যৌতুক প্রথা


ইসলামে যৌতুক প্রথা নিষিদ্ধ। এটি একটি নির্যাতনমূলক এবং জঘন্য কুপ্রথা। কনে পক্ষ থেকে বিবাহের বিনিময়ে শর্ত ও দাবী করে বরপক্ষ আর্থিক ধন-সম্পদ, গাড়ি, বাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, ফার্নিসার ইত্যাদি আদায় করাকে যৌতুক বলে। তবে কন্যাপক্ষ বর বা বরপক্ষকে স্বেচ্ছায় খুশীমনে উপহার, হাদিয়া স্বরূপ প্রদান করাকে জেহেয বলা হয়। এটি বৈধ। কিন্তু শর্তারোপ ও বাধ্যতামূলকভাবে কন্যাপক্ষ থেকে কিছু গ্রহণ করা শরীয়ত গর্হিত হারাম। বর্তমানে আমাদের সমাজে যৌতুক একটি মারাত্মক আর্থ-সামাজিক ব্যধিরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। এটি একটি নির্লজ্জ ব্যাপার। যৌতুক প্রদানে অপরারগতার কারণে কতো কন্যা কুমারীত্ব বরণ করতে হচ্ছে, কতো মহিলার বিবাহ প্রদান অসম্ভব হয়ে উঠেছে, কতো বিবাহিতা মহিলা অমানবিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, কতো রমনীর সংসার ভেঙেছে, কতো নারী আত্মহত্যা করেছে এবং কতো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তা হিসাব করা মুশকিল। অশিক্ষিত সমাজের পাশাপাশি শিক্ষিত সমাজেও এ ব্যাধি পরিলক্ষিত হয়। এটি একটি নিরব ছিনতাই, চাঁদাবাজী এবং ভদ্রতার অন্তরালে অভদ্র আচরণ, কুসংস্কার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। কোন সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষ দাবীপূর্বক যৌতুক আদায় করতে পারেনা। এর বিরোদ্ধে সামাজিক ও সম্মিলিতভাবে আন্দোলন ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন। এটা যে অত্যন্ত নিন্দনীয়, গর্হিত, মন্দ, নির্লজ্জ কুপ্রথা সে বিষয়ে জনসচেতনতার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে পত্রিকা ও মিডিয়া, আলিম-উলামা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। যৌতুক গ্রহণকারী ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে বয়কট করে শাস্তির আওতায় আনা জরুরী। এ বিষয়ে বিদ্যমান আইনকে যথাযথ বাস্তবায়ন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলে এই কুপ্রথা বন্ধ করা সম্ভব হবে।


বিয়ের পূর্বাপর প্রচলিত কুপ্রথা


আমাদের দেশে কোনো কোনো এলাকায় বিবাহের পূর্ব রাতে গায়ে হলুদ নামক একটি অনুষ্ঠান করতে দেখা যায়। এতে অনেক বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিলক্ষিত হয়। যেমন কুলাতে বদনা রেখে বদনার উপর চেরাগ স্থাপন করে সোহাগ কেটে কেটে বরের ভারীরা ঐ আগুনে আংটি লাগিয়ে বরের কপালে দাগ লাগানো। বরপক্ষ থেকে কনের জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে কনের বাড়িতে আসা এবং কনেপক্ষ থেকে যুবক-যুবতীরা বরের জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে বরের বাড়িতে যাওয়া এবং বরপক্ষের লোকেরা কনেকে আর কনে পক্ষের লোকেরা বরকে গোসল করানো এবং মেহেদী লাগানো। এই গায়ে হলুদকে কেন্দ্র করে আরো কতো ধরনের বিজাতীয় কর্মকাণ্ড ও বেহায়াপনা আচার অনুষ্ঠান করা হয় যা ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

 
Top