বিষয় নং-২০: দিবস নির্ধারণ করা


দেওবন্দী এবং গাইরে মুকাল্লিদ আহলে হাদীস পন্থিদের মতে, দিবস নির্ধারণ করা হারাম এবং বিদআত। আর আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতে দিবস নির্ধারণ করা জায়েয তথা বৈধ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

وَذَكِّرْهُمْ بِأَيَّامِ اللَّهِ

-“এবং তাদেরকে আল্লাহর দিবস সমূহ স্মরণ করিয়ে দাও।’’ (সূরা ইবরাহিম আয়াত নং-

وَاذْكُرُوا اللَّهَ فِي أَيَّامٍ مَعْدُودَاتٍ

-“এবং আল্লাহকে স্মরণ করে গণনাকৃত দিনগুলোতে।’’ (সূরা বাকারা, আয়াত নং-২০৩) পবিত্র কুরআনের পর আহলে বাইত এবং সাহাবায়ে কেরাম (رضي الله عنه) এর আক্বিদা নিম্নে বর্ণনা করা হল -২৭৫

টিকা━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━

  • ২৭৫. 

প্রতি বছরের শুরুর দিনকে নির্দিষ্ট করে প্রিয় নবীজি (ﷺ) ও সাহাবায়ে কেরাম উহুদ যুদ্ধের শুহাদাদের মাজার যিয়ারত করতেন। যেমনঃ


❏  হাদিসটি লক্ষ্য করুন:-


حَدَّثَنَا الْمُثَنَّى، قَالَ: ثنا سُوَيْدٌ، قَالَ: أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْتِي قُبُورَ الشُّهَدَاءِ عِنْدَ رَأْسِ الْحَوْلِ، فَيَقُولُ: السَّلَامُ عَلَيْكُمْ بِمَا صَبَرْتُمْ فَنِعْمَ عُقْبَى الدَّارِ. قَالَ: وَكَانَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرَ وَعُثْمَانَ يَفْعَلُونَ ذَلِكَ


-“মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম আত্-তায়মী (رحمة الله) বলেন: আল্লাহর রাসূল (ﷺ) প্রতি বছরের শুরুতে উহুদের যুদ্ধে শহিদগণের কবরে আসতেন। অতঃপর বলতেন: “আস-সালামু আলাইকুম বিমা ছাবারতুম ফানি’মা উকবা দারে”। তিনি বলেন, হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه), উমর (رضي الله عنه) ও উসমান (رضي الله عنه) অনুরূপ করতেন।” 

(তাফসিরে তাবারী, ১৩/৫১৩ পৃ. হা/২০৩৪৫, সূরা রা’দ এর ২৪ নং আয়াতের ব্যাখ্যায়; তাফসিরে ছা’লাভী, ৫ম খণ্ড, ২৮৭ পৃ:; তাফসিরে নিছাপুরী, ২য় খণ্ড, ২২৭ পৃ:; তাফসিরে কুরতবী, ৯ম খণ্ড, ৩১২ পৃ:; তাফসিরে আবু ছাউদ, ৫ম খণ্ড, ১৮ পৃ:; মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, ৩য় খণ্ড, হাদিস নং ৬৭১৬; তাখরিজু আহাদিছুল কাশ্শাফ, হা/৬৫১) 


এই হাদিসের রাবী مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ {মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম আত-তায়মী (رحمة الله)} একজন নির্ভরযোগ্য রাবী বা বর্ণনাকারী এবং বিখ্যাত তাবেঈ। যেমন- তাঁর ব্যাপারে নিচের বর্ণনা গুলো লক্ষ্য করুন:- 


❏ ইমাম শামসুদ্দিন যাহাবী (رحمة الله) তদীয় কিতাবে বলেন, مُحَمَّد بن إِبْرَاهِيم التَّيْمِيّ من ثِقَات التَّابِعين -“মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম আত তায়মী (رحمة الله)” বিশ্বস্ত তাবেঈগণের একজন।” (ইমাম যাহাবী: আল মুগনী ফিদ-দোয়াফা, রাবী নং ৫২০৩)।


❏ আল্লামা হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) বলেন,

قلت: وثقة الناس واحتج به الشيخان 

-“আমি (ইবনে হাজার আসকালানী) বলছি: লোকেরা তাকে বিশ্বস্ত বলেছেন। ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলীম (رحمة الله) তার উপর নির্ভর করেছেন।” (ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী: লিছানুল মিযান, ৫ম খণ্ড, ২০ পৃ:)। 


❏ ইমাম আজলী (رحمة الله) {ওফাত ২৬১ হিজরী} তদীয় কিতাবে বলেন,

محمد بن إبراهيم التيمي: مدني ثقة.

