তাম্বীহুল মুগতাররীন- পথভ্রান্তদের পথনির্দেশ

ইমাম শারানী (রহ)

(কৃতজ্ঞতায়ঃ দুররুস সা'আদাত) 
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ

নেক-লোকদের গুণাবলী

কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ

সালফে সালিহীন বা পূর্বসূরী নেক লোকদের স্বভাব ও গুণাবলীর মধ্যে এটাও একটা স্বভাব ও গুণ যে, কুরআন ও সুন্নাহর সাথে তাদের সম্পর্ক এমন হত যেমন শরীরে সাথে ছায়ার সম্পর্ক। আর তারা শিক্ষাদান ও সংশোধনের কাজে ঐ সময় পর্যন্ত অগ্রসর হতেন না, যে পর্যন্ত না তাদের দলিল আদিল্লাসহ শরীঅতের জ্ঞানে পুরোপুরি ব্যুৎপত্তি হাসিল না হত।

হযরত জুনায়দ বাগদাদী (রহ) বলেন- আমাদের এই কিতাব (কুরআন) সকল কিতাবের শ্রেষ্ঠ কিতাব আর সবচাইতে জামে বা ব্যাপক। আমাদের এই শরীঅত সকল শরীঅত থেকে বেশী প্রকাশমান ও মসৃন। আমাদের তরীকত বা নীতি অর্থাৎ আহলে তাসাউফদের তরীকা বা নীতি কুরআন ও হাদীস দ্বারা সুদৃঢ়কৃত। অতএব যে না কুরআন অধ্যয়ন করেছে আর না হাদীস ধারণ করেছে, আর না তার অর্থ বোঝে- এমন ব্যক্তির অনুসরণ বৈধ নয়।

তিনি তার শিষ্যদেরকে আরো বলতেন যে, যদি তুমি কাউকে বাতাসের উপরও চলতে দেখ, তবে তাকে শরীঅতের আলোকে যাচাই বাছাই করা ব্যতীত তার অনুসরণ করো না। যদি দেখ যে, সে শরীঅতের হুকুম-আহকামের পরিপূর্ণ অনুসারী, তবে তার অনুসরণ করতে পার। আর যদি দেখ, শরীঅতের হুকুম-আহকাম পালনে গাফলতি ও ত্রুটি করে, তবে তার থেকে সুদূরে অবস্থান করো।

অতএব বিষয়টি হৃদয়ঙ্গম কর।

وَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

নেক-লোকদের গুণাবলী

কোন কথা ও কাজকে কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা পরখ করা

সালফে সালিহীন বা পূর্বসূরী নেক লোকদের গুণাবলীর মধ্যে এটাও একটা গুণ যে, তারা নিজেদের কথা ও কাজে নিজের যুগের রসম-রিওয়াযের অনুসরণ করতেন না। কেননা হয়তোবা তা কুরআন ও সুন্নাহর বিপরীত বিদআত হয়ে যাবে। যেমন হাদীসে আছে-

لا تقوم الساعة حتى تصير السنة بدعة اذا تركت البدعة يقول الناس تركة السنة

কিয়ামত ঐ সময় পর্যন্ত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না সুন্নতই বিদআত হয়ে যাবে। এমনকি কোথাউ বিদআত পরিহার করা হলে লোকেরা বলবে, সুন্নত পরিত্যাগ করা হয়েছে।

হযরত উমর (রা) যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করতেন, তখন তার জন্য পুরোপুরি দৃঢ় ইচ্ছা করতেন। অতঃপর যদি কেউ বলত যে, আপনি যে কাজ করতে চলেছেন, তা না রাসূলুল্লাহ (সা) করেছেন আর না অপরকে করতে বলেছেন। অতএব তিনি যে কাজের দৃঢ় ইচ্ছা করেছিলেন তা থেকে ফিরে আসতেন।

একবার ইমাম যয়নুল আবিদীন (রহ) তার ছেলেকে বললেন, আমার জন্য আরেকটি কাপড় তৈরী কর, যা আমি বাথরুমে যাওয়ার সময় ব্যবহার করব। আর নামাযের সময় তা খুলে ফেলব। কেননা আমি দেখি যে বাথরুমে মাছি বসে, এরপর কাপড়ে এসে বসে। তখন  তার ছেলে বলল, (বাবা) জনাব রাসূলুল্লাহ (সা) বাথরুমে যাওয়া এবং নামায পড়ার জন্য এক কাপরই ব্যবহার করেছেন। ব্যস এটা শুনে তিনি তা থেকে বিরত থাকলেন।

