জমির ওশর ও খাজনা এর সাথে যাকাতের সম্পর্ক কি
একই জমির ওশর ও খাজনা উভয়টি ওয়াজিব হয় কি না?

একটি ভূমির মালিক ভূমির খাজনা পরিশোধ করেন এখন ঐ ভূমিতে উৎপন্ন ফসলের ওশর (দশ ভাগের এক ভাগ) অথবা নেছফুল ওশর (বিশ ভাগের এক ভাগ) দিতে হবে কি না এ ব্যাপারে ইমামগণের মাঝে মতানৈক্য রয়েছে। হানাফী মাযহাব মতে একই জমির ওশর ও খাজনা একত্রিত হয় না। কেননা হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে- لاَ يَجْتَمِعُ عُشُرٌ وَلاَ خِرَاجٌ فِيْ اَرْضٍ مُسْلِمٍ
[মুসলমানের জমিনে ওশর ও খাজনা একত্রিত হয় না।]

বাংলাদেশের জমিনে ওশর দিতে হবে কিনা?
বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরাম গণের অভিমত হলো- বাংলাদেশের জমিনে ওশর দিতে হবে না। কেননা, (১) ওশর গ্রহণের জন্য ইসলামী রাষ্ট্র হওয়া পূর্বশর্ত হয়। অথচ বাংলাদেশ ইসলামী রাষ্ট্র নয়। (২) বাংলাদেশের জমিনের মালিকগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত খাজনা দিয়ে থাকেন। আর খাজনা দেওয়া জমিনে ওশর ওয়াজিব হয় না, যা হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।


যাকাতের বিধান প্রবর্তনের রহস্য কি?

ইসলামের প্রত্যেকটি বিধান প্রবর্তনের কোন না কোন রহস্য নিহিত আছে। তাই ইসলামের ৫টি স্তম্ভের অন্যতম যাকাতের বিধান প্রবর্তনেও অনেক হেকমত ও উপকার নিহিত আছে। যেমন-
১. ইসলামে যাকাত ব্যবস্থা সমাজের দারিদ্র্য ও দুঃখ-কষ্ট দূর করা ও মানবতার কল্যাণ সাধন করা।
২. ধনীদের সম্পদে গরীব ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে। সঠিক হিসাব করে নিয়মিত যাকাত প্রদান করার ফলে ধনীর সম্পদের উপর গরীবের হক পরিশোধ হয়।
৩. যাকাতের মাধ্যমে সম্পদ পরিশুদ্ধ ও হিফাযত হয়।
৪. যাকাতদাতার মনকে লোভ থেকে পবিত্র করে এবং দান ও ত্যাগ স্বীকারে অভ্যস্থ হতে সাহায্য করে।
৫. যাকাত প্রদানকারীর জন্য রয়েছে মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট হতে অগণিত পার্থিব ও পারলৌকিক কল্যাণ।
৬. যাকাতের উপকারভোগী সমাজের দুঃখী-দরিদ্র জনগোষ্ঠি। যাকাতের অর্থে সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠির অভাব পূরণে সহায়তা করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস পায়।
৭. সমাজে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহানুভূতির গুণাবলী বৃদ্ধি পায়।
৮. যাকাতের মাধ্যমে সম্পদের প্রবৃদ্ধি হয়।
৯. যাকাত দানের দ্বারা মহান আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা হয়।
১০. সর্বোপরি এর মাধ্যমে মহান আল্লাহর আনুগত্য করে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন আজাব গজব হতে মুক্তি পাওয়া যায়।

ইসলামী গবেষণা বিভাগ
বাগদাদী ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা- ৩৫০০, বাংলাদেশ।


 

 
Top