-“মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম আত্-তায়মী মাদানী’ বিশ্বস্ত রাবী।” (ইমাম আজলী: আছ-ছিক্বাত, রাবী নং ১৪৩২)। 


সুতরাং ‘মুহাম্মদ ইব্রাহিম আত্ তায়মী (رحمة الله)’ এর রেওয়ায়েত ছহীহ্ হিসেবে স্বীকৃত। আর এই ছহীহ্ রেওয়ায়েত হতে জানা যায় যে, প্রিয় নবীজি (ﷺ) প্রতি বছরের শুরুতে নির্দিষ্ট দিনে উহুদের যুদ্ধের শহিদগণের মাজার যিয়ারত করতেন, এমনকি হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه), হযরত উমর (رضي الله عنه) ও হযরত উসমান (رضي الله عنه) এরূপ আমল করেছেন।

━━━━━━━━━━o━━━━━━━━━━


রাসূলে পাক (ﷺ)’ আকিদা:

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন 

كَانَ رَسُوْلُ اَللهِ ﷺ يَصُومُ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ

-“রাসূলে পাক (ﷺ) সোমবার এবং বৃহস্পতিবারে রোযা রাখতেন।’’ ২৭৬

টিকা━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━

  • ২৭৬. 

খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, (ভারতীয় ১৭৯ পৃ.)১/৬৩৭ পৃ., হা/২০৫৫, নাসাঈ, আস-সুনান, ৪/২০৩ পৃ. হা/২৩৬৪ এবং আস-সুনানুল কোবরা, ৩/১৭৮ পৃ. হা/২৬৮৫, সুনানে ইবনে মাযাহ, হা/১৭৩৯, 


❏ অনুরূপ হাদিস হযরত হাফসা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে। (ইমাম নাসাঈ, আস-সুনান, ৪/২০৩ পৃ. হা/২৩৬৭, মুসনাদে আবি ই‘য়ালা, ১২/৪৬৬ পৃ. হা/৭০৭৩) 


❏ অনুরূপ মতনে হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতেও বর্ণিত আছে। (সুনানে ইবনে মাযাহ, ১/৫৫৩ পৃ. হা/১৭৪০, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ১৪/৯৮ পৃ. হা/৮৩৬১) 


❏ অনুরূপ হাদিস হযরত উসামা (رضي الله عنه) হতেও বর্ণিত আছে। (মুসনাদে আবি দাউদ তায়লসী, ২/২৩ পৃ. হা/৬৬৬, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ১/১২২ পৃ. হা/১৫৯, 


❏ ইমাম যিয়া মুকাদ্দাসী, আহাদিসিল মুখতার, ৪/১৪৩ পৃ. হা/১৩৫৭, তিনি বলেন- إِسْنَاده حسن -‘‘তিনি বলেন, সনদটি ‘হাসান’।) 


❏ অনুরূপ শব্দের হাদিস হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) হতেও বর্ণিত আছে। (ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ১০/১৩৮ পৃ. হা/১০২৩৩) 


❏ অনুরূপ শব্দের হাদিস হযরত আ‘লা ইবনে মুসায়্যিব (رحمة الله) তিনি তাঁর পিতার সূত্রে মারফু হিসেবে বর্ণনা করেছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ২/৩০০ পৃ. হা/৯২২৭) 


সাহাবী ও তাবেয়ীদের আমল:


❏ ইমাম ইবনে আবি শায়বাহ (رحمة الله) সংকলন করেন-

عَنْ خِلَاسٍ، أَنَّ عَلِيًّا كَانَ يَصُومُ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ

-‘‘তাবেয়ী খিলাস (رحمة الله) বলেন, নিশ্চয় আমিরুল মু‘মিনীন মাওলা আলী (رضي الله عنه) সোমবার এবং বৃহস্পতিবারে রোযা রাখতেন।’’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ২/৩০১ পৃ. হা/৯২৩৮) 


❏ তিনি আরও সংকলন করেন-

عَنْ زِرٍّ، عَنْ عَبْدِ اللهِ، أَنَّهُ كَانَ يَصُومُ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ

-‘‘তাবেয়ী যির্ (رحمة الله) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি  সোমবার এবং বৃহস্পতিবারে রোযা রাখতেন।’’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ২/৩০১ পৃ. হা/৯২৩৬) 


