কারবালার জমীনে ইমাম হোসাইনের জীবনের শেষ জ্বালাময়ী ভাষণ
----------------------------------------------------------------
সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া আজহারী
ইমাম হোসাইন (রাঃ) তাঁর জীবনের শেষ ভাষণে কী বলেছিলেন? ৬১ হিজরির ১০ই মুহাররম শুক্রবার ফোরাতের তীরে কারবালার ময়দানে সিনা টান করে সেদিন ওমর ইবনে সাদ, শিমার, ইবনে জিয়াদসহ সকল ইয়াজিদ সৈনিকের উদ্দেশ্যে ইমাম হোসাইন বলেছিলেন,
"হে (২০,০০০) ইয়াজিদি সৈনিকেরা! তোমাদের মধ্যে কী একজনও মুসলমান নেই?"
তোমরা কী জান না যে আমি এবং আমার ভাই হাসান জান্নাতের যুবকদের সর্দার? তোমরা কী জাননা যে আমরা দুই ভাই আমাদের নানাজানের কলিজার টুকরা ছিলাম? তোমরা কী জাননা যে আমাদের নানাজান বলে গেছেন, আমার হাসান হোসাইন জান্নাতের দুটো ফুল। তবে কেন তোমরা আমাদেরকে শহীদ করার জন্য ওঠে পড়ে লেগেছ? তোমরা কী জাননা যে, আমরা দুই ভাই কাল হাশরের দিনে হাউজে কাউসারের কাছে আমার নানাজীর দুই পাশে বসা থাকব। আমরা দুই ভাই উম্মতকে কাওসারের পানি পান করাব। নবীর নাতিকে শহীদ করে তোমরা কাল হাউজে কাওসারের পানি পাবে তা কিভাবে আশা কর?"
প্রিয় পাঠকেরা! দ্বীনদরদী ভাই ও বোন আমার! ইমাম হোসাইন রাঃ জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমাদের মধ্যে কী একজনও মুসলমান নেই?
তারা তো বেশভূষায় মুসলমানই ছিল প্রিয় পাঠক! তাদের সুন্নতী দাড়িও ছিল, পাগড়িও ছিল, টুপিও পড়ত, লেবাসও ছিল সুন্নতি, কারবালার ময়দানে তারাও নামাজ পড়েছে আজান-ইকামাতের মাধ্যমে। তারাও আল্লাহু আকবার তাকবির দিয়েছে। বাহ্যিক ইসলামের সবই ছিল তাদের মাঝে।  তবুও ইমাম হোসাইন তাদের উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করেছেন, "তোমাদের মধ্যে কী একজনও মুসলমান নেই?"
কারণ কী? কোন একটা জিনিস ছিল না তাদের মাঝে?
তারা এমন মুসলমান ছিল, তারা এমন নামাজী আর এমন ইবাদাতকারী ছিল, আহত বিধ্বস্ত পড়ে থাকা ইমাম হোসাইন রাঃ এঁর শরীর মুবারকের দিকে ইশারা করে যারা একজন আরেকজনকে বলছিল, জলদি জলদি ইমাম হোসাইনের মাথা শরীর থেকে আলাদা করে নিয়ে চল। আসরের নামাজের সময় যায় যায়! নামাজ কাজা হয়ে যাচ্ছে!
হায়রে নামাজী!  হায়রে মুত্তাকি!
নবীর প্রেম ছাড়া কোন ইবাদাত নেই, নবীর আহলে বায়তের প্রেম ছাড়া কোন ইবাদাত নেই।
পাক পাঞ্জাতনের ভালবাসা অন্তরে না নিয়ে কাল কেয়ামত পর্যন্ত সেজদা দিয়ে পড়ে থাকলেও মুক্তি তোদের নসিবে জুটবে না রে নরাধম পাপাত্মা এজিদের দল!
 
Top