"সাহাবাদের খা'তায়ে ইজতিহাদে আহলুস সুন্নাহের ফায়সালা এবং শিয়া, মুতা'জিলাদের মিথ্যাচার " 
🖋Sifat Sultan Alif
____________________________
হক প্রচার এবং প্রসার করা তথাপি তা নিজেদের জীবনে প্রতিফলিত করার শিক্ষা আমরা যাদের কাছ থেকে পেয়েছি ওনারা হলেন পবিত্র আহলে বায়েত আলাইহিসালাম। আহলে বায়েত আলাইহিসালামের শিক্ষাই ছিলো সদাসর্বদা সত্যকে গ্রহণ করা তথাপি বরন করা সর্বোচ্চ দিয়ে। যেমনটা সাইয়্যিদুশ শোহাদা ইমামে আলী মকাম আলাইহিসালাম শাহাদাতকে কবুল করার মধ্যে করেছেন। যে কারবালা কূফাতে সংঘটিত হয়েছে, সে কারবালা পৃথিবীর আর কোথাও সংঘটিত হয়নি, কেয়ামত তক হবেওনা। ইসলামের জন্য যার বা যাদের অবদান অস্বীকার করা মোটেই কাম্য নই তিনিই ইমাম হোসাঈন আলাইহিসালাম এবং সম্মানিত আহলে বায়েত আলাইহিসালাম। অতএব ওনাদের সম্মান মর্যাদা মানাকেব খাছায়েছ অবশ্যই উম্মতে মুহাম্মদীর উপর জিকির তথা চর্চা করা বরংচ তাদের অনুসরণ, অনুকরণ করা ফরজ। তদ্রূপ দ্বীন প্রতিষ্ঠা এবং দ্বীনি আহকাম প্রচার, প্রসারের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার পবিত্র নবুয়াতের আলো চারিদিকে প্রজ্বলিত করতে যারা অবদান বেশুমার তাঁরা হলেন আসহাবে আজমাঈন রাযি:। মূলত আমার এই লিখাটি প্রকাশ করার মূল উদ্দেশ্য ঐ'সব  ব্যক্তির বিবেকে আঘাত করা যাদের রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামার শিখিয়ে দেয়া নীতি আদর্শ, আহলে বায়েত আলাইহিসালাম এবং আসহাবে আজমাঈন রাযি: দের, সলফে সলেহীন এক কথায় আহলুস সুন্নাহের মানহাজ তথা পথ ও মত হতে বিচ্যুতি ঘটেছে। তাদের কর্মকাণ্ড নিয়েই আজকের লিখা। বর্তমান সময়ে এমন কিছু ব্যক্তিবাদের আবির্ভাব ঘটেছে যারা অনলাইন, অফলাইনে খুব জোরেশোরে সাহাবা বিদ্বেষী বক্তব্য প্রচারকার্যে ব্যস্ত। ওদের দিকে গভীর দৃষ্টিদান করলে দু'রকমের বিষয় পরিলক্ষিত হয়। 
প্রথমত, ওরা জোরেশোরে আহলে বায়েত শান, শওকত মানাকেব খাছায়েছ মানুষের মাঝে প্রচারিত করার সুবাদে মানুষের মাঝে তাদের একটা গ্রহণযোগ্য অবস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছে।
দ্বিতীয়ত, আহলে বায়েত দের সাথে অন্যান্য আসহাবে আজমাঈ দের মাঝে সংঘটিত এ'খতেলাফাত তথা খা'তায়ে ইজতেহাদী নিয়ে ইতিহাসের কিছু বক্তব্য কর্তন করে তা বিকৃতরূপে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে ঐ'সব সাহাবাদের কট্টর সমালোচনা এবং গালাগাল দেয়ার রীতি সহজেই মানুষের মাঝে চালু করে দিয়েছে। ওরা সফলও হয়েছে অনেকাংশে। মূলত এটি শিয়া, মুতা'জিলাদের লক্ষণ। যেমন, 

ইবনে কাসীর রহঃ লিখেছেন - 

وقول المعتزلة: الصحابة عدول إلا من قاتل علياً -: قول باطل مرذول ومردود.

