26 - بَابُ مَا جَاءَ فِي مَنْ بَنَىٰ للهِ مَسْجِدًا

92 - أَبُوْ حَنِيْفَةَ: قَالَ: سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ أَوْفَىٰ ، يَقُوْلُ: سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ ، يَقُوْلُ: «مَنْ بَنَىٰ لِلهِ مَسْجِدًا وَلَوْ كَمِفْحَصِ قَطَاةٍ بَنَى اللهُ تَعَالَىٰ لَهُ بَيْتًا فِي الْـجَنَّةِ».


বাব নং ৪১.২৬. যে আল্লাহর জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে


৯২. অনুবাদ: ইমাম আবু হানিফা থেকে বর্ণিত, আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আওফা (رضي الله عنه) বলেন, আমি রাসূল (ﷺ) কে এ হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য মসজিদ নির্মাণ করবে, যদিও এর কাত্তাতের (এক প্রকারের পাখি) বাসার ন্যায় ক্ষুদ্র হোক, আল্লাহ তা প্রতিদান স্বরূপ বেহেস্তে তার জন্য একটি প্রাসাদ তৈরী করবেন। (শুয়াবুল ঈমান, ৪/৩৭৭/২৬৮১)

ব্যাখ্যা: আরবী ভাষায় একটি পাখির নাম হলো কাত্তাত। আর উপরে বর্ণিত হাদিসের মধ্যে مفحص শব্দের অর্থ ছোট গর্ত। উর্দূ ভাষায় এই পাখির নাম হল সঙ্গেখার (سنگ خوار)। কোন কোন অঞ্চলে এ পাখির নাম হলো মাছরাঙ্গা। এ ছোট পাখি ডিম দেওয়ার জন্য নদীর তীরে গর্ত করে ক্ষুদ্র বাসা তৈরী করে থাকে।

আরবী ভাষায় প্রবাদ বাক্য রয়েছে ليس له مفحص قطّاة “কাত্তাত পাখির ঘরের ন্যায়ও তার কোন ঘর নেই।” মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেছেন,  قطّاة مفحصএর উপমা দেওয়ার কারণ হলো- এই পাখির বাসা মাটির উপর তৈরী করে আর মসজিদও মাটির উপর তৈরী করা হয়। তবে আমার মনে হয় এর দ্বারা সবচেয়ে ছোট মসজিদ বুঝানো হয়েছে।

হাদিসে মসজিদ নির্মাণের প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। মুসলমানদের সামাজিক জীবনে মসজিদ কত গুরুত্বপূর্ণ, এর ধারণা রাসূল (ﷺ) ’র মদনী জীবন থেকে লাভ করা যায়। মসজিদ ইবাদতের স্থান, আদালতের জায়গা। এখানে বিভিন্ন বিষয়ের মীমাংসা করা হতো। রাসূল (ﷺ)  মসজিদে বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সাথে মিলিত হতেন। এটাই ছিল মাদ্রাসা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, লোকজন এখানে তালীম হাসিল করতেন। এখানেই যিকরের আওয়াজ উচ্চারিত হতো। মসজিদই হলো শান্তি ও নিরাপত্তার স্থান। সমস্ত পৃথিবী থেকে ভয়-ভীতি নিয়ে মসজিদের দিকে আগমন করুন এবং আল্লাহর রহমতের উপর নিজকে সোর্পদ করে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করুন।

যে মহল্লায় মসজিদ নেই, তা এক নির্জন প্রান্তরের ন্যায়। মূলত মুসলমানদের জীবন মসজিদ থেকেই আরম্ভ হয়। কেননা জন্মের সাথে সাথে কানে আযান দেওয়া হয় এবং মৃত্যুর পর এখানেই জানাযা সম্পন্ন হয়, মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা হয়। সুতরাং উপরের আলোচনায় এটাই প্রমাণিত হয় যে, একমাত্র মসজিদ থেকেই মুসলমানদের জীবনে যাবতীয় ন্যায়-নীতি ও শৃখলাবোধ সৃষ্টি হয়ে থাকে। রাসূল (ﷺ) ’র পবিত্র বাণীর এটাই মূল উদ্দেশ্য যে, মসজিদ মুসলমানদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই তিনি এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মসজিদ তৈরী করবে, আল্লাহ তার জন্য পরকালে বেহেস্তে ঘর তৈরী করবেন।

 
Top