বিষয় নং-১০: শায়খ আলবানীর ধোঁকা থেকে সাবধান!


আমি আমার এ গ্রন্থে যাদের  খণ্ডন করেছি তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন আহলে হাদিসের তথাকথিত ইমাম নাসিরুদ্দীন আলবানী (মৃত্যু. ১৪২০ হি.)। এ লোকটি ১৯১৪ ঈসায়ী সালে ইউরোপের একটি দেশ আলবেনিয়ায়র রাজধানী কুদরাহ্তে জন্ম গ্রহণ করেন। আলবেনিয়ায় জন্ম গ্রহণ করার কারণে তাকে আলবানী বলা হয়। তার পুরো নাম হলো আবু ‘আবদুর রাহমান মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন আলবানী’। তার পিতার নাম নূহ নাতাজী আলবানী আল-হানাফী। তিনি ছিলেন তৎকালিন সময়ের একজন প্রসিদ্ধ হানাফী আলেম। আলবানীও প্রাথমিক যুগে হানাফী ছিলেন এবং তার সম্মানিত পিতার বন্ধু শায়খ সায়ীদ আল-বুরহানীর নিকট সে হানাফি মাযহাবের অনেক ফিক্হের গ্রন্থ অধ্যায়ন করেন।  ৮২

➥৮২. যা আমি লিখলাম সেগুলো হুবহু আহলে হাদিস আবুল কালাম আযাদ আলবানীর জীবনীতে এবং তার একটি আরবী পুস্তকের বাংলা অনুবাদ ‘‘ছহীহ হাদিসের পরিচয় ও হাদীছ বর্ণনার মূলনীতি’’ বইয়ের ৭-৮ পৃষ্ঠায় তা লিখেছেন। (আযাদ প্রকাশন, আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম) এ ছাড়া সৌদি আরব থেকে তাঁর আরাবীতে বিশাল জীবনী গ্রন্থ ‘‘সাবাতু মুয়ালাফাতিল আলবানী’’ (যা লিখেছেন আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ আশ্-শামরানী) বের হয়েছে সেখানেও লিখা হয়েছে তিনি প্রথমে হানাফি মাযহাবের অনুসারী ছিলেন পরে মুজতাহিদ হয়ে গেছেন। (দেখুন-পৃ. ২ ও ১৬)


পরে সে নিজে পথভ্রষ্ট হয়ে সকল মাযহাবকেই অস্বীকার করে বসেন এবং মাযহাব মানাকে হারাম, শিরক পর্যন্ত ঘোষণা করে বসে। অথচ তার সম্মানিত পিতা ও সে নিজেও হানাফী মাযহাবের অনুসারী ছিল। 

আলবানী এমন কোন হাদিস গবেষক নয়, তার অধিকাংশ সময় কেটেছে ঘড়ি মেরামত করে।  

➥৮৩. আবুল কালাম আযাদ আলবানীর জীবনীতে এবং তার একটি আরবী পুস্তকের বাংলা অনুবাদ ‘‘ছহীহ হাদিসের পরিচয় ও হাদীছ বর্ণনার মূলনীতি’’ বইয়ের ৭ পৃষ্ঠায় তা লিখেছেন। (আযাদ প্রকাশন,  শাহী জামে মসজিদ, আন্দরকিল্লা, চট্টগ্রাম)


আহলে হাদিসগণ ঘড়ির ডাক্তারসহ বিভিন্ন ডাক্তারদের কথা মানতে তাদের কোন অসুবিধা হয় না, কিন্তু আমরা একজন তাবেয়ী ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) এর কথা মানলে তাদের এত গাঁ জ্বলা, অথচ হাদিসের পরিভাষায় উনার কথাও হাদিস। 


❏ আলবানীর অনুসারীরা তার প্রশংসায় লিখেছে যে-‘‘পৃথিবীর মুসলিমদের সম্মুখে বিশুদ্ধ সুন্নাহ উপস্থাপন কারার তাওফীক যে কয়জন বান্দাকে দিয়েছেন তাদের মধ্যে হাফিয যাহাবী (رحمة الله), ও হাফিয ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله)-এর পর আল্লামা মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন (رحمة الله)-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা যেতে পারে।’’   ৮৪

