❏ প্রশ্ন-১৩৬ঃ নিম্নোক্ত হাদিসের অংশ,

فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ ‘এটি (সূর্য) এভাবে চলতে চলতে আরশের নিচে সিজদাবনত হয়’ (বুখারী শরীফ)। হযরত আবু যর (رضى الله تعالي عنه) হতে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি বলেনঃ 


قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَسْجِدِ عِنْدَ غُرُوبِ الشَّمْسِ فَقَالَ يَا أَبَا ذَرٍّ أَتَدْرِي أَيْنَ تَغْرُبُ الشَّمْسُ قُلْتُ اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ.


সূর্যাস্তের সময় আমি  রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)    এর সাথে মসজিদে ছিলাম। তখন তিনি   বললেন, হে আবু যর! তুমি কি জানো সূর্য কোথায় অস্ত যায়। আমি বললাম, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই   সমধিক জ্ঞাত। তখন  রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)    বললেন, সূর্য চলতে চলতে আরশের নিচে সিজদাবনত হয়। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, সূর্য তার নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে। এটা মহাপরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিশ্বের সকল দেশের সময় তো আলাদা আলাদা বা ভিন্ন ভিন্ন যেমন- আমাদের এখানে বাংলাদেশে রাত হলে তো অন্য কোন দেশে দিন হয়। এখন যদি আমরা এখান থেকে রাত ১২টা কিংবা ১টার সময় এই খবর প্রচার করি যে, সূর্য আরশের নিচে সিজদাবনত অবস্থায় আছে, তখন হয়ত অন্য কোন দেশে সকাল ৮টা বা ৯টা বাজবে এবং ওই দেশের লোকেরা বলবে যে, এখানে তো সূর্যকে উদিত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং একথা সঠিক নয় যে, সূর্য আরশের নিচে সিজদাবনত অবস্থায় আছে। এখন অত্র হাদিসটির মর্মার্থ ও ব্যাখ্যা কী হবে?


✍ উত্তরঃ এই প্রশ্নটি নিরসনের জন্য ওলামায়ে কেরাম এই হাদিসটির নানা ধরনের ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন যেমন, সাইয়েদ মাহমুদ আলুসী বাগদাদী (رحمه الله تعالي ) বলেন, সূর্যের আত্মা ঊর্ধ্ব জগতে গিয়ে সিজদা করে যা সূর্যের আবর্তনের সাথে সাংঘর্ষিক বা বিপরীত নয় বিশেষতঃ যখন এই অস্ত যাওয়ার বিষয়টি দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে মহান কাজে আদিষ্ট হওয়া। এটি ‘বিকল্প প্রতিস্থাপন’ নীতিতে আল্লাহর কুদরতী শক্তির বদৌলতে সংঘটিত হয়। তাতে দৃষ্টিশক্তির কোন ভূমিকা নেই। কোন কোন আলেম এই ব্যাখ্যাটি প্রদান করেছেন যে, যেহেতু আরশের অবস্থান হচ্ছে গোটা বিশ্ব জগত ও সৃষ্টি জগতের ওপর, তাই সূর্য স্বীয় আবর্তনের সময় অবশ্যই আল্লাহ'র আরশের নিচ দিয়ে অতিক্রম করবে। এজন্য এতে কোন কথা বিবেক ও বুদ্ধি পরিপন্থী নয়, অবশ্যই বিবেক-বুদ্ধির ঊর্ধ্বে। যেহেতু এই সংবাদটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) দিয়েছেন যার সম্পর্ক আল্লাহর ওহীর সাথে, তাই তা উপলব্ধি করার ও প্রত্যক্ষ করার অবকাশ নেই। বরং এর ওপর ঈমান আনা আমাদের জন্য আবশ্যক।

আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (رحمه الله تعالي ) ‘উমদাতুল কারী’ পৃষ্ঠা নং ১১৯, খন্ড নং-৫, চন্দ্র-সূর্যের গণনাবাচক গুণ বিষয়ক অধ্যায়, সৃষ্টির সূচনা বিষয়ক কিতাব এবং অন্যান্য বর্ণনায় বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।

আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই   সমধিক জ্ঞাত।

 
Top