আব্দুল কায়সের দূতের আগমন


হাদিস ১:


اَخرَجَ اَبُو يَعلىٰ البَيهَقِيُّ عَن مُزِيدَةَ العَصرِئُّ قَالَ بَينَمَا النَّبِيُّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيهِ وَسَلَّمَ يِحدَثُ اَصحَابَهُ اِذ قَالَ لَهُم سَيُطلِعُ عَلَيكُم مِن هَا هُنَا رَكبٍ هُم خَيرُ أَهلِ المُشرِقِ، فَقَامَ عُمَرُ فَتَوَجَّهَ نَحوَهُم فِلَقَيَ ثَلاَثَةَ عَشرَ اکِبًا فَقَالَ مِنَ القَومَ؟ قَالُوا مِن بَنِي عَبدِ القَيسِ،

আবু ইয়ালা ও বায়হাকী বর্ণনা করেন যে, একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবায়ে কেরামের সাথে কথাবার্তার মধ্যে এরশাদ করেন : এদিক থেকে একটি প্রতিনিধি দল আসবে, যারা পূর্বদিকের লোকজনদের মধ্যে সর্বোত্তম। হযরত ওমর (رضي الله عنه) মজলিস থেকে উঠে সে দিকে অগ্রসর হলেন। তিনি তের জন উষ্ট্রারোহীর দেখা পেলেন। তিনি তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে তারা বললঃ আমরা বনী-আব্দুল কায়সের লোক।

[মুসনাদে আবু ইয়ালা ও বায়হাকী]


হাদিস ২:


وَاَخرَجَ اِبنُ سَعدٍ، عَن عُروَةَ اَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيهِ وَسَلَّمَ نَظَرَ اِلىٰ الأُفُقِ صَبِیحَةَ لَيلَةٍ قَدِمَ وَفدَ عَبدِ القَيسِ فَقَالَ: لَیَاتِینَ رَکبُُ مِنَ المَشرِقِ لَم یَکرَهُوا عَلَی الاِسلاَمِ قَد اِنضَوُا الِّرکَابَ وَاَفنَوُا الزَّادَ بِصَاحِبِهِم عَلاَمَةُُ اللَّهُمَّ اغفِر لِعَبدِ القَیسِ اَتَونِي لاَ یَسأَلُونِي مَالاً هُم خَیرُ أَهلِ المَشرِقِ فَجَاٶُوا عِشرِینَ رَجُلاً وَرَأسُهُ عَبدِ اللّٰهِ بِن عَوفِ الأَشَجِّ وَرَسُولَ اللّٰهِ صَلّٰی اللّٰهُ عَلَیهِ وَسَلَّمَ فِي المَسجِدِ ، فَسَلَّمُوا عَلَیهِ فَسَلَّمَ عَلَیهِم وَسَاَ لَهُم رَسُولُ اللّٰهِ صَلَّی اللّٰهُ عَلَیهِ وَسَلَّمَ: اَیُّکُم عَبدُ اللّٰهِ بِن عَوفِ الأَشَجِّ؟ فَقَالَ: اَنَا یَا رَسُولُ اللّٰهِ، وَکَانَ رَجُلاً دَمِیماً، فَنَظَرَ إِلَیهِ رَسُولُ اللّٰهِ صَلّی اللّٰهُ عَلَیهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: اِنَّهُ اُلا یَستَقِی فِی مسوك الرِّجَالِ إِنَّمَا یَحتَاجُ مِنَ الرَّجُلِ إِلیٰ اَصتَعَیَهِ لِسَانُهُ وَقَلبُهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللّٰهِ صَلَّی اللّٰهُ عَلَیهِ وَسَلَّمَ فِیكَ خَصلَتَانِ یُحِبُّهُمَا اللّٰهُ، قَالَ عَبدُ اللّٰهِ: وَمَا هُمَا؟ قَالَ: اَلحِلمُ وَالأِنَاُةُ. قَالَ اَشَیءُُ حَدَثَ  اَم جِبِلَّت عَلَیهِ؟ قَالَ: بَل جِبِلَّت عَلَیهِ

