জামা’আতে নামাযের ফযিলত আছে তা কি মহিলাদের জন্য নয়?

 
জামাআতে নামাযের ফযিলত আছে তা মহিলাদের জন্য নয়? অথবা সকল হাদীস শরীফে ঘর হতে বের হয়ে জামাআতের সাথে নামায আদায়ের ফযিলত বর্ণিত আছে তা মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য কি না?

ঘর হতে বের হয়ে মসজিদে বা ঈদগাহে গিয়ে জামাআতের সাথে নামায আদায়ের ফযিলত সম্পর্কিত যে সকল হাদীস বর্ণিত আছে তা মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য নয় বরং সকল হাদীস শরীফ পুরুষের জন্য প্রযোজ্য। নিম্নে উদাহরণ স্বরূপ কয়েকটি হাদীস তুলে ধরা হল।

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ صَلٰوةُ الرَّجُلِ فِي الْجَمَاعَةِ تُضَعَّفُ عَلٰي صَلاَ تِهٖ فِيْ بَيْتِهٖ وَ فِيْ سُوْقِهٖ خَمْسَةً وَّ عِشْرِيْنَ ضِعْفًا – وَ ذَ الِكَ اَنَّهُ اِذَا تَوَضَّأَ فَاَ حْسَنَ الْوُضُوْءَ ثُمَّ خَرَجَ اِلَي الْمَسْجِدِ لَا يُخْرِجُهُ اِلاَّ الصَّلٰوةُ لَمْ يَخُطَّا خَطْوَةً اِلاَّ رُ فِعَتْ لَهُ بِهَا دَرَجَهٌ وَ حُطَّا عَنْهُ بِهَا خَطِيْئَةٌ – فَاِذَا صَلّٰي لَمْ تَزِلِ الْمَلاَ ئِكَةُ تُصَلِّيْ عَلَيْهِ مَادَامَ فِيْ مُصَلاَّهُ – اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَلَيْهِ اَللّٰهُمَّ ارْحَمُ وَ لَايَزَالُ اَحَدُكُمْ فِيْ صَلَاةٍ مَاا نْتَظَرَ الصَّلٰوةَ

[হযরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন- জামাআতের সহিত পুরুষের নামায একাকি তার বাড়িতে ও বাজারে পড়ার চেয়ে পঁচিশ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। এটা এজন্য যে, যখন সে অজু করে উত্তম রূপে অজু করে। অতঃপর যখন সে মসজিদের দিকে বের হয় একমাত্র নামাজের জন্যই বের হয়। তার প্রতিটি পদেই তার একেকটি মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয় এবং এর দ্বারা তার একেকটি অপরাধ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

অতঃপর যখন সে নামায আদায় করে ফেরেস্তাগণ তার জন্য দোয়া করতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজের স্থানে অবস্থান করেন। ফেরেস্তাগণ তার জন্য এ বলে দোয়া করেন- হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তার উপর রহমত বর্ষণ করুন। আর তোমাদের কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত নামাযের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত নামাযে রত হিসেবে গণ্য হবে। (বুখারী ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা নং ৮৯, হাদীস নং ৬৩৮, মুসলিম হাদীস নং ৬৪৯, আবু দাউদ হাদীস নং ৫৫৯, তিরমিযী হাদীস নং- ৬৩, ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৭৭৪)]


জামা’আতে নামাযের ফযিলত আছে তা মহিলাদের জন্য নয় দেখুন দলিল

উপর্যুক্ত হাদীস শরীফ খানা পর্যালোচনা করলে নিম্নের বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে যায়।
(ক) صلوة الرجل في الجماعة تضعف অংশে স্পষ্টভাবে পুরুষের নামায জামা’আতে আদায় করা একাকী আদায় করা হতে ২৫ গুণ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। মহিলা জামা’আতে নামায আদায় করলে অধিক ছাওয়াব হবে তা বলা হয়নি।

(খ) অতঃপর বলা হয়েছে- ثُمَّ خَرَجَ اِلْي الْمَسْجِدِ এখানেও ঘর হতে মসজিদের দিকে বের হওয়ার জন্য পুরুষকে বলা হয়েছে তাই পুংলিঙ্গের শব্দ আনা হয়েছে।
(গ) অপর দিকে হাদীসে ব্যবহৃত সর্বনাম كم – ه শব্দগুলি পুংলিঙ্গের আনা হয়েছে। এর দ্বারা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেল যে, পুরুষরাই অধিক ছাওয়াবের উদ্দেশ্যে ঘর হতে বের হয়ে মসজিদে যাবে, মহিলারা নয়।