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-

عَنْ أَبِي عُقْبَةَ، قَالَ: كَانَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَصُومُ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ

-‘‘তাবেয়ী আবু উকবাহ (رحمة الله) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি  সোমবার এবং বৃহস্পতিবারে রোযা রাখতেন।’’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ২/৩০০ পৃ. হা/৯২৩০) 


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-

عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ كَانَ يَصُومُ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسَ

-‘‘তাবেয়ী ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ (رحمة الله) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইসলামের পঞ্চম খলিফা হযরত উমর বিন আবদুল আযিয (رضي الله عنه) এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে যে, তিনি  সোমবার এবং বৃহস্পতিবারে রোযা রাখতেন।’’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ, ২/৩০১ পৃ. হা/৯২৩৩)

━━━━━━━━━━o━━━━━━━━━━


সায়্যিদুনা আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْتِي مَسْجِدَ قُبَاءٍ رَاكِبًا وَمَاشِيًا، فَيُصَلِّي فِيهِ رَكْعَتَيْنِ

-‘‘রাসূলে পাক (ﷺ) প্রতি সপ্তাহের শনিবার মসজিদে কুবায় আসতেন কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো আরোহী হয়ে। সেখানে দুরাকআত নামায আদায় করতেন।’’  ২৭৭

টিকা━━━━━━━━━━━━━━━━━━━━

  • ২৭৭. 

সহীহ বুখারী শরীফ, ২/৬১ পৃ. হা/১১৯৩-১১৯৪, সহীহ মুসলিম শরীফ, ২য় খণ্ড, ১০১৬ পৃ. হা/১৩৯৯, 


❏ বিশুদ্ধ হাদিসে আছে,

عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَانَتْ تَزُورُ قَبْرَ عَمِّهَا حَمْزَةَ كُلَّ جُمُعَةٍ فَتُصَلِّي وَتَبْكِي عِنْدَهُ

-“আলী ইবনে হুছাইন তার পিতা হজরত হুছাইন ইবনে আলী (رضي الله عنه) এর সূত্রে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় প্রত্যেক জুময়ার দিনে ফাতেমা বিনতে রাসূলিল্লাহ (ﷺ) নবীর চাচা আমীর হামজা (رضي الله عنه) এর মাজার যিয়ারত করতেন। তার উপর সালাত আদায় করতেন ও তার কাছে কান্নাকাটি করতেন।” (মুস্তাদরাকে হাকেম, ১/৫৩৩ পৃ. হা/১৩৯৬; ইমাম বায়হাক্বী: আস-সুনানুল কোবরা, ৪/১৩১ পৃ. হা/৭২০৮) 


❏ ইমাম হাকেম (رحمة الله) হাদিসটিকে صحيح সহীহ্ বলেছেন। হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) এই হাদিস উল্লেখ করে লিখেছেন:  صحيح الإسنادএর সনদ সহীহ।” (হাফিজ ইবনে হাজার: ইত্তেহাফুল মিহরাত, হা/২৩৩১৩) 


❏ এ বিষয়ে আরেকটি রেওয়াত রয়েছে,

عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنِ الْبَجَلِيِّ، عَنِ الْكَلْبِيِّ، عَنِ الْأَصْبَغِ بْنِ نَبَاتَةَ: أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَتْ تَأْتِي قَبْرَ حَمْزَةَ

-“আছবাগি ইবনে নাবাতা (رحمة الله) বলেন: নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) এর কন্যা ফাতেমা (رضي الله عنه) হজরত আমীর হামজা (رضي الله عنه) এর মাজারে যিয়ারতে আসতেন।” (মুছান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদিস নং ৬৭১৭; ইমাম আইনী: উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, ৩৮২১ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়) সনদ সহীহ্।


❏ ইমাম উমর ইবনে শিবাহ বাসরী (رحمة الله) ওফাত ২৬২ হিজরী তদীয় কিতাবে ইহার আরেকটি সনদ উল্লেখ করেছেন, 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكَّارٍ قَالَ: حَدَّثَنَا حِبَّانُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ سَعْدِ بْنِ طَرِيفٍ، عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ، أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ رَسُولِ اللَّهِ، صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَتْ تَزُورُ قَبْرَ حَمْزَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ،

-“আবী জাফর বলেন, নিশ্চয় ফাতেমা বিনতে রাসূলিল্লাহ (ﷺ) আমীর হামজা (رضي الله عنه) এর মাজার যিয়ারত করতেন।” (ইমাম ইবনে শিবাহ: তারিখে মাদিনা, ১ম খণ্ড, ১৩২ পৃ:) 


