#আলবানী কতৃক ইমাম বোখারী (রহঃ) কে অমুসলিম আখ্যায়িত করা-নাউযুবিল্লাহ,

বর্তমানে তথকথিত সালাফী আক্বিদার অনুসারীগণ আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আচরণ বিধি ও নীতি-মালার কোন তোয়াক্কা না করে খুবই সাধারণভাবে মানুষকে কাফের-মুশরিক ইত্যাদি আখ্যায়িত করে থাকে। কাউকে কাফের মুশরিক বলা যেন এদের কাছে পানি ভাতের মতো। তাদের এই আচরণ নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ এগুলো তারা সহীহ আক্বিদা অনুসরণের নামেই করে থাকে।

আলবানী সাহেব ইমাম বোখারী এর সাথে কোন বিষয়ে মতানৈক্য করলে সেটা আলোচনার প্রযোজন ছিলো না, কিন্তু তিনি একটি আক্বিদার ক্ষেত্রে রীতিমত ইমাম বোখারীর সম্পর্কে এমন শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা একজন সাধারণ মুসলমানের জন্য শোভনীয় নয়। আক্বিদার ক্ষেত্রে তাদের এই তাকফীরি মনোভাব কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি কোনভাবেই ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কল্যাণকর নয়।

ইমাম বোখারী রহ. সম্পর্কে শায়খ আলবানীর বক্তব্য:

ইমাম বোখারী (রহঃ) বোখারী শরীফের “কিতাবুত তাফসীর” এ সূরা কাসাস এর ৮৮ নং আয়াতের যে ব্যাখ্যা করেছেন, সে সম্পর্কে নাসীরুদ্দিন আলবানী লিখেছেন,

ان هذا التأويل لا يقول به مؤمن مسلم وقال إن هذه التأويل هو عين التعطيل.

“এ ধরণের ব্যাখ্যা কোন মুমিন-মুসলমান দিতে পারে না। তিনি বলেন, এ ধরণের ব্যাখ্যা মূলতঃ কুফরী মতবাদ “তা’তীলের” অন্তর্ভূক্ত”

ইমাম বোখারী (রহঃ) সূরা কাসাসের ৮৮ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন,

كُلُّ شَىْءٍ هَالِكٌ إِلاَّ وَجْهَهُ إلا ملكه, ويقال: إلا ما أُريد به وجه الله

“আল্লাহর সত্তা(চেহারা) ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে”

এখানে তিনি “ওয়াজ্হুন” শব্দের ব্যাখ্যা করেছেন “মুলকুন” তথা আল্লাহর রাজত্ব। তখন অর্থ হবে, সবকিছু ধ্বংস হবে, তাঁর রাজত্ব ব্যতীত। অথবা “ওয়াজহুন” দ্বারা যা উদ্দেশ্য হবে, তা ব্যতীত সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।

[ফাতাওয়াশ শায়েখ আলবানী, পৃষ্ঠা-৫২৩, মাকতাবাতুত তুরাছিল ইসলামী, প্রথম প্রকাশ ১৯৯৪ইং]

প্রয়োজনীয় কথা, তা’তীল শব্দের অর্থ হলো কোন কিছু অস্বীকার বা বাতিল করা।

সূরা ক্বাসাসের ৮৮ নং আয়াতে আল্লাহর ওয়াজহ বা চেহারার কথা বলা হয়েছে।অর্থাৎ, সবকিছু ধ্বংস হবে, তাঁর রাজত্ব ব্যতীত। যেটা ইমাম বুখারী রহ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত।

অথচ,শায়খ আলবানী বলেন, এটা কোন মু’মিন মুসলমানের কথা নয় এবং এটি তা’তীলের অন্তর্ভূক্ত?