আর মু’তাজিলাদের কথা যে, সাহাবায়ে কেরামগণ ন্যায়নিষ্ঠ তবে যারা হযরত আলী রাঃ এর সাথে যারা যুদ্ধ করেছেন তারা ন্যায়নিষ্ঠ নন: তাদের এ দাবীটি বাতিল, ঘৃণিত এবং অগ্রহণীয়। [আলবায়িছুল হাছীছ ইলা ইখতিছারি উলুমিল হাদীস, ইবনে কাছীরকৃত-১৮২, ১৮১]

কোন আসহাবে আজমাঈন রাযি:কে সমালোচনা করা যাবেনা হাদীসে ঘোষনার পরও কারা সেই নাফরমান.! যারা হাদীসকে পেছনে লুকিয়ে ভ্রান্ত বিকৃত ইতিহাসকে দলিল বানিয়ে আসহাব রাযি: দের সমালোচনা করছে। ওরা এতটা মায়াকান্না করে যে শিয়া, রাফেদ্বী, মুতা'জিলাদের মত হাই হোসেন হাই হোসেন জিকির করে করে আসহাব রাযি:দের গালি দেয়। শিয়া, রাফেদ্বী, মুতা'জিলা সম্প্রদায় যেমন আহলে বায়েত আলাইহিসালামদের মহব্বত করে তেমন সুন্নিরাও করে। কিন্তু ওদের মহব্বত আর আমাদের মহব্বতে পার্থক্য শুধু এক জায়গায় তা হলো ওরা মহব্বত করে সাথে আসহাব আজমাঈন রাযি: দের গালিগালাজ বা কট্টর সমালোচনা করে।

▶ইবনে আছীর তাদের সম্পর্কে লিখেন - 

وكل هذا جُرأة على السلف تخالف السنة، فإن ما جرى بينهم كان مبنيًا على الاجتهاد، وكل مجتهد مصيب، والمصيب واحد مثاب، والمخطئ معذور، لا تردُّ شهادته.

এসব পুরোটাই সালাফের বিপরীত স্পর্ধা প্রদর্শন এবং সুন্নাহ বিরোধী কাজ। কেননা, তাদের মাঝে যা কিছু সংঘটিত হয়েছে তা ছিল ইজতিহাদ নির্ভর। আর প্রতিটি মুজতাহিদই সওয়াব পায়। যিনি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারেন, তিনি সওয়াব পান, আর যিনি ভুল করেন, তারাও এতে মাজূর। তাদের সাক্ষ্য অগ্রহণীয় নয়। 
[জামেউল উসূল ফী আহাদিসির রাসূল, ইবনুল আছীর জাযারীকৃত-১/১৩৩, ১/৭৪]

কিন্তু আমরা আহলে বায়েত আলাইহিসালামদের যেমন ভালোবাসি তেমন আসহাব আজমাঈন রাযি: দের শ্রদ্ধা করি সম্মান করি, তাদের ইজ্জত, আবরুর দিকে আল্লাহকে ভয় করি। কিন্তু আহলে বায়েত আলাইহিসালামকে মহব্বত দেখিয়ে আসহাব আজমাঈনদের গালি দেয়া, সমালোচনা করা এটা বর্তমানে খুব গতানুগতিকভাবে আমাদের জাম'আতে বেড়ে গিয়েছে তা কিন্তু স্বীকার করতে হবে।
বর্তমান সময়ে প্রসঙ্গ একটাই আমীরে মুয়াবীয়া রাযি। কারো নিকট স্বীকৃত আবার কারো নিকট বিকৃত। আসুন জেনে নেই 

কাদের নিকট আমীরে মুয়াবীয়া সহ অন্যান্য উঁচুমাপের সাহাবাগণ বিকৃতঃ

وذهب جمهور المعتزلة إلى أن عائشة وطلحة والزبير ومعاوية. وجميع أهل العراق والشام فُسَّاق بقتالهم الإمام الحق

▶জমহুর মু’তাজিলারা হযরত আয়শা রাঃ, হযরত তালহা রাঃ, হযরত যুবায়ের রাঃ, হযরত মুয়াবিয়া রাঃ এবং ইরাক ও শামবাসীকে হযরত আলী রাঃ এর সাথে যুদ্ধ করার কারণে ফাসিক হিসেবে আখ্যায়িত করে। 
[জামেউল উসুল ফী আহাদিসির রাসূল, ইবনুল আছীর জাযারীকৃত-১/১৩৩, ১/৭৩]