❏ যেমন আরেকটি রেওয়াত লক্ষ্য করুন,

عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: كَانَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَزُورُ قَبْرَ حَمْزَةَ كُلَّ جُمُعَةٍ

-“জাফর ইবনে মুহাম্মদ তার পিতা ইমাম বাকের (رضي الله عنه) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: ফাতেমা বিনতে রাসূলিল্লাহ (ﷺ) প্রত্যেক জুময়ার দিন আমীর হামজা (رضي الله عنه) এর মাজার যিয়ারত করতেন।” (মুছান্নাফে আব্দুর রায্যাক, হাদিস নং ৬৭১৩)


এই হাদিস দ্বারা প্রমাণ হয়, স্বয়ং রাসূল (ﷺ) এর কন্যা এবং জান্নাতের মহিলাদের সর্দারনী হজরত ফাতেমা (رضي الله عنه) নিজেই হজরত আমীর হামজা (رضي الله عنه) এর মাজার নির্দিষ্ট করেই প্রতি জুমআর দিনে যিয়ারত করেছেন। উল্লেখ্য যে, হজরত আমীর হামজা (رضي الله عنه) এর মাজার হল উহুদ পাহাড়ের পাদদেশে।

━━━━━━━━━━o━━━━━━━━━━


সায়্যিদুনা কাব বিন মালেক (رضي الله عنه)’ আকিদা

তিনি বলেন-

أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَرَجَ يَوْمَ الخَمِيسِ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ وَكَانَ يُحِبُّ أَنْ يَخْرُجَ يَوْمَ الخَمِيسِ

-‘‘রাসূলে পাক (ﷺ) বৃহস্পতিবার তাবুক যুদ্ধে তাশরিফ আনেন, আর তিনি বৃহস্পতিবারে ছফর করকেই পছন্দ করতেন।’’  ২৭৮

  • ২৭৮. সহীহ বুখারী, ৪/৪৮ পৃ. হা/২৯৫০, খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, (ভারতীয় ৩৩৮ পৃ.) ২/১১৪২ পৃ., হা/৩৮৯২


উম্মুল মুমিনীন উম্মে সালামা (رضي الله عنه)’ আকিদা

তিনি বলেন-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُنِي أَنْ أَصُومَ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ أَوَّلُهَا الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيس

-‘‘রাসূলে পাক (ﷺ) আমাকে প্রতি মাসে তিনটি রোযা রাখার আদেশ করতেন, আর তা সোমবার বা বৃহস্পতিবার হতে শুরু হতো।’’ ২৭৯

  • ২৭৯. খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, (ভারতীয় ১৮০ পৃ.) ১/৬৩৭ পৃ. হা/২০৬০, আবু দাউদ শরীফ ২য় খণ্ড ৩২৮ পৃ: হা/২৪৫২, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ৪৪/৮২ পৃ. হা/২৬৪৮০


সায়্যিদুনা আবু যার গিফারী (رضي الله عنه) আকিদা

তিনি বলেন

إِذَا صُمْتَ مِنَ الشَّهْرِ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَصُمْ ثَلَاثَ عَشْرَةَ وَأَرْبَعَ عَشْرَةَ وَخَمْسَ عَشْرَةَ

-‘‘রাসূলে পাক (ﷺ) আমাকে প্রতি মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখ রোযা রাখতে বলেছেন।’’  ২৮০

  • ২৮০.খতিব তিবরিযি, মিশকাত শরীফ, (ভারতীয় ১৮০ পৃ.) ১/৬৩৭ পৃ. হা/২০৫৭,  জামে তিরমিযী, তৃতীয় খণ্ড ১২৫ পৃ: হা/৭৬১, নাসাঈ, আস-সুনান, হা/২৪২৬, আস-সুনানুল কোবরা, ৩/২০০ পৃ. হা/২৭৪৬, সহীহ ইবনে খুজায়মা, হা/২১২৮, ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ, ৩৫/২৬৩ পৃ. হা/২১৩৩৪, বায়হাকী, আস-সুনানুল কোবরা, ৪/৪৮৬ পৃ. হা/৮৪৪৪, সহীহ ইবনে হিব্বান, হা/৩৬৫৫


সুতরাং কুরআন-সুন্নাহর আলোকে প্রমাণিত হল দেওবন্দী এবং আহলে হাদীসগণ আহলে সুন্নাত ওয়াল জাম‘আত নয়।
 
Top