অবশ্য আলবানী আলোচনার শেষে বলেছেন, ইমাম বোখারী রহ. কর্তৃক এধরনের ব্যাখ্যা থেকে আমরা তাকে মুক্ত মনে করবো। এর দ্বারা স্পষ্ট যে, উক্ত ব্যাখ্যাটি আলবানী সাহেবের নিকট কতো মারাত্মক।







আলবানী সাহেবের মূল দাবী, আল্লাহর রাজত্ব ব্যতীত সকল কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে, এটা বোখারী শরীফে নেই। আর থাকলেও কিছু নুসখায় আছে।

আলবানী সাহেব কিভাবে একটি ধ্রুব সত্যকে এভাবে সন্দেহের আবরণে ঢাকতে চাইলেন, তা আমাদের অজানা।

আলবানী সাহেবের পূর্বে বোখারী শরীফ থেকে যারা উক্ত বিষয়টি তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন,

১. ইবনে তাইমিয়া রহ . তার বয়ানু তালবিবিসিল জাহমিয়া নামক কিতাবে ইমাম ইবনে কাইসান থেকে উক্ত ব্যাখ্যাটি উল্লেখ করেছেন। দেখুন, বয়ানু তালবিসিল জাহমিয়া, খ.১ পৃ.৫৮১

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহ. ইমাম বোখারীর উক্ত ব্যাখ্যাটি হুবহু ইমাম ইবনে কাইসান থেকে বর্নণা করেছেন। ইবনে তাইমিয়া রহ. মাজমুউল ফাতাওয়া এর দ্বিতীয় খন্ডে এ্টি উল্লেখ করেছেন।

২. ইবনুল কাইয়্যিম রহ. (৭৫১ হি:) তিনি তার হাদীল আরওয়াহ ( খ. ১, পৃ. ৯৬) কিতাবে বোখারী শরীফ থেকে এটি উল্লেখ করেছেন।

৩. ইমাম মাওয়ারদী রহ. (৩৬৪-৪৫০ হি:) তার বিখ্যাত তাফসীর আন নুকাতু ওয়াল উয়ূন তথা তাফসীরে মাওয়ারদীতে ইমাম বোখারী রহ. উক্ত ব্যাখ্যাটি ইমাম বোখারীর সূত্রে উল্লেখ করেছেন।

৪. ইবনে কাসীর রহ. (৭০০-৭৭৪ হি:) তার তাফসীরে ইবনে কাসীরে এটি উল্লেখ করেছেন। খন্ড.৬, পৃ,২৬২। অবশ্য ইবনে কাসীর রহ. ইমাম বোখারীর রেফারেন্সে দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, ﻭﻗﺎﻝ ﻣﺠﺎﻫﺪ ﻭﺍﻟﺜﻮﺭﻱ ﻓﻲ ﻗﻮﻟﻪ : } ﻛُﻞُّ ﺷَﻲْﺀٍ ﻫَﺎﻟِﻚٌ ﺇِﻻ ﻭَﺟْﻬَﻪُ { ﺃﻱ : ﺇﻻ ﻣﺎ ﺃﺭﻳﺪ ﺑﻪ ﻭﺟﻬﻪ، ﻭﺣﻜﺎﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺤﻪ ﻛﺎﻟﻤﻘﺮﺭ ﻟﻪ
অর্থাৎ ইমাম মুজাহিদ রহ. ও সুফিয়ান রহ. আল্লাহর চেহারা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে, এই আয়াতের তাফসীরে বলেছন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা কিছু করা হয়েছে, তা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। ইমাম বোখারী রহ. উক্ত তাফসীরটি গ্রহণ করে বোখারী শরীফে ব্যাখ্যাটি উল্লেখ করেছেন।

৫. উমদাতুল কারীতে আল্লাম বদরুদ্দিন আইনী রহ. উক্ত ব্যাখ্যটি উল্লেখ করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি নুসখার ভিন্নতার কোন কথা বলেননি।

৬. আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহ. ফাতহুল বারীতে উক্ত কথাটি উল্লেখ করেছেন এবং এ ব্যাপারে নুসখার কোন ভিন্নতার কতা বলেননি।