আমি [ইমাম শারানী (রহ)] বলি যে, প্রকৃত বিষয় হলো- না রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাপড়ে মাছি বসত আর না তার শরীরে। অতএব যে দলিল তার ছেলে প্রদান করেছে তা সঠিক হতে পারে না- এ বিষয়টি ব্যতীত যে, রাসূলুল্লাহ (সা) কাউকে এমন করার নির্দেশ দেননি। অতএব বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।

অতএব হে ভাই! তুমি তোমার সব কথা ও কাজ, আকীদা ও বিশ্বাসে সুন্নতে নববীর অনুসরণ কর। এর বিপরীতে এমন কিছু করতে যেও না যা কুরআন ও সুন্নাহ্‌র বিপরীত হয়ে যায়।

وَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

নেক-লোকদের গুণাবলী

সকল বিষয় আল্লাহর সোপর্দ করা

সালফে সালিহীন বা পূর্বসূরী নেক লোকদের স্বভাব ও গুণাবলীর মধ্যে এটাও একটা স্বভাব ও গুণ যে,  তারা নিজের এবং নিজের সন্তান-পরিজন, সঙ্গী সাথিদের সকল বিষয় আল্লাহর উপর সমর্পন করতেন। তাদের আশা ও বিশ্বাস আল্লাহ ব্যতীত কারো প্রতিই থাকত না। প্রথমত তারা কোন কিছুর আকাঙ্ক্ষাই করতেন না, বরং আল্লাহর উপর ছেড়ে দিতেন যে, তিনি যা ভাল হয় করবেন। আর যদি করতেনও তথাপি তার নযর আল্লাহ ব্যতীত আর কারো উপর থাকত না, বরং তার দৃষ্টি আল্লাহর দিকেই থাকত যে, তিনিই মালিক আর তিনিই করবেন।

এরপর ইমাম শারানী (রহ) নিজের ছেলের ঘটনা বলেন যে, আমার ছেলে আবদুর রহমানের জ্ঞান অর্জনের কোন আগ্রহই ছিল না। আর তার জন্য আমি চিন্তায় ভুগছিলাম। তখন আল্লাহ তাআলা আমার অন্তরে ইলহাম করলেন যে, তার বিষয়টি আমার উপর সোপর্দ কর। অতএব আমি তাই করলাম। এর ফল হলো এই যে, ঐ রাত থেকেই সে পড়ালেখায় মগ্ন হয়ে গেল। আর তার বুঝ-জ্ঞান তাদের চেয়েও বেড়ে গেল যারা বছরের শুরু থেকে পড়ালেখায় নিয়োজিত ছিল। অতএব বিষয়টি আল্লাহর প্রতি সোপর্দ করার কারণে আমার চিন্তার অবসান হলো। আল্লাহ তাআলা তাকে বা-আমল আলিম বানিয়ে দিন।

আমি আমার শায়খ সাইয়িদ আলী খাওয়াস (রহ) কে বলতে শুনেছি- আলিম ও শায়খ এর সন্তানদের জন্য দুআ এবং আল্লাহর প্রতি সমর্পনের চাইতে উত্তম কিছু নাই। কেননা তারা খুব আদর যত্নে প্রতিপালিত হয়ে থাকে। এ কারণেই আলিম ও শায়খদের সন্তানদের মধ্যে ইলম, আমল ও কামালাত অর্জনের প্রতি বিশেষ আগ্রহ থাকে না। তারা মনে করে আমরা যে যোগ্যতা অর্জন করব, তা তো আমাদের ঘরেরই জিনিস।

অপরদিকে সাধারণ মানুষের সন্তানেরা বড় হয় মানুষের চাপ ও কটুকথার মধ্য দিয়ে। অন্তরের এই দুঃখবোধ থেকে মুক্তির চিন্তা তাদেরকে আচ্ছন্ন করে রাখে। এর থেকেই আল্লাহ তাআলা তাদের মধ্যে পড়ালেখা করে বড় হওয়ার অদম্য বাসনা ও আগ্রহ সৃষ্টি করে দেন আর তারা তাতে নিয়োজিত হয়। আর এরপর থেকে লোকেরা যত সম্মান করে ততই তাদের চেষ্টা-সাধনা বেড়ে যায়। আর এক সময় তারাই পড়তে পড়তে শায়খুল ইসলাম, শায়খে তরীকত উপাধি লাভ করে।

