দূরের অসহায় ব্যক্তির আওয়াজ শুনা এবং তাকে সাহায্য করাঃ-

উম্মুল মু‘মিনীন হযরত মায়মুনা (رضي الله عنه) বলেন, একরাতে হুযূর (ﷺ) আমার হুজরায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি যথারীতি ‘তাহাজ্জুদ’ নামাযের জন্য উঠলেন এবং ওযূ করার স্থানে গমন করলেন-


فَسَمِعَتْهُ يَقُولُ فِي مُتَوَضَّئِهِ: لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ ثَلَاثًا , نُصِرْتَ نُصِرْتَ، ثَلَاثًا , فَلَمَّا خَرَجَ قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ , سَمِعْتُكَ تَقُولُ فِي مُتَوَضَّئِكَ: لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ ثَلَاثًا , نُصِرْتَ نُصِرْتَ، ثَلَاثًا , كَأَنَّكَ تُكَلِّمُ إِنْسَانًا , فَهَلْ كَانَ مَعَكَ أَحَدٌ؟ فَقَالَ: هَذَا رَاجِزُ بَنِي كَعْبٍ يَسْتَصْرِخُنِي


-‘‘অতঃপর আমি শুনতে পেলাম যে, তিনি ওযূখানায় তিনবার ‘লাব্বায়ক’ (আমি তোমার কাছে উপস্থিত) এবং তিনবার ‘নুসিরতা’  (তোমাকে সাহায্য করা হল) বললেন। যখন হুযূর (ﷺ) ওযূ করে বের হলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি শুনতে পেলাম- আপনি ওযূখানায় তিনবার ‘লাব্বায়ক’ এবং তিনবার ‘নুসিরতা’ বলেছেন। যেন আপনি কোন মানুষের সাথে কথা বলছিলেন। আপনার কাছে কেউ ছিল কি? তখন হুযূর (ﷺ) ইরশাদ করেন, ইতি রাজেয, আমার কাছে ফরিয়াদ করেছে।’’৩২২

{৩২২. ইমাম তাবরানী, মু‘জামুস সগীর, ২/১৬৭ পৃ. হা/৯৬৮, হাইসামী, মাযমাউয-যাওয়াইদ, ৬/১৬৩ পৃ. হা/১০২৩২, ইমাম তাবরানী, মু‘জামুল কাবীর, ২৩/৪৩৩ পৃ. হা/১০২০, দিয়ার বকরী, তারিখুল খামিস, ২/৭৭ পৃ., ইমাম বুরহান উদ্দিন হালবী, সিরাতে হালবিয়্যাহ, ৩/১০৪ পৃ. ইমাম ইসমাঈল ইস্পাহানী, দালায়েলুন নবুয়ত, ১/৩৭ পৃ. হা/৫৯, জুরকানী, শারহুল মাওয়াহেব, ৩/৩৮১ পৃ.}


আক্বিদা

উল্লেখ্য যে, তখন তিনি ছিলেন মক্কায় এবং হুযূর (ﷺ) ছিলেন মদিনায়। কিন্তু হুযূর (ﷺ) তার ফরিয়াদ শুনেছেন এবং তাকে সাহায্য করেছেন। ঘটনা ছিল এই- হুদায়বিয়ার সন্ধিসূত্রে বনী বকর কুরাইশের পক্ষ অবলম্বন করেছিল এবং খোযাআ গোত্র হুযূর আকরাম (ﷺ)‘র পক্ষ অবলম্বন করেছিল। আর এ পক্ষাবলম্বন সেই চুক্তির ভিত্তিতে ছিল যে, আগামী দশ বছর পারস্পরিক কোন যুদ্ধ হবে না। কিন্তু কুরাইশরা সুন্ধি ও তার শর্তাবলী ভেঙ্গে ফেলল এবং বনী বকর ইত্যাদির সাথে মিলে মুসলিম নিধনের সংকল্প করেছিল। 

(ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, ইসাবা ফি তামিযিস সাহাবা, ২/৫৩৬ পৃ.)


সেই মুহূর্তে হযরত আমর ইবনে সালেম রাজেয (رضي الله عنه) মক্কা মুর্কারমা থেকে ফরিয়াদ করলেন এবং হুযূর (ﷺ)‘র কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেন, যার উত্তরে নবী (ﷺ) তিনবার ‘লাব্বায়ক’ এবং তিনবার ‘নুসিরতা’ বলে তাকে সাহায্য করেছেন। বুঝা গেল রাসূল (ﷺ) দূরে কাছে সব কিছুই শুনেন এবং দেখেন। ৩২৩

{৩২৩. সম্পাদক কর্তৃক সংযোজিত।}
 
Top