৭. বর্তমানে সবাইকে ইমাম শরফুদ্দিন ইউনিনি রহ. এর নুসখার উপর ভি্ত্তি করে চলতে হয়। শরফূদ্দিন ইউনিনি রহ. এর নুসখাটি ইমাম ক্বাসতাল্লানী রহ. (৮২১-৯২৩ হি:) বর্ণনা করেছেন। সুতরাং ক্বাসতাল্লানী রহ. এর এই নুসখার গুরুত্ব অপরিসীম। যেমনটি আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রহ. ফয়যুল বারীতে উল্লেখ করেছেন ।

দেখুন, ফয়যুল বারী, খ.১ পৃ. ৩৭-৩৮। ইমাম ক্বাসতাল্লানী রহ. বোখারী শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ইরশাদুস সারী এর মতন হিসেবে উক্ত ব্যখ্যাটি উল্লেখ করেছেন। দেখুন,

৮. আল্লামা হাবেদ সিন্ধী রহ.বোখারী শরীফের ব্যাখ্যাগ্রন্থ লিখেছেন। কিতাবের নাম, হাশিয়াতুস সিন্দী আলা সহিহিল বোখারী। তিনি ইমাম বোখারী রহ. উক্ত ব্যাখ্যাটির বিশ্লেষণ করেছেন।

৯. ইমাম আবুল লাইস সমরকন্দী রহ. (মতৃ: ৩৭৫ হি:) তার তাফসীরে সমরকন্দী যেটি বাহরুল উলুম নামে প্রসিদ্ধ, উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় চেহারা এর ব্যাখ্যা লিখেছেন, আল্লাহর রাজত্ব।

১০. ইমাম বাগাবী রহ. (মৃত: ৫১৬ হি:) তার তাফসীরে বাগাবীতে একই ব্যাখ্যা উল্লেখ করেছেন,

১১. ইমাম সা’লাবী রহ. (মৃত:৪২৭ হি:) তার বিখ্যাত তাফসীরে সা’লাবী-তে উক্ত ব্যাখ্যাটি উল্লেখ করেছেন,
সালাফী শায়খদের মাঝে যারা উক্ত ব্যাখ্যাটি তাদের কিতাবে উল্লেখ করেছেন:

১২.  সাইদ বিন নাসের আল-গামিদী আর রদ্দুল আলা মুনকিরি সিফাতাইল ওয়াজহি ওয়াল ইয়াদ কিতাবে উক্ত ব্যাখ্যাটি উল্লেখ করেছেন। দেখুন,
১৩. সালাফী শায়খ উমর সুলাইমান আল-আশকার তার আল-জান্নাতু ওয়ান নার বইয়ে উক্ত ব্যাখ্যাটি উল্লেখ করেছেন।

১৪.  সালাফীদের বিখ্যাত শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল-গুনাইমান তার শরহু কিতাবিত তাউহীদ মিন সহিহিল বোখারী নামক কিতাবে উক্ত ব্যাখ্যাটি উল্লেখ করেছেন,

এভাবে আলবানী সাহেবের পূর্বে কেউ উক্ত ব্যাখ্যার ব্যাপারে কোন প্রশ্ন করেননি।

উপরের এইসকল মুহাদ্দিসগন কি আলবানীর মুকাল্লিদ ও সালাফীদের নিকট কাফের??

বোখারী শরীফের নুসখা সমূহ:

বোখারী শরীফের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ নুসখা হলো, আল্লামা শরফুদ্দিন ইউনিনি রহ. (৭০১ হি:) এর নুসখা। এখানে অন্যান্য নুসখার পার্থক্যগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যান্য নুসখার পার্থক্য বোঝানোর জন্য যে এখানে যে অক্ষরগুলো ব্যবহৃত হয়েছে নিচে উল্লেখ করা হলো,

