মহিলারা জাহান্নাম থেকে কীভাবে রক্ষা পাবে?


হযরত জাবের (رضي الله عنه) বলেন, এক ঈদে আমি নবী করিম (ﷺ)  -এর সাথে ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)আযান ইক্বামত ব্যতীত খুৎবা দেয়ার পূর্বে নামায আদায় করলেন। তারপর হযরত বেলাল (رضي الله عنه) -এর গায়ে হেলান দিয়ে ভাষণ দেয়া শুরু করলেন। ভাষণে হুজুর   আল্লাহকে ভয় করতে এবং তাঁর আনুগত্য করার আদেশ করলেন। এভাবে তিনি পুরুষদের উপদেশ দিলেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ)মহিলাদের কাছে তশরীফ নিলেন এবং তাদেরকে নছীহত করতে গিয়ে বলেন, তোমরা দান-খয়রাত কর। কারণ তোমরাই জাহান্নামে বেশি যাবে। মহিলাদের পেছন থেকে একজন অতি দুর্বল (মহিলা) যার গালের চামড়া ঝুলে পড়েছিল সে বলল, হে আল্লাহর নবী (ﷺ)! তা কেন? রাসূলুল্লাহ (ﷺ)বলেন, কারণ তোমরা মহিলারা বদনাম কর বেশি স্বামীর নাশোকরিয়া কর। তারপর মহিলারা নিজ নিজ অলংকার ছদকা করতে লাগল এবং হযরত বেলাল (رضي الله عنه) -এর কাপড়ের উপর কান বালা এবং আংটি ফেলতে লাগল। ২৬৫

২৬৫.মুসলিম খণ্ড. ১, পৃ. ২৯০

 

উল্লেখিত হাদীস দ্বারা বুঝা গেল যে, মহিলাদের নাশোকরীর প্রতিকার যে সমস্ত কর্মের কারণে জাহান্নাম আবশ্যক হয়ে যায় ছদকা ফিতরার কারণে এগুলোর প্রতিকার হয়। ছদকা ফিতরা ঐ সমস্ত মহান কর্মের নেক আমল যেগুলো দ্বারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং নাজাত পাওয়া যায়। প্রতিটি কর্মেরই একটি প্রভাব রয়েছে। অতএব, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা পাঠ করলে অধিক চিন্তা বিদূরিত হয়।


ইস্তেগফারের দ্বারা আয় রুজিতে বরকত হয়। সদকার দ্বারা জীবনে নানা দিকে বরকত হয়। নিদ্রার সময় সূরা মূলক পাঠ করলে কবর আযাব লাঘব হয়। চাশ্ত নামায দ্বারা রুজিতে বরকত হয়। বেশি বেশি দরুদ পাঠে কিয়ামতের দিন নবী করিম (ﷺ) -এর অতি নিকটে থাকা যাবে। অনুরূপ দান খয়রাত দ্বারা আল্লাহর ক্রোধ শীতল হয়, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিপদাপদ বিদূরিত হয়। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ)হযরত আয়েশা  (رضي الله عنه) কে গুরুত্বসহ বলেছেন, খেজুরের একটি আঁটি হলেও দান করে জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাক।


দুরা’কাত নামায পড়ে জাহান্নাম থেকে বাঁচুন -এ কথা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেননি। অবশ্য নামায গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের মধ্যে গণ্য। এর সওয়াব অনেক। কিন্তু দান-খয়রাত বিপদাপদ মুসীবত এবং জাহান্নাম থেকে রক্ষার এক বিশেষ প্রভাব। সুতরাং হাদীস শরীফে এসেছে, দান-খয়রাত ইত্যাদি সত্তরটি বিপদ দূর করে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিপদ হল কুষ্ঠ রোগ থেকে রক্ষা করে।২৬৬

২৬৬.জামে ছগীর, পৃ.৩১৭

 

এক হাদীসে এসেছে যে, ছদকা গুনাহকে এমনভাবে নিঃশেষ করে দেয় যেমনিভঅবে পানি আগুনকে ধ্বংস করে দেয়। ২৬৭

২৬৭.তারগীব, খণ্ড ২, পৃ. ১১

 

আরেক হাদীসে এসেছে, ছদকা আল্লাহর ক্রোধকে প্রশমিত করে। ২৬৮

২৬৮.তারগীব, পৃ. ১২

 

অন্য হাদীসে এসেছে, ছদকা জাহান্নামকে শীতল করে দেয়।২৬৯

২৬৯.তারগীব, খণ্ড ২, পৃ. ২০

 

এ জন্যই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মহিলাদেরকে দান-খয়রাত করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। সুতরাং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর যুগের মহিলারা তা বুঝতে পেরে তারা তাদের অলংকারাদি দান করতে থাকেন।


বর্তমানে আমাদের সমাজের মহিলারা মোটেই দান-খয়রাত করতে চায় না। শয়তান চায় যে, মহিলারা জাহান্নাম থেকে না বাঁচুক। তাই সে তাদেরকে দান-খয়রাত করতে নানাভাবে বাধা দেয়। ছদকার কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ নেই। যাই হোক যতটুকুই হোক দান করা যায়। নিজের পড়নের কাপড় দান করা যায়। দান করার মত বস্তু নিজের কাছে না থাকলে স্বামীর কাছ থেকে হাওলাত নিয়ে হলেও দান করুন। এখন যাই হোক দান করুন কাল কিয়ামতের দিন জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারবেন।

 
Top