❏ প্রশ্ন-১৫৯: হযরত শুয়াইব (عليه السلام)কে কোন্ জাতির নিকট রাসূল হিসেবে প্রেরণ করা হয়েছিল?


✍ উত্তর: জেনে রাখা উচিত যে, হযরত শুয়াইব (عليه السلام) মাদইয়ান ও আইকা নামক দু’টি জাতির নিকট রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। এতদুভয় জাতি তাঁকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো এবং তাঁর প্রতি অবাধ্যতা প্রদর্শন করতঃ তাঁর সাথে বেয়াদবী ও অসদাচরণ করেছিলো। ফলে আল্লাহর আযাবে তারা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। 

আসহাবে মাদইয়ানের ওপর এই আযাবটি আসলো যে,  فاخذتهم الصيحة.  অর্থাৎ হযরত জিবরাঈল (عليه السلام) এর চিৎকারের ভয়ংকর আওয়াজে জমিন প্রকম্পিত হয়ে ওঠলো এবং মানুষের অন্তর ভয়ে পথহারা হয়ে গেলো এবং সকলে উপুড় অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলো। 

আর আসহাবে আইকাকে  عذاب يوم الظلمة .অন্ধকার দিনের আযাব দ্বারা ধ্বংস করে দেওয়া হলো, যার বর্ণনা তাফসীরে সাভীর ৩য় খন্ডর ১৫০নং পৃষ্ঠায় রয়েছে।

তারা অবাধ্যতা প্রদর্শন করতঃ রাসূলকে বললো, যদি তুমি সত্য নবী হও, তাহলে আসমান হতে কোন অগ্নি টুকরো এসে যদি আমাদেরকে ধ্বংস করে দিতো!

এরপর মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর ওই ক্রোধপূর্ণ আযাব ওই জাতির ওপর এসে পড়লো যার বর্ণনা হাদিসে এসেছে যে, ওই সব লোকদের ওপর জাহান্নামের একটি দরজা খুলে দেওয়া হলো। যার কারণে পুরো লোকালয়ে তীব্র গরম ও লু হাওয়ার উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়লো এবং বস্তিবাসীদের দম বন্ধ হবার উপক্রম হলো। লোকেরা নিজেদের ঘরের অভ্যন্তরে বসবাস করতে লাগলো এবং নিজেদের ওপর পানি ছিটাতে লাগলো। তবে পানি ও ছায়ার মধ্যে তারা প্রশান্তি পেলো না। গরমের উষ্ণতায় তারা পুড়ে যাচ্ছিলো। এমতাবস্থায় আল্লাহ তা‘আলা একটি মেঘ খন্ড পাঠালেন যেটি তাঁবুর ন্যায় পুরো লোকালয়ে ছেয়ে গেলো। এই মেঘ খন্ডর ভিতর ছিলো হিমশীতল প্রশান্তিদায়ক বাতাস। এটা দেখে সকলে ঘর হতে বের হয়ে মেঘ খন্ডর তাঁবুর নীচে জমায়েত হলো। যখন সকল লোক মেঘের নীচে এসে পড়লো, তখন ভূমিকম্প হলো এবং আসমান হতে আগুন বর্ষিত হলো, যাতে সকলে পঙ্গপালের ন্যায় লাফিয়ে লাফিয়ে জ্বলে-পুড়ে গেলো।

তারা নিজেদের অবাধ্যতা প্রদর্শন করে বলেছিলো যে, হে শুয়াইব! তুমি সত্য নবী হলে দেখাও আসমানের কোন অগ্নি টুকরো এসে আমাদেরকে ধ্বংস করে দিক। সুতরাং ওই আযাবটি উক্তরূপে এই অবাধ্য জাতির ওপর এসে পড়লো এবং সকলে জ্বলে-পুড়ে ছাইয়ের স্তূপ বনে গেলো। 

219. তাফসীরে সাভী, পৃষ্ঠা নং-১৫০, খন্ড নং-৩, গারায়িবুল কোরআন, পৃষ্ঠা নং-১২৪।

 
Top