ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) তাবেঈ ছিলেন


ইবনে হাজার মক্কী (رحمة الله) বলেন, শায়খুল ইসলাম ইবনে হাজার (رحمة الله), আসকালানী (رحمة الله)’র ফতোয়া আছে যে, ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) একদল সাহাবায়ে কিরামকে দেখেছেন, যারা তাঁর জন্মের (৮০ হিজরীর পর) কূফায় জীবিত ছিলেন। সুতরাং তিনি তাবেঈদের অন্তর্ভুক্ত। আর এই ফযীলত অন্যান্য শহরে অবস্থিত তাঁর সমসাময়িক কারো মধ্যে ছিলনা। যেমন আওযায়ী সিরিয়ায়, উভয় হাম্মাদ বসরায়, ইমাম সুফিয়ান সওরী কূফায়, ইমাম মালিক মদীনা শরীফে এবং ইমাম লায়স ইবনে সা’দ মিশরে ইন্তেকাল করেন। এঁদের কেউ তাবেঈ নন। আসকালানীর ফতোয়ার ইবারত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, ইমাম আ‘যম ঐসব সম্মানিত তাবেঈদের অন্তর্ভুক্ত যাদের সম্পর্কে আল্লাহর এই বাণী প্রযোজ্য  হয়।

।وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُمْ بِإِحْسَانٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ 

“যারা তাঁদের (আনাসার ও মুহাজির সাহাবীদের) অনুসরণ করেছে, আল্লাহ সে সমস্ত লোকদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাঁরাও তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন কানন কুঞ্জ, যার তলদেশ দিয়ে প্রস্রবণসমূহ প্রবাহিত রয়েছে। সেখানে তারা থাকবে চিরকাল।” (সূরা তাওবা আয়াত; ১০০)


ইবনে খলি­কান ও ইমাম ইয়াফেঈ (رحمة الله) বলেন,

-وَاَدْرَكَ اَبُوْ حَنِيْفَةَ اَرْبَعَةَ مِنَ الصَحَابَةِ وَهُمْ اَنَسِ بْنُ مَالِكِ بِالْبَصَرِةِ وَعَبْدُ اللهِ بْنِ اَبِيْ اَوْفى بِالْكُوْفَةِ وَسَهْلْ بنُ سَعَدِ السَّاعِدِي بِالْمَدِيْنَةِ وَاَبُوْ الطُفَيْلِ عَامِرْ بنِ وَاثَلَةَ بِمَكَّةَ 

- “ইমাম আবু হানিফা চারজন সাহাবীকে পেয়েছেন। তাঁরা হলেন-বসরায় হযরত আনাস ইবনে মালিক, কূফায় আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আউফা, মদীনায় সাহল ইবনে সা’দ এবং মক্কায় আবু তোফায়েল আমের ইবনে ওয়াসেলা (رضي الله عنه)।”  

 ➥     ইবনে খলি­কান (৬৮৪হিঃ) ওয়াফিয়াতুল আইয়ান, খন্ড ৫, পৃষ্ঠাঃ   ৪০৬ ও ইমাম ইয়াফেঈ (رحمة الله) (৭৬৮ হিঃ) মিরআতুল জিনান ওয়া ইবরাতিল ইযকান, খণ্ড ১, পৃষ্ঠাঃ  ৩১০


ইমাম আ‘যম (رحمة الله) ১৫০ হিজরীতে ইন্তেকাল করেছেন, এ সময় ২২ থেকে ২৭জন সাহাবী জীবিত ছিলেন। তন্মধ্যে ৪/৭/১০ জন সাহাবীর সাথে তার সাক্ষাতের বর্ণনা বিভিন্ন গ্রন্থে পাওয়া যায়। “দুররুল মোখতার ” গ্রন্থে ২০জন এবং “খোলাসায়ে ইকমাল” নামক গ্রন্থে ২৬ জন সাহাবীর সাথে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ আছে। তিনি নিজেই বলেছেন,

 رَأْيتُ انس بنِ مَالِك الكُوفة قَائِمًا يُصَلِّيٌ   

“আমি কূফায় হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه)কে দাঁড়িয়ে নামায পড়তে দেখেছি।”      আবু নুআঈম ইস্পাহানী (رحمة الله) (৪৩০ হিঃ) মুসনাদে ইমাম আবু হানিফা, পৃষ্ঠাঃ  ১৬৭

 

