আল্লামা সাকিব ইকবাল শামীর নসীহত

<div>আল্লামা সাকিব ইকবাল শামীর নসীহত (অনুবাদকৃত)</div><div><br></div><div>১. জীবন তখনই পুলকময় হবে, যখন আপনি ভালো থাকবেন।</div><div>২. কিন্তু এর চেয়েও জীবন সর্বোত্তম হবে– যখন অন্যরা আপনার কারণে আনন্দে থাকবে। </div><div>৩. অন্যের হৃদয় স্পর্শে বিশ্বস্ত হোন।</div><div>৪. উদ্দীপ্ত হও। প্রকৃতির কিছুই নিজের জন্য বাঁচে না। যেমন: </div><div>*নদী নিজের পানি পান করে না।</div><div>*গাছ নিজের ফল খায় না।</div><div>*সূর্য নিজের জন্য আলোকিত হয় না।</div><div>*ফুল নিজের জন্য সুবাস ছড়ায় না।</div><div>৫.অন্যের জন্য বেঁচে থাকাটা প্রকৃতির নিয়ম।</div><div>৬.আমরা সবাই একে-অপরকে সাহায্য করার জন্য জন্মেছি।</div><div>৭.তুমি যতই কঠিন পরিস্থিতিতে উপনীত হও না কেন, তবুও অন্যের উপকার কর।</div>

আল্লামা সাকিব ইকবাল শামীর নসীহত

আল্লামা সাকিব ইকবাল শামীর নসীহত (অনুবাদকৃত) ১. জীবন তখনই পুলকময় হবে, যখন আপনি ভালো থাকবেন। ২. কিন্তু এর চেয়েও জীবন সর্বোত্তম হবে– যখন অন্যরা...

Read more »

হুজুর (দ.) এর পিতামাতার বিবাহ

<p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">পঞ্চম অধ্যায়ঃ পিতা-মাতার বিবাহ</div><div style="text-align: justify;">প্রসঙ্গ: বিবি আমেনার গর্ভে নুরে মোহাম্মদীর সরাসরি গমন</div><div style="text-align: justify;">===============</div><div style="text-align: justify;">পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হযরত আদম (عليه السلام)-এঁর সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বৎসর পূর্বে, (পৃথিবীর হিসাবে পাঁচশত এগার কোটি বৎসর পূর্বে) নবী করিম [ﷺ] নুর হিসাবে আল্লাহর সান্নিধ্যে বিদ্যমান ছিলেন। তারপর হযরত আদম (عليه السلام) এর সাথে সেই নুর পৃথিবীতে আগমন করেন এবং হযরত শিষ, হযরত ইদ্রিস, হযরত নূহ, হযরত ইব্রাহিম ও হযরত ইসমাইল (عليهم السلام) প্রমূখ পয়গাম্বর ও নেককারগণের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হতে হতে অবশেষে হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه)- এর ললাটে স্থান লাভ করেন। হযরত ইসমাইল ও হযরত আব্দুল্লাহ ছিলেন যবিহউল্লাহ। নবী করিম [ﷺ] স্বয়ং শুকরিয়া আদায় করে বলতেন- ”আমি দুই যবিহউল্লাহর সন্তান।”</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">হযরত আব্দুল্লাহর (رضي الله عنه) বয়স যখন চব্বিশ বৎসর, তখন পিতা তাঁকে বিবাহ করানোর উদ্দেশ্যে পাত্রীর অনুসন্ধানে বের হন। পথিমধ্যে ওয়ারাকা ইবনে নওফেল- এর বোন ফাতেমা ওরফে উম্মে কিতাল হযরত আব্দুল্লাহর ললাটে নূর লক্ষ্য করে স্বেচ্ছায় বিবাহের প্রস্তাব দেন। কিন্তু হযরত আব্দুল্লাহ পিতার সম্মানে ঐ প্রস্তাব নাকচ করে দেন। </p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">ঐ দিনই মদিনাবাসী এবং মক্কায় প্রবাসী ওহাব ইবনে আবদে মুনাফ-এঁর ভাগ্যবতী কন্যা বিবি আমেনার সাথে হযরত আব্দুল্লাহর বিবাহ সম্পন্ন হয়। উল্লেখ্য যে, মদিনার বনী আদি বংশের জাহরা গোত্রে আব্দুল মোত্তালেবও বিবাহ করেছিলেন এবং সেই ঘরে আবু তালেব, হযরত হামজা, হযরত আব্বাছ ও নবী করিম [ﷺ]-এঁর পিতা হযরত আব্দুল্লাহ জন্মগ্রহণ করেন। সেই গোত্রেরই কন্যা ছিলেন বিবি আমেনা (رضي الله عنه)। সুতরাং হযরত আব্দুল্লাহ ও নবী করিম [ﷺ] উভয়েরই মাতুলালয় ছিল মদিনা। </p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">রজব মাসের প্রারম্ভে এই শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয় এবং ঐ দিনেই মিনার নিকটে শিয়াবে আবি তালেব নামক স্থানে স্বামী-স্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়। ঐ দিনেই হযরত আব্দুল্লাহর (رضي الله عنه) ললাট হতে নবুয়তের পবিত্র নূর মা আমেনার (رضي الله عنه) গর্ভে সরাসরি স্থানান্তরিত হয়- (মাওয়াহেব ও বেদায়া নেহায়া)। পহেলা রজব শুক্রবার রাতে নবী করিম [ﷺ]-এঁর পবিত্র নূর (মাটি নয়) মায়ের রেহেমে স্থানলাভ করেন বলে মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া ও আনওয়ারে মোহাম্মদীয়া গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। ইবনে ইসহাক কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে বিবি আমেনার (رضي الله عنه) সূত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঐ রাত্রেই বিবি আমেনাকে স্বপ্নযোগে জানিয়ে দেয়া হয় - ”তুমি এই উম্মতের শ্রেষ্ঠ মানবকে ধারণ করেছো। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে তাঁর নাম রাখবে মোহাম্মদ [ﷺ] বা বারংবার প্রশংসিত।”</p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) রেওয়ায়াত করেন যে, ”ঐ রাত্রেই কোরেশদের গৃহপালিত পশুগুলো নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিল যে, আজ সমগ্র পৃথিবীর চেরাগ, আল্লাহর প্রিয় রাসুল [ﷺ] মাতৃগর্ভে এসেছেন। আল্লাহর কুদরতে সমগ্র পৃথিবীর প্রাণীকুলের মধ্যে একটি নৈসর্গিক আনন্দের ঢেউ খেলে গিয়েছিল। কিন্তু খুশী হতে পারেনি সেদিন অভিশপ্ত শয়তান।” (আনওয়ারে মোহাম্মদীয়া)।</p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">আজও মানবরূপী কিছু শয়তান মিলাদুন্নবীর শুভদিনে খুশী হতে পারেনা। তারা এই আনন্দময় দিবসে মিলাদুন্নবীর বিরুদ্ধে নব-আবিষ্কৃত সিরাতুন্নবী নামে লোক দেখানো পৃথক মাহফিল করে, মিলাদুন্নবীর তাৎপর্য্যপূর্ণ ঘটনাবলীর সমালোচনা করে এবং মিলাদুন্নবী [ﷺ] মাহফিল ও অনুষ্ঠানকে বেদাত বলে অপপ্রচার চালাতে থাকে। অথচ মিলাদুন্নবীর প্রথা সুন্নাতসম্মত একটি প্রথা। এই প্রথাকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে একটি ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক দল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন ইসলামী ফাউন্ডেশনে পক্ষকালব্যাপী সিরাতুন্নবী নামে অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। ইসলামী ফাউন্ডেশনের জেলা অফিসগুলোকে ও সরকারী মিলাদুন্নবীর পরিবর্তে সিরাতুন্নবী অনুষ্ঠান পালন করতে বাধ্য করা হয়। এভাবে তারা বাংলাদেশে একটি ওহাবী নেটওয়ার্কের অধীন কাজ করে যাচ্ছে। তাদের এই গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানের একান্ত কর্তব্য। আল্লাহর শোকর - আহলে সুন্নাত ও ইসলামী ফ্রন্টের আন্দোলনের ফলে ১৯৯৭ ইং হতে ঈদে মিলাদুন্নবী চালু হয়েছে – এবং এখনও (২০০৭ইং) চালু আছে। </p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">বিবি আমেনা (رضي الله عنه)- এর সাথে পরিণয়ের পরদিন হযরত আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তনকালে পথে ফাতেমা ওরফে উম্মে কিতালের সাথে সাক্ষাত হয়। এবার মহিলা হযরত আব্দুল্লাহকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নেয়। কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে সে জবাবে বলে -</div><div style="text-align: justify;">قد فارقك النور الذي كان معك بالأمس، فليس لي بك اليوم حاجة -نما أردت أن يكون النور فى فأبى الله (مواهب)</div><div style="text-align: justify;">অর্থ: ”গতকাল তোমার ললাটে যে নূর ছিল, আজ সে নূর তোমার থেকে বিদায় নিয়েছে। সুতরাং আজ তোমাতে আমার আর কোন প্রয়োজন নেই। আমার একান্ত ইচ্ছা ছিল সেই নূর আমার মধ্যে স্থানান্তরিত হোক। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ছিল না, তাই তিনি অন্যত্র স্থানান্তরিত করেছেন।” (মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া)।</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">একজন সাধারণ মহিলা হয়েও উম্মে কিতাল নবী করিম [ﷺ]-কে নূর হিসেবে প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হলো। কিন্তু হতভাগা ওহাবীরা তাঁকে প্রত্যক্ষ করল মাটির মানুষ হিসেবে। আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী নামে আওর মোহাম্মদীয়া বাতিল তরিকার জনৈক পীর তার অসিয়ত ও নছিয়ত নামায় নবী করিম [ﷺ]-কে সাধারণ মানুষ প্রমাণ করার জন্য লিখেছে ”নবী পাক [ﷺ] পিতার নাপাকী থেকে মায়ের নাপাকীর সাথে মিশে আবার নাপাক জায়গার ভিতর দিয়েই পৃথিবীতে এসেছেন।” নাউযুবিল্লাহ!</p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">এমন অশালীন ও অসভ্য উক্তি একজন অমুসলিমও কোনদিন করেনি। আল্লাহ এসব দুশমনে রাসুলের সংশ্রব থেকে মুসলমানদের রক্ষা করুন। উক্ত অর্বাচীন পীর নবী করিম [ﷺ]-কে মাটির মানুষ বলেও উল্লেখ করেছে। আমি ১৯৯৫ ইংরেজিতে ইনকিলাবে বিজ্ঞাপন দিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, কিন্তু সে তাতে আসেনি। </p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">পিতার ইন্তিকাল:</div><div style="text-align: justify;">হযরত বিবি আমেনা (رضي الله عنه) নূর নবীকে গর্ভে ধারণ করার দুই মাস পরেই হযরত আবদুল্লাহ (رضي الله عنه) ব্যবসা উপলক্ষে সিরিয়া গমন করে সেখান হতে ফেরার পথে মদিনায় মাতুলালয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই ইনতিকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন! তাঁকে ”দারুন নাবেগা” নামক মহল্লায় (বর্তমান মসজিদে নববীর ভিতরে) দাফন করা হয় (বেদায়া)। এভাবে শিশু নবী [ﷺ] জন্মের পূর্বেই ইয়াতিমে পরিণত হন। গর্ভের প্রায় নয় মাস অতিক্রান্ত হবার পর রবিউল আউয়াল মাসের দ্বাদশ তারিখ সোমবার সোবহে সাদেকের সময় দিবা-রাত্রির সন্ধিক্ষণে জগতকে আলোকিত করে ধরাধামে আগমন করেন আল্লাহর প্রিয় হাবীব শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম।</div><p></p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">বেলাদতের তারিখ ও দিনের সমাধান:</div><div style="text-align: justify;">আজকাল এক শ্রেণীর লোক বলে বেড়ায় নবী করিম [ﷺ]-এঁর জন্ম তারিখ সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মধ্যে নাকি মতভেদ রয়েছে। সুতরাং ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখটি যে ঠিক - তা কি করে বলা যাবে?</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">এর জবাবে আমরা বলবো - যদি সহীহ বর্ণনায় এই তারিখটি সুপ্রমাণিত হয়, তাহলে কি তারা এই দিনটি মিলাদুন্নবী দিবস হিসেবে পালন করতে রাজী আছেন? না, তা কখনও আশা করা যায় না। আপনারা দিবস পালন করুন আর নাই করুন, নবী করিম [ﷺ] যে এই তারিখেই জন্ম গ্রহণ করেছেন - তার অকাট্য প্রমাণ নিন। </p><p dir="ltr"></p><div style="text-align: justify;">আপনাদের গুরু ইবনে কাছির তার বেদায়া ও নেহায়া গ্রন্থের ২য় খন্ডের ২৬০ পৃষ্ঠায় (পুরাতন) এবং হাফেয আবু বকর ইবনে আবি শায়বাহ (ওফাত ২৫৩ হি:) সহীহ সনদে হযরত জাবের ও হযরত ইবনে আব্বাস (রাদি:) থেকে আফফান ও সায়ীদ ইবনে মীনা’র সহীহ সনদ সূত্রে হুযুর আকরাম [ﷺ]-এঁর জন্মতারিখ ও ইনতিকাল তারিখ সম্পর্কে নিম্নে উল্লেখিত হাদীসখানা বর্ণনা করেছেন-</div><div style="text-align: justify;">عن عفان عن سعيد بن ميناء عن جابر وابن عباس أنهما قالا: ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم عام الفيل يوم الاثنين الثاني عشر من شهر ربيع الأول، وفيه بعث، وفيه عرج به إلى السماء، وفيه هاجر، وفيه مات -ماذا هو المشهور (البداية والنهاية ج ٢ صفت ٠ ٢٦)</div><div style="text-align: justify;">অর্থ: ”হযরত আফফান থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত সায়ীদ ইবনে মীনা থেকে, তিনি হযরত জাবের (رضي الله عنه) ও হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেছেন। জাবের ও ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন- “নবী করিম [ﷺ] হস্তীবাহিনী বর্ষে সোমবার দিনে ১২ই রবিউল আউয়াল তারিখে জন্মগ্রহণ করেছেন, এই দিনেই তিনি নবুয়তের দায়িত্ব পেয়েছেন, এই দিনেই তিনি হিজরত করেছেন এবং এই দিনেই ওফাত পেয়েছেন।”</div><p></p><p dir="ltr" style="text-align: justify;">ইবনে কাছির বলেন - “এটাই প্রসিদ্ধ ও মশহুর মত”(বেদায়া ও নেহায়া ২য় খন্ড ২৬০ পৃষ্ঠা)। সুতরাং তাদের নেতার কথা মান্য করা তাদের জন্য অবশ্য কর্তব্য। <br /></p><div class="separator" style="clear: both; text-align: justify;"> <a href="https://lh3.googleusercontent.com/-J-LfL-Fftkw/WaNrFwpI53I/AAAAAAAAAZc/D_ofr-s3x3UleVKA8UEAfM8UnMb28P9TQCHMYCw/s1600/images-1.jpg" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"> <img border="0" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-J-LfL-Fftkw/WaNrFwpI53I/AAAAAAAAAZc/D_ofr-s3x3UleVKA8UEAfM8UnMb28P9TQCHMYCw/s640-rw/images-1.jpg" /> </a> </div>

হুজুর (দ.) এর পিতামাতার বিবাহ

পঞ্চম অধ্যায়ঃ পিতা-মাতার বিবাহ প্রসঙ্গ: বিবি আমেনার গর্ভে নুরে মোহাম্মদীর সরাসরি গমন =============== পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, হযরত আদম (ع...

Read more »