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ وَ الَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهٖ لَقَدْ هَمَمْتُ اَنْ اٰمُرَ بِحَطَبٍ فَيُحْطَبُ ثُمَّ اٰمُرُ بِا لصَّلٰوةِ فَيُؤَ ذَّنُ لَهَا ثُمَّ اٰمُرُ رَجُلاً فَيَؤُمُّ النَّا سَ ثُمَّ اُخَالِفُ اِلٰي رِجَالٍ لاَ يَشْهَدُوْنَ الصَّلٰوةَ فَاُحَرِّقُ عَلَيْهِمْ بُيُوْتَهُمْ
[হযরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ এরশাদ করেছেন। শপথ ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ। আমি ইচ্ছা করছি যে, আমি লাকরি একত্র করার আদেশ দেব আর তা জমা করা হবে। অতঃপর নামাজের আযান দেয়ার জন্য আদেশ করার ফলে আযান দেয়া হবে। তারপর আমি একজন পুরুষকে লোকদের ইমামতি করার জন্য আদেশ দেই। অতঃপর আমি ঐ সকল পুরুষদের (বাড়ি বাড়ি) গিয়ে দেখব যারা নামাজের জামা’আতে উপস্থিত হয়নি। অতঃপর তাদেরকেসহ তাদের ঘরসমূহ জ্বালিয়ে দিব। (বুখারী শরীফ, মেশকাত পৃষ্ঠা নং ৯৫)]


 
জামা’আতে নামাযের ফযিলত আছে তা মহিলাদের জন্য নয় দেখুন দলিল

উপরোক্ত হাদীস শরীফ হতে নিম্নের বিষয়সমূহ স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে,
(ক) হাদীসাংশ ثُمَّ اُخَالِفُ اِلٰي رِجَالٍ لاَ يَثْهَدُوْنَ الصَّلٰوةَ এর মর্ম হল-রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজের জামা’আতে শরীক না হয়ে বাড়ি গিয়ে ঐ সকল পুরুষদেরকে দেখার ইচ্ছা পোষণ করেছেন যারা নামাজের জামা’আতে শরীক হয়নি। এখানে তিনি এ কথা বলেননি যে, বাড়ি গিয়ে আমি ঐ সকল পুরুষ ও মহিলাদেরকে দেখবো যারা নামাজের জামা’আতে অংশগ্রহণ করেনি। এতে বুঝা গেল মহিলারা পুরুষদের ন্যায় নামাজের জামা’আতে উপস্থিত হতে হবে না।

(খ) অপর দিকে হাদীস শরীফে ব্যবহৃত رِجَالٌ – لاَيَشْهَدُوْنَ – بيوتهم – عليهم বিশেষ্য ও সর্বনামসমূহ পুরুষকে বুঝানোর জন্য পুংলিঙ্গের শব্দ আনা হয়েছে। ফলে মহিলাদেরকে কোনভাবেই পুরুষের ন্যায় নামাজের জামা’আতের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ নেই।

عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رضي الله عنه عَنِ النَّبِيِّ ﷺ اَنَّهُ قَالَ : اِذَا تَطَهَّرَ الَّرجُلُ ثُمَّ اَتَي الْمَسْجِدَ يَرْ عَي الصَّلاَ ةَ كَتَبَ لَهُ كَاتِبَاهُ اَوْ كَاتِبُهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ يَخْطُوْهَا اِلَي الْمَسْجِدِ عَشْرَ حَسَنَاتٍ وَالْقَاعِدُ يَرْعَي الصَّلاَةَ كَالْقَانِتِ وَ يُكْتَبُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَ مِنْ حِيْنِ يَخْرُجُ مِنْ بَيْتِهٖ حَتّٰي يَرْجِعَ اِلَيْهِ
[হযরত ওকবা ইবনে আমের (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি নবী করীম ﷺ হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি এরশাদ করেছেন। যখন একজন পুরুষ পবিত্রতা অর্জন করে অতঃপর মসজিদে এসে নামাজের হেফাজত করে তখন তার দুজন লেখক বা একজন লেখক মসজিদের দিকে তার প্রতি পদে দশটি করে নেক লেখেন। বসে নামায আদায়কারী দাড়িয়ে আদায়কারীর ন্যায়। আর নামাযী তার ঘর হতে বের হওয়া হতে ঘরে ফেরা পর্যন্ত তার নেকী লেখা হয়। (মোসনাদে আহমাদ ৪/১৫৭, মোছান্নাফে আবু ইয়াশ হাদীস নং ১৭৪৭, ছহীহ ইবনে খোযায়মা ২/৩৭৪, ছহীহ ইবনে হিব্বান হাদীস নং ২০৩৬)]
 
