  হয়,  তবে  আক্রমণ  নেই,  কিন্তু  যালিমদেরকে।
الشَّهرُ الحَرامُ بِالشَّهرِ الحَرامِ وَالحُرُمٰتُ قِصاصٌ فَمَنِ اعتَدىٰ عَلَيكُم فَاعتَدوا عَلَيهِ بِمِثلِ مَا اعتَدىٰ عَلَيكُم وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ مَعَ المُتَّقينَ
2:194 পবিত্র মাসের পরিবর্তে পবিত্র মাস এবং আদবের  পরিবর্তে আদব। যে তোমাদের উপর  আক্রমণ করবে  তাকে  (তোমরা) আক্রমণ করো   ততটুকুই, যতটুকু সে করেছে; এবং  আল্লাহ্‌কে ভয় করতে থাকো। আর জেনে রেখো- আল্লাহ্‌ খোদাভীরুদের সাথে রয়েছেন।
وَأَنفِقوا فى سَبيلِ اللَّهِ وَلا تُلقوا بِأَيديكُم إِلَى التَّهلُكَةِ وَأَحسِنوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ المُحسِنينَ
2:195 এবং  আল্লাহ্‌র  পথে ব্যয় করো  এবং নিজেদের হাতে ধ্বংসের  মধ্যে পতিত  হয়ো না এবং সৎকর্মপরায়ণ হয়ে যাও। নিশ্চয় সৎকর্মপরায়ণগণ আল্লাহ্‌র প্রিয়।
وَأَتِمُّوا الحَجَّ وَالعُمرَةَ لِلَّهِ فَإِن أُحصِرتُم فَمَا استَيسَرَ مِنَ الهَدىِ وَلا تَحلِقوا رُءوسَكُم حَتّىٰ يَبلُغَ الهَدىُ مَحِلَّهُ فَمَن كانَ مِنكُم مَريضًا أَو بِهِ أَذًى مِن رَأسِهِ فَفِديَةٌ مِن صِيامٍ أَو صَدَقَةٍ أَو نُسُكٍ فَإِذا أَمِنتُم فَمَن تَمَتَّعَ بِالعُمرَةِ إِلَى الحَجِّ فَمَا استَيسَرَ مِنَ الهَدىِ فَمَن لَم يَجِد فَصِيامُ ثَلٰثَةِ أَيّامٍ فِى الحَجِّ وَسَبعَةٍ إِذا رَجَعتُم تِلكَ عَشَرَةٌ كامِلَةٌ ذٰلِكَ لِمَن لَم يَكُن أَهلُهُ حاضِرِى المَسجِدِ الحَرامِ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ شَديدُ العِقابِ
2:196    এবং   হজ্জ্‌   ও   ওমরাহ্‌    আল্লাহ্‌র   উদ্দেশ্যে    পূর্ণ   করো।    অতঃপর    যদি    তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হও, তবে ক্বোরবানী প্রেরণ করো, যা সহজলভ্য হয় এবং আপন মস্তক মুণ্ডন করো না যতক্ষণ পর্যন্ত ক্বোরবানীর পশু আপন ঠিকানায় পৌঁছে না যায়। অতঃপর তোমাদের মধ্যে যে  ব্যক্তি  পীড়িত  হয়  কিংবা  তার  মাথায়  কিছু  ক্লেশ  থাকে,  তবে  তার  বিনিময়  (ফিদিয়া)  দেবে-  রোযা কিংবা সাদ্‌ক্বাহ্‌ অথবা   ক্বোরবানী।  অতঃপর  যখন  তোমরা   নিরাপদ  থাকবে,  তখন যে ব্যক্তি হজ্জে্‌র সাথে ওমরাহ্‌  মিলানোর ফায়দা  উঠায় তার উপর ক্বোরবানী  রয়েছে যেমনি সহজলভ্য  হয়; অতঃপর যার জন্য সম্ভবপর   না হয়,  তবে   সে তিনটা রোযা হজ্জে্‌র দিনগুলোতে রাখবে   এবং  সাতটা যখন আপন গৃহে ফিরে   যাবে-   এ পূর্ণ  দশটা   হলো।  এ  হুকুম  তারই   জন্য   যে  মক্কার বাসিন্দা নয়;   আর আল্লাহ্‌কে  ভয় করতে  থাকো  এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ্‌র শাস্তি কঠিন।
الحَجُّ أَشهُرٌ مَعلومٰتٌ فَمَن فَرَضَ فيهِنَّ الحَجَّ فَلا رَفَثَ وَلا فُسوقَ وَلا جِدالَ فِى الحَجِّ وَما تَفعَلوا مِن خَيرٍ يَعلَمهُ اللَّهُ وَتَزَوَّدوا فَإِنَّ خَيرَ الزّادِ التَّقوىٰ وَاتَّقونِ يٰأُولِى الأَلبٰبِ
2:197  হজ্জের  কতিপয়  মাস  রয়েছে,   সুবিদিত,  অতঃপর   যে  ব্যক্তি  এ  গুলোতে  হজ্জে্‌র নিয়ত  করে, তবে না  স্ত্রীদের  সামনে  সম্ভোগের   আলোচনা  করা  হবে,  না কোন গুনাহ্‌,  না কারো সাথে ঝগড়া হজ্জে্‌র সময় পর্যন্ত এবং তোমরা যে-ই উত্তম কাজ  করবে আল্লাহ্‌ সেটা জানেন; আর  পাথেয়  সঙ্গে নাও। যেহতু     সর্বাধিক  উত্তম পাথেয় হচ্ছে-  খোদাভীরুতা এবং আমাকে ভয় করতে থাকো, হে বিবেকবানগণ!
لَيسَ عَلَيكُم جُناحٌ أَن تَبتَغوا فَضلًا مِن رَبِّكُم فَإِذا أَفَضتُم مِن عَرَفٰتٍ فَاذكُرُوا اللَّهَ عِندَ المَشعَرِ الحَرامِ وَاذكُروهُ كَما هَدىٰكُم وَإِن كُنتُم مِن قَبلِهِ لَمِنَ الضّالّينَ
2:198   তোমাদের   উপর   কোন   গুনাহ্‌   নেই   যে,   আপন   রবের   অনুগ্রহ   সন্ধান   করবে।  কাজেই,      যখন      ‘আরাফাত’        থেকে     প্রর্ত্যাবর্তন     করবে      তখন     আল্লাহ্‌র      স্মরণ       করো ‘মাশ্‘আর-ই-হারাম’ (পবিত্র ও  সম্মানিত  স্থান) এর  নিকটে আর তাঁকে স্মরণ করো যেভাবে তিনি তোমাদেরকে হিদায়ত করেছেন এবং নিশ্চয় এর পূর্বে তোমরা বিভ্রান্ত ছিলে।
ثُمَّ أَفيضوا مِن حَيثُ أَفاضَ النّاسُ وَاستَغفِرُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ غَفورٌ رَحيمٌ
2:199 অতঃপর কথা হচ্ছে হে ক্বোরাঈশীগণ! তোমরাও সেই স্থান থেকে প্রর্ত্যাবর্তন করো যে  স্থান  থেকে  অন্যান্য  লোক   প্রর্ত্যাবর্তন  করে  এবং  আল্লাহ্‌র  নিকট  ক্ষমা   প্রার্থনা  করো। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, দয়াবান।
فَإِذا قَضَيتُم مَنٰسِكَكُم فَاذكُرُوا اللَّهَ كَذِكرِكُم ءاباءَكُم أَو أَشَدَّ ذِكرًا فَمِنَ النّاسِ مَن يَقولُ رَبَّنا ءاتِنا فِى الدُّنيا وَما لَهُ فِى الءاخِرَةِ مِن خَلٰقٍ
2:200  অতঃপর  যখন  (তোমরা)  আপন  হজ্জে্‌র   কাজ  পূর্ণ   করে  নাও,  তখন    আল্লাহ্‌কে স্মরণ এমনভাবে করো, যেমন আপন পিতা ও পিতামহকে স্মরণ করছিলে; বরং তদপেক্ষাও বেশী; এবং কিছু লোক এভাবে বলে, ‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়াতে দাও।’ আর পরকালে তার কোন অংশ নেই।
وَمِنهُم مَن يَقولُ رَبَّنا ءاتِنا فِى الدُّنيا حَسَنَةً وَفِى الءاخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنا عَذابَ النّارِ
2:201 আর কেউ এমন বলে, ‘হে আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ায় কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে আখিরাতে কল্যাণ দাও আর আমাদেরকে দোযখের আযাব থেকে রক্ষা করো।’
أُولٰئِكَ لَهُم نَصيبٌ مِمّا كَسَبوا وَاللَّهُ سَريعُ الحِسابِ
2:202 এমন লোকদের জন্য তাদের উপার্জন থেকে ভাগ রয়েছে এবং আল্লাহ্‌ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
وَاذكُرُوا اللَّهَ فى أَيّامٍ مَعدودٰتٍ فَمَن تَعَجَّلَ فى يَومَينِ فَلا إِثمَ عَلَيهِ وَمَن تَأَخَّرَ فَلا إِثمَ عَلَيهِ لِمَنِ اتَّقىٰ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعلَموا أَنَّكُم إِلَيهِ تُحشَرونَ
2:203 এবং আল্লাহ্‌কে স্মরণ করো গণনাকৃত দিনগুলোতে। অতঃপর যে ব্যক্তি তাড়াতাড়ি করে দু’দিনের মধ্যে চলে যায়, তার উপর কোন গুনাহ নেই আর যে  ব্যক্তি রয়ে যায়, তবে তারও গুনাহ নেই, খোদাভীরুর  জন্য এবং আল্লাহ্‌কে ভয় করতে থাকো। আর জেনে রেখো যে, তোমাদেরকে তাঁরই দিকে উঠতে হবে।
وَمِنَ النّاسِ مَن يُعجِبُكَ قَولُهُ فِى الحَيوٰةِ الدُّنيا وَيُشهِدُ اللَّهَ عَلىٰ ما فى قَلبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الخِصامِ
2:204 এবং কোন মানুষ এমনও আছে যে, পার্থিব  জীবনে তার কথাবার্তা তোমার নিকট ভালো   লাগবে   এবং   সে   আপন  অন্তরের  কথার   উপর   আল্লাহ্‌কে  সাক্ষী    আনে   এবং   সে   সবচেয়ে বেশী ঝগড়াটে।
وَإِذا تَوَلّىٰ سَعىٰ فِى الأَرضِ لِيُفسِدَ فيها وَيُهلِكَ الحَرثَ وَالنَّسلَ وَاللَّهُ لا يُحِبُّ الفَسادَ
2:205 এবং যখন সে পৃষ্ঠ ফেরায় তখন পৃথিবীতে ফ্যাসাদ ছড়িয়ে বেড়ায় এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণসমূহ বিনষ্ট করে। আর আল্লাহ্‌ ফ্যাসাদের প্রতি সন্তুষ্ট নন।
وَإِذا قيلَ لَهُ اتَّقِ اللَّهَ أَخَذَتهُ العِزَّةُ بِالإِثمِ فَحَسبُهُ جَهَنَّمُ وَلَبِئسَ المِهادُ
2:206 এবং যখন তাকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্‌কে ভয় করো;  তখন তার  গুনাহ্‌র জিদ্ আরো বৃদ্ধি পায়। এমন লোকদের জন্য দোযখই যথেষ্ট। আর সেটা নিশ্চয় অত্যন্ত মন্দ বিছানা।
وَمِنَ النّاسِ مَن يَشرى نَفسَهُ ابتِغاءَ مَرضاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ رَءوفٌ بِالعِبادِ
2:207  এবং   কোন   কোন    মানুষ  আপন  আপন   আত্মাকে  বিক্রি   করে  আল্লাহ্‌র     সন্তুষ্টির তালাশে। আর আল্লাহ্‌ বান্দাদের উপর দয়াবান।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنُوا ادخُلوا فِى السِّلمِ كافَّةً وَلا تَتَّبِعوا خُطُوٰتِ الشَّيطٰنِ إِنَّهُ لَكُم عَدُوٌّ مُبينٌ
2:208   হে   ঈমানদারগণ!   (তোমরা)   ইসলামে   পূর্ণরুপে     প্রবেশ   করো   এবং   শয়তানের পদাংকগুলোর উপর চলো না। নিঃসন্দেহে, সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
فَإِن زَلَلتُم مِن بَعدِ ما جاءَتكُمُ البَيِّنٰتُ فَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ عَزيزٌ حَكيمٌ