তবে ক্ষেত্র বিশেষ বিপরীতও হয়েছে। কতক শায়খ ও আলিমদের সন্তানও অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন ও কামিল হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের মধ্যে এমন যোগ্যতাসম্পন্ন লোক বৃদ্ধি করে দিন আর আমরা তাদের বরকত দ্বারা উপকৃত হই। আমিন।

وَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

 নেক-লোকদের  গুণাবলী

আমলে রিয়া বা লোক দেখানোভাব পরিহার এবং ইখলাস অবলম্বন

সালফে সালিহীন বা পূর্বসূরী নেক লোকদের স্বভাব ও গুণাবলীর মধ্যে এটাও একটা স্বভাব ও গুণ যে, তারা ইলম ও আমলে পরিপূর্ণ ইখলাস অবলম্বন তথা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই আমল করতেন এবং রিয়া বা লোক দেখানোকে খুব ভয় করতেন। আজকালের লোকদের এর প্রয়োজনীয়তা খুব তীব্র।

হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বিহ (রহ) বলেন- যে ব্যক্তি আখিরাতের আমল দ্বারা দুনিয়া অন্বেষণ করে আল্লাহ তার অন্তরকে অন্ধ করে দেন এবং তার নাম জাহান্নামীদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করে দেন।

হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন- যে ব্যক্তী তার আমলে যাদুকর থেকেও বেশী হুশিয়ার না হবে সে নিশ্চয়ই রিয়াকারীতে ফেঁসে যাবে। 

হযরত ইয়াহয়া ইবনে মুয়ায (রহ) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, মানুষ ইখলাসের অধিকারী হয় কখন? তিনি বললেন, যখন তার স্বভাব দুধপানকারী শিশুর মত হয়। তার এই পরোয়া থাকে না যে, কে তার প্রশংসা করল আর কে বদনাম করল। অর্থাৎ প্রশংসা ও দুর্নাম যার নিকট সমান সে-ই ইখলাসের অধিকারী।

হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন- যে পর্যন্ত মানুষ লোকদের সাথে (বেশী) সম্পর্কযুক্ত ও মেলামশা করতে থাকে সে পর্যন্ত রিয়াকারী থেকে বাঁচতে পারে না।

হযরত ইউসুফ বিন আসবাত (রহ) বলেন- যখনই আমি আমার নফসের মুহাসাবা (হিসাব) করেছি, তখন আমার নিকট প্রমাণিত হয়েছে যে, আমি একটা আস্ত রিয়াকার।

হযরত হাসান বসরী (রহ) বলেন- যে ব্যক্তি মজলিসে বা লোকদের সামনে নিজের বদনাম করে, মূলত সে নিজের প্রশংসাই করে। আর এটাও রিয়ার আলামতের মধ্যে একটি আলামত।

হযরত ইবরাহিম ইবনে আদহাম (রহ) বলেন- নিজের (মুসলিম) ভাইকে তার  (নফল) রোযার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করো না। কেননা সে যদি রোযা রাখে আর তা বলে, তবে তার নফস খুশি হবে। আর যদি না বলে, তবে তার মন বিষণ্ন হবে। আর এ দুটিই রিয়ার আলামত।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মোবারক (রহ) বলেন, এক ব্যক্তি কাবা ঘরের তাওয়াফ করে আর খোরাসানের অধিবাসীদেরকে তা দেখাতে থাকে। কেউ জিজ্ঞাসা করল, তা কিভাবে? তিনি বললেন, লোকটি তাওয়াফ করে আর মনে মনে চায় যে, খোরাসানবাসীরা তথা নিজ দেশের লোকেরা অবগত হোক এবং তাদের মধ্যে আলোচিত হোক যে, অমুক ব্যক্তি তাওয়াফ ও সাঈর জন্য মক্কায় পড়ে আছে। বাহ! বাহ!

হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন, পূর্বের লোকেরা নেক অমল করে রিয়াকারী করত। আর এখন লোকেরা নেক আমল না করে রিয়াকারী করে। অর্থাৎ নেককাজের সুরত বা অবস্থা প্রদর্শন করে মানুষকে বিশ্বাস করাতে চায় যে, সে নেককার। এরা পূর্বের লোকদের চাইতে নিকৃষ্ট।

হযরত ইবরাহিম ইবনে আদহাম (রহ) বলেন, যে ব্যক্তি এটা পছন্দ করে যে, মানুষ তাকে ভাল বলুক, সে না মুখলিস হতে পারে আর না মুত্তাকী। 

হযরত ইকরিমা (রহ) বলেন, বারবার বেশী বেশী নেক নিয়ত কর। কেননা নিয়তের মধ্যেই রিয়া প্রবেশ করে।

ইমাম আবু দাউদ তায়ালসী (রহ) বলেন- গ্রন্থ রচনার সময় আলিমের ইসলামের সাহায্য করাই লক্ষ্য হওয়া চাই। রচনার সৗন্দর্য দ্বারা সমকালীন লোকদের প্রশংসা কুড়ানো নয়।

তাওরাতে আছে-

  كل عمل قبلته فهو كثير كثير وإن كان قليلأ وكل عمل رددته فهو قليل وإن كان كثيرأ

 যে আমল আল্লাহ কবুল করেন তার পরিমাণ কম হলেও তা অনেক। আর যে আমল আল্লাহ কবুল করেন না, তা পরিমাণে বেশী হলেও তা কম।

হযরত ইবরাহিম তাইমী (রহ) যুবকদের মত পোষাক পরিধান করতেন, ফলে তার পরিচিত লোকজন বুঝতেই পারতেন না যে, তিনি বড় কোন আলিম। তিনি বলেন, ইখলাস হলো, যে নিজের নেক আমল এমনভাবে গোপন করেন, যেভাবে নিজের দোষ গোপন করেন।

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ) বলেন- যে আলিমের মজলিস ও দরস বড় হয় তার মধ্যে আত্মম্ভরিতা এসে পড়ে এটা ব্যতীত যে, যদি আল্লাহ রক্ষা করেন।

হযরত আবু হুরায়রা (রা) বলেন- যদি আল্লাহর কিতাবে একটি আয়াত না হত তবে আমি কখনো হাদীস বর্ণনা করতাম না। তা হলো এই-

إِنَّ الَّذِينَ يَكْتُمُونَ مَا أَنْزَلْنَا مِنَ الْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى مِنْ بَعْدِ مَا بَيَّنَّاهُ لِلنَّاسِ فِي الْكِتَابِ أُولَئِكَ يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللَّاعِنُونَ

নিশ্চয়ই আমি যেসব স্পষ্ট নিদর্শন ও পথনির্দেশ নাযিল করেছি মানুষের জন্য- কিতাবে তা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করার পরও যারা তা গোপন রাখে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন। আর অভিসম্পাতকারীগণও তাদেরকে অসিম্পাত করেন।– সূরা বাকারা:১৫৯

ইবরাহিম ইবনে উতবা (রহ) বলেন- কিয়ামতের দিন ঐ ব্যক্তি বেশী লজ্জিত হবে, যে ইলমের দ্বারা লোকদের মধ্যে বড় হওয়ার চেষ্টা করত।

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ) বলেন- ইলম আমলকে আহ্বান করে থাকে। যদি সে তার ডাকে সাড়া দেয় তবে তো বেশ। অন্যথায় ইলম বিদায় নিয়ে চলে যায়।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক (রহ) বলেন- কোন ব্যক্তি ঐ সময় পর্যন্ত আলিমদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত সে মনে করে, এই শহরে তার চেয়েও বড় জ্ঞানী অনেক রয়েছ। আর যখন সে মনে করে সেই সবচেয়ে বেশী জানে তখন সে মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।

হযরত হাসান বসরী (রহ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন- শয়তান যখন তোমাদের নামাযরত অবস্থায় এসে এই কুমন্ত্রণা দেয় যে, তুমি রিয়াকারী করছ। তখন তুমি তোমার নামায লম্বা কর।

হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন- মানুষের জন্য আমল করা রিয়া আর মানুষের জন্য আমল ছেড়ে দেয়া শিরক। আল্লাহ তোমাকে এই দুটি থেকে নাজাত দিন।

হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন- ইলম ও আমল ওটাই উত্তম যা লোকদের থেকে গোপন থাকে।

হযরত উমর (রা) যখন কোন ব্যক্তিকে নামাযে মাথা ঝুঁকানো অবস্থায় দেখতেন তখন চাবুক মেরে বলতেন, তোমার কল্যাণ হোক, খুশু- বিনয়-নম্রতা অন্তরে।

