মিরাজে ৯০ হাজার কালাম সম্পর্কিত রাসূল (ﷺ) এর সাথে আল্লাহর কথাবার্তা হওয়া প্রসঙ্গ

🖋গ্রন্থনায়ঃ মুফতি মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর

(প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানাের স্বরূপ উন্মােচন)


প্রচলিত জাল হাদিস (যা মাওলানা মতিউর রহমান কৃত লিখিত) গ্রহের ৮৫ পষ্ঠায় লিখা হয়েছে উক্ত বক্তব্যটি তাে হাদিস নয়ই বরং জাল বা বানােয়াট কথা। উক্ত ভিত্তিহীন বক্তব্যের জবাব:  বিশ্ববিখ্যাত তাফসীরকারক ইমাম সাভী তাফসীরে সাভীতে সূরা নিসা ১১৩ নং আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, মিরাজে আল্লাহর সঙ্গে নব্বই হাজার কালামের বর্ননা পাওয়া যায়। তন্মধ্যে ত্রিশ হাজার কালাম হাদিস আকারে সবার জন্য ত্রিশ হাজার কালাম নির্দিষ্ট লােকদের জন্য এবং অবশিষ্ট ত্রিশ হাজার সম্পূর্ন স্বীয় রাসূল (ﷺ) এর কাছে গােপন রাখার জন্য আল্লাহ তা'য়ালা নির্দেশ দিয়েছিলেন। (কাসাসুল আম্বিয়া (উর্দু), ৪৪২ পৃষ্ঠা দিল্লী হতে প্রকাশিত) 


এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পড়ুন অধ্যক্ষ হাফেয এম, এ জলীল (رحمة الله) রচিত নূর নবী - ১০২ - ১০৪)। 

মাওলানা মতিউর রহমান তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন যে রাসূল (ﷺ) এ খাস ইলম শুধু হযরত আলী (রাদ্বি.)  কেই মাত্র বলেছিলেন। আমি বলবাে তার এ বর্ণনাটিই ভূয়া বানােয়াটি। তাই বুঝতে পারলাম সে নিজেই জাল বা বানােয়াট তৈরী করে। আবার নিজেই জাল বলে ফাতওয়া দেয়। 


রাসুল (ﷺ) একক শুধু হযরত আলী (رضي الله عنه) এর কাছেই প্রকাশ করেননি। বরং বিশিষ্ট অগণিত তার সাহাবী বিদ্যমান, যাদের কাছেও তিনি দ্বিতীয় ত্রিশ হাজার কালাম প্রকাশ করেছেন। তার প্রমাণ অনেক সাহাবীদের থেকে প্রকাশ পাওয়া যায়। যেমন মিশকাত শরীফে এ - হযরত আলী (رضي الله عنه) এর নিকট এই কালাম প্রকাশের কথা পাওয়া যায়। 


“হযরত যাবের (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, তায়েফের যুদ্ধের দিন হুযুরে পাক (ﷺ) হযরত আলী (رضي الله عنه) কে ডেকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত চুপে চুপে যেন কি কথা বললেন। তখন লােকগণ বলল, হুযুর পাক (ﷺ) যে তার চাচাতাে ভাইয়ের সাথে গােপন কথা বলেই চলেছেন। কথা শুনে হুযুর (ﷺ) বললেন, গােপন কথা আমি বলিনি বরং আল্লাহ পাকই তাঁর সাথে (আমার মাধ্যমে) গােপন কথা বলেছেন।" 


তথ্যসূত্র- 

●ইমাম তিরমিযী : আস - সুনান : ৫/৫৯৭ পৃ . হাদিস : ৩৭২৬। 

●ইমাম খতিৰ তিৰরীযি : মেশকাত : ৪ / ৪২১ পৃ . হাদিসঃ ৬০৯৭। 


সুবহানাল্লাহ। তাই প্রমাণিত হলাে হযরত আলী (رضي الله عنه), ছাড়াও অনেকের কাছে খাস ইলম প্রকাশ করেছেন তার প্রমাণ স্বরূপ পাওয়া যায়ঃ


মিশকাত শরীফে রয়েছে যে, “ হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর পাক (ﷺ) হতে আমি দুই পাত্র (বাটি) ইলম হিফয বা সংরক্ষন করেছি তার মধ্যকার এক প্রকার তােমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি, কিন্তু অপর পাত্রের ইলম যদি আমি তােমাদের নিকট প্রচার করি, তাহলে আমার গলদেশ বা কেটে ফেলা হইবে (অর্থাৎ - আমাকে হত্যা করা হবে)।" 


নব্বই হাজার কালাম মিরাজ রজনীতে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ﷺ) মধ্যে হয়েছে তার প্রমাণে প্রসিদ্ধ উসূলবিদ আল্লামা মােল্লা জিওন (রহ.) তাফসীরে আহমদিয়ায় ৩৩১ পৃষ্ঠা সূরা নজমের তাফসীর করতে গিয়ে উল্লেখ করেন, 

* বর্ণনায় রয়েছে আল্লাহ তায়ালা মিরাজের রজনীতে রাসূলে খােদা (ﷺ) এর সাথে ৯০ হাজার (বিষয়ে) কালাম বা কথাবার্তা বলেছেন, গােপনীয় বিষয় সংবাদ দিয়েছেন, অনেক আহকাম দিয়েছেন এবং তার সাথে ৫০ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছিলেন।" 

 
Top