2:209 এবং যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে এরপরও যে, তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট নির্দেশ এসেছে, তবে জেনে রেখো যে, আল্লাহ্‌ মহা পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
هَل يَنظُرونَ إِلّا أَن يَأتِيَهُمُ اللَّهُ فى ظُلَلٍ مِنَ الغَمامِ وَالمَلٰئِكَةُ وَقُضِىَ الأَمرُ وَإِلَى اللَّهِ تُرجَعُ الأُمورُ
2:210 কিসের  প্রতীক্ষায় রয়েছে?   কিন্তু  এরই যে,  আল্লাহ্‌  তা’আলার শাস্তি  আসবে  ছেয়ে ফেলা মেঘের মধ্যে এবং ফিরিশ্‌তাগণ অবতীর্ণ হবে। আর কাজের ফয়সালা হয়ে গেছে এবং সমস্ত কাজের প্রর্ত্যাবর্তন আল্লাহ্‌রই দিকে।
سَل بَنى إِسرٰءيلَ كَم ءاتَينٰهُم مِن ءايَةٍ بَيِّنَةٍ وَمَن يُبَدِّل نِعمَةَ اللَّهِ مِن بَعدِ ما جاءَتهُ فَإِنَّ اللَّهَ شَديدُ العِقابِ
2:211 বনী ইস্রাঈলকে জিজ্ঞাসা করো আমি কতগুলো সুস্পষ্ট  নিদর্শনই তাদেরকে  প্রদান করেছি!   আর যে আল্লাহ্‌র  আগত   অনুগ্রহকে   পরিবর্তন করেছে,  তবে নিঃসন্দেহে   আল্লাহ্‌র শাস্তি কঠিন।
زُيِّنَ لِلَّذينَ كَفَرُوا الحَيوٰةُ الدُّنيا وَيَسخَرونَ مِنَ الَّذينَ ءامَنوا وَالَّذينَ اتَّقَوا فَوقَهُم يَومَ القِيٰمَةِ وَاللَّهُ يَرزُقُ مَن يَشاءُ بِغَيرِ حِسابٍ
2:212     কাফিরদের     দৃষ্টিতে     পার্থিব     জীবনকে     সুশোভিত     করা     হয়েছে     এবং     তারা  মুসলমানদেরকে  নিয়ে   ঠাট্টা-বিদ্রুপ  করে আর খোদাভীতিসম্পন্নরা  ক্বিয়ামত-দিবসে   তাদের ঊর্দ্ধে থাকবে এবং আল্লাহ্‌ যাকে চান অগণিত দান করেন।
كانَ النّاسُ أُمَّةً وٰحِدَةً فَبَعَثَ اللَّهُ النَّبِيّۦنَ مُبَشِّرينَ وَمُنذِرينَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ الكِتٰبَ بِالحَقِّ لِيَحكُمَ بَينَ النّاسِ فيمَا اختَلَفوا فيهِ وَمَا اختَلَفَ فيهِ إِلَّا الَّذينَ أوتوهُ مِن بَعدِ ما جاءَتهُمُ البَيِّنٰتُ بَغيًا بَينَهُم فَهَدَى اللَّهُ الَّذينَ ءامَنوا لِمَا اختَلَفوا فيهِ مِنَ الحَقِّ بِإِذنِهِ وَاللَّهُ يَهدى مَن يَشاءُ إِلىٰ صِرٰطٍ مُستَقيمٍ
2:213  লোকেরা  এই  দ্বীনের  উপর    ছিলো;  অতঃপর  আল্লাহ্‌  নবীগণকে  প্রেরণ  করেছেন  সুসংবাদদাতারুপে  ও  সতর্ককারীরুপে;  আর  তাঁদের   সাথে সত্য কিতাব অবতীর্ণ  করেছেন, যাতে  তা   লোকদের    মধ্যেকার  মতভেদগুলোর   মীমাংসা  করে   দেয়  এবং  কিতাবের   মধ্যে মতভেদ  তারাই  সৃষ্টি   করেছে,  যাদেরকে  তা     প্রদান  করা  হয়েছিলো  এর  পর  যে,  তাদের নিকট       সুস্পষ্ট      নিদর্শন      এসেছে       পরষ্পরের      অবাধ্যতার      কারণে।         অতঃপর      আল্লাহ্‌  ঈমানদারগণকে   ঐ  সত্য  বিষয়   দেখিয়ে  দিয়েছেন,   যা’তে  তারা  বিবাদ   করছিলো,  আপন নিদের্শে এবং আল্লাহ্‌ যাকে চান সরল পথ দেখান।
أَم حَسِبتُم أَن تَدخُلُوا الجَنَّةَ وَلَمّا يَأتِكُم مَثَلُ الَّذينَ خَلَوا مِن قَبلِكُم مَسَّتهُمُ البَأساءُ وَالضَّرّاءُ وَزُلزِلوا حَتّىٰ يَقولَ الرَّسولُ وَالَّذينَ ءامَنوا مَعَهُ مَتىٰ نَصرُ اللَّهِ أَلا إِنَّ نَصرَ اللَّهِ قَريبٌ
2:214 তোমরা কি এই ধারণায় রয়েছো যে, জান্নাতে চলে যাবে? আর এখনো তোমাদের উপর  পূর্ববর্তীদের  মতো  রোয়েদাদ  (অবস্থা)   আসেনি।  তাদেরকে  স্পর্শ   করেছে  সংকট  ও দুঃখ-কষ্ট এবং প্রকম্পিত  করা  হয়েছে,  শেষ  পর্যন্ত  রসূল  এবং তাঁর  সঙ্গেকার  ঈমানদারগণ বলে   ওঠেছে,      ‘কখন    আসবে   আল্লাহ্‌র    সাহায্য’?   শুনে   নাও!    ‘নিশ্চয়    আল্লাহ্‌র   সাহায্য সন্নিকটে।’
يَسـَٔلونَكَ ماذا يُنفِقونَ قُل ما أَنفَقتُم مِن خَيرٍ فَلِلوٰلِدَينِ وَالأَقرَبينَ وَاليَتٰمىٰ وَالمَسٰكينِ وَابنِ السَّبيلِ وَما تَفعَلوا مِن خَيرٍ فَإِنَّ اللَّهَ بِهِ عَليمٌ
2:215  আপনাকে  জিজ্ঞাসা করছে,   ‘কি ব্যয় করবে?’  আপনি বলুন, ‘যা কিছু সম্পদ   সৎ কাজে   ব্যয়  করো,  তবে   তা  মাতা-পিতা,  নিকটাত্মীয়,  এতিম,  অভাবগ্রস্থ    ও   মুসাফিরদের জন্য; এবং যা সৎকর্ম করবে, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তা জানেন।
كُتِبَ عَلَيكُمُ القِتالُ وَهُوَ كُرهٌ لَكُم وَعَسىٰ أَن تَكرَهوا شَيـًٔا وَهُوَ خَيرٌ لَكُم وَعَسىٰ أَن تُحِبّوا شَيـًٔا وَهُوَ شَرٌّ لَكُم وَاللَّهُ يَعلَمُ وَأَنتُم لا تَعلَمونَ
2:216  তোমাদের  উপর   ফরয  হয়েছে   আল্লাহ্‌র  পথে   জিহাদ  করা  আর    তা   তোমাদের নিকট  অপছন্দনীয়  এবং    সম্ভবতঃ  তোমাদের  নিকট   কোন  বিষয়  অপছন্দ   হবে   অথচ  তা তোমাদের পক্ষে কল্যাণকর হয়; এবং সম্ভবতঃ কোন বিষয় তোমাদের পছন্দনীয় হবে অথচ তা তোমাদের পক্ষে অকল্যাণকর হয়। আর আল্লাহ্‌ জানেন এবং তোমরা জানো না।
يَسـَٔلونَكَ عَنِ الشَّهرِ الحَرامِ قِتالٍ فيهِ قُل قِتالٌ فيهِ كَبيرٌ وَصَدٌّ عَن سَبيلِ اللَّهِ وَكُفرٌ بِهِ وَالمَسجِدِ الحَرامِ وَإِخراجُ أَهلِهِ مِنهُ أَكبَرُ عِندَ اللَّهِ وَالفِتنَةُ أَكبَرُ مِنَ القَتلِ وَلا يَزالونَ يُقٰتِلونَكُم حَتّىٰ يَرُدّوكُم عَن دينِكُم إِنِ استَطٰعوا وَمَن يَرتَدِد مِنكُم عَن دينِهِ فَيَمُت وَهُوَ كافِرٌ فَأُولٰئِكَ حَبِطَت أَعمٰلُهُم فِى الدُّنيا وَالءاخِرَةِ وَأُولٰئِكَ أَصحٰبُ النّارِ هُم فيها خٰلِدونَ
2:217 আপনাকে জিজ্ঞাসা করছে সম্মানিত মাসে যুদ্ধ করার হুকুম সম্পর্কে। আপনি বলুন, ‘তাতে  যুদ্ধ   করা  মহাপাপ  এবং  আল্লাহ্‌র  পথে    বাধা   দেয়া,  তাঁর   উপর    ঈমান  না  আনা, মসজিদে    হারাম  থেকে    নিবৃত্ত  রাখা   এবং    সেখানে  বসবাসকারীদেরকে  বের   করে  দেয়া- আল্লাহ্‌র    নিকট    এ    গুনাহ্‌    তা    অপেক্ষাও    বড়    এবং    তাদের    ফ্যাসাদ    হত্যা    অপেক্ষাও  ভীষণতর।’     আর     (তারা)    সর্বদা      তোমাদের    বিরুদ্ধে    যুদ্ধ    করতে     থাকবে    যতক্ষণ     না  তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে ফিরিয়ে দেবে, যদি সম্ভবপর হয়; এবং তোমাদের মধ্যে যে  কেউ আপন দ্বীন  থেকে  ফিরে   যায় অতঃপর    কাফির   হয়ে   মৃত্যুবরণ করে,  তবে ঐসব লোকের   কর্ম  নিস্ফল  হয়েছে  দুনিয়ায়  ও  আখিরাতে  এবং  তারা  দোযখবাসী।  তাতে  তারা  সর্বদা থাকবে।
إِنَّ الَّذينَ ءامَنوا وَالَّذينَ هاجَروا وَجٰهَدوا فى سَبيلِ اللَّهِ أُولٰئِكَ يَرجونَ رَحمَتَ اللَّهِ وَاللَّهُ غَفورٌ رَحيمٌ
2:218   ওই  সব  লোক,  যারা  ঈমান  এনেছে  এবং  ওই  সব   লোক,  যারা  আল্লাহ্‌র   জন্য আপন ঘরবাড়ী ত্যাগ  করেছে    ও আল্লাহ্‌র  পথে   জিহাদ  করেছে,   তারা  আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের প্রত্যাশী, আর আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, দয়াবান।
يَسـَٔلونَكَ عَنِ الخَمرِ وَالمَيسِرِ قُل فيهِما إِثمٌ كَبيرٌ وَمَنٰفِعُ لِلنّاسِ وَإِثمُهُما أَكبَرُ مِن نَفعِهِما وَيَسـَٔلونَكَ ماذا يُنفِقونَ قُلِ العَفوَ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الءايٰتِ لَعَلَّكُم تَتَفَكَّرونَ
2:219  আপনাকে  মদ   ও   জুয়ার    বিধান  সম্পর্কে    জিজ্ঞাসা  করছে।   আপনি  বলুন,  ‘ওই দু’টিতে মহাপাপ রয়েছে এবং মানুষের  জন্য কিছু পার্থিব উপকারও। এবং ওই দু’টির  পাপ ওই দু’টির উপকার অপেক্ষা বড়।’ আর আপনাকে জিজ্ঞাসা করছে- কি ব্যয় করবে? আপনি বলুন,  ‘যা  উদ্বৃত্ত থাকে।’  অনুরুপভাবে, আল্লাহ্‌ তোমাদের নিকট নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করে সম্পন্ন করো-
فِى الدُّنيا وَالءاخِرَةِ وَيَسـَٔلونَكَ عَنِ اليَتٰمىٰ قُل إِصلاحٌ لَهُم خَيرٌ وَإِن تُخالِطوهُم فَإِخوٰنُكُم وَاللَّهُ يَعلَمُ المُفسِدَ مِنَ المُصلِحِ وَلَو شاءَ اللَّهُ لَأَعنَتَكُم إِنَّ اللَّهَ عَزيزٌ حَكيمٌ
2:220   দুনিয়া     ও    আখিরাতের    কাজ।   আর   আপনাকে   এতিমদের    মাস্আলা   জিজ্ঞাসা করছে।   আপনি  বলুন,   ‘তাদের   কল্যাণ  করা  উত্তম’  এবং   যদি   নিজেদের  ও  তাদের  ব্যয় একত্র    করে    নাও,    তবে    তারা    তোমাদের    ভাই;    আর     আল্লাহ্‌    খুব    ভালভাবে    জানেন  অনিষ্টকারীকে হিতকারীদের থেকে; এবং আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে কষ্টে ফেলতেন। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