➥৮৪. আবুল কালাম আযাদ, ছহীহ হাদিসের পরিচয় ও হাদীছ বর্ণনার মূলনীতি, ৭ পৃষ্ঠা


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! তাদের কাছে হাফেযুল হাদিস ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله)সহ অনেক বিজ্ঞ হাদিস বিশারদ যারা ইলমে হাদিসের জন্য নিজের জীবনকে অতিবাহিত করে দিয়েছেন সে মুহাদ্দিসদের কোন  নাম তাদের মুখে আসলো না,  আসলো পৃথিবীর সবচেয়ে মনগড়া তাহকীককারী আলবানী নাম। অথচ সে ইমাম যাহাবী (رحمة الله)‘র সমালোচনা করেছে,  যা নিম্নে আলোচনা করা হবে।

আলবানী অসংখ্য মুতাওয়াতির পর্যায়ের হাদিসকেও দ্বঈফ ও মওদ্বু বা জাল বলে তার বিভিন্ন গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। সেগুলো আমি এখানে দ্বিতীয় বার আলোচনা করতে চাই না, কারণ এ গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন হাদিসের আলোচনায় তার ভুয়া তাহক্বীকের জবাবে আলোচনা হবে।


যে কারণে আলবানীর তাহকীক অনুসরণ করা হবে না:


ক. ইমাম-মনীষীদের সমালোচনা: এ আলবানী নামক লোকটির সমালোচনা থেকে পৃথিবীর বিজ্ঞবিজ্ঞ ইমামগণও বাঁচতে পারে নি। সে তার ‘সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্ দ্বঈফাহ’ গ্রন্থের বিভিন্ন স্থানে ইমাম তিরমিযীর ব্যাপারে লিখেছেন, ইমাম তিরমিযী তাঁর সুনানে কত জাল হাদিসকে যে হাসান, সহীহ বলে ফেলেছেন তার কোন হিসাব নেই। ৮৫

➥৮৫. আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফাহ ওয়াল মাওদ্বুআহ, ১/৮৫ পৃ. হা/২৪


আলবানী নামক এ লোকটির দৃষ্টিতে একটি হাদিস সহীহ নয়, অথচ অন্যান্য মুহাদ্দিস তাকে সহীহ বলায় তিনি হাদিসের বিখ্যাত তিন জন হাফেযুল হাদিসের তথা 


❏ ইমাম হাকিম নিশাপুরী, ইমাম যাহাবী, ইমাম মুনযিরী (رحمة الله) সমালোচনায় লিখেন- 

وقال الحاكم: صحيح الإسناد ! ووافقه الذهبي! وأقره المنذري في  الترغيب (৩/১৬৬)! وكل ذلك من إهمال التحقيق، والاستسلام للتقليد، وإلا فكيف يمكن للمحقق أن يصحح مثل هذا الإسناد

-‘‘ইমাম হাকিম (رحمة الله) বলেছেন,  হাদিসটির সনদ সহীহ। ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তাঁর সাথে একত্মাতা পোষণ করেছেন। ইমাম মুনযিরী (رحمة الله) ‘তারগীব ও তারহীব’ নামক কিতাবে তার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর এটি হয়েছে, তত্ত্ব-বিশ্লেষণের প্রতি উদাসীনতা, তাক্বলীদের প্রতি আত্মসমর্পণ (অন্ধানুকরণ),  নতুবা একজন  বিশ্লেষণধর্মী আলেম কিভাবে একে সহীহ বলতে পারেন!।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফাহ ওয়াল মাওদ্বুআহ, ৩/৪৭৯ পৃ. হা/১২৫৯) 


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আলবানীর যদি একটুও লজ্জাবোধ থাকতো এমন মহান তিনজন ইমামের সমালোচনা করতে পারতেন না। অথচ এ সমস্ত আলেমদের সে ছাত্র হওয়ারও যোগ্য নন। ইমাম যাহাবী (رحمة الله)-এর লিখিত আসমাউর রিজালের গ্রন্থ পড়ে সকল মুহাদ্দিসদের হাদিসের সনদ বিশ্লেষণ করতে হয় সেই মহান ইমাম যাহাবী (رحمة الله)-এর সমালোচনা! 


❏ তার এ গ্রন্থের আরেক স্থানে হাফেযুল হাদিস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله)‘র সমালোচনা করতে গিয়ে লিখেন-

فيا عجبا للسيوطى كيف لم يخجل من تسويد كتابه الجامع الصغير بهذا الحديث.....

-‘‘কী আশ্চর্য! জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) তাঁর জামেউস সগীরে কিভাবে এ হাদিস উল্লেখ করতে একটু লজ্জাবোধ করলেন না! (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফা,  ৩/৪৭৯পৃ. হা/১৩১৪) নাউযুবিল্লাহ! 