তাযকারাতুল হুফফাযে বর্ণিত আছে,

 قَدِمَ اَنَس بْنِ مَالِكِ الكُوْفَةَ وَنَزَلَ النّخْعَ رَأْيتُه مَرَرًا 

“হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) কূফায় আগমন করেন এবং তিনি নাখায় অবতরণ করেন। আমি তাঁকে অনেকবার দেখেছি।”  

    শামশুদ্দিন যাহাবী (رحمة الله) (৭৪৮হিঃ) তাযকারাতুল হুফায, খন্ড ১, পৃষ্ঠাঃ  ১৬৮ 

 

আল্লামা মুহাম্মদ হাসান সান্বালী (رحمة الله) (১৩০৫ হি.) ইমাম আ‘যমের সময়কালে জীবিত ২২ জন সাহাবীর কথা উল্লেখ করেন। তাঁরা হলেন- 

১. হযরত আনাস ইবনে মালিক, 

২.হযরত আসাদ ইবনে সাহাল ইবনে হানিফ, 

৩. হযরত বুসর ইবনে আরতাত, 

৪.হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযিদ, 

৫. হযরত সাহাল ইবনে সা’দ আস সায়েদী, 

৬. হযরত আবু উমামা সুদা ইবনে আজলান, 

৭. হযরত তারেক ইবনে শিহাব বাজলী, 

৮. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আউফা, 

৯. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে বুসর, 

১০.হযরত আমর ইবনে সা’লাবা, 

১১.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস ইবনে মাউফল, 

১২.হযরত আমর ইবনে আবু সালমা,

১৩. .হযরত উতবা ইবনে আব্দুস সালামী, 

১৪. হযরত আমর ইবনে আবু সালমা, 

১৫. হযরত আবু তোফায়েল আমের ইবনে ওয়াসেলা, 

১৬. হযরত আমর ইবনে হুরাইস আল মাখযূমী, 

১৭. হযরত কুবাইসা ইবনে যুবাইর,  ১৮. হযরত মালেক ইবনে হুযাইরিস, 

১৯.হযরত মাহমুদ ইবনে লবীদ, 

২০. হযরত মিকদাদ ইবনে মা’দিকারুব, 

২১.হযরত মালিক ইবনে আউস, 

২২. হযরত ওয়াসেলা ইবনে আসকা (رضي الله عنه)।  

    মুহাম্মদ হাসান সান্বালী (رحمة الله) (১৩০৫ হিঃ), তানসিকুন নিযাম, পৃষ্ঠাঃ ৯


রদ্দুল মোহতার গ্রন্থে বর্ণিত আছে- 

  اَدْرَكَ (ابو حنيفة) بِالسِّنّ نَحُوْ عِشْرِيْنَ صَحَابِيًا كَمَا بَسَطَ فىِ اَوَائِلِ الضِيَاءِ

ঐ গ্রন্থের আরো দুই পৃষ্ঠা পরে এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে-

 هُمْ اِبْنُ نُفيل وَوَاثِلة وعبد الله بن عامر وابن اَبيِ اَوْفي وابن جُزْء وعُتبة والمِقْدَادِ وابن بُسر وابن ثَعلبَة وسَهَلْ بن سعد وأنس وعبد الرحمن بن يزيد ومحمود بن لَبِيد ومحمود بن الربيع واَبُواُمامة واُبُو الطفيل - وزادفى تنوير الصحيفة عمرو بن حُريث وعُمرو بن سَلْمَةَ وابن عَبَّاس وَسَهَلْ بن مُنيف 