وَلا تَنكِحُوا المُشرِكٰتِ حَتّىٰ يُؤمِنَّ وَلَأَمَةٌ مُؤمِنَةٌ خَيرٌ مِن مُشرِكَةٍ وَلَو أَعجَبَتكُم وَلا تُنكِحُوا المُشرِكينَ حَتّىٰ يُؤمِنوا وَلَعَبدٌ مُؤمِنٌ خَيرٌ مِن مُشرِكٍ وَلَو أَعجَبَكُم أُولٰئِكَ يَدعونَ إِلَى النّارِ وَاللَّهُ يَدعوا إِلَى الجَنَّةِ وَالمَغفِرَةِ بِإِذنِهِ وَيُبَيِّنُ ءايٰتِهِ لِلنّاسِ لَعَلَّهُم يَتَذَكَّرونَ
2:221  আর   অংশীবাদীনী  নারীদেরকে  বিবাহ   করো না যতক্ষণ  পর্যন্ত না  মুসলমান হয়ে যায়    এবং      নিশ্চয়     মুসলমান     ক্রীতদাসী    অংশীবাদীনী    নারী    অপেক্ষা    উত্তম    যদিও    সে তোমাদেরকে চমৎকৃত করে এবং মুশরিকদের বিবাহে দিও না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান না আনে।   আর  নিশ্চয়  মুসলমান    ক্রীতদাস   মুশরিক  অপেক্ষা  উত্তম    যদিও  সে   তোমাদেরকে চমৎকৃত  করে।  তারা  দোযখের  দিকে   আহ্বান  করে  এবং   আল্লাহ্‌  জান্নাত  ও  ক্ষমার   দিকে আহ্বান করেন স্বীয়  নির্দেশে; আর আপন   নিদর্শনসমূহ  লোকদের  জন্য বর্ণনা করেন, যাতে   তারা উপদেশ মান্য করে।
وَيَسـَٔلونَكَ عَنِ المَحيضِ قُل هُوَ أَذًى فَاعتَزِلُوا النِّساءَ فِى المَحيضِ وَلا تَقرَبوهُنَّ حَتّىٰ يَطهُرنَ فَإِذا تَطَهَّرنَ فَأتوهُنَّ مِن حَيثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوّٰبينَ وَيُحِبُّ المُتَطَهِّرينَ
2:222   এবং   (হে    হাবিব!)     আপনাকে   (লোকেরা)  জিজ্ঞাসা   করছে  রজঃস্রাবের  বিধান। আপনি    বলুন,    ‘সেটা    অশুচিতা;   সুতরাং     (তোমরা)   স্ত্রীদের    নিকট    থেকে    পৃথক     থাকো রজঃস্রাবের দিনগুলোতে এবং তাদের  নিকটে যেওনা  যতক্ষণ না পবিত্র হয়ে যায়। অতঃপর যখন পবিত্র হয়ে যায়,  তখন তাদের নিকট যাও যেখান  থেকে তোমাদেরকে আল্লাহ্‌ নির্দেশ দিয়েছেন।   নিশ্চয়    আল্লাহ্‌    পছন্দ    করেন    অধিক   তাওবাকারীদেরকে   এবং   পছন্দ    করেন পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকে।
نِساؤُكُم حَرثٌ لَكُم فَأتوا حَرثَكُم أَنّىٰ شِئتُم وَقَدِّموا لِأَنفُسِكُم وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعلَموا أَنَّكُم مُلٰقوهُ وَبَشِّرِ المُؤمِنينَ
2:223 তোমাদের    স্ত্রীগণ তোমাদের  জন্য ক্ষেত  স্বরুপ।  অতএব,  (তোমরা) এসো আপন আপন ক্ষেতসমূহে  যেভাবে ইচ্ছা করো।  এবং নিজেদের মঙ্গলের কাজ  পূর্বাহ্নে করো। আর আল্লাহ্‌কে  ভয় করতে থাকো এবং জেনে রেখো যে, তোমাদেরকে তাঁর সাথে মিলতে হবে। আর হে মাহবুব! সুসংবাদ দিন ঈমানদারদেরকে।
وَلا تَجعَلُوا اللَّهَ عُرضَةً لِأَيمٰنِكُم أَن تَبَرّوا وَتَتَّقوا وَتُصلِحوا بَينَ النّاسِ وَاللَّهُ سَميعٌ عَليمٌ
2:224   এবং   আল্লাহ্‌কে   তোমাদের   শপথগুলোর   (এ   মর্মে)   নিশানা   (অজুহাত)   বানিয়ে  নিওনা  যে, ‘সৎকর্ম, পরহেয্‌গারী এবং মানুষের মধ্যে  শান্তি   স্থাপন (না)   করার  শপথ  করে নেবে। এবং আল্লাহ্ শ্রোতা, জ্ঞাতা।
لا يُؤاخِذُكُمُ اللَّهُ بِاللَّغوِ فى أَيمٰنِكُم وَلٰكِن يُؤاخِذُكُم بِما كَسَبَت قُلوبُكُم وَاللَّهُ غَفورٌ حَليمٌ
2:225      আল্লাহ্‌      তোমাদেরকে     পাকড়াও     করবেন       না      সেসব      শপথের      মধ্যে,       যা অনিচ্ছাকৃতভাবে  মুখ থেকে বের হযে যায়।  হাঁ,  সেটারই উপর  পাকড়াও করেন,   যে   কাজ তোমাদের অন্তরসমূহ করেছে; এবং আল্লাহ্‌ ক্ষমাপরায়ণ, সহনশীল।
لِلَّذينَ يُؤلونَ مِن نِسائِهِم تَرَبُّصُ أَربَعَةِ أَشهُرٍ فَإِن فاءو فَإِنَّ اللَّهَ غَفورٌ رَحيمٌ
2:226 এবং ওই সব  লোক, যারা শপথ করে বসে আপন স্ত্রীদের নিকট যাবার (বেলায়), তাদের জন্য চার মাসের অবকাশ রয়েছে।  অতঃপর যদি  সেই মেয়াদের মধ্যে ফিরে আসে, তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু।
وَإِن عَزَمُوا الطَّلٰقَ فَإِنَّ اللَّهَ سَميعٌ عَليمٌ
2:227 এবং যদি ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা পাকাপোক্ত করে নেয়, তবে আল্লাহ্‌ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাত।
وَالمُطَلَّقٰتُ يَتَرَبَّصنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلٰثَةَ قُروءٍ وَلا يَحِلُّ لَهُنَّ أَن يَكتُمنَ ما خَلَقَ اللَّهُ فى أَرحامِهِنَّ إِن كُنَّ يُؤمِنَّ بِاللَّهِ وَاليَومِ الءاخِرِ وَبُعولَتُهُنَّ أَحَقُّ بِرَدِّهِنَّ فى ذٰلِكَ إِن أَرادوا إِصلٰحًا وَلَهُنَّ مِثلُ الَّذى عَلَيهِنَّ بِالمَعروفِ وَلِلرِّجالِ عَلَيهِنَّ دَرَجَةٌ وَاللَّهُ عَزيزٌ حَكيمٌ
2:228 এবং তালাক্বপ্রাপ্তারা আপন আত্মাগুলোকে সংযত করবে তিন রজঃস্রাব পর্যন্ত; আর তাদের  জন্য   হালাল   নয়  যে,  তারা   তা  গোপন    করবে   যা   আল্লাহ্‌  তাদের  গর্ভাশয়ে  সৃষ্টি করেছেন  যদি  আল্লাহ্‌  এবং  ক্বিয়ামতের  উপর  ঈমান  রেখে  থাকে;  এবং  তাদের  স্বামীদের  উক্ত মেয়াদের মধ্যে তাদেরকে পুনঃগ্রহণ করার  অধিকার থাকে যদি  আপোষ-নিষ্পত্তি চায়। আর   নারীদেরকেও   হক তেমনিই রয়েছে যেমন  রয়েছে তাদের উপর, শরীয়তানুযায়ী; এবং পুরুষদের তাদের (নারীগণ) উপর শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে; এবং আল্লাহ্‌ মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
الطَّلٰقُ مَرَّتانِ فَإِمساكٌ بِمَعروفٍ أَو تَسريحٌ بِإِحسٰنٍ وَلا يَحِلُّ لَكُم أَن تَأخُذوا مِمّا ءاتَيتُموهُنَّ شَيـًٔا إِلّا أَن يَخافا أَلّا يُقيما حُدودَ اللَّهِ فَإِن خِفتُم أَلّا يُقيما حُدودَ اللَّهِ فَلا جُناحَ عَلَيهِما فيمَا افتَدَت بِهِ تِلكَ حُدودُ اللَّهِ فَلا تَعتَدوها وَمَن يَتَعَدَّ حُدودَ اللَّهِ فَأُولٰئِكَ هُمُ الظّٰلِمونَ
2:229  এ তালাক্ব দু’বার পর্যন্ত। অতঃপর উত্তম পন্থায় রেখে দেয়া অথবা সদয়ভাবে মুক্ত করে দেয়া। আর তোমাদের পক্ষে বৈধ নয় যে, যা কিছু  স্ত্রীদেরকে দিয়েছো  তা থেকে কিছু ফেরৎ নেবে, কিন্তু যখন  উভয়ের  আশংকা হয় যে, আল্লাহ্‌র সীমারেখাগুলোর কায়েম করবে না; অতঃপর  যদি  তোমাদের  আশংকা হয় যে, তারা উভয়ে   ঠিকভাবে সে সীমারেখাগুলোর উপর থাকবে না, তবে তাদের উপর কোন গুনাহ নেই এর মধ্যে যে, কিছু বিনিময় দিয়ে স্ত্রী নিষ্কৃতি গ্রহণ করবে। এগুলো আল্লাহ্‌র সীমারেখা; এগুলো থেকে অগ্রে অগ্রসর হয়োনা এবং যারা আল্লাহ্‌র সীমারেখাগুলোর থেকে আগে বাড়ে, তবে ওই সব লোকই যালিম।
فَإِن طَلَّقَها فَلا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعدُ حَتّىٰ تَنكِحَ زَوجًا غَيرَهُ فَإِن طَلَّقَها فَلا جُناحَ عَلَيهِما أَن يَتَراجَعا إِن ظَنّا أَن يُقيما حُدودَ اللَّهِ وَتِلكَ حُدودُ اللَّهِ يُبَيِّنُها لِقَومٍ يَعلَمونَ
2:230    অতঃপর যদি   তাকে    তৃতীয় তালাক্ব প্রদান  করে, তবে তখন সেই   স্ত্রী তার জন্য হালাল   হবে  না  যতক্ষণ    না  অন্য  স্বামীর  নিকট   থাকবে;  অতঃপর  অন্য  স্বামী  যদি  তাকে তালাক্ব  দিয়ে দেয়, তবে  এতে  তাদের উভয়ের উপর  গুনাহ  বর্তাবে   না যে,   তারা পরষ্পর পূর্নমিলিত হবে, যদি মনে করে যে,  আল্লাহ্‌র সীমারেখাগুলো রক্ষা করতে সমর্থ  হবে। আর এগুলো আল্লাহ্‌র সীমারেখা, যেগুলো স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন জ্ঞানসম্পন্নদের জন্য।
وَإِذا طَلَّقتُمُ النِّساءَ فَبَلَغنَ أَجَلَهُنَّ فَأَمسِكوهُنَّ بِمَعروفٍ أَو سَرِّحوهُنَّ بِمَعروفٍ وَلا تُمسِكوهُنَّ ضِرارًا لِتَعتَدوا وَمَن يَفعَل ذٰلِكَ فَقَد ظَلَمَ نَفسَهُ وَلا تَتَّخِذوا ءايٰتِ اللَّهِ هُزُوًا وَاذكُروا نِعمَتَ اللَّهِ عَلَيكُم وَما أَنزَلَ عَلَيكُم مِنَ الكِتٰبِ وَالحِكمَةِ يَعِظُكُم بِهِ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيءٍ عَليمٌ
2:231 আর যখন  তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক্ব দাও এবং তাদের মেয়াদ  (ইদ্দতপূর্তি)  এসে পৌঁছে   তখন   হয়তো   উত্তমরুপে   রেখে   দেবে;   অথবা   সদয়ভাবে   মুক্ত   করে   দেবে   এবং  তাদেরকে ক্ষতি   সাধনের জন্য আটক করে     রাখবে না,  যাতে  সীমালংঘনকারী হয়ে   যাও।  আর যে  এরূপ করে সে নিজেরেই  ক্ষতি করে;  এবং  আল্লাহ্‌র আয়াতগুলোর ঠাট্টা-তামাশার  বস্তু বানিয়ে নিও না; এবং স্মরণ করো আল্লাহ্‌র অনুগ্রহকে, যা তোমাদের উপর রয়েছে আর সেটাকে,  যা তোমাদের  উপর   অবতীর্ণ করেছেন কিতাব  ও হিকমত তোমাদেরকে   উপদেশ দেয়ার জন্য এবং আল্লাহ্‌কে ভয় করতে থাকো ও জেনে রেখো যে, আল্লাহ্‌ সবকিছু জানেন।
