জিজ্ঞাসা–২২৮: আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ। আমার প্রশ্ন হলো, অনেকে যৌবনে  প্রেম করে। এটা জায়েয আছে কিনা?–ইমরান আলী সাঁপুই: sanpui67@gmail.com

জবাব:وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, পরনারীর সঙ্গে নিঃসন্দেহে প্রেম হারাম। কেননা,

১.আল্লাহ তাআলা বলেন –
وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ الَّذِينَ أُوتُواْ الْكِتَابَ مِن قَبْلِكُمْ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ مُحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ وَلاَ مُتَّخِذِي أَخْدَانٍ “তোমাদের জন্যে হালাল সতী-সাধ্বী মুসলমান নারী এবং তাদের সতী-সাধ্বী নারী, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তোমাদের পূর্বে, যখন তোমরা তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর তাদেরকে স্ত্রী করার জন্যে, কামবাসনা চরিতার্থ করার জন্যে কিংবা গুপ্ত প্রেমে লিপ্ত হওয়ার জন্যে নয়।” (সূরা মায়িদা ৫)

২. তাছাড়া এজাতীয় প্রেম নর-নারীকে জিনার নিকটবর্তী করে দেয়। আর জিনা মারাত্মক একটি কবিরা গুনাহ। জিনা তথা অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক হারাম  এবং যে সকল জিনিস জিনার নিকটবর্তী করে দেয় তাও হারাম। আল্লাহ তাআলা বলেন- وَلا تَقرَبُوا الزِّنى إِنَّهُ كانَ فاحِشَةً وَساءَ سَبيلًا “আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।”(সূরা ইসরা ৩২)

৩. প্রেম করলে শয়তান অবশ্যই জিনা করতে প্রলুব্ধ করবে। প্রেমিক-প্রেমিকা নির্জনতা কামনা করবে। আর এটা হারাম। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, أَلاَ لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلاَّكَانَ ثَالِثَهُمَا الشَّيْطَانُ “শুনে রাখ, কোন পুরুষ যেন কোন মহিলার সঙ্গে নিভৃতে একত্রিত না হয় অন্যথায় শয়তান অবশ্যই তৃতীয় জন হিসাবে হাযির থাকে।” (ইবনু মাজাহ ২৩৬৩, তিরমিযি ২১৬৫)

৪. অপর হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন-

اَلْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظْرُ وَالْاُذُنَانِ زِنَاهُمَا الْاِسْتِمَاعُ وَاللِّسَانُ زِنَاهُمَا الْككَلَامُ وَالْيَدُ زِنَاهُمَا الْبَطْشُ وَالرِّجْلُ زِنَاهُمَا الخُطَا وَالْقَلْبُ يَهْوِىْ وَيَتَمَنَّى وَيُصَدِّقُ ذَالِكَ الْفَرْجُ اَوْ يُكَذِّبُه

“দুই চোখের ব্যভিচার হল হারাম দৃষ্টি দেয়া, দুই কানের ব্যভিচার হল পরনারীর কণ্ঠস্বর শোনা, যবানের ব্যভিচার হল অশোভন উক্তি, হাতের ব্যভিচার হল পরনারী স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হল গুনাহর কাজের দিকে পা বাড়ান, অন্তরের ব্যভিচার হল কামনা-বাসনা আর গুপ্তাঙ্গঁ তা সত্য অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মেশকাত ১/৩২)

লা বাহুল্য, এর সবগুলোই ধীরে ধীরে হারাম-প্রেমে অনুপ্রেশ করে থাকে।

৫. এছাড়াও হারাম-প্রেম অনেক সময় বান্দাহকে শিরকের নিকটবর্তী করে দেয়। কারণ অনেক সময় তারা একে অপরকে এতটাই ভালবাসা শুরু করে দেয় যে প্রকার ভালবাসা পাওয়ার দাবীদার একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন – وَمِنَ النَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ اللَّـهِ أَندَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّـهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِّلَّـهِ “আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে।” (সূরা বাক্বারা ১৬৫)

উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী নকশবন্দী
umyrkobbadi@gmail.com

 
Top