❏ তিনি তার এ পুস্তকে ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله)‘র গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে বলেন-

وجعجع حوله السيوطى

-‘‘ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) হাকডাক (কোলাহলপূর্ন, হট্ট গোলপূর্ন) ছেড়ে থাকেন।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফা, ৪/১৮৯পৃ. হা/১৬৯৫) 


দেখুন ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله)‘র মত একজন হাফেযুল হাদিস, মুজাদ্দিদের তাহক্বীক তাঁর কাছে নাকি হট্টগোল করার মত! একজন হাদিসের খাদেম কি এ বেয়াদবি সহ্য করতে পারেন! 


❏ সে তাঁর সম্পর্কে আরেক স্থানে লিখেন-

وقعقع حوله السيوطي في اللآلي؛ فلم يصنع شيئاً كغالب عادته! وقد أقره في الجامع الكبير. وتساهل بعضهم فحسنه!

-‘‘ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি (رحمة الله) এর লা-আলিল মাসনূআ এর হাওয়ালা কোলাহলপূর্ণ, .......তিনি এ (তার দৃষ্টিতে যঈফ) হাদিসকে হাসান বলার ক্ষেত্রে ঢিলেমীর পরিচয় দিয়েছেন।’’ (আলবানী,  সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ,  ১১/৬২৪ পৃ. হা/৫৩৭৩) 


❏ সে ইমাম তাজুদ্দীন সুবকী (رحمة الله) যিনি ইমাম তকি উদ্দিন সুবকী (رحمة الله)‘র ছেলে এবং বিজ্ঞ হাদিস বিশারদ, হাফেযে হাদিস আলেম ছিলেন; তাঁর সমালোচনা করতে গিয়ে লিখেন-

 لكنه دافع عنه بوازع من التعصب المذهبى لا فائدة كبرى من نقل كلامه وبيان مافيه من التعصب

-‘‘মাযহাব অনুসরণের গোঁড়ামী তাকে প্ররোচিত করেছে। তাঁর কথা উল্লেখ করে এবং তাঁর গোঁড়ামির কথা আলোচনা করার মধ্যে তেমন  উলে­যোগ্য কোনো উপকারিতা নেই।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ্-দ্বঈফাহ, ২/২৮৫ পৃ.) 


সে আরও অসংখ্য হক্কানী ইমামের সমালোচনা করেছে; তার অসংখ্য কুফুরী আক্বীদা  এবং তার ভূয়া তাহক্বীকের জবাবে আমি ইনশা আল্লাহ! শীঘ্রই বিস্তারিতভাবে বই প্রকাশ করবো। 


❏ আলবানী পৃথিবী বিখ্যাত দুই হাদিসের মহান ইমাম সম্পর্কে লিখেন-

فلا يفيد بعد الاطلاع على هذا أن ابن خزيمة أخرجه، لا سيما وهو معروف عند أهل المعرفة بهذا الفن أنه متساهل في التصحيح،على نحو تساهل تلميذه ابن حبان، الذي عرف عنه الإكثار من توثيق المجهولين

-‘‘ইমাম ইবনে খুজায়মা (رحمة الله) এটিকে সহীহ বলে সংকলন করার মধ্যে কোনো ফায়েদা নেই, হাদিস শাস্ত্র সম্পর্কে পূর্ণজ্ঞাত লোকজন জানেন যে, ইমাম ইবনে খুজায়মা (رحمة الله) হাদিসকে সহীহ বলার ক্ষেত্রে বেশি শিথিলতাকারী, এমনিভাবে হাদিস সহীহ বলার ক্ষেত্রে শিথিলতাকারী হলেন তাঁর ছাত্র ইমাম ইবনে হিব্বান। তাকে অধিকাংশ মুহাদ্দিস মাজহুল রাবীকে সিকাহ বলার ব্যক্তি হিসেবেই চিনেন।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ, ৩/৪০২ পৃ. হা/১২৪৭-এর আলোচনা) 


❏ বিখ্যাত হাদিসের ইমাম, ইমাম হাকেম নিশাপুরী (ওফাত. ৪০৫ হি.)-এর নিকট একজন রাবী গ্রহণযোগ্য পর্যায়ের বলে তিনি তার একটি হাদিসকে সহীহ বলেছেন, এজন্য আলবানী তাঁর সমালোচনায় লিখেন-

