বিষয় নং-০৭: আমি সৃষ্টিতে প্রথম, প্রেরণে সর্বশেষ


“হাদীসের নামে জালিয়াতি” গ্রন্থের ৩৪৭ পৃষ্ঠায় লেখক এ সহীহ হাদিসটিকে দ্বঈফ বানানোর অনেক অপচেষ্টা চালিয়েছেন।


❏ ইমাম তাবরানী, বাগভী (رحمة الله)সহ একজামাত মুহাদ্দিগণ সংকলন করেন-


حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَمْزَةَ، ثَنَا أَبُو الْجُمَاهِرِ، ثَنَا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ؓ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ ﷺ قَالَ كُنْتُ أَوَّلَ النَّبِيِّينَ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ


-‘‘তাবেয়ী হাসান বসরী (رحمة الله) হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন।  তিনি আল্লাহর রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন, তিনি ইরশাদ করেন, আমি সৃষ্টিতে সমস্ত নবীদের পূর্বে এবং প্রেরণের দিক দিয়ে নবীদের শেষ।’’ ১২৮

➥{ইমাম তাবরানী, মুসনাদিশ শামেয়্যীন, ৪/৩৪ পৃ. হা/২৬৬২, ইমাম দায়লামী : আল ফিরদাউস : ৩/২৮২ পৃ. হা/৪৮৫০, ৭১৯৫, ইমাম বাগভী : মাআলিমুত তানজীল : ৩/৫০৮ পৃ., আল্লামা  ইবনে কাসীর : তাফসীরে ইবনে কাসীর : ৩/৪৭০ পৃ., আল্লামা আলূসী : তাফসীরে রুহুল মায়ানী : ১২/১৫৪ পৃ., আল্লামা ইমাম জালাল উদ্দিন সূয়তী : তাফসীরে দুররে মনসুর : ৬/৫৭০ পৃ., ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতি, খাসায়েসুল কোবরা : ১/৫ পৃ. হা/১, ইমাম ইবনে আদি : আল কামিল : ৩/৩৭৩ পৃ.}


কাতাদার সাথী সাঈদ ইবনে বাশিরের গ্রহণযোগ্যতা:


ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর এ হাদিসের সিকাহ রাবী ‘সাঈদ’ প্রসঙ্গে লিখেন-‘‘এ হাদীসের বর্ণনাকারী সাঈদ ইবনু বশীর হাদীস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন।’’ অথচ হযরত কাতাদা (رحمة الله) ছাত্র ‘সাঈদ ইবনু বাশীর বাছরী’ এর হাদিসের মান ‘সহীহ’ তাতে কোনো সন্দেহ নেই, কেননা তিনি হাফেযুল হাদিস ছিলেন। 


❏ ইমাম যাহাবী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-


الإِمَامُ، المُحَدِّثُ، الصَّدُوْقُ، الحَافِظُ


-‘‘তিনি হাদিসের ইমাম, মুহাদ্দিস, সত্যবাদী, হাফেযুল হাদিস ছিলেন।’’ ১২৯

➥{ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ., ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ. }


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-


وَقَالَ أَبُو حَاتِمٍ: مَحَلُّهُ الصِّدْقُ.


-‘‘ইমাম আবু হাতেম (رحمة الله) বলেন, তার স্থান হচ্ছে সত্যবাদী বলা।’’ ১৩০

➥{ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ., ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ. }


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-


وَقَالَ بَقِيَّةُ: سَأَلْتُ شُعْبَةَ عَنْ سَعِيْدِ بنِ بَشِيْرٍ، فَقَالَ: ذَاكَ صَدُوْقُ اللِّسَانِ.


-‘‘বাকিয়্যাত তিনি ইমাম শুবা (رحمة الله) কে সাঈদ ইবনে বাশীর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি সত্যবাদী।’’১৩১  

➥{ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ., ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ. }


❏ তবে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-


قال بقية عن شعبة ذاك صدوق اللسان وفي رواية صدوق اللسان في الحديث


-‘‘তার থেকে অন্য বর্ণনায় রয়েছে, তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী।’’ ১৩২

➥{ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ.}


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-


قال عثمان الدارمي سمعت دحيما يوثقه


-‘‘হযরত উসমান দারেমী (رحمة الله) বলেন, আমি আমি দুহাইম (رحمة الله) কে তাকে সিকাহ বলতে শুনেছি।’’  ১৩৩

➥{ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ.}


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-


وقال أبو بكر البزار هو عندنا صالح ليس به بأس.