কদম্বুচির উত্থাপিত আপত্তি সমূহের উত্তর

<div>দ্বিতীয় অধ্যায়</div><div><br></div><div>এ প্রসঙ্গে উত্থাপিত আপত্তি সমূহের উত্তর</div><div><br></div><div><br></div><div> বুজুর্গানে কিরামের হাত-পা চুম্বন ও পবিত্র বস্তুর তাযীম প্রসঙ্গে বিরোধিতাকারীগণ নিম্নবর্ণিত আপত্তিগুলো উত্থাপন করে থাকে। ইনশাআল্লাহ, এ আপত্তিগুলো ছাড়া তাদের কাছে আর কিছু বলার নেই।</div><div><br></div><div> </div><div><br></div><div>১নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>ফকীহগণ বলেন যে, উলামায়ে কিরামের সামনে মাটি চুমু দেয়া, এমন কি মাথানত করে সম্মান করা হারাম, কেননা এটা রূকুর অনুরূপ এবং তাযিমী সিজদা যেমন হারাম হয়ে গেছে তদ্রুপ তাযিমী রূকুও হারাম হয়ে গেছে। আর যখন কারো পা চুমুর জন্য ওর পায়ে মুখ রাখলেন, তা তো রূকু কেন, সিজদা হয়ে গেল। সুতরাং এটা হারাম।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ দুর্রুল মুখতার কিতাবুল কারাহিয়াতের الاستبراء- শীর্ষক অধ্যায়ের মুসাফাহা পরিচ্ছেদে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>(تَقْبِيلِ الْأَرْضِ بَيْنَ يَدَيْ الْعُلَمَاءِ) وَالْعُظَمَاءِ فَحَرَامٌ .... لِأَنَّهُ يُشْبِهُ عِبَادَةَ الْوَثَنِ</div><div><br></div><div>উলামায়ে কিরাম ও বড় বড় বুযুর্গানে কিরামের সামনে মাটি চুম্বন হারাম কেননা এটা মূর্তিপূজার সমতুল্য।’’ ৪১৮</div><div><br></div><div>➥418. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ এর প্রেক্ষাপটে ফাতওয়ায়ে শামীতে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>الْإِيمَاءُ فِي السَّلَامِ إلَى قَرِيبِ الرُّكُوعِ كَالسُّجُودِ وَفِي الْمُحِيطِ أَنَّهُ يُكْرَهُ الِانْحِنَاءُ لِلسُّلْطَانِ وَغَيْرِهِ اهـ وَظَاهِرُ كَلَامِهِمْ إطْلَاقُ السُّجُودِ عَلَى هَذَا التَّقْبِيلِ</div><div><br></div><div>সালাম দেয়ার সময় রূকুর কাছাকাছি নত হওয়া সিজদা করার মত এবং ‘মুহীত’ গ্রন্থে উল্লে­খিত আছে যে, বাদশাহ ও অন্যান্যদের সামনে মাথা নত করা মাকরূহ এবং ফকীহগণের সুস্পষ্ট অভিমত হলো-ঐ ধরনের চুম্বনকে সিজদাই বলা যায়।’’ ৪১৯</div><div><br></div><div><br></div><div>উপরোক্ত ইবারত থেকে প্রতীয়মান হয় যে কোন মানুষের সামনে মাথা নত করা বা সিজদা করা শিরক। তাই কারো পা-চুম্বনও শিরক। হযরত মুজাদ্দিসে আলফে ছানী (رحمة الله)কে দরবারে আকবরীতে তলব করা হয়েছিল এবং দরবারে প্রবেশ করার দরজা ছোট আকারের করা হয়েছিল, যাতে এ কৌশলে আকবরের সামনে তাঁর মাথা নত হয়। কিন্তু যখন তিনি ওখানে তশরীফ নিয়ে গেলেন, তখন উক্ত দরজা দিয়ে প্রবেশ করার সময় প্রথমে পা প্রবেশ করান, যাতে মাথা নত করতে না হয়। (সাধারণ দেওবন্দী ওহাবীরা এ আপত্তিটা বেশীর ভাগ উত্থাপন করে এবং এটাই তাদের প্রধান আপত্তি।)</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ আমি প্রথমে সিজদার সংজ্ঞা, অতঃপর এর আহকাম বর্ণনা করবো। এর পর বর্ণনা করবো কারো সামনে মাথা নত করলে এর কি হুকুম। এতটুকু জানতে পারলে, এ আপত্তিটার নিষ্পত্তি অনায়াসে হয়ে যাবে। শরীয়তের পরিভাষায় সিজদা হচ্ছে সাত অঙ্গ অর্থাৎ দু’হাতের তালু, দু’জানু, দু’হাত, নাক ও কপাল মাটিতে রাখা এবং এতে সিজদার নিয়তও হওয়া চাই। ফিকাহ শাস্ত্রের প্রায় গ্রন্থে কিতাবুস সালাতের সিজদা শীর্ষক আলোচনায় দেখতে পাবেন যে, যদি কেউ সিজদার নিয়ত বিহীন উপুড় হয়ে মাটিতে শুয়ে পড়ে, সেটা ‘সিজদা’ হবে না। যেমন কতেক লোক অসুখ ও শীতের কারণে হাত পা চারটি গুটিয়ে উপুড় হয়ে পড়ে থাকে। সিজদা দু’রকম-সিজদায়ে তাহিয়্যাত ও সিজদায়ে ইবাদত। সিজদায়ে তাহিয়্যা হচ্ছে, যেটা কারো সাক্ষাতে করা হয় এবং সিজদায়ে ইবাদত হচ্ছে, যেটা খোদাকে বা কাউকে খোদা জ্ঞান করে করা হয়। সিজদায়ে ইবাদত গায়রুল্লাহকে করা শিরক। কোন নবীর ধর্মে এটা জায়েয ছিল না। কেননা প্রত্যেক নবী একেশ্বরবাদের প্রচার করেছেন; কেউ শিরকের প্রসার ঘটাননি। কিন্তু সিজদায়ে তাহিয়্যা হযরত আদম আলাইহিস সালামের যুগ থেকে হুযুর (ﷺ) এর যুগের আগ পযর্ন্ত জায়েয ছিল।</div><div><br></div><div>ফিরিশতাগণ হযরত আদম (عليه السلام)কে সিজদা করেছেন। হযরত ইয়াকুম (عليه السلام) ও হযরত ইউসুফ (عليه السلام) এর ভায়েরা হযরত ইউসুফ (عليه السلام)কে সিজদা করেছেন। তাফসীরে রুহুল বয়ানে ১২ পারায় সূরা হাজর আয়াত।’’ ৪২০</div><div><br></div><div>➥420. সূরা হুদ, আয়াত নং-৪৪।</div><div><br></div><div><br></div><div> وَقِيلَ بُعْدًا لِلْقَوْمِ الظَّالِمِينَ এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে হযরত আবু আলিয়া (رضي الله عنه) থেকে একটি রেওয়ায়েত উদ্ধৃত করা হয়েছে যে, হযরত নূহ (عليه السلام) এর যুগে শয়তান তওবা করতে চেয়েছিল। তখন হযরত নূহ (عليه السلام)কে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) নির্দেশ দেয়া হয়েছিল- ‘শয়তানকে বল, আদমের কবরকে সিজদা করার জন্য।’ তখন শয়তান বললো- যখন আমি আদমকে জীবিতাবস্থায় সিজদা করিনি এখন আর কবরকে কি সিজদা করবো। অতঃপর ইসলাম সেই সিজদায়ে তাহিয়্যাকে হারাম করেছেন। অতএব, কোন মুসলমান যদি কোন ব্যক্তিকে সিজদায়ে তাহিয়্যা করে, তাহলে সে গুনাহগার, অপরাধী ও হারামকারী বলে গণ্য হবে, কিন্তু মুশরিক বা কাফির বলা যাবে না।</div><div><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-xuSYaMs-o2A/Z2L9Bf-dgnI/AAAAAAAAQIg/fvBsDLQLXNkmxkair6FaAqIWw0JxNL_0wCNcBGAsYHQ/s1600/1000007482.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="619" data-original-width="495" height="320" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-xuSYaMs-o2A/Z2L9Bf-dgnI/AAAAAAAAQIg/fvBsDLQLXNkmxkair6FaAqIWw0JxNL_0wCNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000007482.jpg" width="255"></a></div><br></div><div>✧ আপত্তিকারী দুর্রুল মুখতারের যেই ইবারত উদ্ধৃত করেছে, সেই একই জায়গায় বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>عَلَى وَجْهِ الْعِبَادَةِ وَالتَّعْظِيمِ كُفْرٌ وَإِنْ عَلَى وَجْهِ التَّحِيَّةِ لَا وَصَارَ آثِمًا مُرْتَكِبًا لِلْكَبِيرَةِ</div><div><br></div><div>-যদি এ মাটি চুম্বনটা ইবাদত বা সম্মানের জন্য হয়ে থাকে, তাহলে কুফুরী আর যদি অভিবাদনের জন্য হয়ে থাকে, তাহলে কুফুরী নয়। তবে কবীরা গুনাহগার বলে সাব্যস্ত হবে।’’ ৪২১</div><div><br></div><div>➥421. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৩।</div><div><br></div><div><br></div><div><br></div><div>এ ইবারতটা ফাতওয়ায়ে শামীতে আরও পরিস্ফুটন করা হয়েছে। এখন বলা বাকী রইলো মাথা নত করার প্রসঙ্গটা। এটা দু’ধরনের হয়ে থাকে। প্রথমতঃ তাযীমের জন্য মাথা নত করা যেমন, মাথা নত করে সালাম করা বা সম্মানিত ব্যক্তির সামনে মাটি চুম্বন করা। এক্ষেত্রে যদি রূকু সম মাথা নত করা হয় তাহলে হারাম। ফকীহগণ এ ধরনের মাথা নত করাকে নিষেধ বলেছেন। দ্বিতীয়তঃ মাথা নত করা অন্য কাজের জন্য, তবে কাজটা সম্মানের জন্য হয়ে থাকে। যেমন কোন বুযুর্গের জুতা যথাস্থানে রাখা, পায়ে চুমু দেয়া। এখানে যদিওবা মাথা নত হয় কিন্তু তা হচ্ছে জুতা সোজা করা বা পায়ে চুমু দেয়ার জন্য এবং সেই কাজটা বুযুর্গের তাযীমের জন্য করা হয়, তাহলে তা জায়েয। যদি এ ধরনের প্রতিবিধান করা না হয়, তাহলে ইতিপূর্বে আমার উল্লে­খিত হাদীছসমূহ ও ফকীহ ইবারত সমূহের কি ভাবার্থ হবে? অধিকন্তু এ আপত্তিটা দেওবন্দীদেরও বিপরীত, কারণ তাদের নেতা মৌলভী রশীদ আহমদ সাহেবও পায়ে চুমু দেয়াকে জায়েয বলেছেন। দরবারে আকবরীতে হযরত মুজাদ্দিদ সাহেবের আচরণটা ছিল তাঁর চূড়ান্ত তাকওয়ারই প্রতিফলন। তিনি ধারণা করেছিলেন যে আকবর বাদশাহের সামনে মাথা নত করার জন্য এ ধরনের কৌশল অবলম্বন করেছিল। আর তিনি জানতেন যে দরবারে আকবরীতে বাদশাহ আকবরকে সিজদা করা হতো। এ জন্যে তিনি মাথা নীচু করে প্রবেশ করেন নি। অন্যথায় তিনি যদি মাথা নীচু করে প্রবেশ করতেন, তাতে তাঁর প্রতি শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে কোন অভিযোগ উত্থাপন করা যেত না। কারণ তাঁর ওই মাথা নীচু করার উদ্দেশ্যে আকবরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন বোঝাতো না।</div><div><br></div><div><br></div><div>২ নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>✧ হাদীছ শরীফে আছে যে, হযরত উমর (رضي الله عنه) হাজর আসওয়াদকে চুমু দিয়ে বলেছিলেন-</div><div><br></div><div>وَإِنِّي أَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ، وَأَنَّكَ لَا تَضُرُّ وَلَا تَنْفَعُ، وَلَوْلَا أَنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبَّلَكَ مَا قَبَّلْتُكَ</div><div><br></div><div>-ওহে হাজর আসওয়াদ, আমি ভাল মতে জানি, তুমি একটি পাথর মাত্র, না উপকার, না ক্ষতি করতে পার। যদি আমি হুযুর (ﷺ) কর্তৃক তোমাকে চুমু দিতে না দেখতাম, তাহলে আমি তোমাকে চুমু দিতাম না।’’ ৪২২</div><div><br></div><div>➥422. ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, কিতাবুল হাজ্জ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৯২৫, হাদিস-১২৭০।</div><div><br></div><div><br></div><div>এর থেকে বোঝা গেল হযরত ফারুকে আযমের (رضي الله عنه) কাছে হাজর আসওয়াদকে চুমু দেয়াটা অপছন্দ ছিল। কিন্তু যেহেতু সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে, সেহেতু বাধ্য হয়ে চুমু দিলেন। কিন্তু পবিত্র বস্তুর ক্ষেত্রে যেহেতু কোন সুস্পষ্ট দলীল নেই, তাই চুম্বন না দেয়াটাই উচিৎ।</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মৌলানা আবদুল হাই সাহেব হেদায়ার মুকাদ্দমাতে হাজর আসওয়াদ প্রসঙ্গে হাদীছটি উদ্ধৃত করে বলেন-হযরত হাকিম (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে যে হযরত আলী (رضي الله عنه) হযরত ফারুকে আযম (رضي الله عنه) কে জবাব দিয়েছিলেন-ওহে আমীরুল মুমিনীন, হাজর আসওয়াদ কল্যাণ করতে পারে আবার ক্ষতিও করতে পারে। আহা! আপনি যদি কুরআন শরীফের সেই আয়াতের ব্যাখ্যার প্রতি মনোযোগ দিতেন -৪২৩</div><div><br></div><div>➥423. সূরা আ‘রাফ, আয়াত, নং-১৭২</div><div><br></div><div><br></div><div><br></div><div>وَإِذْ أَخَذَ رَبُّكَ مِنْ بَنِي آدَمَ مِنْ ظُهُورِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ</div><div><br></div><div>✧ যখন মিছাকের দিন (রূহের জগতে প্রতিজ্ঞার দিন) আল্লাহ তাআলা প্রতিশ্রুতি ও ওয়াদা নিয়েছিলেন, তখন সেই ওয়াদানামা একটি পাতায় লিখে এই হাজরে আসওয়াদে রেখেছেন এবং কিয়ামতের দিন এই পাথর আগমন করবে। এর চোখ, জিহবা ও ঠোঁট হবে এবং মুমিনের পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। সুতরাং এটা আল্লাহর আমানতদার এবং মুসলমানদের সাক্ষী। তখন হযরত ফারুক (رضي الله عنه) ফরমান, ওহে আলী, যেখানে তুমি থাকবে না, সেখানে আল্লাহ যেন আমাকে না রাখে।’’  ৪২৪</div><div><br></div><div>➥424.</div><div><br></div><div>(১)ইমাম কাস্তাল্লানী, ইরশাদুস সারী শরহে সহীহুল বুখারী, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৫৬।</div><div><br></div><div>(২)ইমাম জুরকানী, শরহে মুয়াত্তায়ে মালেক, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৭।</div><div><br></div><div><br></div><div>এবার বোঝা গেল যে, হাজর আসওয়াদ লাভ-ক্ষতি উভয় করতে পারে এবং এর প্রতি সম্মান মানে দ্বীনের প্রতি সম্মান। অধিকন্তু, হযরত ফারুক (رضي الله عنه) কর্তৃক হাজর আসওয়াদের প্রতি এ ধরনের সম্বোধন এ জন্য ছিল না যে, তিনি সেই হাজর আসওয়াদকে চুমু দিতে নারাজ ছিলেন। তিনি ভালই জানতেন সুন্নাতের প্রতি অনীহা প্রকাশ কুফরী। তিনি কেবল এই জন্যই বলেছিলেন যে, আরববাসীগণ প্রথমে মূর্তিপূজারী ছিল। তারা যেন এ ধারণা না করে যে ইসলাম কতেক মূর্তিকে হটিয়ে একটি পাথরের প্রতি তাদের মনোনিবেশ করিয়েছে। এই বক্তব্য থেকে জনগণের জানা হয়ে গেল যে, ওটা ছিল পাথরের পূজা করা। আর এটা হলো পাথরকে চুমু দেয়া। পূজা এক জিনিস এবং চুম্বন আর এক জিনিস। হযরত আলী (رضي الله عنه) ও এ উদ্দেশ্যকে নাকচ করেন নি বরং- لَا تَضُرُّ وَلَا تَنْفَعُ এর দ্বারা শ্রোতাদের কাছে যে ভুল ধারণা সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা ছিল, তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, হযরত ফারুকে আযম (رضي الله عنه) এর এ ধরনের বলার উদ্দেশ্য হলো এ পাথর মূলতঃ লাভ-ক্ষতির অধিকারী নন, যেমন আরববাসী মূর্তিদেরকে মনে করতো। আর এ ভাবার্থও নয় যে এ পাথরে লাভ-ক্ষতি কিছুই নেই। তাহলে বোঝা যায় যে, হযরত ফারুকে আযমের বক্তব্যও জনগণকে বোঝানোর জন্য ছিল এবং হযরত আলী (رضي الله عنه) এর উদ্দেশ্যও তা-ই ছিল। আমার এ বিবরণ থেকে রাফেজী ও ওহাবীদের আপত্তি হাওয়া হয়ে গেল।</div><div><br></div><div>কি আশ্চয! হযরত ফারুকে আযম এখানে হাজর আসওয়াদকে চুমু দিতে তোমাদের কথা মত অনিচ্ছুক। অথচ, তিনি নিজে হুযুর (ﷺ) এর সমীপে আরয করেছিলেন-আমরা মকামে ইব্রাহীমকে নিজেদের ইবাদতগাহে পরিণত করতে পারতাম এবং এর সামনে সিজদা করতে এ নফল নামায পড়তে পারতাম।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তাঁর এ আরযের পরিপ্রেক্ষিতে-</div><div><br></div><div>وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى</div><div><br></div><div>-‘‘তোমরা মকামে ইব্রাহীমকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ কর।’’ ৪২৫</div><div><br></div><div>➥425. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১২৫</div><div><br></div><div><br></div><div>এ আয়াত নাযিল হয়। মকামে ইব্রাহীমও একটি পাথর কিন্তু এর সামনে নফল নামায পড়া ও সিজদা করা তাঁর পছন্দ ছিল।</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>৩ নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>কতেক লোক এ-ও বলে যে আজকাল যে সব পবিত্র বস্তু হুযুর (ﷺ) এর বলে দাবী করা হয়, তা সঠিক, না বেঠিক বলা মুশকিল, কেননা এর সঠিক হওয়ার কোন প্রমাণ নেই। তাই একে চুমু দেয়া বা সম্মান করা জায়েয নয়। হিন্দুস্থানের অনেক জায়গায় চুল মুবারক প্রদর্শন করা হয়। কিন্তু ওগুলো যে হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের চুল, এর কোন নজির বা প্রমাণ নেই।</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>উত্তরঃ এ পবিত্র বস্তু প্রমাণের জন্য মুসলমানদের মধ্যে হুযুর (ﷺ) এর পবিত্র বস্তু বলে প্রসিদ্ধিই যথেষ্ট। এর প্রমাণের জন্য কুরআনের আয়াত বা বুখারী শরীফের হাদীছের প্রয়োজন হয় না। এক এক জিনিসের প্রমাণ এক এক রকম। যেমন যেনা প্রমাণিত করার জন্য চার জন পরহিযগার মুসলমানের সাক্ষ্য প্রয়োজন। অন্যান্য আর্থিক লেনদেন প্রমাণের জন্য দু’জনের সাক্ষ্যই যথেষ্ট এবং রমযানের চাঁদের জন্য কেবল একজন মহিলার সংবাদই বিবেচিত। নিকাহ, বংশ পরিচয়, স্মরণীয় ঘটনা এবং বিভিন্ন সময়ের প্রমাণের জন্য কেবল প্রসিদ্ধি বা বিশেষ আলামতই যথেষ্ট। একজন বিদেশী পুরুষ কোন মহিলার সাথে স্বামী স্ত্রীর মত বসবাস করছে। আপনি এতটুকু লক্ষণ দেখে ওদের বিবাহের সাক্ষ্য দিতে পারেন। আমরা বলি আমি অমুকের ছেলে, অমুকের নাতী। এর কোন প্রমাণ কুরআন বা হাদীছে নেই, এমন কি আমাদের মায়ের বিবাহের সাক্ষীও মওজুদ নেই। কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে এর যে প্রসিদ্ধি রয়েছে, তা-ই যথেষ্ট। অনুরূপ স্মরণীয় বিষয়ের প্রমাণের জন্য কেবল খ্যাতি থাকলেই ভালো।</div><div><br></div><div> </div><div><br></div><div>✧ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>أَوَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ</div><div><br></div><div>-এ সব লোকেরা কি পৃথিবী পরিভ্রমণ করে না, যাতে তারা, তাদের পূর্বসূরীদের কি পরিণাম হয়েছে, তা’ দেখতে পায়। ’’  ৪২৬</div><div><br></div><div>➥426. সূরা রূম, আয়াত নং-৯।</div><div><br></div><div><br></div><div>এ আয়াতে মক্কার কাফিরদেরকে আগের দিনের কাফিরদের স্মৃতিচিহ্ন ও ওদের ধ্বংসপ্রাপ্ত বস্তুসমূহ দেখার জন্য আগ্রহান্বিত করা হয়েছে, যাতে তারা নাফরমানদের পরিণতি দেখে শিক্ষা গ্রহণ করে। এখন কথা হলো এটা কি ভাবে চিহ্নিত করা হলো যে, অমুক জায়গা অমুক সম্প্রদায় আবাদ করেছিল? কুরআন শরীফও এ ব্যাপারে নীরব। কেবল প্রসিদ্ধির ভিত্তিতে তা মেনে নেয়া হয়েছে। তাই প্রতীয়মান হলো যে, কুরআন শরীফেও সেই প্রসিদ্ধিকে মেনে নিয়েছেন।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ শেফা শরীফে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>وَمِنْ إِعْظَامِهِ وَإِكْبَارِهِ إِعْظَامُ جَمِيعِ أَسْبَابِهِ، وَإِكْرَامُ مَشَاهِدِهِ وَأَمْكِنَتِهِ مِنْ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ، وَمَعَاهِدِهِ . وَمَا لَمَسَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْ عُرِفَ به</div><div><br></div><div>এটাও হুযুর (ﷺ) মান সম্মানের অর্ন্তভূক্ত যে হুযুরের আসবাবপত্র, তাঁর বাসস্থান সমূহ, তাঁর পবিত্র শরীরের সাথে যা স্পর্শিত হয়েছে এবং যেটা সম্পর্কে হুযুর (ﷺ) এর বলে খ্যাতি আছে ওসবের যেন সম্মান করা হয়।’’  ৪২৭</div><div><br></div><div>➥427. ইমাম কাযি আয়াজ, শিফা শরীফ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১২৬, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ শরহে শেফা শরীফে মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) উপরোক্ত ইবারতের প্রেক্ষাপটে বলেন-</div><div><br></div><div>وَالْمُرَادُ جَمِيْعُ مَا يَنْسِب إِلَيْهِ وَيُعْرَفُ بِهِ ﷺ</div><div><br></div><div>এর ভাবার্থ হচ্ছে, যে জিনিস হুযুর (ﷺ) এর বলে দাবী করা হয় এবং প্রসিদ্ধি লাভ করে, সেটার সম্মান করা চাই।’’  ৪২৮</div><div><br></div><div>➥428. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী, শরহে শিফা, ২/৯৮ পৃষ্ঠা</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মৌলানা আবদুল হাকীম সাহেব লক্ষ্ণৌভী, স্বীয় রচিত কিতাব নুরুল ঈমানে শেফা শরীফের এ ইবারতটা উদ্ধৃত করে وَيُعْرَفُ بِهِ প্রসঙ্গে টীকা লিখেছেন-</div><div><br></div><div>اى ولو كان على وجه الاشتهار من غير ثبوت اخبار فى اثاره كذا قال على القارى</div><div><br></div><div>-যদিওবা এ দাবীটা কেবল প্রসিদ্ধির ভিত্তিতে হয়ে থাকে এবং হাদীছ দ্বারা এটা প্রমাণিত না হয়। মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) অনুরূপ বলেছেন।  তিনি তাঁর কিতাব مسلك متقسط এ একই বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেছেন। এ রকম উলামায়ে উম্মত আহকামে হজ্ব প্রসঙ্গে যে সব গ্রন্থাদি প্রকাশ করেছেন, সে সব গ্রন্থে যিয়ারত কারীদের উপদেশ দেয়া হয়েছে হেরমাইন শরীফাইনের ও সব জায়গা যেন যিয়ারত করে, সেগুলোকে সাধারণ লোকেরা ইযযত-সম্মান করে।</div><div><br></div><div><br></div><div>আশ্চর্যের বিষয়! ফকীহগণ ফযায়েলে আমালের ক্ষেত্রে যঈফ হাদীছকেও গ্রহণযোগ্য মনে করেন। আর এরা পবিত্র বস্তুর প্রমাণের জন্য বুখারী শরীফের হাদীছ দাবী করেন।</div><div><br></div><div>عاشقاں رچه كار باتحقيق- هركجا نام او ست قربانيم</div><div><br></div><div>-অর্থাৎ প্রেমিকেরা এত ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের পরওয়া করে না; যেখানেই আপন মাহবুবের নাম পাবে, সেখানে নিজকে উৎসর্গ করতে দ্বিধাবোধ করে না।</div><div>একটি ঘটনাঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>আমি একবার ১২ই রবিউল আওয়াল শরীফে কাথিয়া ওয়ার্ডের নগীনা মসজিদে ওয়াজ করতে গিয়েছিলাম। ঐ দিন সেই মসজিদে হুযুর পাকের চুল মুবারক দেখানো হচ্ছিল। মুসলমানেরা যিয়ারত করতে ছিল ও দরূদ শরীফ পড়তে ছিল। কেউ কেউ কান্নাকাটিও করছিল। আবার কেউ মুনাজাতরত ছিল। মোট কথা একটা মনোরম পরিবেশ বিরাজমান ছিল। কিন্তু মসজিদের এক কোণায় এক ব্যক্তি মুখ বিকৃতি করে দাঁড়িয়েছিল, তার চেহারাটা যেন অর্ধাঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আমি তাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, জনাব, আপনি এত মর্মাহত কেন? তিনি বললেন, মসজিদে শিরক হচ্ছে; এ চুল যে হুযুর (ﷺ) এর এর কোন প্রমাণ আছে কি? আর হুযুরের হলেও এ সম্মানের কি কোন প্রমাণ আছে? আমি এর জবাব দিলাম না। বরং তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার নাম কি? বললেন- আবদুর রহমান। বাপের নাম জিজ্ঞাসা করলাম, বললেন-আবদুর রহীম। এবার আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম-আপনি যে আবদুল রহীমের ছেলে, এর প্রমাণ কি? একেতঃ আপনার কাছে এর কোন সাক্ষী নেই আর থাকলেও তা বিবাহের আকদের কিন্তু আপনি যে আপনার পিতার ঔরসে জন্মগ্রহণ করেছেন, এর প্রমাণ কি? তখন তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেন-</div><div><br></div><div>জনাব, মুসলমানেরা তো বলে যে, আমি ওনার ছেলে আর মুসলমানদের সাক্ষ্য গ্রহণ যোগ্য। তখন আমি বললাম, জনাব, মুসলমানেরা বলে যে এটা হুযুর আলাইহিস সালামের পবিত্র চুল মোবারক, আর মুসলমানদের সাক্ষ্যই যথেষ্ট। এবার তিনি লজ্জিত হলেন এবং বললেন, এটা অন্য কথা। জিজ্ঞাসা করলাম কোথাকার শিক্ষাপ্রাপ্ত? বললেন, দেওবন্দের। বললাম- আর কি জিজ্ঞাসা করবো, আপনি তো রেজিস্ট্রিকৃত। মৌলানা কুতুবউদ্দিন ব্রাক্ষাচারী (কুঃ)র কাছে এক দেওবন্দী বলেছিলেন-হুযুর (ﷺ) কে হুযুর বলা বিদআত, নাম নেয়াটাই উচিৎ। কেননা হুযুর বলাটা কোথাও প্রমাণিত নেই। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘চুপ থাকো, বোকারাম।’ ওনি বললেন, এটা কি ধরনের ব্যবহার? তিনি বললেন, আপনাকে ‘জনাব’ বা ‘আপনি’ বলা বিদআত। কারণ এর কোন প্রমাণ নেই। আমার ধারণা হচ্ছে কিয়ামতের দিন দেওবন্দীদের খুবই খারাপ লাগবে, যখন হুযুরে পাক মকামে মাহমুদে তশরীফ রাখবেন এবং তাঁর শান সমগ্র জগতে প্রকাশ পাবে। হে আল্লাহ, আমাদেরকে নবীজীর শাফাআত দান করুন।</div><div><br></div><div>آج لے ان كى پناه اج مدد مانگ ان سے</div><div><br></div><div>پهر نه مانيں كے قيامت ميں اگر مان گيا</div><div><br></div><div>অর্থাৎ আজই তাঁর (ﷺ) আশ্রয় প্রার্থনা কর, তাঁর সাহায্য কামনা কর। কিন্তু কিয়ামতের দিন শত কান্নাকাটি করলেও কোন কাজ হবে না।</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>৪ নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>নালাইন শরীফের (পাদুকাদ্বয়) নকশা আসল নালাইন নয়। এটা হচ্ছে রংতুলি দ্বারা তৈরী ফটো। এটাকে কেন সম্মান করা হয়?</div><div><br></div><div>উত্তরঃ এটা আসল নালাইন শরীফের অনুকরণ এবং এর কাহিনী রয়েছে। কাহিনীরও সম্মান করা উচিৎ। লাহোরের ছাপানো কুরআন শরীফ, এর কাগজ কালি আসমান থেকে নাযিল হয়নি, আমাদেরই তৈরী। কিন্তু একে অবশ্যই তাযিম করতে হবে, কেননা এটা আসলের অনুলিপি। প্রত্যেক রবিউল আউয়াল মাসের প্রত্যেক সোমবার পবিত্র। কারণ এটা হলো আসলের অনুকরণ।</div><div><br></div><div><br></div>

কদম্বুচির উত্থাপিত আপত্তি সমূহের উত্তর

দ্বিতীয় অধ্যায় এ প্রসঙ্গে উত্থাপিত আপত্তি সমূহের উত্তর বুজুর্গানে কিরামের হাত-পা চুম্বন ও পবিত্র বস্তুর তাযীম প্রসঙ্গে বিরোধিতাকারীগ...