وَإِذا طَلَّقتُمُ النِّساءَ فَبَلَغنَ أَجَلَهُنَّ فَلا تَعضُلوهُنَّ أَن يَنكِحنَ أَزوٰجَهُنَّ إِذا تَرٰضَوا بَينَهُم بِالمَعروفِ ذٰلِكَ يوعَظُ بِهِ مَن كانَ مِنكُم يُؤمِنُ بِاللَّهِ وَاليَومِ الءاخِرِ ذٰلِكُم أَزكىٰ لَكُم وَأَطهَرُ وَاللَّهُ يَعلَمُ وَأَنتُم لا تَعلَمونَ
2:232 এবং যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক্ব দাও এবং তাদের মেয়াদকাল পূর্ণ হয়ে যায়, তবে হে স্ত্রীদের  অভিবাবকরা!   তাদেরকে বাধা  দিওনা এ থেকে যে, (তারা)  আপন  আপন  স্বামীদের সাথে  বিবাহ করে  নেবে, যখন  পরষ্পর শরীয়তের বিধিমতো রাজি   হয়ে যায়। এ উপদেশ    তাকেই দেয়া   যায়, যে তোমাদের মধ্য থেকে আল্লাহ্‌  ও  ক্বিয়ামতের উপর  ঈমান রাখে। এটা তোমাদের জন্য অধিকতর পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র। আর আল্লাহ্‌ জানেন এবং তোমরা জানো না।
وَالوٰلِدٰتُ يُرضِعنَ أَولٰدَهُنَّ حَولَينِ كامِلَينِ لِمَن أَرادَ أَن يُتِمَّ الرَّضاعَةَ وَعَلَى المَولودِ لَهُ رِزقُهُنَّ وَكِسوَتُهُنَّ بِالمَعروفِ لا تُكَلَّفُ نَفسٌ إِلّا وُسعَها لا تُضارَّ وٰلِدَةٌ بِوَلَدِها وَلا مَولودٌ لَهُ بِوَلَدِهِ وَعَلَى الوارِثِ مِثلُ ذٰلِكَ فَإِن أَرادا فِصالًا عَن تَراضٍ مِنهُما وَتَشاوُرٍ فَلا جُناحَ عَلَيهِما وَإِن أَرَدتُم أَن تَستَرضِعوا أَولٰدَكُم فَلا جُناحَ عَلَيكُم إِذا سَلَّمتُم ما ءاتَيتُم بِالمَعروفِ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ بِما تَعمَلونَ بَصيرٌ
2:233 এবং জননীগণ স্ত্যন্যপান করাবে আপন সন্তানদেরকে পূর্ণ দু’বছর, তারই জন্য, যে স্তন্যপানকাল পূর্ণ করতে চায়  এবং  সন্তান যার তার উপর স্ত্রীদের ভরণ-পোষণ  করা কর্তব্য, বিধি-মোতাবেক। কোন আত্মার উপর   বোঝা  রাখা হবে না, কিন্তু  তার   সাধ্য পরিমাণ, যেন জননীকে ক্ষতিগ্রস্থ না করা হয় তার সন্তান দ্বারা এবং না সন্তান যার তাকে তার সন্তান দ্বারা; [কিংবা জননী যেন  কষ্ট না দেয়  আপন সন্তানকে  এবং না সন্তান   যার,  সে তার    সন্তানকে] এবং যে পিতার  স্থলাভিষিক্ত,  তার  উপরও অনুরুপই  অপরিহার্য।  অতঃপর যদি  পিতা-মাতা  উভয়ে পরষ্পরের সম্মতি ও পরামর্শক্রমে স্তন্যপান বন্ধ করতে চায়, তবে তাদের উপর গুনাহ বর্তাবে না। আর যদি তোমরা চাও যে, ধাত্রীদের দ্বারা আপন সন্তানদেরকে স্তন্যপান করাবে, তবুও   তোমাদের   অপরাধ   নেই-   যখন,   যা     প্রদান   করা   সাব্যস্ত    হয়েছিলো    তা   বিধিমত তাদেরকে  অর্পণ   করে   দাও।  আর   আল্লাহ্‌কে  ভয়  করতে  থাকো  এবং    জেনে   রেখো  যে, আল্লাহ্‌ তোমাদের কর্ম দেখছেন।
وَالَّذينَ يُتَوَفَّونَ مِنكُم وَيَذَرونَ أَزوٰجًا يَتَرَبَّصنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَربَعَةَ أَشهُرٍ وَعَشرًا فَإِذا بَلَغنَ أَجَلَهُنَّ فَلا جُناحَ عَلَيكُم فيما فَعَلنَ فى أَنفُسِهِنَّ بِالمَعروفِ وَاللَّهُ بِما تَعمَلونَ خَبيرٌ
2:234 আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করে এবং  স্ত্রীদের রেখে  যায়, তারা   (স্ত্রীগণ) চার মাস দশ  দিন নিজেদের বিরত করে রাখবে।  অতঃপর   যখন  তাদের   ‘ইদ্দত’  পূর্ণ হয়ে  যাবে, তখন, হে অভিভাবকগণ! তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে না ওই কাজে, যা স্ত্রীগণ নিজেদের মামলায় শরীয়ত মোতাবেক করবে এবং আল্লাহ্‌র নিকট তোমাদের কার্যাদির খবর রয়েছে।
وَلا جُناحَ عَلَيكُم فيما عَرَّضتُم بِهِ مِن خِطبَةِ النِّساءِ أَو أَكنَنتُم فى أَنفُسِكُم عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُم سَتَذكُرونَهُنَّ وَلٰكِن لا تُواعِدوهُنَّ سِرًّا إِلّا أَن تَقولوا قَولًا مَعروفًا وَلا تَعزِموا عُقدَةَ النِّكاحِ حَتّىٰ يَبلُغَ الكِتٰبُ أَجَلَهُ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ يَعلَمُ ما فى أَنفُسِكُم فَاحذَروهُ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ غَفورٌ حَليمٌ
2:235 এবং  তোমাদের উপর পাপ নেই এ  কথায়   যে, পর্দার আড়ালে  (ইঙ্গিতে) তোমরা  স্ত্রী লোকদেরকে  বিবাহের  প্রস্তাব  দেবে কিংবা আপন  আপন অন্তরে গোপন  রাখবে। আল্লাহ্‌ জানেন  যে,   এখন  তোমরা  তাদের   স্মরণ   (আলোচনা)    করবে।   হাঁ,  তাদের   সাথে  গোপন অঙ্গীকার   করে   রেখোনা,    কিন্তু   এটা   যে,   শুধু   এতটুকু    কথা   বলো     যা    শরীয়তের     বিধি মোতাবেক   হয়  এবং বিবাহ-বন্ধন পাকাপোক্ত  করো না, যতক্ষণ না লিপিবদ্ধ হুকুম (ইদ্দত) আপন  মেয়াদকালে   পৌঁছে    যায়   এবং  জেনে  রেখো  যে,   আল্লাহ্‌  তোমাদের  অন্তরের  কথা জানেন। সুতরাং তাঁকে ভয় করো এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ্‌ ক্ষমাপরায়ণ, সহনশীল।
لا جُناحَ عَلَيكُم إِن طَلَّقتُمُ النِّساءَ ما لَم تَمَسّوهُنَّ أَو تَفرِضوا لَهُنَّ فَريضَةً وَمَتِّعوهُنَّ عَلَى الموسِعِ قَدَرُهُ وَعَلَى المُقتِرِ قَدَرُهُ مَتٰعًا بِالمَعروفِ حَقًّا عَلَى المُحسِنينَ
2:236   তোমাদের   উপর কোন দাবী  নেই  যদি   তোমরা স্ত্রীদেরকে  তালাক্ব দাও,  যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা তাদেরকে স্পর্শ না করে থাকো, কিংবা কোন মহর নির্দ্ধারিত (না) করে থাকো এবং তাদেরকে কিছু সামগ্রী ভোগ করতে দাও। সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর তার সামর্থ্যনুযায়ী এবং  দরিদ্রের  উপর  তার    সামর্থ্যানুযায়ী  বিধিমতো  কিছু  ভোগ  করার   বস্তু,  এটা   ওয়াজিব সত্যপরায়ণ ব্যক্তিদের উপর।
وَإِن طَلَّقتُموهُنَّ مِن قَبلِ أَن تَمَسّوهُنَّ وَقَد فَرَضتُم لَهُنَّ فَريضَةً فَنِصفُ ما فَرَضتُم إِلّا أَن يَعفونَ أَو يَعفُوَا۟ الَّذى بِيَدِهِ عُقدَةُ النِّكاحِ وَأَن تَعفوا أَقرَبُ لِلتَّقوىٰ وَلا تَنسَوُا الفَضلَ بَينَكُم إِنَّ اللَّهَ بِما تَعمَلونَ بَصيرٌ
2:237 এবং যদি তোমরা  স্ত্রীদের স্পর্শ করা ব্যতিরেকে তালাক্ব দিয়ে থাকো আর  তাদের জন্য কিছু   মহর   নির্দ্ধারণ করেছিলে এমন  হয়,  তবে  যে   পরিমাণ নির্দ্ধারিত  হয়েছিলো তার অর্ধেক  ওয়াজিব   হয়, কিন্তু এ’যে,   যদি  স্ত্রীগণ  কিছু ছেড়ে দেয়;   কিংবা সে  বেশী দেয় যার হাতে   বিবাহের   বন্ধন  রয়েছে   এবং  হে   পুরুষগণ,   তোমাদের   বেশী  দেওয়া  পরহেয্‌গারীর  নিকটতর   এবং   পরষ্পর   একে   অপরের   উপর   অনুগ্রহকে   ভুলে   যেও   না।   নিশ্চয়   আল্লাহ্‌  তোমাদের কর্ম প্রত্যক্ষ করছেন।
حٰفِظوا عَلَى الصَّلَوٰتِ وَالصَّلوٰةِ الوُسطىٰ وَقوموا لِلَّهِ قٰنِتينَ
2:238  সজাগ   দৃষ্টি      রেখো  সমস্ত    নামাযের  প্রতি  এবং  মর্ধ্যবর্তী    নামাযের  প্রতি।    আর দন্ডায়মান হও আল্লাহ্‌র সম্মুখে আদব সহকারে।
فَإِن خِفتُم فَرِجالًا أَو رُكبانًا فَإِذا أَمِنتُم فَاذكُرُوا اللَّهَ كَما عَلَّمَكُم ما لَم تَكونوا تَعلَمونَ
2:239  অতঃপর  যদি  আশংকায়  থাকো,  তবে  পদচারী  অথবা  আরোহী  অবস্থায়,  যেমনি  সম্ভব হয়। অতঃপর যখন নিরাপদে থাকো, তখন আল্লাহ্‌কে স্মরণ করো- যেমন তিনি শিক্ষা দিয়েছেন যা তোমরা জানতে না।
وَالَّذينَ يُتَوَفَّونَ مِنكُم وَيَذَرونَ أَزوٰجًا وَصِيَّةً لِأَزوٰجِهِم مَتٰعًا إِلَى الحَولِ غَيرَ إِخراجٍ فَإِن خَرَجنَ فَلا جُناحَ عَلَيكُم فى ما فَعَلنَ فى أَنفُسِهِنَّ مِن مَعروفٍ وَاللَّهُ عَزيزٌ حَكيمٌ
2:240   এবং  যারা  তোমাদের   মধ্যে  মৃত্যুবরণ  করে     আর  স্ত্রীদের  রেখে  যায়  তারা  যেন তাদের স্ত্রীদের উদ্দেশ্যে ওসীয়ৎ করে যায় সারা বছর পর্যন্ত ভরণ-পোষণের, ঘর থেকে বের করা ব্যতিরেকে। অতঃপর যদি তারা নিজেরাই বের হয়ে যায়, তবে তোমাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে না ওই কাজের উপর যা তারা আপন আপন মামলায় বিধি মতো করেছে। আর আল্লাহ্‌ পরাক্রান্ত, প্রজ্ঞাময়।
وَلِلمُطَلَّقٰتِ مَتٰعٌ بِالمَعروفِ حَقًّا عَلَى المُتَّقينَ
2:241  এবং   তালাক্বপ্রাপ্তা    স্ত্রীদের    জন্যও  উপযুক্ত  ভরণ-পোষণ  রয়েছে।   এটা  ওয়াজিব পরহেয্‌গারদের উপর।
كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُم ءايٰتِهِ لَعَلَّكُم تَعقِلونَ
2:242    আল্লাহ্‌  এভাবে  সুস্পষ্টরুপে  বর্ণনা   করেন    তোমাদের   জন্য   আপন   আয়াতসমূহ  (বিধি-বিধান), যাতে তোমাদের বুঝে আসে।