হযরত আবু উমামা (রা) পথ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলেন, এক ব্যক্তি সিজদায় পড়ে কান্নাকাটি করছে। তখন তিনি বললেন, এটা খুব উত্তম। তবে যদি তোমার ঘরে হত যেখানে তোমাকে কেউ দেখত না, তবে আরো উত্তম হত।

হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন- যদি কোন ব্যক্তি রিয়াকার দেখতে চায় তবে সে যেন আমাকে দেখে।

হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন- যদি কুরআন ও হাদীসের বাহকগণের মধ্যে খারাবী না আসত তবে তারা সমস্ত মানুষ অপেক্ষা উত্তম হত। কিন্তু তারা ইলমকে নিজেদের পেশা এবং জীবিকা উপার্জনের মাধ্যমে পরিণত করেছে। আর এজন্য তারা আসমান ও  যমীন উভয়স্থানে লাঞ্ছিত হয়ে গেছে।

ইমাম শাফিয়ী (রহ) বলেন, আমাকে মালিক ইবনে দীনার (রহ) বলেছেন- তুমি আমলকে আটা বানাও আর ইলমকে লবন। অর্থাৎ ইলমের চেয়ে আমল বেশী কর।

ইমাম শাফিয়ী (রহ) বলেন, আলিমের জন্য কোন নেককাজ এমন থাকা চাই, যা- সে আর আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ না জানে। কারণ যে আমল জনসমক্ষে প্রকাশ হয়ে যায়, আখিরাতে তা অল্পই কাজে আসে।

কতক লোক হযরত জুনায়দ (রহ) কে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ আপনার সাথে কি আচরণ করেছেন, তিনি বললেন, আমার ঐ সব জ্ঞানরাজী, আমার ইবাদত সব নিষ্ফল হয়েছে, কোন উপকারই প্রদান করেনি। শুধুমাত্র সেই কতক রাকাত নামায ব্যতীত, যা আমি শেষ রাতে পড়তাম।

হে ভাই! তুমি এসব মহান ব্যক্তিদের অবস্থা অবগত হয়ে নিজের অবস্থার খোঁজ কর। যদি দেখ যে তোমার মধ্যে রিয়াকারী, মর্যাদাপ্রীতি ইত্যাদি আছে যা তাদের অবস্থা ও আমলের বিপরীত, তবে তুমি নিজের জন্য (আল্লাহর নিকট) খুব কান্নাকাটি কর। 

وَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

চলবে ইনশাআল্লাহ

 নেক-লোকদের  গুণাবলী

মান-মর্যাদার মোহগ্রস্ত লোকদের থেকে দূরে অবস্থান

সালফে সালিহীন বা পূর্বসূরী নেক লোকদের স্বভাব ও গুণাবলীর মধ্যে এটাও একটা স্বভাব ও গুণ যে, তাদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতিজন যারা শাসকদের নিকট সৎকাজের আদেশ ও অসৎকজাজে নিষেধ এবং কোন প্রকার দীনি প্রয়োজন ব্যতীত আসা যাওয়া করত, তাদের সাথে তারা মেলাশো বন্ধ করে দিতেন। তারা এই হাদীসের উপর আমল করতেন- জাহান্নামে একটি উপত্যকা আছে যেটাকে হাবহাব বলা হয়। আল্লাহ তাআলা ওটা অত্যাচারী এবং ঐ সব আলিমদের জন্য নির্ধারণ করেছেন যারা যালিম শাসকদের নিকট আসা যাওয়া করত।

একবার বসরার প্রশাসক মালেক ইবনে দীনার (রহ) কে বললেন, আপনি জানেন কি, কোন বিষয়টির কারণে আপনি আমাদের প্রতি এত কঠোর ভাষা প্রয়োগ করতে পারেন অথবা কি সেই কারণ, যার কারণে আমরা আপনার মুকাবিলা করতে পারি না। তা হলো আপনি আমাদের থেকে কোন কিছুর আশা ও লোভ থেকে মুক্ত।

ইবনুস সিমাক (রহ) বলেন, আমি একদিন বসরার প্রশাসকের নিকট গেলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, আমাকে কিছু নসীহত করুন। তখন তিনি বললেন, ধীক তার প্রতি, যে তোমাকে লোকদের হুকুকের ব্যাপারে প্রশাসক বানিয়েছে। তোমরা এর যোগ্য যে, তোমাদের দ্বারা (শুধু) পুল তৈরী করা হবে।