১. হা ( ﻩ), ইমাম আবু যর হারাবী রহ.এর নুসখা বোঝানোর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
২.সোয়াদ ( ﺹ )ইমাম আসিলি রহ. এর নুসখা বোঝানোর জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
৩. সিন ( ﺱ)অথবা শিন ( ﺵ) এটি ইবনে আসাকির রহ. এর নুসখা বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছিলো।
৪. ত্ব ( ﻁ )অথবা জ ( ﻅ )ইমাম আবু ওয়াক্ত রহ.এর নুসখার জন্য।
৫. লম্বা হা ( ﻫﻪ ) ইমাম কুশমিহিনি রহ. এর নুসখার জন্য।
৬. হা,( ﺡ ) ইমাম হামাবী রহ. এর নুসখার জন্য।
৭. লম্বা সিন, ( ﺱ) ইমাম মুসতামালি রহ. এর নুসখার জন্য।
৮. কাফ, ( ﻙ) কারীমা রহ. এর নুসখার জন্য।
৯. আইন, ( ﻉ ) ইবনুস সামআনী রহ. এর নুসখার জন্য।
১০. জিম, ( ﺝ ) আাল্লামা জুরজানী রহ.এর নুসখার জন্য।

উপরের বিষয়গুলো বুঝলে ইমাম বোখারী রহ.এর বক্তব্যটি বোখারীতে আছে কি না বুঝতে সহজ হবে।

প্রথম কথা হলো, ইমাম বোখারী রহ. উক্ত বক্তব্যটি সুর্যের মতো স্পষ্টভাবে প্রমাণিত। এ বক্তব্যের ব্যাপারে কোন নুসখাতে কোন বিরোধ নেই। সকল নুসখাতে এটি রয়েছে। এবং এ পর্যন্ত কেউ এই বিরোধের কথা বলেননি। আর ভবিষ্যতেও আলবানী সাহেবের অন্ধ ভক্তরা ছাড়া আর কেউ বলবে না।

 

মোট কথা, বোখারী শরীফের সকল নুসখা, প্রকাশনা ও সংস্করণে উক্ত কথাটি রয়েছে এবং ইতোপূর্বে কেউ এব্যাপারে সামান্যতম কোন সংশয় প্রকাশ করেননি। এটি এমন একটি ধ্রুব সত্য যে, কারও পক্ষে তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

আলবানী সাহেব এটাও বলেছেন, ইমাম বোখারীর উক্ত কথাটি কিছু নুসখায় রয়েছে, তার এই কথার মূল ভিত্তি কী?

আলবানী সাহেব এর বক্তব্যের ভিত্তি:

এখানে আলবানী সাহেবের ব্যাপারটি আমাদের দেশে প্রচলিত একটি কথার মতো হয়েছে, অর্থাৎ এখানে প্রস্রাব করিবেন, না করিলে ৫০ টাকা জরিমানা। ফাতহুল বারী তে ইবনে হাজার আসকালানী রহ. যেই শব্দটির ভিন্নতার কথা আলোচনা করেছেন, সেটি হলো, ﻭﻗﺎﻝ ﻣﻌﻤﺮ
অর্থাৎ এই শব্দটি বোখারী শরীফের ইমাম ফারাবরী রহ. এর নুসখাতে রয়েছে। এটি কোন অসম্ভব কিছু নয়। ইমাম বোখারী উক্ত তাফসীরটি ইমাম মা’মার এর সূত্রে বর্ণনার কথা শুধু ফারাবরী রহ. এর নুসখায় থাকায় এ ব্যাপারে ইবনে হাজারী আসকালানী রহ. নুসখার ভিন্নতার কথা বলেছেন। উক্ত ব্যাখ্যার ভিন্নতার কথা বলা হয়নি। পরের বক্তব্যকে পূর্বের সাথে মিলিয়ে আলবানী সাহেব এই বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন যে, এই ব্যাখ্যার ব্যাপারে নুসখার ভিন্নতার কথা বলা হয়েছে। এটি একটি দিবালোকের ন্যায় সত্য বিষয় যে, ইবনে হাজার আসকালানী রহ. সহ পূর্বের কেউ উক্ত ব্যাখ্যাটির ব্যাপারে নুসখার ভিন্নতার দাবী করেননি। এবং বোখারীতে নেই, এই জাতীয় কথা বলেননি। নিজের মতের বিরোধী হওয়ার কারণে কেবল আলবানী সাহেব না এটি বলেছেন।

