১৩. রাসূল হায়াতুন্নবি (ﷺ) হিসেবে এখনও রওজা শরিফে আছেন :


ইতোপূর্বে সমস্ত নবিরা জীবিত তা আলোকপাত করা হয়েছে সে হিসেবে রাসূল (ﷺ)ও নিঃসন্দেহ রওজা শরিফে জীবিত। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ  قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:  حَيَاتِي خَيْرٌ لَكَمْ تُحْدِثُونَ وَيُحَدَثُ لَكَمْ، وَوَفَاتِي خَيْرٌ لَكَمْ تُعْرَضُ عَلَيَّ أَعْمَالُكُمْ، فَمَا رَأَيْتُ مِنْ خَيْرٍ حَمَدَتُ اللَّهَ عَلَيْهِ، وَمَا رَأَيْتُ مِنْ شَرٍّ اسْتَغْفَرْتُ اللَّهَ لَكَمْ. -    

-‘‘আমার হায়াত তোমাদের জন্য উত্তম বা রহমত। কেননা আমি তোমাদের সাথে কথা বলি তোমরাও আমার সাথে কথা বলতে পারছ। এমনকি আমার ওফাতও তোমাদের জন্য উত্তম বা নেয়ামত। কেননা তোমাদের আমল আমার নিকট পেশ করা হবে এবং আমি তা দেখবো। যদি তোমাদের কোন ভালো আমল দেখি তাহলে আমি আল্লাহর নিকট প্রশংসা করবো, আর তোমাদের মন্দ কাজ দেখলে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য (তোমাদের পক্ষ হতে) ক্ষমা প্রার্থনা করবো।’’  

➤ বায্যার, আল-মুসনাদঃ ৫/৩০৮ পৃষ্ঠা, হাদিসঃ ১৯২৫, সুয়ূতি, জামিউস সগীরঃ ১/২৮২ পৃষ্ঠা, হাদিসঃ ৩৭৭০-৭১, ইবনে কাছির ,বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ৪/২৫৭ পৃষ্ঠা, মুত্তাকী হিন্দী, কানযুল উম্মাল, ১১/৪০৭ পৃষ্ঠা, হাদিস ৩১৯০৩, ইমাম ইবনে জওজী, আল-ওফা বি আহওয়ালি মোস্তফা, ২/৮০৯-৮১০ পৃষ্ঠা, আল্লামা ইবনে কাছির, সিরাতে নববিয়্যাহ, ৪/৪৫ পৃষ্ঠা,


উক্ত হাদিস প্রসঙ্গে ইমাম হাইসামী (رحمة الله) বলেন-

 رَوَاهُ الْبَزَّارُ، وَرِجَالُهُ رِجَالُ الصَّحِيحِ.  

-‘‘উক্ত হাদিসের সমস্ত বর্ণনাকারী সিকাহ বা বিশ্বস্ত।’’  

➤  ইমাম হাইছামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, ৯/২৪ পৃষ্ঠা, হা/১৪২৫০


ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله)ও সহীহ বলেছেন।  

➤  ইমাম সুয়ূতি, জামিউস সগীরঃ ১/২৮২ পৃষ্ঠা, হাদিস/৩৭৭০-৭১,


হযরত আবু দারদা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-

إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ عَلَى الْأَرْضِ أَنْ تَأْكُلَ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ، فَنَبِيُّ اللَّهِ حَيٌّ يُرْزَقُ

-‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘য়ালা আম্বিয়ায়ে কিরামগণের দেহকে ভক্ষণ করা মাটির উপর হারাম করে দিয়েছেন। সুতরাং আল্লাহর নবী স্বীয় রওজা পাকে জীবিত। তাঁকে রিযিক দেওয়া হয়।’’ (সুনানে ইবনে মাযাহ, ১/৫২৪পৃ. হা/১৬৩৭) এ বিষয়ের বর্ণিত হাদিসের সংখ্যা সম্পর্কে  ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতী (رحمة الله) দীর্ঘ আলোচনার সর্বশেষ বলেন-

حَيَاةُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي قَبْرِهِ هُوَ وَسَائِرِ الْأَنْبِيَاءِ مَعْلُومَةٌ عِنْدَنَا عِلْمًا قَطْعِيًّا لِمَا قَامَ عِنْدَنَا مِنَ الْأَدِلَّةِ فِي ذَلِكَ وَتَوَاتَرَتْ الْأَخْبَارُ، وَقَدْ أَلَّفَ الْبَيْهَقِيُّ جُزْءًا فِي حَيَاةِ الْأَنْبِيَاءِ فِي قُبُورِهِمْ، فَمِنَ الْأَخْبَارِ الدَّالَّةِ عَلَى ذَلِكَ

-“হায়াতুন্নবী (ﷺ) তথা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) স্বীয় রওজা মোবারকে জীবিত এবং সমস্ত নবীগণই জীবিত যা অকাট্য জ্ঞান দ্বারা পরিজ্ঞাত। কেননা, এ ব্যাপারে আমাদের নিকট দলীল প্রমাণ অকাট্য এবং এ প্রসঙ্গে অনেক মুতাওয়াতির হাদিস বর্ণিত হয়েছে (আনবিয়াউল আযকিয়া)।’’ 

➤ আল্লামা আব্দুর রহমান জালালুদ্দীন সূয়তী : আল হাভীলিল ফাতাওয়া : ২/১৪৯  পৃষ্ঠা,

 

সকল উলামাগণ একমত যে (মুতাওয়াতির) এ পর্যায়ের হাদিসকে ইনকার করলে কাফের হয়ে যাবে। এ বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমার লিখিত ‘‘প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’’ এর ১ম খন্ডের ৪০৭-৪১১ পৃষ্ঠা দেখুন। ইনশাআল্লাহ আপনাদের সঠিক বিষয়টি বুঝে আসবে।

 
Top