Read more »

পবিত্র বস্তুকে চুমু দেওয়ার প্রমাণ(কদমবুচি)

<div>বুর্যুগানে কিরামের হাত-পা চুমু দেওয়া ও পবিত্র বস্তুর সম্মান করা</div><div><br></div><div><br></div><div> আল্লাহর ওলীগনের হাত-পা চুমু দেয়া, তাদের পবিত্র বস্তু, চুল, পোশাক পরিচ্ছেদ ইত্যাদির সম্মান করা ও চুমু দেয়া মুস্তাহাব। বিভিন্ন হাদীছ ও সাহাবায়ে কিরামের আমল থেকে এ সবের প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু কতেক লোক এ গুলোকে অস্বীকার করে। তাই এই আলোচনাকেও আমি দু’টি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করেছি। প্রথম অধ্যায়ে এর প্রমাণ এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ে এ প্রসঙ্গে উত্থাপিত আপত্তি সমূহের উত্তর দিয়েছি।</div><div><br></div><div><div>প্রথম অধ্যায়</div><div><br></div><div>পবিত্র বস্তুকে চুমু দেওয়ার প্রমাণ</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ পবিত্র বস্তুকে চুমু দেয়া জায়েয। কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান:</div><div><br></div><div>وَادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَقُولُوا حِطَّةٌ</div><div><br></div><div>অর্থাৎ ওহে বনী ইসরাঈল বায়তুল মুকাদ্দিসের দরজা দিয়ে নতশিরে প্রবেশ কর। এবং বল আমাদের গুনাহ মাফ করা হোক।’’ ৩৯৭</div><div><br></div><div>➥397. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-৫৮</div><div><br></div><div><br></div><div>এ আয়াত থেকে অবগত হওয়া গেল যে আম্বিয়া কিরামের আরামগাহ বায়তুল মুকাদ্দিসকে সম্মান করানো হলো অর্থাৎ বনী ঈসরাঈলকে ওখানে নতশিরে প্রবেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ আয়াত দ্বারা এটাও বোঝা গেল যে, পবিত্র স্থান সমূহে তওবা তাড়াতাড়ি কবুল হয়।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফের بَاب المصافحة والمعانقة অধ্যায়ের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্নিত আছে:</div><div><br></div><div>وَعَن زارع وَكَانَ فِي وَفْدِ عَبْدِ الْقَيْسِ قَالَ: لَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ فَجَعَلْنَا نَتَبَادَرُ مِنْ رَوَاحِلِنَا فَنُقَبِّلُ يَدُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرجله. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد</div><div><br></div><div>হযরত যেরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে, যিনি আবদুল কায়সের প্রতিনিধিভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন: যখন আমরা মদীনা মনোয়ারায় আসলাম তখন আমরা নিজ নিজ বাহন থেকে তাড়াতাড়ি অবতরণ করতে লাগলাম। অতঃপর আমরা হুযুর আলাইহিস সালামের পবিত্র হাত-পায় চুমু দিয়েছিলেন।’’ ৩৯৮</div><div><br></div><div>➥398. খতিব তিবরিযি, মিশকাত, কিতাবুল আদাব, ৩/১৩২৮, হাদিস/৪৬৮৮, ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, পৃষ্ঠা-৭৮৬, হাদিস-৫২২৫, ইমাম বুখারী, আদাবুল মুফরাদ, পৃষ্ঠা-২৬৫, হাদিস-১০০৪, ইমাম বায়হাকী, শু’য়াবুল ঈমান, খণ্ড-১১, পৃষ্ঠা-২৯৪, হাদিস/৮৫৬০, ইমাম বায়হাকী, দালায়েলুন নবুয়ত, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩২৭।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফের শীর্ষক بَاب الْكَبَائِر وعلامات النِّفَاق অধ্যায়ে হযরত ছিফওযান ইবনে আসসাল থেকে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>فَنُقَبِّلُ يَدُ رَسُولِ اللَّهِ ﷺوَرجله</div><div><br></div><div>-অতঃপর হুযুর আলাইহিস সালামের হাত-পায় চুমু দেন।’’ ৩৯৯</div><div><br></div><div>➥399.</div><div><br></div><div>(১)ইমাম তিরমিযি, আস-সুনান, পৃষ্ঠা-৭৭০, হাদিস-২৭৩৮।</div><div><br></div><div>(২)ইমাম তাহাভী, শরহে মা’আনীল আছার, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২১৫, হাদিস-</div><div><br></div><div>(৩)ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান, পৃষ্ঠা-৫৯৪, হাদিস-৪০৮০।</div><div><br></div><div>(৪)ইমাম নাসাঈ, আস্-সুনানুল কোবরা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩০৬, হাদিস-৩৫৪১।</div><div><br></div><div>(৫)ইমাম ইবনে মাযাহ, আস্-সুনান, পৃষ্ঠা-৫৫৯, হাদিস-৩৭০৫।</div><div><br></div><div>(৬)ইমাম ইবনে শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-২৯২, হাদিস-২৬২০৭।</div><div><br></div><div><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-0oUiBIQTW94/Z2L84A2xvII/AAAAAAAAQIc/t1VYApRWc_YmNPPXtey-YX7-gu035U67gCNcBGAsYHQ/s1600/1000007483.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="410" data-original-width="728" height="180" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-0oUiBIQTW94/Z2L84A2xvII/AAAAAAAAQIc/t1VYApRWc_YmNPPXtey-YX7-gu035U67gCNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000007483.jpg" width="320"></a></div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফে ما يقال عند من حضرت الموت শীর্ষক অধ্যায়ে তিরমিযী ও আবু দাউদ শরীফের বরাত দিয়ে বর্ণিত আছে:</div><div><br></div><div>وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺقَبَّلَ عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ وَهُوَ مَيِّتٌ</div><div><br></div><div>অর্থাৎ হুযুর আলাইহিস সালাম হযরত উছমান ইবনে মযউনকে মৃতাবস্থায় চুমু দিয়েছেন।’’ ৪০০</div><div><br></div><div>➥400.</div><div><br></div><div>(১)ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২০৯, হাদিস-৪৮৪৮ </div><div><br></div><div>(২)ইমাম ইবনে মাযাহ, আস্-সুনান, হাদিস-১৪৫৩।</div><div><br></div><div>(৩)ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৪৩।</div><div><br></div><div>(৪)ইমাম আবু দাউদ, আস্-সুনান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-২০১, হাদিস-৩১৬৩,</div><div><br></div><div><br></div><div>☞এই হাদিসটিকে আহলে হাদিসদের তথাকথিত ইমাম আলবানী যঈফ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর জবাব জানতে আমার লিখিত ‘প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন’ দ্বিতীয় খন্ডের ১৫১-১৫৩ পৃষ্ঠায়।</div><div><br></div><div><br></div><div>☞আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী এই হাদিসের ব্যাখ্যায় তিনি লিখেছেন-</div><div><br></div><div>فِيهِ دَلَالَةٌ عَلَى جَوَازِ تَقْبِيلِ الْمَيِّتِ</div><div><br></div><div>-‘‘এই হাদিসই প্রমাণ করে যে ওফাতের পরেও মৃত চুমু দেয়া জায়েয।’’ (শাওকানী, নায়লুল আউতার, ৪/৩২পৃ:)</div><div><br></div><div><br></div><div>☞ইমাম ইবনে মাযাহ (رحمة الله) সংকলন করেন-</div><div><br></div><div>عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُوسَى بْنِ أَبِي عَائِشَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، وَعَائِشَةَ، أَنَّ ্রأَبَا بَكْرٍ، قَبَّلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَهُوَ مَيِّتٌ</div><div><br></div><div>-‘‘যথাক্রমে...সুফিয়ান সাওড়ী (رحمة الله) তিনি মূসা ইবনে আবি আয়েশা (رحمة الله) থেকে তিনি উবায়দুল্লাহ থেকে তিনি হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এবং হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, তারা উভয়ই বলেন, ইসলামের প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ওফাতের পরে রাসূল (ﷺ) কে তিনি চুমু দিয়েছেন।’’ (ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুনান, ১/৪৬৮পৃ: হা/১৪৫৭)</div><div><br></div><div><br></div><div>☞আলবানীও এই হাদিসটিকে সহীহ বলে তাহকীক করেছেন। এই হাদিসেও প্রমাণ হয়ে গেল বুজুর্গানে দ্বীন জীবিত অবস্থায় যেমন চুমু দেয়া বৈধ তেমন ওফাতের পরেও চুমু দেয়া বৈধ এবং ওফাতের পরেও মুহাব্বাতে বরকত হাসিলের জন্য চুমু দেয়া বৈধ।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ প্রসিদ্ধ শিফা শরীফে উল্লে­খিত আছে:</div><div><br></div><div>كَانَ اِبْنِ عُمَرَ يَضَعُ يَدَهُ المِنْبَرِ الَّذِىْ يَجْلِسُ عَلَيْهِ رَسُوْلُ الله ﷺ فِى الْخَطْبَةِ ثُمَّ يَضَعُهَا عَلٰى وَجْهِهِ</div><div><br></div><div>-‘‘যে মিম্বরে দাড়িয়ে হুযুর (ﷺ) খুৎবা দিতেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর সেটাতে হাত লাগিয়ে মুখে মাখতেন (চুমু দিতেন)।’’৪০১</div><div><br></div><div>➥401. ইমাম কাযি আয়াজ মালেকী, শিফা শরীফ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৭০।</div><div><br></div><div> </div><div><br></div><div>✧ বিশ্ব বিখ্যাত ফকিহ ও মুহাদ্দিস হাফেজ ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله)এ বিষয়ে লিখেন-</div><div><br></div><div>اسْتَنْبَطَ بَعْضُهُمْ مِنْ مَشْرُوعِيَّةِ تَقْبِيلِ الْأَرْكَانِ جَوَازَ تَقْبِيلِ كُلِّ مَنْ يَسْتَحِقُّ التَّعْظِيمَ مِنْ آدَمِيٍّ وَغَيْرِهِ فَأَمَّا تَقْبِيلُ يَدِ الْآدَمِيِّ فَيَأْتِي فِي كِتَابِ الْأَدَبِ وَأَمَّا غَيْرُهُ فَنُقِلَ عَنِ الْإِمَامِ أَحْمَدَ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ تَقْبِيلِ مِنْبَرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَقْبِيلِ قَبْرِهِ فَلَمْ يَرَ بِهِ بَأْسًا ..... وَنقل عَن بن أَبِي الصَّيْفِ الْيَمَانِيِّ أَحَدِ عُلَمَاءِ مَكَّةَ مِنَ الشَّافِعِيَّةِ جَوَازَ تَقْبِيلِ الْمُصْحَفِ وَأَجْزَاءِ الْحَدِيثِ وَقُبُورِ الصَّالِحين</div><div><br></div><div>-‘‘কাবা শরীফের স্তম্ভগুলোর চুম্বন থেকে কতেক উলামায়ে কিরাম বুযুর্গানে দ্বীন ও অন্যান্য পবিত্র বস্তসমূহ চুম্বনের বৈধতা প্রমাণ করেন। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) থেকে বর্ণিত আছে যে তার কাছে জানতে চাওয়া হল যে রাসূল (ﷺ) এর রওজা ও মিম্বার শরীফকে চুমু দেওয়া জায়েয কিনা? এতে তিনি অসুবিধার কিছু দেখেননি। আল্লামা ইবনে আবি সাইফ ইয়ামানী (رحمة الله) যিনি শাফেয়ী মাযহাবের মক্কা শরীফের বিখ্যাত ফকিহ এর একজন ছিলেন, তিনি কোরআন ও হাদিস শরীফের কিতাব এবং বুযুর্গানে দ্বীনের কবরসমূহ চুমু দেয়া জায়েয বলেছেন।’’ ৪০২</div><div><br></div><div>➥402.টিকাঃ ইবনে হাজার আসকালানী, ফতহুল বারী, ৩/৪৭৫পৃ: হা/১৬১১ এর আলোচনা।</div><div><br></div><div><br></div><div>☞বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম বদরুদ্দীন আইনী (رحمة الله) এ বিষয়ে উল্লেখ করেন-</div><div><br></div><div>أَن الإِمَام أَحْمد سُئِلَ عَن تَقْبِيل قبر النَّبِي، صلى الله عَلَيْهِ وَسلم، وتقبيل منبره، فَقَالَ: لَا بَأْس بذلك</div><div><br></div><div>-‘‘নিশ্চয় ইমাম আহমদ (رحمة الله) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল রাসূল (ﷺ)-এর রওজা শরীফ কে এবং মিম্বার শরীফ কে চুমু দেয়াতে কোন অসুবিধা আছে? তিনি বলেন এতে কোন অসুবিধা নেই।’’ (আইনী, উমদাতুল ক্বারী, ৯/২৪১পৃ:)</div><div><br></div><div><br></div><div>☞আহলে হাদিসদের প্রসিদ্ধ ইমাম শাওকানী তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থে লিখেন-</div><div><br></div><div>وَقَدْ نُقِلَ عَنْ الْإِمَامِ أَحْمَدَ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ تَقْبِيلِ مِنْبَرِ النَّبِيِّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَتَقْبِيلِ قَبْرِهِ فَلَمْ يَرَ بِهِ بَأْسًا ..... وَنُقِلَ عَنْ ابْنِ أَبِي الصَّيْفِ الْيَمَانِيِّ أَحَدِ عُلَمَاءِ مَكَّةَ مِنْ الشَّافِعِيَّةِ جَوَازُ تَقْبِيلِ الْمُصْحَفِ وَأَجْزَاءِ الْحَدِيثِ وَقُبُورِ الصَّالِحِينَ</div><div><br></div><div>-‘‘ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) সম্পর্কে বর্ণিত আছে, তাকে রাসূল (ﷺ) এর মিম্বার ও তাঁর রওজার শরীফ চুমু দেয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে এতে তিনি অসুবিধার কিছু দেখখেননি। ....আল্লামা ইবনে আবি সাইফ ইয়ামানী (رحمة الله) যিনি শাফেয়ী মাযহাবের মক্কা শরীফের বিখ্যাত ফকিহ এর একজন ছিলেন, তিনি কোরআন ও হাদিস শরীফের কিতাব এবং বুযুর্গানে দ্বীনের কবরসমূহ চুমু দেয়া জায়েয বলেছেন।’’ (শাওকানী, নায়লুল আউতার, ৫/৫১পৃ:)</div><div><br></div><div><br></div><div>☞আহলে হাদিসদের মোবারকপুরী লিখেন-</div><div><br></div><div>عن بعض العلماء جواز تقبيل قبره - صلى الله عليه وسلم - ومنيره وقبور الصالحين</div><div><br></div><div>-‘‘উলামায়ে কেরাম থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল (ﷺ) এর রওজা, মিম্বার শরীফ এবং সালেহীন (নেককারদের) কবরে চুমু দেওয়া জায়েয। (মোবারকপুরী, মের‘আত, ৯/১২৯পৃ:)</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ প্রখ্যাত তুশেখ গ্রন্থে আল্লামা জালাল উদ্দীন সূয়ূতী (রহ.) বলেছেন:</div><div><br></div><div>استنبط بعض العارفين من تقبيل الحجر الاسواد تقبيل قبور الصالحين</div><div><br></div><div>-‘‘হাজর আসওয়াদের চুম্বন থেকে কতেক আরেফীন বুযুর্গানে কিরামের মাযারে চুমু দেয়ার বৈধতা প্রমাণ করেছেন।’’</div><div><br></div><div><br></div><div>উপরোক্ত হাদীছে, মুহাদ্দিছীন ও উলামায়ে কিরামের ইবারত থেকে প্রমাণিত হরো যে বুযুর্গানে দ্বীনের হাত, পা, ওনাদের পোশাক, জুতা, চুম মোট কথা সব কিছু পবিত্র বস্তু, অনুরূপ কাবা শরীফ, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের পাতা সমূহের উপর চুম্বক জায়েয ও বরকতময়। এমনকি দ্বীনের চুল, পোশাক ও অন্যান্য পবিত্র বস্তুর সম্মান করা এবং যুদ্ধকালীন ও অন্যান্য মুসিবতের সময় এগুলো থেকে সাহায্য লাভ করা কুরআন করীম থেকে প্রমাণিত আছে।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান:</div><div><br></div><div>وَقَالَ لَهُمْ نَبِيُّهُمْ إِنَّ آيَةَ مُلْكِهِ أَنْ يَأْتِيَكُمُ التَّابُوتُ فِيهِ سَكِينَةٌ مِنْ رَبِّكُمْ وَبَقِيَّةٌ مِمَّا تَرَكَ آلُ مُوسَى وَآلُ هَارُونَ تَحْمِلُهُ الْمَلَائِكَةُ</div><div><br></div><div>বনী ইসরাঈলীদের তাদের নবী বলেছেন, তালুতের বাদশাহীর নির্দশন হচ্ছে তোমাদের কাছে সেই তাবুত (সিন্দুক) আসবে যেথায় তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে চিত্ত প্রশান্তি এবং হযরত মুসা ও হযরত হারুনের পবিত্র বস্তু সমূহ থাকবে; ফিরিশতাগণ এটা বহন করে আনবে।’’ ৪০৩</div><div><br></div><div>➥403. তাফসিরে নুরুল ইরফান, সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-২৪৮, পৃষ্ঠা-৪৯।</div><div><br></div><div><br></div><div>এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তফসীরে খাযেন. রুহুল বয়ান, মদারেক, জালালাইন ও অন্যান্য তফসীরে লিখা হয়েছে যে তাবুত হচ্ছে সীসা ও কাঠের দৈরী সিন্দুক, যেখানে নবীগণের ফটো (এ সব ফটো কোন মানুষের তৈরি ছিল না বরং কুদরতী ছিল) ওনাদের আবাসসমূহের নকশা, হযরত মুসা (عليه السلام) এর লাঠি, তাঁর কাপড়, জুতা এবং হযরত হারুন (عليه السلام) এর লাঠি, টুপি ইত্যাদি ছিল। বনী ঈসরাঈলগণ যখন শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতো, তখন বরকতের জন্য ওটাকে সামনে রাখতো এবং যখন খোদার কাছে দুআ করতো তখন ওটাকে সামনে রেখেই প্রার্থনা করতো। সুতরাং সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে বুযুর্গানে দ্বীনের পবিত্র বস্তু থেকে ফয়েয গ্রহণ এবং ওগুলোকে সম্মান করা নবীগণেরই অনুসৃত পথ।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তফসীরে খাযেন, মদারেক, রুহুল বয়ান ও কবীরে বার পারার সূরা ইউসূফের আয়াত فلما ذهبوا به এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে যে, যখন হযরত ইয়াকুব (عليه السلام) হযরত ইউসূফ (عليه السلام) কে তার ভাইদের সাথে পাঠালেন, তখন ওর গলায় ইব্রাহীম (عليه السلام) এর কোর্তাকে তাবিজ বানিয়ে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে নিরাপদে থাকে। পৃথিবীর সমস্ত পানি আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু যমযম কূপের পানির সম্মান এ জন্যেই করা হয় যে এটা হযরত ইসমাঈল (عليه السلام) এর পবিত্র পায়ের আঘাতে সৃষ্টি হয়েছে। মকামে ইব্রাহীমের পাথর হযরত ইব্রাহীম (عليه السلام) এর সান্নিধ্যের ফলে এর ইযযত এতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে যে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى</div><div><br></div><div>-তোমরা ইব্রাহীম (عليه السلام) এর দাঁড়াবার স্থানকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ কর।’’ ৪০৪</div><div><br></div><div>➥404. সূূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১২৫।</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থাৎ সবার মস্তক ওই দিকে নত কর। মক্কা শরীফকে যখন হুযুর (ﷺ) এর সাথে সম্পর্কিত করা হলো,</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তখন আল্লাহ তাআলা এর নামের কসম করে ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>لَا أُقْسِمُ بِهَذَا الْبَلَدِ (১) وَأَنْتَ حِلٌّ بِهَذَا الْبَلَدِ</div><div><br></div><div>-শপথ করছি এ শহরের (মক্কা শরীফের) আর আপনি এ শহরের অধিবাসী।’’ ৪০৫</div><div><br></div><div>➥405. সূূরা বালাদ, আয়াত নং-১-২।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ অন্যত্র বলেছেন-</div><div><br></div><div>وَهَذَا الْبَلَاَدَ الْاِمْينِ</div><div><br></div><div>-এবং এ নিরাপদ শহরের (মক্কা) শপথ।’’</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ হযরত আয়ুব (عليه السلام) প্রসঙ্গে ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>ارْكُضْ بِرِجْلِكَ هَذَا مُغْتَسَلٌ بَارِدٌ وَشَرَابٌ</div><div><br></div><div>-তুমি তোমার পা দ্বারা ভূমিকে আঘাত কর। এ-তো গোসলের সুশীতল পানি আর পানীয় ’’ ৪০৬</div><div><br></div><div>➥406. সূূরা ছোয়াদ, আয়াত নং-৪২।</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থাৎ হযরত আয়ুব (عليه السلام) এর পায়ের আঘাতে যে পানি বের হলো, সেটা রোগ নিরাময়ের সহায়ক হলো। এতে বোঝা গে নবীদের পার ধোয়া পানি মর্যাদাবান ও রোগ নিরাময়ের সহায়ক।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফের শুরুতে কিতাবুল লেবাসে বর্ণিত আছে যে, হযরত আসমা বিনতে আবু বকর সিদ্দীক (رضي الله عنه) এর কাছে হুযুর (ﷺ) এর আচকান শরীফ ছিল এবং মদীনা শরীফে কারো রোগ হলে, তিনি ওটা ধুয়ে তাকে সেই পানি পান করাতেন।’’ ৪০৭</div><div><br></div><div>➥407.</div><div><br></div><div>(১)ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, কিতাবুল লিবাস, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৬৪১, হাদিস-২০৬৯।</div><div><br></div><div>(২)ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, কিতাবুল লিবাস, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৪৯, হাদিস-৪০৫৪।</div><div><br></div><div>(৩)ইমাম আহমদ, আল মুসনাদ, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৪৭, হাদিস-২৬৯৮৭।</div><div><br></div><div>(৪)ইমাম বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৪২৩, হাদিস-৪০১০।</div><div><br></div><div>(৫)ইমাম বায়হাকী, শু’য়াবুল ঈমান, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৫১, হাদিস-৬১০৮।</div><div><br></div><div>(৬)ইমাম তাবরানী, মু’জামুল কাবীর, খণ্ড-২৪, পৃষ্ঠা-৯৮, হাদিস-২৬৪।</div><div><br></div><div>(৭)ইমাম ইবনে সাদ, আত্-তবকাতুল কোবরা, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৪৫৪।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ সেই মিশকাত শরীফের কিতাবুল আতআমার ---------- শীর্ষক অধ্যায়ে উল্লে­খিত আছে যে হুযুর (ﷺ) একদা হযরত কবশা (رضي الله عنه) এর বাসায় তশরীফ নিয়ে গেলেন এবং ওর মোশকে মুখ মুবারক লাগিয়ে পানি পান করেন। তিনি (কবশা) মোশকের মুখটা বরকতের জন্য কেটে রেখে দিয়েছিলেন।’’ ৪০৮</div><div><br></div><div>➥408.</div><div><br></div><div>(১)ইমাম ইবনে মাযাহ, আস-সুনান, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১১৩২, হাদিস-৩৪২৩।</div><div><br></div><div>(২)ইমাম তিরমিযি, আল-জামিউস সহীহ, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-৩০৬, হাদিস-১৮৯২।</div><div><br></div><div>(৩)ইমাম ইবনে হিব্বান, আস-সহীহ, খণ্ড-১২, পৃষ্ঠা-১৩৮, হাদিস-৫৩১৮।</div><div><br></div><div>(৪)ইমাম হুমায়দী, আল-মুসনাদ, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৭২, হাদিস-৩৫৪।</div><div><br></div><div>(৫)ইমাম তাবরানী, মু’জামুল কাবীর, খণ্ড-২৫, পৃষ্ঠা-১৫, হাদিস-৮।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ একই মিশকাতের কিতাবুস সালাতের المساجد অধ্যায়ের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্ণিত আছে যে একদল লোক হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের। হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন এবং আরয করেন-আমাদের দেশে ইহুদীদের একটি উপসনালয় আছে; আমরা একে ভেঙ্গে মসজিদ করার ইচ্ছে পোষণ করি। তখন হুযুর (ﷺ) একটি থালায় পানি নিয়ে ওখানে কুলি করেন এবং বলেন ওই উপাসনালয়কে ভেঙ্গে ফেল। অতঃপর এ পানি ওখানে ছিটিয়ে দাও। তারপর মসজিদ তৈরী কর।’’  ৪০৯</div><div><br></div><div>➥409. খতিব তিবরিযি, মিশকাত, কিতাবুুল মাসাজীদ, ১/২২৩ পৃ: হা/৭১৬, সুনানে নাসাঈ, হা/৭০১, ইমাম নাসাঈ, আস-সুনানুল কোবরা, হা/৭৮২, আলবানী বলেন, হাদিসটি ‘হাসান’।</div><div><br></div><div><br></div><div>এতে বোঝা গেল গেল হুযুর (ﷺ) এর পবিত্র থুথু অপবিত্রতা দূরীভূত করেন।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ হযরত খালিদ বিন ওলীদ (রাঃ) স্বীয় টুপীতে হুযুর (ﷺ) এর এর একটি চুল মুবারক রাখতেন এবং যুদ্ধের সময় ওই টুপী নিশ্চয় তার মাথায় থাকতো।৪১০  </div><div><br></div><div>➥410. ইমাম কাযি আয়াজ, শিফা শরীফ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৬১৯, দারুল কুতুব আরাবী, বয়রুত, লেবানন, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী, উমদাতুল ক্বারী, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩৭, দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ মিশকাত শরীফের الستره অধ্যায়ে বর্ণিত আছে, হুযুর (ﷺ) ওযু ফরমালেন, তখন হযরত বিলাল (رضي الله عنه) হুযুরের ব্যবহৃত ওযুর পানি নিয়ে নিলেন। লোকেরা হযরত বিলালের দিকে দৌড়ে গেলেন এবং যিনি ওই পানিতে হাত ভিজাতে পারলেন, তিনি সে হাত নিজ মুখে মালিশ করে নিলেন। আর যিনি পেলেন না, তিনি অন্যজনের হাতের আদ্রতা নিজ মুখে বুলিয়ে নিলেন।</div><div><br></div><div><br></div><div>এসব হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় যে, বুযুর্গানে দ্বীনের ব্যবহৃত বস্তুসমূহ থেকে বরকত লাভ করা সাহাবা কিরামের সুন্নাত। এবার ফকীহগণের বিভিন্ন উক্তির প্রতি দৃষ্টিপাত করুন।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ ফাতওয়ায়ে আলমগীরী কিতাবুল কারাহিয়া ملاقات الملوك শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>إنْ قَبَّلَ يَدَ عَالِمٍ أَوْ سُلْطَانٍ عَادِلٍ لِعِلْمِهِ وَعَدْلِهِ لَا بَأْسَ بِهِ هَكَذَا ذَكَرَهُ فِي فَتَاوَى أَهْلِ سَمَرْقَنْدَ</div><div><br></div><div>-যদি আলিম বা ন্যায়পরায়ণ বাদশাহের হাতে চুমু দেয়া হয় ওদের ইলম ও ন্যায়পরায়ণতার কারণে, তাহলে এতে কোন ক্ষতি নেই।’’ ৪১১</div><div><br></div><div>➥411. নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, ৩/৭৬পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ বিখ্যাত হানাফী ফাতওয়ার কিতাব ‘ফাতওয়ায়ে আলমগীরীতে’  কিতাবুল কারাহিয়াতে زيارة القبور অধ্যায়ে উল্লে­খিত আছে-</div><div><br></div><div>وَلَا بَأْسَ بِتَقْبِيلِ قَبْرِ وَالِدَيْهِ كَذَا فِي الْغَرَائِبِ.</div><div><br></div><div>-নিজের মা-বাপের কবরে চুমু দেয়ার কোন ক্ষতি নেই যেমন গরায়েবে বর্ণিত হয়েছে।’’  ৪১২</div><div><br></div><div>➥412. নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে আলমগীরী, ৫/৩৫১পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ সেই আলমগীরীর কিতাবুল কারাহিয়াতের ملاقات الملوك অধ্যায়ে আরও লিপিবদ্ধ আছে-</div><div><br></div><div>ذَكَرَ أَبُو اللَّيْثِ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - أَنَّ التَّقْبِيلَ عَلَى خَمْسَةِ أَوْجُهٍ قُبْلَةُ الرَّحْمَةِ كَقُبْلَةِ الْوَالِدِ وَلَدَهُ وَقُبْلَةُ التَّحِيَّةِ كَقُبْلَةِ الْمُؤْمِنِينَ بَعْضِهِمْ لِبَعْضٍ وَقُبْلَةُ الشَّفَقَةِ كَقُبْلَةِ الْوَلَدِ وَالِدَيْهِ وَقُبْلَةُ الْمَوَدَّةِ كَقُبْلَةِ الرَّجُلِ أَخَاهُ عَلَى الْجَبْهَةِ وَقُبْلَةُ الشَّهْوَةِ كَقُبْلَةِ الرَّجُلِ امْرَأَتَهُ أَوْ أَمَتَهُ وَزَادَ بَعْضُهُمْ قُبْلَةَ الدِّيَانَةِ وَهِيَ قُبْلَةُ الْحَجَرِ الْأَسْوَدِ كَذَا فِي التَّبْيِينِ.</div><div><br></div><div>চুম্বন পাঁচ প্রকার আশীর্বাদসূচক চুম্বন, যেমন বাবা ছেলেকে চুমু দেয়; সাক্ষাৎকারের চুম্বন, যেমন কতেক মুসলমনান কতেক মুসলমানকে চুমু দেয়; স্নেহের চুম্বন, যেমন ছেলে মা-বাপকে দেয়; বন্ধুত্বের চুম্বন, যেমন এক বন্ধু অপর বন্ধুকে চুমু দেয়; কামভাবের চুম্বন, যেমন স্বামী স্ত্রীকে দেয়। কেউ কেউ ধার্মিকতার চুম্বন অর্থাৎ হাজর আসওয়াদের চুম্বনকে এর সাথে যোগ করেছেন।’’ ৪১৩</div><div><br></div><div>➥413. মোল্লা নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে হিন্দীয়া, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-৩৬৯, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৪।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ দুর্রুল মুখতারের পঞ্চম খণ্ড কিতাবুল কারাহিয়াতের শেষ অধ্যায় الاستبراء এর মুসাফাহা পরিচ্ছেদে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>(وَلَا بَأْسَ بِتَقْبِيلِ يَدِ) الرَّجُلِ (الْعَالِمِ)........ (السُّلْطَانِ الْعَادِلِ)</div><div><br></div><div>আলিম ও ন্যায়পরায়ণ বাদশাহের হাতে চুমু দেয়ার কোন ক্ষতি নেই।’’  ৪১৪</div><div><br></div><div>➥414. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ এ জায়গায় ফাতওয়ায়ে শামীতে হাকিমের একটি হাদীছ উদ্ধৃত করেছে, যার শেষাংশে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>قَالَ: ثُمَّ أَذِنَ لَهُ فَقَبَّلَ رَأْسَهُ وَرِجْلَيْهِ وَقَالَ لَوْ كُنْت آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْت الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَاগ্ধ : وَقَالَ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ</div><div><br></div><div>-হুযর (ﷺ) সেই ব্যক্তিকে অনুমতি দিয়েছেন। তাই সে তাঁর মস্তক ও পা মুবারক চুম দিলেন। অতঃপর হুযুর (ﷺ) ইরশাদ ফরমান যদি আমি কাউকে সিজদার হুকুম দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে হুকুম দিতাম স্বামীকে সিজদা করতে।’’  ৪১৫</div><div><br></div><div>➥415. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ দুর্রুল মুখতারে সেই জায়গায় আলমগীরীর মত পাঁচ প্রকার চুম্বনের বর্ণনা দিয়েছেন। তবে নিম্নলিখিত বক্তব্যটুকু বর্ধিত করেছেন-</div><div><br></div><div>قُبْلَةُ الدِّيَانَةِ لِلْحَجَرِ الْأَسْوَدِ ...... تَقْبِيلُ الْمُصْحَفِ قِيلَ بِدْعَةٌ لَكِنْ رُوِيَ عَنْ عُمَرَ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُ الْمُصْحَفَ كُلَّ غَدَاةٍ وَيُقَبِّلُهُ ..... وَأَمَّا تَقْبِيلُ الْخُبْزِ فَحَرَّرَ الشَّافِعِيَّةُ أَنَّهُ بِدْعَةٌ مُبَاحَةٌ وَقِيلَ حَسَنَةٌ</div><div><br></div><div>অর্থাৎ দ্বীনদারীর এক প্রকার চুম্বন রয়েছে, সেটা হচ্ছে হাজর আসওয়াদে চুম্বন ও কাবা শরীফের চৌকাঠে চুম্বন। কুরআন পাককে চুমু দেয়াটা কতেক লোক বিদআত বলেছেন। কিন্তু হযরত উমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি প্রতিদি সকালে কুরআনে পাক হাতে নিয়ে চুমু খেতেন এবং রুটি চুমু দেয়াকে শাফেঈ মযহাবের লোকেরা জায়েয বলেছেন। কেননা এটা বিদআতে জায়েয। অনেকে এটাকে বিদআতে হাসনা বলেছেন।’’  ৪১৬</div><div><br></div><div>➥416. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮৪।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ অধিকন্তু আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>وَاتَّخِذُوا مِنْ مَقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى</div><div><br></div><div>-তোমরা মকামে ইব্রাহীমকে নামাযের স্থানরূপে গ্রহণ কর) ’’ ৪১৭</div><div><br></div><div>➥417. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১২৫</div><div><br></div><div><br></div><div>মকামে ইব্রাহীম ওই পাথরকে বলা হয় যেটার উপর দাঁড়িয়ে হযরত খলীল (عليه السلام) কাবা শরীফ তৈরী করেছেন। তার পবিত্র কদমের বরকতে সেই পাথরের এ মর্যাদা লাভ হলো- সারা দুনিয়ার হাজীরা ওই দিকে মাথা নত করে। এ সব ইবারত থেকে প্রতীয়মান হলো-চুম্বন কয়েক প্রকারের আছে এবং পবিত্র বস্তুকে চুমু দেয়াটা দ্বীনদারীর আমানত। এ পযর্ন্ত সমর্থনকারীদের উক্তি সমূহ উল্লে­খিত হলো। এবার বিরোধিতাকারীদের নেতা জনাব মওলবী রশীদ আহমদ গাঙ্গুলী কি বলেন, দেখুন। তিনি তার রচিত ফতওয়ায়ে রশীদিয়ার প্রথম খণ্ড كتاب الخطر والاباحة এর ৫৪ পৃষ্ঠায় বলেছেন- দ্বীনদার ব্যক্তির সম্মানে দাঁড়ানো জায়েয এবং এ রকম ব্যক্তির পায়ে চুমু দেয়াও জায়েয, যা হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত।’’ ইতি রশীদ আহমদ।</div><div><br></div><div>এ প্রসঙ্গে আরও অনেক হাদীছ ও ফকীহ ইবারতে পেশ করা যায়। কিন্তু এতটুকুই যথেষ্ট মনে করি।</div><div><br></div><div><br></div><div><br></div><div><br></div></div>