ولذلك فقد أخطأ الحاكم خطأ فاحشا حين قال:

" هذا حديث صحيح الإسناد ! واغتر به الفقيه الهيتمي، فصححه في كتابه أسنى المطالب في صلة الأقارب  (ق ৪১/১)

-‘‘এটি হাকেমের মারাত্মক ভুল যে, তিনি কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য করেছেনঃ এ হাদিসের সনদ সহীহ। আর ফকীহ হাইতামী তার কথার কারণে ধোঁকায় পড়ে তার ‘আসনাল মাতালিব ফি সিলাতিল আকারিব’ গ্রন্থে (ক্বাফ, ১/৪১ পৃষ্ঠায়) সহীহ বলেছেন।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ, ৩/৪৫৮ পৃ. হা/১২৯৪)


❏ বিখ্যাত হাদিস বিশারদ আল্লামা শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ (رحمة الله) সম্পর্কে আলবানী লিখেন-

اشل الله يدك وقطع لسانك يدعو على العلامة الشيخ عبد غدة ويقول عنه:انه غدة كغدة البعير ثم يقول مستهزئا ضاحكا:اتعرفون غدة

-‘‘আল্লাহ্ তোমার হাত অবশ করে দিক এবং তোমার জিহবাকে কর্তন করুক। (কাশফুন নিকাব, পৃষ্ঠা-৫২) 


এ রকম শতশত পূর্বের ও সমসাময়িক মুহাদ্দিসের সে ব্যাপারে কঠিন মন্তব্য করেছে। 


খ. রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারত নিয়ে জঘন্য বক্তব্য:


❏ ইবনে তাইমিয়ার এ বাতিল মতবাদকে প্রচারকারীর অন্যতম শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারত সম্পর্কে লিখেছেন-

وأحاديث زيارة قبره صلى الله عليه وسلم كلها ضعيفة لا يعتمد على شيء منها في الدين، ولهذا لم يروأهل الصحاح والسنن شيئا منها، وإنما يرويها من يروي الضعاف كالدارقطني والبزار وغيرهما.

-‘‘রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারত সম্পর্কিত সকল হাদিস যঈফ। দ্বীনি বিষয়ে এগুলোর কোনটির উপরেই নির্ভর করা যায় না। সে কারণেই এ বিষয়ক হাদিস নির্ভরযোগ্য সহীহ, সুনান গ্রন্থের কোনো লেখক এ সংক্রান্ত কোনো হাদিস তাদের গ্রন্থগুলোতে বর্ণনা করেননি। সেগুলো বর্ণনা করেছেন তারাই যারা দুর্বল হাদিস বর্ণনা করে থাকেন যেমন- দারাকুতনী, বায্যার আরোও অনেকে।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাসিদ দ্বঈফাহ, ১/১২৩ পৃ. হা/৪৭) 


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! রাসূল (ﷺ)-এর রওজা যিয়ারতের বিরোদ্ধে যত কূটকৌশলই রয়েছে সবই প্রয়োগ করছে এ ইবনে তাইমিয়ার বাতিল মতবাদ প্রচারকারী এবং টাকার কিনা এ মুফতিগণ। 


গ. সহীহ বুখারী-মুসলিমের হাদিসকে যঈফ বলার দৃষ্টতা:


আহলে হাদিসদের এ ইমাম সহীহ বুখারী মুসলিমের অনেক হাদিসকে যঈফ বলে চালিয়ে দিয়েছে, আর তাঁর দৃষ্টিতে যঈফ হাদিস জাল হাদিসেরই প্রকারের অর্ন্তভুক্ত। 


✦ সহীহ বুখারীতে রয়েছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: قَالَ اللَّهُ تَعَالَى: ثَلاَثَةٌ أَنَا خَصْمُهُمْ يَوْمَ القِيَامَةِ، رَجُلٌ أَعْطَى بِي ثُمَّ غَدَرَ، وَرَجُلٌ بَاعَ حُرًّا فَأَكَلَ ثَمَنَهُ، وَرَجُلٌ اسْتَأْجَرَ أَجِيرًا فَاسْتَوْفَى مِنْهُ وَلَمْ يُعْطِهِ أَجْرَهُ

-‘‘(তথ্য সূত্র: ইমাম বুখারী, আস-সহীহ, ৩/৯০ পৃ. হা/২২৭০) 


✦ এ সহীহ হাদিস বিষয়ে আলবানী লিখেছেন-

رواه أحمد والبخارى عن أبي هريرة. (ضعيف)

-‘‘হাদিসটি ইমাম আহমদ (رحمة الله) ও বুখারী (رحمة الله) হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন, হাদিসটি যঈফ।’’ (আলবানী, যঈফু জামেউস সগীর ওয়া যিয়াদাহ, ১/৫৯০ পৃ. হা/৪০৫০) 


দেখুন তিনি সহীহ বুখারী হাদিসের উপর কিভাবে আঙুল তুলেছেন! 