 ইবনে হাজার আসকালানী রহ. লিখেছেন, [ইমাম বোখারী থেকে নাসাফী রহ. এর বর্ণনায় রয়েছে, ﻭﻗﺎﻝ ﻣﻌﻤﺮ (ইমাম মা’মার বলেছেন), অত:পর, ইমাম বোখারী রহ. উক্ত বক্তব্যটি উল্লেখ করেছেন। (অর্থাৎ নাসাফীর বর্ণনায় রয়েছে, আল্লাহর রাজত্ব ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে, এটি ইমাম মা’মার এর বক্তব্য এবং তার উদ্ধৃতি দিয়ে ইমাম বোখারী এটা বর্ণনা করেছেন)।

 এখানে ইমাম মা’মার হলেন, আবু উবাইদা ইবনুল মুসান্না। ইমাম মা’মার তার মাজাযুল কুরআনে এ সম্পর্কে লিখেছেন, তবে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, আল্লাহ ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। ] (ইবনে হাজার আসকালানী রহ. এর বক্তব্য শেষ হলো)।

অর্থাৎ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. এর এই আলোচনার মূল হলো, আল্লাহর রাজত্ব ব্যতী সব ধ্বংস হয়ে যাবে, এই ব্যাখ্যাটি ইমাম বোখারী থেকে যারা বোখারী শরীফ বর্ণনা করেছেন তাদের মধ্যে ইমাম নাসাফী রহ. একটি শব্দ বেশি বলেছেন। সেটি হলো, ﻭﻗﺎﻝ ﻣﻌﻤﺮ
অন্যদের বর্ণনায় এই শব্দটি নেই। অর্থাৎ অন্যদের বর্ণনায় উক্ত বক্তব্যটি সরাসরি ইমাম বোখারী থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। 

আর ইমাম নাসাফী রহ. এর বর্ণনায় রয়েছে, ইমাম বোখারী রহ. উক্ত বক্তব্যটি ইমাম মা’মার থেকে গ্রহণ করেছেন এবং তার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। 

এখানে মৌলিক কথা হলো, ইমাম বোখারী রহ. কিতাবুত তাফসীরে কখনও নিজের তাফসীর বর্ণনা করেছেন, কখনও অন্যের সূত্রে তাফসীর বর্ণনা করেছেন। এখানে যে তাফসীরটি উল্লেখ করা হযেছে, ইমাম বোখারী রহ. থেকে যারা বর্ণনা করেছেন, তাদের সকলেই সরাসির ইমাম বোখারীর উক্তি হিসেবে উল্রেখ করেছেন। ইমাম নাসাফী রহ. একে বোখারী থেকে ইমাম মা’মারের সূত্রে বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ ইমাম বোখারী রহ. বলেছেন, ইমাম মা’মার উক্ত ব্যাখ্যা করেছেন।
এটি সরাসরি ইমাম বোখারী রহ. এর বক্তব্য হওয়াটাই অধিক শক্তিশালী। 

 কারণ, ইমাম মা’মার রহ. এর মাজাযুল কুরআনে উক্ত ব্যাখ্যাটি নেই।
 তবে এটি নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। কেননা, এটি ইমাম বোখারী রহ. এর নিকট অন্য সূত্রে ইমাম মা’মার রহ. উক্ত ব্যাখ্যাটি পৌঁছতে পারে। এটি কোন সমস্যা নয়। এটি ইমাম বোখারীর নিজের বক্তব্য হোক, কিংবা তিনি ইমাম মা’মার থেকে বর্ণনা করুক, উভয়টি প্রমাণ করে যে বোখারী শরীফে উক্ত ব্যাখ্যাটি ইমাম বোখারী দলিল হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং উক্ত ব্যাখ্যাটি তার নিকট বিশুদ্ধ।

আমি সকল আলবানী ভক্তদের উদাত্ত আহ্বান জানাবো তারা যে কোন একটা নোসখা থেকে প্রমাণ করুন, যে উক্ত বক্তব্যটি বোখারী শরীফে নেই। 

এভাবে নিজেরা অন্ধ অনুসরণ করে অন্যদেরকে অন্ধ বলার মানসিকতা ত্যাগ করুন।গোঁড়ামি পরিহার করুন 
 
Top