দুই ঈদ ছাডা আর কোন ঈদ নাই কথাটির সত্যতা কতটুকু এবং একই দিনে নবীজির আগমন ও ইন্তেকাল হলে আমরা কোনটা পালন করবো?

জাওয়াবদাতা:-হাসনাইন আহমদ আল কাদেরী।

ক.দুই ঈদ সহ বছরে প্রায় ৫৮টি ঈদ রয়েছে,যা নিম্নে উপস্হাপন করা হলো।

১.জুমার দিন ঈদের দিন:-

রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إِنَّ هَذَا يَومٌ جَعَلَهُ اللَّهُ عِيدًا لِلْمُسْلِمِينَ فَاغْتَسِلُوا , وَمَنْ كَانَ عِنْدَهُ طِيبٌ فَلا يَضُرَّهُ أَنْ يَمَسَّ مِنْهُ , وَعَلَيْكُمْ بِالسِّوَاكِ

নিশ্চয়ই জুমার দিন মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন।অত:পর এই দিনে তোমরা গোসল করো এবং যার কাছে সুগন্ধি আছে সে যেন সুগন্ধি লাগায় এবং সে যেন মেসওয়াক করে।

সুত্র:-সুনান ইবনে মাজাহ- কিতাবু ইকামাতিস সালাত,বাবু মাজাআ ফিয যিনাতি ইয়াউমিল জুমআ,হাদীস নং ১১৫২;

২.আরাফার দিন,ইয়াউমে নহর,আইয়্যামে তাশরীক ঈদের দিন:-

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَوْمُ عَرَفَةَ، وَيَوْمُ النَّحْرِ، وَأَيَّامُ التَّشْرِيقِ عِيدُنَا أَهْلَ الْإِسْلَامِ، وَهِيَ أَيَّامُ أَكْلٍ وَشُرْبٍ»
নবিজী বলেছেন,আরাফার দিন,কুরবানীর দিন এবং আইয়্যামে তাশরীক তথা জিলহজ্বের ১১,১২,১৩ তারিখ আমাদের ইসলামের অনুসারীদের জন্য ঈদের দিন এবং সে দিনগুলো খাওয়া ও পান করার দিন।

সুত্র:-আবু দাউদ -কিতাবুস সাওম,বাবু সিয়ামি আইয়্যামিত তাশরীক,হাদীস নং ২৪২০;
তিরমিযি-কিতাবুস সাওম,বাবু মাজাআ ফি কারাহিয়াতিস সাওমে ফি আইয়্যামিত তাশরীক,হাদীস নং ৭৭৮;

৩.আয়াত নাজিলের দিন ঈদের দিন:-
عَنْ عَمَّارِ بْنِ أَبِي عَمَّارٍ قَالَ قَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ: {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا} وَعِنْدَهُ يَهُودِيٌّ فَقَالَ لَوْ أُنْزِلَتْ هَذِهِ عَلَيْنَا لاَتَّخَذْنَا يَوْمَهَا عِيدًا. قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَإِنَّهَا نَزَلَتْ فِي يَوْمِ عِيدٍ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ وَيَوْمِ عَرَفَةَ.

হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি একবার সুরা মায়েদার ৩নং আয়াত –” আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ন করে দিলাম ” এ আয়াত শরীফ খানা শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন।তখন উনার নিকট এক ইহুদী ছিল সে বলে উঠলো, যদি এমন আয়াত শরীফ আমাদের ইহুদী সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হতো, আমরা আয়াত শরীফ নাযিলের দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা করতাম !’ এটা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বললেন, এ আয়াত শরীফ সেই দিন নাযিল হয়েছে যেদিন একসাথে দুই ঈদ ছিলো (১) জুমুয়ার দিন এবং (২) আরাফার দিন।

তিরমিযি-কিতাবু তাফসীরুল কোরআন,বাবু ওয়ামিন সুরাতি মায়েদা,হাদীস নং ৩৩১৮;

عن طارق بن شهاب قال قالت اليهود لعمر لو علينا معشر يهود نزلت هذه الآية اليوم أكملت لكم دينكم وأتممت عليكم نعمتي ورضيت لكم الإسلام دينا نعلم اليوم الذي أنزلت فيه لاتخذنا ذلك اليوم عيدا قال فقال عمر فقد علمت اليوم الذي أنزلت فيه والساعة وأين رسول الله صلى الله عليه وسلم حين نزلت نزلت ليلة جمع ونحن مع رسول الله صلى الله عليه وسلم بعرفات.