✦ অথচ আলবানী মিশকাতের তাহকীকে একে সহীহ বলেছেন! (আলবানী, তাহকীকে মিশকাত, ২/৮৯৯ পৃ. হা/২৯৮৪, কিতাবুল ইজারাহ) 


সহীহ বুখারীর আরও অনেক সহীহ হাদিসকে সে এভাবে যঈফ বলেছেন। এবার আমি সহীহ মুসলিম শরীফ থেকে একটি উদাহরণ পেশ করবো।


✦ ইমাম মুসলিম (رحمة الله) সংকলন করেন-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: إِذَا قَامَ أَحَدُكُمْ مِنَ اللَّيْلِ، فَلْيَفْتَتِحْ صَلَاتَهُ بِرَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ

-‘‘(তথ্য সূত্র: ইমাম মুসলিম, আস-সহীহ, ১/৫৩২ পৃ. হা/৭৬৮)


✦ এ সহীহ হাদিস বিষয়ে আলবানী লিখেছেন-

رواه الإمام أحمد ومسلم عن أبي هريرة. (ضعيف)

-‘‘হাদিসটি ইমাম আহমদ (رحمة الله) ও মুসলিম (رحمة الله) হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেছেন, হাদিসটি যঈফ।’’ (আলবানী, যঈফু জামেউস সগীর ওয়া যিয়াদাহ, ১/৮৯ পৃ. হা/৬১৯) 


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! সে সহীহ বুখারী মুসলিমের এমন অনেক সহীহ হাদিসকে জাল যঈফ বলেছেন, যার বিস্তারিত আলোচনা আমার লিখিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।


ঘ. আলবানী নিজেই নিজেকে খণ্ডন:


আলবানী এক হাদিসকে যঈফ বলে নিজেই আবার তার অপর আরেক গ্রন্থে নিজের মতকে রদকে রদ করে সহীহ বলেন, যা কোনো নির্ভরযোগ্য আলেমের কাজ নয়। এ বিষয়ে আমি কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি। 


১. খতিব তিবরিযি (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-

وَعَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: الْجُمُعَةُ حَقٌّ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ فِي جَمَاعَةٍ إِلَّا عَلَى أَرْبَعَةٍ: عَبْدٍ مَمْلُوكٍ أَوِ امْرَأَةٍ أَوْ صَبِيٍّ أَوْ مَرِيضٍ

-‘‘(তথ্য সূত্র: সুনানে আবি দাউদ, ১/২৮০ পৃ. হা/১০৬৭) এ হাদিসকে আলবানী স্ত্রী লোকদের মসজিদে গমন নিষেধ প্রমাণ হওয়ায় মিশকাতের তাহকীকে একে যঈফ বলে উড়িয়ে দিতে চেয়েছেন। (আলবানী, তাহকীকে মিশকাত, ১/৪৩৪ পৃ. হা/১৩৭৭, মাকতুবাতুল ইসলামী, বয়রুত, লেবানন, প্রকাশ. ১০৮৫ খৃ.)। 


❏ অপরদিকে আলবানী এ হাদিসকে তার একাধিক গ্রন্থে সহীহ বলে তাহকীক করেছেন। (আলবানী, ইরওয়াউল গালীল, ৩/৫৪ পৃ. হা/৫৯২, সহীহ আবু দাউদ, হা/১০৬৭) 


পাঠকবর্গ! আপনারাই চিন্তা করুন সে কেমন তাহকীককারী! 


২. ইমাম আবু দাউদ ও খতিব তিবরিযি (رحمة الله)সহ আরও অনেকে সংকলন করেন-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ্রالْجُمُعَةُ عَلَى كُلِّ مَنْ سَمِعَ النِّدَاءَ

-‘‘যে জুম‘আর আযান শুনবে তার জন্যই জুম‘আ।’’ 

(তথ্য সূত্র: ইমাম আবু দাউদ, আস-সুনান, ১/২৭৮ পৃ. হা/১০৫৬) 


❏ অপরদিকে আলবানী এ হাদিসকে তার অন্য গ্রন্থে একে (حسن) ‘হাসান’ বলে তাহকীক করেছেন। 

(আলবানী, ইরওয়াউল গালীল, ৩/৫৮ পৃ. হা/৫৯৩) 


পাঠকবর্গ! আপনারাই চিন্তা করুন সে কেমন তাহকীককারী!