হাদীসাংশ اِذَا تَطَهَّرَ الَّرجُلُ ثُمَّ اَتَي الْمَسْجِدَ এতে স্পষ্টভাবে পুরুষকে লক্ষ্য করে বলা হয়েছে, যখন কোন পুরুষ উত্তমভাবে পবিত্রতা অর্জন করে মসজিদে যায়। কিন্তু এখানে ইঙ্গিতেও মহিলার কথা বলা হয়নি। অপর দিকে হাদীস শরীফে يخطو – يرعي – بيته – يخرج – يكتب – القانت – القاعد – اليه – يرجع শব্দগুলো পুংলিঙ্গের শব্দ নেওয়া হয়েছে। তাই কোন মহিলা ঘর হতে বের হয়ে মসজিদে গিয়ে নামায আদায় করলে অধিক নেকী হবে তা হাদীস শরীফটি দ্বারা প্রমাণ করার সুযোগ নেই।

عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ رضي الله عنه قَالَ : حَضَرَ رَجُلاً مِنَ الْاَ نْصَارِ الْمَوْتُ فَقَالَ : اِنِّي مُحَدِّثُكُمْ حَدِيْثًا مَااُحَدِّثُكُمُوْهُ اِلاَّ احْتِسَابًا : اِنِّي سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ يَقُوْلُ اِذَا تَوَضَّأَ اَحَدُكُمْ فَاحْسَنَ الْوُ ضُوْءَ ثُمَّ خَرَجَ اِلَي الصَّلاَةِ يَرْفَعُ قَدَ مَهُ الْيُمْنٰي اِلاَّ كَتَبَ اللّٰهُ عَزَّ و جَلَّ لَهُ حَسَنَةً وَ لَمْ يَضَعْ قَدَمَهُ الْيُسْرٰي اِلاَّحَطَّااللّٰهُ عَزَّ وَ جَلَّ عَنْهُ سَيِّئَةً فَلْيُقَرِّبْ اَحَدُكُمْ اَوْ لِيَبْعُدْ – فَاِنْ اَتَي الْمَسْجِدَ فَصَلّٰي فِيْ جَمَاعَةٍ غُفِرَ لَهُ فَاِنْ اَتَي الْمَسْجِدَ وَ قَدْصَلَّوْا بَعْضًا وَبَقِيَ بَعْضٌ صَلّٰي مَااَدْرَكَ وَ اَتَمَّ مَا بَقِيَ كَانَ كَذٰ لِكَ – فَاِنْ اَتَي الْمَسْجِدَ وَ قَدْ صَلَّوْا فَاَ تَمَّ الصَّلٰوةُ كَانَ كَذَالِكَ

[হযরত সাঈদ ইবনে মোসাইয়াব (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনছারী এক ব্যক্তির মৃত্যুর সময় উপস্থিত হলে তিনি বললেন- নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট একটি হাদীস একমাত্র ছাওয়াবের উদ্দেশ্যে বর্ণনা করবো। আমি রাসূলুল্লাহ্ ﷺ কে এরশাদ করতে শুনেছি। যখন তোমাদের কোন পুরুষ উত্তমভাবে অজু করে অতঃপর সে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হয় তখন সে ডান পা উত্তোলন করলেই মহান আল্লাহ তার জন্য একটি নেক প্রদান করেন এবং বাম পা রাখলেই তার একটি অপরাধ মিটিয়ে দেন। অতএব, তোমাদের কেউ নিকটবর্তী হও অথবা দূরবর্তী হও।