 হযরত ফুযায়ল ইবনে আয়ায (রহ) বলেন- আল্লাহর শপথ! যদি বাদশাহ হারুনুর রশীদ আমার নিকট আসার অনুমতি চায় তবে আমি তাকে অনুমতি দেব না- এ বিষয়টি ব্যতীত যে, যদি না আমাকে বাধ্য করা হয় আর যেখানে আমি কোন দরবেশও নই। অথচ ঐ সব দরবেশরা কেমন যারা নিজের থেকেই তাদের নিকট যায়।

একবার আমির মুআবিআ (রা) এর দরবারে লোকজন কোন বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। সেখানে আহনাফ বিন কায়েস (রহ)-ও বসা ছিলেন অথচ তিনি কিছু বলছিলেন না। তখন আমির মুআবিআ (রা) তাকে বললেন, কি ব্যাপার আপনি কিছু বলছেন না? উত্তরে তিনি বললেন, চুপ থাকার কারণ হলো, যদি আমি মিথ্যা বলি তবে আল্লাহর ভয় হয় আর যদি সত্য বলি তবে আপনার ভয় হয়। এজন্য চুপ থাকাটাই উত্তম মনে করলাম।

সামনে এ বিষয়ে আরো আলোচনা আসবে।

وَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

নেক-লোকদের  গুণাবলী

নিফাক বা কপটতা বর্জন এবং ভিতর ও বাহির সমান করতে সচেষ্ট হওয়া

সালফে সালিহীন বা পূর্বসূরী নেক লোকদের স্বভাব ও গুণাবলীর মধ্যে এটাও একটা স্বভাব ও গুণ যে, তারা নিফাক দূর করার জন্য খুব সচেষ্ট হতেন, যেন তাদের ভিতর ও বাহির একই রকম হয়। একবার হযরত খিযির (আ) এর সাথে হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রহ) এর সাথে সাক্ষাত হলে তিনি তাকে উপদেশ দিয়েছিলেন যে- হে উমর! এমন যেন না হয় যে, তুমি বাহ্যিকভাবে আল্লাহর বন্ধু কিন্তু অভ্যন্তরীনভাবে আল্লাহর শত্রু। কেননা যার ভিতর ও বাহির একরকম না হয় সে-ই মুনাফিক। আর মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করবে। এটা শুনে হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রহ) এতটা ক্রন্দন করলেন যে, তার দাড়ি ভিজে গেল।

হাদীস শরীফে আছে-

يَخْرُجُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ رِجَالٌ يَخْتِلُونَ الدُّنْيَا بِالدِّينِ يَلْبَسُونَ لِلنَّاسِ جُلُودَ الضَّأْنِ مِنَ اللِّينِ، أَلْسِنَتُهُمْ أَحْلَى مِنَ السُّكَّرِ، وَقُلُوبُهُمْ قُلُوبُ الذِّئَابِ، يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ: أَبِي يَغْتَرُّونَ، أَمْ عَلَيَّ يَجْتَرِئُونَ؟ فَبِي حَلَفْتُ لأَبْعَثَنَّ عَلَى أُولَئِكَ مِنْهُمْ فِتْنَةً تَدَعُ الحَلِيمَ مِنْهُمْ حَيْرَانًا

আখিরী যামানায় এমন কিছু লোক আত্ম-প্রকাশ করবে যারা দীন দ্বারা দুনিয়া হাসিল করবে। তারা মানুষের সামনে ভেড়ার চামড়ার ন্যায় কোমল পোষাক পড়বে। তাদের যবান হবে মধুর চেয়ে মিষ্ট আর অন্তর হবে হিংস্র বাঘের মত।

আল্লাহ তাআলা তাদেরকে বলবেন, আমার বিষয়ে তোমরা ধোকায় পড়ে আছ? না আমার প্রতি তোমরা ধৃষ্টতা প্রদর্শন করছ? আমার কসম! আমি এদের থেকেই এদের উপর এমন ফিতনা ও আযাব আপতিত করব যে, তা তাদের সবচেয়ে সহিষ্ণু লোকটিকেও হায়রান-পেরেশান করে ছাড়বে।- তিরমিযী:২৪০৪

মাহলাব বিন আবী সাফরাহ বলেন- আমি ঐ ব্যক্তিকে পছন্দ করি না, যার যবান তার আমল ও কর্মকে ছাড়িয়ে যায়।