তার বিষয়ে এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, যার বিস্তারিত আমার লিখিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।


ঙ. বুখারী-মুসলিমের রাবীকে যঈফ বলা:


আহলে হাদিসদের ইমাম আলবানীর তাহকীক পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে সহীহ বুখারী-মুসলিমের অসংখ্য রাবীকে যঈফ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে আমি কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরছি। 


১. আলবানী হযরত উমর (رضي الله عنه)-এর বর্ণিত একটি হাদিসের পর্যালোচনা করতে গিয়ে লিখেন-

وأبو مسلم الأنصاري هذا المحمر لم أعرفه.

-‘‘সনদে আবূ মুসলিম নামে একজন রাবী রয়েছেন তাকে আমি চিনি না।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিদ দ্বঈফাহ, ৩/৪৮২ পৃ. হা/১৪৯৪) 


❏ অথচ এ আবূ মুসলিম হচ্ছেন সহীহ বুখারীর রাবী, তাকে তিনি মাজহুল বানিয়ে দিতে চেয়ে ছিলেন। তাকে মুহাদ্দিসগণ আবূ মারিয়ম আনসারী হিসেবে চিনেন। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) তাকে সামগ্রীকভাবে সিকাহ বলেছেন। 

(ইবনে হাজার, তাক্বরীবুত তাহযিব, ৬৭২ পৃ. ক্রমিক.৮৩৫৭) 


❏ ইবনে কাসির (رحمة الله) এবং ইবনে হাজার (رحمة الله) লিখেন-

وقال العِجْليُّ: أبو مريم مولى أبي هريرة تابعي، ثقة.

-‘‘ইমাম ইজলী (رحمة الله) বলেন, আবূ মারিয়ম হযরত আবূ হুরায়রা (رضي الله عنه)-এর গোলাম ছিলেন, তিনি তাবেয়ী, বিশ্বস্ত ছিলেন।’’ (ইবনে কাসির, তাকমীল ফি জারহু ওয়া তা‘দীল, ৩/৪৩২ পৃ. ক্রমিক. ২৩৯৮, ইবনে হাজার, তাহযিবুত তাহযিব, ১২/২৩২ পৃ.) ইমাম যাহাবী (رحمة الله) বলেন, (ثقة) তিনি সিকাহ বা বিশ্বস্ত।’’ (যাহাবী, আল-কাশেফ, ক্রমিক. ৬৮২৮)


২. আলবানী একটি হাদিস পর্যালোচনা করতে গিয়ে লিখেন-

وإسماعيل احتج به الشيخان، وقال الحافظ: صدوق يخطىء قليلا

-‘‘এ সনদে ইসমাঈল নামক একজন রাবী রয়েছে তার হাদিস ইমাম বুখারী-মুসলিম (رحمة الله) সহীহ গ্রন্থদ্বয়ে স্থান দিয়েছেন, তবে হাফেয ইবনে হাজার (رحمة الله) বলেন, সে সত্যবাদী, হাদিসে ভুল করতেন, তা কম।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসিস সহীহা, ৩/২৬৭ পৃ. হা/১২৭২) 


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! উক্ত রাবীর যেহেতু শাইখাইন (رحمة الله) সংকলন করেছেন সেখানে সে রাবীর সমালোচনা করার কারোও অধিকার নেই। তার বিষয়ে এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, যার বিস্তারিত আমার লিখিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।


চ. এক স্থানে এক রাবীকে সিকাহ বলে অন্য স্থানে যঈফ বলা:


১. আলবানী হযরত জাবের (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত হাদিস নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে সনদে থাকা এক ‘ফুযাইল ইবনে সুলাইমান’ রাবী নিয়ে লিখেন-

وهو وإن احتج به الشيخان فقد قال الحافظ فى التقريب : صدوق , له خطأ كثير

-‘‘এ সনদের ‘ফুযাইল’ নামক একজন রাবী রয়েছে তার হাদিস ইমাম বুখারী-মুসলিম (رحمة الله) সহীহ গ্রন্থদ্বয়ে স্থান দিয়েছেন, তবে হাফেয ইবনে হাজার (رحمة الله) বলেন, সে সত্যবাদী, হাদিসে প্রচুর ভুল করতেন।’’ (আলবানী, ইরওয়াউল গালীল, ৩/২০৭ পৃ. হা/৭৫৬)