▶ইবন আছীর রহ: বক্তব্যে স্পষ্টতর প্রতীয়মান হয় যে,
(১) মুতা'জিলা সম্প্রদায় ইজতেহাদী খা'তাকে হাতিয়ার বানিয়ে উম্মুল মুমীনিন আলাইহিসালাম, হজরতে তালহা রাযি:, হজরতে জুবাঈর রাযি: এবং আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এর কট্টর সমালোচনা, গালাগাল করে।
(২) ওদের এসব কর্মকাণ্ড  وكل هذا جُرأة على السلف تخالف السنة " সালাফের বিপরীত স্পর্ধা প্রদর্শন এবং সুন্নাহ বিরোধী কাজ। 
( ৩) সাহাবাদের মাঝে সংঘটিত ইখতেলাফ "  فإن ما جرى بينهم كان مبنيًا على الاجتهاد، وكل مجتهد مصيب، والمصيب واحد مثاب، والمخطئ معذور، لا تردُّ شهادته "
অর্থাৎ তাদের মাঝে যা কিছু সংঘটিত হয়েছে তা ছিল ইজতিহাদ নির্ভর। আর প্রতিটি মুজতাহিদই সওয়াব পায়। যিনি সঠিক সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারেন, তিনি সওয়াব পান, আর যিনি ভুল করেন, তারাও এতে মাজূর। তাদের সাক্ষ্য অগ্রহণীয় নয়। 
[জামেউল উসূল ফী আহাদিসির রাসূল, ইবনুল আছীর জাযারীকৃত-১/১৩৩, ১/৭৪]

অনেককেই বলতে শুনেছি কিছু ইতিহাস আছে যা বলা যায় না, না আলোচনা করা যায়। 
আমি ওদের এই বলার উপর আপত্তি রাখি।  আমীরে মুয়াবীয়া রাযি:এর এমন ইতিহাস নেই যে যারা কারণে তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন বা তাকে দুশমনে আহলে বায়ত আ: এর ইলজাম দেয়া যাবে। কিতাব দেখলে স্পষ্টতর হবে মুহাক্কীকগণ ইমাম মাত্র জঙ্গে সিফ্ফিনে খাতায়ে ইজতিহাদীতে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: ব্যাপারে চুপ থাকতে বলেছেন যেমন ইবনে আছীর রহ: বক্তব্য হতে পাওয়া যায়। কারণ স্বাভাবিকতা তিনি ইবনে আব্বাস রাযি: এর মতে মুজতাহিদ, ফক্বীহ সাহাবীদের মধ্যে। এটা ওনার খাতায়ে ইজতেহাদী বলে চুপ থাকাটা উত্তম বলেছেন আইম্মাগণ। তবেঁ এর বাইরে তানার বিষয়ে আর কোন ত্রুটি কোন ইমাম, মুজতাহিদ, সলফগণ ওয়াকেফ করেননি। 

▶আমাদের হানাফী মাজহাবের সম্মানিত ইমাম নোমান ইবনু সাবিত আল কূফী রহ: ওনার " ফিকহে আকবর " লিখেন - 
 نتؤلاهم حميعا ولا نز كر الصحا بة الا بخير 
আমরা ( আহলে সুন্নাত) সকল সাহাবীকে ভালবাসি এবং তাদেরকে প্রশংসা সহকারে স্মরণ করি।

▶এর ব্যাখ্যায় শরহে ফিক্বহে আকবরে ইমাম মোল্লা আলী কারী হানাফী রহ:লিখেন - 
وان صدر من بعضحم بعض ما صدر فی صورة شر فانه كان عن اجتحاد ولم يكن علی وجه فساد .
যদিওবা, কোন কোন সাহাবি থেকে এমন কিছু বিষয় প্রকাশ পেয়েছে, যা বাহ্যত দেখতে মন্দ মনে হয়,কিন্তু এগুলো ইজতিহাদের কারণে হয়েছে।ফ্যাসাদ সৃষ্টির কারণে ছিল না।
( ফিকহে আকবর - ৮৫ পৃ / শরহে ফিকহুল আকবর কৃত - মুল্লা আলী কারী রহ:) 

অতএব নিজেদের সুন্নি, হানাফী, কাদেরী ইত্যাদি হকপন্থী দাবীদারগণ কোন আকলে ইজতেহাদী খা'তাকে কেন্দ্র করে আসহাবে আজমাঈ রাযি: বিশেষকরে হজরতে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: কে গালাগাল করছে, সমালোচনা করছে, আহলে বায়েত আলাইহিসালামের দুশমন বলছে তা অস্পষ্ট হলেও পরোক্ষভাবে বুঝা যায় ওরা শিয়া, রাফেদ্বী, মুতা'জিলাদের মুর্দা আকিদাকে ফের জিন্দা করতেই এমন আনজাম দিচ্ছে। মূলত ওরা তো সুন্নি, হানাফী, কাদেরী দূর মুসলমান কিনা সন্দেহ। এটাকে আবার অনেকেই আমার ব্যক্তিগত ফতুয়াবাজী বলে চালিয়ে দিতে পারে। 