পবিত্র বস্তুকে চুমু দেওয়ার প্রমাণ(কদমবুচি)

বুর্যুগানে কিরামের হাত-পা চুমু দেওয়া ও পবিত্র বস্তুর সম্মান করা আল্লাহর ওলীগনের হাত-পা চুমু দেয়া, তাদের পবিত্র বস্তু, চুল, পোশাক পরি...

Read more »

আওলিয়া কিরামের নামে পশুপালন

<div>আওলিয়া কিরামের নামে পশুপালন</div><div><br></div><div><br></div><div>নিয়মিতভাবে গেয়ারবী শরীফ ও মীলাদ শরীফ পালনকারীদের মধ্যে কেউ কেউ এ উদ্দেশ্যে কিছু দিন আগে থেকেই ছাগল, মোরগ ইত্যাদি পালন করে এবং এগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করে। ফাতিহার তারিখে এ গুলোকে আল্লাহর নামে যবেহ করে খাবার তৈরী করে ফাতিহা দেয়া হয় এবং গরীব ও নেকবান্দাদেরকে খাওয়ানো হয়। যেহেতু পশুটা সেই উদ্দেশ্যে পালন করা হয়েছে, সেহেতু গেয়ারবী শরীফের ছাগল, গাউছে পাকের গরু ইত্যাদি বলে দেয়া হয়। শরীয়ত মতে এটা হালাল যেমন ওলীমার পশু। কিন্তু ভিন্ন মতাবলম্বীগণ এ কাজকে হারাম, মাংসকে মৃতপশুর মাংসতুল্য এবং এ কাজ যিনি করেন, তাঁকে ধর্মদ্রোহী ও মুশরিক বলে। তাই এ আলোচনাকেও দু’টি অধ্যায়ে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে এর বৈধতার প্রমাণ এবং দ্বিতীয় অধ্যায়ে এ প্রসঙ্গে উত্থাপিত আপত্তিসমূহের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হয়েছে।</div><div><br></div><div><div>প্রথম অধ্যায়</div><div><br></div><div>এর বৈধতার প্রমাণ</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>মুসলমান বা আহলে কিতাব যে হালাল পশু আল্লাহর নামে যবেহ করে, তা হালাল এবং মুশরিক বা মুরতাদ যে হালাল পশু যবেহ করে, তা মৃততুল্য অর্থাৎ হারাম। অনুরূপ যদি কোন মুসলমান ইচ্ছা করে বিসমিল্লাহ না বলে খোদা ভিন্ন অন্য কারো নাম নিয়ে যবেহ করে, (যেমন বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবর বলার পরিবর্তে এয়া গাউছ বলে যবেহ করে) তাহলে হারাম হবে। লক্ষ্যণীয় যে এ হালাল হারামটা সাব্যস্ত হচ্ছে যবেহকারী অনুসারে, মালিক অনুসারে নয়। যদি কোন মুসলমানের পশু কোন মুশরিক যবেহ করে দিল, তাহলে মৃত সদৃশ বা নাপাক হয়ে গেল। আর যদি কোন মুশরিক দেবতার নামে কোন পশু পালন করলো কিন্তু কোন মুসলিম একে ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবর’ বলে যবেহ করে দিল, তাহলে সেই পশুর মাংস হালাল হবে। এখানেও যবেহ করার সময় নাম নেওয়াটাই বিবেচ্য; আগে পিছের কথা ধর্তব্য নয়। পশু দেবতার নামে পালন করা হয়েছিল কিন্তু যবেহ করা হয়েছে খোদার নামে, হালাল হবে। আর পশুটা কুরবানীর জন্য রাখা হয়েছিল কিন্তু যবেহ করার সময় অন্য নাম নেওয়া হলো, সেটা মৃত সদৃশ অর্থাৎ হারাম হবে।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ কুরআন করীম তাই ইরশাদ করেছেন-</div><div><br></div><div>وَمَا أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ</div><div><br></div><div>-‘‘সে পশু হারাম, যেটাকে খোদা ভিন্ন অন্য নামে ডাকা হয়।’’ ৩৭৩</div><div><br></div><div>➥373. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৭৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ এখানে ডাকা শব্দের দ্বারা যবেহ করার সময় ডাকাকে বোঝানো হয়েছে। যেমন তফসীরে বয়যবীতে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে উল্লে­খিত আছে-</div><div><br></div><div>أي رفع الصوت لغير الله به كقولهم: باسم اللات والعزى عند ذبحه.</div><div><br></div><div>-‘‘ওই পশুর বেলায় গায়রুল্লাহর নাম দেয়া হয়েছে, যেমন কাফিরগণ যবেহ করার সময় লাত ও উযযার (দেবতা) নাম নিত।’’  ৩৭৪</div><div><br></div><div>➥374. ইমাম কাযি নাসিরুদ্দীন বায়যাভী, তাফসিরে বায়যাভী, ২/১১৪ পৃ:, সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৭৩ এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে।</div><div><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-EGzoKkzelfk/Z2L9u_dYnDI/AAAAAAAAQI4/Bk743CgCLIEl6RDvmlT0IWIudP2jt_dbwCNcBGAsYHQ/s1600/1000007484.webp.webp" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="390" data-original-width="750" height="166" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-EGzoKkzelfk/Z2L9u_dYnDI/AAAAAAAAQI4/Bk743CgCLIEl6RDvmlT0IWIudP2jt_dbwCNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000007484.webp.webp" width="320"></a></div><br></div><div><br></div><div>✧ তাফসীরে জালালাইনে এ আয়াত প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>بِأَنْ ذُبِحَ عَلَى اسْم غَيْره</div><div><br></div><div>-‘‘এ রকমই, যেমন খোদা ভিন্ন অন্য নামে যবেহ করা হয়।’’  ৩৭৫</div><div><br></div><div>➥375. ইমাম সুয়ূতি, তাফসিরে জালালাইন, ১/১৩৬ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তফসীরে খাযেনে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>وَما أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ بِهِ يعني ما ذكر على ذبحه غير اسم الله وذلك أن العرب في الجاهلية كانوا يذكرون أسماء أصنامهم عند الذبح فحرم الله بهذه الآية وبقوله: ولا تأكلوا مما لا يذكر اسم الله عليه</div><div><br></div><div>-অর্থাৎ সে পশু হারাম, যেটার যবেহের সময় খোদা ভিন্ন অন্য কারো নাম নেয়া হয়েছে এবং এটা এ জন্য যে আইয়ামে জাহিলিয়াতের আরববাসীরা যবেহ করার সময় মূর্তিদের নাম নিত। তাই আল্লাহ তা’আলা ওটাকে এ আয়াত ও ولا تأكلوا আয়াত দ্বারা হারাম বলেছেন। ৩৭৬</div><div><br></div><div>➥376. ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, ২/৭ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তাফসীরে কবীরে এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-</div><div><br></div><div>وَكَانُوا يَقُولُونَ عِنْدَ الذَّبْحِ: بِاسْمِ اللَّاتِ وَالْعُزَّى فَحَرَّمَ اللَّه تَعَالَى ذَلِكَ</div><div><br></div><div>আরবের অধিবাসীগণ যবেহ করার সময় বলতো- বিসমে লাত ওয়াল উযযা (লাত উযযার নামে)। ৩৭৭</div><div><br></div><div>➥377. ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী, তাফসিরে কাবীর, খণ্ড-১১, পৃষ্ঠা-২৮৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ সুতরাং আল্লাহ তা’আলা ওটাকে হারাম বলেছেন-</div><div><br></div><div>তাফসীরাতে আহমদীয়ায় এ আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লে­খিত আছে-</div><div><br></div><div>معناه ما ذبح به لاسم غير الله مثل اللات والعزى واسماء الانبياء</div><div><br></div><div>-এ আয়াতের অর্থ হচ্ছে ওটাকে খোদা ভিন্ন অন্য কারো নামে যবেহ করা হয়েছে। অর্থাৎ সেগুলোকে দেবতার নামে যবেহ করা হত। ৩৭৮</div><div><br></div><div>➥378. আল্লামা মোল্লা জিওন, তাফসিরে আহমদিয়া,</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে তফসীরে মাদারেকে বলা হয়েছে-</div><div><br></div><div>أي ذبح للأصنام فذكر عليه غير اسم الله ...... أي رفع به الصوت للصنم وذلك قول أهل الجاهلية باسم اللات والعزى</div><div><br></div><div>অর্থাৎ দেবতাদের জন্য যে পশু যবেহ করা হয়, সেটা হারাম। সুতরাং ওটার উপর গায়রুল্লাহর নাম নেয়া মানে দেবতাকে ডাকা হয়েছে। এটা ছিল জাহেলিয়াত যুগের লোকদের কথা- ‘বিসমে লাতে ওয়াল উযযা।’ ৩৭৯</div><div><br></div><div>➥379. ইমাম নাসাফী, তাফসিরে মাদারেক, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৫১।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তাফসীরে লবাবুত তাবিলে এ আয়াতের তফসীর প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-</div><div><br></div><div>يعني وما ذبح للأصنام والطواغيت وأصل الإهلال رفع الصوت وذلك أنهم كانوا يرفعون أصواتهم بذكر آلهتهم إذا ذبحوا لها</div><div><br></div><div>-অর্থাৎ যা দেবতা ও উপাস্যদের জন্য যবেহ করা হয়েছে এবং ডাকার মূল হচ্ছে আওয়াজ করা। ওরা (জাহেলিয়াত যুগের লোকেরা) যবেহ করার সময় তাদের দেবতাদের নাম উল্লে­খ করে ডাক দিত। ৩৮০</div><div><br></div><div>➥380.ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, ১/১০৩ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তফসীরে হুসাইনিতে এ আয়াতের বিশ্লেষণে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>وآنچه آو از برآورده شود بغير الله از برائے غير خدا براں در وقت ذبح آں يعنى بنام بتاں بكشند</div><div><br></div><div>যবেহ করার সময় গায়রুল্লাহ নাম ডাকা হয়েছিল অর্থাৎ দেবতাদের নামে ডাক দেয়া হয়েছিল।</div><div><br></div><div><br></div><div>উপরোক্ত তফসীর সমূহের ইবারত থেকে বোঝা গেল যে, উক্ত আয়াতে وَما أُهِلَّ (মা উহিল্লা) দ্বারা যবেহ করার সময় খোদা ভিন্ন অন্য কাউকে ডাকা বোঝানো হয়েছে। সুতরাং পশুর জীবিতাবস্থায় কারো প্রতি উৎসর্গ করাটা এখানে ধর্তব্য নয়। এবার ফকীহগণের উক্তিসমূহ পেশ করছি।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তফসীরাতে আহমদীয়ায় আয়াত وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ এর প্রেক্ষাপটে উল্লে­খিত আছে-</div><div><br></div><div>ومن ههنا علم ان البقرة المنذورة للاولياء كما هو الرسم فى زماننا حلال طيب لانه لم يذكر اسم غير الله وقت الذبح وان كانوا ينذرونها</div><div><br></div><div>-‘‘এ থেকে বোঝা গেল- যে গাভী আল্লাহর ওলীদের নামে মানত করা হয়েছে যেমন আমাদের যুগে প্রচলিত আছে, তা হালাল, পবিত্র। কেননা এটা যবেহ করার সময় গায়রুল্লাহর নাম নেয়া হয়নি যদিওবা এটা মানতকৃত।৩৮১</div><div><br></div><div>➥381. আল্লামা মোল্লা জিওন, তাফসিরে আহমদিয়া,</div><div><br></div><div><br></div><div>এ ইবারতে গেয়ারবী শরীফের নামে পশু পালন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট রায় পাওয়া গেল। এ কিতাবের লিখক মৌলানা আহমদ জিয়ুন (رحمة الله) এক জন বড় বুযুর্গ, যিনি আরব আযমের উলামায়ে কিরামের উস্তাদ। দেওবন্দীরাও তাঁকে মান্য করে।’’</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ ফাতওয়ায়ে শামীর -الذبح শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>وَاعْلَمْ أَنَّ الْمَدَارَ عَلَى الْقَصْدِ عِنْدَ ابْتِدَاءِ الذَّبْحِ</div><div><br></div><div>-‘‘জেনে রাখা দরকার যে হালাল-হারামটা যবেহ করার সময় নিয়তের উপর নির্ভরশীল।’’  ৩৮২</div><div><br></div><div>➥382. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩১০।</div><div><br></div><div><br></div><div>সুস্পষ্ট বোঝা গেল যে, যবেহ করার আগের নিয়ত বা নাম মোটেই বিবেচ্য নয়।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ ফাতওয়ায়ে আলমগীরি الذَّبْحِ শীর্ষক অধ্যায়ে উল্লে­খিত আছে-</div><div><br></div><div>مُسْلِمٌ ذَبَحَ شَاةَ الْمَجُوسِيِّ لِبَيْتِ نَارِهِمْ أَوْ الْكَافِرِ لِآلِهَتِهِمْ تُؤْكَلُ؛ لِأَنَّهُ سَمَّى اللَّهَ تَعَالَى - وَيُكْرَهُ لِلْمُسْلِمِ، كَذَا فِي التَّتَارْخَانِيَّة نَاقِلًا عَنْ جَامِعِ الْفَتَاوَى</div><div><br></div><div>-‘‘কোন মুসলমান, অগ্নি উপাসকের সেই গাভী, যেটা ওদের অগ্নি পূজার জন্য ছিল বা কাফিরের যেটা ওদের দেবতার নামে ছিল, যবেহ করলো, ওটা হালাল হবে। কেননা সেই মুসলমান আল্লাহর নাম নিয়েছে। অবশ্য মুসলমানদের জন্য এ ধরনের কাজ মাকরূহ। ফাতওয়ায়ে তাতার খানীতে জামেউল ফাতওয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।’’  ৩৮৩</div><div><br></div><div>➥383. নিযামুদ্দীন বলখী, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া, ৫/২৮৬ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>দেখুন উক্ত পশুপালনকারী কাফির এবং যবেহটাও করানো হয়েছে দেবতা বা অগ্নিপূজার নিয়তে। মালিকের পালন ও যবেহ করানো উভয়টা অবৈধ। কিন্তু যেহেতু যবেহের সময় সেই মুসলমান আল্লাহর নাম নিয়ে যবেহ করেছে, সেহেতু পশুটা হালাল। বলুন, গেয়ারবী শরীফ বা মীলাদ শরীফের গরু সেই মূর্তি পূজারীর, গরু থেকেও কি নিকৃষ্ট? ওটা হালাল হলে এটা কিভাবে হারাম হতে পারে? খোদার শুকর, নিখুঁতভাবে প্রমাণিত হলো যে গেয়ারবী শরীফ ইত্যাদির গরু ছাগল হালাল এবং এটা ছওয়াবের কাজ।</div><div><br></div><div><br></div></div>

