হযরত উসমান (رضي الله عنه)-এর শাহাদাতের খবর 


হাদিস ৪১:


أخرج الشيخان، عن أبي موسى الأشعري "أن النبي صلى الله عليه وسلم كان ببئر اریس فجلس على قف. البئر فتوسطه ثم دلى رجليه في البئر وكثف عن ساقيه فقلت لأكونن اليوم بواب رسول الله صلى الله عليه وسلم. فجاء أبو بكر فقلت على رسلك وذهبت إلى النبي صلى الله عليه وسلم، فقلت: هذا ابو بكر يستأذن. قال: ائذن له وبشره بالجنة، فدخل حتى جلس إلى جنب النبي صلى الله عليه وسلم في القف على يمينه ودلی رجليه، ثم جاء عمر فقلت هذا عمر يستأذن. قال: ائذن له وبشره بالجنة، فجاء حتى جلس مع رسول الله صلى الله عليه وسلم على يساره ودلی رجليه، ثم جاء عثمان فقلت هذا عثمان يستأذن، فقال : ائذن له وبشره با لجنة على بلوى تصيبه، فدخل فلم يجد في القف مجلسا، فجلس وجاههم من شق البئر ودلى رجليه" قال سعيد بن المسيب: فأولتها قبورهم


বুখারী ও মুসলিমের বর্ণনাঃ হযরত আবু মূসা আশআরী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, 

একবার দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) আরীস কূপের দিকে চলে গেলেন। তিনি কূপের বেড়াপ্রাচীরে বসে উভয় পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন। অতঃপর উভয় পায়ের মােজা খুলে ফেললেন। আমি মনে মনে বললাম, আজ আমার উচিত দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) এর দারােয়ানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া। ইতিমধ্যে হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) এলেন। আমি তাকে বললাম আপনি থামুন। অতঃপর আমি দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করলাম আবু বকর (رضي الله عنه) এসেছেন, অনুমতি চান। তিনি বললেন তাকে অনুমতি দাও এবং জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আবু বকর (رضي الله عنه) এসে দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) -এর ডান দিকে বসে গেলেন। তিনিও আপন পদদ্বয় ঝুলিয়ে দিলেন। অতঃপর হযরত ওমর (رضي الله عنه) এলেন। আমি আবার খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করলাম ওমর(رضي الله عنه) এসেছেন এবং সাক্ষাতের অনুমতি চান। দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও এবং জান্নাতের সুসংবাদ দাও। হযরত ওমর (رضي الله عنه) এসে কূপের প্রাচীরের উপর দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) এর বামদিকে বসে গেলেন। তিনিও কূপের মধ্যে পা ঝুলিয়ে দিলেন। অতঃপর হযরত উসমান (رضي الله عنه) এলে আমি তার খেদমতে উপস্থিত হয়ে আরয করলামঃ- উসমান (رضي الله عنه) এসেছেন এবং সাক্ষাতের অনুমতি চাইছেন। তিনি বললেনঃ-তাকে অনুমতি দাও এবং এই সুসংবাদ দাও যে, সে অনেক দুঃখ-কষ্ট ও যাতানা সহ্য করার পর জান্নাতে প্রবেশ করবে।অতঃপর হযরত উসমান(رضي الله عنه)তার কাছে এলেন এবং ডানে-বামে স্থান না পেয়ে তার বিপরীত দিকে প্রাচীরে বসে পা ঝুলিয়ে দিলেন। সায়ীদ ইবনে মুসাইয়িব বলেনঃ এই ঘটনার ব্যাখ্যা তাঁদের কবর, অর্থাৎ হযরত আবু বকর ও ওমর (رضي الله عنه) উভয়েই দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) সাথে সমাধিস্থ হবেন এবং হযরত উসমান (رضي الله عنه)-কে আলাদা জায়গায় দাফন করা হবে।

[বুখারী ও মুসলিম]


হাদিস ৪২:


وأخرج ابن أبي خيثمة في (تاريخه) وأبو يعلى البزار وأبو نعیم، عن أنس قال: كنت مع النبي صلى الله عليه وسلم في حائط فجاءات فدق الباب فقال يا أنس : قم فافتح له وبشره بالجنة ويا الخلافة من بعدي، فاذا أبو بكر ثم جاء رجل فدق الباب فقال يا انس قم فافتح له وبشره بالجنة وبالخلافة من بعد أبي بكر، فاأذا عمر، ثم جاء رجل فدق الباب فقال افتح له وبشره بالخلافة من بعد عمر وإنه مقتول، فإذا عثمان".


