দাওয়াতের হিকমত
-----------------------------------
মূলঃ শায়খ মুহাম্মাদ আসলাম।
অনুবাদকঃ সাইয়্যেদ গোলাম কিবরিয়া আজহারি।

এটা দয়া করে পড়ুন, কারণ এটা দাওয়াতের ব্যাপারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কিভাবে আমাদের অপর মুসলিমকে সাহায্য করা উচিত যারা নিজেদের আমল শোধরাতে ব্যর্থ হচ্ছে।

একদিন শায়খ হাবিব আহমদ আফ্রিকার একটি গ্রামে গেলেন এবং সেখানকার মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দিলেন। গ্রামের সর্দার বললেন যে, তিনি ইসলাম গ্রহন করবেন কিন্তু নামাজ পড়তে পারবেন না। শায়খ হাবিব আহমদ বললেন, আপনি বলুন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং আপনাকে নামাজ নিয়ে চিন্তিত হতে হবে না। সেই সর্দার ইসলাম গ্রহণ করলেন।

এর কিছুদিন পরেই ঈদের দিন আসলে শায়খ হাবিব আহমদ ঐ সর্দারকে বললেন, মাত্র দুই রাকাত নামাজ এটা আপনি আদায় করতেই পারেন পুরো গ্রামবাসীর সাথে। তিনি আরো বুঝালেন, মাত্র দুই রাকাত নামাজ, তারপর আপনি বিশ্রাম করতে পারেন, খাওয়া দাওয়া করতে পারেন, সামাজিকতা করতে পারেন এবং মানুষজনের সাথে খোশগল্প করতে পারেন। সর্দার আসলেন এবং সবাই তাকে স্বাগতম জানাল। তিনি দুই রাকাত নামাজ পড়লেন এবং বাকি সারাদিন আরাম- আয়েশ করলেন।

এর কিছু দিন পরেই শায়খ ঐ সর্দারকে জুমুয়ার নামাজের আমন্ত্রণ জানালেন এবং বললেন এটাও ঐ ঈদের নামাজের মতই খুবই সহজ এবং সুন্দর। সর্দার জুমুয়াতে আসলেন এবং তার ভাল লাগল জুমুয়া পড়ে। তারপর থেকে প্রতিটি জুমুয়াতেই তিনি আসতে লাগলেন।

এক মাস এভাবে যাওয়ার পর শায়খ ঐ সর্রদারকে মাগরিবের নামাজ পড়ার আমন্ত্রণ করলেন এবং বললেন এটা মাত্র ৩ রাকাআত। জুমুয়া ও ঈদ থেকে মাত্র এক রাকাআত বেশি। সর্দার মাগরিবের নামাজ পড়লেন এবং এর পরবর্তী মাগরিবের নামাজ গুলোতেও হাজির হতে লাগলেন।

এভাবে কয়েক মাসের মধ্যেই সর্দার ৫ ওয়াক্ত নামাজ জায়াতের সাথে আদায় করতে লাগলেন। সুবহানাল্লাহ। শায়খের হিকমতের দিকে লক্ষ্য করুন। এটা ছিল শায়খ হাবিব আহমদের দাওয়াত এবং এভাবে তার মাধ্যমে শুধুমাত্র আফ্রিকাতেই ৩ লক্ষ মানুষ ইসলাম গ্রহন করেন। এটা ছিল হুজুর রাসুলুল্লাহ ﷺর তরিকা।

শিক্ষাঃ সবার জন্য নম্র ও সহজ হোন। মানুষের ঘাড়ের ওপরে দ্বীনকে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন না। আস্তে আস্তে শুরু করুন। যদি কোন বোন হিজাব মেইন্টেইন করতে অনিচ্ছুক হন তবে তাকে সাহায্য করুন। তিনি আপনার বোন। তাকে লজ্জা দেবেন না, তাচ্ছিল্য করবেন না এবং এমন দাবী করবেন না যে এক্ষুনি আপনাকে নিকাব পড়া শুরু করে দিতে হবে। যদি কোন ভাই শুধুমাত্র জুমুয়া ও ঈদ নামাজ পড়ে তবে তাকে উদ্বুদ্ধ করুন যে সে কমপক্ষে জুমুয়া ও ঈদের নামাজ তো আদায় করছে।

আপনার কী ইচ্ছা যে সে এতটুকুও না করুক? তাদের কোন আমলকেই ছোট করে দেখবেন না এবং তাদেরকে মুনাফিক ডাকা শুরু করে দেবেন না। মানুষ কুরআন- হাদিস স্টাডি শুরু করার সাথেই সাথেই তাকে টিভি ভেংগে ফেলে দিতে বলবেন না, টেবলেট, লেপটপ, আই ফোন ইত্যাদি ডাস্টবিনে ফেলে দিতে বলবেন না। রিলাক্স।

মানুষ যদি শুধুমাত্র রামাদানে ইবাদাত করে এবং এই মাস গেলেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়, তবে তাদের হাত আঁকড়ে ধরুন, তাদেরকে সাহায্য করুন। এমন কোন ভাব করবেন না যে আপনি তাদের চাইতে অনেক বেশি ধার্মিক এবং তারা ভুলের মধ্যে ডুবে আছে। ইবিলস ততদিন পর্যন্ত ফেরেশতাদের সর্দার ছিল যতদিন না সে একজন মানুষকে তাচ্ছিল্য করা শুরু করে এবং দেখুন তা তাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে।

 
Top