أَلَم تَرَ إِلَى الَّذينَ خَرَجوا مِن دِيٰرِهِم وَهُم أُلوفٌ حَذَرَ المَوتِ فَقالَ لَهُمُ اللَّهُ موتوا ثُمَّ أَحيٰهُم إِنَّ اللَّهَ لَذو فَضلٍ عَلَى النّاسِ وَلٰكِنَّ أَكثَرَ النّاسِ لا يَشكُرونَ
2:243  হে মাহবুব!   আপনি কি দেখেন  নি   তাদেরকে, যারা আপন ঘরগুলো  থেকে  বের   হয়েছে  মৃত্যুর  ভয়ে  এবং   তারা   ছিলো  হাজার  হাজার,  তখন  আল্লাহ্‌  তাদেরকে   বলেছেন, ‘মরে যাও’! অতঃপর তাদেরকে জীবিত করেছেন। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মানুষের উপর অনুগ্রহশীল, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ অকৃতজ্ঞ।
وَقٰتِلوا فى سَبيلِ اللَّهِ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ سَميعٌ عَليمٌ
2:244 এবং যুদ্ধ করো আল্লাহ্‌র পথে এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ্‌ শ্রোতা, জ্ঞাতা।
مَن ذَا الَّذى يُقرِضُ اللَّهَ قَرضًا حَسَنًا فَيُضٰعِفَهُ لَهُ أَضعافًا كَثيرَةً وَاللَّهُ يَقبِضُ وَيَبصُۜطُ وَإِلَيهِ تُرجَعونَ
2:245  এমন  কেউ  আছো,    যে  আল্লাহ্‌কে   ‘উত্তম   কর্জ’  দেবে?  তবে  আল্লাহ্‌   তার  জন্য অনেক গুণ বর্ধিত  করে  দেবেন  এবং    আল্লাহ্‌ সংকোচন ও প্রশস্ত করেন  আর তোমাদেরকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে।
أَلَم تَرَ إِلَى المَلَإِ مِن بَنى إِسرٰءيلَ مِن بَعدِ موسىٰ إِذ قالوا لِنَبِىٍّ لَهُمُ ابعَث لَنا مَلِكًا نُقٰتِل فى سَبيلِ اللَّهِ قالَ هَل عَسَيتُم إِن كُتِبَ عَلَيكُمُ القِتالُ أَلّا تُقٰتِلوا قالوا وَما لَنا أَلّا نُقٰتِلَ فى سَبيلِ اللَّهِ وَقَد أُخرِجنا مِن دِيٰرِنا وَأَبنائِنا فَلَمّا كُتِبَ عَلَيهِمُ القِتالُ تَوَلَّوا إِلّا قَليلًا مِنهُم وَاللَّهُ عَليمٌ بِالظّٰلِمينَ
2:246 হে  মাহবুব! আপনি কি  দেখেন নি  বনী  ইস্রাইলের  একটা দলকে, যা মুসার পরে সৃষ্ট হয়েছে? যখন (তারা) তাদের একজন পয়গাম্বরকে বলেছে, ‘আমাদের জন্য দাঁড় করান একজন বাদশাহ, যাতে আমরা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করি।’ নবী বলেছেন, ‘তোমাদের অনুমান কি  এমন  যে,  তোমোদের  উপর  যুদ্ধ  ফরয  করা  হবে  অতঃপর  (তোমরা)  তা  করবে  না?’  বললো, ‘আমাদের কি হয়েছে যে আমরা আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করবোনা? অথচ আমাদের বের করে দেয়া হয়েছে আমাদের জন্মভূমি থেকে এবং আপন সন্তানদের নিকট থেকে।’ অতঃপর যখন তাদের উপর ‘জিহাদ’ ফরয  করা হলো (তখন তারা) মুখ ফিরিয়ে নিলো, কিন্তু তাদের মধ্যেকার অল্প সংখ্যক লোক এবং আল্লাহ্‌ ভালভাবে জানেন অত্যাচারীদেরকে।
وَقالَ لَهُم نَبِيُّهُم إِنَّ اللَّهَ قَد بَعَثَ لَكُم طالوتَ مَلِكًا قالوا أَنّىٰ يَكونُ لَهُ المُلكُ عَلَينا وَنَحنُ أَحَقُّ بِالمُلكِ مِنهُ وَلَم يُؤتَ سَعَةً مِنَ المالِ قالَ إِنَّ اللَّهَ اصطَفىٰهُ عَلَيكُم وَزادَهُ بَسطَةً فِى العِلمِ وَالجِسمِ وَاللَّهُ يُؤتى مُلكَهُ مَن يَشاءُ وَاللَّهُ وٰسِعٌ عَليمٌ
2:247 এবং তাদেরকে তাদের নবী বললেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ্‌ তালূতকে তোমাদের বাদশাহ নিয়োজিত করে প্রেরণ  করেছেন।’ (তারা)  বললো,  ‘আমাদের উপর  তার বাদশাহী  কিভাবে হবে এবং আমরা তার অপেক্ষা রাজত্বের জন্য অধিক উপযোগী আর তাকে আর্থিক প্রাচুর্যও প্রদান করা হয় নি।’ তিনি (নবী) বললেন, ‘তাকে আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য নির্বাচিত করেছেন এবং তাঁকে জ্ঞান ও শরীরের দিক  দিয়ে  অধিক প্রাচুর্য প্রদান করেছেন;  আর আল্লাহ্‌ আপন রাজ্য যাকে চান প্রদান করেন; এবং আল্লাহ্‌ প্রাচুর্যময়, জ্ঞাতা।’
وَقالَ لَهُم نَبِيُّهُم إِنَّ ءايَةَ مُلكِهِ أَن يَأتِيَكُمُ التّابوتُ فيهِ سَكينَةٌ مِن رَبِّكُم وَبَقِيَّةٌ مِمّا تَرَكَ ءالُ موسىٰ وَءالُ هٰرونَ تَحمِلُهُ المَلٰئِكَةُ إِنَّ فى ذٰلِكَ لَءايَةً لَكُم إِن كُنتُم مُؤمِنينَ
2:248 এবং তাদেরকে তাদের নবী বললেন, ‘তার বাদশাহীর নির্দশন এই যে, তোমাদের নিকট তাবূত আসবে, যার মধ্যে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে চিত্ত-প্রশান্তি রয়েছে এবং কিছু অবশিষ্ট বস্তু, সম্মানিত মূসা ও সম্মানিত হারুনের পরিত্যক্ত; সেটাকে ফিরিশ্‌তাগণ বহন করে আনবে।’ নিঃসন্দেহে, এর মধ্যে মহান নির্দশন রয়েছে তোমাদের জন্য যদি ঈমান রাখো।
فَلَمّا فَصَلَ طالوتُ بِالجُنودِ قالَ إِنَّ اللَّهَ مُبتَليكُم بِنَهَرٍ فَمَن شَرِبَ مِنهُ فَلَيسَ مِنّى وَمَن لَم يَطعَمهُ فَإِنَّهُ مِنّى إِلّا مَنِ اغتَرَفَ غُرفَةً بِيَدِهِ فَشَرِبوا مِنهُ إِلّا قَليلًا مِنهُم فَلَمّا جاوَزَهُ هُوَ وَالَّذينَ ءامَنوا مَعَهُ قالوا لا طاقَةَ لَنَا اليَومَ بِجالوتَ وَجُنودِهِ قالَ الَّذينَ يَظُنّونَ أَنَّهُم مُلٰقُوا اللَّهِ كَم مِن فِئَةٍ قَليلَةٍ غَلَبَت فِئَةً كَثيرَةً بِإِذنِ اللَّهِ وَاللَّهُ مَعَ الصّٰبِرينَ
2:249 অতঃপর  যখন তালূত সৈন্যদের  নিয়ে শহর থেকে  পৃথক   হলো,  (তখন) বললো,   ‘নিঃসন্দেহে,  আল্লাহ্‌  তোমাদেরকে একটা নদী দ্বারা পরীক্ষাকারী। সুতরাং  যে  ব্যক্তি  সেটার পানি পান করবে  সে  আমার নয়,  আর যে পান করবে না সে আমার; কিন্তু ওই  ব্যক্তি,  যে এক অঞ্জলী পরিমাণ আপন  হাতে  নিয়ে নেবে  (সেও আমার)।’ অতঃপর সবাই সেটা  থেকে পান করলো, কিন্তু অল্প সংখ্যক লোক। অতঃপর যখন তালূত এবং তার সঙ্গেকার মুসলমান নদী পার হয়ে গেলো,  তখন (তারা) বললো, ‘আমাদের মধ্যে  আজ শক্তি নেই জালূত এবং তার   সৈন্যদের   (বিরুদ্ধে  লড়ার)।’   ওই   সব  লোক  বললো,     যাদের   মধ্যে   আল্লাহ্‌র  সাথে সাক্ষাতের দৃঢ়  বিশ্বাস  ছিলো, ‘বহুবার  ছোট দল বিজয়ী  হয়েছে   বৃহৎদলের  উপর, আল্লাহ্‌র নির্দেশক্রমে’ এবং আল্লাহ্‌ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
وَلَمّا بَرَزوا لِجالوتَ وَجُنودِهِ قالوا رَبَّنا أَفرِغ عَلَينا صَبرًا وَثَبِّت أَقدامَنا وَانصُرنا عَلَى القَومِ الكٰفِرينَ
2:250 অতঃপর (তারা) যখন সম্মুখীন হলো জালূত ও  তার সৈন্য বাহিনীর,  তখন প্রার্থনা করলো,   ‘হে   আমাদের   রব!   আমাদের   উপর   ধৈর্য   ঢেলে   দাও   এবং   আমাদের   পাগুলো  অবিচলিত রাখো আর কাফিরদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করো।’
فَهَزَموهُم بِإِذنِ اللَّهِ وَقَتَلَ داوۥدُ جالوتَ وَءاتىٰهُ اللَّهُ المُلكَ وَالحِكمَةَ وَعَلَّمَهُ مِمّا يَشاءُ وَلَولا دَفعُ اللَّهِ النّاسَ بَعضَهُم بِبَعضٍ لَفَسَدَتِ الأَرضُ وَلٰكِنَّ اللَّهَ ذو فَضلٍ عَلَى العٰلَمينَ
2:251 অতঃপর তারা তাদেরকে বিতাড়িত করলো আল্লাহ্‌র নির্দেশে এবং দাউদ জালূতকে হত্যা করলো এবং আল্লাহ্‌ তাকে বাদশাহী ও হিকমত দান করলেন এবং তাকে যা চেয়েছেন শিক্ষা  দিয়েছেন।   আর  যদি আল্লাহ্‌  মানুষের  মধ্য থেকে   এককে  অন্যের   দ্বারা  প্রতিহত না করেন,   তবে   অবশ্যই   পৃথিবী    ধ্বংস     হয়ে   যাবে;   কিন্তু    আল্লাহ্‌     সমগ্র     জাহানের     উপর অনুগ্রহশীল।
تِلكَ ءايٰتُ اللَّهِ نَتلوها عَلَيكَ بِالحَقِّ وَإِنَّكَ لَمِنَ المُرسَلينَ
2:252 এগুলো হচ্ছে আল্লাহ্‌র আয়াত, যেগুলো হে মাহবুব, আমি আপনার উপর ঠিক ঠিক পড়ছি এবং আপনি নিশ্চয় রসূলগণের অন্তর্ভূক্ত।
تِلكَ الرُّسُلُ فَضَّلنا بَعضَهُم عَلىٰ بَعضٍ مِنهُم مَن كَلَّمَ اللَّهُ وَرَفَعَ بَعضَهُم دَرَجٰتٍ وَءاتَينا عيسَى ابنَ مَريَمَ البَيِّنٰتِ وَأَيَّدنٰهُ بِروحِ القُدُسِ وَلَو شاءَ اللَّهُ مَا اقتَتَلَ الَّذينَ مِن بَعدِهِم مِن بَعدِ ما جاءَتهُمُ البَيِّنٰتُ وَلٰكِنِ اختَلَفوا فَمِنهُم مَن ءامَنَ وَمِنهُم مَن كَفَرَ وَلَو شاءَ اللَّهُ مَا اقتَتَلوا وَلٰكِنَّ اللَّهَ يَفعَلُ ما يُريدُ
2:253 এঁরা রসূল, আমি তাঁদের মধ্যে এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠ করেছি। তাঁদের মধ্যে  কারো    সাথে    আল্লাহ্‌    কথা    বলেছেন    এবং    কেউ    এমনও    আছেন,    যাঁকে    সবার    উপর  মর্যাদাসমূহে   উন্নীত  করেছেন।  আর  আমি   মরিয়ম-তনয়  ঈসাকে  স্পষ্ট  নির্দশনসমূহ  প্রদান করেছি;   এবং  পবিত্র   রূহ  দ্বারা   তাঁকে  সাহায্য  করেছি;   আর   আল্লাহ্‌  ইচ্ছা  করলে   তাদের পরবর্তীগণ পরষ্পর  যুদ্ধ করতো  না  এরপর  যে,  তাঁদের  নিকট স্পষ্ট   নির্দশনসমূহ  এসেছে; কিন্তু তারা  তো  পরস্পর  বিরোধকারী হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে কেউ ঈমানের উপর রইলো এবং কেউ কাফির  হয়ে    গেলো; আর  আল্লাহ্‌  ইচ্ছা করলে  তারা    পরষ্পর  যুদ্ধ বিগ্রহে  লিপ্ত হতো না; কিন্তু আল্লাহ্‌ যা চান করে থাকেন।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا أَنفِقوا مِمّا رَزَقنٰكُم مِن قَبلِ أَن يَأتِىَ يَومٌ لا بَيعٌ فيهِ وَلا خُلَّةٌ وَلا شَفٰعَةٌ وَالكٰفِرونَ هُمُ الظّٰلِمونَ