ইমাম আবু হানিফা প্রায় ২০জন সাহাবীকে পেয়েছেন। তাঁরা হলেন-

১. নুফাইল, 

২. ওয়াসিলা, 

৩. আব্দুল্লাহ ইবনে আমের, 

৪. ইবনে আবি আউফা, 

৫. ইবনে জুয, 

৬.উতবা, 

৭.মিকদাদ, 

৮. ইবনে বুসর, 

৯. ইবনে সা’লাবা, 

১০. সাহল ইবেন সা’দ, 

১১. আনাস, 

১২. আব্দুর রহমান ইবনে ইয়াযিদ, 

১৩. মাহমুদ ইবনে লবীদ, 

১৪. মাহমুদ ইবনে রবী, 

১৫. আবু উমামা, 

১৬. আবুত তোফায়েল। তানভীরুস সহীফা গ্রন্থে আরো বৃদ্ধি করেছে-যথা, 

১৭. আমর ইবনে হুরাইছ, 

১৮. আমর ইবনে সালমা, 

১৯. ইবনে আব্বাস ও 

২০. সাহল ইবনে মুনাইফ।  

    আল্লামা শামী (رحمة الله) (১৩০৬ হিঃ), রদ্দুল মোহতার, খন্ড ১, পৃষ্ঠাঃ   ১৫৯


কোন কোন কিতাবে ইবনে ওমর (৯৬ হি.), সায়েব ইবনে ইয়াযিদ (৯৪হি.) এবং ইবনে উনাইস (رضي الله عنه)কেও অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ হিসাব অনুযায়ী এঁদের সংখ্যা ২৩ জন হয়।


সাহাবী থেকে হাদীস বর্ণনা


ইমাম আ‘যম সাহাবীদের সাথে সাক্ষাত ও দশজন সাহাবী থেকে হাদিস বর্ণনা সম্পর্কে ইমাম ইবনে বাযযার কুরদরী (رحمة الله) বলেন-

فَالْحَاصِلُ اِنَّ جَمَاعَةً مِنَ المُحَدِّثِيْنَ اَنْكَرُوا مَلَاقَاتِه الصَّحَابَةِ وَاَصْحَابُه اَثِبْتُوه بالْاَسَانِيْدِ الصِّحَاح الحِسَانِ وُهُمْ اَعْرَفُ بِاحْوالِه مِنْهُمْ وَالمُثِبْتُ العَدْلُ العَالِمُ اَوْلي النَافِي وَقَدْ اَجْمَعُوا مُسْنَدَاتِه فَبَلَغَتْ خَمْسِيْنَ حَدِيْثًا يَرْوِيه الاِمَامِ عَنِ الصَّحَابَةِ-

“মোদ্দাকথা হলো মুহাদ্দিসগণের মধ্যে একদল সাহাবীর সাথে ইমাম আ‘যমের সাক্ষাতকে অস্বীকার করেন, কিন্তু তাঁর শাগরিদরা সহীহ ও হাসান সনদ দ্বারা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, তিনি সাহাবীদের সাক্ষাত পেয়েছেন। তাঁর শাগরিদরা অন্যান্যদের চেয়ে তাঁর সম্পর্কে অধিক অবহিত ছিলেন। কোন ন্যায়পরায়ন আলিম ব্যক্তি কোন কিছু সাব্যস্ত করলে তা অস্বীকার বা না বাচকের উপর প্রাধান্য পায়। তারা (শাগরিদরা) তাদের মুসনাদ সমূহে ইমাম আ‘যম কর্তৃক সাহাবীদের থেকে বর্ণনাকৃত পঞ্চাশটি হাদিস বর্ণনা করেছেন।” 

    ইমাম কুরদরী (رحمة الله) (৮২৭হিঃ), মানাকিবুল ইমাম আ‘যম আবি হানিফা খন্ড ১, পৃষ্ঠাঃ  ২০-২১ ও মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) (১০১৪হিঃ), শরহে মুসনাদে ইমাম আ‘যম পৃষ্ঠাঃ   ২৫৮


আল্লামা আইনী (رحمة الله) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আউফা (رضي الله عنه)’র জীবনীতে বলেন:

هُوَ اَحَدٌ مَنْ رَأه اَبُوْ حَنِيْفَةَ مِنَ الصَّحَابَةِ وَرَوَي عَنْه وَلَا يَلْتَفِتُ اِلي قَوْلِ الْمُنْكَرِ الْمَتَعَصَبِّ وَكَانَ عُمَرُ اَبِي حَنِيْفَةَ حِيْنَئِذٍ سَبَعَ سِنِيْنَ وَهُوَ سَنُّ التَّمِيْزِ هذَا عَلى الصَّحِيْحِ اِنَّ مَوْلَدَ اَبي حَنِيْفَةَ سَنَةَ ثَمَانِيْنَ وَعَلي قَوْلِ مَنْ كَانَ سِنَةَ سَبْعِيْنَ يَكُونُ عُمُره حِيْنَئِذٍ سَبَعَةَ عَشَرَ سِنَةً وَيَسْتَبَعَدُ جِدًّا اَنْ يَكُوْنَ صَحَابِي مُقِيْمًا بِبَلَدِه وَفِي اَهْلِهَا مَنْ لَا رَأَه وَاصْحَابُه اَخْبَرَ بِحَالِهِ وُهُمْ ثِقَاتٌ فِي اَنْفُسِهِمْ -

“আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আউফা ঐ সকল সাহাবীদের একজন যাদেরকে ইমাম আ‘যম আবু হানিফা (رحمة الله) দেখেছেন এবং তিনি তাঁর থেকে হাদিসও বর্ণনা করেছেন। এ ব্যাপারে পক্ষপাত অবলম্বনকারী ও অস্বীকারকারীদের মতের দিকে তাকানোর প্রয়োজন নেই। এ সময় ইমাম আ‘যমের বয়স হয়েছিল সাত বছর। কেননা বিশুদ্ধ মতানুযায়ী তিনি ৮০ হিজরীতে জন্ম লাভ করেন। অপর মতানুযায়ী তাঁর জন্ম সাল ৭০ হিজরী হলে, তখন তাঁর বয়স হবে সতের বছর। তবে সাত বছরেও বোধশক্তি ও অনুভুতি শক্তির বয়স হয়। আর এটা কিভাবে হতে পারে যে, একজন সাহাবী কোন শহরে থাকবেন আর ঐ শহরের অধিবাসীদের মধ্যে এমন কে থাকবে যে তাঁকে দেখবে না? এ বিষয়ে ইমাম আ‘যমের শিষ্যগণের কথাই গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। কেননা, তারাই তাঁর সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত এবং গ্রহণযোগ্য।  

    আল্লামা আইনী (رحمة الله) (৮৫৫ হিঃ), উমদাতুল ক্বারী শরহে বুখারী, খন্ড ১, পৃষ্ঠাঃ  ৭৯৮)


ইমাম আবু ইউসুফ (رحمة الله) বলেন-আমি হযরত আবু হানিফা (رحمة الله) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ৯৩ হিজরীতে আমার পিতার সাথে হজ্জে গিয়েছি। তখন আমার বয়স ছিল ষোল বছর। আমি এক বৃদ্ধকে দেখেছি যে, তাঁর নিকট মানুষের ভীড় ছিল। আমি পিতাকে জিজ্ঞাসা করলাম এই ব্যক্তি কে? তিনি বললেন ইনি রাসূল (ﷺ) ’র সাহাবী এবং তাঁর নাম হলো আব্দুল্লাহ ইবনে হারিস ইবনে জুয। পুনরায় আমি জিজ্ঞাসা করলাম তাঁর কাছে কি আছে? পিতা বললেন, তাঁর কাছে রাসূলুল্লাহ  ’র হাদীস আছে। আমি বললাম তাহলে আমাকে তাঁর কাছে নিয়ে যান আমিও হাদিস শ্রবণ করবো। অতঃপর আমি মানুষের ভীড়ের মধ্যেও তাঁর কাছে পৌঁছে গেলাম এবং তাঁর থেকে হাদিস শুনলাম-তিনি বলতেছেন:

 قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  مَنْ تَفْقَّهَ فِيْ دِيْنِ اللهِ كَفَاهُ اللهُ وَهْمَه وَرِزْقَه مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبْه -

“রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর দ্বীনের জ্ঞানার্জন করল, আল্লাহ তাঁর জন্য যথেষ্ট এবং তিনি তাকে অগণিত রিযিক দান করবেন।”  

    কিতাবু বয়ানুল ইলম খন্ড ১, পৃষ্ঠাঃ   ৪৫, সূত্রঃ হানিফ রেজভী জামেউল আহাদীস, মুকাদ্দমা, পৃষ্ঠাঃ   ২৩৬

 

ইমাম আবু মা’শার আব্দুল করিম ইবনে আব্দুস সামাদ তাবারী শাফেঈ (رحمة الله) ইমাম আ‘যম (رحمة الله)’র সাহাবায়ে কিরাম থেকে বর্ণিত হাদিস সমূহের উপর একটি পৃথক গ্রন্থ রচনা করেন। এতে সাহাবী থেকে তাঁর বর্ণিত হাদিস সমূহ সনদসহ উল্লেখ করেছেন। আর ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ূতী শাফেঈ (رحمة الله) ঐ সব রেওয়ায়েত সমূহ তাঁর রচিত কিতাব “তাবঈদুস সহীফা” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। 

নিন্মে এর কিছু হাদিস বর্ণিত হলো-


 عَنْ اَبِي يُوْسُفُ عَنْ اَبِي حَنِيْفَةَ سَمِعْتُ اَنَسْ بْنِ مَالِكِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ  يَقُوْلُ طَلَبُ العِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَليَ كُلِّ مُسْلِمٍ-