হযরত ইবনে সা'দ ওরওয়া থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) একদিন প্রভাত দিগন্তের পানে দৃষ্টিপাত করে বললেন ও উষ্ট্রারোহীদের একটি দল পূর্ব দিক থেকে আগমন করছে। তারা ইসলামের প্রতি অনীহা প্রকাশ করবে না। এ দীর্ঘ দুর্গম পথ অতিক্রম করতে যেয়ে তারা তাদের উটগুলোকে শীর্ণ করে ফেলেছে। অনেকের খাদ্য সামগ্রী নিঃশেষ হয়েছে। তাদের সরদারের একটি আলামত আছে। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাদের জন্যে এ দোয়া করলেনঃ হে আল্লাহ! আব্দুল কায়সকে ক্ষমা কর। তারা আমার কাছে দুনিয়া অন্বেষণ করতে আসেনি। তারা পূর্ব দিককার সর্বোত্তম মানুষ। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিশ ব্যক্তি আগমন করলেন। তাদের সরদার ছিলেন আব্দুল্লাহ্ ইবনে আউফ আল আশাজ্জ। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন মসজিদে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা এসে তাঁকে সালাম করলে তিনি জওয়াব দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন ও তোমাদের মধ্যে আব্দুল্লাহ্ ইবনে আউফ আল আশাজ্জ কে? তিনি আরয করলেনঃ ইয়া রাসুল্লাল্লাহ! আমি।

 এই আব্দুল্লাহ শারীরিক দিক দিয়ে দুর্বল ও দেখতে তেমন একটা আকর্ষণীয় ছিলেন না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর দিকে দৃষ্টিপাত করলে তিনি বললেনঃ পুরুষদের চামড়া দিয়ে না মশক তৈরি হয়, অন্য কোন কাজে আসে। তাদের কাছে রয়েছে দুটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তু-একটি জিহ্বা, অপরটি অন্তর । রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমার দু'টি স্বভাব আল্লাহ্ তা'আলা পছন্দ করেন আব্দুল্লাহ বললেন স্বভাব দু'টি কি? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ একটি সহনশীলতা, অপরটি গাম্ভীর্য। আব্দুল্লাহ্ জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ স্বভাবগুলোর পরে সৃষ্টি হয়েছে, না মজ্জাগত? উত্তর হল? না এগুলো তোমার মজ্জাগত স্বভাব।


হাদিস ৩:


واَخرَجَ الحَاكِمِ، عَن اَنَسٍ اِنَّ وَفدَ عَبدِ القَیسِ مِن أَهلِ هِجرٍ قَدِمُوا عَلیٰ رَسُولَ اللّٰهِ ﷺ، فَبَينَمَا هُم قُعُودَّ عِندَهُ إِذ أَقبَلَ عَلَيهِم فَقَالَ: لَكُم ثَمَرَةُُ تَدعُونَهَا كَذَا حَتَّى عَدَّ أَلوَانَ تَمَرِهِم اَجمَعُ، فَقَالَ لَهُ رَجُلُُ مِنَ القَومِ: بِأَبِي أَنتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ للّٰهِ ﷺ لَو کُنتَ وَالَدتَ فِي جَوفِ هِجرٍ مَا كُنتَ یَاَعلَمَ مِنكَ السَّاعَةِ أَشهَدُ اَنَّكَ رَسُولُ اللّٰهِ، فَقَالَ اِنَّ اَرضَكُم رُفِعَت لِي مُنذُ فَعَدتُم إِلىَّ فَنَظَرتُ مِن أَدنَاهَا إِلىٰ أَقصَاهَا فَخَيرُ تَمَرَٸِکُم البَرنِى يَذهَبُ الدَّاءَ وَلاَ دَاءَ فِيهِ


ইমাম হাকেম (রহঃ) হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন যে, হিজরের অধিবাসী বনী আব্দুল কায়েস রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কাছে আগমন করে। কথাবার্তার মধ্যে হুযুর রাসুল্লাল্লাহ (ﷺ) বললেন  তোমাদের দেশে অমুক ধরণের খেজুর আছে, যার নাম তোমাদের কাছে এই আর অমুক প্রকার খেজুরের প্রচলিত নামসহ উল্লেখ করলেন। প্রতিনিধি দলের এক ব্যক্তি বলল । আমার পিতামাতা আপনার সম্পর্কে আপনার প্রতি উৎসর্গ, যদি আপনি হিজরে ভুমিষ্ট হতেন, তা হলেও সেখানকার খেজুর সম্পর্কে আপনার জ্ঞান তার চেয়ে বেশী হত , যা এখন আছে। আমি সাক্ষ্যে দেই যে, আপনি আল্লাহর রসূল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ এখানে তোমাদের উপস্থিতির সময় তোমাদের ভূখন্ড আমাকে দেখানো হয়েছে এবং আমি সবকিছু দেখে নিয়েছি। তোমাদের এক প্রকার খেজুর আছে বরনী, যা অসুখ-বিসুখে ফলপ্রদ।

[ইমাম হাকেমঃ আল মুস্তাদরাক আল হাকেম]

 
Top