আওলিয়া কিরামের নামে পশুপালন

আওলিয়া কিরামের নামে পশুপালন নিয়মিতভাবে গেয়ারবী শরীফ ও মীলাদ শরীফ পালনকারীদের মধ্যে কেউ কেউ এ উদ্দেশ্যে কিছু দিন আগে থেকেই ছাগল, মোরগ ইত্যাদি...

Read more »

আওলিয়া কিরামের নামে পালিত পশু সম্পর্কিত আপত্তিসমূহ ও এর জবাব

<div>দ্বিতীয় অধ্যায়</div><div><br></div><div>আওলিয়া কিরামের নামে পালিত পশু সম্পর্কিত আপত্তিসমূহ ও এর জবাব</div><div><br></div><div><br></div><div>১ নং আপত্তিঃ</div><div><br></div><div><br></div><div> وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ এ আয়াতে أُهِلَّ শব্দটি اِهْلَالْ থেকে গঠন করা হয়েছে এবং এর আভিধানিক অর্থ যবেহ করার সময় ডাকা নয় বরং যে কোন সময় ডাকা। সুতরাং যে পশুকে জীবিতাবস্থায় বা যবেহ করার সময় খোদা ভিন্ন অন্য কারো নামে সম্বোধন করা হয়, সে পশু মৃত তুল্য তথা হারাম।  তাই গাউছে পাকের নামে পালিত গরু বা শেখ সদ্দুকীর নামে পালিত গাভী যদি ওব খোদার নামে যবেহ করা হয়, হারাম হবে।</div><div><br></div><div>(এ আপত্তিটা মূলতঃ হযরত শাহ আবদুল আযীযের (কুঃ সিঃ) তিনি এ মাসআলায় মারাত্মক ভুল করেছেন।)</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ اِهْلَالْ এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে যে কোন সময় ডাকা। কিন্তু প্রচলিত অর্থ হচ্ছে যবেহ করার সময় ডাকা। এ আয়াতে প্রচলিত অর্থ বোঝানো হয়েছে। صلوة এর শাব্দিক অর্থ যে কোন দুআ কিন্তু এর প্রচলিত অর্থ হলো নামায। اقيمو الصلوة (নামায কায়েম কর) বলতে ফরয নামায বোঝাবে, সাধারণ দুআ নয়।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তফসীরে কবীরে এ আয়াতে ব্যবহৃত ما أُهِلَّ এর প্রেক্ষিতে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>الْإِهْلَالُ أَصْلُهُ رَفْعُ الصَّوْتِ.... هَذَا مَعْنَى الْإِهْلَالِ فِي اللُّغَةِ، ثُمَّ قِيلَ لِلْمُحْرِمِ</div><div><br></div><div>এর অর্থ হচ্ছে আওয়াজ বড় করা (ডাকা)। এটা হচ্ছে শাব্দিক অর্থ। অতঃপর মোহরমকে বলা হয়েছে ..........!)  ৩৮৪</div><div><br></div><div>➥384. ইমাম রাজী, তাফসিরে কাবীর, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯২, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, ইরান।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ অনুরূপ বয়যাবী শরীফের হাশিয়ায় (শিহাব লিখিত) একই আয়াতে ما أُهِلَّ এর, প্রেক্ষিতে উল্লে­খিত আছে-</div><div><br></div><div>اى رَفْعُ به الصَّوْتِ الخ هذا أَصْلُهُ ثم جعل عبارة عما ذبح لغير الله</div><div><br></div><div>অর্থাৎ সেটাকে ডাকা হয়েছিল- এটা হলো اِهْلَالْ এর শাব্দিক অর্থ। অতঃপর أُهِلَّ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে সেই পশু যেটা খোদা ভিন্ন অন্য নামে যবেহ করা হবে।</div><div><br></div><div>যদি এখানে اِهْلَالْ এর শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করা হয়, তাহলে এতে কয়েকটি বৈপরীত্যের সন্মুখীন হতে হবে।</div><div><br></div><div><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-fCVLV-OWfEY/Z2L90b4jAzI/AAAAAAAAQI8/MAL7q4g3IIc8Vc2PggLaKVEAzXQ3fHMRwCNcBGAsYHQ/s1600/1000007483.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="410" data-original-width="728" height="180" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-fCVLV-OWfEY/Z2L90b4jAzI/AAAAAAAAQI8/MAL7q4g3IIc8Vc2PggLaKVEAzXQ3fHMRwCNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000007483.jpg" width="320"></a></div><br></div><div>প্রথমতঃ এ ব্যাখ্যা তাফসীরকারকদের সর্বসম্মত অভিমত ও সাহাবায়ে কিরামের উক্তিসমূহের বিপরীত হবে। তাফসীরকারকদের অভিমত আমি প্রথম অধ্যায়ে বর্ণনা করেছি। এখন সাহাবায়ে কিরাম ও অন্যদের বক্তব্য নিরীক্ষণ করুন।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তাফসীরে দুররে মনসুরে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>أخرج ابْن الْمُنْذر عَن ابْن عَبَّاس فِي قَوْله {وَمَا أهل بِهِ} قَالَ: ذبح</div><div><br></div><div>وَأخرج ابْن جرير عَن ابْن عَبَّاس فِي قَوْله {وَمَا أهل بِهِ لغير الله} يَعْنِي مَا أهلّ للطواغيت</div><div><br></div><div>وَأخرج ابْن أبي حَاتِم عَن مُجَاهِد {وَمَا أهل بِهِ} قَالَ: مَا ذبح لغير لله</div><div><br></div><div>وَأخرج ابْن أبي حَاتِم عَن أبي الْعَالِيَة {وَمَا أهلَّ بِهِ لغير الله} يَقُول: مَا ذكر عَلَيْهِ اسْم غير الله</div><div><br></div><div>অর্থাৎ হযরত ইবনে মুনযার হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) এর বরাত দিয়ে وَمَا أهل এর অর্থ করেছেন ‘যা যবেহ করা হয়েছে এবং হযরত ইবনে জরির হযরত ইবনে আব্বাসের বরাত দিয়ে وَمَا أهل এর অর্থ করেছেন ‘যা উপাস্যদের নামে উৎসর্গ করা হয়েছে।” হযরত আবি হাতেম হযরত মুজাহিদ এর বরাত দিয়ে وَمَا أهل এর অর্থ করেছেন-যেটা খোদা ভিন্ন অন্য নামে যবেহ করা হয় এবং হযরত আবি হাতেম (رضي الله عنه) হযরত আবি আলিয়া এর বরাত দিয়ে এর অর্থ করেছেন-ওটার উপর খোদা ভিন্ন অন্য যেই নাম উল্লে­খ করা হয়েছে।  ৩৮৫</div><div><br></div><div>➥385. ইমাম সুয়ূতি, আদ্দুররুল মানছুর, ১/৪০৭ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তাফসীরে মাযহারীতে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে উল্লে­খিত আছে।</div><div><br></div><div>قال الربيع بن انس يعنى ما ذكر عند ذبحه اسم غير الله</div><div><br></div><div>-রবী ইবনে আনাস (رضي الله عنه) বলেছেন যবেহ করার সময় খোদা ভিন্ন যে নাম উল্লে­খিত হয়েছে।  ৩৮৬</div><div><br></div><div>➥386. কাযি সানাউল্লাহ পানিপথি, তাফসিরে মাযহারী, ১/১৭০ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>উপরোক্ত ইবারত থেকে বোঝা গেল যে বিশিষ্ট সাহাবায়ে কিরাম ও তাবেঈনের অভিমত হচ্ছে- এ আয়াতের ভাবার্থ হলো খোদা ভিন্ন অন্য নামে যবেহ করা।</div><div><br></div><div><br></div><div>দ্বিতীয়তঃ তাদের নির্বাচিত এ অর্থ স্বয়ং কুরআন করীমেরও বিপরীত।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>مَا جَعَلَ اللَّهُ مِنْ بَحِيرَةٍ وَلَا سَائِبَةٍ وَلَا وَصِيلَةٍ وَلَا حَامٍ وَلَكِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا يَفْتَرُونَ عَلَى اللَّهِ الْكَذِبَ</div><div><br></div><div>বহীরা, (উপর্যুপরি দশ শাবক প্রসবকারী যে পশু দেবতার নামে উৎসর্গ করা হতো) সাইবা,  (যে পশু দেবতার নামে ছেড়ে দেয়া হতো) ওসীলা (উপর্যুপরী মাদী বাচ্চা প্রসবকারী যে উষ্ট্রী দেবতার নামে ছেড়ে দেওয়া হতো) ও হাম (প্রজনন কাজে নিয়োজিত অধিক বয়স্ক যে উষ্ট্র দেবতার নামে ছেড়ে দেয়া হতো) আল্লাহ স্থির করেননি; কিন্তু কাফিরগণ আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে। এ চার পশু (বহীরা, সাইবা ইত্যাদি) হলো ওইগুলো, যেগুলোকে আরবের কাফিরগণ দেবতার নামে ছেড়ে দিত এবং ওগুলোকে হারাম মনে করতো।  ৩৮৭</div><div><br></div><div>➥387. সূরা মায়েদা, আয়াত নং-১০৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>কুরআন করীম এ হারাম মনে করাটাকে অগ্রাহ্য করেছেন। অথচ জীবিতাবস্থায় এগুলোর উপর দেবতার নাম নেয়া হয়েছিল। তবুও ওগুলোকে যবেহ করে খাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।</div><div><br></div><div><br></div><div>كُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ</div><div><br></div><div>✧ আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যা দান করেছেন, তা খাও এবং শয়তানের অনুসরণ করো না  ৩৮৮</div><div><br></div><div>➥388. সূরা আনআম, আয়াত নং-১৪২।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তফসীরে ফতহুল বয়ানে مَا جَعَلَ اللَّهُ مِنْ بَحِيرَةٍ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে এবং মুসলিম শরীফের শরাহ নব্বীর الصفة التى يعرف بها فى الدنيا اهل الجنة শীর্ষক অধ্যায়ের ৩৮৫ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div>والمراد إنكار ما حرموا على أنفسهم من السائبة والوصيلة والبحيرة والحامي وغير ذلك وأنها لم تصر حراما بتحريمهم</div><div><br></div><div>অর্থাৎ এ আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে ওসব পশু হারাম সাব্যস্ত হওয়াকে অস্বীকার করা, যেগুলোকে কাফিরগণ হারাম মনে করতো, যেমন বহীরা ইত্যাদি। এসব পশু ওরা হারাম বললেও হারাম হবে না।</div><div><br></div><div><br></div><div>এর থেকে বোঝা গেল হিন্দুরা যে ষাড় দেবতার নামে ছেড়ে দেয়, তা হারাম হবে না। যদি কোন মুসলমান বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করে, তাহলে হালাল হবে। অবশ্য অন্যজনের মালিকানাধীন হওয়ার কারণে এ রকম করা নিষেধ।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ আল্লাহ তাআলা আরও ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>وَقَالُوا هَذِهِ أَنْعَامٌ وَحَرْثٌ حِجْرٌ لَا يَطْعَمُهَا إِلَّا مَنْ نَشَاءُ بِزَعْمِهِمْ</div><div><br></div><div>-কাফিরগণ তাদের ধারণা মতে বলে যে এ সব গবাদি পশু ও শস্যক্ষেত্র নিষিদ্ধ। আমরা যাকে ইচ্ছা করি সে ব্যতীত অন্য কেউ এগুলো খেতে পারবে না। ৩৮৯</div><div><br></div><div>➥389. সূরা আন’আম, আয়াত নং-১৩৮।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ আরও ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div>وَقَالُوا مَا فِي بُطُونِ هَذِهِ الْأَنْعَامِ خَالِصَةٌ لِذُكُورِنَا وَمُحَرَّمٌ عَلَى أَزْوَاجِنَا</div><div><br></div><div>অর্থাৎ কাফিরগণ বলে, এসব গবাদি পশুর গর্ভে যেসব বাচ্চা আছে, তা আমাদের পুরুষদের জন্য নির্দিষ্ট এবং আমাদের মহিলাদের জন্য হারাম। ৩৯০</div><div><br></div><div>➥390. সূরা আন’আম, আয়াত নং-১৩৯।</div><div><br></div><div><br></div><div> এগুলো হচ্ছে সেইসব শস্যক্ষেতসমূহ এবং পশুগুলো, যা দেবতাদের নামে উৎসর্গ করা হতো এবং কাফিরগণ এসবের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতো। কুরআন করীম এ নিষেধাজ্ঞাকে নাকচ করে দিয়েছেন। তাহলে যখন দেবতার নামে উৎসর্গকৃত পশু হারাম হলো না, আল্লাহর ওলীদের ফাতিহার উদ্দেশ্যে পালিত পশু কেন হারাম হবে?</div><div><br></div><div><br></div><div>তৃতীয়তঃ أهل শব্দের এ অর্থ ফকীহগণের বিশ্লেষণেরও বিপরীত। আমি এ আলোচনার প্রথম অধ্যায়ে ফাত্ওয়ায়ে আলমগীরীর ইবারত উদ্ধৃত করে দেখিয়েছি যে কোন মুশরিক বা অগ্নি পূজারী দেবতা বা অগ্নি পূজার নামে উৎসর্গকৃত পশু কোন মুসলিম কর্তৃক যবেহ করালো এবং সেই মুসলমান বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করলো, তাহলে সেটা হালাল। অনুরূপ তফসীরাতে আহমদীয়ার একটি ইবারতও উল্লে­খ করেছি, যেথায় বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর ওলীগণের নামে মানতকৃত পালিত পশু হালাল।</div><div><br></div><div><br></div><div>চতুর্থতঃ এ অর্থ আকল বা যুক্তিরও বিপরীত। কেননা, যদি أهل এর শাব্দিক অর্থ গ্রহণ করা হয় (অর্থাৎ কোন পশুর বেলায় এর জীবিতাবস্থায় বা যবেহ করার সময় খোদা ভিন্ন অন্য নাম নেয়া হলে সেটা হারাম হয়ে যায়) তাহলে পশু ভিন্ন অন্যান্য জিনিসও গায়রুল্লাহর সাথে সম্পৃক্ততার দ্বারা হারাম হওয়া চাই, কারণ কুরআন শরীফে আছে وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ (প্রত্যেক ঙক  যাকে গায়রুল্লাহর (খোদা ভিন্ন অন্য নাম, নামে ডাকা হবে) এখানে ما শব্দে পশুর কোন শর্তারোপ নাই। আর সান্নিধ্যের নিয়তে ডাকা হোক বা অন্য কোন নিয়তে যে কোন অবস্থায় হারাম হওয়া চাই। তাহলে যায়েদের গরু, উমরের মহিষ, নিশানের আম, বকরের বাগানের ফুল, উম্মে সাঈদের কূপ, অমুকের মসজিদ, আমার ঘর, দেওবন্দীদের মাদ্রাসা, ইমাম বুখারীর কিতাব ইত্যাদি সম্বন্ধ পদ নাজায়েয হয়ে গেছে এবং ওসবের ব্যবহার হারাম হয়ে গেল। আর বুখারী, তিরমিযী তো খাঁটি শিরক হয়ে গেল। কেন না এগুলোকে বুখারী ও তিরমিযীর সাথে অর্থাৎ গায়রুল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। জনাব কোন মহিলা যতদিন পযর্ন্ত কেবল আল্লাহর বান্দা হিসেবে থাকে, ততদিন সে সবার জন্য হারাম। কিন্তু যখন ওর বেলায় খোদা ভিন্ন অন্য নাম প্রয়োগ হয়, অর্থাৎ অমুকের স্ত্রী বলা হয়, তখন সে অমুকের জন্য হালাল হয়ে গেল। কোন কোন সময় গায়রুল্লাহর সম্পৃক্ততার ফলে জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি পায়। হায়দরাবাদে হুযুর গাউছে পাক (رضي الله عنه) এর হাতের লিখা একটি কুরআন শরীফ ছিল। বৃটিশ সরকার দু’লাখ টাকা দিয়ে খরিদ করতে চেয়েছিল কিন্তু দেয়া হয়নি। আমীর আবদুর রহমান খানের ব্যবহৃত গালিচা জনৈক আমেরিকাবাসী পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছিল। পুরোনো টিকেটও মূল্যবান হয়ে থাকে (সরকার আলিপুরী) মোট কথা, أُهِلَّ শব্দের এ ধরনের অর্থ কুরআন, হাদীছ ও যুক্তির বিপরীত।</div><div><br></div><div><br></div><div>পঞ্চমতঃ যদি কেউ কোন পশু দেবতার নামে পালন করালো, পরবর্তীতে সে মুসলমান হয়ে গেল এবং খালেস নিয়তে সেটাকে জবেহ করলো, তাহলে এটা সর্ব সম্মতিক্রমে হালাল। অথচ এটাও أُهِلَّ এর অন্তর্ভূক্ত হলো। কারণ একবারও যদি গায়রুল্লাহর নাম নেয়া হয়, তাহলে ما أُهِلَّ এর পর্যায়ে পড়ে যায়। তাই মানতেই হবে যে যবেহ করার সময় যে নাম হয় নেয়া হয় সেটাই ধর্তব্য; আগের কথা নয়। যদি কেউ গায়রুল্লাহর নামে যবেহ করলো অতঃপর মাংসের ক্ষেত্রে আল্লাহর নাম নিল, সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরূপ যদি জীবিতাবস্থায় ডাকাটা গ্রহণযোগ্য হতো, তাহলে যে ব্যক্তি কোন পশুকে জীবিতাবস্থায় গায়রুল্লাহর নামে আখ্যায়িত করে পরবর্তীতে তওবা করে আল্লাহর নামের যবেহ করলো, সেটা হারাম হতো।</div><div><br></div><div><br></div><div>ষষ্ঠতঃ যদি أُهِلَّ শব্দের শাব্দিক অর্থইবা গ্রহণ করা হয়, তবুও بِهِ শব্দের দ্বারা সুনির্দিষ্ট হয়ে যায়। যেমন بِهِ এর ب অর্থ হবে فِىْ এর মত আর مضاف পদটা উহ্য ধরে নিতে হবে অর্থাৎ فى ذبحه হবে। তা নাহলে بِهِ শব্দের কি তাৎপর্য হতে পারে? এটা না থাকলেও তো অর্থের বেলায় কোন অসুবিধা হয় না যেমন সুলাইমান জুমল وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তা-ই উল্লে­খ করেছেন। সুতরাং এখানেও একই অর্থ প্রকাশ পেল অর্থাৎ যে পশু যবেহ করার সময় গায়রুল্লাহর নাম নেয়া হয়, সেটা হারাম। যে কোন অবস্থায় তাদের সেই অর্থ অগ্রাহ্য।