হযরত হাসান বসরী (রহ) যে মর্তবায় পৌছেছিলেন তা এই কারণে যে, তিনি অন্যদেরকে যা করতে বলতেন, তা আগে নিজে করতেন। আর যা থেকে নিষেধ করতেন, তা থেকে নিজে আগে বিরত থাকতেন। লোকেরা বলত যে, আমরা হাসান বসরীর মত এমন আর কাউকে দেখিনি যার ভিতর ও বাহির সমান।

হযরত মুয়াবিয়া বিন ফাররাহ (রহ) বলেন-

بكاء القلب خير من بكاء العين

অন্তরের অশ্রুপাত চোখের অশ্রুপাত হতে উত্তম।

হযরত উতবা বিন আমির (রহ) বলেন- যখন কোন বান্দার ভিতর ও বাহির একই রকম হয়, তখন আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদেরকে বলেন-

هذا عبدى حقا

সে-ই আমার আসল বান্দা।

আব্দুল্লাহ ইনতাকী (রহ) বলেন- সব আমল থেকে উত্তম আমল হলো গোপন গুনাহ পরিহার করা। কেউ বলল, এটা কেন? তিনি বললেন, এজন্য যে, যখন কোন ব্যক্তি গোপন গুনাহ পরিহার করবে তখন স্বাভাবিকভাবে প্রকাশ্য গুনাহও পরিহার করবে। যার ভিতর বাহির থেকে উত্তম- তা উচ্চ অবস্থা। যার ভিতর ও বাহির সমান- তা ই’তিদাল বা ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা। আর যার ভিতর থেকে বাহির উত্তম- তা যুলুম ও সীমালঙ্যন।

ইউসুফ বিন আসবাত (রহ) বলেন- আল্লাহ তাআলা তার এব নবীর প্রত ওহী প্রেরণ করেছিলেন যে- নিজের সম্প্রদায়কে বলে দাও, তারা যেন তাদের আমল গোপন, রাখে। আমিই তা জনসমক্ষে প্রকাশ করব।

হযরত যুবায়র ইবনুল আওয়াম (রহ) বলেন- তোমরা নেককাজের ব্যাপারে গোপনীয়তা অবলম্বন কর, যেভাবে তোমরা মন্দ কাজের জন্য গোপনীয়তা অবলম্বন করে থাক।

হযরত মুয়াবিয়া বিন ফাররাহ (রহ) বলেন- আমাকে এমন লোক দেখাও, যে রাতে আল্লাহর নিকট কাঁদে আর দিনের বেলা (তার ভাব প্রকাশ না করে) মানুষের সামনে হাসিখুশী থাকে।

হযরত আবু মুসলিম খাওলানী (রহ) বলেন- আমার উপর আল্লাহর একটি অনুগ্রহ হলো বিগত ত্রিশ বছর থেকে আমার দ্বারা লজ্জাকর কোন কর্ম সংগঠিত হয়নি- শুধুমাত্র আমার স্ত্রীর সাথে শয়ন করা ব্যতীত।

হযরত আবু আব্দুল্লাহ সমরকন্দী (রহ) এর যখন কেউ প্রশংসা করতেন, তখন তিনি বলতেন, আমার আর তোমার অবস্থা ঐ নারীর মত, যার সতিত্ব বদকারী দ্বারা নষ্ট হয়ে গেছে অথচ তার পরিবারের তা জানা নাই। অতএব পরিবারের লোকেরা তার বাসর রাত সাজানোর জন্য খুশি হয় আর সে তার সম্ভ্রমহীনতার ভয়ে তটস্থ থাকে।

হযরত বিলাল বিন সাদ (রহ) বলেন- যখন কোন ফকীর- পীর বা শায়খ, যুহুদ বা দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্তির মিথ্যা দাবিদার সাজে, তখন শয়তান তার সামনে হাসতে নাঁচতে ঘুরতে থাকে।

হযরত মালেক ইবনে দীনার (রহ) বলেন- আমার সেসব কাজ যদি তোমরা জানতে পারতে যা আমার ঘরে তোমাদের অগোচরে হয়, তবে তোমরা আমার কাছেও ঘেষতে না।

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ) বলেন- বর্তমান যুগের আলিমগণের উপর রিয়া বা লোকদেখানো ভাব খুব প্রবল। তারা লোকদের সামনে নিজেদের ইবাদতগুযার হিসাবে প্রকাশ করে অথচ তাদের অন্তর হিংসা-বিদ্বেষ ও পরশ্রীকাতরতার ব্যাধিসমূহে আক্রান্ত। তোমার যদি কোন আলিমের নিকট প্রয়োজন থাকে তবে অপর কোন আলিমের দ্বারা তার সুপারিশ করিও না, কেননা এতে তার অন্তর তোমার প্রতি ক্রোধান্বিত হয়ে যাবে। তবে কোন ধনীর দ্বারা যদি সুপারিশ কর, তবে (দেখবে যে) তোমার কাজ খুব সহজে হয়ে গেছে।