2:254 হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্‌র পথে  আমার প্রদত্ত (সম্পদ) থেকে ব্যয় করো ওই দিন আসার   পূর্বে, যার মধ্যে না    কোন   বেচাকেনা থাকবে, না  কাফিরদের জন্য বন্ধুত্ব   এবং না শাফা’আত; এবং কাফিরগণ নিজেরাই অত্যাচারী।
اللَّهُ لا إِلٰهَ إِلّا هُوَ الحَىُّ القَيّومُ لا تَأخُذُهُ سِنَةٌ وَلا نَومٌ لَهُ ما فِى السَّمٰوٰتِ وَما فِى الأَرضِ مَن ذَا الَّذى يَشفَعُ عِندَهُ إِلّا بِإِذنِهِ يَعلَمُ ما بَينَ أَيديهِم وَما خَلفَهُم وَلا يُحيطونَ بِشَيءٍ مِن عِلمِهِ إِلّا بِما شاءَ وَسِعَ كُرسِيُّهُ السَّمٰوٰتِ وَالأَرضَ وَلا يَـٔودُهُ حِفظُهُما وَهُوَ العَلِىُّ العَظيمُ
2:255  আল্লাহ্‌  হন,  যিনি     ব্যতীত  অন্য    কোন  উপাস্য  নেই।  তিনি   নিজে   জীবিত  এবং অন্যান্যাদের   অধিষ্ঠিত  রাখেন।  তাঁকে  না  তন্দ্রা     স্পর্শ   করে,    না  নিদ্রা।  তাঁরই,   যা    কিছু   আস্‌মানসমূহে  রয়েছে এবং যা কিছু যমীনে। সে কে, যে তাঁর সম্মুখে সুপারিশ করবে, তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে?   (তিনি) জানেন  যা  কিছু তাদের সম্মুখে   রয়েছে এবং   যা কিছু  তাদের পেছনে।    আর    তারা    পায়না    তাঁর   জ্ঞান   থেকে,   কিন্তু   যতটুকু   তিনি   চান।   তাঁর    ‘কুরসী’  আস্‌মানসমূহ ও যমীন ব্যাপী এবং তাঁর জন্য ভারী নয় এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ। আর তিনিই হন উচ্চ, মহা মর্যাদাসম্পন্ন।
لا إِكراهَ فِى الدّينِ قَد تَبَيَّنَ الرُّشدُ مِنَ الغَىِّ فَمَن يَكفُر بِالطّٰغوتِ وَيُؤمِن بِاللَّهِ فَقَدِ استَمسَكَ بِالعُروَةِ الوُثقىٰ لَا انفِصامَ لَها وَاللَّهُ سَميعٌ عَليمٌ
2:256 কোন  জোর জবরদস্তী নেই ধর্মের মধ্যে; নিশ্চয় খুবই স্পষ্ট হয়েছে সত্য পথ ভ্রান্তি থেকে। সুতরাং যে শয়তানকে অমান্য করে এবং আল্লাহ্‌র উপর ঈমান আনে, সে এমন এক মজবুত গ্রন্থি ধারণ করেছে, যা কখনো খুলে যাবার নয়; এবং আল্লাহ্‌ শ্রোতা, জ্ঞাতা।
اللَّهُ وَلِىُّ الَّذينَ ءامَنوا يُخرِجُهُم مِنَ الظُّلُمٰتِ إِلَى النّورِ وَالَّذينَ كَفَروا أَولِياؤُهُمُ الطّٰغوتُ يُخرِجونَهُم مِنَ النّورِ إِلَى الظُّلُمٰتِ أُولٰئِكَ أَصحٰبُ النّارِ هُم فيها خٰلِدونَ
2:257  আল্লাহ্ মুসলমানদের অভিবাবক,  তাদেরকে  অন্ধকার    রাশি থেকে  আলোর দিকে বের   করে  আনেন  এবং  কাফিরদের   সাহায্যকারী   হচ্ছে  শয়তান।  তারা   তাদেরকে    আলো থেকে  অন্ধকার  রাশির  দিকে  বের  করে  নেয়।  এসব  লোক  দোযখবাসী।  এদেরকে  তা’তে  স্থায়ীভাবে থাকতে হবে।
أَلَم تَرَ إِلَى الَّذى حاجَّ إِبرٰهۦمَ فى رَبِّهِ أَن ءاتىٰهُ اللَّهُ المُلكَ إِذ قالَ إِبرٰهۦمُ رَبِّىَ الَّذى يُحيۦ وَيُميتُ قالَ أَنا۠ أُحيۦ وَأُميتُ قالَ إِبرٰهۦمُ فَإِنَّ اللَّهَ يَأتى بِالشَّمسِ مِنَ المَشرِقِ فَأتِ بِها مِنَ المَغرِبِ فَبُهِتَ الَّذى كَفَرَ وَاللَّهُ لا يَهدِى القَومَ الظّٰلِمينَ
2:258 হে মাহবুব! আপনি কি দেখেন নি তাকে, যে ইব্রাহীমের সাথে বিতর্ক করেছে তাঁর রব  সম্পর্কে,  এর    উপর   যে,  আল্লাহ্‌   তাকে   বাদশাহী  দিয়েছেন?   যখন   ইব্রাহীম  বললেন, ‘আমার রব তিনিই, যিনি জীবন দান করেন ও মৃতু ঘটান।’ সে বললো, ‘আমিও জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই।’ ইব্রাহীম বললেন, তাহলে, আল্লাহ্‌ সূর্য  উদিত  করেন পূর্ব দিক থেকে,   তুমি সেটাকে পশ্চিম  দিক থেকে নিয়ে  এসো।   অতঃপর হতবুদ্ধি হয়ে গেলো   কাফির। এবং আল্লাহ্‌ সৎপথ দেখান না অত্যাচারীদেরকে।
أَو كَالَّذى مَرَّ عَلىٰ قَريَةٍ وَهِىَ خاوِيَةٌ عَلىٰ عُروشِها قالَ أَنّىٰ يُحيۦ هٰذِهِ اللَّهُ بَعدَ مَوتِها فَأَماتَهُ اللَّهُ مِا۟ئَةَ عامٍ ثُمَّ بَعَثَهُ قالَ كَم لَبِثتَ قالَ لَبِثتُ يَومًا أَو بَعضَ يَومٍ قالَ بَل لَبِثتَ مِا۟ئَةَ عامٍ فَانظُر إِلىٰ طَعامِكَ وَشَرابِكَ لَم يَتَسَنَّه وَانظُر إِلىٰ حِمارِكَ وَلِنَجعَلَكَ ءايَةً لِلنّاسِ وَانظُر إِلَى العِظامِ كَيفَ نُنشِزُها ثُمَّ نَكسوها لَحمًا فَلَمّا تَبَيَّنَ لَهُ قالَ أَعلَمُ أَنَّ اللَّهَ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ
2:259 অথবা  ওই ব্যক্তির ন্যায়, যে   অতিক্রম করলো একটা জনপদের উপর দিয়ে এবং তা ভেঙ্গে পড়েছিলো সেগুলোর ছাদগুলোর উপর। বললো, ‘আল্লাহ্‌ এটাকে কীভাবে জীবিত করবেন  এটার  মৃত্যুর  পর?’  অতঃপর  আল্লাহ্‌  তাঁকে  মৃত     রাখলেন  একশ’  বছর।   তারপর পূনর্জীবিত করে দিলেন। বললেন, ‘তুমি এখানে কতোকাল অবস্থান করলে?’ আরয করলো, ‘সম্ভবত:   পূর্ণ দিন অথবা   কিছু কম।’  তিনি   বললেন,  ‘না,  বরং তোমার উপর একশ  বছর  অতিবাহিত হয়ে গেছে   এবং আপন খাদ্য-পানীয়ের দিকে দেখো,    এখনো  পর্যন্ত  দুর্গমন্ধময় হয়নি;   এবং  আপন  গাধার  প্রতি  তাকাও,  যার  অস্থিগুলো  পর্যন্ত  সঠিক  অবস্থায়   থাকে  নি! এবং  এটা এজন্য যে,  আমি তোমাকে মানুষের জন্য  নিদর্শন করবো;  এবং ওই অস্থিগুলোর দিকে  দেখো, কিভাবে সেগুলোর   উথান প্রদান   করি, অতঃপর সেগুলোকে মাংসাবৃত করি।’ যখন এ ঘটনা তাঁর নিকট সুস্পষ্ট  হয়ে গেলো, (তখন) বললেন, ‘আমি খুব ভালভাবে  জানি যে, আল্লাহ্‌ সবকিছু করতে পারেন।’
وَإِذ قالَ إِبرٰهۦمُ رَبِّ أَرِنى كَيفَ تُحىِ المَوتىٰ قالَ أَوَلَم تُؤمِن قالَ بَلىٰ وَلٰكِن لِيَطمَئِنَّ قَلبى قالَ فَخُذ أَربَعَةً مِنَ الطَّيرِ فَصُرهُنَّ إِلَيكَ ثُمَّ اجعَل عَلىٰ كُلِّ جَبَلٍ مِنهُنَّ جُزءًا ثُمَّ ادعُهُنَّ يَأتينَكَ سَعيًا وَاعلَم أَنَّ اللَّهَ عَزيزٌ حَكيمٌ
2:260 এবং   যখন  আরয করলো ইব্রাহীম, ‘হে  আমার  রব! আমাকে দেখিয়ে  দাও, তুমি কিভাবে মৃতকে জীবিত করবে।’ এরশাদ করলেন, ‘তোমার কি নিশ্চিত বিশ্বাস নেই?’ আরয করলো, ‘নিশ্চিত    বিশ্বাস   কেন থাকবে না?    কিন্তু  আমি  এই চাই যে, আমার অন্তরে প্রশান্তি এসে  যাক!’  এরশাদ করলেন,  ‘তবে    আচ্ছা!   চারটা পাখী নিয়ে  তোমার  সাথে নেড়েচেড়ে নাও।    অতঃপর    সেগুলোর    একেক    খণ্ড    প্রতিটি    পাহাড়ের    উপর    রেখে    দাও,    অতঃপর  সেগুলোকে   আহ্বান    করো,   সেগুলো    তোমার   নিকট    চলে    আসবে    নিজ   পায়ে   দৌঁড়াতে   দৌঁড়াতে এবং জেনে রেখো যে, আল্লাহ্‌ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
مَثَلُ الَّذينَ يُنفِقونَ أَموٰلَهُم فى سَبيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَت سَبعَ سَنابِلَ فى كُلِّ سُنبُلَةٍ مِا۟ئَةُ حَبَّةٍ وَاللَّهُ يُضٰعِفُ لِمَن يَشاءُ وَاللَّهُ وٰسِعٌ عَليمٌ
2:261  তাদের  উপমা,  যারা  আপন  সম্পদ  আল্লাহ্‌র  পথে  ব্যয়  করে  সেই  শস্য  বীজের  মতো,  যা   উৎপাদন করে  সাতটা শীষ।   প্রত্যেক  শীষে একশ’   শস্যকণা;  এবং আল্লাহ্‌   তা থেকেও অধিক বৃদ্ধি করেন যার জন্য চান। আর আল্লাহ্‌ প্রাচুর্যময়, জ্ঞানময়।
الَّذينَ يُنفِقونَ أَموٰلَهُم فى سَبيلِ اللَّهِ ثُمَّ لا يُتبِعونَ ما أَنفَقوا مَنًّا وَلا أَذًى لَهُم أَجرُهُم عِندَ رَبِّهِم وَلا خَوفٌ عَلَيهِم وَلا هُم يَحزَنونَ
2:262  ওই সব  লোক   যারা  নিজ  সম্পদ আল্লাহ্‌র পথে ব্যয় করে,  অতঃপর   ব্যয়  করার পর  না  খোঁটা  দেয়,   না  ক্লেশ  দেয়,   তাদের  প্রতিদান     তাদের    রবের  নিকট  রয়েছে   এবং তাদের না আছে কোন আশংকা না আছে কিছু দুঃখ।
قَولٌ مَعروفٌ وَمَغفِرَةٌ خَيرٌ مِن صَدَقَةٍ يَتبَعُها أَذًى وَاللَّهُ غَنِىٌّ حَليمٌ
2:263 ভালো কথা  বলা এবং   ক্ষমা করা  ওই  সাদক্বাহ্‌ অপেক্ষা শ্রেয়তর,  যার  পর ক্লেশ দেয়া হয়। আর আল্লাহ্‌ বেপরোয়া (অভাবমুক্ত), সহনশীল।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا لا تُبطِلوا صَدَقٰتِكُم بِالمَنِّ وَالأَذىٰ كَالَّذى يُنفِقُ مالَهُ رِئاءَ النّاسِ وَلا يُؤمِنُ بِاللَّهِ وَاليَومِ الءاخِرِ فَمَثَلُهُ كَمَثَلِ صَفوانٍ عَلَيهِ تُرابٌ فَأَصابَهُ وابِلٌ فَتَرَكَهُ صَلدًا لا يَقدِرونَ عَلىٰ شَيءٍ مِمّا كَسَبوا وَاللَّهُ لا يَهدِى القَومَ الكٰفِرينَ