❏ অথচ অন্য এক হাদিসের আলোচনা করতে গিয়ে এ রাবী সম্পর্কে লিখেন-

قلت: وإسناده جيد رجاله رجال البخاري، وفي الفضيل كلام لا يضر

-‘‘আমি (আলবানী) বলি, এ সনদটি শক্তিশালী, সনদের সমস্ত বর্ণনাকারী সহীহ বুখারীর বর্ণনাকারী, সনদে ফুযায়েল নামক রাবী রয়েছেন, তার বিষয়ে কোনো সমালোচনা গ্রহণযোগ্য নয়।’’ (আলবানী, সিলসিলাতুল...সহীহা, ৩/২১৫ পৃ. হা/১২১৩)


২. আহলে হাদিস আলবানী একটি হাদিসের সনদ পর্যালোচনা করতে গিয়ে রাবী ‘মুহাম্মদ বিন আজলান’ সম্পর্কে লিখেন-

وابن عجلان متكلم فيه

-‘‘সনদে ইবনে আজলান রয়েছে, তার বিষয়ে সমালোচনা রয়েছে।’’ (আলবানী, তামামিল মিন্নাহ, ২১৮ পৃ.) 


❏ অথচ অন্য এক হাদিসের আলোচনা করতে গিয়ে এ রাবী সম্পর্কে লিখেন-

قلت: وإسناده جيد...... وابن عجلان إنما أخرج له البخاري تعليقا ومسلم استشهادا.

-‘‘আমি (আলবানী) বলি, এ সনদটি শক্তিশালী,.....সনদে ইবনে আজলান নামক একজন রাবী রয়েছে তার হাদিস সহীহ বুখারীতে তা‘লিক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে এবং ইমাম মুসলিম (رحمة الله) তার ‘আস-সহীহ’ গ্রন্থে তার হাদিসের  সাক্ষ্য দিয়েছেন।’’(আলবানী, সিলসিলাতুল...সহীহা, ৫/২৭১ পৃ. হা/২২৩১)


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, তিনি সহীহ বুখারী মুসলিমের রাবীকেও যঈফ বলতে পরওয়া করেন না; যার বিস্তারিত আমার লিখিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।


ছ. বিভিন্ন মুজতাহিদ তরিকার ইমামদের সমালোচনা:


তিনি মাযহাব বিরোধী হওয়ার কারণে পৃথিবীর মহান মহান ইমামদের সমালোচনা করতেও দ্বীধাবোধ করেননি। 


১. সে হানাফী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমামে আযম আবু হানিফা (رحمة الله)সহ পৃথিবীর অসংখ্য মুজতাহিদ তবকার আলেমদের সমালোচনা করেছেন। আহলে হাদিসদের ইমাম আলবানী ইমাম আযমের বিরোধীগণের সেরাদের অন্যতম; সে লিখেছে-

ولا يحتج بأبي حنيفة لضعفه في الحديث

-‘‘আবু হানিফার হাদিস দলিলযোগ্য নয়; কেননা তিনি হাদিসে দুর্বল।’’  ৮৬

➥৮৬. আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ-দ্বঈফাহ, ১/৬৬৫ পৃ. হা/৪৫৮ 


❏ আলবানী তার এই মিথ্যা দাবীর পিছনে কিছু ভূয়া দলিল আর যুক্তি পেশ করেছেন। এই ধোঁকাবাজ চালাকী করে আরও লিখেছেন-

ومما لا شك فيه عندنا أن أبا حنيفة من أهل الصدق، ولكن ذلك لا يكفي ليحتج بحديثه

-‘‘এতে কোন সন্দেহ নেই যে আবু হানিফা (رحمة الله) সত্যবাদীদের অর্ন্তভুক্ত ছিলেন। কিন্তু তাঁর হাদিস দলিল দেওয়ার জন্য উপযুক্ত/যথেষ্ট নয়।’’  ৮৭

নাউযুবিল্লাহ 

➥৮৭. আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ-দ্বঈফাহ, ১/৬৬৫ পৃ. হা/৪৫৮ 