</div><div><br></div><div><br></div><div>২য় আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>ফিকহ শাস্ত্রের একটি মাসআলা হচ্ছে: যে পশুকে বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করা হয় কিন্তু যবহের উদ্দেম্যে যদি গায়রুল্লাহর নৈকট্য প্রত্যাশী হয়ে থাকে, তাহলে সেটা হারাম। অনুরূপ গেয়ারবী শরীফ পালনকারীদের নিয়ত হয়ে থাকে গাউছে পাককে সন্তুষ্টকরণ। তাই তাদের যবেহের মধ্যেও গায়রুল্লাহর সান্নিধ্য প্রকাশ পায়। অতএব, যদিওবা বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করা হলো, কিন্তু উপরোক্ত কায়দা অনুসারে হারাম হলে গেল। (এ কায়দার বিশ্লেষণ ৩নং আপত্তির উত্তরে দেয়া হয়েছে।</div><div><br></div><div>উত্তরঃ যবেহ চার প্রকার। প্রথমতঃ কেবল রক্তপাতের উদ্দেশ্যে যবেহ করা এবং মাংসটা আনুষঙ্কিক মাত্র। আর এ রক্তপাতের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা। যেমন কুরবানী, হাদি, আকীকা ও মানতের পশু। এ যবেহটা হচ্ছে ইবাদত এবং এ সবের জন্য সময় ও স্থানের শর্তারোপ করা হয়েছে। যেমন কুরবানী নির্দিস্ট তারিখে করাটাই ইবাদ, এর আগে পিছে নয়, হাদিটা (হজ্বের কুরবানী) হেরম শরীফে করাটা ইবাদতও নয় আবার গুনাহও নয়। যদি বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করে, তাহলে পশুটা হালাল হবে, অন্যথায় হারাম। তৃতীয়তঃ মাংস খাওয়ার উদ্দেশ্যে যবেহগ করা। যেমন বিবাহ, ওলিমা ইত্যাদি বা মাংসা বিক্রি করার জন্য যবেহ করা। অনুরূপ বুযর্গানে কিরামের ফাতিহা উপলক্ষে যবেহটা হয়ে থাকে মাংসের জন্য। অর্থাৎ মাংসটা মূল উদ্দেশ্য। এখানেও যদি বিসমিল্লাহ বলে যবেহগ করা হয়, তাহলে হালাল, অন্যথায় হারাম। চতুর্থতঃ খোদা ভিন্ন অন্যকে রাজি করানোর আশায় কেবল রক্তপাত করার নিয়তে যবেহ করা এবং মাংস খাওয়ার কোন উদ্দেশ্য থাকে না। যেমন হিন্দুরা দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে পশু বলি দিয়ে থাকে এবং সে ক্ষেত্রে রক্তপাতের মাধ্যমে দেবতাকে তুষ্ট করাটাই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। এ ধরনের পশু বিসমিল্লাহ বলে যবেহ করলেও হারাম। তবে শর্ত হলো বলীর নিয়ত যবেহকারীর হলে, যবেহ কর্তার (মালিক) নয়। তবে শর্ত উত্থাপিত ফিকহের সেই মাসআলার এটাই বোছানো হয়েছে।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ কুরআন করীম ইরশাদ ফরমান:</div><div><br></div><div>وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِ</div><div><br></div><div>ওই পশু যেটা দেবতার উদ্দেশ্যে যবেহ করা হবে, সেটা হারাম। ৩৯১</div><div><br></div><div>➥391. সূূরা মায়েদা, আয়াত নং-৩।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ আল্লামা সুলাইমান জুমুল এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বলেছেন:</div><div><br></div><div>اى ما قصد بذبحه النصب ولم يذكر اسمها عند ذبحه بل قصد تعظيمها بذبحه فعلى بمعنى اللام فليس هذا مكررا مع ما سبق اذ ذاك فيما ذكر عند ذبحه اسم الصنم وهذا فيما قصد بذبحه تعظيم الصنم من غير ذكره</div><div><br></div><div>অর্থাৎ ওই পশুও হারাম যেটার যবেহ দ্বারা দেবতা তুষ্ট করাই মকসুদ যদিওবা ওটা যবেহের সময় দেবতার নাম নেয়া হয়নি কিন্তু দেবতার সম্মানের জন্য করা হয়েছে। আয়াতে على ব্যবহৃত হয়েছে لام এর অর্থে। সুতরাং এ আয়াত আগের আয়াতের পুনরাবৃত্তি নয়। কেননা ওই আয়াতে ما أُهِلَّ দ্বারা ওটাই বোঝানো হয়েছে যেটার উপর দেবতাদের নাম নেয়া হবে আর এ আয়াত দ্বারা সেই পশুকে বোহঝানো হযেছে যার যবেহ দ্বারা দেবতার নাম না নিয়ে কেবল সম্মান করাই উদ্দেশ্য।</div><div><br></div><div><br></div><div>সুবহানাল্লাহ! কি উত্তম ব্যাখ্যা দিয়েছেন: যেটা দেবতার নামে যবেহ করা হয় সেটা ما أُهِلَّ এর অন্তর্ভূক্ত এবং যেটার যবেহ দ্বারা গায়রুল্লাহর সম্মান করা উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, সেটা وَمَا ذُبِحَ عَلَى النُّصُبِএর অন্তর্ভূক্ত। কতেক ফকীহ উভয় ধরনের যবেহকে ما أُهِلَّ দ্বারা প্রমাণ করেছেন। অর্থাৎ তাঁদের ব্যাখ্যা হলো وَمَا ذُبِحَ لتعظيم لِغَيْرِ اللَّهِ</div><div><br></div><div> যেটা গায়রুল্লাহর সম্মানার্থে যবেহ করা হয়েচে। দুরুল মুখতারেও তাই বর্ণিত আছে। মোট কথা হলো পশু হারাম হওয়ার পিছনে দুটি কারণ রয়েছে: এক যবেহ করার সময় গায়রুল্লাহর নাম নেয়া, দুই গায়রুল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য পশুর রক্তপাত করা। উভয়ক্ষেত্রেই মূলতঃ মাংস উদ্দেশ্য নয়; গায়রুল্লাহর সান্নিধ্যই কাম্য। একেই ফকীহগণ হারাম বলেন। কিন্তু গেয়ারবী ও ফাতিহার পশু উপরে উল্লে­খিত তৃতীয় প্রকারের যবেহেরই অন্তর্ভূক্ত, চতুর্থ প্রকারের নয়। কেননা গেয়াবী শরীফ উদযাপনকারীদের উদ্দেশ্য এটাই হয়ে থাকে যে পশুর মাংসের খাবার তৈরী করার আসল উদ্দেশ্য। তাই হারাম হতে পারে না। এ পার্থক্যটা স্মরণ রাখা দরকার। কতেক দেওবন্দী বলে যে, গেয়ারবী শরীফ উদযাপনকারীদের উদ্দেশ্য মাংস নয় কেননা এটা লক্ষ্য করা গেছে যে ওদেরকে মনোনীত পশুর পরিবর্তে যদি ফাতিহার জন্য অতিরিক্ত মাংস বা অন্য পশুর প্রস্তাব দেয়া হয়, এতে ওরা রাজি নয়। সত্যেই যদি মাংস তাদের উদ্দেশ্য হয়, তাহলে এই ধরনের প্রস্তাবে নিশ্চয়ই রাজি হবার কথা। তাই বোঝা গেল যে গাউছে পাকের নামে রক্তপাত করাটাই মূল উদ্দেশ্য। আসলে এটা ভুল ধারণা। নিয়তকারী কোন ধরনের নিয়ত করেছ একমাত্র সেই জানতে পারে। প্রমাণ ছাড়া মুসলমানের উপর খারাপ ধারণা পোষণ করা হারাম।</div><div><br></div><div> إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ আর পশু পরিবর্তনের বেলায় অনীহা প্রকাশ করার কারণ হচ্ছে সম্মান বোধ। তাঁদের ধারণা হলো যেটাকে তারা যত্ম করে মোটা সোটা করেছে, সেটার সাথে অন্য কোনটার তুলনা হয় না। কেউ কেউ ওলিমার জন্য পশু পালন করে। তারাও এর পরিবর্তে অন্য মাংস গ্রহণ করা পছন্দ করে না কতেক লোক ফাতিহার জন্য নতুন বাসন ব্যবহার করে এবং ওগুলোর বাদলাবদলী পছন্দ করে না। আবার অনেকই মনে করে যে পশুর দ্বারা ফাতিহার নিয়তক করা হয়, সেটা বদলানো জাযেয় নয়। যেমন কুরবানীর পশু। অবশ্য এ রকম ধারণা ভুল। কিন্তু ভুল ধারণার জন্য যবেহকৃত পশু হারাম হতে পারে না। সম্মান ও বলীদান এক কথা নয়। সারকথা হলো যবেহ দ্বারা যদি গায়রুল্লাহকে রাজি করানো মকসুদ হয়ে থাকে, তাহলে হারাম আর যদি দাওয়াত বা ফাতিহার জন্য যবেহ করা হয় এবং ফাতিহা ও দাওয়াত কাউকে রাজি করানোর জন্য হয়, তাহলে হালাল। কোন আল্লাহর বান্দাকে রাজি করানোর অর্থ ওর ইবাদত নয়।</div><div><br></div><div><br></div><div>৩নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>✧ দুর্রুল মুখতার ও আলমগীরীর الذبح শীর্ষক অধ্যায়ে এবং ইমাম নববীর শরহে মুসলিমে বর্ণিত আছে:</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>(ذُبِحَ لِقُدُومِ الْأَمِيرِ) وَنَحْوِهِ كَوَاحِدٍ مِنْ الْعُظَمَاءِ (يَحْرُمُ) لِأَنَّهُ أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ (وَلَوْ) وَصْلِيَّةٌ (ذَكَرَ اسْمَ اللَّهِ تَعَالَى)</div><div><br></div><div>বাদশা বা কোন বড় লোকের আগমন উপলক্ষে পশু যবেহ করা হারাম যদিওবা আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়। কেননা ওটার ক্ষেত্রে গায়রুল্লাহর নাম নেয়া হয়েছে। ৩৯২</div><div><br></div><div>➥392. হাসকাফী, দুররুল মুখতার, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯৭-১৯৮, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ৬/৩০৯ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>এর থেকে বোঝা গেল, কারো রেজামন্দির জন্য পশু যবেহ করা হারাম যদিওবা আল্লাহর নামে যবেহ করা হয়। সুতরাং গেয়ারবীর পশু যে কোন অবস্থায় হারাম, কারণ এটা গাউছে পাকের রেজামন্দির জন্যই করা হয়। তাই আল্লাহর নামে যবেহ করলেও হারাম।</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ এর পরিপূর্ণ উত্তর ২নং আপত্তির উত্তরে দেয়া হয়েছে যে বাদশাহ বা অন্য কারো নামে বলীদানের নিয়তে যদি যবেহ করা হয়, তাহলে সেই পশু হারাম। আর বলীদানের অর্থ হচ্ছে রক্তপাতের দ্বারা ওকে রাজি করানোই প্রধান উদ্দেশ্য, মাংসা আনুষঙ্কিক মাত্র। কিন্তু বাদশাহ ও অন্যান্যদের দাওয়াতের উদ্দেশ্য পশু যবেহ করা হলে সেটা হালাল যদিওবা দাওয়াতের দ্বারা বাদশাহ বা অন্যান্যদের সন্তুষ্টি অভিপ্রায় হয়ে থাকে।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ দুর্রুল মুখতারের কিতাবুল যবায়েহের সেই একই জায়গায় বর্ণিত আছে:</div><div><br></div><div>(وَلَوْ) ذُبِحَ (لِلضَّيْفِ) (لَا) يَحْرُمُ لِأَنَّهُ سُنَّةُ الْخَلِيلِ وَإِكْرَامُ الضَّيْفِ إكْرَامُ اللَّهِ تَعَالَى. وَالْفَارِقُ أَنَّهُ إنْ قَدَّمَهَا لِيَأْكُلَ مِنْهَا كَانَ الذَّبْحُ لِلَّهِ وَالْمَنْفَعَةُ لِلضَّيْفِ أَوْ لِلْوَلِيمَةِ أَوْ لِلرِّبْحِ، وَإِنْ لَمْ يُقَدِّمْهَا لِيَأْكُلَ مِنْهَا بَلْ يَدْفَعُهَا لِغَيْرِهِ كَانَ لِتَعْظِيمِ غَيْرِ اللَّهِ فَتَحْرُمُ</div><div><br></div><div>-‘‘যবেহটা যদি মেহমানের জন্য হয়, তাহলে হারাম নয়। কেননা এটা হযরত খলিলুল্লাহর তরীকা আর মেহমানের সম্মান মানে আল্লাহরই সম্মান। পার্থক্যের কারণটা হলো যদি এর মাংস মেহমানের সামনে রাখা হয় খাবার জন্য তাহলে যবেহটা হবে আল্লাহর জন্য এবং মাংসটা হবে মেহমানের জন্য অথবা মেহমানের সামনে রাখা হলো না, অর্থাৎ খেতে দিল না বরং এমনি কাউকে দিয়ে দিল তাহলে এ সম্মানটা গায়রুল্লাহর জন্য হলো সুতরাং এটা হারাম।’’ ৩৯৩</div><div><br></div><div>➥393. হাসকাফী, দুররুল মুখতার, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯৭-১৯৮, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ৬/৩১০ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>এতে পরিষ্কার বোঝা গেল মাংস উদ্দেশ্য হওয়ার দ্বারা ইবাদত ও গাইর ইবাদতের মধ্যে পার্থক্য প্রকাশ পায়।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ একই জায়গায় দুর্রুল মুখতারে আর বর্ণিত আছে:</div><div><br></div><div>وَفِي صَيْدِ الْمُنْيَةِ أَنَّهُ يُكْرَهُ وَلَا يَكْفُرُ لِأَنَّا لَا نُسِيءُ الظَّنَّ بِالْمُسْلِمِ أَنَّهُ يَتَقَرَّبُ إلَى الْآدَمِيِّ بِهَذَا النَّحْرِ</div><div><br></div><div>-এ রকম করা মাকরুহ। এর দ্বারা যবেহকারী কাফির হবে না। কেননা আমরা মুসলমানের প্রতি বদগুমান করি না যে, সে ওই যবেহর দ্বারা কোন ব্যক্তির ইবাদত করে।’’৩৯৪</div><div><br></div><div>➥394. হাসকাফী, দুররুল মুখতার, খণ্ড-৫, পৃষ্ঠা-১৯৭-১৯৮, ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, ৬/৩১০ পৃ:</div><div><br></div><div><br></div><div>প্রতীয়মান হলো যে মুসলমানের প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করা অপরাদ। উক্ত দুর্রুল মুখতারের টীকায় এ প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয়েছে। তবে যতটুকু আলোচনা করা হয়েছে, তা যথেষ্ট মনে করি।</div><div><br></div><div><br></div><div>✧ তফসীরে রূহুল বয়ানে ষষ্ঠ পারায় আয়াত وَمَا أُهِلَّ لِغَيْرِ اللَّهِ এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে:</div><div><br></div><div>ما يذبح عند استقبال السلطان تقربا اليه افتى اهل بخارى بتحريمه لانه مما اهل به لغير الله. وقال الرافعي هذا غير محرم لانهم انما يذبحونه استبشارا بقدومه فهو كذبح العقيقة لولادة المولود ومثل هذا لا يوجب التحريم كذا فى شرح المشارق</div><div><br></div><div>-যে পশু বাদশাহের আগমন উপলক্ষে তার সান্নিধ্য লাভের জন্য যবেহ করা হয়, তাহলে বুখরা এর হারাম হওয়ার ফাতওয়া দিয়েছেন কিন্তু ইমাম শাফেই বলেছেন সে পশু হারাম হবে না, কেননা ওই সমস্ত লোকেরা বাদশাহের আগমনে খুশীতে যবেহ করে। যেমন শিশুর আকিকা, জন্মের খুশীতে ও এরকম অন্যান্য কাজে যবেহকৃত পশু হারাম হবে না। অনুরূপ শরহে মশারেকেও বর্নিত আছে।’’ ৩৯৫</div><div><br></div><div>➥395. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩৪০।</div><div><br></div><div><br></div><div>বোঝা গেল যে ওই সময় এটা সম্ভবতঃ প্রচলন ছিল যে বাদশার আগমনে ঘরে ঘরে পশু যবেহ করা হতো। আজকাল অবশ্য এ প্রথা নেই। তাই যেটা বাদশার ইবাদতের নিয়তে যবেহ করে সেটা হারাম এবং যেটা খুশী প্রকাশ করার জন্য জনগণকে দাওয়াতের নিয়তে যবেহ করা, সেটা হালাল। ফাতওয়ার এ পার্থক্যটা হলো যুগের প্রচলিত প্রথার কারণে। কিন্তু গিয়ারবী শরীফে পশু যবেহের সাথে বাদশার আগমন উপলক্ষে পশু যবেহের কোন সাদৃশ্য নেই।</div><div><br></div><div><br></div><div>৪নং আপত্তিঃ </div><div><br></div><div><br></div><div>গেয়ারবী শরীফের নিয়তে গরু-ছাগল পালনকারী হচ্ছে ধর্মদ্রোহী। কেননা গায়রুল্লাহর নামে মানত করা কুফরী আর কাফিক ও ধর্মদ্রোহীর যবেহকৃত পশু হারাম। সুতরাং গেয়ারবী শরীফের অনুসারীদের যবেহকৃত পশু হারাম। শামীর দ্বিতীয় খন্ড কিতাবুস সাওমের نذر الاموت শীর্ষক আলোচনায় বর্ণিত আছে:</div><div><br></div><div>وَالنَّذْرُ لِلْمَخْلُوقِ لَا يَجُوزُ لِأَنَّهُ عِبَادَةٌ وَالْعِبَادَةُ لَا تَكُونُ لِمَخْلُوقٍ</div><div><br></div><div>-মাখলুকের নামে মানত জায়েয নেই। কেননা এটা ইবাদত আর ইবাদত মাখলুকের জন্য হয় না।’’ ৩৯৬</div><div><br></div><div>➥396. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৪৩৯।</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ এর বিস্তারিত উত্তর আমি এর আগে দিয়েছি যে এ মানত শরীয়তের পরিভাষায় ব্যবহৃত মানত নয়, এটা প্রচলিত অর্থে ব্যবহৃত মানত অর্থাৎ হাদিয়া, নযরানা বা মানত আল্লাহর নামে এবং এটা হচ্ছে উপলক্ষ। এতে কোনটাই শিরক নয়। শিক্ষককে বলা হয়: এ টাকা আপনার নযরানা অর্থাৎ হাদিয়া।</div><div><br></div><div><br></div>

আওলিয়া কিরামের নামে পালিত পশু সম্পর্কিত আপত্তিসমূহ ও এর জবাব

দ্বিতীয় অধ্যায় আওলিয়া কিরামের নামে পালিত পশু সম্পর্কিত আপত্তিসমূহ ও এর জবাব ১ নং আপত্তিঃ  وَما أُهِلَّ بِهِ لِغَيْرِ اللَّهِ এ আয়াতে أُهِلَّ...