অতঃপর সে মসজিদে এসে জমাতে নামায আদায় করলে তাকে ক্ষমা করা হয়। আর মসজিদে যদি এমতাবস্থায় আসে যে, কিছু নামায আদায় করেছে আর কিছু বাকী আছে তাহলে যা পায় তা জামাতে আদায় করে যা বাকী রয়েছে তা পরিপূর্ণ করবে। তার জন্যেও অনুরূপ ক্ষমা করা হবে। আর মসজিদে যদি এমন সময় আসে যে নামায আদায় করা হয়েছে তাহলে (একাকী) নামায সমাপ্ত করবে। তাকেও অনুরূপ ক্ষমা করা হবে। (আবু দাউদ পৃষ্ঠা নং ৮৩, হাদীস নং-৫৬৩)]

উল্লেখিত হাদীস শরীফে রাসূলুল্লাহ ﷺ পুরুষদেরকে সম্বোধন করে এরশাদ করেছে যে, اِذَا تَوَضَّأَ اَحَدُكُمْ فَاحْسَنَ الْوُ ضُوْءَ ثُمَّ خَرَجَ اِلَي الصَّلاَةِ
অর্থাৎ তোমাদের পুরুষদের কেউ যখন উত্তমভাবে অজু করে নামাজের জন্য মসজিদে যায়।
অপর দিকে له – يرفع قدمه – خرج الي الصلوة – ليبعد – ليقرب – عنه – لم يضع – فصلي في جماعة – اتي المسجد
ইত্যাদি শব্দগুলো পুংলিঙ্গের শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এই হাদীস শরীফ দ্বারা মহিলারা ঘর হতে বের হয়ে মসজিদে গিয়ে জামা’আতের সাথে নামায আদায় করা জায়েয বা অধিক ছাওয়াবের কাজ প্রমাণ করা যাবে না।
 
عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضي اللّٰهُ عنه اَنَّ رَسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ قَالَ اَلاَ اَدُلُّكُمْ عَلٰي مَا يَمْحُو اللّٰهُ بِهِ الْخَطَا يَا وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّ رَجَاتِ؟ قَالُوْا بَلٰي يَارَسُوْلَ اللّٰهِ قَالَ : اِسْبَاغُ الْوُضُوْءِ عَلَي الْمَكَارِهِ وَ كَثْرَةُ الْخُطَا اِلَي الْمَسَا جِدِ وَ انْتِظَارُ الصَّلٰوةِ بَعْدَ الصَّلٰوةِ – فَذٰلِكُمُ الرِّبَاطُه فَذٰ لِكُمُ الرِّبَاطُا فَذٰلِكُمُ الرِّبَاطُا
[হযরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ এরশাদ করেছেন। আমি কি তোমাদেরকে এমন আমলের সংবাদ দিবনা যার দ্বারা আল্লাহ অপরাধকে মিটিয়ে দেন এবং মর্যাদাকে বৃদ্ধি করেন। তারা উত্তরে বললেন। হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি এরশাদ করেন- কষ্ট করে হলেও পরিপূর্ণভাবে অজু করা, মসজিদে অধিক পরিমাণে আসা যাওয়া এবং নামাজের পর নামাজের অপেক্ষায় থাকা। এটাই তোমাদের জন্য সীমান্তে প্রহরা দেয়া। এটাই তোমাদের জন্য সীমান্তে প্রহরা দেয়া, এটাই তোমাদের জন্য সীমান্তে প্রহরা দেয়া। (ইমাম মালেক (রা.) এর মোয়াত্তা ১/১৬১, মুসলিম হাদীস নং ২৫১, তিরমিযী হাদীস নং ৫১)]

উপর্যুক্ত হাদীস শরীফেও মসজিদে অধিক পরিমাণে আসা যাওয়ার ফযীলত الاادلكم বলে পুরুষদেরকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, মহিলাদেরকে সম্বোধন করে বলা হয়নি। অপর দিকে فذالكم – قالوا ইত্যাদি শব্দগুলো পুংলিংগের শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এর দ্বারাও বুঝা যায় মসজিদে আসা যাওয়া পুরুষের জন্য অধিক ছাওয়াবের কাজ, মহিলাদের জন্য নয়।

عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ رضي اللّٰه تعالي عنه قَالَ : سَمِعْتُ رِسُوْلَ اللّٰهِ ﷺ يَقُوْلُ : سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللّٰهُ فِيْ ظِلِّهٖ يَوْمَ لاَ ظِلَّ اِلاَّ ظِلُّهُ : اَلْاِمَامُ الْعَادِلُ وَالشَّابُّ نَشَأَ فِيْ عِبَادَةِ اللّٰهِ عَزَّ وَ جَلَّ وَ رَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ بِالْمَسَا جِدِ ….. (الحد يث
[হযরত আবু হোরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে এরশাদ করতে শুনেছি- সাত ধরনের ব্যক্তিকে (পরকালে) মহান আল্লাহ বিশেষ আশ্রয়ে রাখবেন যেদিন তাঁর আশ্রয় ছাড়া অন্য কোন আশ্রয় থাকবে না। ন্যায়পরায়ন নেতা, যুবক যিনি মহান আল্লাহর ইবাদতে লালিত হয়েছেন এবং এমন পুরুষ যার অন্তর মসজিদের সাথে সংযুক্ত… (সংক্ষেপ্তি) বোখারী, হাদীস নং ৬৬, মুসলিম হাদীস নং ১০৩১)]

এ হাদীস শরীফেও সরাসরি رجل তথা পুরুষের কথা বলা হয়েছে যিনির অন্তর মসজিদের সাথে সংযুক্ত থাকে। অর্থাৎ জামা’আতে নামায আদায়ের জন্য মসজিদে আসা যাওয়া করে এবং এক নামাজে যাওয়ার পর অপর ওয়াক্তে যাওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে প্রস্তুত থাকে। এখানেও মহিলার উল্লেখ নেই।

عَنْ اَبِيْ سَعِيْدِ الْخُدْرِيِّ رضي اللّٰهُ تعالي عنه عَنِ النَّبِيِّ ﷺ قَالَ اِذَا رَأَ يْتُمُ الرَّجُلَءَيَعْتَادُالْمَسَا جِدَ فَا شْهَدُوْا لَهُ بِالْاِ يْمَانِ قَالَ اللّٰهُ عَزَّ وُ جَلَّ اِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَا جِدَ اللّٰهِ مَنْ اٰمَنَ بِا للّٰهِ وَ الْيَوْمِ الْاٰخِرِ
[হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি নবী করীম ﷺ হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি এরশাদ করেছেন- যখন তোমরা কোন পুরুষকে দেখ যে, সে মসজিদ সমূহে যথারীতি (নামায আদায়) করতেছে, তাহলে তার ব্যাপারে তোমরা ঈমানের স্বাক্ষ্য প্রদান কর। মহান আল্লাহ এরশাদ করেছেন- নিশ্চয়ই যিনি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস করেন তিনিই আল্লাহর মাসজিদ সমূহ আবাদ করেন। (তিরমিযী হাদীস নং ২৬১৭, ইবনে মাজাহ হাদীস নং ৮০২, ইবনু খুযাইমা ২/৪৭৯)]
 
উল্লেখিত হাদীস শরীফেও স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, যখন তোমরা কোন পুরুষকে দেখ সে মসজিদ সমূহে নিয়মিত আসা যাওয়া করতেছে, কোন মহিলার কথা বলা হয়নি। তাই এর দ্বারাও বুঝা যায় যে, পুরুষগণই মসজিদে রীতিমত আসা যাওয়া করবেন এবং একে আবাদ করবেন, মহিলারা নয়।

মোটকথা মসজিদে আসা যাওয়া, জামা’আতে নামায আদায় ও মসজিদ আবাদ করার ফযিলতের ব্যাপারে উপর্যুক্ত হাদীস শরীফ সমূহসহ অগণিত হাদীস রয়েছে যাতে স্পষ্টভাবে পুরুষের কথা বলা হয়েছে। আমি অধমের জানা মতে একটি হাদীসও পাওয়া যাবে না যাতে সরাসরি একথা রয়েছে যে, মহিলারা ঘর হতে বের হয়ে মসজিদে যাবে বা তারা সেখানে জামা’আতের সাথে নামায আদায় করলে অধিক ফযিলত পাবে। তাই পুরুষের ফযিলতের হাদীসকে মহিলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা একেবারেই অপব্যাখ্যা ও বোকামী হবে।

ইসলামী গবেষণা বিভাগ
বাগদাদী ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা- ৩৫০০, বাংলাদেশ।

 
Top