হযরত আনাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেনঃ আমি দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) সঙ্গে বাগানে ছিলাম। কেউ এসে দরজায় খটখট আওয়াজ করল। দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) বললেনঃ- আনাস, দরজা খুলে দাও, আগন্তুককে জান্নাতের সুসংবাদ দাও এবং আমার পরে খলীফা হওয়ার সুখবর জানিয়ে দাও। আমি হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) কে দেখতে পেলাম।পুনরায় কেউ এসে খটখট আওয়াজ করল। দোজাহানের বাদশা নবী, (ﷺ) বললেনঃ- আনাস, যাও দরজা খুলে দাও। আগন্তুককে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে বল যে, ওমরের (رضي الله عنه) পরে সে খলীফা হবে এবং তাকে হত্যা করা হবে। এরপর আমি হযরত উসমান (رضي الله عنه)-কে দেখতে পেলাম ।


হাদিস ৪৩:


واخرج أبو يعلى عن حفصة ام المؤمنين أن النبي صلى الله عليه وسلم أرسل الى عثمان فقال له انك مقتول مستشهد فاصبر صبرك الله ولا تخلعن قميصا قمصكم الله . ثتني عشرة سنة وسنة اشهر . فلما ادبر قال رسل الله صلى الله عليه وسلم صبرك الله فانك سوف تستشهد وتموت وأنت صائم وتفطر معی


উম্মুল মুমিনীন হযরত হাফসা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন : দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) হযরত উসমানকে (رضي الله عنه) ডেকে পাঠালে তিনি উপস্থিত হলেন। দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) বললেনঃ তুমি নিহত ও শহীদ হবে, তাই সবর করবে। আল্লাহ যে পােশাক তােমাকে পরিধান করাবেন, তা বার বছর ছয় মাস পর্যন্ত থাকবে। কিন্তু তুমি নিজে তা খুলে ফেলবে না। হযরত উসমান(رضي الله عنه) সেখানে থেকে ফিরে এলে দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) এই বলে দোয়া দিলেনঃ আল্লাহ তােমাকে সবর দান করুন। তুমি সত্বরই রােযা অবস্থায় শহীদ হবে এবং আমার সাথে ইফতার করবে।


হাদিস ৪৪:


واخرج الحكم وصححه . عن عبد الله بن حوالة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم تهجمون على رجل معتجر ببردة يبايع الناس من اهل الجنة فهجمت على عثمن وهو معتجر ببردة حبرة يبايع.


আব্দুল্লাহ ইবনে হাওয়ালা (رضي الله عنه) থেকে দোজাহানের বাদশা নবী (ﷺ) এই উক্তি বর্ণিত আছে যে, একজন জান্নাতী ব্যক্তি চাদরের পাগড়ী, বেঁধে মুসলমানদের কাছ থেকে বয়াত নেবে। তােমরা তার উপর আক্রমন করবে। সেই মতে যখন হযরত উসমান (رضي الله عنه)-এর উপর আক্রমণ হয়, যখন তিনি সবরের চাদর দিয়ে পাগড়ী বেঁধে বয়াত নিচ্ছিলেন।


হাদিস ৪৫:


وأخرج ابني منيع في (مسند) من طريق النعمان بن بشير ، عن نائلة بنت الفرافصة امراة عثمان قالت لما حصر عثمان ظل صائما ، فلما كان عند الافطار سألهم الماء العذب ، فمنعوه فبات ، فلما كان في السحر قال : أن رسول الله صلى الله عليه وسلم اطلع علي على هذا السقف ومعه دلو من ماء فقال : اشرب يا عثمان فشربت حتى رويت ، ثم قال ازدد فشربت حتى امتلات .


হযরত উসমান (رضي الله عنه) এর পত্নী নায়েলা বিনতে কারাকি বর্ণনা করেন- যখন হযরত উসমানের(رضي الله عنه) গৃহ অবরােধ করা হয়, তখন তিনি রােযাদার ছিলেন। ইফতারের সময় তিনি পানি চাইলে অবরােধকারীরা পানি দিল না। পিপাসিত অবস্থায় তিনি রাত্রি অতিবাহিত করলেন।সেহরীর সময় তিনি বললেনঃ- রাসূলে করীম (ﷺ) এক বালতি পানি নিয়ে আমার কাছে এলেন। তিনি বললেনঃ উসমান পানি পান কর।আমি তৃপ্ত হয়ে পানি পান করলাম।অতঃপর তিনি বললেনঃ আরও পান কর। আমি আবার পান করলাম। অবশেষে আমার পেট ভরে গেল।

 
Top