সামনে এ বিষয়ে আরো আলোচনা আসবে।

وَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

চলবে ইনশাআল্লাহ

নেক-লোকদের  গুণাবলী

শাসকবর্গের অত্যাচারে ধৈর্য ধারণ করা

সালফে সালিহীন বা পূর্বসূরী নেক লোকদের স্বভাব ও গুণাবলীর মধ্যে এটাও একটা স্বভাব ও গুণ যে, তারা শাসকবর্গের অত্যাচারে ধৈর্য ধারণ করতেন এবং মনে করতেন যে, এটা তার গুনাহর তুলনায় খুব কম শাস্তি।

হযরত সালিহ মুররী (রহ) বলেন- যার ভিতর ও বাহির ঠিক ও এক রকম নয়, তার উপর কোন বিপদ নেমে আসলে তাতে আশ্চর্যান্বিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ এটা তার বদ আমলের পরিনাম।

হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয (রহ) বলেন- হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ আল্লাহর প্রেরিত এক বিপদ যা মানুষের কৃতকর্মের শাস্তিস্বরুপ ছিল। 

মুহাম্মদ ইবনে ইউসুফের ভাই তাকে হিকামের জোর-যুলুমের ব্যাপারে অভিযোগ করে পত্র লিখেন। তখন তিনি জবাবে লিখেন, হে ভাই! তোমার পত্র আমার নিকট পৌঁছেছে। তুমি তোমার অবস্থার কথা লিখেছ। জেনে রাখ যে, যে ব্যক্তি কোন পাপের মধ্যে থাকে তার উচিত নয় চলমান শাস্তিতে বিস্ময় প্রকাশ করা। যেই অবস্থার মধ্যে তুমি নিপতিত আছ আমি মনে করি তার কারণ শুধুই গুনাহ। ওয়াস সালাম।

হযরত মালিক ইবনে দীনার (রহ) বলেন, তাওরাতে লিখা আছে-

قُلُوبُ الْمُلُوكِ بِيَدِي، فَمَنْ أَطَاعَنِي جَعَلْتُهُمْ عَلَيْهِ رَحْمَةً، وَمَنْ عَصَانِي جَعَلْتُهُمْ عَلَيْهِ نِقْمَةً، وَلَا تَشْغَلُوا أَنْفُسَكُمْ بِسَبِّ الْمُلُوكِ، وَلَكِنْ تُوبُوا إِلَيَّ أُعَطِّفْهُمْ عَلَيْكُمْ

বাদশাহদের অন্তর আমার নিয়ন্ত্রণে। অতএব যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করবে আমি তার জন্য তাদেরকে রহমতের কারণ বানিয়ে দেব। আর যে আমার নাফরমানী করবে তার জন্য আমি তাদেরকে শাস্তি ও কষ্টের কারণ বানিয়ে দিব। আর তোমরা বাদশাহদের পরিবর্তে আমার সাথে সম্পর্ক কায়েম কর, তাহলে আমি নিজে তাদেরকে তোমাদের প্রতি দয়ার্দ্র করে দিব।

হযরত সুফিয়ান সাওরী (রহ) বলেন, আমরা এমন আলিমদের সন্ধান লাভ করেছি যারা ঘরে থাকা পছন্দ করতেন। আর আজকের আলিমরা আমির-উমরা ও যালিমদের সহচর।

হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বিহ (রহ) বলেন- বাদশাহ যখন যুলুমের রাজত্ব কায়েম করে তখন আল্লাহ তাআলা তার রাজত্বে স্বল্পতা সৃষ্টি করে দেন। যার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে, রুযি-রোজগারে এবং ক্ষেত-খামার তথা সবকিছুর মধ্যে সংকট সৃষ্টি হয়ে যায়।

হযরত মালিক ইবনে দীনার (রহ) বলেন, যখন দেখবে বাদশাহ ও প্রশাসক মোটা-তাজা হয়েছে, তখন মনে করবে সে তার প্রজাদের এবং তার প্রতিপালকের খিয়ানত করেছে।

অতএব অনুধাবন কর।

وَ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

চলবে ইনশাআল্লাহ

 
Top