❏ বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা আলুসি (رحمة الله) এর মন্তব্যঃ


"তফসীরে রুহুল মায়ানীর" প্রনেতা আল্লামা আলুসি (رحمة الله) এর মন্তব্য : 



❏ এ বিখ্যাত মুফাসসির ও মুহাদ্দিস , মুফতীয়ে বাগদাদ হযরত আল্লামা আলূসী বাগদাদী (رحمة الله) ইয়াজিদ কাফির হওয়া প্রসঙ্গে বলেন-


ﺍﻧﺎ ﺍﻗﻮﻝ : ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻐﻠﺐ ﻋﻠﻲ ﻇﻨﻲ ﺍﻥ ﺍﻟﺨﺒﻴﺚ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻣﺼﺪﻗﺎ ﺑﺮﺳﺎﻟﺔ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺍﻥ

ﻣﺠﻤﻮﻉ ﻣﺎ ﻓﻌﻞ ﻣﻊ ﺍﻫﻞ ﺣﺮﻡ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻭﺍﻫﻞ ﺣﺮﻡ ﻧﺒﻴﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻻ ﻻﺓ ﻭ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﻋﺘﺮﺗﻪ ﺍﻟﻄﻴﺒﻴﻦ ﺍﻟﻄﺎﻫﺮﻳﻦ

ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻴﺎﺓ ﻭ ﺑﻌﺪ ﺍﻟﻤﻮﺍﺕ ﻭﻣﺎ ﺻﺪﺭ ﻣﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻤﺨﺎﺯﻱ ﻟﻴﺲ ﺑﺎﺿﻌﻒ ﺩﻻﻟﺔ ﻋﻠﻲ ﻋﺪﻡ ﺗﺼﺪﻳﻘﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻘﺎﺀ

ﻭﺭﻗﺔ ﺍﻟﺼﻔﻒ ﺍﻟﺸﺮﻳﻒ ﻓﻲ ﻗﺬﺭ


অর্থ: আমি বলছি, আমার এটাই অধিক ধারনা যে,

খবীসটি হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক (ﷺ) উনাকে রসূল বলে বিশ্বাস করতো না। সে আল্লাহ পাক উনার হেরেম শরীফে (কা’বা শরীফ প্রান্তে) অবস্থানকারীদের সাথে, হুজুর পাক (ﷺ) উনার হেরেম শরীফ (মদীনা শরীফ) এ অবস্থানকারীদের সাথে এবং উনার পূত-পবিত্র বংশধর উনাদের সাথে উনার জীবদ্দশায় এবং উনাদের বেছাল শরীফের পরে যে আচরন করেছে, এছাড়া তার দ্বারা যে সমস্ত অনাচার প্রকাশ পেয়েছে তা তার ঈমান না থাকার ব্যাপারটি স্পষ্ট করে, (তার ঈমান থাকার) ব্যাপারটি প্রমান করতে কোন দুর্বল দলীলও নাই। কারন এ কাজটি ছিলো কুরআন শরীফের পাতা অবহেলা অবজ্ঞার সাথে ময়লা আবর্জনায় নিক্ষেপ করার মতো অন্যায়।”

তথ্যসূত্রঃ

➥ তাফসীরে রূহুল মা’য়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা।



❏ তিনি আরো বলেন :-


আমি মনে করি বেশিরভাগ মুসলমানের কাছেই ইয়াজিদের কার্যকলাপ অজানা ছিল না। কিন্তু মুসলমানরা তখন অসহায়ভাবে বশীভূত ছিল।


আর যদি ধরে নেই খবিসটি (অপবিত্র) মুসলমান ছিল, তাহলেও বলতে হবে সে যাবতীয় বড় পাপ একত্রে করেছে যা বর্ণনা করার ভাষা নেই। আমি মনে করি তার মত ব্যক্তির প্রতি অভিশাপ দেয়া বৈধ। তার মত বড় পাপী কেউ আছে বলেও ধারণা করা যায় না।


তিনি বলেন-

ﻭﻳﻠﺤﻖ ﺑﻪ ﺍﺑﻦ ﺯﻳﺎﺩ ﻭﺍﺑﻦ ﺳﻌﺪ ﻭﺟﻤﺎﻋﺔ ﻓﻠﻌﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﺍﺟﻤﻌﻴﻦ ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻧﺼﺎﺭﻫﻢ ﻭﺍﻋﻮﺍﻧﻬﻢ

ﻭﺷﻴﻌﺘﻬﻢ ﻭﻣﻦ ﻣﺎﻝ ﺍﻟﻴﻬﻢ ﺍﻟﻲ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻣﺎ ﺩﻣﻌﺖ ﻋﻴﻦ ﻋﻠﻲ ﺍﺑﻲ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ


অর্থ: ইয়াজিদ এর সাথে শামিল (তার গভর্নর) ইবনে জিয়াদ, ওমর সাদ ও তাদের দলবলও অভিশাপ পাওয়ার উপযুক্ত। তাদের সবার ওপর আল্লাহর অভিশাপ। তাদের সাহায্যকারী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও সাঙ্গপাঙ্গদের ওপরও লানত তথা অভিশাপ। আর যারা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখাবে তাদের ওপরও অভিশাপ কিয়ামতের দিন পর্যন্ত এবং ততদিন যতদিন না ইমাম হুসাইন (আ.)’এর জন্য একটি মাত্র চোখ থেকেও অশ্রু ঝরবে।” (রুহুল মায়ানি, খণ্ড-২৫, পৃ-৭৩)


❏ তিনি  বলেন-


ﺫﺍﻟﻚ ﻟﻌﻤﺮﻱ ﻫﻮ ﺍﻟﻀﻼﻝ ﺍﻟﺒﻌﻴﺪ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻜﺎﺩ

ﻳﺰﻳﺪ ﻋﻠﻲ ﺿﻼﻝ ﻳﺰﻳﺪ


অর্থ-আমি কসম করে বলি , এটা হলো চরম ভ্রষ্টতা। যা ইয়াজীদের ভ্রষ্টতাকে অতিক্রম করেছে।”

তথ্যসূত্রঃ

➥ রুহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭৩ পৃষ্ঠা ।


❏ তিনি আরো বলেন :-


ﻭﻗﺪ ﺻﺮﺡ ﺑﻜﻔﺮﻩ ﻭﺻﺮﺡ ﺑﻠﻐﻨﻪ ﺟﻤﺎﻋﺔ ﻣﻦ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﻣﻨﻬﻢ ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﻧﺎﺻﺮ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﺑﻦ ﺍﻟﺠﻮﺯﻱ ﻭﺳﺒﻘﻪ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ

ﺍﺑﻮ ﻳﻌﻠﻲ ﻭﻗﺎﻝ ﺍﻟﻌﻼﻣﺔ ﺍﻟﺘﻔﺘﺎﺯﺍﻧﻲ ﻻﻧﺘﻮﻗﻒ ﻓﻲ ﺷﺎﻧﻪ ﺑﻞ ﻓﻲ ﺍﻳﻤﺎﻧﻪ ﻟﻌﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﻋﻠﻲ ﺍﻧﺼﺎﺭﻩ

ﻭﺍﻋﻮﺍﻧﻪ ﻭﻣﻤﻦ ﺻﺮﺡ ﺑﻠﻌﻨﻪ ﺍﻟﺠﻼﻝ ﺍﻟﺴﻴﻮﻃﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﺖ


অর্থ- ইয়াজীদ কাফির হওয়া সম্পর্কে এবং তার প্রতি লানত করা বৈধতার বিষয়ে এক জামাতের উলামা পরিস্কার মন্তব্য করেছেন। উনারা হলেন, হুজুর পাক (ﷺ) উনার সুন্নতের মদদগার 

১) ইবনুল জাওজী (رحمة الله) আর উনার পূর্বে 

২) হযরত কাজী আবু ইয়ালা (رحمة الله)।

৩) আল্লামা হযরত তাফতানী (رحمة الله) বলেন, আমরা ইয়াজীদের ব্যাপারে দ্বিধা করবো না। এমনকি তার ঈমানের ব্যাপারে ও না। তার প্রতি, তার সাহায্যকারী দের প্রতি , এবং শুভকামনা কারীদের প্রতি আল্লাহ পাকের লানত। যারা ইয়াজীদ সুস্পষ্ট লানত করেছেন তাদের মধ্যে 

৪)ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ুতী (رحمة الله)ও রয়েছেন।”


তথ্যসূত্রঃ

➥ তাফসিরে রুহুল মায়ানী ২৫ খন্ড ৭২ পৃষ্ঠা


তাছাড়াও আল্লামা আলুসির মতে এবং অন্যান্যদের মতে আরো অনেকজন তাকে লানত করেছে তারা হলেন:-


৫) আল-বারযানযি (رحمة الله) তার " আল-হাসনাত" কিতাবে


৬) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) "(আস-সাওয়াইক)" ও "(তফসীরে রুহুল মায়ানী ২৫:পৃ ৭৩, সুরা ৪৭:২২-২৩) কিতাবে ওনার নিজ পুত্র আব্দুল্লাহ  এটা বর্ননা করেছেন আর তার থেকে


৭) ইমাম আল-হায়তামী (رحمة الله) ও আল্লামা আলুসী বর


৮) ইমাম তাবারী (رحمة الله) , 


৯) বিখ্যাত মুহাদ্দিস শায়েখ আব্দুল হক্ব দেহলবী (رحمة الله) ,


১০) বিখ্যাত মুহাদ্দিস শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলবী (رحمة الله) ইয়াযীদকে লা’নতপ্রপ্ত,

অভিশপ্ত, নাপাক বলে উল্লেখ করেছেন।


১১) মুফাসসির আল্লামা আলুসী (رحمة الله)