তারিক ইবনু শিহাব রহমতুল্লাহি আলাইহী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহুদী লোকেরা হযরত উমার রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললো, আপনারা এমন একটি আয়াত পাঠ করে থাকেন তা যদি আমাদের সম্পর্কে নাযিল হতো, তবে এ দিনটিকে আমরা ঈদের দিন হিসাবে গ্রহণ করতাম। হযরত উমার রাঃ বললেন, আমি জানি, ঐ আয়াতটি কখন (কোথায়) ও কোন দিন নাযিল হয়েছিল। আর যখন তা নাযিল হয়েছিল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোথায় কোথায় অবস্থান করছিলেন (তাও জানি)। আয়াতটি আরাফার দিন নাযিল হয়েছিল; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন আরাফাতেই অবস্থান করছিলেন।”

সুত্র:-মুসলিম শরীফ – কিতাবুত তাফসীর, বাবু বাবুত তাফসীর হাদীস নং ৭২১০,

একটু ভিন্ন শব্দে সহীহ সনদে ইমাম তিরমিযিও হাদীসখানা বর্ণনা করেছেন-

عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَ: قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ لَوْ عَلَيْنَا أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ: {الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإِسْلاَمَ دِينًا} لاَتَّخَذْنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ عِيدًا. فَقَالَ لَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ إِنِّي أَعْلَمُ أَيَّ يَوْمٍ أُنْزِلَتْ هَذِهِ الآيَةُ أُنْزِلَتْ يَوْمَ عَرَفَةَ فِي يَوْمِ جُمُعَةٍ.

قَالَ أَبُو عِيسَى: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.

সুত্র:-তিরমিযি-কিতাবু তাফসীরুল কোরআন,বাবু ওয়ামিন সুরাতি মায়েদা,হাদীস নং ৩৩১৭;

আসুন আমরা এখানে মোট ঈদ সংখ্যা হিসাব করি —
বছরে ৫২ টি শুক্রবার +ঈদুল ফিতর ১দিন আরাফার ১দিন +কোরবানীর ১দিন+ আইয়্যামে তাশরীক ৩ দিন।
(৫২+১+১+১+৩=৫৮)

আমরা পেয়ে গেলাম বছরে শুধু দুইটা ঈদ নয় বরং সর্বমোট প্রায় ৫৮টি ঈদ রয়েছে।তাই যারা ঈদে মিলাদুন্নাবীকে অস্বীকার করতে গিয়ে বলে থাকে দুইটা ঈদ ছাডা আর কোন ঈদ নাই, তারা মুলত ইসলামের শত্রু।

৪.এমনকি কোরআনে আরো একটা ঈদ পাওয়া যায়

قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِّنَ السَّمَاءِ تَكُونُ لَنَا عِيدًا لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِّنكَ ۖ

মরিয়ম তনয় ঈসা আঃ আরয করলেন, ‘হে আমাদের রব! আমাদের উপর আকাশ থেকে একটা ‘খাদ্য-ভর্তি খাঞ্চা’ অবতারণ করুন, যা আমাদের জন্য ঈদ হবে-আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্য এবং তা হবে আপনার নিকট থেকে নিদর্শন;
সুত্র:-কেরআন-সুরা মায়েদা, আয়াত নং ১১৪;

খ.একই দিনে নবিজীর আগমন ও ইন্তেকালে আমাদেরকে ঈদে মিলাদুন্নাবী পালন করতে হবে।নিম্নে বিস্তারিত বিশ্লেষন পেশ করা হলো।

১.আমরা জানলাম জুমার দিন ঈদের দিন।এখন এই দিনটি এত ঈদের ও মর্যাদাবান হওয়ার মৌলিক কারন হলো পাঁচটি-
قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ سَيِّدُ الأَيَّامِ وَأَعْظَمُهَا عِنْدَ اللَّهِ وَهُوَ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ مِنْ يَوْمِ الأَضْحَى وَيَوْمِ الْفِطْرِ فِيهِ خَمْسُ خِلاَلٍ خَلَقَ اللَّهُ فِيهِ آدَمَ وَأَهْبَطَ اللَّهُ فِيهِ آدَمَ إِلَى الأَرْضِ وَفِيهِ تَوَفَّى اللَّهُ آدَمَ وَفِيهِ سَاعَةٌ لاَ يَسْأَلُ اللَّهَ فِيهَا الْعَبْدُ شَيْئًا إِلاَّ أَعْطَاهُ مَا لَمْ يَسْأَلْ حَرَامًا وَفِيهِ تَقُومُ السَّاعَةُ مَا مِنْ مَلَكٍ مُقَرَّبٍ وَلاَ سَمَاءٍ وَلاَ أَرْضٍ وَلاَرِيَاحٍ وَلاَ جِبَالٍ وَلاَبَحْرٍ إِلاَّ وَهُنَّ يُشْفِقْنَ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَة

নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহীস সালাম বলেছেন নিশ্চয়ই জুমআর দিন, দিন সমুহের মধ্যে আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ট দিন এবং আল্লাহর নিকট তা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা থেকে অধিক মর্যাদাবান এজন্য, তাতে পাঁচটি বৈশিষ্ট আছে-
১.এই দিনে আদম আঃ কে সৃষ্টি করা হয়েছে।
২.এবং আদম আঃ কে দুনিয়াতে প্রেরন করা হয়েছে তথা এই দিনে ওনার আগমন হয়েছে।
৩.এই দিনে ওনার ইন্তেকাল হয়েছে।
৪.এমনকি এই দিনে এমন একটি সময় আছে যে মুহুর্তে বান্দা কোন হারাম বস্তু ছাডা যা কিছু আল্লাহ কাছে যা চাইবে আল্লাহ তা দিবেন।
৫.এবং এই দিনে কিয়ামত হবে।
বাকী হাদীস………………………………..।

সুত্র:-সুনান ইবনে মাজাহ-কিতাবু ইকামাতিস সালাতি ওয়াস সুন্নাতি,বাবু ফাদলিল জুমআ,হাদীস নং ১১৩৭;
আলবানী (নামদারী আহলে হাদীস)-সহীহ জামেউস সাগীর,হাদীস নং ২২৭৯;

ভিন্ন শব্দে হাদিসটি সুনান ইবনে মাজার একই পরিচ্ছেদে এসেছে।
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ((إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِيهِ خُلِقَ آدَمُ وَفِيهِ النَّفْخَةُ وَفِيهِ الصَّعْقَةُ فَأَكْثِرُوا عَلَيَّ مِنَ الصَّلاَةِ فِيهِ فَإِنَّ صَلاَتَكُمْ مَعْرُوضَةٌ عَلَيَّ)). فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ تُعْرَضُ صَلاَتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرَمْتَ- يَعْنِي بَلِيتَ-. فَقَالَ: ((إِنَّ اللَّهَ قَدْ حَرَّمَ عَلَى الأَرْضِ أَنْ تَأْكُلَ أَجْسَادَ الأَنْبِيَاءِ)).

সুত্র:-সুনান ইবনে মাজাহ-কিতাবু ইকামাতিস সালাতি ওয়াস সুন্নাতি,বাবু ফাদলিল জুমআ,হাদীস নং ১১৩৮;

এবার লক্ষ করুন আদম আঃ এর একই দিনে সৃষ্টি ও আগমন এবং ইন্তেকাল সম্পর্কে নবিজীর জানা সত্তেও তিনি জুমার দিনকে ঈদের দিন হিসেবে পালন করার জন্য বলেছেন।তাই নবিজীর এই বানী থেকে বুঝা গেলো নবীদের একই দিনে আগমন ও ইন্তেকাল হলে এক্ষেত্রে আগমনটাই পালন করতে হবে তথা ঈদ পালন করতে হবে।

এবার চিন্তা করে দেখুন আদম আঃ এর আগমনের দিন যদি ঈদের দিন হতে পারে তাহলে আমাদের নবিজীর আগমনের দিন কত বড ঈদের দিন হতে পারে একটু ভেবে দেখুন।তাই বলা হয় সকল ঈদের সেরা ঈদ, ঈদে মিলাদুন্নাবী।

তাই আল্লাহ তাআলা বলেন-

قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ

হাবিব,আপনি বলে দিন আল্লাহর অনুগ্রহ ও তার রহমত (রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম)কে উপলক্ষ করে তারা যেন খুশি উদযাপন করে এবং সেটা হবে তাদের সমস্হ জমাকৃত অর্জন থেকে উত্তম।

সুরা ইউনুস -আয়াত নং ৫৮;

এ আয়াতের আয়াতের তাফসীরে ইমাম সৈয়দ মাহমুদ আলুসী বর্ণনা করেন,ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন আলোচ্য আয়াতে রহমত হলো নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম।

সুত্র:-মাহমুদ আলুসী-রুহুল মাআনী ৬/১৩৩ পৃ:;

আল্লামা আলুসী রহঃ আরো বর্ণনা করেন-
খতিবে বাগদাদী রহঃ ইবনে আসাকীর রহঃ সাহাবী ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন,ফদ্বল (অনুগ্রহ) দ্বারা নবিজীকে বুঝানো হয়েছে।

সুত্র:-তাফসীরে রুহুল মাআনী ৬/১৩৩ পৃ;

আহলে বায়তের অন্যতম সদস্য ইমাম আবু জাফর বাকের রা: বলেন-
এখানে ফদ্বল দ্বারা নবিজীকে বুঝানো হয়েছে।