2:264 হে ঈমানদারগণ! আপন দানকে নিষ্ফল করে দিওনা খোঁটা দিয়ে এবং ক্লেশ দিয়ে, ওই   ব্যক্তির    ন্যায়,   যে     আপন    ধন    লোক-দেখানোর   জন্য   ব্যয়   করে    এবং    আল্লাহ্‌   ও  ক্বিয়ামত-দিবসের  উপর ঈমান   রাখে না।  সুতরাং তার  উপমা   তেমনই, যেমন একটা মসৃণ পাথর যার উপর মাটি রয়েছে, এখন সেটার উপর প্রবল বারিপাত হলো, যা সেটাকে নিরেট পাথর করে ছাড়লো।  (তারা) আপন উপার্জন   থেকে কোন জিনিষই  (তাদের) আয়ত্বে পাবে  না। আর আল্লাহ্‌ কাফিরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।
وَمَثَلُ الَّذينَ يُنفِقونَ أَموٰلَهُمُ ابتِغاءَ مَرضاتِ اللَّهِ وَتَثبيتًا مِن أَنفُسِهِم كَمَثَلِ جَنَّةٍ بِرَبوَةٍ أَصابَها وابِلٌ فَـٔاتَت أُكُلَها ضِعفَينِ فَإِن لَم يُصِبها وابِلٌ فَطَلٌّ وَاللَّهُ بِما تَعمَلونَ بَصيرٌ
2:265  এবং তাদের   উপমা,  যারা  আপন সম্পদ আল্লাহ্‌র  সন্তুষ্টির   প্রত্যাশার মধ্যে   এবং  নিজেদের আত্মা দৃঢ় করার জন্য ব্যয়  করে, ওই বাগানের ন্যায়, যা কোন উচ্চ ভূমির উপর (অবস্থিত), সেটার উপর  প্রবল বারিপাত হলো,  এর ফলে দ্বিগুণ ফলমূল  জন্মালো। অতঃপর তাতে   যদি  প্রবল   বারিপাত   না  হয়  তবুও  শিশিরই   যথেষ্ট।   এবং  আল্লাহ্‌   তোমাদের   কর্ম  প্রত্যক্ষ করেছেন।
أَيَوَدُّ أَحَدُكُم أَن تَكونَ لَهُ جَنَّةٌ مِن نَخيلٍ وَأَعنابٍ تَجرى مِن تَحتِهَا الأَنهٰرُ لَهُ فيها مِن كُلِّ الثَّمَرٰتِ وَأَصابَهُ الكِبَرُ وَلَهُ ذُرِّيَّةٌ ضُعَفاءُ فَأَصابَها إِعصارٌ فيهِ نارٌ فَاحتَرَقَت كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الءايٰتِ لَعَلَّكُم تَتَفَكَّرونَ
2:266  তোমাদের   কেউ    কি  এটা  পছন্দ  করবে  যে,  তার  নিকট    একটা  বাগান  থাকবে খেজুর ও আঙ্গুরের, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত, যাতে তার জন্য সব ধরনের ফলমূল থাকে আর সে বার্ধক্যে উপনীত হয় এবং তার কর্মাক্ষম (দুর্বল) সন্তান-সন্ততি থাকে, তারপর আপতিত হলো এর উপর এক ঘূর্ণিঝড়, যার মধ্যে ছিলো আগুন, অতঃপর তা জ্বলে গেলো? এভাবেই আল্লাহ্‌ তোমাদের  জন্য  সুস্পষ্টরুপে ব্যক্ত করেন তাঁর নিদর্শনসমূহ, যাতে তোমরা ধ্যান দাও।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا أَنفِقوا مِن طَيِّبٰتِ ما كَسَبتُم وَمِمّا أَخرَجنا لَكُم مِنَ الأَرضِ وَلا تَيَمَّمُوا الخَبيثَ مِنهُ تُنفِقونَ وَلَستُم بِـٔاخِذيهِ إِلّا أَن تُغمِضوا فيهِ وَاعلَموا أَنَّ اللَّهَ غَنِىٌّ حَميدٌ
2:267  হে ঈমানদারগণ!  নিজেদের পবিত্র  উপার্জনগুলো থেকে কিছু  দান করো এবং  তা থেকে, যা  আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে উৎপাদন করেছি আর নিছক নিকৃষ্ট বস্তুর ইচ্ছা করো   না  যে,   প্রদান  করলে  তা  থেকে  করে  থাকো,  আর  তোমরা  পেলে  গ্রহণ  করবে  না যতক্ষণ   পর্যন্ত   তাতে   চোখ   বন্ধ   করবে    না।   আর   জেনে    রেখো   যে,   আল্লাহ্‌    বেপরোয়া, প্রশংসিত।
الشَّيطٰنُ يَعِدُكُمُ الفَقرَ وَيَأمُرُكُم بِالفَحشاءِ وَاللَّهُ يَعِدُكُم مَغفِرَةً مِنهُ وَفَضلًا وَاللَّهُ وٰسِعٌ عَليمٌ
2:268  শয়তান তোমাদেরকে ভয় দেখায়  দারিদ্রের আর নির্দেশ  দেয়  লজ্জাহীনতার এবং  আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ক্ষমা ও অনুগ্রহের; আর আল্লাহ্‌ প্রাচুর্যময়, জ্ঞানময়।
يُؤتِى الحِكمَةَ مَن يَشاءُ وَمَن يُؤتَ الحِكمَةَ فَقَد أوتِىَ خَيرًا كَثيرًا وَما يَذَّكَّرُ إِلّا أُولُوا الأَلبٰبِ
2:269 আল্লাহ্‌ হিকমত প্রদান করেন যাকে চান, এবং যে ব্যক্তি হিকমত প্রদত্ত হয়েছে সে প্রভূত কল্যাণ প্রাপ্ত হয়েছে আর উপদেশ মানে না কিন্তু বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরা।
وَما أَنفَقتُم مِن نَفَقَةٍ أَو نَذَرتُم مِن نَذرٍ فَإِنَّ اللَّهَ يَعلَمُهُ وَما لِلظّٰلِمينَ مِن أَنصارٍ
2:270  এবং  তোমরা   যা  ব্যয়  করবে  কিংবা  মান্নত   করবে  আল্লাহ্‌র  নিকট  সেটার  খবর আছে; এবং অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।
إِن تُبدُوا الصَّدَقٰتِ فَنِعِمّا هِىَ وَإِن تُخفوها وَتُؤتوهَا الفُقَراءَ فَهُوَ خَيرٌ لَكُم وَيُكَفِّرُ عَنكُم مِن سَيِّـٔاتِكُم وَاللَّهُ بِما تَعمَلونَ خَبيرٌ
2:271 যদি দান-খায়রাত প্রকাশ্যে করো তবে তা কতোই ভালো কথা আর যদি গোপনে অভাবগ্রস্থদেরকে দান করো তবে তা তোমাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম। এবং এতে তোমাদের কিছু পাপ মোচন হবে। আর আল্লাহ্‌ তোমাদের কার্যাদি সম্পর্কে অবহিত।
لَيسَ عَلَيكَ هُدىٰهُم وَلٰكِنَّ اللَّهَ يَهدى مَن يَشاءُ وَما تُنفِقوا مِن خَيرٍ فَلِأَنفُسِكُم وَما تُنفِقونَ إِلَّا ابتِغاءَ وَجهِ اللَّهِ وَما تُنفِقوا مِن خَيرٍ يُوَفَّ إِلَيكُم وَأَنتُم لا تُظلَمونَ
2:272  তাদেরকে  পথ  প্রদান  করা  (হে  হাবিব!)  আপনার  দায়িত্বে  অপরিহার্য  নয়।  হ্যাঁ,  আল্লাহ্‌ পথ প্রদান করেন যাকে চান। আর তোমরা যে উত্তম বস্তু দান করো, তা তোমাদেরই মঙ্গল এবং তোমাদের ব্যয় করা উচিত নয়, কিন্তু আল্লাহ্‌রই সন্তুষ্টি চাওয়ার উদ্দেশ্যে আর যে সম্পদ দেবে, তোমাদেরকে পুরোপুরি (বিনিময়) দেয়া হবে, কম দেয়া হবে না।
لِلفُقَراءِ الَّذينَ أُحصِروا فى سَبيلِ اللَّهِ لا يَستَطيعونَ ضَربًا فِى الأَرضِ يَحسَبُهُمُ الجاهِلُ أَغنِياءَ مِنَ التَّعَفُّفِ تَعرِفُهُم بِسيمٰهُم لا يَسـَٔلونَ النّاسَ إِلحافًا وَما تُنفِقوا مِن خَيرٍ فَإِنَّ اللَّهَ بِهِ عَليمٌ
2:273  ওই  দারিদ্র    লোকদের  জন্য  যারা   আল্লাহ্‌র  পথে   অবরুদ্ধ   হয়ে  পড়েছে,  ভূপৃষ্ঠে  চলতে   পারে  না;    অজ্ঞ  লোকেরা  তাদেরকে  ধনী    বুঝে  থাকে  (যাচ্ঞা  করে  থেকে)  বিরত   থাকার কারণে। তুমি তাদেরকে তাদের বাহ্যিক  আকৃতি দেখে চিনে  নেবে। (তারা) মানুষের নিকট  যাচ্ঞা  করে  না  যাতে অতি   কাকুতি মিনতি করতে  হয়। আর তোমরা যা দান  করো  আল্লাহ্‌ তা জানেন।
الَّذينَ يُنفِقونَ أَموٰلَهُم بِالَّيلِ وَالنَّهارِ سِرًّا وَعَلانِيَةً فَلَهُم أَجرُهُم عِندَ رَبِّهِم وَلا خَوفٌ عَلَيهِم وَلا هُم يَحزَنونَ
2:274 ওই সব লোক, যারা    নিজেদের   ধন সম্পদ দান করে রাতে  ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে    তাদের    জন্য   তাদের   পূণ্যফল  রয়েছে   তাদের  রবের   নিকট।   তাদের  না   কোন  আশংকা আছে, না কোন দুঃখ।
الَّذينَ يَأكُلونَ الرِّبوٰا۟ لا يَقومونَ إِلّا كَما يَقومُ الَّذى يَتَخَبَّطُهُ الشَّيطٰنُ مِنَ المَسِّ ذٰلِكَ بِأَنَّهُم قالوا إِنَّمَا البَيعُ مِثلُ الرِّبوٰا۟ وَأَحَلَّ اللَّهُ البَيعَ وَحَرَّمَ الرِّبوٰا۟ فَمَن جاءَهُ مَوعِظَةٌ مِن رَبِّهِ فَانتَهىٰ فَلَهُ ما سَلَفَ وَأَمرُهُ إِلَى اللَّهِ وَمَن عادَ فَأُولٰئِكَ أَصحٰبُ النّارِ هُم فيها خٰلِدونَ
2:275 ওই   সব   লোক,  যারা   সুদ খায়   ক্বিয়ামতের দিন (তারা) দাঁড়াবে  না, কিন্তু যেমন দাঁড়ায় সেই ব্যক্তি যাকে শয়তান (জিন) স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে। এটা এ জন্য  যে, তারা বলেছে, ‘বেচাকেনাও তো সুদেরই মতো’। আর আল্লাহ্‌ হালাল করেছেন বেচা কেনাকে এবং হারাম  করেছেন সুদকে।  সুতরাং যার কাছে তার  রবের নিকট থেকে উপদেশ এসেছে আর  সে  বিরত    রয়েছে,    তবে  তার     জন্য   হালাল   যা    পূর্বে  নিয়েছিলো;   এবং  তার  কাজ আল্লাহ্‌রই  সোপর্দকৃত।  আর যে এখন  এমন আচরণ  করবে, তবে তারা   দোযখবাসী,  তারা সেখানে দীর্ঘস্থায়ী হবে।
يَمحَقُ اللَّهُ الرِّبوٰا۟ وَيُربِى الصَّدَقٰتِ وَاللَّهُ لا يُحِبُّ كُلَّ كَفّارٍ أَثيمٍ
2:276    আল্লাহ্‌  ধ্বংস  করেন  সুদকে  এবং   বর্ধিত   করেন   দানকে।  আর   আল্লাহ্‌র  নিকট  পছন্দনীয় নয় কোন অকৃতজ্ঞ, মহাপাপী।
إِنَّ الَّذينَ ءامَنوا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَأَقامُوا الصَّلوٰةَ وَءاتَوُا الزَّكوٰةَ لَهُم أَجرُهُم عِندَ رَبِّهِم وَلا خَوفٌ عَلَيهِم وَلا هُم يَحزَنونَ