Read more »

উচ্চস্বরে যিকর করা প্রসঙ্গে আপত্তি সমূহের জবাব

<div>দ্বিতীয় অধ্যায়</div><div><br></div><div>উচ্চস্বরে যিকর করা প্রসঙ্গে আপত্তি সমূহের জবাব</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>ভিন্নমতাবলম্বীগণ এ বিষয়ে প্রমাণিক ও যৌক্তিক-এ দু’ধরনের আপত্তি উত্থাপন করে থাকে। আমি প্রথমে তাদের প্রমাণিক আপত্তিসমূহের জবাব দিচ্ছি।</div><div><br></div><div><br></div><div>১নং আপত্তি- কালামে পাকে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَاذْكُرْ رَبَّكَ فِي نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَخِيفَةً وَدُونَ الْجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْآصَالِ.</div><div><br></div><div><br></div><div>-‘‘তোমার প্রতিপালককে মনে মনে সবিনয় ও সশংকচিত্তে প্রত্যুষে ও সন্ধ্যায় নীরবে স্মরণ কর।’’  ৩৪০</div><div><br></div><div>{সূরা আ’রাফ, আয়াত নং-২০৫।}</div><div><br></div><div><br></div><div>এ আয়াত থেকে বোঝা গেল খোদার যিকর মনে মনে হওয়া উচিৎ, উচ্চস্বরে নিষেধ।</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তর: এর কয়েকটি জবাব আছে। প্রথমতঃ এ আয়াতে নামাযরত অবস্থায় যিকরের কথা বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ অনুচ্চস্বরে পঠিত নামায সমূহে কির’আত বা মুক্তাদীদের তাশাহুদ ইত্যাদি মনে মনে পড়া অথবা ইমাম ছাহেব কর্তৃক প্রয়োজনের অতিরিক্ত আওয়াজ বের না করা। যেমন</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ তফসীরে রূহুল বয়ানে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে উলি­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>فمن أم فى صلاة الجهر ينبغى له ان لا يجهر جهرا شديدا بل يقتصر على قدر ما يسمعه من خلفه قال فى الكشف لا يجهر فوق حاجة الناس والا فهو مسيىء.</div><div><br></div><div><br></div><div>যে ব্যক্তি উচ্চস্বরে পঠিত নামাযে ইমামতি করে, সে যেন অতি উচ্চস্বরে কিরআত (সূরা) না পড়ে। বরং পিছনের লোকেরা শুনতে পারে মত পড়লেই যথেষ্ট। কাশ্ফ কিতাবে বর্ণিত আছে যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত যেন চীৎকার না করে, অন্যথায়, গুনাহগার হবে।  ৩৪১</div><div><br></div><div>{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩০৬।}</div><div><br></div><div><br><div class="separator" style="clear: both; text-align: center;"><a href="https://lh3.googleusercontent.com/-wExxJmjCmAs/Z2L7nYG3zKI/AAAAAAAAQIU/QTIVQW2Pt0Q-1qn4kfNaGP3AMlLac5s5ACNcBGAsYHQ/s1600/1000007481.jpg" imageanchor="1" style="margin-left: 1em; margin-right: 1em;"><img border="0" data-original-height="500" data-original-width="500" height="320" loading="lazy" src="https://lh3.googleusercontent.com/-wExxJmjCmAs/Z2L7nYG3zKI/AAAAAAAAQIU/QTIVQW2Pt0Q-1qn4kfNaGP3AMlLac5s5ACNcBGAsYHQ/s1600-rw/1000007481.jpg" width="320"></a></div><br></div><div>❏ তফসীরে কবীরে এ আয়াত প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَالْمُرَادُ مِنْهُ أَنْ يَقَعَ ذَلِكَ الذِّكْرُ بِحَيْثُ يَكُونُ مُتَوَسِّطًا بَيْنَ الْجَهْرِ وَالْمُخَافَتَةِ كَمَا قَالَ تَعَالَى: وَلا تَجْهَرْ.</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থাৎ এর ভাবার্থ হলো সরব ও নীরবের মাঝামাঝি আল্লাহর যিকর করা উচিৎ।  ৩৪২</div><div><br></div><div>{ইমাম রাজী, তাফসিরে কাবীর, ১৫/৪৪৪ পৃষ্ঠা}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ তাফসীরে খাযেনে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>قال ابن عباس: يعني بالذكر القرآن في الصلاة يريد اقرأ سرا في نفسك.</div><div><br></div><div><br></div><div>-হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) বলেন যে, এ আয়াতে যিকর বলতে নামাযে কুরআন তিলাওয়াতকে বোঝানো হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মনে মনে কিরআত পড়েন।  ৩৪৩</div><div><br></div><div>{ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৭, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>স্বয়ং কুরআন করীম অন্যত্র এ আয়াতের ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَلَا تَجْهَرْ بِصَلَاتِكَ وَلَا تُخَافِتْ بِهَا وَابْتَغِ بَيْنَ ذَلِكَ سَبِيلًا.</div><div><br></div><div><br></div><div>-নামায অতি উচ্চেস্বরেও পড়ো না, আবার অতিশয় নিম্নস্বরেও পড়ো না। এ দু'য়ের মধ্যপথ অবলম্বন কর।  ৩৪৪</div><div><br></div><div>{সূরা বানী ইসরাঈল, আয়াত নং-১১০।}</div><div><br></div><div><br></div><div>আমি এ গ্রন্থের পেশ কালামে উলে­খ করেছি, কুরআনের সাহায্যে কুরআনের তাফ্সীরের স্থান সর্বঊর্ধ্বে। দ্বিতীয়তঃ এ আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে যিকর যেন কেবল মৌখিক না হয় বরং কথার সাথে কলবও যেন জড়িত থাকে। তা না হ'লে যিকর নিস্ফল।</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ তফ্সীরে খাযেনে এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وقيل المراد بالذكر في النفس أن يستحضر في قلبه عظمة المذكور جل جلاله.</div><div><br></div><div><br></div><div>-বলা হয়েছে যে, মনে মনে যিকর করার অর্থ হচ্ছে অন্তরে খোদায়ে কুদ্দুসের মহত্ব বিরাজমান থাকা।  ৩৪৫</div><div><br></div><div>{ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৫০।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ একই তফসীরে আরও উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وإذا كان الذكر باللسان عاريا عن ذكر القلب كان عديم الفائدة لأن فائدة الذكر حضور القلب واستشعاره عظمة المذكور عز وجل.</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থাৎ যদি মৌখিক যিকর আত্মিক য্কির থেকে উদাসীন হয়, তাহলে এর কোন মূল্য নেই। কেননা য্কিরের ফযীলত হচ্ছে আত্মাকে হাযির করা ও খোদার মহত্বকে অন্তরে স্থান দেয়া।   ৩৪৬</div><div><br></div><div>{ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৮৭, দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>অথবা এ আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছে কোন কোন সময় আত্মিক যিকর উচ্চেস্বরের যিকর থেকে উত্তম। অর্থাৎ আয়াতের আদেশটা হচ্ছে امر استحبابى পছন্দমূলক আদেশ আর পছন্দটাও সব সময় এবং সব দিক দিয়ে নয় বরং কেবল কতেক অবস্থার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ জন্য এ আয়াতটা সেই আয়াত</div><div><br></div><div><br></div><div>وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا.</div><div><br></div><div><br></div><div>যখন কুরআন তিলাওয়াত হয়, তখন মনোযোগ সহকারে শোন  ৩৪৭</div><div><br></div><div>{➥347. সূরা আ’রাফ, আয়াত নং-২০৪।}</div><div><br></div><div><br></div><div>এর পরে বর্ণিত হয়েছে। এ আয়াত দু’টা একত্রিত করলে বোঝা যায় যে, যিকরে ইলাহী কোন সময় উচ্চস্বরে এবং কোন সময় নিম্নস্বরে করা চাই। যখন উচ্চস্বরে যিকর হয় তখন নিশ্চুপভাবে শুনুন আর যখন নীরবে হয়, তখন এতে মনোনিবেশ করুন। উচ্চস্বরে যিকরে যদি লৌকিকতার ভয় থাকে, তাহলে নীরবে করা উত্তম। আর যদি এ উদ্দেশ্যে হয় যে শয়তান দমন হবে, কলব সজাগ হবে, ঘুমন্ত ব্যক্তি জাগ্রত হবে এবং সমস্ত বস্তু কিয়ামতের দিন যিকর কারীর ঈমানের সাক্ষ্য দিবে, তখন উচ্চস্বরে যিকর করা উত্তম।        </div><div><br></div><div><br></div><div>❏ তফসীরে রূহুল বয়ানে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে আরও উলে­খ আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَاذْكُرْ يا محمد رَبَّكَ..... فِي نَفْسِكَ وهو الذكر بالكلام الخفي فان الإخفاء ادخل فى الإخلاص واقرب من الاجابة وهذا الذكر يعم الاذكار كلها من القراءة والدعاء وغيرها.</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থাৎ এর দ্বারা নীরবে যিকর করাকে বোঝানো হয়েছে। কেননা নীরবের মধ্যে আন্তরিকতা এবং কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। এবং এ যিকর সবরকমের যিকর তিলাওয়াত, ও দুআকে অর্ন্তভুক্ত করে।  ৩৪৮</div><div><br></div><div>{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩০৫।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ এ আয়াত প্রসঙ্গে রূহুল বয়ানে আরও উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>بان الإخفاء أفضل حيث خاف الرياء او تأذى المصلون او النائمون والجهر أفضل فى غير ذلك لان العمل فيه اكثر ولان فائدته تتعدى الى السامعين ولانه يوقظ قلب الذاكر ويجمع همه الى الفكر ويصرف سمعه اليه.</div><div><br></div><div><br></div><div>-যেখানে লৌকিকতার ভয় থাকে বা নামাযীদের ও বিশ্রামকারীদের অসুবিধা হয়, সেক্ষেত্রে নীরবে যিকর করা শ্রেয়। এ গুলো ব্যতীত অন্যান্য অবস্থায় উচ্চস্বরে যিকর করা উত্তম। কেননা এতে আমল বেশী এবং এর উপকার শ্রোতারাও ভোগ করে। আর এ জন্য যে উচ্চস্বরে যিকর, যিকরকারীর কলব জাগ্রত করে, চিন্তাধারাকে কেন্দ্রীভূত করে এবং অন্যান্যদেরকে সজাগ করে। ৩৪৯</div><div><br></div><div>{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-৩০৬।}</div><div><br></div><div><br></div><div>২নং আপত্তি- আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div><br></div><div>ادْعُوا رَبَّكُمْ تَضَرُّعًا وَخُفْيَةً إِنَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِينَ.</div><div><br></div><div><br></div><div>-বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের প্রতিপালককে ডাক; তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।  ৩৫০</div><div><br></div><div>{সূরা আ’রাফ, আয়াত নং-৫৫।}</div><div><br></div><div><br></div><div>এর থেকেও প্রমাণিত হলো যে উচ্চেস্বরে যিকর আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয়।</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ এ আয়াতেরও কয়েক রকম ব্যাখ্যা রয়েছে। প্রথমতঃ এ আয়াত খোদার প্রত্যেক যিকরের কথা নয়, কেবল দুআর কথা উলে­খিত আছে এবং বাস্তবিকই দুআ গোপনে করাই উত্তম, যাতে পরিপূর্ণ আন্তরিকতা প্রকাশ পায়।</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ তাফ্সীরে রূহুল বয়ানে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>اى متضرعين متذللين مخفين الدعاء ليكون اقرب الى الاجابة لكون الإخفاء دليل الإخلاص والاحتراز على الرياء.</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থাৎ কান্নাকাটি ও বিনীত সহকারে গোপনে প্রার্থনা কর, যাতে কবুল হয়। কেননা গোপনে দুআ করাটা হচ্ছে আন্তরিকতা ও কপটতাহীনতার প্রমাণ।  ৩৫১</div><div><br></div><div>{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-৩, পৃষ্ঠা-১৭৭।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ একই আয়াতের প্রেক্ষাপটে তফ্সীরে খাযেনে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وقيل: المراد به حقيقة الدعاء هو الصحيح لأن الدعاء هو السؤال والطلب وهو نوع من أنواع العبادة.</div><div><br></div><div><br></div><div>-কারো কারো মতে এর দ্বারা মূলতঃ দুআকেই বোঝানো হয়েছে। এবং এটাই সঠিক, কেননা প্রার্থনা ও কামনা হচ্ছে দুআ এবং এটা এক প্রকার ইবাদত।  ৩৫২</div><div><br></div><div>{ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২১০।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ এ আয়াত প্রসঙ্গে তফসীরে খাযেনে আরও উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>والأدب في الدعاء أن يكون خفيا لهذه الآية قال الحسن بين دعوة السر ودعوة العلانية سبعون ضعفا.</div><div><br></div><div><br></div><div>দুআর নিয়ম হচ্ছে গোপনে করা। এ আয়াতের আলোকের হযরত হাসন (رضي الله عنه) বলেন, গোপনে একটি দুআ প্রকাশ্যে সম্ভব দুআর সমতুল্য।৩৫৩  </div><div><br></div><div>{ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২১০।}</div><div><br></div><div><br></div><div>অথবা এ আয়াতের ব্যাখ্যা এটাও হতে পারে যে কোন কোন অবস্থায় গোপনে যিকর করা ভাল। অর্থাৎ উপরোক্ত আয়াতে ادعوا শব্দ দ্বারা যিকরে ইলাহীর নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং এ নির্দেশটা হচ্ছে পছন্দমাফিক, তাও আবার কতেক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে।</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ এ প্রসঙ্গে তফ্সীরে খাযেনে আরও বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>فذهب بعضهم إلى أن إخفاء الطاعات والعبادات أفضل من إظهارها لهذه الآية ولكونها أبعد عن الرياء وذهب بعضهم إلى أن إظهارها أفضل ليقتدي به الغير فيعمل مثل عمله وتوسط الشيخ محمد بن عبد الحكيم الترمذي فقال: إن كان خائفا على نفسه من الرياء، فالأولى إخفاء العبادات صونا لعمله عن البطلان وإن كان قد بلغ في الصفاء وقوة اليقين إلى التمكين بحيث صار مباينا شائبة الرياء كأن الأولى في حقه الإظهار لتحصل فائدة الاقتداء به وذهب بعضهم إلى أن إظهار العبادات المفروضات أفضل من إخفائها.</div><div><br></div><div>-এ আয়াতের পরিপ্রেক্ষিতে কতেক তফসীরকারক ইবাদত সমূহ প্রকাশ্যে করার চেয়ে গোপনে করাকে ভাল বলেছেন। কেননা এতে রিয়ার সম্ভাবনা নেই। এবং কেউ কেউ বলেন প্রকাশ্যে করাটা উত্তম যাতে একে অনুসরণ করে অন্যান্যরা ইবাদত করে। আবার কেউ কেউ বলেন ফরয ইবাদতসমূহ গোপনে করার চেয়ে প্রকাশ্যে করাটা ভাল।  ৩৫৪</div><div><br></div><div>{ইমাম খাযেন, তাফসিরে খাযেন, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২১১।}</div><div><br></div><div><br></div><div>৩ নং আপত্তিঃ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ ফরমান-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ.</div><div><br></div><div><br></div><div>-হে মাহবুব, আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্বন্ধে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে, আমি তো নিকটেই। আহবানকারী যখন আমাকে আহবান করে, আমি তার আহবানে সাড়া নেই।  ৩৫৫</div><div><br></div><div>{সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১৮৬।}</div><div><br></div><div><br></div><div>এ আয়াতে করীমা থেকে বোঝা গেল, আল্লাহ তাআলা আমাদের নিকটেই আছেন, আমাদের মনের চিন্তাধারা ও অনুচ্চ কথাবার্তা শোনেন। তাই উচ্চস্বরে আহবান করাটা অনর্থক।    </div><div><br></div><div>               </div><div><br></div><div>উত্তর- এ আয়াতে করীমায় ওসব লোকদের ধারণাকে বাতিল বলা হয়েছে, যারা মনে করে যে আল্লাহ আমাদের থেকে অনেক দূরে এবং উচ্চেস্বরে যিকর না করলে তিনি শুনতে পান না। এটা নিছক অজ্ঞতা মাত্র। উচ্চস্বরে যিকর করা হয় অমনোযোগী আত্মাকে মনোযোগী করার জন্য।</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ তফসীরে রূহুল বয়ানে এ আয়াতের প্রেক্ষাপটে উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وسبب النزول ما روى ان أعرابيا قال لرسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم أقريب ربنا فنناجيه أم بعيد فنناديه فقال تعالى.</div><div><br></div><div><br></div><div>-এ আয়াতের শানে নুযুল হচ্ছে জনৈক বেদুঈন হুযুর আলাইহিস সালামের সমীপে আরয করলেন, আল্লাহ তা’আলা কি নিকটে যেন তাঁর কাছে মুনাজাত করা যায়, নাকি দূরে যে তাঁকে ডাকতে হবে? এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা উপরোক্ত আয়াতটি ইরশাদ ফরমান  ৩৫৬</div><div><br></div><div>{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২৯৬।}</div><div><br></div><div><br></div><div>এর থেকে বোঝা গেল যে আল্লাহকে দূরে মনে করে ডাকা পাপ। আর এক রিওয়ায়েত মতে এ আয়াতটি খাইবর যুদ্ধের সময় নাযিল হয়েছে যখন সাহাবায়ে কিরাম নারায়ে তকবীর দিতে চেয়েছিলেন। হুযুর আলাইহিস সালামের ইচ্ছা ছিল যে ওখানে গোপনে প্রবেশ করা, যাতে কাফিরগণ টের না পায়। যেমন</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ তফসীরে রুহুল বয়ানে উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>قال ابو موسى الأشعري لما توجه رسول الله صلى الله تعالى عليه وسلم الى خيبر اشرف الناس على واد فرفعوا أصواتهم بالتكبير لا اله الا الله والله اكبر فقال صلى الله عليه وسلم (اربعوا على أنفسكم انكم لا تدعون أصم ولا غائبا.</div><div><br></div><div><br></div><div>-যখন হুযুর ﷺ খাইবরের পথে ধাবিত হলেন, সাথীরা একটি উঁচু পাহাড়ে আরোহণ করে উচ্চেস্বরে নারায়ে তাকবীর দিলেন, তখন হুযুর ﷺ ইরশাদ ফরমান-নিজেদের প্রতি একটু সহানুভূতি কর। তোমরা তো কোন বধির বা দূরের কাউকে ডাকছ না।  ৩৫৭</div><div><br></div><div>{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২৯৬।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ রূহুল বয়ানে আরও বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وهذا باعتبار المشارب والمقامات واللائق بحال اهل الغفلات الجهر لقلع الخواطر.</div><div><br></div><div><br></div><div>-এটা অবস্থা ও স্থানের পরিপ্রেক্ষিতে বলা হয়েছে। খারাপ চিন্তাধারাকে দূরীভূত করার জন্য অমনোযোগী লোকেদের অবস্থানুযায়ী উচ্চস্বরে যিকর করা যায়। ৩৫৮</div><div><br></div><div>{আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী, তাফসিরে রুহুল বায়ান, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২৯৬।}</div><div><br></div><div><br></div><div>৪ নং আপত্তি- মিশকাত শরীফের কিতাবুল আসমা بَاب ثَوَابُ التَّسْبِيحِ وَالتَّحْمِيدِ অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>فَجَعَلَ النَّاسُ يَجْهَرُونَ بِالتَّكْبِيرِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا أَيُّهَا النَّاسُ ارْبَعُوا عَلَى أَنْفُسِكُمْ إِنَّكُمْ لَا تَدْعُونَ أَصَمَّ وَلَا غَائِبًا إِنَّكُمْ تَدْعُونَ سَمِيعًا بَصِيرًا وَهُوَ مَعَكُمْ وَالَّذِي تَدْعُونَهُ أَقْرَبُ إِلَى أَحَدِكُمْ مِنْ عُنُقِ رَاحِلَتِهِ.</div><div><br></div><div><br></div><div>-যখন উচ্চস্বরে তকবীর দিতে লাগলেন, তখন হুযুর ﷺ ইরশাদ ফরমান- হে লোক সকল, নিজেদের জানের প্রতি সহানুভূতি কর। তোমরা তো কোন বধির বা দূরবর্তী কাউকে ডাকছ না তোমরা তো শ্রবণকারী ও অবলোকনকারীকে ডাকছ, আর তিনি তো তোমাদের নিকটেই আছেন এবং যাকে তোমরা ডাকছ, তিনি তো তোমাদের সওযারীর ঘাড়ের থেকেও নিকটতর  ৩৫৯</div><div><br></div><div>{খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ২/৭১৩ পৃ: হা/২৩০৩, ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৪/২০৭৬ পৃ: হা/২৭০৪}</div><div><br></div><div><br></div><div>বোঝা গেল, উচ্চস্বরে যিকর নিষেধ এবং এ ব্যাপারে হুযুর ﷺ অসন্তুষ্ট।