▶তাই ইমাম কাযী আয়াজ রহ: এর একটি বক্তব্য তুলে ধরলাম - ﻗﺎﻝ ﻣﺎﻟﻚ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺷﺘﻢ ﺃﺣﺪﺍ ﻣﻦ ﺍﺻﺤﺎﺏ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺃﺑﺎ ﺑﻜﺮ ﺃﻭ ﻋﻤﺮ ﺍﻭ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﺍﻭ ﻋﻠﻰ ﺍﻭ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﺍﻭ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺺ ﻓﺒﺎﻥ ﻗﺎﻝ : ﻛﺎﻧﻮﺍ ﻋﻠﻰ ﺿﻼﻝ ﻭ ﻛﻔﺮ
অর্থ:- হযরত মালিক রহ: বলেন, কেও যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামার কোন সাহাবী যেমন, হযরত আবু বকর রাযি: হযরত ওমর রাযি:, হযরত ওসমান রাযি:, হযরত আলী রাযি:,হযরত মুয়াবিয়া রাযি ও হযরত ওমর বিন আস রাযি:সহ অন্যান্য সাহাবাদের মন্দ সমালোচনা, গালাগাল করে তবেঁ অবশ্যই সে পথভ্রষ্ট ও কাফের। 
( শেফা শরীফ ২য় খন্ড  ৪৯৩ পৃষ্ঠা) 

উল্লেখ্য যে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এবং মাওলা আলী আলাইহিসালামের মাঝে যে সংঘাত হয়েছিলো তা কোন ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা বা হ্মমতার লড়াই ছিলোনা। 

▶ এই ব্যাপারে বিখ্যাত মুহাদ্দীস হাফিজ ইবনে হজর আসকালানী রহ: ফাতহুল বা'রী ফীহ শরহে বুখারীতে লিখেন - 
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻣﺴﻠﻢ ﺍﻟﺨﻮﻻﻧﻲ ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻝ ﻟﻤﻌﺎﻭﻳﺔ ﺃﻧﺖ ﺗﻨﺎﺯﻉ ﻋﻠﻴﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺨﻼﻓﺔ ﺃﻭ ﺃﻧﺖ ﻣﺜﻠﻪ ؟ ﻗﺎﻝ : ﻻ ، ﻭﺇﻧﻲ ﻷﻋﻠﻢ ﺃﻧﻪ ﺃﻓﻀﻞ ﻣﻨﻲ ﻭﺃﺣﻖ ﺑﺎﻷﻣﺮ ، ﻭﻟﻜﻦ ﺃﻟﺴﺘﻢ ﺗﻌﻠﻤﻮﻥ ﺃﻥ ﻋﺜﻤﺎﻥ ﻗﺘﻞ ﻣﻈﻠﻮﻣﺎ ﻭﺃﻧﺎ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﻪ ﻭﻭﻟﻴﻪ ﺃﻃﻠﺐ ﺑﺪﻣﻪ ؟ ﻓﺄﺗﻮﺍ ﻋﻠﻴﺎ ﻓﻘﻮﻟﻮﺍ ﻟﻪ ﻳﺪﻓﻊ ﻟﻨﺎ ﻗﺘﻠﺔ ﻋﺜﻤﺎﻥ ، ﻓﺄﺗﻮﻩ ﻓﻜﻠﻤﻮﻩ ﻓﻘﺎﻝ : ﻳﺪﺧﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻴﻌﺔ ﻭﻳﺤﺎﻛﻤﻬﻢ ﺇﻟﻲ ، ﻓﺎﻣﺘﻨﻊ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﻓﺴﺎﺭ ﻋﻠﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﺠﻴﻮﺵ ﻣﻦ ﺍﻟﻌﺮﺍﻕ ﺣﺘﻰ ﻧﺰﻝ ﺑﺼﻔﻴﻦ ، ﻭﺳﺎﺭ ﻣﻌﺎﻭﻳﺔ ﺣﺘﻰ ﻧﺰﻝ ﻫﻨﺎﻙ ﻭﺫﻟﻚ ﻓﻲ ﺫﻱ ﺍﻟﺤﺠﺔ ﺳﻨﺔ ﺳﺖ ﻭﺛﻼﺛﻴﻦ ، ﻓﺘﺮﺍﺳﻠﻮﺍ ﻓﻠﻢ ﻳﺘﻢ ﻟﻬﻢ ﺃﻣﺮ ، ﻓﻮﻗﻊ ﺍﻟﻘﺘﺎﻝ ……