১.“ইমাম আবু ইউসুফ আবু হানিফা থেকে, তিনি হযরত আনাস (رضي الله عنه) থেকে, তিনি রাসূল (ﷺ)  থেকে  শুনেছেন, তিনি বলেন, প্রত্যেক মুসলমানের উপর জ্ঞানার্জন করা ফরয।”


عَنْ اَبِي يُوْسُفُ عَنْ اَبِي حَنِيْفَةَ سَمِعْتُ اَنَسْ بْنِ مَالِكِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ  يَقُوْلُ الدَّالُّ عَلي الخَيْرِ كَفَا عِلِه -


২. “আবু ইউসুফ আবু হানিফা থেকে, তিনি আনাস (رضي الله عنه) থেকে, তিনি রাসূল (ﷺ)  কে বলতে শুনেছেন-ভাল কাজের প্রতি পথ প্রদর্শনকারী ভাল কাজ কারীর সমান সওয়াব পাবে।”


عَنْ اَبِي يُوْسُفُ عَنْ اَبِي حَنِيْفَةَ سَمِعْتُ اَنَسْ بْنِ مَالِكِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ   اَنْ يُحِبَّ اللهَ اَغَاثَه اللَّهْفَانِ- 


৩. “আবু ইউসুফ ইমাম আবু হানিফা থেকে, তিনি আনাস (رضي الله عنه) থেকে, তিনি নবী করিম (ﷺ)  কে বলতে শুনেছেন-আল্লাহ তায়ালা দুঃস্থ মানুষকে সাহায্য করা পছন্দ করেন।”

عَنْ يَحْي بْنِ قَاسِمِ عَنْ اَبِي حَنِيْفَةَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنِ اَبِى اَوْفي يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ  مَنْ بَنَي مَسْجِدًا وَلَوْ كَمُفْحَصِ قَطَّاةٍ بَنيَ اللهُ بَيْتًا فِي الجَنَّة ِ -

৪. “ইয়াহিয়া ইবনে কাসেম ইমাম আবু হানিফা থেকে, তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আউফা (رضي الله عنه) থেকে, তিনি রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছেন- যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ নির্মাণ করেন যদিও সেটি কাত্তাত পাখির বাসার ন্যায় ছোটও হয়, তবুও আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করবেন।” 

    জালাল উদ্দিন সুয়ুতী (رحمة الله) (৯১১হিঃ), তাবঈদুস সহীফা, পৃষ্ঠাঃ  ৬-৯


عَنْ اِسْمَاعِيْل بْنِ عَيَّاشِ عَنْ اَبِي حَنِيْفَةَ عَنْ وَاثِلَةَ بْنِ اَسْقع اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ  قَالَ دَعْ مَا يُرْبِيْكَ اِلي مَا لَا يُرْبِيْكَ-  

৫. “ইসমাঈল ইবনে আইয়্যাশ ইমাম আবু হানিফা থেকে, তিনি ওয়াসিলা ইবনে আসকা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল (ﷺ)  এরশাদ করেন-সন্দেহভাজন বস্তু পরিত্যাগ কর আর ঐ বস্তু গ্রহণ কর যাতে সন্দেহের অবকাশ নেই।” 

    সাওয়াঁনেহে বে বাহারে ইমাম আ‘যম, পৃষ্ঠাঃ ৬৫,সূত্র: হানিফ রেজভী, জামেউল আহাদীস, মুকাদ্দমা, পৃষ্ঠাঃ ২৩৯

 

আল্লামা শামশুদ্দিন মুহাম্মদ আবু নসর “জাওয়াহেরুল আকাইদ ওয়া দুরারুল কালায়েদ” নামক গ্রন্থে বলেন-ইমাম আবু হানিফা (رحمة الله) আটজন সাহাবী থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। যেমন- 

১. আনাস, ২. জাবির, ৩. ইবনে আবি আউফা, ৪. আমের, ৫. ইবনে উনাইস, ৬. ওয়াসিলা, ৭. ইবনে জুয, ও ৮. আয়েশা বিনতে আজরাদ (رضي الله عنه)। 

    আল্লামা শামী (رحمة الله)(১৩০৬হিঃ) রদ্দুল মোহতার, খন্ড ১, পৃষ্ঠাঃ ১৫৭)

 
Top