প্রশ্ন: দ্বীনের আলিমগণ এবং শরীআতের মুফতীগণ এই ব্যাপারে কী বলেন – আমি একজন অমুসলিমের সাথে অংশীদারি ব্যবসায় যুক্ত হতে চলেছি। এটি কী শরীআতে অনুমোদিত? এছাড়া, অংশীদারিত্বের মৌলিক প্রকারভেদসমূহ কী কী এবং তন্মধ্যে কোনগুলো কোনো মুসলিম ও অমুসলিমের মধ্যে বৈধ হতে পারে?
উত্তর:
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
الْجَوَابُ بِعَوْنِ الْمَلِكِ الْوَهَّابِ، اللَّهُمَّ هِدَايَةَ الْحَقِّ وَالصَّوَابِ
অংশীদারি ব্যবসার মৌলিক প্রকারভেদ দুটি:
১. মুফাওয়াদাহ (পূর্ণ অংশীদারিত্ব)
২. ‘ইনান (আংশিক অংশীদারিত্ব)
কোনো মুসলিম ও অমুসলিমের মধ্যে ‘ইনান (আংশিক) অংশীদারিত্ব বৈধ; কিন্তু তাদের মধ্যে মুফাওয়াদাহ (পূর্ণ) অংশীদারিত্ব হতে পারে না।
মুফাওয়াদাহ অংশীদারিত্ব হলো এমন, যেখানে অংশীদারদের প্রত্যেকে একে অপরের প্রতিনিধি এবং জামিনদার (অর্থাৎ, একে অপরের জন্য দায়বদ্ধ)। এর অর্থ হলো, একজন অংশীদার অন্যজনের দায়িত্ব পালন করতে পারে এবং যদি একজনের কোনো দেনা বা পাওনা থাকে, তবে অন্যজন তার জন্য দায়িত্বশীল হবেন। সুতরাং, একজনের উপর যে ঋণ বা দায় বর্তাবে, তার জন্য অন্যজনও সমানভাবে দায়বদ্ধ ও যৌথভাবে দায়ী হবেন। যেমনটি মুতূন-এর কিতাবসমূহে উল্লেখ আছে।
তবে এই প্রকার অংশীদারিত্বের শর্তসমূহ পারস্পরিকভাবে এত বেশি সম্পর্কিত যে, সাধারণভাবে লোকসমাজে এ ধরনের অংশীদারিত্ব দেখা যায় না এবং এটি খুব বেশি পরিচিতও নয়।
পক্ষান্তরে, ‘ইনান (আংশিক) অংশীদারিত্ব হলো এমন, যেখানে দুই অংশীদার একটি নির্দিষ্ট ধরনের ব্যবসায় লেনদেন করেন অথবা তারা সব ধরনের ব্যবসায়ই লেনদেন করেন; কিন্তু একজন অন্যজনের জন্য দায়বদ্ধ নন। আর এই ধরনের অংশীদারিত্ব মুসলিম ও অমুসলিমের মধ্যে বৈধ।
যেমন, ফাতাওয়া হিন্দিয়াহ্ কিতাবে বর্ণিত হয়েছে:
فَتَجُوزُ هَذِهِ الشَّرِكَةُ بَيْنَ الرِّجَالِ وَالنِّسَاءِ وَالْبَالِغِ وَالصَّبِيِّ الْمَأْذُونِ وَالْحُرِّ وَالْعَبْدِ الْمَأْذُونِ فِي التِّجَارَةِ وَالْمُسْلِمِ وَالْكَافِرِ، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ. وَفِي التَّجْرِيدِ وَالْمُكَاتَبِ “، كَذَا فِي التَّهْذِيبِ
অর্থাৎ: “এই ‘ইনান অংশীদারিত্ব পুরুষ ও নারীর মধ্যে, সাবালক ও নাবালকের মধ্যে (যাকে তার অভিভাবক লেনদেনের অনুমতি দিয়েছেন), স্বাধীন ব্যক্তি ও দাসের মধ্যে (যাকে তার মালিক ব্যবসার অনুমতি দিয়েছেন) এবং মুসলিম ও কাফিরের (অমুসলিমের) মধ্যে বৈধ। এমনই উল্লেখ রয়েছে ফাতাওয়া ক্বাযী খান-এ। আর আত্-তাজরীদ গ্রন্থে মুকাতাব-এর উল্লেখ রয়েছে। অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে আত্-তাহযীব গ্রন্থেও।” [আল-ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়াহ্, ২য় খণ্ড, ১ম অধ্যায়, ৩য় অংশ, পৃষ্ঠা ৩১৯]
অধিকন্তু, বাহার’এ শরীআত গ্রন্থে বিবৃত হয়েছে যে, পুরুষ ও নারী, মুসলিম ও অমুসলিম, সাবালক ও সেই নাবালকের মধ্যে যার অভিভাবক তাকে (লেনদেন করার) অনুমতি দিয়েছেন এবং স্বাধীন ব্যক্তি ও সেই দাসের মধ্যে যাকে (তার মালিকের পক্ষ থেকে) অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ‘ইনান (আংশিক) অংশীদারিত্ব হতে পারে। [বাহারে শরীয়ত, ২য় খণ্ড, ১০ম অংশ, পৃষ্ঠা ৪৯৯]
وَاللَّهُ تَعَالَى أَعْلَمُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ
জবাব প্রদান - মুফতী মুহাম্মাদ ক্বাসিম যিয়া আল-ক্বাদিরী حَفِظَهُ اللهُ تَعَالَى [যুক্তরাজ্য]
---
Translation reviewed and approved by Ala’Hazrat Academy