-‘‘ইমাম আবু বকর বাজ্জার (رحمة الله) বলেন, আমাদের নিকট তিনি সৎ হাদিস বর্ণনাকারী, তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই।’’ ১৩৪

➥{ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ.}


❏ ইমাম যাহাবী  আরও উল্লেখ করেন-


وَقَالَ مَرْوَانُ الطَّاطَرِيُّ: سَمِعْتُ ابْنَ عُيَيْنَةَ يَقُوْلُ: حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بنُ بَشِيْرٍ، وَكَانَ حَافِظاً. وَقَالَ دُحَيْمٌ: يُوَثِّقُونَهُ، كَانَ حَافِظاً.


-‘‘মারওয়ান আত-তাতারী বলেন, আমি সুফিয়ান ইবনে উয়ানাকে বলতে শুনেছি, সাঈদ ইবনে বাশীর হাফেযুল হাদিস ছিলেন। ইমাম দুহাইম (رحمة الله) বলেন, তিনি সিকাহ, হাফেযুল হাদিস।’’  ১৩৫

➥{ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/৩০৪ পৃ. ক্রমিক. ৯৭, যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৭৩ পৃ., ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযিবুত তাহযিব, ৪/৯ পৃ. }


❏ আল্লামা মুগলতাঈ (رحمة الله) উল্লেখ করেন-


ولما ذكره ابن شاهين في الثقات قال: قال شعبة بن الحجاج: هو مأمون خذوا عنه. وذكره الحاكم في الثقات وخرج حديثه في مستدركه، وقال: كان إمام أهل الشام في عصره إلا أن الشيخين لما يخرجاه.


-‘‘ইমাম ইবনে শাহীন (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছেন। ইমাম শু‘বা ইবনে হাজ্জাজ (رحمة الله) বলেন, তিনি নেককার আমরা তার থেকে হাদিস গ্রহণ করতাম, ইমাম হাকেম (رحمة الله) তাকে সিকাহ তে রেখেছেন এবং মুস্তাদরাকে তার হাদিস সংকলন করেছেন এবং বলেছেন, তিনি শাম দেশের তৎকালিন যুগের ইমাম ছিলেন যদিও বুখারী, মুসলিমে তার হাদিস সংকলন হয়নি।’’ ১৩৬

➥{ইমাম ইবনে শাহীন, তারিখু আসমাউ সিকাত, ১/৯৭ পৃ. ক্রমিক. ৪৩২, মুগালতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৫/২৬৪ পৃ. ক্রমিক. ১৯১০}


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-


وقال البزار: سعيد بن بشير عندنا صالح ليس به بأس حسن الحديث


-‘‘ইমাম বাজ্জার বলেন, সাঈদ ইবনে বাশার আমাদের নিকট সৎ ব্যক্তি, তার হাদিস গ্রহণ করতে কোন অসুবিধা নেই। তার হাদিস ‘সুন্দর’ পর্যায়ের।’’  ১৩৭

➥{ইমাম মুগালতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৫/২৬৪ পৃ. ক্রমিক. ১৯১০}