</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ এর জবাব ২ নং আপত্তির উত্তরে দেয়া হয়েছে। এ হাদীছটি এক যুদ্ধ যাত্রার প্রাক্কালে বর্ণিত হয়েছে। ওই সময় মুসলিম সৈনিকদের প্রয়োজন ছিল সংগোপনে খাইবরে প্রবেশ করা, যাতে খাইবরের কাফিরেরা যুদ্ধ প্রস্তুতি নিতে না পারে। কিন্তু কতেক লোকের উচ্চস্বরে তকবীর বলাটা অবস্থানুক‚ল্যে ছিল না, তাই বারণ করা হয়েছে। এ হাদীছের শুরু এভাবে ছিল-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَعَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ فَجَعَلَ النَّاسُ يَجْهَرُونَ.</div><div><br></div><div><br></div><div>আমরা হুযুর আলাইহিস সালামের সাথে সফরে ছিলাম। তখন লোকেরা উচ্চস্বরে তকবীর বলছিল ৩৬০</div><div><br></div><div>{খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ২/৭১৩ পৃ: হা/২৩০৩, ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ৪/২০৭৬ পৃ: হা/২৭০৪}</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থ বা মুসলমানদের আসানীর জন্য পরামর্শ স্বরূপ এ রকম বলা হয়েছে। অর্থাৎ তোমরা সফরের কষ্ট ভোগ করছ; এর উপর আবার শ্লোগান দেয়ার কষ্টটাও করছ। এর কী প্রয়োজন আছে?</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ লুমআত গ্রন্থে এ হাদীছের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>فيه اشارة الى ان المنع من الجهر للتيسير والارفاق لا لكون الجهر غير مشروع.</div><div><br></div><div><br></div><div>এ হাদীছে ওই দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে উচ্চেস্বরের এ নিষেধাজ্ঞা কেবল আসানীর জন্য করা হয়েছে। উচ্চস্বর নিষিদ্ধ বলে নয়। ৩৬১</div><div><br></div><div>{শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, লুম’আত, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-২০১।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ আশআতুল লুমআতে এ হাদীছ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>دريں اشارت است كه منع از جهر برائے آسانى ونرمى است نه از جهت نا مشروعيت ذكر جهر وحق آنست ذكر جهر مشروع است بے شبه مگر بعارض ايں رادر رساله اور او اثبات نموديم.</div><div><br></div><div><br></div><div>-এ হাদীছে এ দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে যে উচ্চস্বরের বেলায় নিষেধাজ্ঞা জ্ঞাপন সহজ ও আসানীর জন্য করা হয়েছে; উচ্চেস্বরে যিকর নিষিদ্ধ বলে নয়। এবং হক কথা হলো যে উচ্চস্বরে যিকন নিঃসন্দেহে বৈধ, যদি অন্য কোন কারণ না থাকে। আমি এর প্রমাণ ‘রিসালায়ে আওরায়ে’ দিয়েছি। ৩৬২</div><div><br></div><div>{শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, আশিয়াতুল লুম’আত (ফারসী), খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২৪৩।}</div><div><br></div><div><br></div><div><br></div><div>৫ নং আপত্তিঃ হিদায়া শরীফের প্রথম খণ্ড تكبيرات التشريق শীর্ষক পরিচ্ছেদে উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وأخذ بقول ابن مسعود أخذا بالأقل؛ لأن الجهر بالتكبير بدعة.</div><div><br></div><div><br></div><div>-কুরবানীর ঈদে তকবীর বলার ক্ষেত্রে) ইমাম আবু হানীফা (رضي الله عنه) সৈয়্যদুনা হযরত ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) এর উক্তিকে গ্রহণ করেছেন কম সময় হওয়ার কারণে। কেননা উচ্চেস্বরে তকবীর বলা বিদআত আর বিদআত কম হওয়াই ভাল।  ৩৬৩</div><div><br></div><div>{মীরগীনানী, হেদায়া, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৭৫, আইনী, বেনায়া শারহুল হেদায়া, ৩/১২৭ পৃ:, দারুল কুতব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>ইমাম আবু হানীফা (رضي الله عنه) এর মতে যিলহজ্ব মাসের নয় তারিখের ফজর থেকে দশ তারিখের আসর পযর্ন্ত প্রত্যেক ফরয নামাজের পর তকবীরে তশরীক বলা চাই। সাহেবাইনের (ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ) মতে নয় তারিখের ফজর থেকে তের তারিখের আসর পযর্ন্ত তকবীর বলা চাই। ইমাম আবু হানীফা সাহবের বক্তব্য হলো উচ্চেস্বরে যিকর করা বিদআত।</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ হিদায়ার সেই পরিচ্ছেদে আরও উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>ولأن الجهر بالتكبير خلاف السنة، والشرع ورد به عند استجماع هذه الشرائط.</div><div><br></div><div><br></div><div>-এ জন্যে যে, উচ্চস্বরে তকবীর বলা সুন্নাতের খেলাপ এবং এ সমস্ত শর্তাবলী একত্রিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এ হুকুম দেয়া হয়েছে। ৩৬৪</div><div><br></div><div>{মীরগীনানী, হেদায়া, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১৭৫, আইনী, বেনায়া শারহুল হেদায়া, ৩/১৩৩ পৃ:, দারুল কুতব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ ইমাম আবু হানীফা (رضي الله عنه) ও সাহেবাইনের মধ্যে মতভেদের কারণ হচ্ছে তকবীরে তশরীক ওয়াজিব হওয়া নিয়ে, বৈধতা নিয়ে নয়। অর্থাৎ ইমাম সাহেব (رضي الله عنه) বলেন কেবল দু’দিন আর সাহেবাইন বলেন পাঁচ দিন। ইমাম সাহেব একে বিদআত বা সুন্নাতের খেলাফ বলে ওয়াজিব হওয়াটাকে অস্বীকার করেছেন। আমি এ আলোচ্য বিষয়ের প্রথম অধ্যায়ে ফাতওয়ায়ে শামীর উদ্বৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছি যে স্বয়ং ইমাম সাহেব (رضي الله عنه) কুফাবাসীদেরকে বাজারসমূহ নারায়ে তকবীর বলার অনুমতি দিয়েছেন। বলুন, এ বিদআতের অনুমতি কেন দিলেন?</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ ফাতওয়ায়ে শামীর صلوة العيدين অধ্যায়ে عيد الفطر শীর্ষক আলোচনায় উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَالْخِلَافُ فِي الْأَفْضَلِيَّةِ أَمَّا الْكَرَاهَةُ فَمُنْتَفِيَةٌ عَنْ الطَّرَفَيْنِ.</div><div><br></div><div><br></div><div>অর্থাৎ মত পার্থক্যটা হচ্ছে কেবল আফযল হওয়া নিয়ে; কেউ মাকরূহ বলার পক্ষপাতি নন।  ৩৬৫</div><div><br></div><div>{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৭০, সলাতুল ঈদাইন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ একই জায়গায় শামীতে আরও বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>التَّكْبِيرُ جَهْرًا فِي غَيْرِ أَيَّامِ التَّشْرِيقِ لَا يُسَنُّ إلَّا بِإِزَاءِ الْعَدُوِّ أَوْ اللُّصُوصِ وَقَاسَ عَلَيْهِ بَعْضُهُمْ الْحَرِيقَ وَالْمَخَاوِفَ كُلَّهَا اهـ زَادَ الْقُهُسْتَانِيُّ أَوْ عَلَا شَرَفًا.</div><div><br></div><div><br></div><div>-আইয়ামে তশরীক ব্যতীত অন্যান্য সময় উচ্চস্বরে তকবীর বলা সুন্নাত নয়। অবশ্য দুশমন, বা চোরের মুকাবিলায় এবং এর উপর কিয়াস করে কতেক লোক অগ্নিকাণ্ডে ও অপরাপর সমস্ত ভয়াবহ অবস্থায় তকবীর বলতে বলেছেন। ইমাম কুহসেতানী (رحمة الله) উচ্চ জায়গায় আরোহণ করার সময়ও তকবীর বলতে বলেছেন। ৩৬৬</div><div><br></div><div>{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৭০, সলাতুল ঈদাইন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ দুররুল মুখতারে العيدين শীর্ষক অধ্যায়ে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَهَذَا لِلْخَوَاصِّ أَمَّا الْعَوَامُّ فَلَا يُمْنَعُونَ مِنْ تَكْبِيرٍ وَلَا تَنَفُّلٍ أَصْلًا.</div><div><br></div><div><br></div><div>-এ হুকুমটা হচ্ছে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য। সাধারণ লোকদেরকে তকবীর ও নফল থেকে বাধা দিও না। ৩৬৭</div><div><br></div><div>{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৭১, সলাতুল ঈদাইন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ একই অধ্যায়ে শামীতে বর্ণিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>(قَوْلُهُ: لَا فِي الْبَيْتِ) أَيْ لَا يُسَنُّ وَإِلَّا فَهُوَ ذِكْرٌ مَشْرُوعٌ.</div><div><br></div><div><br></div><div>-‘‘এটা প্রমাণিত হলো যে হিদায়া গ্রন্থের এ সমস্ত আলোচনা সুন্নাত হওয়া নিয়ে, জায়েয হওয়া নিয়ে নয়।’’  ৩৬৮</div><div><br></div><div>{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-১৭৬, সলাতুল ঈদাইন।}</div><div><br></div><div><br></div><div>অধিকন্তু তকবীর তশরীকের ক্ষেত্রে সাহেবাইনের উক্তি অনুযায়ী ফতওয়া দেয়া হয়েছে। আমি প্রথম অধ্যায়ে উলে­খ করেছি যে মওলবী রশীদ আহমদ সাহেবের ফাতওয়া হচ্চে উচ্চস্বরে যিকর জায়েয। আর যদি উলে­খিত আয়াত ও হাদীছসমূহের এরূপ ব্যাখ্যা করা না হয়, তাহলে এগুলো তাদেরও বিপরীত হবে। কেননা তারাও কতেক যিকর উচ্চেস্বরে করে থাকে। যেমন আযান, কুরবানী ঈদের সময় তকবীরে তশরীক, হজ্বের সময় তলবিয়া (লাব্বাইক), সভার সময় নারায়ে তকবীর ও অমুখ সাহেব জিন্দাবাদ ইত্যাদি বলা। কারণ উপরোক্ত দলীল সমূহ তো উচ্চস্বরে যিকরকে সাধারণভাবে নিষেধ করে, আর একক হাদীছ দ্বারা কুরআনের আয়াতে শর্তারোপ করা জায়েয নেই। সুতরাং এটা বলার কোন অবকাশ নেই যে এ সমস্ত জায়গায় উচ্চস্বরে যিকর করার কথা যেহেতু হাদীছ শরীফে উলে­খিত আছে, তাই জায়েয। হাদীছের দ্বারা কুরআনের আয়াতের মধ্যে বাধা সৃষ্টি করা জায়েয নেই।</div><div><br></div><div><br></div><div>৬ নং আপত্তিঃ ফাত্ওয়ায়ে বযাযিয়ার ৩৭৮ পৃষ্ঠায় উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>عَنْ فَتَاوَى الْقَاضِي أَنَّهُ حَرَامٌ لِمَا صَحَّ عَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ أَنَّهُ أَخْرَجَ جَمَاعَةً مِنْ الْمَسْجِدِ يُهَلِّلُونَ وَيُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - جَهْرًا وَقَالَ لَهُمْ " مَا أَرَاكُمْ إلَّا مُبْتَدِعِينَ.</div><div><br></div><div><br></div><div>-‘‘ফাতওয়ায়ে কাযী খাঁ থেকে উদ্বৃত করা হয়েছে যে উচ্চস্বরে যিকর করা হারাম। কেননা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মসউদ থেকে বিশুদ্ধ রেওয়ায়েত দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে তিনি একদল লোককে মসজিদ থেকে কেবল এজন্যই বের করে দিয়েছেন, তারা উচ্চস্বরে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ও হুযুর (ﷺ) এর প্রতি দরূদ পাঠ করছিল এবং বলেছেন আমি তোমাদেরকে বিদআতী মনে করি।’’  ৩৬৯</div><div><br></div><div>{ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৯৮।}</div><div><br></div><div><br></div><div>দেখুন, সদলবলে উচ্চস্বরে যিকর করা ও দরূদ শরীফ পড়া হারাম এবং হযরত ইবনে মসউদ (رضي الله عنه) ওই সমস্ত যিকরকারী ও দরূদ পাঠকারীগণকে বিদআতী বলেছেন বরং তাদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দিয়েছেন। কিন্তু আফসোস! আজকাল উচ্চস্বরে যিকর করতে অনিচ্ছুকদেরকে ওহাবী বলা হয়। এটা কালের বিবর্তনের ফল ঈমান কুফরী হয়ে গেছে আর কুফরী ঈমান (রাহে সুন্নাত)</div><div><br></div><div><br></div><div>উত্তরঃ এর দু’টি উত্তর আছে-ইলযামী ও হাকীকী। ইলযামী উত্তর হলো তাহলে আপনারাও বিদআতী ও হারামের অনুসারী হয়ে গেছেন। কেননা আপনাদের দ্বীনি ও রাজনৈতিক সভা হয়ে থাকে এবং বক্তৃতার সময় নারায়ে তকবীর ও অমুক সাহেব জিন্দাবাদ বলে থাকেন আর এ সব সভা রাতদিন মসজিদসমূহে হয়ে থাকে। কৈ আপনারা তো উচ্চস্বরে যিকরের বেলায় না ফাতওয়া দেন, না ওদেরকে বাধা দেন?</div><div><br></div><div><br></div><div>শুধু উচ্চস্বরে দরূদ শরীফ পড়াটা হারাম, অথচ আপনাদের সভা সমিতির শ্লোগান ইত্যাদি জায়েয।</div><div><br></div><div><br></div><div>হাকীকী উত্তরটা হলো বিরোধিতাকারীরা ফতওয়ায়ে বযাযিয়া ও শামীর যেই অংশটুকু তাদের সমর্থনে উদ্ধৃত করেছে, আর যেই অংশটুকু বাদ দিয়েছে, যদি তা না করে সম্পূর্ণ ইবারতটা উদ্ধৃত করতো, তাহলে এর উত্তর ওই কিতাবদ্বয়েই পাওয়া যেত। দেখুন</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ একই জায়গায় শামীতে উলে­খিত আছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَأَمَّا رَفْعُ الصَّوْتِ بِالذِّكْرِ فَجَائِزٌ كَمَا فِي الْأَذَانِ وَالْخُطْبَةِ وَالْجُمُعَةِ وَالْحَجِّ اهـ وَقَدْ حَرَّرَ الْمَسْأَلَةَ فِي الْخَيْرِيَّةِ وَحَمَلَ مَا فِي فَتَاوَى الْقَاضِي عَلَى الْجَهْرِ الْمُضِرِّ.</div><div><br></div><div><br></div><div>-‘‘উচ্চস্বরে যিকর করা জায়েয, যেমন আযান, জুমার খুতবা ও হজ্বে হয়ে থাকে। এবং  এ মাসআলাটা ফাত্ওয়ায়ে খাইরিয়াতে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর ফাতওয়ায়ে কাজী খাঁয় যেটা বলা হয়েছে, সেটার দ্বারা ক্ষতিকর উচ্চস্বরকে বোঝানো হয়েছে।’’৩৭০</div><div><br></div><div>{➥370. ইমাম ইবনে আবেদীন শামী, ফাতওয়ায়ে শামী, খণ্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৯৮।}</div><div><br></div><div><br></div><div>প্রমাণিত হলো যে, হযরত ইবনে মসউদ (رضي الله عنه) ওই সমস্ত লোকদেরকে বিদআতী বলেছেন, যারা অন্যান্য লোকদের প্রথম জামাতের নামায পড়ার সময় উচ্চেস্বরে যিকর করতো। যার ফলে নামাযের ব্যাঘাত সৃষ্টি হতো বা অন্য কোন ধর্মীয় ক্ষতি ছিল। মোট কথা হলো, ক্ষতিকর যিকর নিষিদ্ধ। এবার ফাতওয়ায়ে বযাযিয়াটাও একটু দেখুন। এখানে হযরত ইবনে মসউদের হাদীছটা উদ্ধৃত করে উত্থাপিত একটি আপত্তির জবাব দেয়া হয়েছে-যদি আপনারা বলেন যে, ফাতওয়ায়েতো আছে উচ্চেস্বরে যিকর থেকে কাউকে বাধা দিও না, যদিও বা তা মসজিদে করা হয়, যাতে কুরআনের সেই আয়াতের বিপরীত হয়ে না যায়-</div><div><br></div><div><br></div><div>وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ مَنَعَ مَسَاجِدَ اللَّهِ أَنْ يُذْكَرَ.</div><div><br></div><div><br></div><div>যে কেউ আল্লাহর মসজিদ সমূহে তাঁর যিকর করতে বাধা প্রদান করে ও ওদের বিনাশ সাধনে প্রয়াসী হয়, তার অপেক্ষা বড় জালিম কে হতে পারে?   ৩৭১</div><div><br></div><div>{➥371. সূরা বাক্বারা, আয়াত নং-১১৪।}</div><div><br></div><div><br></div><div>❏ অথচ হযরত ইবনে মসউদের আমল আপনাদের এ ফাতওয়ার বিপরীত। এর উত্তরে যা বলা হয়েছে, তাতে এও রয়েছে-</div><div><br></div><div><br></div><div>الاخراج عن المسجد يجوز ان يكون لاعتقادهم العبادة فيه وليعلم الناس بانه بدعة والفعل جائز والجائز يجوز ان يكون غير جائز لغرض يلحقه.</div><div><br></div><div><br></div><div>-তাঁর পক্ষে ওদেরকে মসজিদ থেকে বের করা ন্যায়সঙ্গতঃ ছিল। এজন্য যে ওসব লোকের আকীদা হলো-এ উচ্চস্বরটাও ইবাদত এবং লোকদেরকে এটা জানানো যে এ আকীদাটা বিদআত। জায়েয কাজ কোন কোন সময় বৈপত্তিক কারণে নাজায়েয হয়ে যায়।  ৩৭২</div><div>✧ এই ফতওয়ার সেই একই জায়গায় সুস্পষ্ট উল্লে­খিত আছে-</div><div><br></div><div>واما رفع الصوت بالذكر فجائز كما فى الاذان والخطبة والحج</div><div><br></div><div>-উচ্চস্বরে যিকর জায়েয আছে যেমন আযান, খুতবা ও হজ্জে করা হয়ে থাকে।’’</div><div><br></div><div><div>যুক্তি গত আপত্তিসমূহঃ</div><div><br></div><div><br></div><div>বিরোধিতাকারীগণ কেবল তিনটি যুক্তিগত আপত্তি উত্থাপন করে থাকেন। প্রথমটা হচ্ছে খোদা আমাদের সন্নিকটেই আছেন। তাহলে জোরে চিৎকার করার কি প্রয়োজন থাকতে পারে? এর উত্তর ইতিপূর্বে দেয়া হয়েছে যে, উচ্চেস্বরে করাটা আল্লাহকে শোনানোর জন্য নয় বরং অন্যান্য উপকারের জন্য করা হয়, যেমন আযান ইত্যাদি উচ্চস্বরে দেয়া হয়। দ্বিতীয়টা হচ্ছে এ দরুদ শরীফটা হাদীছ থেকে প্রমাণিত নেই তাই নাজায়েয। এর উত্তরও এ কিতাবের অন্যত্র দেয়া হয়েছে যে ওষুধ, খাদ্য ও দুআর ক্ষেত্রে অবিকল অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই বরং যেটা নাজায়েযের পর্যায়ে পড়বে না, সেটা জায়েয।</div><div><br></div><div>        </div><div><br></div><div>এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে বিশেষ করে কোন দরুদ শরীফ আফযল, তা জানতে চাইলে, আমার কিতাব ‘শানে হাবীবুর রহমান’ দেখুন। তৃতীয়টা হচ্ছে নামাযের পর উচ্চস্বরে যে দরুদ শরীফ পাঠ করা হয়, তাতে নামাযীদের অসুবিধা হয়, নামায ভুলে যায়। তাই উচ্চেস্বরে দরুদ পড়া নাজায়েয।</div><div><br></div><div><br></div><div>        উত্তরঃ এর কয়েকটি উত্তর দেখা যায়। প্রথমতঃ এ আপত্তিটা বক্তব্য অনুযায়ী হয়নি। কেননা আপনারা বলেন যে, উচ্চস্বরে যিকর করা একেবারে নিষেধ। কিন্তু আপনাদের এ আপত্তি থেকে প্রতিভাত হয় যে এর দ্বারা যদি কোন নামাযীর অসুবিধা হয় তাহলে নাজায়েয, অন্যথায় জায়েয। তাহলে যখন নামাযরত কেউ না থাকে, তখন জায়েয হওয়া চাই।</div><div><br></div><div><br></div><div>        দ্বিতীয়তঃ পাঞ্জাবে দেখা যায় যে, ফজর নামাযের পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এবং ইশার নামাযের সময় সুন্নাত ও বিতর পড়ার পরে দরূদ শরীফ পাঠ করা হয় এবং ওই সময় সব লোক নামায থেকে ফারেগ হয়ে যায়। তৃতীয়তঃ আমি এ আলোচনার প্রথম অধ্যায়ে এ ধরনের হাদীছসমূহ উপস্থাপন করেছি যে হুযুর আলাইহিস সালাম ও সাহাবায়ে কিরাম নামাযের পর উচ্চস্বরে যিকর করতেন। অধিকন্তু এখনও অনেক মসজিদকে হিফজখানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেখানে ছাত্ররা জোহর ও ইশার নামাযের পর জোরগলায় কুরআন মুখস্থ করে। কোন কোন সময় ইশার নামাযের পর মসজিদে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, যেখানে নারায়ে তকবীর দেয়া হয় ও বক্তৃতা করা হয়। কুরবানী ঈদের সময় ফরয নামাযের জামাত শেষ হবার সাথে সাথে উপস্থিত সকলে উচ্চেস্বরে তিনবার তকবীরে তশরীক বলে। বলুন, এ সব যিকরের ফলে নামাযীর ধ্যান ভঙ্গ হয় কিনা? এবং এটা জায়েয কি নিষেধ? ফকীহগণ যে বলেন উচ্চস্বরে যিকর দ্বারা নামাযীদের অসুবিধা হেতু নিষেধ এর উদ্দেশ্যে সুস্পষ্ট। যখন জামাতের সময় লোকেরা নামাযে মশগুল, তখন যদি উচ্চস্বরে যিকর করা হয়, তা নিশ্চয়  নিষেধ হবে। কিন্তু নামায হয়ে গেলে পর যিকর বা তিলাওয়াত করা জায়েয। কিন্তু কোন ব্যক্তি জামাত শেষ হবার পরে এসে নামায পড়ার বাহানায় সবাইকে যদি নিশ্চুপ করানোর উদ্দেশ্যে বলে-হে নামাযী ভাইসব, হে কুরআন তিলাওয়াত কারীগণ, হে যিকরকারীগণ, হে বক্তাগণ আপনারা সবাই নীরব হোন, আমাকে নামায পড়তে হবে; এ ধরনের কথার প্রতি কর্ণপাত করার কোন প্রয়োজন নেই।</div><div><br></div><div><br></div><div>        জেনে রাখা দরকার যে মসজিদ সমূহে প্রথম জামাতের প্রতি খুবই গুরুত্বারোপ করা হয়। এ প্রসঙ্গে শরীয়তের অনেক মাসায়েল রয়েছে। মক্কা শরীফে কেবল প্রথম জামাতের সময় তওয়াফ বন্ধ থাকে। জামাত শেষ হবার সাথে সাথে তওয়াফ শুরু হয়ে যায়। তওয়াফের সময় দুআর শোরগোল এ রকম হয়ে থাকে যে কানফাটা আওয়াজও শোনা যায় না। বলুন ওখানে এ উচ্চস্বরে যিকরের কি হুকুম হতে পারে? নামাযীদের অসুবিধার কারণে কি তওয়াফ বন্ধ করাবে?</div><div><br></div><div><br></div></div>

উচ্চস্বরে যিকর করা প্রসঙ্গে আপত্তি সমূহের জবাব

দ্বিতীয় অধ্যায় উচ্চস্বরে যিকর করা প্রসঙ্গে আপত্তি সমূহের জবাব          ভিন্নমতাবলম্বীগণ এ বিষয়ে প্রমাণিক ও যৌক্তিক-এ দু’ধরনের আপত্তি উত্থাপন...

Read more »