তাবেঈ আবু মুসলিম খুলাঈনী রহ:  হজরতে মুয়াবিয়া রাযি:কে বল্লেন, আপনি কি মাওলা আলী রাযি: হতে জোরজবরদস্তি খিলাফত ছিনিয়ে নিতে চান নাকি নিজেকে ওনার সমমর্যাদার মনে করেন? তখন উত্তরে হজরতে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: বল্লেন,  কখনই না..! আমি বরাবরই বিশ্বাস করি যে, মাওলা আলী আলাইহিসালাম আমার থেকে অনেক অনেক শ্রেষ্ঠ এবং খিলাফতের হকদার। কিন্তু আপনি জানেন না যে, হজরতে উসমান জিন্নুরাঈন রাযি:কে কত নিষ্ঠুরতার সাথে শহীদ করা হয়েছে।  আমি ওনার ভাতিজা এবং ওয়ালী হওয়ার সুবাদেই হত্যার বিচার এবং কিসাস দাবী করেছি। আপনি গিয়ে মাওলা আলী আলাইহিসালামকে বলুন...যে, হজরতে উসমান রাযি: এর হত্যাকারীদের আমার হাতে দিয়ে দিতে। তাবেঈ আবু মুসলিম খুলাঈনী রহ: গিয়ে মাওলা আলী আলাইহিসালামকে হজরতে মুয়াবীয়া রাযি: এর বার্তা শুনালেন এবং বায়াত করিয়েছেন এবং উসমান হত্যাকারীদের বিরুদ্ধেও মুকাদ্দমা শুরু করেছেন এমন কিছু ইঙ্গিত ছিলো। কিন্তু হজরতে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এবং মাওলা আলী রাযি: মাঝে ইখতেলাফাত আরও বেড়ে গেলো। শেষমেশ মাওলা আলী আলাইহিসালাম ইরাক হতে সৈন্যদল নিয়ে সিফ্ফিন নামক স্থানে পৌঁছান এবং হজরতে মুয়াবীয়া রাযি:ও তথাই পৌঁছলেন। এটি হিজরি ৩৬ এর ওয়াকেয়া। তখন উভয় দলেই খুতবা আদানপ্রদান হল কিন্তু নির্দিষ্ট কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছতে না পারায় উভয় দলই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ( ফাতহুল বারী ১৩/৮৬)


* ইমাম ইবনে হজর আসকালান রহ: এটির সনদ হাসান, সহীহ হিসেবে উল্লেখ করেন। 
* উল্লেখ্য যে, অনেকেই জঙ্গে সিফ্ফিনের ঘটনাকে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এর দিকে আহলে বায়েত আলাইহিসালামদের বিরুদ্ধে বলে চালিয়ে দিতে চায় কিন্তু তা শিয়া, রাফেদ্বীদের জঘন্যতম মিথ্যাচার বরং হজরতে উসমান রাযি: এর হত্যাকারীগণ মাওলা আলী আলাইহিসালামের দলে ঢুকে পড়ে কিন্তু মাওলা আলী আলাইহিসালাম পরিস্থিতি অস্থিতিশীলতার কারণে মুকাদ্দমা শুরু করতে পারেননি। তিনি চেয়েছিলেন আগে বায়াত প্রতিষ্ঠিত হোক, অতঃপর কিসাস। কিন্তু আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এতে অস্বীকৃতি জানায়। ( তারিখে তাবারী)
* উল্লেখ্য যে, জঙ্গে সিফ্ফিন সংঘটিত হওয়ার পেছনে যে খারেজীদের হাত ছিলো তা বহুল কিতাবাদিতে পাওয়া যায়। এবং হজরত আম্মার বিন ইয়াসীর রাযি: যে খারেজীদের হাতেই শহীদ হয় তাও উল্লেখযোগ্য কিতাবাদিতে উল্লেখ্য। ইনশাআল্লাহ্ পরবর্তী লিখনিতে আমীরে মুয়াবীয়া রাযি: এর বিরুদ্ধে শিয়া, রাফেদ্বী, মুতা'জিলাদের উপস্থাপিত দলিলের খণ্ডন করা হবে। 
আল্লাহ তাআলা আমাদের শিয়া, রাফেদ্বী, মুতা'জিলাদের ভ্রান্ত মত ও আকিদা হতে হেফাজত রাখুন। আমীন। 
______________________________

Sifat Sultan Alif.
Researcher - Ala Hazrat Research Academy.










 
Top