❏ তিনি আরও উল্লেখ করেন-


ولما ذكره ابن خلفون في الثقات


-‘‘ইমাম ইবনে খালফুন (رحمة الله) তাকে সিকাহ রাবীর তালিকায় স্থান দিয়েছেন।’’  ১৩৮

➥{ইমাম মুগালতাঈ, ইকমালু তাহযিবুল কামাল, ৫/২৬৪ পৃ. ক্রমিক. ১৯১০}


❏ ইমাম হাকেম নিশাপুরী (رحمة الله) তার একটি হাদিস সংকলন করেন লিখেন-


حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ مُحَمَّدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ يُوسُفَ الْفَقِيهُ، ثنا عُثْمَانُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، ثنا أَبُو الْجُمَاهِرِ مُحَمَّدُ بْنُ عُثْمَانَ التَّنُوخِيُّ، ثنا سَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنِ الْحَسَنِ، عَنْ سَمُرَةَ، قَالَ..... هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ، وَسَعِيدُ بْنُ بَشِيرٍ إِمَامُ أَهْلِ الشَّامِ فِي عَصْرِهِ إِلَّا أَنَّ الشَّيْخَيْنِ لَمْ يُخَرِّجَاهُ [التعليق - من تلخيص الذهبي] ৯৯৫ - صحيح


-‘‘...সাঈদ বিন বাশীর তাবেয়ী কাতাদা থেকে তিনি হাসান বসরী হতে তিনি সামুরা ইবনে জুনদুব (رضي الله عنه) হতে তিনি বলেন,.....। ইমাম হাকেম  বলেন, এই হাদিসটির সনদ সহীহ। সাঈদ ইবনে বাসীর শাম দেশের তার সময়ের হাদিসের ইমাম ছিলেন, যদিও শাইখাইন তার থেকে হাদিস বর্ণনা করেননি। ইমাম যাহাবী (رحمة الله) একমত পোষণ করে বলেন, এটি সহীহ।’’ ১৩৯

➥{ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ১/৪০৩ পৃ. হা/৯৯৫, তিনি এ হাদিসকে সহীহ বলেছেন আর ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার সাথে একমত পোষণ করেছেন। আল-মুস্তাদরাক লিল হাকিম, ২/১২৫ পৃ. হা/২৫৩৬, ২/১৬২ পৃ. হা/২৫১, ৩/১৩০ পৃ. হা/৪৬১৭, ৩/৭৪৫ পৃ. হা/৬৭০৯, ৪/১৪১পৃ. হা/৭১৬২, ৪/১৭৭ পৃ. হা/৭২৭৯, হা/৮১০৪, ৪/৫০৬ পৃ. হা/৮৪২১}


উপরের আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হল এ হাদিসটির সনদ সহীহ তাতে বিজ্ঞ হাদিস সমালোচকগণ একমত। 


❏ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) লিখেন-


ذَكَرَهُ السُّيُوطِيُّ وَلَهُ شَاهِدٌ مِنْ حَدِيثِ مَيْسَرَةَ الْفَخْرِ


-‘‘ইমাম সুয়ূতি (رحمة الله) উল্লেখ করেছেন, হযরত মায়সারা (رضي الله عنه)-এর হাদিসটি এ হাদিসের শাওয়াহেদ (থাকায় হাদিসটিকে শক্তিশালী করেছে)।’’ 


(আল-আসরার, ২৭৩ পৃ.)


❏ ইমাম সাখাভী (رحمة الله) লিখেন-


وله شاهد من حديث ميسرة الفجر بلفظ: كنت نبيا وآدم بين الروح والجسد


-‘‘এ হাদিসটির শাওয়াহেদ হাদিস রয়েছে হযরত মায়সারা (رضي الله عنه)-এর হাদিস, যেখানে রাসূল (ﷺ) বলেছেন, আমি তখনও নবী ছিলাম যখন আদম (আ.) রুহ এবং দেহের মাঝামাঝি ছিলেন।’’ 

(ইমাম সাখাভী, মাকাসিদুল হাসানা, ৫২১ পৃ. হা/৮৩৭) 


❏ আহলে হাদিসদের ইমাম শাওকানী লিখেন-


له شاهد صححه


-‘‘এটির সহীহ শাওয়াহেদ রয়েছে।’’ 

(শাওকানী, ফাওয়াইদুল মাজমূআ, ৩২৬ পৃ. হা/১৯)


❏ এ হাদিসের আরও ২-৩টি নির্ভরযোগ্য সূত্র রয়েছে। ইমাম বুখারী (رحمة الله)’র উস্তাদ ইমাম ইবনে সা‘দ (رحمة الله) [ওফাত. ২৩০ হি.] একটি হাদিস সংকলন করেন-


أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَطَاءٍ عَنْ سَعِيدُ بْنُ أَبِي عَرُوبَةَ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ: وَأَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ عَاصِمٍ الْكِلابِيُّ. أَخْبَرَنَا أَبُو هِلالٍ عَنْ قَتَادَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ. صلى الله عليه وسلم : كُنْتُ أَوَّلَ النَّاسِ فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ


-‘‘হযরত কাতাদা (رضي الله عنه) হতে দুই ধারায় বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদেরকে জানানো হয়েছে, আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এরূপ বলেছেন, সৃষ্টির মধ্যে আমিই প্রথম মানুষ এবং যদিও প্রেরিত হয়েছি সবার শেষে।’’  ১৪০

➥{ইমাম ইবনে সা‘দ, আত্-তবকাতুল কোবরা, ১/১৯৯ পৃ. দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন, ইবনে কাসির, বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/৩৯৩ পৃ. দারু ইহ্ইয়াউত তুরাসুল আরাবী, বয়রুত, লেবানন, শিফা শরীফ, ১/১১৪ পৃ. কাসতাল্লানী, মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া, ১/৪২ পৃ.।}


❏ আহলে হাদিসদের ইমাম, ইবনে তাইমিয়ার ছাত্র আল্লামা হাফেজ ইবনে কাসির (رحمة الله) [ওফাত. ৭৭৪হি.] এ হাদিস সংকলন করে লিখেন- وَهَذَا أَثْبَتُ وَأَصَحُّ -‘‘এই সনদটি অধিক প্রমাণিত ও অতি বিশুদ্ধ।’১৪১

➥{ইবনে কাসির, বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ২/৩৯৩ পৃ.}


আপনারাই দেখুন ইমাম ইবনে সা‘দ (رحمة الله) এই হাদিসটির দুটি ধারায় বর্ণনা করেছেন আর প্রত্যেকটিই সনদই অনেক শক্তিশালী। হযরত কাতাদা (رضي الله عنه) এর আরেকজন ছাত্রও এই হাদিসটি তার থেকে বর্ণনা করেছেন। 


❏ ইমাম ইবনে সালেহ শামী (رحمة الله) সংকলন করেন-


وروى ابن إسحاق عن قتادة مرسلا قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم، كنت أول الناس في الخلق وآخرهم في البعث


-‘‘ইমাম ইবনে ইসহাক (رحمة الله) তিনি কাতাদা (رضي الله عنه) হতে মুরসাল সূত্রে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, সৃষ্টির মধ্যে আমিই প্রথম মানুষ এবং যদিও প্রেরিত হয়েছি সবার শেষে।’’  ১৪২

➥{ইমাম ইবনে সালেহ শামী, সবলুল হুদা ওয়ার রাশাদ, ১/৬৮ পৃ.}


❏ ইবনে ইসহাক সহীহ মুসলিমের রাবী এবং সত্যবাদী। (ইবনে হাজার, তাক্বরীবুত তাহযিব, ৪৬৭ পৃষ্ঠা, ক্রমিক. ৫৭২৫) বুঝা গেল কাতাদা থেকে এই হাদিসটি তিনটি সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। কাতাদা (رضي الله عنه) এর চতুর্থ সূত্রটি ইমাম ইবনে আদি (رحمة الله) মারফূ মুত্তাসিল সনদে সংকলন করেন-


حَدَّثَنَا جَعْفَرُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ عَاصِمٍ، حَدَّثَنا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنا الوليد، حَدَّثَنا خُلَيْدُ بْنُ دَعْلَجٍ وَسَعِيدٌ، عَن قَتادَة عَنِ الْحَسَنِ، عَن أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وسَلَّم قَال: كُنْتُ أَوَّلَ الناس فِي الْخَلْقِ وَآخِرَهُمْ فِي الْبَعْثِ. 