❏ তিনি আরো বলেন :-


ﻋﻠﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ‏( ﺍﻱ ﻋﻠﻲ ﺟﻮﺍﺯ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺑﻌﻌﻦ ﻣﻌﻴﻦ ‏) ﻻﻧﻮﻗﻒ ﻓﻲ ﻟﻌﻦ ﻳﺰﻳﺪ ﺑﻜﺜﺮﺓ ﺍﻭﺻﺎﻓﻪ ﺍﻟﺨﺒﻴﺜﺔ

ﻭﺍﺭﺗﻜﺎﺑﻪ ﺍﻟﻜﺒﺎﺀﺭ ﻓﻲ ﺟﻤﻴﻊ ﺍﻳﺎﻡ ﺗﻜﻠﻴﻔﻪ ﻭﻳﻜﻔﻲ ﻣﺎ ﻓﻌﻠﻪ ﺍﻳﺎﻡ ﺍﺳﺘﻼﺀﻩ ﺑﺎﻫﻞ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻭﻣﻜﺔ ﻓﻘﺪ ﺭﻭﻱ

ﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻲ ﺑﺴﻨﺪ ﺣﺴﻦ : ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻣﻦ ﻇﻠﻢ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻭﺍﺧﺎﻓﻬﻢ ﻓﺎﺧﻔﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻟﻌﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺍﻣﻼﺀﻛﺔ ﻭﺍﻟﻨﺎﺱ

ﺍﺟﻤﻌﻴﻦ ﻻﻳﻘﺒﻞ ﻣﻨﻪ ﺻﺮﻑ ﻭﻻﻋﺪﻝ

ﻭﺍﻟﻄﺎﻣﺔ ﺍﻟﻜﺒﺮﻱ ﻣﺎ ﻓﻌﻠﻴﻪ ﺑﺎﻫﻞ ﺍﻟﺒﻴﺖ ﻭﺭﺿﺎﻩ ﺑﻘﺘﻞ ﺍﻟﺤﺴﻴﻦ ﻋﻠﻲ ﺟﺪﻩ ﻭﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺼﺎﻭﺓ ﻭﺍﻟﺴﻼﻡ ﻭﺍﺳﺘﺒﺸﺎﺭﺓ

ﺑﺬﺍﻟﻚ ﻭﺍﻫﺎﻧﺘﻪ ﺍﻫﻞ ﺑﻴﺘﻪ ﻣﻤﺎ ﺗﻮﺍﺗﺮ ﻣﻌﻨﺎﻩ ﻭﺍﻥ ﻛﺎﻧﺖ ﺗﻔﺎﺻﻴﻠﻪ ﺍﺣﺪﺍ .


অর্থ: এ কথার ভিত্তিতে ( সুনির্দিষ্টভাবে অভিসম্পাত দানের বৈধতার ভিত্তিতে) ইয়াযিদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহিকে লা’নত করার প্রশ্নে আমরা দ্বিধা করবো না। সে বহুবিধ নিকৃষ্টমানের দোষ করেছে। তার জবর দখলের দিনগুলোতে সে মদীনা শরীফ ও মক্কা শরীফ এর অধিবাসীদের সাথে যে আচরন করেছে তার ব্যাপারে বিচার করতে গেলেই যথেষ্ট।

প্রসঙ্গত হযরত ইমাম তাবরানী (رحمة الله) হাসান সনদে হাদীস শরীফ বর্ননা করেছেন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু

আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন,

হে বারে ইলাহী ! যে মদীনাবাসীদের প্রতি যুলুম করবে, উনাদের সন্ত্রস্ত করবে, আপনি তাকেও ভীতির সম্মুখীন করুন।”

এরূপ ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ পাক, ফেরেশতাকুল, মানবকুলসহ সকলে অভিসম্পাত ( লা’নত) বর্ষিত হোক। এরূপ ব্যক্তির কোন ফরজ ও নফল ইবাদত কবুল করা হবে না। আর মহাপ্রলয়ের ন্যায় ইয়াযিদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক (ﷺ) উনার আহলে বাইত শরীফ (পরিবারবর্গ) উনাদের সাথে যা করেছে আর হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাতকে যেভাবে সানন্দে সে গ্রহণ করেছে। নাউযুবিল্লাহ । হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার নানা ও উনাদের উভয়ের প্রতি ছলাত ও সালাম বিনিময় নিবেদন করি এবং হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম

উনার পরিবারবর্গের সাথে সে যেসব মানহানিকর ব্যবহার করেছে, তার বিস্তারিত বিবরন সূত্রগত একক বর্ননায় বর্নিত হলেও অর্থ ও তথ্য দৃষ্টে (মুতাওয়াতির) ব্যাপক সূত্রে বর্নিত।”

তথ্যসূত্রঃ

➥ তাফসীরে রূহুল মায়ানী ২৫ তম খন্ড ৭২ নং পৃষ্ঠা।

 
Top