মাছের বর্ণনা



মাসআলাঃ পানিতে যত প্রাণী থাকে সবই হারাম তবে মাছ যত ধরণের হোক সবই হালাল।


মাসআলাঃ যে মাছ পানিতে নিজে মরে ভেসে উঠে উহা খাওয়া জায়েয নেই। আর যদি কোন বিপদের দরুণ মারা যায় যেমন- স্থান সংকীর্ণ হওয়া বা সাপের দর্শন (কামড়) বা আঘাতে মরে যাওয়া, ঔষুধ দেয়ার দরুণ মারা যায় তাহলে উহা খাওয়া জায়েয আছে।


মাসআলাঃ মাছ যদি পানিতে নিজে নিজে মরে ভেসে উঠে, অতএব, যদি চিৎ হয়ে (মুখ উপরের দিকে থাকে) ভেসে উঠে, তাহলে উহা খাওয়া জায়েয নেই। আর যদি উপুড় (মুখ নীচের দিকে থাকে) হয়ে ভেসে উঠে তাহলে উহা খাওয়া জায়েয আছে।


মাসআলাঃ যদি কোন মাছ এমনভাবে মরে যে, উহার মাথা স্থল ভাগে এবং লেজ পানিতে হয় তাহলে ইমাম মুহাম্মদ (رحمة الله) এর মতে উহা খাওয়া জায়েয আছে। আর যদি মাথা পানিতে হয় আর লেজ স্থল ভাগে হয় তাহলে এমতাবস্থায় যদি স্থল ভাগে অর্ধেক বা অর্ধেক থেকে কম হয় তাহলে খাওয়া জায়েয নেই। আর যদি স্থল ভাগে অর্ধেকের চেয়ে বেশী থাকে তাহলে খাওয়া জায়েয আছে।


মাসআলাঃ মাছের পেটে যদি কোন মৃত মাছ পাওয়া যায় তাহলে উহা খাওয়া জায়েয আছে। কেননা স্থান সংকীর্ণ হওয়ার কারণে উহার মৃত্যু হয়েছে।


মাসআলাঃ আবাবিল (পাখি) খাওয়া জায়েয আছে। ইহা তা-তারকানিয়া গ্রন্থে উল্লেখ আছে। ২২৬

 ➥২২৬. ফতোয়ায়ে তাতরখানীয়া।


মাসআলাঃ কেঁচু যাকে আরবী ভাষায় খারাত্বীন বলা হয়, উহা খাওয়া হারাম।


মাসআলাঃ মাছ বড় হোক বা ছোট হোক প্রত্যেক প্রকার মাছ হালাল তবে ছোট মাছের বিষ্টা যে পরিমাণ দূর করা যায়, তা দূর করা উচিত। উহার মধ্যে সামর্থের বাইরে কষ্ট দেয়া জায়েয নেই। ইহা সিরাজুল ওয়াহ্হাজ গ্রন্থে উল্লেখ আছে।  ২২৭

 ➥২২৭. সিরাজুল ওয়াহহায্।


মাসআলাঃ যত প্রকার পোকা রয়েছে সবই হারাম। কেননা পোকা খাবীছ (নোংরা বা অপবিত্র) আর সব প্রকারের নোংরা বা অপবিত্র হারাম। ২২৮

➥২২৮. হায়াতুল হাইওয়ান।


মাসআলাঃ মধু পোকা খাওয়া হারাম, ইহা ফতওয়ায়ে বাজ্জাজিয়া গ্রন্থে উল্লেখ আছে। ২২৯

 ➥২২৯. ফতোয়ায়ে বাজ্জাযীয়া


মাসআলাঃ এক ব্যক্তি মাছকে নাপাক পানিতে ছেড়ে দিয়েছে এবং উহাতে বড় হয়েছে অতএব এমতাবস্থায় উক্ত মাছকে খাওয়া জায়েয আছে। ইহা আল আশবাহ্ ওয়ান্ নাযায়ির গ্রন্থে উল্লেখ আছে।


মাসআলাঃ চিংড়ি যাকে ফার্সি ভাষায় মালখে দরয়ায়ী এবং আরবী ভাষায় জরাদুল বাহার এবং বাংলা ভাষায় চিংড়ী ও ইছামাছ বলে, উহা খাওয়া হালাল এবং উহার উপর ফতওয়া, কতিপয় ওলামা মাকরূহ মনে করেন। কেননা ইহা যমীনের পোকার মধ্যে গণ্য। আল্লাহ অধিক জ্ঞাত। ২৩০

 ➥২৩০. হায়াতুল হাইওয়ান।


মাসআলাঃ হারীছ ও মারমাহী হালাল। আর জারীছ হল একটি কাল রঙের মাছ। আর মারমাহী এমন একটি মাছ যা সাপের সাথে কিছু সাদৃশ্য রাখে। যাকে বাংলাতে বাইন মাছ বলে ও সালীস বলে। আর চট্টগ্রামের কিছু লোক কুইচ্ছাকে সালীস বলে কুইচ্ছা খাওয়া জায়েয নেই। ২৩১

➥২৩১. হিদায়া ও কাজীখান।


নোটঃ আর সাধারণ লোকেরা কুইচ্ছাকে মারমাহী বলে- এটা ভুল। কেননা উহা সাধারণভাবে মাছের আকৃতিতে নয় বরং দেখতে হুবহু সাপের ন্যায় নাপাক ও অপবিত্র মনে হয় ইহা ছাড়াও স্বভাবও উহা অপছন্দ করে। আর যে বস্তু সঠিক স্বভাবের নিকট নাপাক বলে বিবেচিত হয় তা নাপাকের অন্তর্ভূক্ত। আর নাপাক বস্তু খাওয়া শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয নয়। আল্লাহ্ তায়ালা অধিক জ্ঞাত। 


মাসআলাঃ লইট্টা মাছ খাওয়া জায়েয।  ২৩২

 ➥২৩২. হায়াতুল হাইওয়ান।

 
Top