-‘‘তিনি যথাক্রমে...জাফর ইবনু আহমাদ ইবনে আসেম থেকে তিনি হিশাম ইবনু আম্মার তেকে তিনি ওয়ালীদ থেকে তিনি তার দুই উস্তাদ খুলাইদ ইবনু দা‘লাজ এবং সাঈদ ইবনে বাশীর থেকে তিনি তাবেয়ী কাতাদা (رحمة الله) থেকে তিনি হাসান বসরী (رحمة الله) থেকে তিনি হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নিশ্চয় রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, সৃষ্টির মধ্যে আমিই প্রথম মানুষ এবং যদিওবা প্রেরিত হয়েছি (নবীদের ক্ষেত্রে) সবার শেষে।’’  ১৪৩

➥{ইমাম ইবনে আদি, আল-কামিল, ৩/৪৮৮-৪৮৯ পৃ. ক্রমিক. ৬০৬}


এই সনদটিও সহীহ লিগাইরিহী; কেননা এই সনদের তাবেয়ী কাতাদার দুই ছাত্র খুলাইদ এর হাদিসের মান ‘হাসান’ এবং সাঈদ ইবনে বাশীর এর হাদিসের মান ‘সহীহ’ পর্যায়ের। 


খুলাইদ ইবনে দা‘লাজের গ্রহণযোগ্যতা: 


অনেকে আবার রাবী খুয়াইদ কে নিয়ে আপত্তি তুলার সুযোগ খুঁজতে পারেন, তিনি মোটামুটি সিকাহ, তার হাদিসের মান কমপক্ষে ‘হাসান’ পর্যায়ের। 


❏ ইমাম যাহাবী (رحمة الله) তার জীবনীতে উল্লেখ করেন-


وَقَالَ أَبُو حَاتِمٍ: هُوَ صَالِحٌ.


-‘‘ইমাম আবু হাতেম (رحمة الله) বলেন, ...তিনি হাদিস বর্ণনায় সৎ ব্যক্তি।’’ ১৪৪

➥{যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৭/১৯৬ পৃ. যাহাবী, মিযানুল ই‘তিদাল, ১/৬৬৩ পৃ. যাহাবী, তারিখুল ইসলাম, ৪/৩৫৪ পৃ. ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ৮/৩০৯ পৃ. }


❏ ইমাম মিয্যী (رحمة الله) উল্লেখ করেন-


وَقَال أَبُو حاتم الرازي  : صالح.


-‘‘ইমাম আবু হাতেম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় একজন সৎ ব্যক্তি।’’  ১৪৫

➥{ইমাম মিয্যী, তাহযিবুল কামাল, ৮/৩০৯ পৃ.}


তার হাদিসের মান ‘হাসান’ বলে বুঝা যায়।


❏ তবে ইমাম হাকেম নিশাপুরী (رحمة الله) তার দুটি সনদ সংকলন করেন; আর দুটোকেই সহীহ বলেছেন। যেমন-


حَدَّثَنَا مُكْرَمُ بْنُ أَحْمَدَ الْقَاضِي، ثنا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيٍّ الْأَبَّارُ، ثنا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ أَرْكُونُ الدِّمَشْقِيُّ، ثنا خُلَيْدُ بْنُ دَعْلَجٍ أَبُو عَمْرٍو السَّدُوسِيُّ، أَظُنُّهُ عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ...... هَذَا حَدِيثٌ صَحِيحُ الْإِسْنَادِ، وَلَمْ يُخَرِّجَاهُ


-‘‘...খুলাইদ ইবনু দা‘লাজ তিনি কাতাদা (رحمة الله) থেকে তিনি আবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে..........ইমাম হাকেম নিশাপুরী (رحمة الله) বলেন, এই সনদটি সহীহ।’’  ১৪৬

বুঝা যায় তার হাদিসের মান কমপক্ষে ‘হাসান’।

➥{ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ৩/১৬২ পৃ. হা/৪৭১৫, তিনি তার আরেকটি হাদিসকে সহীহ বলেছেন। দেখুন-ইমাম হাকেম, আল-মুস্তাদরাক, ৪/৮৫ পৃ. হা/৬৯৫৯   }

 
Top