২. শুধু তাই নয় সে মাযহাব বিরোধী হওয়ার কারণে ইমাম আযমের অন্যতম সহচর ইমাম কাযি আবু ইউসুফ (رحمة الله)-এর সমালোচনা করেন। সে তাঁর সম্পর্কে এ স্থানে লিখেন-

أبو يوسف فيه ضعف من قبل حفظه، قال الفلاس:  صدوق كثير الخطأ

-‘‘ইমাম আবু ইউসুফ তার হেফযে দুর্বলতা রয়েছে, মুহাদ্দিস ফাল্লাস বলেন, তিনি যদিও সত্যবাদী হাদিসে তিনি প্রচুর ভুল করতেন।’’  ৮৮

➥৮৮. আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদিসুদ-দ্বঈফাহ, ২/৩০ পৃ. হা/৫৩৫


❏ অথচ ইমাম যাহাবী (رحمة الله) ইমাম কাযি ইউসুফের জীবনীতে লিখেছেন-

هُوَ الإِمَامُ، المُجْتَهِدُ ، العَلاَّمَةُ، المُحَدِّثُ، قَاضِي القُضَاةِ، أَبُو يُوْسُفَ يَعْقُوْبُ بنُ إِبْرَاهِيْمَ بنِ حَبِيْبِ بنِ حُبَيْشِ بنِ سَعْدِ بنِ بُجَيْرِ بنِ مُعَاوِيَةَ الأَنْصَارِيُّ، الكُوْفِيُّ.

-‘‘ইমাম কাযি আবু ইউসুফ। তিনি ছিলেন একজন ইমাম, মুজতাহিদ, আল্লামা, মুহাদ্দিস, কাযিউল কুযাত,....কুফার অধিবাসি।’’ ৮৯

➥৮৯. ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৮/৫৩৫ পৃ. ক্রমিক. ১৪১


সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! এ ধরনের উদাহরণ শত শত দেয়া যেতে পারে, তিনি সহীহ বুখারী মুসলিমের রাবীকেও যঈফ বলতে পরওয়া করেন না; যার বিস্তারিত আমার লিখিত ‘আলবানীর স্বরূপ উন্মোচন’ নামক গ্রন্থে পাবেন, ইনশা আল্লাহ।


জ. আলবানীর দৃষ্টিতে যঈফ হাদিসের হুকুম:


পাঠকবর্গ! আমি ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি যে, যঈফ হাদিস ফাযায়েলে আমলের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য এ বিষয়ে মুহাদ্দিসদের ইজমা সংঘঠিত হয়েছে। 


❏ কিন্তু আহলে হাদিস আলবানী সকল মুহাদ্দিসের ইজমার বিরোদ্ধে অবস্থান নিয়ে লিখেন-‘‘অনেকে এরূপ ধারণা পোষণ করেন যে, ফাযায়েলের ক্ষেত্রে দুর্বল হাদীসের উপর আমল করা যাবে এ মর্মে কোনো মতভেদ নেই। বাস্তবিক পক্ষে তা সঠিক নয়।’’ (আলবানী, য‘ঈফ ও জাল হাদীছ সিরিজ, ১ম খণ্ড, ৫০ পৃ. তাওহীদ পাবলিকেশন্স, বংশাল, ঢাকা-১১০০)


❏ এ বিষয়ে বিখ্যাত হাফেযুল হাদিস, ফকীহ, ইমাম নববী আশ-শাফেয়ী (رحمة الله) বলেন-

قد اتفق العلماء على جواز العمل بالحديث الضعيف فى فضائل الاعمال:مقدمة المؤلف

-‘‘উলামায়ে কিরাম এই বিষয়ে সবাই ঐকমত্য পোষণ করেছেন দুর্বল হাদিস ফাযায়েলে আমলের জন্য গ্রহণযোগ্য।’’ ৯০

➥৯০. ইমাম নববী : আরবাঈন : ১/২০ পৃ. এবং ইমাম ইবনে দাকিকুল ঈদ, শরহে আরবাঈনুন নববিয়্যাহ, ১/২০ পৃ.


পাঠকদের কাছেই বিচারের সিদ্ধান্ত অর্পন করা হলো, আপনারা কাকে মানবেন, আলবানীকে না ইমাম নববী (رحمة الله)সহ পৃথিবী বিখ্যাত ইমামদের!

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! আলবানীর খণ্ডন নিয়ে যেহেতু আলাদা পুস্তক আমি লিপিবদ্ধ করেছি সেহেতু আলবানীর বিষয়ে এখানে বিস্তারিত আলোকপাত করতে চাই না।

 
Top