সুত্র:-ইমাম তিবরিসি-মাজমাউল বায়ান ৪/১৭৭-১৭৮;

বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দীস ও তাফসীরকারক ইমাম যওজী রহঃ বর্ণনা করেন-
আলোচ্য আয়াতে রহমত দ্বারা নবিজীকে বুঝানো হয়েছে,যেমনটি তাবেয়ী দাহ্হাক রহঃ তার শায়েখ সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণনা করেছেন।

সুত্র:-ইমাম যওজী-যা’দুল মাসীর ফি উলুমুত তাফাসীর ৪/৪০পৃষ্টা;

সম্মানীত পাঠকগন, অত্র আয়াতের একটা তাফসীর আমরা সাহাবীয়ে রাসুল থেকে পেয়ে গেলাম যে ফদ্বল আর রহমত দ্বারা নবিজীকেও বুঝানে হয়েছে।আর এটা মনে রাখতে হবে সাহাবীদের তাফসীর হলো মারফু হাদীসের ন্যায়।

ইমাম হাকেম নিশাপুরী বর্ণনা করেন -وتفسيرُ الصحابي عندهما مُسْنَدٌ ইমাম বোখারী ও মুসলিমের নিকট সাহাবীদের তাফসীর মারফু হাদীসের ন্যায়।

সুত্র:-মুসতাদরাক-কিতাবুল ইলম ১/২১১,হাদীস নং ৪২২;

অতএব, আল্লাহ তাআলা যেহেতু বলে দিয়েছেন নবিজীকে উপলক্ষ করে খুশি তথা ঈদ উদযাপন করার জন্য তাই আমাদের উচিৎ ঈদে মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহ আলাইহী ওয়াসাল্লাম পালন করা কারন এই আয়াতে ফদ্বল ও রহমত দ্বারা নবিজীকে বুঝানো হয়েছে, যা সাহাবী ইবনে আব্বাস রাঃ বানী থেকে সুস্পষ্ট।

এজন্য বিশ্ব বিখ্যাত ফকীহ ইমাম তাহাবী রহঃ ইমাম শাওয়াফে রহঃ এর কওল নকল করে লিখেন-

ان افضل الليالي ليلة مولده صلى اللّٰه عليه وسلم ثم ليلة القدر
নিশ্চয়ই ইবাদতের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম রাত হলো মিলাদুন্নাবীর রাত এরপর লাইলাতুল কদর।
সুত্র:-ইউসুফ নাবহানী-যাওয়াহিরু বিহার ৩/৪২৬,মারকাযে আহলে সুন্নাহ বি বারকাতে রেযা,গুজরাট হতে প্রকাশিত।

এমনকি শায়েখ ইউসুফ নাবহানী রঃ লিখেন-
শবে কদর হতে মিলাদুন্নাবীর রাত উত্তম।

সুত্র:-ইউসুফ নাবহানী-আনোওয়ারে মুহাম্মাদীয়া ২৮ পৃঃ,দারুল কুতুব ইলমিয়্যা,বয়রুত লেবানন।

বোখারীর ব্যখ্যাকার ইমাম কস্তুলানী রঃ তিনিও একই কথা বলেছেন এবং এর তিনটি কারনও তিনি উল্লেখ করেছেন।

ইমাম কস্তুলানী-মাওয়াহেবে লাদুনীয়া ২৮/১৪৫,মাকতুবাতুত তাওফীকিয়া, কায়রো, মিশর।

এমনকি ঈসা আঃ এর জন্য আসমান থেকে আল্লাহর নেয়ামত খাদ্য পাঠানোর দিন যদি ঈদের দিন হতে পারে যা সুরা মায়েদার ১১৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে, তাহলে আমাদের নবিজীতো সকল নেয়ামতের মধ্য শ্রেষ্ট নেয়ামত।এমনকি নবিজীকে আল্লাহ তাআলা আসমান ও জমীনের সমস্হ ধনভান্ডারের চাবি সমুহও দান করে দিয়েছেন তাহলে ওনার আগমনের দিন কেন ঈদের দিন হতে পারবেনা! বরং নবিজীর আগমনের দিন সকল ঈদের চাইতেও শ্রেষ্ট ঈদের দিন এবং তা পালন করা আমাদের অর্জিত সমস্ত কিছু চাইতে উত্তম হবে।

অতএব, প্রমানীত হলো সকল ঈদে সেরা ঈদ ঈদে মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহ আলাইহী ওয়াসাল্লাম।

পোষ্টটি ঈমানী দায়িত্ব মনে করে সর্বমহলে কমপক্ষে ১০০ জনের কাছে শেয়ার করুন।
 
Top