2:277  নিশ্চয়    ওই   সব  লোক,   যারা  ঈমান  এনেছে,     সৎকাজ  করেছে,   নামায   কায়েম করেছে এবং যাকাত দিয়েছে,  তাদের  পুরষ্কার  তাদের রবের নিকট রয়েছে আর তাদের না কোন শংকা থাকবে, না কোন দুঃখ।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَروا ما بَقِىَ مِنَ الرِّبوٰا۟ إِن كُنتُم مُؤمِنينَ
2:278 হে ঈমানদারগণ!  আল্লাহ্‌কে  ভয় করো  এবং   ছেড়ে  দাও যা বাকী রয়েছে সুদের, যদি মুসলমান হও।
فَإِن لَم تَفعَلوا فَأذَنوا بِحَربٍ مِنَ اللَّهِ وَرَسولِهِ وَإِن تُبتُم فَلَكُم رُءوسُ أَموٰلِكُم لا تَظلِمونَ وَلا تُظلَمونَ
2:279 অতঃপর যদি তোমরা   অনুরুপ  না করতে পারো,  তবে নিশ্চিত বিশ্বাস করে নাও,  আল্লাহ্‌ ও আল্লাহ্‌র রসূলের   সাথে যুদ্ধের  এবং  যদি তোমরা   তাওবা  করো, তবে নিজেদের মূলধন নিয়ে নাও। না তোমরা কারো ক্ষতি সাধন করবে, না তোমাদের ক্ষতি হবে।
وَإِن كانَ ذو عُسرَةٍ فَنَظِرَةٌ إِلىٰ مَيسَرَةٍ وَأَن تَصَدَّقوا خَيرٌ لَكُم إِن كُنتُم تَعلَمونَ
2:280 এবং যদি  ঋণ  গ্রহীতা অভাবগ্রস্থ হয়, তবে তাকে অবকাশ দাও  সচ্ছলতা (আসা) পর্যন্ত।  এবং  ঋণ  তার    উপর   সম্পূর্ণ   ছেড়ে  দেয়া  তোমাদের  জন্য  আরো  কল্যাণকর,  যদি জানো।
وَاتَّقوا يَومًا تُرجَعونَ فيهِ إِلَى اللَّهِ ثُمَّ تُوَفّىٰ كُلُّ نَفسٍ ما كَسَبَت وَهُم لا يُظلَمونَ
2:281   এবং  ভয়  করো  ওই  দিনকে,   যেদিন     আল্লাহ্‌র   দিকে   প্রর্ত্যাবর্তন     করবে,   আর প্রত্যেক আত্মাকে  তার  কর্মফল পুরোপুরি     প্রদান  করা হবে এবং  তাদের  উপর  যুলুম  করা  হবে না।
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا إِذا تَدايَنتُم بِدَينٍ إِلىٰ أَجَلٍ مُسَمًّى فَاكتُبوهُ وَليَكتُب بَينَكُم كاتِبٌ بِالعَدلِ وَلا يَأبَ كاتِبٌ أَن يَكتُبَ كَما عَلَّمَهُ اللَّهُ فَليَكتُب وَليُملِلِ الَّذى عَلَيهِ الحَقُّ وَليَتَّقِ اللَّهَ رَبَّهُ وَلا يَبخَس مِنهُ شَيـًٔا فَإِن كانَ الَّذى عَلَيهِ الحَقُّ سَفيهًا أَو ضَعيفًا أَو لا يَستَطيعُ أَن يُمِلَّ هُوَ فَليُملِل وَلِيُّهُ بِالعَدلِ وَاستَشهِدوا شَهيدَينِ مِن رِجالِكُم فَإِن لَم يَكونا رَجُلَينِ فَرَجُلٌ وَامرَأَتانِ مِمَّن تَرضَونَ مِنَ الشُّهَداءِ أَن تَضِلَّ إِحدىٰهُما فَتُذَكِّرَ إِحدىٰهُمَا الأُخرىٰ وَلا يَأبَ الشُّهَداءُ إِذا ما دُعوا وَلا تَسـَٔموا أَن تَكتُبوهُ صَغيرًا أَو كَبيرًا إِلىٰ أَجَلِهِ ذٰلِكُم أَقسَطُ عِندَ اللَّهِ وَأَقوَمُ لِلشَّهٰدَةِ وَأَدنىٰ أَلّا تَرتابوا إِلّا أَن تَكونَ تِجٰرَةً حاضِرَةً تُديرونَها بَينَكُم فَلَيسَ عَلَيكُم جُناحٌ أَلّا تَكتُبوها وَأَشهِدوا إِذا تَبايَعتُم وَلا يُضارَّ كاتِبٌ وَلا شَهيدٌ وَإِن تَفعَلوا فَإِنَّهُ فُسوقٌ بِكُم وَاتَّقُوا اللَّهَ وَيُعَلِّمُكُمُ اللَّهُ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيءٍ عَليمٌ
2:282  হে  ঈমানদারগণ!  যখন   তোমরা    একটা  নির্দ্ধারিত  সময়সীমা  পর্যন্ত  কোন  ঋণের লেনদেন  করো, তখন তা লিখে  নাও এবং উচিত  যেন  তোমাদের   মধ্যে কোন   লেখক ঠিক ঠিক লিখে আর লেখক যেন লিখতে অস্বীকার না করে যেমন তাকে আল্লাহ্‌ শিক্ষা দিয়েছেন। সুতরাং তার   সেটা লিখে  দেয়া  উচিত এবং  যার  উপর প্রাপ্য   বর্তায়  সে   যেন   লিখিয়ে যায় আর  যেন  আল্লাহ্‌কে  ভয়  করে,   যিনি   তার  রব;  এবং  প্রাপ্য  থেকে  কিছু  যেন  না   কমায়।  অতঃপর যার উপর প্রাপ্য  বর্তায় সে যদি নির্বোধ অথবা দূর্বল  হয় কিংবা লিখতে না পারে, তবে  তার  অভিভাবক  ন্যায্যভাবে   লিখিয়ে  দেবে  এবং  দু’জন    সাক্ষী   করে  নাও  নিজেদের পুরুষদের মধ্য হতে। অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না থাকে তবে একজন পুরুষ এবং দু’জন স্ত্রীলোক; এমন সাক্ষী যাদেরকে পছন্দ করো, যাতে স্ত্রীলোকদ্বয়ের মধ্যে একজন ভুলে গেলে সেই  একজনকে অপরজন  স্মরণ করিয়ে দেয় আর সাক্ষীদের যখন ডাকা হয় তখন  আসতে যেন অস্বীকার না করে এবং এটাকে বিরক্তিবোধ মনে  করো না যে, ঋণ ছোট হোক  কিংবা বড়, সেটার মেয়াদ পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করে নিতে। এটা আল্লাহ্‌র নিকট সঠিক ন্যায়ের কথা এর মধ্যে সাক্ষ্য খুব ঠিক থাকবে এবং এটা এ থেকে নিকটতর যে, তোমাদের সন্দেহের উদ্রেক হবে না;  কিন্তু    কোন নগদ ব্যবসা হাতে হাতে  সম্পন্ন  হলে তা  না লিখার   তোমাদের উপর গুনাহ্‌ নেই। আর   যখন  বেচাকেনা  করো তখন  সাক্ষী করে  নাও, এবং না  কোন  লেখককে ক্ষতিগ্রস্থ করা হবে, না সাক্ষীকে (কিংবা না লেখক ক্ষতিগ্রস্থ করবে, না সাক্ষী) এবং তোমরা যারা  এমন   করো,   তবে   তোমাদের   পাপ  হবে    আর    আল্লাহ্‌কে  ভয়   করো    এবং  আল্লাহ্‌  তোমাদেরকে শিক্ষা দেন। আর আল্লাহ্‌ সব কিছু জানেন।
وَإِن كُنتُم عَلىٰ سَفَرٍ وَلَم تَجِدوا كاتِبًا فَرِهٰنٌ مَقبوضَةٌ فَإِن أَمِنَ بَعضُكُم بَعضًا فَليُؤَدِّ الَّذِى اؤتُمِنَ أَمٰنَتَهُ وَليَتَّقِ اللَّهَ رَبَّهُ وَلا تَكتُمُوا الشَّهٰدَةَ وَمَن يَكتُمها فَإِنَّهُ ءاثِمٌ قَلبُهُ وَاللَّهُ بِما تَعمَلونَ عَليمٌ
2:283  আর যদি তোমরা  সফরে  থাকো এবং লেখক  না পাও,  তবে বন্ধক  থাকবে হাতে (অধিকারে)  প্রদত্ত আর যদি তোমাদের    মধ্যে  একজনের  উপর  অপরের  আস্থা থাকে, তবে যাকে সে আমানতদার  মনে  করেছিলো,  সে যেন স্বীয়   আমানত  প্রর্ত্যার্পণ  করে দেয়   এবং  (যেন)  আল্লাহ্‌কে  ভয় করে, যিনি  তার  রব।   আর সাক্ষ্য গোপন   করো  না; এবং যে সাক্ষ্য  গোপন  করবে,  তবে  ভিতরের  দিক  থেকে   তার  অন্তর   গুনাহ্‌গার;  আর  আল্লাহ্‌  তোমাদের  কার্যাদি সম্পর্কে জানেন।
لِلَّهِ ما فِى السَّمٰوٰتِ وَما فِى الأَرضِ وَإِن تُبدوا ما فى أَنفُسِكُم أَو تُخفوهُ يُحاسِبكُم بِهِ اللَّهُ فَيَغفِرُ لِمَن يَشاءُ وَيُعَذِّبُ مَن يَشاءُ وَاللَّهُ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ
2:284   আল্লাহ্‌রই,   যা    কিছু  আস্‌মানসমূহে  রয়েছে,  এবং  যা      কিছু  যমীনে।   আর  যদি  তোমরা   প্রকাশ   করো   যা   কিছু   তোমাদের    অন্তরে   রয়েছে   কিংবা   গোপন   করো,    আল্লাহ্‌ তোমাদের থেকে সেটার হিসাব নেবেন। অতঃপর যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন আর যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেবেন। এবং আল্লাহ্‌ প্রত্যেক বস্তুর উপর শক্তিমান।
ءامَنَ الرَّسولُ بِما أُنزِلَ إِلَيهِ مِن رَبِّهِ وَالمُؤمِنونَ كُلٌّ ءامَنَ بِاللَّهِ وَمَلٰئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ لا نُفَرِّقُ بَينَ أَحَدٍ مِن رُسُلِهِ وَقالوا سَمِعنا وَأَطَعنا غُفرانَكَ رَبَّنا وَإِلَيكَ المَصيرُ
2:285  রসূল   ঈমান   এনেছেন  সেটার   উপর,   যা    তাঁর   রবের   নিকট  থেকে    তাঁর   উপর অবতীর্ণ  হয়েছে  এবং   মু’মিনগণও।   সবাই  মেনে  নিয়েছে  আল্লাহ্‌,  তাঁর   ফিরিশ্‌তাগণ,  তাঁর কিতাবসমুহ  এবং  তাঁর  রসূলগণকে   এ  কথা  বলে  যে,  ‘আমরা   তাঁর  কোন   রসুলের    উপর ঈমান আনার  মধ্যে তারতম্য করিনা’ আর আরয করেছে- ‘আমরা  শুনেছি ও  মান্য করেছি। তোমার ক্ষমা হোক!’ হে আমাদের রব এবং তোমারই দিকে প্রর্ত্যাবর্তন করতে হবে।’
لا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفسًا إِلّا وُسعَها لَها ما كَسَبَت وَعَلَيها مَا اكتَسَبَت رَبَّنا لا تُؤاخِذنا إِن نَسينا أَو أَخطَأنا رَبَّنا وَلا تَحمِل عَلَينا إِصرًا كَما حَمَلتَهُ عَلَى الَّذينَ مِن قَبلِنا رَبَّنا وَلا تُحَمِّلنا ما لا طاقَةَ لَنا بِهِ وَاعفُ عَنّا وَاغفِر لَنا وَارحَمنا أَنتَ مَولىٰنا فَانصُرنا عَلَى القَومِ الكٰفِرينَ
2:286 আল্লাহ্‌ কোন আত্মার উপর বোঝা অর্পন করেন না, কিন্তু তার সাধ্য পরিমাণ। তার জন্য কল্যাণ- যেই  পুণ্য সে  উপার্জন করেছে, আর  তার জন্য ক্ষতি- যেই মন্দ সে  উপার্জন করেছে। হে আমাদের  রব! আমাদেরকে পাকড়াও করো  না  যদি আমরা  বিস্মৃত  হই কিংবা ভুল   করি।   হে   আমাদের  রব!   এবং   উপর  ভারী  বোঝা    রেখোনা,   যেমন   তুমি   আমাদের পূর্ববর্তীদের  উপর  রেখেছিলে।   হে  আমাদের   রব!  এবং  আমাদের  উপর  ঐ    বোঝা   অর্পণ করো     না,     যা   বহন     করার   শক্তি   আমাদের   নেই;    আর   আমাদের   পাপ    মোচন   করো, আমাদেরকে   ক্ষমা   করো এবং    আমাদের উপর দয়া করো।  তুমি আমাদের মুনিব।  সুতরাং কাফিরদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করো। 
 
Top